গল্পঃ #প্রতিশোধ
পর্বঃ ০৩+৪
লেখাঃ #Mst_Liza
,
বিছানায় উবূ হয়ে শুয়ে প্রিয়তমা স্ত্রী রাইশার কথা ভাবছে রাইসূল সিকদার।না যানি কতদিন তার এই বুকে মাথা রেখে ঘুমাই নি রাইশা।বুকের ভেতরটা অস্থিরতায় ছটফট করছে।এমনটা যেন মাঝ রাত হলেই হয়।আর তো মাত্র কটা দিন।তারপরই তো রাইশা ঠিক আগের মতোন তার এই বুকে ঘুমাবে।আর তাদের সন্তান? সে এতোদিনে হয়তো বাবা ডাক টাও শিঁখে গেছে।
আচ্ছা! রাইশার মধ্যে কি এখনও সেই ছেলে মানুষী গুলোই আছে নাকি মা হওয়ার পর নিজেকে একটু বদলে নিয়েছে? খুব যানতে ইচ্ছা করে! আবার ভয় হয় অনেক।রাইশা যেরকম জেদি মেয়ে আমার উপর রাগ করে উল্টো পাল্টা কিছু করে বসে নিতো সেদিন? কিন্তু আমি কি করতাম তখন..! মাকে যে ওই রকম অসুস্থতার সময়ে কস্ট দিতে পারতাম না। তবে রাইসার দেখাশুনা করার জন্য আমি তো আমার মিরা আপুকে রেখে এসেছি। মিরা আপু থাকতে এতো চিন্তা কিসের? বাবা মারা যাবার পর মিরা আপু নিজ হাতে সংসারের সব দায়িত্ব তুলে নিয়েছে। একা হাতে সামলিয়েছে সবকিছু।যে আমার ডাক্তারি পড়ার খরচ চালাতে গিয়ে নিজের একটা কিডনি পর্যন্ত বিক্রি করেছে। এমন আপুর কাছে থাকতে কিছুতেই আমার রাইশা খারাপ থাকতে পারে না। কথাগুলো বিচারণ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে রাইসূল।
,
সকালের এলার্ম বাজতেই এক লাফে বিছানা ছেড়ে উঠে বসে মিরা।তাকিয়ে দেখে সোহাগ তার কানের কাছে ঘড়িতে এলার্ম বাজিয়ে ধরে রেখেছে।
মিরাঃ আপনি??? আমতা আমতা করে বলে।
সোহাগ মির্জাঃ ঘড়িতে টাইম দেখেছিস কয়টা বাজে? বাড়ির কাগজগুলো কে করবে শুনি? আজ আমি অফিসে যাব না।তাই আজ বাড়িতেই ব্রেকফাস্ট করব ভেবেছি।আর তুই কিনা পরে পরে ঘুমোচ্ছিস?
মিরাঃ আপনি একটু বসুন আমি এক্ষুণী আপনার জন্য ব্রেকফাস্ট রেডি করে আনছি।বলে দরজার কাছে গিয়ে কিছু একটা ভেবে মিরা আবার ফিরে আসে।
সোহাগ মির্জাঃ কি হল?
মিরাঃ না মানে আপনি তো রোজ সকালে খুব ভোরে অফিসে চলে যান। বাইরে ব্রেকফাস্টে কি খান তাতো আমি যানি না।
সোহাগ মির্জাঃ স্ত্রী হয়েছিস আর এটুকুর খোঁজও নিস না।এ তুই তো দেখছি স্বামীর কি পছন্দ, অপছন্দ কিছুই যানিস না।আর বলিস কিনা আমার বউ হবি! হাত দিয়ে মিরার গালটা শক্ত করে চেপে ধরে।
মিরাঃ আহ্ ছাড়ুন আমাকে! সোহাগের থেকে মিরা নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে, আপনি যদি না বলেন তাহলে আমি যানবো কি করে? তারপর আমি কি থেকে কি আপনার জন্য বানিয়ে আনবো যদি আপনার মুখে না রোচে?
