#গল্প:#পবিএতার_ছোঁয়া
#অন্তিম_পর্ব
#লেখিকা :#জাবিন- মাছুরা [ছদ্মনাম]
আমি :শাস্তি,,,
স্যার শাস্তির কথা বলে ঢুলতে ঢুলতে বিছানায় এসে বসলেন, মায়া ভরা কন্ঠে বললে;
তাহসিন : মিহু আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দিবে?
কথাটা বলেই তিনি আমার কোলে এসে শুয়ে পড়লেন। আমার সারা শরীর শিউরে উঠল ।হাতের লমগুলো খারা হয়ে উঠেছে,, কাঁপা কাঁপা হাতে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। স্যারের চোখের কোণে পানি দেখতে পেলাম। আমার মনটা কেমন যেন কু ডাকছে। স্যার একটা কথায় আমার অশান্ত মন আরো উতলা হয়ে উঠল ;
তাহসিন : ভালোবাসি,,,অনেক ভালোবাসি,,,,, তোমাকে;[মলিন হেঁসে দিয়ে]
আমি চোখ দুটো বন্ধ করে তার বলা কথাগুলো অনুভব করলাম। তার প্রতিটি নিশ্বাস আমি গুনতে পারছি।মনে হচ্ছে সময় থেমে গিয়েছে। থাকুক না কিছুটা সময় থেমে,,
কিছুখন পরই স্যারের নিশ্বাস থেমে গেল। আমি যে আর তার নিশ্বাস গুনতে পারছি না। আমার হাত পা অবস হয়ে এলো।কান্না মাখা কন্ঠে তাকে ডাকতে লাগলাম,,,
মিহু : স্যার,,,
তাহসিন : নিশ্চুপ,,,
মিহু : কথা বলছেন,, না কেন?
ভয়টা আরো বেড়ে গেল। আর চুপ করে রইলাম না, উঠৈ দাঁড়ালাম। সবাইকে ডাকতে লাগলাম,,,
মা বা,,বা আপ,,নারা কোথায়। আমার আর কিছু মনে নেই। সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলাম,,,
||
যখন চোখ খুললাম। চারপাশে মানুষ আর মানুষ। মন মধ্যে প্রশ্ন জাগল, এতো মানুষ কেন?সাবাই কান্না করছে কেন? বউ দেখতে এলে কি কান্না করে? সবাই কি পাগল হয়ে গিয়েছে? স্যার কোথায়? তাকে দেখছি না কেন? নতুন বউকে ছেড়ে কোথায় গেল সে,,,
স্যারের আপনি কোথায় বলে চিৎকার করতে লাগলাম। সে কিন্তু প্রচুর খারাপ আমার ডাকের উওর নিচ্ছে না,,,
ডাকতে ডাকতে সামনে গেলাম। মা আমার হাত ধরে রেখেছে। মাও সবার মতো কান্না করেই যাচ্ছে,। কেউ কেন তাকে ডেকে দিচ্ছে না। আমার যে এখন ভয় লাগছ,,,
ঘরের বাইরে আসতেই দেখলাম, সাদা কাপড়ের মোড়ানো লাশ,,, লাশ কেন এখানে? মা এখানে লাশ কেন?
মা কোনো উওর দিচ্ছে না। দূর স্যার যে কোথায় গেলেন। কেউ কেন আমাকে বলছেন না স্যার কোথায়,,,,
হঠাৎ হাওয়ার কারনে আমার সামনে থাকা লাশটার মুখের উপর থেকে কাপড় সরে গলে। আমি তার নিথর কাফনে মারানো দেহটা দেখে তার কাছে ছুটে গেলাম,,,
আমার মাথা কাজ করছে না।স্যারকে ডাকতে লাগলাম কিন্তু সে কথা বলছেন না,,
মিহু : স্যার আপনি এখানে শুয়ে আছেন কেন? উঠন তো। আমার কিন্তু আপনাকে এমন ভাবে দেখতে ভালো লাগছে না। উঠন না,,
সে যে আমার ডাকের উওর নিচ্ছে না। আমি এবার তার বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম,,, শক্ত করে চেপে ধরে কাঁদতে লাগলাম,,, আপনি না খুবই নিষ্ঠুর আমাকে একা রেখে চলে গেলেন কেন?
