ভালোবাসার নতুন প্রনয়ণ অন্তিম পর্ব

গল্পের নামঃ- #ভালোবাসার_নতুন_প্রনয়ণ

লেখিকাঃ- #konika_islam (sanju)

part:16 লাস্ট

এরিশ হূরের দিকে মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে

” কেন মিস করছিলি নাকি?? হূর কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায় এরিশের কথায় কিন্তু নিজেও কমনা তাই সেও বলে

” আমি আপনাকে কেন মিস করতে যাবো? কিন্তু একটা কথা কি জানেন?? এরিশ ইশারায় বলে “কি”? হূর হাই তুলতে তুলতে বললো

” নার্সটা হয়তো আপনাকে লাইক করেছে। আপনাদের মানাবেও অনেক। সুন্দর জুটি। এরিশ হূরের কথা শুনে হূরের দিকে তাকিয়ে বলে

” আমার বউ আছে৷। দুইদিন পর বিয়ে করব ১ মাস পর বেইবি কোলে নিয়ে ছবি তুলবো তারপর দেওয়ালে টানিয়ে রাখব। আর ছবির কোনে লেখা থাকবে মেডফর ইচ-আদার…। ডাফার একটা, আরেকটা কথা বলবি তোকে জানলা দিয়ে নিচে ফেলে দিব।

হূর ভেংচি কেটে আরেক দিকে তাকায়। এরিশ তা দেখে হেসে নিজের কাজে মনযোগ দেয়।

________________

অপর দিকে বাসায় মৃধা আর দিদুনকে সবাই ইচ্ছে মতো কথা শুনচ্ছে, মৃধা, দিদুন কেউ কিছু বলতেও পারছে না। সবার একটাই কথা হূরের সাথে কিছু হলে খবর আছে। হূরকে বাসায় আনা হবে।

______________
বাসায় এসেছে আজ ২ দিন হতে চলো হূরের। মাথাটায় প্রচুর ব্যাথা। পায়ের কাটা জায়গা টাও এখনো শুকায়নি। আলাইনা সাথেই থাকে হূরের। কিন্তু এখন সে স্কুলে আশে পাশে কেউ নেই। গলাটা শুকিয়ে গেছে পানি পিপাসায়। হূর কোন রকম উঠে দাড়ায় পায়ে ব্যাথা অনুভব করছে কিন্তু তাও এক পা দুপা করে আগাতে লাগে কিন্তু হঠাৎ করেই মাথাটা চক্কর দেয় আর সাথে হূর নিচে বসে পরে। তখনই এরিশ আসে হূরের রুমে। আজ ভার্সিটি থেকে তাড়াতাড়ি ফিরেছে শুধু হূরের জন্য। হূরকে এভাবে বসে থাকতে দেখে তাড়াতারি করে হূরের কাছে যায়। হূর তখনো চোখ বন্ধ করে আছে। এরিশ সাথে সাথে হূরকে কোলে তুলে নেয়। হূরের মনে হচ্ছে সে হাওয়ায় ভাসছে। চোখ খুলে দেখে এরিশ। এরিশ কে দেখে বেশ চমকে যায় হূর। কারণ তার কোনো আশাই ছিল না। এরিশ হূরকে বেডে বসিয়ে দেয় আর দৌড়ে নিচে গিয়ে পানি নিয়ে আসে। এরিশকে তার মা ডাকলেও এরিশ না শুনেই চলে আসে।

হূরকে পানি দিলে হূর সবটা খেয়ে এরিশের দিকে তাকয়। এরিশের প্রথম কথাই হলো

” তোকে বারণ করা হয়েছে না পাকনামি না করতে তুই আবার নিচে নামতে গিয়েছিস কেন?? হূর বলে

” আসলে পানি পিপাসা পেয়েছিল। কিন্তু কেউ ছিল না। সবাই কাজে ব্যস্ত ছিল। এরিশ হূররে পাশে বসে পরে হূর সেটা দেখে বলে

” আপনি এখন আসতে পারেন। এরিশ ভ্রুকুচকে বলে

” তোর কথায় এসেছি আমি?? আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই এসেছি যখন ইচ্ছে হবে চলে যাবো। হূর ভেংচি কেটে অন্য দিকে তাকায়। এরিশ বলে

” অন্য দিকে না তাকিয়ে নিজের হবু বরের দিকে তাকা। দেখ কত হেন্ডসাম একটা ছেলে আর তুই!! তুই একটা আজব প্রাণী অকারণেই হূরপরি বলি তুই তো একটা আজব এলিয়ান। হূর এরিশকে উদ্দেশ্য করে বলে

” হেন্ডসাম নাকি ভাঙা গাড়ির হেন্ডেল কে জানে। আর আপনাকে আমি কি দেখতে যাবো মানুষটা কি আপনি নতুন? আপনাকে আমার জানা আছে। এরিশ বলে

” যেমন?? হূর কিছু সময় চুপ থেকে বলে

” এই যেমন বেশি রাগলে হূর বেইবি, কম রাগ থাকলে হূর চলে যা। আর,, এরিশ এক ভ্রু উচু করে বলে

” আর কি???