সোহাগ মিরাকে বিছানায় ছুড়ে মারে।শক্তকরে মিরার দুই বাহু চেপে ধরে বলে, তোর সাহশ তো দেখছি দিন দিন বেরে যাচ্ছে।মিরার ফোলা ঠোটটাতে আঙুল দিয়ে চেপে ধরে, আজ দেখছি তোর এই মুখে খুব বলি ফুটেছে।আর যেন কখনও তোকে আমার মুখের উপরে কথা বলতে না দেখি।নইলে এর ঝাঁজ তোকে বোঝাতে আমার বেশী টাইম লাগবে না।
মিরাঃ সোহাগের আঙুলে একটা কামড় বসিয়ে দেই। অনেক হয়েছে আর না।বিয়ের আগে তো শুধু আপনার মুখে মধু ফুটতো।এখন তো ভাষার ছিড়িতে আপনার কাছেও আসতে ঘৃণা হয় আমার।সোহাগকে একটা ধাক্কা দিয়ে উঠে দাড়িয়ে, কাপুরুষের মতো আমার গায়ে যে ভাবে হাত দেন মাঝে মাঝে তো মনে হয় আপনার মতো লোকের পুরুষত্ব না থাকায় ভালো ছিল।এতো জঘন্য ব্যবহার করেন আমার সাথে। কেন কি অপরাধ করেছি আমি? আর কত? আর কত এইভাবে অত্যাচার করবেন আমার উপর।এই কি আপনার সেই ভালোবাসা? কি চান আপনি আমাকে একটু বলবেন? আমি আর পারছি না।হয় আমায় মুক্তি দিন নয় আমায় একটু ভালোবাসা দিন।খুব বিশ্বাস করেছিলাম আপনাকে আমি।বলেন না আপনার স্ত্রী হতে গেলে আর কি কি করতে হবে আমাকে? মেয়েরা তো বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর মনের পছন্দ অপন্দের খবরাখবরের খোঁজ নিয়ে আসে না।আপনি যদি আমাকে একটু সময় না দেন তাহলে কিভাবে আমি বুঝবো আপনাকে! কথাগুলো বলতে গিয়ে মিরার চোখে পানি চলে আসে।
সোহাগের মিরার মুখটা দেখে খুব মায়া হতে থাকে।একটা সময় মিরার চোখের পানি সোহাগ সহ্য করতে পারত না।মিরার মন খারাপ থাকলে সারাদিন একটার পর একটা সারপ্রাইজ দিয়ে মিরার মুখে হাসি ফোঁটানোর চেস্টা করত।
সোহাগ মিরার খুব কাছে চলে আসে।দুই হাত দিয়ে মিরার গালটা আকড়ে ধরে মুখটা উঁচু করে তোলে। নিজের ঠোঁট দিয়ে মিরার চোখের পানি মুছিয়ে দেই।তারপর যখনই নিজের ঠোঁটটা মিরার ঠোঁটে বসাতে যাবে ঠিক তখনই মিরা নিজের হাতটা দুইজনের ঠোঁটের মাঝখানে নিয়ে আসে।
মিরাঃ আমি ব্রাশ করি নি! সরুন। বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে কিচেনে চলে যায়। গ্যাসের চুলাটা অন করে দিয়ে বিরবির করে বলে লোকটা আস্ত একটা অসভ্য! যখন তখন শুধু আমাকে হেনস্তা করার বাহানা খুঁজে। নাহ এই লোকটাকে যেভাবেই হোক সোজা পথে আনতে হবে। কি পেয়েছেটা কি? আমি কি মানুষ না? আমারও একটা মন আছে।সেই মনটাতে খুব কস্ট হয় যখন আমার সাথে উনি খারাপ বিহেভ করেন।
কিছুক্ষণ পর,, মিরা গরম, গরম পরোটা আর আলুভাজি নিয়ে ঘড়ে এসে দেখে সোহাগ বিছানার উপর গাদাগাদি কাপড় মেলে রেখেছে।
মিরাঃ আমরা কি কোথাও যাচ্ছি?
সোহাগ মির্জাঃ নাহ।
মিরাঃ তাহলে এতো কাপড় কেন বের করে রেখেছেন? মনে তো হচ্ছে আলমারীর সব কাপড়ই এখানে!