মিহুর বাবা: উঠ মা,,,[কান্না করে]
স্যারের মা এসে আমার সামনে বসে পড়ল। আমার নাকে দিতেই আমি তার হাত ঝাড়ি দিয়ে ফেলে দিলাম,,
তাহসিনের মা: মা গো তোমার স্বামী তো আর নেই। নাক ফুল টা যে খুলতে হবে,,
আমি : আপনি মিথ্যা কেন বলছেন। স্যারের কিছু হয় নি তো। আমি নাকফুল খুলব না। খুললে তো তার ক্ষতি হবে,,,
বলেই আমি কেঁদে উঠলাম। মা আমাকে শক্ত করে জরিয় ধরে কেঁদে ফেলেন,,
||
সবাই স্যারকে অন্ধকার কবরে রেখে দিতে নিয়ে যাচ্ছে। আমি তাকে তো যেতে দিব না। আমাকে রেখে কেন সে একা যাবেন। আমি বাবার পায়ে পড়লাম, বাবা যেন তাকে না নিয়ে যায়।
কিন্তু কেউ আমার কথা শুনলেন না। সবাই তাকে নিয়ে গেলেন। আমি পাগলের মতো গরিয়ে গরিয়ে কান্না করছি,,
আপু এসে আমাকে জরিয় ধরে বললেন,
শাদিয়া : মিহু তাহসিন আর নেই। ও মারা গিয়েছে। তুই শান্ত হ।
আমি : আপু সে কি একবারও ভাবলেন না আমি তাকে ছেড়ে থাকব কি করে,,, নিষ্ঠুর লোক। আমিও তার কাছে যাব,, , [কান্না করতে করতে]
||
স্যার আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে আজ দুদিন হলো। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি।আর জরে কান্না করতে পারি না। এখন নিরবে চোখের পানি ফেলি। এখন একা একা থাকতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে,,
শাদিয়া আপু আমাকে একটা ডাইরি বের করে দিল। আর বলল ডাইরিটা নাকি স্যারের। সে আপুকে বলে গেছেন এটা যেন আমাকে দেন,,,
আমি কাপা কাপা হাতে ডাইরিটা খুললাম ;
প্রথম পাতায় কিছু লেখে নেই।দ্বিতীয় পাতা থেকে শুধু তাহসিনের বৃষ্টি পাখিকে নিই হাজরো বর্ননা,,,
দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। চারপাশে বৃষ্টি আর আর। আমি গাড়ি করে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ একজনকে দেখে আমার হাত থেমে যায়। আমি বোকার মতো তার দিকে তাকিয়ে থাকি। জানি না মেয়েটির নাম কি। কিন্তু মেয়েটিকে দেখে আমার চারপাশে সবকিছু স্তব্ধ হয়ে যায়। মেয়েটি হাসছে। তার হাসি দেখে আমার হাত আপনাআপনি বুকে চলে যায়। সে পাখির মথো লাফালাফি গোসল করছে,,,মন চাইছিল আমি যদি বৃষ্টি হতাম। বৃষ্টির প্রতি হিংসে লাগছিল খুব,,,
||
আর মেয়েটিকে আমি দেখতে পেলাম না। একপলক দেখে মনে হল সে আমার কত্তটা আপন।
আমি ঘুমাতে চেষ্টা করছি কিন্তু বার বার মেয়েটির মুখ ভেসে উঠছে। তার মানে আমি কি প্রেমে পড়ে গেলাম। ওইটুকু পিচ্চি মেয়ে তাহসিনর মন চুরি করে ফেলল। তাহসিন তুই তো এসব কখনো ভাবিস না। তাহলে আমি কি প্রেমে পড়া গেলাম,,
আজকে আমার মাথায় প্রচুর ব্যথা। তাই আমি মেডিকেলে যাচ্ছি। ডাক্তার সাহেব আমার চেকাপ করলেন। কিছু টেস্ট করাতে বললেন। আমিও টেস্ট করালাম,,,
||
আজকে আবার ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছি। আজে আমার রিপট দিবে।যখন ডাক্তার রিপট রের করলেন। তার মুখ দেখে আমার ভেতরটা কেমন যেন করে উঠল। ডাক্তার আমাকে যা বললেন তা শুনে আমি অনেক খুশি হলাম। আমার নাকি বেন