” না কিছু না। এরিশ হূরের দিকে ঝুকে আসলে হূর মাথা নিচু করে ফেলে এরিশ হূরের কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে

” আর যখন খুব ভালোবাসি তখন হূরপরি ডাকি তাইতো? তোর ধারণা ভুল আমার রাগ, অভিমান সব কিছুর পিছনেই তোর জন্য থাকে এক প্রবল আবেগ। হূর সেই ভাবেই বলে

” হুমম আর সেটা কিছু দিন পর কেটে যাবে।

এরিশ হূরকে অবাক করে দিয়ে বলে

” কেটে যাওয়ার হলে অনেক আগেই যতো।

_________________

সময় কখন কেনদিক দিয়ে চলে যায় তা বলা মুশকিল। যখন সময়টা ভালো থাকে দ্রুতো সেটা কেটে যায়। আর যখন সময় টা খারাপ থাকে তখন মনে হয় যেন থমকে গিয়েছে। আসলে এখানে একটা রহস্য আছে। রহস্যটা হচ্ছে আমরা সময়টা কে কিভাবে রাখতে চাই। বেশ ভালো ভাবেই কাটছে এরিশ আর হূরের দিন গুলো। এরিশের রাগ ভালোবাসা সব কিছুর প্রেমে পরে গেছে হূর৷ এখন সেও উপভোগ করে এরিশের কথা গুলো।

মাস খানিক হবে আজ হূরের আর এরিশের গায়েহলুদ। মাত্রই হূর রুমে এসেছে আর হলুদ পরিষ্কার করছে৷ তখনই তার রুমে কেউ প্রবেশ করে পিছনে তাকিয়ে দেখে এরিশ। এরিশকে দেখে হূর বলে

” আপনি এখানে কি করেন?? যান এখান থেকে কেউ দেখলে কি ভাববে?? তখনই আলাইনা ওয়াশ রুম থেকে বেড়িয়ে আসে। এরিশ অবাক আলাইনা কে দেখে৷ আলাইনা বলে

” তুমি এখানে কি কর?? এরিশ বলে

” তুই এখানে কি করিস। যা এখান থেকে। আলাইনা বলে

” আমার বাড়ি আমার ঘর আমাকেই বলে সরসর৷ আরেকটা কিছু বলবা হূর আপি আর তোমার বিয়েই হতে দিবো না। এরিশ ভেংচি কেটে বলে

” তুই কে পুচকি ইদুরের বাচ্চা। তোর বোনকে নিয়ে পালিয়ে যাবো। আলাইনা বলে

” তাহলে আমিও সবাইকে বলে দিব তুমি হূর আপিকে সেদিন কিস করেছ। এরিশ চুপ করে যায়। আর হূর রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে এরিশের দিকে। কিছু দিন আগে মৃধা আর দিদুন যখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে সরি বলে। সেদিন রাতে আলাইনা বায়না ধরে আইসক্রিম খাবে। তখন এরিশ, আলাইনা আর হূর আইসক্রিম খেতে যায়। হঠাৎ করে এরিশ বলে

” আলাইনা চোখ ওফ কর। আলাইনা দুইহাত দিয়ে চোখ বন্ধ করলেও হাতের আঙ্গুলের মাঝের ফাঁকা দিয়ে ঠিকই দেখেছে এরিশ হূরের গালে কিস করেছে।

বর্তমান

এরিশ আলাইনাকে বলে

” সেদিন চুরি করে দেখেছিস এখন তোকে লাইভ দেখাবো। আলাইনা একটা বালিশ নিয়ে এরিশকে মারতে মারতে বলে

” বেরহোও রুম থেকে। নয়তো দেখো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। যাও এখান থেকে। বড় ভাই হয়ে ছোট বোনের সামনে আরেক বোনকে কিস করো লজ্জা লাগে না?? হূর ওদের কাহিনি দেখে হেসে ফেলে। এরিশ বলে

” এটা আমার বউ না আমার বোন। সরি সরি আমার বোন না বউ। বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।

______________
।আজ হূরের বিয়ে খুব সুন্দর করেই সাজানো হয়েছে হূরকে। ফোনে আজ আবার একটা মেসেজ এসেছে। হুমম এরিশই করেছে। তাকে এখন ছাঁদে যেতে হবে। সবাই কাজে ব্যস্ত এখন কেউ নেই তাই সে ছাঁদে চলে যায়। নিচে গার্ডেনে হইচই। হঠাৎ করে পিছন থেকে কারো কন্ঠে চমকে তাকায় হূর। এরিশ দাড়িয়ে। আজ আর হূরপরি বলে ডাকেনি তাকে

” মিসেস.এরিশ বলেই ডেকেছে। হূর এরিশকে দেখে একমনে তাকিয়ে আছে। এরিশ হূরের কাছে এসে হাত ধরে বলে

” আজ থেকে শুরু হবে আমার আর তোর #ভালোবাসার_নতুন_প্রনয়ণ৷ সব সম্পর্ক বদলে যাবে। দ্বিতীয় বারের মতো আবার আমাদের বিয়ে হবে। হূর অবাক হয়ে বলে

” দ্বিতীয় বিয়ে?? এরিশ বলে

” হুমমম, তোর এত বুঝতে হবে না। ঐটা কাউকে বলেনি যদি সবাই রাজি না হতো তাহলে সত্যি টা বলতাম। যাই হোক তোকে বলি সেদিন তিথি আর আবিরের না তোর আর আমার বিয়ে হয়েছিল। হূর আরেক দফা অবাক। এরিশ প্রতিবারের মতো ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চলে যায়।

___________

সব নিয়ম রীতি অনুযায়ী সম্পূর্ণ হয় হূর আর এরিশের বিয়ে। হূরের নামের সাথে জড়িয়ে যায় এরিশের নাম। আর এরিশের জীবনের সাথে জড়িয়ে যায় চিরকালের জন্য হূর। সবাই দোয়া করিয় ওদের জন্য সবসময় যেন ওরা ভালো আর সুখে থাকে।

সমাপ্ত,,,,,,,,,,,,

1 COMMENT

  1. osomvob sundor ekta golpo. Onek valo legeche. Majhe majhe cokh a kanna chole ashchilo porar somoy. Thank you so much writer k eto sundor golpo upohar deyar jonno

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here