#গল্প:#পবিত্রতার_ছোঁয়া
#পর্ব:#10
#লেখিকা:#জাবিন_মাছুরা [ছদ্মনাম]
||
আমি আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারলাম না। চোখ খুলে দেখলাম, চারপাশে অন্ধকার। আমার হাত পা কাঁপছে। শরীর ঘেমে আঠালো হয়ে গিয়েছে। অস্থির লাগার জন্য বমি বমি পাচ্ছে। আমি তারাতারি করে লাইট অন করলাম,,
টেবিল থেকে পানি নিতে গিয়ে, হাত থেকে গ্লাস পরে গেল। সাথে সাথে চারপাশে কেমন যেন ঘোলা লাগছে। আমি যে কথা বলার শক্তি টুকু হারিয়ে ফেলেছি। শরীরের যতোটুকু শক্তি ছিল তা দিয়ে মা কে ডাকদিলাম,,,
মা,,,,,,, তারপরে আর কিছু মনে নেই,,
||
আস্তে আস্তে চোখের পাতা খুললাম। পাশে মা বসে মাথায় পানি দিচ্ছে। ভাইয়া সোফায় বসে আছে।
আমি : আম, মু। [অস্থির হয়ে]
আম্মু : জী,,, মা।
আমি:আম্মু ওরা তাহ,, সিন,, স্যারকে মেরে ফেলবে,,, [হাঁপাতে হাঁপাতে]
আম্মু : কে মারছে?,,, তাহসিন এর তো কিছুই হয় নি,,,
আমি : আম,,, মু,,, [কান্না করে দিয়ে]
আম্মু সাথে সাথে আমাকে বুকের মধ্যে জরিয়ে ধরলো।
আম্মু : কিছু হবে না,,,,
রাফি : কি হয়েছে মিহু??
আম্মু : তুই কি কোন বাজে স্বপ্ন দেখেছিস?
আমি : হ্যাঁ মা,,,,
রাফি : ফুপি ওর কি হয়েছে বলো.,,,
আম্মু : রাফি তুই যা তো,,,,
রাফি : আমি যাব না,,,
আম্মু : তুই কি চাছ, তোর জন্য মিহুর আরো বেশী অস্থির হয়ে পড়ুক?
রাফি : না,,,
আম্মু : তাহলে তুই বের হয়ে যা। ঘরে যেয়ে ঘুমিয়ে পড়,,
রাফি ভাইয়া মন খারাপ করে ঘর থেকে চলে গেল। আমি এখনো কাঁপছি।মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,,
আম্মু : মিহু কিছু হয় নি তো মা। শান্ত হ,,
আমি: স্যার,,,[কান্না করে]
আম্মু : তুই যদি কান্না না থামাস তাহলে কিন্তু খুবই খারাপ হয়ে যাবে।
আম্মু কথা শুনে কান্না একটু কমে এলো। আম্মু আমার মুখটা তার দুই হাত দিয়ে ধরে বলতে লাগল,,,
আম্মু : দেখ মা,, আমারা যে তোর সাথে খুব বড় অন্যায় করে ফেলেছি। আমাদের মাফ করে দিস,,,
আমি: আম্মু যে কী বলছে বুঝতে পারছি না,,
আম্মু : আমার মেয়েটা যে তাহসিনর আবেগে পড়ে যাবে, তা আমারা বুঝতে পারি নি। জানিস তোর আর তাহসিনের বিয়ে হওয়ার যে আরো একটা কারন আছে তা তোর অজানা,,,
আমি : কি কারন,,,
আম্মু : সময় হলে ঠিকি বলবো,,, এখন তুই ঘুমো দেখ অনেক রাত হয়েছে। বেশি চিন্তা করবি না। তুই কিন্তু মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলি। আমি আর রাফি এসে তোকে বিছানার পড়া দেখেছিলাম। ভাগ্য ভালো ছিল যে তুই বিছানার ওপরে পড়ে ছিলি,,,
আমি আর কিছুই না বলে মায়ের কোলে চুপ করে রইলাম। মা আমার কাছেই রইলো। আমি ঘুমাতে চেষ্টা করলাম,,,
||
রাফি ঘরে এসেই বেলকনিতে চলে গেল আর বলতে লাগল, ফুপি কেন তোমরা আমাকে বুঝলে না। আমি যে সেই ছোট্ট বেলা থেকেই মিহু রানীকে ভালোবাসি। যাকে দেখার জন্যে আমি এসেছি। সে যে অন্য কারো নাম বার বার মুখে নিচ্ছে। কেন মিহু রানী। তুই কি আমাকে বুঝিস না। আমি এতটুকু বুঝতে পেরেছি যে, তোর স্যারের জন্যে যে তোর মনে আলাদা জায়গা আছে,,,
কিছুটা থেমে আবার বলতে লাগল,, তোর মনে যেই থাকুক না কেন, আমি তাকে থাকতে দিব না। তুই শুধু আমারই হবি। আমার মহান প্রেমিক না যে তুই আমারকে বলবি যে তুই অন্য কাউকে ভালোবাসিস, আর আমি তোকে ছেড়ে দিব। তা কখনোই হবে না,,, নেভার,,, [ভিলেন হাঁসি দিয়ে]
||
রাত প্রায় একটা বাজে, তাহসিন একটা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আছে,,,, তার যে আজ ঘুম আসছে না।নিজেকে খুবই মূল্যহীন বস্তু মনে হচ্ছে তার কাছে। তহসিনের মুখ রক্তিম বন্য ধারন করে আছে। সে যে খুবই রেগে আছে। আর যে সে সইতে পারছে না,,,,
তাহসিন : কেন আমি তার সাথে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারি নি। কেন?? আমাকে যে আরো শক্ত হাতে হবে। সে যে এখানো অনেক ছোট.,,,,,
তুমি কি জান, [ছবির দিকে তাকিয়ে] তুমি বড্ড খারাপ। আজ জানো কেউ আমাকে ভালোবাসাসে না,,, কেউ আমাকে আদর করে না। কেউ আমাকে বুঝে না। আমি কি খুব খারাপ?
তুমি তো আমার চেয়ে বেশি খারাপ। তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না ভালবাসাসলে কখনো আমাকে ছেড়ে যেতে পারতে। আজ যদি তুমি থাকতে তাহলে আমার আর এতো কষ্ট হতো না,,,, তুমি খুব খুব খারাপ,,, [বাচ্চাদের মতো করে]
||
মিহু ঘুমিয়ে গেলেও তার মায়ের চোখে কোন ঘুম নেই,, সে ভাবছেন, তারা যে মেয়েটার সাথে অনেক বড়ো অন্যায় করে ফেলেছে,,,
মিহুর মা: বিয়েটা যে মিহুর ওপর এমন ভাবে এফেক্ট পড়বে তা আমি ভাবতে পারি নি। আমার মেয়েটা যে তাহসিনকে এতো অল্প সময়ে ভালোবাসে ফেলবে তা ভাবতেও পারি নি।এটা কি ভালোবাসা নাকি আবেগ,,,, [মিহুর দিকে তাকিয়ে]। রাফি যে,,,,,
(#চলবে?)
[রিচেক দিইনি, ছোট হাওয়ার জন্য দুঃখিত]