টিউমার হয়েছে,,,
রিপোর্ট নিয়ে গাড়িতে বসলাম। ভাবছিলাম আমি এখন আমার মায়ের কাছে যেতে পারব। ছোট মা আমাকে সেই ছোট বেলা থেকে অনেক অত্যাচার করতেন। কিন্তু আমি বাবাকে কিছু বলতাম না। বাবাকে বললে যদি মা চলে যায়। আমি ছোট মাকে অনেক ভালোবাসতাম। সবসময়ই মা আমার ভালোবাসার সুযোগ খুজত,,, তখন আবার ও আমি সেই মেয়েটিকে দেখলাম। আশ্চর্য বিষয় হলো তখনও বৃষ্টি হচ্ছিল। আনমনে বলে ফেললাম বৃষ্টি পাখি। আমার বৃষ্টি পাখি,,,,
এরপল অনেক খুজেছি আমার বৃষ্টি পাখিকে। কিন্তু পাই নি। প্রতিদিনই সে আমার স্বপ্নে আসত।,,, আমি তাকে পাগলের মতো খুঁজতে লাগলাম। কোচিং থেকে আসার সময় বা রাস্তার বের হলেই আমার চোখদুটো শুধু তাকে খুজত,,,
আমার ভগ্য না অনেক ভালো। আজকে আমি অনেক খুশি। আমি তাকে পেয়ে গিয়েছি। সে আমার কোচিং এ ছাত্রী। তার নাম হলো মিহু,,, কি সুন্দর নাম,,,
আমি প্রতিদিন তার ক্লাস পেতাম। কিন্তু তার থেকে একটু দুরত্ব বজায় রাখতাম। যাতে সে বুঝতে না পারে আমি তাকে ভালোবাসি,,,
||
আমি জানি না ভালবাসা কি। আমি জানতাম এই পৃথিবীতে ভালোবাসা বলতে কিছু নেই। সবাই স্বার্থপর। কিন্তু আমি যে ভালোবেসে ফেলেছি,,,,
আস্তে আস্তে আমি আমার বৃষ্টি পাখির প্রতি এ্যাড্যাক্ড হয়ে যাচ্ছিলাম। সে আমার নেশায় পরিনত হয়ে যাচ্ছিল। তাকে একদিন না দেখলে আমার রাতে ঘুম পেতো না।
নিজেকে শক্ত রাখার অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারছি না । তার সাথে কাউকে সহ্য হয়। বৃষ্টি পাখি যদি কারো সাথে হেসে হেসে কথা বলে তখন আমার মাথায় রাগ উঠে যায়,,,
আমি আর থাকতে পারলাম না। বাবাকে অনেক বুঝলাম। বললাম আমি বিয়ে করব আমার বৃষ্টি পাখিকে।কিন্তু বাবা রাজি হলেন না।
||
একপর্যায়ে বাবা আমার পাগলামির কাছে হার মেনে নিলেন। মিহু বাবার সাথে কথা বলনেন। আল্লাহ রহমতে মিহুর বাবাও রাজি হয়ে গেলেন,,,
আজ আমার বৃষ্টিপাখি আমার হলো। সে এখন শুধু আমার। তাকে আমি এখন ছুঁতে পারব।যে ছোঁয়া হবে #পবিএতার ছোঁয়া। যে ছোঁয়াই থাকবে না কোন পাপ, থাকবেনা বাঁধা,,,
||
এখন প্রতিদিন আমি বৃষ্টিপাখিকে পড়াতে যায়। তাকে প্রতিদিনই দেখতে পারি। দুঃখ শুধু একটা সে আমাকে অনেক ভয় পায়।
||
আজ আমি আমার বৃষ্টি পাখির সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। তার হাতে ব্যথা দিয়েছি। আমার যে তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তাকে যে আমি অনেক ভালোবাসি,,
,
||
আজ মাথায় প্রচুর ব্যথা করছে।ঔষধ খায় নি। আমি যে আমার ঔষুধ পেয়ে গিয়েছি। তা হলো আমার বৃষ্টি পাখির ছোঁয়া। দুনিয়ার সব ঔষধের সেরা,,,,
আস্তে আস্তে বৃষ্টি পাখি আমাকে দেখে ভয় সেরে গেল। আমি বুঝতে পেরেছিলেন সে আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আমি চাই নি আমাকে ভালোবাসে তার কোন ক্ষতি হক। তাই নিজেকে অনেক শক্ত রাখার চেষ্টা করছি,,,,
