গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী(সিজন-২)
লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)
part:08
আদিত্য, আফরিন,অহনা, আহান, কৌশাল আর অন্যা একসাথে বের হয়েছে ঘুরতে। সামনে একটা পার্কের রাস্তার উপর পাশে বাইক পার্ক করে আদিত্যরা। অহনা, আহান কোনো ব্যপার নিয়ে কথা বলছে। আর অন্যা তাকিয়ে আছে আফরিনের দিকে। আদিত্য আফরিনের হেলমেট খুলে দিচ্ছে। কৌশাল অন্যাকে বলে
” কি দেখ? আদিত্য কিন্তু তোমার না। অন্যা বিরক্ত হয়ে বলে
” দেখুন আদিত্য ভাইয়াকে আমি সে ভাবে দেখিও না , আমি দেখছি আফরিনকে ২ দিনেই বেচারি মুখের অবস্থা কি করেছে। কৌশাল বলে
” হ্যা হয়েছে এবার রাস্তা পার হতে হবে। পারবে নাকি কোলে করে নিতে হবে। অন্যা বলে
” বেশি বকবক করবেন আপনাকে ধাক্কা দিয়ে এই চলন্ত রাস্তায় ফেলে দিব। কৌশাল ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে
” এই রাস্তা চলতে পারে না এটা এখানেই থাকে। অন্যা বিরক্ত হয়ে বলে
” আহাম্মক একটা। আর রাস্তা পার করে উপর পাশে চলে যায়। অহনা আর আহান দুজন একসাথে রোড ক্রশ করে। আদিত্য নিজের হেলমেট খুলে রেখে। নিজের হাতটা বারিয়ে দেয় আফরিনের দিকে। আফরিন কি করবে। হাত দিতে গিয়েও ফিরিয়ে আনতে যাবে তার আগেই আদিত্য আফরিনের হাত ধরে ফেলে আর খুব সুন্দর ভাবে দুজনে অহনাদের কাছে চলে আসে।
_________
আদিত্য আফরিনের হাত ধরেই ভিতরে প্রবেশ করে পার্কের। আফরিন শুধু তাকিয়ে আছে আদিত্যর দিকে সত্যি মানুষটা অদ্ভুত। অহনা আহানকে বলে
” তুমি কি হ্যা? আমার প্রতি কোনো খেয়ালও নেই? একটু ভালোবাসো না আমাকে? আহান বলে
” বাসিতো শাহজাহান এর মতো। অহনা চোখ ছোট ছোট করে বলে
” তাহলে তাজমহল বানাচ্ছ কবে শুনি? আহান একটু দূরে সরে বলে
” জমিন কিনে ফেলেছি এখন তোমার মরার অপেক্ষা। আহানকে আর পায়কে আহান দৌড় তার পিছু পিছু অহনাও। পার্কটা একদম নিরিবিলি।
কৌশাল অন্যাকে বলে
” আদিত্য আর আফরিনকে একা ছেড়ে দাও আর আমার সাথে আসো। অন্যাও সেটাই ভালো মনে করল। অন্যা বলে
” আমরা একটু ঐদিকটা থেকে আসছি।
________
আফরিন কেমন চুপচাপ আর এই চুপ জিনিসটা আদিত্য কোনো ভাবেই মানতে পারছে না। আদিত্য আফরিনকে বলে
” চলো সামনে থাকা বেন্ঞ্চে বসি। আফরিনও আপত্তি করেনি। আদিত্য বলে
” এতো চুপচাপ কেন? আইসক্রিম খাবে? আচ্ছা দাড়াও নিয়ে আসছি। আফরিনকে কিছু বলতে না দিয়ে আদিত্য আইসক্রিম নিয়ে আসে। আফরিন তখন ব্যস্ত চারদিকে চোখ বুলাতে। আদিত্য আইসক্রিম খুলে সেটা লাগিয়ে দেয় আফরিনের নাকে। আফরিন চোখ ছোট ছোট করে আদিত্যর দিকে তাকায়। আদিত্য একটা হাসি দিয়ে বলে
” একদম পারফেক্ট। আফরিন আদিত্যর অন্য হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে খেতে লাগে। আদিত্য ভেবেছিল হয়তো আফরিন প্রতিশোধ নিবে।
আদিত্য আফরিনের পাশে বসে পরে আর হাতটা ধরে বলে
” আফরিন আমি জানি না মা হারানোর কষ্ট টা কেমন কিন্তু এটা জানি এর থেকে হয়তো বড় কোনো কষ্ট নেই। পৃথিবীর এক আজব নিয়ম আজ বাদে কাল প্রিয় মানুষ গুলো স্মৃতি হয়ে যায়। পৃথিবীতে কেউ আর সারা জীবন বাঁচতে পারে না। কিন্তু তার স্মৃতি গুলো বেঁচে থাকে। দেখ আন্টির আয়ু এতোটুকুও সময় ছিল আর সে সময়টা তুমি তাকে পাশে পেয়েছ। তার স্মৃতি গুলো বেঁচে আছে আর সারা জীবন থাকবে। আর তুমি এমন ঘরবন্দী হয়ে বসে থাকলে হবে? তোমারও তো একটা লাইফ আছে!? সব মিলিয়ে এখন একটাই কথা বলবো এই কঠর সত্যি টা তোমাকে মানতে হবে। জানি সহজ না তাও।
আফরিন মনযোগ দিয়ে আদিত্যর কথা শুনছে। আদিত্য আবার বলে
