তুই_তারারে_ভিনদেশী পর্ব ১৩

গল্পের নামঃ- #তুই_তারারে_ভিনদেশী(সিজন-২)

লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)

part:13
সেই কখন থেকে দরজায় নক করে যাচ্ছে আদিত্য আর কৌশাল। অপর দিকে বেচারা আহান সারারাত ফোনের কারণে ঘুমাতে পারেনি। আদিত্য বাইরে থেকে জোর গলায় বলে

” হইছেরে ভাই বের হো এইবার। নাকি ইস্টার জলসার মতো আন্টিকে ছুয়ে ওয়াদা করছিস বউ বাচ্চা নিয়ে একবারে বের হবি।

কৌশাল বলে

” দেখ তোর চাচাতো, ফুপাতো,খালাতো, তালতো সব ভাই বোন চাচা-চাচি। এক কথায় সবাই ডেকে গিয়েছে এখন তুই উঠবি? নাকি পুলিশ ডেকে রহস্য উদঘাটন করব।কেন বের হচ্ছিস না। তখনই দরজা খুলে বেরিয়ে আসে আহান। চোখ কচলাতে কচলাতে বলে

” হ্যা পুলিশ ডাক আমিও দেখি তদন্ত করে আমার রুমে ফোনকে ফেলে রেখে এসেছে! কৌশাল জিব কেটে বলে

” এইরে আমার ফোনটা কালকে থেকে পাচ্ছি না হয়তো ফেলে রেখে এসেছি সর তো খুজে বের করি। কৌশাল রুমে ঢুকতে যাবে আহান কৌশালকে বের করতে করতে বলে

” সারা রাত যেহেতু ফোনের খুজ করিসনাই এখনো করবি না। তখনই আসে আফরিন আর অন্যা। সাথে আরো কয়েকজন মেয়ে। অন্যা আহানকে বলে

” ভাইয়া আমাদের বান্ধবী কোথায়!? আহান একটা হাসি দিয়ে বলে

” শাওয়রা গাছের মগ ডালে। অন্যা ভেবাচেকা খেয়ে যায় আহানের এই কথা শুনে। আদিত্য বলে

” অনেক হয়েছে এবার নিচে আয়। বিকেলে রিসেপশন। আহান কৌশালকে ডেকে কানে কানে কিছু বলে। কৌশাল আবার অন্যার কানে কানে কিছু একটা বলে

আর চলে যায় আদিত্য কে নিয়ে। আফরিন অন্যাকে জিগ্যেস করলো

” কৌশাল ভাইয়া কি বলেছে?? অন্যা বলে

” না কিছু না, চলতো।

______________

আফরিন গার্ডেনে একটা চেয়ারে বসে ফোন টিপছে আর হাতের নখ কামড়াচ্ছে। আদিত্য এসে একটা ধমক দিয়ে বলে

” বাচ্চাদের মতো দাঁত দিয়ে নখ কাটা বন্ধ করো। আর খুদা লাগলে বলতে পারো কিন্তু নখ খাওয়ার কি আছে। আফরিন আদিত্যর দিকে বিরক্ত মাখা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে

” আপনার সমস্যা কি? কি চাই!! আদিত্য বলে

” তোমাকে চাই। আফরিন বলে

” আমাকে দিয়ে কি করবেন আপনি!! আদিত্য বলে

” ভালোবাসি যে।

আফরিন একটা তাচ্ছিল্যর হাসি দিয়ে বলে

” তা কখনো সম্ভব না। ভালোবাসাতে সম্মান লাগে, বিশ্বাস লাগে এটা এমনি এমনি হয় না৷

আদিত্য বলে

” আমি সেদিন যা বলেছিলাম রাগের মাথায়। কিন্তু আমি সেদিন তোমাকে অনেক হার্ট করেছি। আই এম সরি। যা শাস্তি দিবে মাথা পেতে নিব। তাও প্লিজ। আফরিন বলে

” কৌশাল ভাইয়া আপনাকে ডাকছে। আদিত্য একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে কৌশালের সাথে কাজে লেগে পরে।

_____________

আজ অহনা পরেছে ডার্ক পিংক কালারের লেহেঙ্গা ব্রাইডিয়াল মেকাপ। অন্যা একটা হুয়াইট কালারের লং ড্রেস খুব সিম্পল চুলগুলো খোলা। আফরিনের মনে হচ্ছে সে অন্যার মাঝে পুরনো আফরিনকে দেখছে।

আফরিন পরেছে স্কাই ব্লু কালারের লং গরজিয়াছ ড্রেস, ঠোঁটে রেড কালারের লিপস্টিক আর হালকা সাজ। জুয়েলারি বলতে কানে হুয়াইট ইস্টোনের বড় দুল।