সব কিছু ঠিক ঠাক চলছিল। কিন্তু কি এমন হলো আমার বৃষ্টি পাখি আমাকে ভুল বুঝল। আজকে আমি তার দরজা বাইরে বসে ছিলাম। সে শুধু কান্না করছিল। তার কান্না যে আমি সইতে পারছিলাম না,,
||
আজ বৃষ্টি পাখি আমাকে ভুল বুঝলো। আমার কেনা চুরি, শাড়ি, চকলেট ফেলে দিয়েছে। সে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। আমার কথা একটি বার ও শুনেনি। তাকে বার বার ডেকেছি কিন্তু সে শুনেনি,,,,, ছেলেরা সহজে কাঁদে না। কিন্তু আমি কেঁদেছি। আজ মন খুলে কেঁদেছি। কান্না করতে করতে মাথা ঘুরে পরে গেলাম,,,
||
বাড়িতে সবাই যেনে গিয়েছে আমি অসুস্থ। মৃত্যুর সাথে লড়াই করছি।আমার এতে কোন আফসোস নেই। বাঁচাতে ইচ্ছা করছে না। যখন আমি বৃষ্টি পাখি কে দেখেছি তখন থেকে বাঁচতে চেয়েছি। কিন্তু সে তো আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। বেঁচে থেকে আমি কি করব,,,,
,,,,,,,,,
জানো বৃষ্টি পাখি আমার না বৃষ্টির পানিতে ভিজলে মাথাটা অনেক ব্যাথা করে। ডাক্তার বৃষ্টিতে ভিজতে নিষেধ করছে। কিন্তু আজ আমি ভিজছি। মনে মধ্যে কেমন যেন করছে। মনে হয় আমি আর বেশি দিন বাঁচব না। চলে যাব তো তোমাকে ছেড়ে। তুমি না বড্ড খারাপ আমাকে বুঝো নি,,,,, তোমাকে না শেষ বারের মতো অনেক দেখতে ইচ্ছে করছে। সার্থপর মন চাইছে তোমাকে দেখতে,,,,
||
আজকে আবার তোমার আর আমার বিয়ে হলো। মাথাটা অনেক ব্যথা করছে। যানিনা আজ থেকে আবার নতুন করে বাঁচতে ইচ্ছে করছে। যদি মারা যায় তাহলে শেষ ইচ্ছেটা হলো তোমার কোলে মাথা রেখে যেন মারা যায়,,, আমি বাঁচাতে চায়,,, আবার লিখতে পারবো কিনা জানিনা,, ভালোবাসি তোমায় অনেক ভালোবাসি ,,, পরকালে যেন তোমাকেই পায়,,,,
আমি আর ডাইরির পরতে পারলাম না। মানুষটা আমাকে এতো ভালোবাসতেন,,,,
আমার দুঃখ গুলো যেন বৃষ্টি হয়ে নামছে। ডাইরির টা বুকে চেপে ধরে বসে আছি। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে। কানে বাজে উঠল স্যারের সেই একটা কথা, আমার না বৃষ্টির পানিতে ভিজলে মাথাটা অনেক ব্যাথা করে,,
||
আমাকে আর কেউ ঠেকাতে পারবে না। তার তো বৃষ্টি ফোটাতে কষ্ট হবে। আমি ছাতি নিয়ে ছুটতে লাগলাম তার কবরের দিকে। মা পিছন থেকে ডেকেই যাচ্ছে,,,,
(#সমাপ্ত)
[আজকেও আম্মুর বকার জন্য ভালো করে লিখতে পারী নি😭। গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবে। জানি অনেকের খারাপ লাগছে। যারা এতদিন আমার পাশে ছিলেন তাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনারা যদি চান তাহলে #পবিএতার ছোঁয়া সেকেন্ড পার্ট বের করব।যারা নিশ্চুপ রিডিরস ছিলেন তারাও আজকে রিয়েকট করবেন অনুরোধ রইলো 😢। আশা করি প্রথম পর্বের মতো ভালোবাসা পাবো। ভূলগুলো ক্ষমা করে দিবেন।]
বালের গল্প। কারণ শিক্ষক এবং ছাত্রীর কখনো প্রেম হয় না। শিক্ষকদের সম্মান করতে হয়। বিয়ে নয়।