” প্রত্যেকের জীবনে এই ঘোর কালো একটা শ্রাবণ সন্ধ্যার ঝড় ঠিকি উঠে কিন্তু তখন তাকে ভেঙে পরলে চলবে না। হয়তো এই ঝড় অন্ধকার কাটিয়ে পূর্ব আকাশে উুকি দিবে নতুন সূর্য। শুরু হবে নতুন একদিনের। আকাশ ঝুড়ে উুকিঁ দিবে সাত রঙের সেই সাত রাঙা রঙধনু টা। আভির্ভাব হবে নতুন এক গল্পের। জবীন সুখ, দুঃখ কান্না সব থাকে সবটাই মানতে হবে শুধু তো সুখের খোঁজ করলে হবে না!! দুঃখের পরই এক টুকরো সুখের খুঁজ করা যায়।
আফরিন যেন এক নতুন আদিত্যকে দেখছে। আদিত্য আফরিনকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে
” জানি আমি হেন্ডসাম + অনেক মেয়ের ক্রাশ কিন্তু এভাবে তাকিয়ে থাকলে আমার লজ্জা লাগে। এভাবে তাকিয় না প্লিজ।
আফরিন বলে
” ভেবেছিলাম হয়তো ভালো হয়েগিয়েছেন। কিন্তু আপনি যে সোজা জিলাপি আমি সেটা ভুলে গিয়েছিলাম। আদিত্য আফরিনের কথা শুনে
” হেসে দেয়। আফরিন আদিত্যর দিকে তাকালে তখনো আদিত্য হাসতে হাসতে বলে
” একটু হাসো! আদিত্য সেই হাসতে হাসতে আবার বলে
” হাসো না একটু। আফরিন এবার অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে হেসে দেয়। আদিত্য বলে
” আহহ শান্তি ফাইনালি ২ দিন পর আবার হাসতে দেখলাম। আফরিন বলে
” হয়েছে এখন চলুন অহনা, অন্যা, আহান কৌশাল ভাইয়া কোথায়। আদিত্য বলে
” চলো। ডান পাশে যেতেই দেখে অহনা গাছের ডাল হাতে দাড়িয়ে আছে আর আহান কান ধরে উঠবস করছে। আহান বলছে
” জান, আমার অহু কুহু কুহু করা অহু জীবনে আর তোমাকে জীবন্ত অবস্থায় মারার প্লান করব না।
অহনা বলে
” আরেকটা কথা বলবি কুঁচি কুঁচি করে তোকে ময়লার ড্রেনে ফেলে দিয়ে আসবো।
আদিত্য কে দেখে আহান দৌড়ে যায় আদিত্যর কাছে আর বলে
” ভাই রক্ষা কর আমাকে এই দজ্জাল মাইয়ার হাত থেকে।
আদিত্য জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে আহান সব বললে আদিত্য বলে
” তোকে পিটানোই দরকরা। অহনা যা ইচ্ছা করো। অহনা বলে
” করবত বিয়ে করব৷ তার পর বুজবে। আর সবাই হেসে দেয় কিন্তু আফরিনের দৃষ্টি আকাশে। হয়তো একটু পরেই বৃষ্টি হবে।
____________
অন্যা আর কৌশালও আসছে ঝগড়া করতে করতে। অন্যা বলছে
” আপনাকে আমি জেলে পাঠাবো। কৌশাল বলে
” জেলে পাঠাতে হলে কোনো অপরাধ করতে হয় তা আমার অপরাধ টা কি?? অন্যা বলে
” আমার মাথার ব্রেন খাওয়ার অপরাধ। কৌশাল বলে
” তোমার ব্রেনও আছে? ওয়াও আমাদের দেশ ধন্য।
অন্যা বলে
“মানে? আপনি কিন্তু আমাকে অপমান করছেন। কৌশাল বলে
” মানে আমি ভাবতাম তুমি মাথা মোটা , কিন্তু আজ তুমি বললা যে না তোমার ব্রেন আছে, কিন্তু সত্যি আছে?
ওদের কাহিনি দেখে সবাই এখন ওদের নিয়ে ব্যস্ত। কৌশালকে অন্যা বলে
” অহহ আচ্ছা তাই না?? কৌশাল বলে
” হ্যা তাই। অন্যা বলে
” তাহলে আপনার কাছে ২ টা ওপশন একটা হলো ৫০ কোটি টাকা আরেকটা হচ্ছে খুব বুদ্ধিমান একটা ব্রেন আপনি কোনটা নিবেন? কৌশাল বলে
” অবশ্যই ব্রেন। অন্যা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয়। কৌশাল বলে
” এমন মুখকে পেঁচির মতো করার মানে কি? আর তুমি কি নিতা!? অন্যা বলে
” আমি টাকা নিতাম। যার কাছে যেটা নেই সে সেটাই নিবে। আর এখন এটা প্রমাণিত আপনার কোনো ব্রেন নেই।
ওদের ঝগড়া দেখে এবার আফরিন জোরে চিৎকার দিয়ে বলে
“চুপ! দু’জনই চুপ। কি শুরু করেছে?? তোমাদের থেকে টম এন্ড জেরিও ভালো। এখন আর কেউ কথা বলবা না বাসায় চলো ভালো লাগছে না।
বলেই আদিত্যর হাত ধরে হাটতে শুরু করে। সবাইতো অবাক!! আফরিনের যখন মনে পরে সে আদিত্যর হাত ধরেছে আফরিন ছাড়তে চাইলে আদিত্য ধরে ফেলে আর বলে
” তুমি ছাড়তে চাইলেও আমি আর ছাড়ছি না।
চলবে…….
তুমি ছাড়তে চাইলেও আমি আর ছাড়ছি না। সত্যি কি এভাবে আফরিনের হাত আকরে ধরে রাখতে পারবে আদিত্য ? নাকি সময়ের আগেই সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাবে!?