#হঠাৎ_হাওয়া (২১)
মায়া সব ঘুরে এসে ড্রয়িং রুমে দাড়ালো,ফ্লাট টা খুব চমৎকার ভাবে গোছানো, বরাবরই হিমালয়ের রুচি অসম্ভব ভালো তবে এই ফ্লাটের ডেকোরেশন দেখে মায়া অভিভূত বিশেষ করে বেলকনি বারান্দাটা!ড্রয়িং এর সাথে লাগানো বেলকনি,কাচের দরজা খুলে ম্যাক্সিকান গ্রাসের উপর পা রাখতেই মায়ার গা শিরশির করে উঠলো ,জাদি,এলোভেরা, স্নেক প্লান্ট,জিজি প্লান্ট, ফিলোডেনড্রন,মানি প্লান্ট কি নেই! মনের অজান্তেই মায়ার মনের ভেতর থেকে একটা বড় দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো এই মানুষ টা কতটা যত্নশীল! কতটা! ধ্রুব মায়াকে ডাকতেই ও ড্রয়িং রুমে চলে গেলো,
—হিমালয় হয়তো এক্ষুনি এসে পড়বে
সাহিত্য মায়ার দিকে তাকিয়ে রইলো, মায়ার উত্তেজনায় গা কাপছে
—তুই ঠিক আছিস মায়া?
মায়া শব্দ করতে পারলো না,
—তোমার কাছে এই ফ্লাটের চাবি সবসময় থাকে,ধ্রুব?
—শুধু আমার কাছে না আমাদের সবার কাছেই ডুপ্লিকেট চাবি করে নিয়েছি আমরা, হিমালয়ের কোনো ঠিক নেই ও কখন কোথায় থাকে,আর আমরা যে যখন পারি চলে আসি,
হিমালয় দরজায় হাত দিতেই দেখলো দরজা খোলা ও স্বাভাবিক ভাবেই ঘরে ঢুকলো, ধ্রুবকে দেখে বলল,
—এই ধ্রুব আদনানের সাথে দেখা হলো কাল নাকি ওর রেফার করা একটা স্পেশাল পেশেন্ট এটেন্ড করার কথা ছিল তোর করেছিলি? তুই…
কথা বলতে বলতে হিমালয়ের চোখ মায়ার দিকে পড়লো… মায়ার গলা শুকিয়ে এলো হিমালয় কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো,এই প্রথম হিমালয়ের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো ও দ্রুত বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালো জোরে জোরে কিছুক্ষণ নিঃশ্বাস ফেলে পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে জ্বালালো বড় করে দুটো টান দিয়ে ভেতরে ফিরে গেলো, মায়ার সামনে গিয়ে দাড়ালো মায়া মাথা নিচু করে আছে হিমালয় একটু নিচু হয়ে ঝুকে মায়ার মুখের সামনে মুখ নিয়ে বলল,
—কেমন আছো মায়া!
হিমালয়ের গলার কম্পন স্পষ্ট শোনা গেলো,ওর মুখ থেকে ভকভক করে সিগারেটের গন্ধ বের হতে লাগলো, মায়ার গা গুলিয়ে উঠলো,একটু পিছিয়ে গিয়ে মায়া অসহায় ভাবে হিমালয়ের দিকে তাকালো! এই কি সেই হিমালয় যে কোনোদিন সিগারেট ছুয়েও দেখেনি! বরাবর খুব গোছালো সেই লোকটা কি এই?এই বাড়িটা যে এত সুন্দর করে সাজিয়েছে সে নিজে এত্ত এলোমেলো কেনো! মায়া চোখের জল আড়াল করে বলল,
—আপনি সিগারেট খাচ্ছেন?
হিমালয় তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে পাশে থাকা এস্ট্রে তে ছাই ফেলতে ফেলতে বলল,
—না তো পান করছি, করবে? ধ্রুব মায়াকে নাস্তা দিয়েছিস?