কাততালিয় ভাবে আদিত্যও আজ ইস্কাই ব্লু কালারের কোট সাদা শার্ট ইস্কাই ব্লু কালারের পেন্ট। সম্পূর্ণ ফরমাল লুক যাকে বলে।

কৌশাল পরেছে সাদা শার্ট আর কালো পেন্ট। আহান পরেছে হুয়াইট কালারের শেরওয়ানি। হাতে ঘড়ি।

_______________

অনুষ্ঠান শুরু হয়েগিয়েছে, মেহমানরা কথা বলছে। হঠাৎ করেই লাইট ওফ সেন্টার লাইটের আলোয় দেখা মিলে আহানের। আহান বলে

” লেডিস এন্ড জেন্টেলমেন্ট, শুনিছি বিয়ের মাঝে ছেলে আর মেয়ের কাহিনি অন্যরা গানের মাঝে প্রকাশ করে। আমি ভাবলাম আমিও করি কিন্তু আমার না অন্য কারো যারা আমার খুব কাছের৷ তো শুরু করা যাক।

হঠাৎকরেই আবার লাইট চলে যায়। বেশ কিছু সময় পর লাইট আসলে দেখা যায় সোফায় বসে আছে কৌশাল সাথে আছে আহানের কিছু কাজেন কিন্তু তারা সাজে একটু বৃদ্ধ।
তখনই অন্যা আসে হাতে জুসের গ্লাস হাতে। গানের মিউজিক শুরু হয়,,,,

” চেনা শহরে অচেনা ভিরে তোমাকে পেয়েছি খুঁজে

( হটাৎ করেই অন্যার হাতের জুস গিয়ে পরে কৌশালের গায়ে, কৌশাল ফোন ছেড়ে রাগী দৃষ্টিতে তাকায় কিন্তু একটু পরই অন্যা কানে হাতে দিয়ে সরি বলে। আফরিনের চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেদিন যখন আদিত্য আর আফরিনের প্রথম দেখা হয়। অপর দিকে আদিত্য সেই কখন থেকে তাকিয়ে আছে আফরিনের দিকে আফরিন আদিত্যর দিকে তাকাতেই চোখাচোখি হয় আর আফরিন চোখ সরিয়ে নেয়।)

“কিছু অভিমান, কিছু পিছুটান ছেড়ে যাবে না কখনোই।

(তারপর দেখানো হয় আরেক জুটি। ব্লু কালারের ড্রেস পরা মেয়েটা ছেলেটা কালো কালের শার্ট আর পেন্ট পরা। মেয়েটার ভাব দেখে বুঝা যাচ্ছে মেয়েটা ঝগড়া করছে আর ছেলেটার সাথে দাড়িয়ে আছে আরো দুইটা ছেলে, মেয়েটা ছেলেটার হাতে ফোন ধরিয়ে চলে যায়, আর আদিত্যর মনে পরে সেইদিনের কথা যেদিন আদিত্যর ফোন আফরিনের ব্যাগে চলে যায়। )

” চায়নি আমি হারাও তুমি বাড়াও মনের দুরত্ব।

(তারপরে আশে আরেকজুটি তিনটা মেয়ে একসাথে আসছে গেটাআপে বুঝা যাচ্ছে ভার্সিটির মেয়ে। তখনই কিছু ছেলে তাদের ডিস্টার্ব করার এক্টিং করে। তখনই এন্ট্রি হয় অনেকের, আফরিনের মনে পরে যায় আদিত্যর সেদিনের কাহিনী, আদিত্য শুধু দিনগুলো মনে করছে।)

” তবুও দুজন দূরে হারাই, জিতেও দুজন হেরে যাই।

( তখনই লাইট ওফ হয়ে যায় আর যখন লাইট ওন হয় একটা মেয়ে মাথায় ছাতা দিয়ে দৌড়ে একটা জায়গায় আসে তার একটু পরই আরেকটা ছেলে। কিছু সময় কথা হয় আর ছেলেটা মেয়েটার গালে কিস করে দেয়। আফরিনের মনে পরে যায় আদিত্যর প্রথম স্পর্শের কথা। লজ্জাটা যেন এখনো তাকে ঝেকে ধরে। আদিত্যেরও মনে পরে যায়)

তবুও দুজন দূরে হারাই, জিতেও দুজন হেরে যাই।

(তখন দেখায় একটা ফুল ফ্যামেলি, সবাই কান্না করছে তার মাঝে নজর কারে একটা মেয়ের আহাজারি আর হা-হা কার। আফরিন বুঝে যায় এটা তার মায়ের মৃত্যুর কাহিনি, চোখে পানি চলে আসে।)