সোহাগ মির্জাঃ তোমার কথাগুলো শুনে আমার মনটা বদলে ফেললাম।ভেবে দেখলাম তোমাকে স্ত্রী হবার একটা সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। সুযোগটা নিতে রাজি থাকলে তোমাকে কিছু পরীক্ষা দিতে হবে।পরীক্ষা দিয়ে পাশ করলেই তুমি আমার স্ত্রীর হবার সম্পূর্ণ সম্মাণ ও মর্যাদা পাবে।হতে পারবে আমার যোগ্য অধাঙ্গিনী।আর মনে রেখ আমার পরীক্ষায় উত্তির্ন না হলে আজ কিন্তু পুরো বাড়িতে ঝাড়ু-পোছা লাগিয়ে মেঝে পরিষ্কার করতে হবে।বাড়ির একটা কোনাও বাদ দিতে পারবে না। কয়েকটা কাপড় মিরার হাতে ধরিয়ে দিয়ে, ওয়াশরুমে যাও।৩০ মিনিট সময় আছে তোমার কাছে,,ওয়াশিন মেশিন ছাড়াই সব পরিষ্কার করবে। তারপর আয়রন করে ঠিক যেভাবে আগে আলমারীতে সাজানো ছিল সেভাবেই গুছিয়ে রাখবে।
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
মিরাঃ একটু মুচকি হেসে, এমন ফালতু আইডিয়া কোথা থেকে বের করেন বলেন তো? আমাকে কি আপনার বোকাঁ মনে হয়? পুরো কাপড়ের দোকান সামনে রেখে বলছেন ৩০ মিনিটে ধূয়ে আয়রন করে দিতে? আর শুনুন আমি আপনার খেলনা পুতুল নই।কোনো পরীক্ষা টরীক্ষাই আমি দিতে পারব না।আপনার এসব ছেলে মানুষী এবার বন্ধ করুন।আর এটা ভুলে যাবেন না আমাকে বিয়ের প্রস্তাবটা আপনিই দিয়েছিলেন।আমি আপনার যোগ্য নাকি অযোগ্য সেটা তো আপনার বিয়ের আগেই ভাবা উচিত ছিল।
মিরা বিছানা থেকে একটি শাড়ি আর তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।আর সোহাগ থ হয়ে পরে থাকে।বিছানার উপর বসে পড়ে পা ঝুলিয়ে দিয়ে ভাবে আর কি উপায়ে মিরাকে শাস্তি দেবে!
গল্পঃ #প্রতিশোধ
পর্বঃ ০৪
লেখাঃ #Mst_Liza
,
(ফ্লাশ ব্যাক)
খাবার টেবিলে বসে আছে রাইশা।
সখিনাঃ খাইয়া লউ মেম সাব!
রাইশাঃ না খালা! যতক্ষণ না ভাইয়া আসছে আমি কিছুই খাবো না।
সখিনাঃ এইডা কোনো কথা হইলো? সাহেব যদি রাতে না আহে তাইলে কি না খাইয়াই থাকবা?
রাইশাঃ হুমম খালা।তুমি আর কথা বলো নাতো।দেখছোই তো সেই কখন থেকে পেটের ভেতরে ইঁদুরে দৌঁড়া দৌঁড়ি করছে।
সখিনাঃ হের লাইগাই তো কইতাছি খাইয়া লউ।সাহেব না যানি কহন আইবো আর তোমারে আমি খাওয়াই নায় দেইখ্যা আমারেই কথা হুনাইবো।
রাইশাঃ প্লিজ খালা আর জোড় করো না।ভাইয়া হয়তো খুব বিজি আছে।দেখি না আরেকটু অপেক্ষা করে!
সোহাগ মির্জাঃ আর অপেক্ষা করা লাগবে না আমি এসে গেছি।
রাইশা উঠে গিয়ে সোহাগের সামনে এসে দাড়াই, এতো রাত করে কেন আসো ভাইয়া? যানো না আমি না খেয়ে বসে থাকি?
সোহাগ কান ধরে বলে, সরি ছুটকি। আসলে সারাদিন খুব বিজি ছিলাম।আজ তো লান্সটাও করার সময় পাই নি।
রাইশাঃ আচ্ছা হয়েছে এখন চলো ডিনার করবে।
সোহাগ মির্জাঃ হুমম চল।
,
মির্জা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি,
-আই লাভ ইউ জানু
-আই লাভ ইউ টু
-উম্মাহ
-উম্মাহ উমম
মিরা দরজার কাছে দাড়িঁয়ে কান পেতে হেলান দিয়ে কথাগুলো শুনার চেস্টা করছে আর বার বার নাক মুছছে।বিরবির করে বলছে ব্যাটা বেঈমান, খবিস, লুচ্চা সামুক।তোকে আমি দেখে নেব! এবার আসিস আমার কাছে? ভালোবাসা দাও না সোনা! ভালোবাসা দাও! ফাঁটা বাশ ধরাই দেব হাতে। আমার জীবনডারে ত্যানা ত্যানা কইরা এখন অন্য মেয়ে নিয়ে ফুরতি! তোরে তো আমি….
সোহাগ দরজাটা খুলতেই মিরা পরে যাবে।সোহাগ অমনি মিরার হাতটা ধরে বসে।মিরাকে নিজের খুব কাছে টেনে নেয়।তারপর মিরার কোমড়টি খুব শক্ত করে চেপে রেখে,
সোহাগ মির্জাঃ এই এক্ষুণি তো পড়ে যাচ্ছিলে।একটু সাবধানে থাকতে পারও না? মেয়েটিকে চোখের ইশারার চলে যেতে বলে।
মিরাঃ সরুন তো আপনি! আপনি একটা খারাপ লোক।আপনার সাথে কোনো কথা নেই।
সোহাগ মির্জাঃ কেন আমি আবার কি করলাম?