ধ্রুব একটু হতাশ হয়ে বলল,
—হিমালয়, তুই…
—হ্যা বল শুনছি তুই কিছু বলতে চাস?
ধ্রুব খেই হারিয়ে ফেললো কি বলবে ও বুঝতে পারলো না,
—তুই কোথায় ছিলি?
—কোথাও না, অর্না ওর আশ্রমের বাচ্চাদের নিয়ে একটা কালচারাল প্রোগ্রাম করছে তার এরেঞ্জমেন্ট করছিলাম, এনিওয়ে হু ইজ হি?
সাহিত্য কে দেখিয়ে হিমালয় প্রশ্ন করলো,সাহিত্য এগিয়ে এসে হিমালয়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
—আমি সাহিত্য,মায়ার…
—বয়ফ্রেন্ড?
বলেই মায়ার দিকে তাকালো, হিমালয় হ্যান্ডশেক করতে করতে বলল,
—মায়ার পছন্দ বরাবরের মতোই পারফেক্ট, ইউ আর রিয়েলি গুড লুকিং সাহিত্য, নাইস টু মিট ইউ,
সাহিত্য অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো, ধ্রুব কিছু বলতে গেলেই হিমালয় বলল,
—আমি খুব টায়ার্ড ধ্রুব সন্ধ্যায় অর্নার আশ্রমে যেতে হবে নয়তো ও আমাকে কাচা খেয়ে ফেলবে,আমি একটু রেস্ট নিতে চাই।মায়া তুমি কি ঢাকায় আছো নাকি তোমার প্লান আছে অন্য কোনো?
মায়া নিস্তব্ধ হয়ে গভীর দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে হিমালয়ের দিকে হিমালয় কিছুক্ষণ তাকিয়ে চোখ নামিয়ে মনে মনে বলল,আজও আমি তোমাকে দেখলে খেই হারিয়ে ফেলি!এত্ত বেহায়া আমি!
হিমালয় মায়ার চোখের সামনে তুড়ি মেরে বলল,
—কি ভাবছো এতো!
—মহারাজ..
—হিমালয়, আমার নাম হিমালয় আহমেদ প্লিজ কল মি বাই মাই নেম,
মায়া আর কিচ্ছু বলতে পারলো না ওর গলার কাছে কথা আটকে গেলো, হিমালয় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বলল,
—কিছু বলবে?
মায়া মাথা নিচু করেই রইলো চোখ তুলে ধ্রুবের দিকে তাকাতেই ধ্রুব ইশারায় সাহস দিল, তারপর সাহিত্য কে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো,মায়া এবার হিমালয়ের দিকে তাকালো হিমালয়ের খুব কাছে গিয়ে বলল,
—আপনি নাকি আজকাল ভবঘুরে হয়ে গেছেন?
—সেটা আবার কি? এসব কথা তোমাকে কে বলে?আমি একটু ব্রেকে আছি হ্যা পিএইচডি করতে একটু দেরি হয়ে গেছে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য মাস ছয় একটু পিছিয়ে গেছিলাম বাট ৩ মাস হলো কম্পলিট করে দেশে এসেছি আপাতত ব্রেকে আছি রুলস এন্ড রেগুলেশনের জীবন আর কাটাতে ইচ্ছে করে না এই আরকি….
মায়া কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল,
—আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি…
—কিসের জন্যে!
—আপনি অনেক পালটে গেছেন অনেক বেশি,
হিমালয় সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বসতে বসতে বলল,
—তাই নাকি কই আমার তো মনে হচ্ছে না?আমি তো ঠিকই আছি,তোমার একটু স্বাস্থ্য ভালো হয়েছে মায়া,তোমাকে বেশ আবেদনময়ী লাগছে আবেদনময়ী এর ইংরেজি জানো তো?
—আপনি ইচ্ছে করে আমাকে কষ্ট দিচ্ছেন?!
—কিসের কষ্ট!তোমার কিসের কষ্ট! তুমি খুব স্বেচ্ছাচারী মায়া স্বেচ্ছাচারীদের কষ্ট থাকে না তবে হ্যা আমি শুনেছি নানান কেচ্ছা থাকে এদের….