কি দরকার মিছে আবদার ভুলের পাল্লা ভারি৷
( তারপর একটা ছেলে এসে মেয়েটাকে খুব সুন্দর করে সামলায়,)

তখনই আবার আহানকে দেখতে পাওয়া যায়। আহান বলে

” সবই ঠিক ঠাক চলছিল, মেয়েটাও ছেলেটাকে সবে ভালো বাসতে শুরু করেছিল কিন্তু হলো এক ঝামেলা। তারপর মেয়েটার আর ছেলেটার ফ্রেন্ড মিলে একটা প্লেনিং করে তখন আসে আরেক নতুন মোর। সবাই মনযোগ দিয়ে আহানের কথা শুনছিল তখনই পাশে আলো জ্বলে উঠে সবাই সেদিকে তাকায়।

“জানি নয় ছয় সবই অভিনয় তাই দুজনের আড়ি।

( ছেলেটা মেয়েকে ইচ্ছে মতো বকে, মেয়েটার ফ্রেন্ডরা কিছু বলতে চাইছে, আদিত্য বেশ বুঝতে পারছে এটা সেই দিনের ঘটনা যখন সে আফরিনকে অন্য একটা ছেলের সাথে দেখেছিল)

আফরিনের চোখ বেয়ে পানি ঝড়ছে। ইচ্ছে করছে আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে সব ঠিক করে নিতে কিন্তু হ্যা কোথায় জেন এই কিন্তুটা থেকেই যায়। হঠাৎ করেই আফরিনের আর আদিত্যর দিকে ব্লু লাইট আসে। সেখান থেকে আফরিন আর আদিত্যর মাঝ থেকে বেড়িয়ে আসে অন্যা আর কৌশাল। সেম সাজ আফরিনের মতো অন্যা। আর কৌশাল পরেছে আদিত্যর মতো।

গানের মিউজিকের সাথে তালমিলিয়ে কৌশাল ধীর পায়ে আফরিনের দিকে মানে অন্যার দিকে যায় আর অন্যার হাত ধরে চুমু খেয়ে গানের সাথে তালমিলিয়ে গাইতে লাগে

” তোমার হাসির জন্য আমি সব করে যাই। ভালোবেসে দিয়েছি তোমায় নিজের পুরোটাই।

অন্যা কৌশালের গালে হাত রেখে গানের সাথে তালমিলিয়ে বলে

” চাইনি আমি হারাও তুমি বাড়াও মনের দুরত্ব।

আর কৌশালকে ছেড়ে দিয়ে দূরে সরে যায়। আর গান বাজতে লাগে

“তবুও দুজন দূরে হারাই জিতেও দুজন হেরে যাই।

সবাই চুপ আদিত্য ধীর পায়ে আফরিনের দিকে এগিয়ে যায়। তা দেখে আফরিন পিছিয়ে দৌড়ে বেক সাইডে চলে যায় আদিত্যও আফরিনের পিছু পিছু যায়। সবাই ওদের কাহিনি দেখে অবাক। অন্যা কৌশালের কাঁধে হাত রাখলে আহান পিছন থেকে বলে

” এবার যদি সব ঠিক হয়। অহনা বলে

” হুমম।

______________

আফরিন বেক সাইড থেকে সোজা বাসার ছাঁদে চলে যায়। আদিত্যও আফরিনের পিছু পিছু যায়। আফরিন মুখ চেপে ধরে কান্না করছে। আদিত্য আফরিন বলে ডাকলে আফরিন আদিত্যর দিকে তাকায়। আদিত্য ধীর পায়ে এগিয়ে আসে আফরিনের দিকে আফরিন পিছিয়ে যায়। আদিত্য গিয়ে আফরিনের হাত ধরে নিচে বসে পরে আর কাঁদতে কাঁদতে বলে

” আমি পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে। মানছি ভুল করেছি, সেই শাস্তিও দিয়েছ। তিনটা বছর কম নয় কি? আর কত। প্লিজ আই এম সরি। তুমি যা বলবে আমি করতে রাজী। হাত জোর করে বলছি লাস্ট একটা সুযোগ দাও, ওয়াদা করলাম কোনো দিন আর কাঁদাবো না। আমি আর পারছি না। আই লাভ ইউ।

চলবে

গল্পটা শেষের দিকে, তো সবাই গঠন মূলক কমেন্ট করো। আদিকে কি করব!! আফরিনের হাতে মেরে ফেলি ছাঁদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে, কি বলো!? অখে বায়🥴

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here