মায়া কিছুক্ষণ হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ওর অবাক হওয়ার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে,হিমালয় উঠে এসে মায়ার সাথে ঘেষে দাড়ালো,মায়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
—তুমি বরাবরের সাহসী আমি জানি, তবে তোমার ভয় করছে না একা মেয়ে একটা ছেলের ফ্লাটে চলে এলে!?এত দুঃসাহস পাচ্ছ কোথায়? নাকি অভ্যাস হয়ে গেছে?
মায়ার মাথার মধ্যে চিনচিন করে উঠলো ওর চোখ ছলছল করে উঠলো ও ঠোঁট কামড়ে নিজের কান্না গিলে কঠিন চোখে হিমালয়ের দিকে তাকালো,
—একজন মানুষের এতটাও অধঃপতন হয়!
হিমালয় ক্রুদ্ধ একটা হাসি দিয়ে মায়ার কাছে এগিয়ে এসে বলল,
—অধঃপতন দেখতে চাও…?
মায়া কেদে ফেললো আর এক মুহুর্ত সেখানে দাড়ালো না দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো, হিমালয় মেঝেতে হাটু গেড়ে বসে পড়লো,ছোট করে নিঃশ্বাস ফেলে অর্নাকে একটা টেক্সট পাঠিয়ে দিলো “আমি সন্ধ্যায় আসছি না, তুমি ম্যানেজ করে নিও”। কিছুক্ষণ বসে থেকে হিমালয় পাশে থাকা চিনা মাটির এস্ট্রে টা ছুড়ে মারলো কাচের দরজায়।তারপর ভাবতে লাগলো কতগুলো কঠিন কথা ও মায়াকে বলেছে!মায়া কি খুব কাদছে?মেয়ে টা কঠিন কথা একদম সহ্য করতে পারে না একদম না, হিমালয় দুহাতে নিজের চুল টেনে, শব্দ করে বলে উঠলো
—আজ এতদিন পর তুমি কেন ফিরে এসেছ মায়া? কেন?
চলবে….
সামিয়া খান মায়া
#হঠাৎ_হাওয়া (২২)
মায়া রাতের বেলাতেই শাওয়ার ছেড়ে হাউমাউ করে কাদতে লাগলো,ও এত কঠিন কথা জীবনে কখনো শোনে নি, এভাবে কেউ ওকে অপমান করে নি আর আজ কি না হিমালয়!ওর সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষ ওকে সবচেয়ে নির্মমভাবে আঘাত করলো! কথা দিয়ে আঘাত করার চেয়ে বাজে আর কি হতে পারে,প্রায় দু ঘন্টা পর মায়া ভেজা কাপড়েই বেরিয়ে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লো,এতদিন হিমালয়কে ছেড়ে থাকতে মায়ার যতটা না কষ্ট হয়েছে তারচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে আজ হিমালয় কে দেখার পর,কতটা বিচ্ছিরি ভাবে মায়া কষ্ট দিয়েছে ওকে! ওর মত একটা ব্রাইট ছেলে যে কিনা নিজের কাজের প্রতি এত ডেডিকেটেড ছিল তার জীবনটা ও এভাবে নষ্ট করে দিয়েছে এটাতো মায়ার প্রাপ্য! মায়া খুব শব্দ করে কাদতে লাগলো,
সারা রাস্তা মায়া এতটাই কেদেছে যে সাহিত্য আর বাড়ি ফেরেনি এখন মায়ার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মায়ার কান্নার আওয়াজ পেয়ে ওর বুকের ভেতর টা ছিড়ে যাচ্ছে তবে মায়াকে ডাকার সাহস পাচ্ছে না, দরজায় হাত দিয়ে দেখলো দরজা খোলা,তবে মায়াকে দেখে ও ভেতরে ঢুকলো না,মাথা নিচু করে বলল,
—মায়া তুই এক্ষুণি ভেজা কাপড় পালটে ছাদে আসবি এই মুহুর্তেই
মায়া কান্না থামিয়ে চুপ করে গেলো,তবে নড়লো না, তোকে ভেজা কাপড়ে বিচ্ছিরি লাগছে তুই প্লিজ …
মায়া তরল গলায় বলল,
—তুই যা আমি আসছি।
মায়াদের ছাদের একপাশে রেলিং নেই সেখানে পা ঝুলিয়ে সাহিত্য বসে আছে মায়া এসে সাহিত্যের পাশে বসলো,মায়া বরাবর উচ্চতা খুব ভয় পেতো এই পাশটায় কখনোই মায়া আসে না অথচ এখন!সাহিত্য অবাক হয়ে মায়ার দিকে তাকালো ওর হাতে তোয়ালে, মাথা দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে চোখ দুটো লাল হয়ে ফুলে আছস নাকটাও লাল হয়ে গেছে! মায়াকে অসম্ভব স্নিগ্ধ লাগছে,সাহিত্য মায়ার হাত থেকে তোয়ালে টা নিয়ে মায়ার চুল ভালো করে পেচিয়ে দিলো তারপর নিঃশ্বাস ফেললো ছোট করে, এবার ঠিক আছে এত সৌন্দর্য দেখা যায় না।
—তুইও শেষমেস দেবদাসী হয়ে গেলি? দেবদাসী এর বাগধারা কি রে? দাসীদের দেবী?
মায়া মাথা নিচু করে রইলো,
—সিগারেট খাবি মায়া? এইটা সিগারেট খাওয়ার পার্ফেক্ট সময় এখন তুই ছ্যাকা খেয়ে আছিস সিগারেট খেয়ে দেখি ভাল্লাগবে।
মায়া মিনমিন করে বললো
—তোর কাছে সিগারেট আছে?
সাহিত্য আড়চোখে তাকালো তারপর কটকট করে বলল,
—এক থাবড়া মারব কানে কিচ্ছু শুনবি না যাস্ট কিচ্ছু না।
মায়া চুপ করে রইলো,সাহিত্য নিজেকে সামলে বলল,
—তুই যে এখানে এসে বসলি যদি পড়ে যাস
—পড়ে গেলে তুই ধরবি না?
—পড়ে গেলে আর ধরে কি হবে, পড়ে গেলে তো গেলিই।
মায়া ছোট করে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
—একটা গান গাইবি সাহিত্য?
—না।তোর কি মনে হয় এখানে আমি তোকে এন্টারটেইন করতে এসেছি? আমি জোকার
—গাইতে হবে না
—তোর কথা মতো? তোর কথা আমার শুনতে হবে? তুই আমাকে মানা করার কে? তুই মানা করবি আর আমি চুপ থাকব? আমি গান গাইবো অবশ্যই গাইবো চুপ করে শোন,
মায়া জানে সাহিত্য ওর কথা ফেলে না শুধু বুঝতে দেয় না ও এত পাগল কেন!
সাহিত্যের গানের গলা খুব ভালো বরাবরই, ও খালি গলায় গান শুরু করলো
আমার ভিনদেশী তারা
একা রাতেরই আকাশে
তুমি বাজালে একতারা
আমার চিলেকোঠার পাশে
ঠিক সন্ধ্যে নামার মুখে
তোমার নাম ধরে কেউ ডাকে
মুখ লুকিয়ে কার বুকে
তোমার গল্পো বলো কাকে
আমার রাত জাগা তারা
তোমার অন্য পাড়ায় বাড়ী
আমার ভয় পাওয়া চেহারা
আমি আদতে আনাড়ী
আমার আকাশ দেখা ঘুড়ি
কিছু মিথ্যে বাহাদুরি।।
আমার চোখ বেধে দাও আলো
দাও শান্ত শীতল পাটি
তুমি মায়ের মতই ভালো
আমি একলাটি পথ হাটি
আমার বিচ্ছিরি এক তারা
তুমি নাও না কথাখানি
তোমার কিসের এতো তাড়া
সে রাস্তা পার হবে
সাবধানি
তোমার গায়ে লাগেনা ধুলো
আমার দু-মুঠো চাল চুলো।।
রাখো শরীরে হাতে যদি
আর জল মাখো দুই হাতে
প্লীজ ঘুম হয়ে যাও চোখে
আমার মন খারাপের রাতে
আমার রাত জাগা তারা
তোমার আকাশ ছোয়া বাড়ী
আমি পাইনা ছুতে তোমায়
আমার একলা লাগে ভারী।।
শেষের লাইনগুলো গাইতে গিয়ে সাহিত্যের কন্ঠ অদ্ভুত ভাবে কেপে উঠলো, মায়া ঠিক বুঝলো। গান শেষ করার বেশ কিছুক্ষণ পর সাহিত্য বলল,
—এই মায়াকে আমি একটুও চিনি না, আমি জানি মায়া দোষ করলে স্বীকার করে ক্ষমা চায়,যেটা মায়ার সেটা মায়া কখনোই ছেড়ে দেয় না আমি যেই মায়াকে চিনতাম সে প্রাণবন্ত একটা মায়া যে কখনো হার মানে না এত সহজে সে ভেঙে পড়তো না,আচ্ছা তুই বল তুই কি আদৌ সেই মায়া আছিস যাকে হিমালয় ভালোবেসেছিল?
মায়া বিস্মিত হয়ে সাহিত্যের দিকে তাকালো,সাহিত্য উঠে চলে গেলো মায়া বসে রইলো সারা রাত সেখানেই বসে আকাশ পাতাল ভাবতে লাগলো।
ভোর বেলায় দরজা খুলে হিমালয় দেখলো অর্না দাড়িয়ে আছে, হিমালয় একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,
—আমি খুবই দুঃখিত অর্না আমি কাল যেতে পারলাম না, তুমি প্লিজ কিছু মনে করো না।
অর্না সাথে হিমালয়ের পরিচয় হয় বছর দেড়েক আগে, একদিন হিমালয় মাঝরাস্তায় ফিট হয়ে পড়ে যায় অর্না একটা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়ায় সেখান থেকে ফিরছিলো ও হিমালয় কে হসপিটালে নিয়ে যায়,তাপর হিমালয় একদিন ধন্যবাদ জানাতে অর্নার বাসায় যায় সেখানে কিছু বাচ্চাদের সাথে অর্নাকে খেলতে দেখে জানতে পারে পাশেই একটা আশ্রম অর্না চালায় এরপর থেকে ওদের বেশ ভালো একটা বন্ধুত্ব হয়ে যায়।
অর্না কিছুক্ষণ হিমালয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে,
—সারারাত তুমি ঘুমাও নি হিমালয়?
—ওই আর কি একটু কাজ করছিলাম?
চারপাশে চোখ বুলিয়ে অর্না দেখলো বাড়িঘর বেশ অগোছালো এলোমেলো এখানে সেখানে জিনিসপত্র ছড়ানো কাচের দরজা টা ভেঙে আছে।অর্না কিছু না বলে ঘর গোছাতে গোছাতে বলল,
—কি কাজ? বাড়িঘর ভাঙাচোড়া?
হিমালয় মাথার পেছনে চুলকে বলল,
—ওই আর কি।
দরজার কাচগুলি ঝাড়ু দিয়ে একপাশে করে কিছু কাচ হাত দিয়ে সড়াতে সড়াতে বলল,
—তোমাকে খুব টেনসড দেখাচ্ছে।
হিমালয় গ্লাসে পানি ঢালতে ঢালতে বলল,
—মায়া এসেছিলো কাল..
হুট করে একটা কাচ অর্নার হাতে বিধে গেলো,হিমালয় পানি খাচ্ছিলো অর্না উফ শব্দ করে উঠতেই ও ছুটে গিয়ে অর্নার হাত ধরে ফেলল বলল,
—তুমি তো আচ্ছা পাগল এসব তোমাকে কেউ করতে বলেছে?
চলবে….
সামিয়া খান মায়া