মিরাঃ সেটা আপনি খুব ভালো করেই যানেন।
সোহাগ মির্জাঃ কি যানি আমি?
মিরাঃ উহফ আপনি আসলেই একটা বজ্জাত।
সোহাগ মির্জাঃ ওই বজ্জাতের কি করেছি আমি?
মিরাঃ কি করেছেন আবার বলছেন ছি! ছি, ছি, ছি, ছি! মিরা ছি ছি করতে করতে মুখটা ঘুরিয়ে নেয় সোহাগের থেকে।
সোহাগ মির্জাঃ তোমার ছিঃ এর লিস্ট এতো লম্বা যে আমি বুঝে উঠতে পারছি না কি করেছি।যদি একটু বুঝিয়ে না বল….
সোহাগ আর কিছু বলার আগেই মিরা সোহাগের গালে একটা কিস বসিয়ে দেই।উম্মাহ!
মিরাঃ এই করছিলেন ওই মেয়েটার সাথে।মুখটা মলিন করে বলে।
সোহাগ একটু মুচকি হেসে, তাই বুঝি? তো আমি যাই করি না কেন তাতে তোমার কি? তুমি তো আর আমাকে ভালোবাসো না।তাছাড়াও আমি তো সালমান খান নই যে যুগ যুগ মেয়েরা আমার অপেক্ষায় বসে থাকবে।একবার মাথার চুল পাঁকতে শুরু করলে সুন্দরী মেয়েরা আমায় আংকেল বলে ডাকবে, তুমি বোঝা না?
মিরা মুখ টিপে হাসতে শুরু করে।সত্যিই আপনার মাথাতে কিছু কিছু চুল পেঁকে গেছে।এখন তো সব মেয়েরাই আপনাকে আংকেল বলবে।এইতো দেখুন না..এখানে একটা, এখানেও আছে।এখানেও আর এখানে…সোহাগের চুলের এখানে-ওখানে আঙুলের ইশারায় দেখায় মিরা।
সোহাগ কিছু না বলেই মিরার কোমড়টা ছেড়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মাথার পাঁকা চুলগুলো খুঁজতে থাকে।
মিরা সোহাগের পিঁছন পিঁছন এসে ওয়াশরুমের দরজাটা একটু আলগা করে ব্যাপারটা দেখে মুখ টিপে হাসে।তখন সোহাগ আয়নার ভেতরে মিরাকে দেখতে পেয়ে,
সোহাগ মির্জাঃ এই মিরা কোথায় পাঁকা চুল? একটা পাঁকা চুলও তো খুঁজে পাচ্ছি না।
মিরা ওয়াশরুমের ভেতরে চলে আসে।
মিরাঃ আরে স্যার! আপনি সত্যিই একটা বোকা।আপনার মাথায় পাকা চুল….
মিরা আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই সোহাগ পানি ছেড়ে দেয়।আস্তে আস্তে মিরার সারা শরীর ভিজে যায়।ভিজে গিয়ে মিরা কুকড়ে থাকে।থর থর করে দাঁতগুলো কাপে।একই তো কলকলে শীতের দিন।তার উপর সকাল সকাল ভেজা শরীরে।প্রচন্ড ঠান্ডা আহ্ গাল থেকেই ধোঁয়া বের হচ্ছে।
কেমন লাগে এই সময়ে?
,
মিরা রেগে চলে যায়। পরপর তিনদিন অফিসে আসে না।সোহাগ অনেক চেষ্টা করে মিরার মান ভাঙানোর।যার জন্য একটার পর একটা সারপ্রাইজ প্লান করতে থাকে মিরার জন্য।আর মিরারও সারপ্রাইজ পেতে ভালো লাগে তাই সোহাগের উপর রেগে থাকার নাটক করে যায়। তারপর যখন এক ঝড়-বৃস্টির রাতে মিরার বাড়ির সামনে দাড়িয়ে কলকলে শীতে সোহাগ ভিজছিল তখন গিয়ে মিরা বলে রেগে থাকার নাটক করেছে।
,
সোহাগ মির্জাঃ অতীতের ছোট ছোট সুখের মুহূর্তগুলো কেন খুব দ্রত গতিতে চলে যায়? কেন সেই মুহূর্তগুলোকে আটকে রাখা যাই না?
,
{বিছানায় পা ঝুলিয়ে দিয়ে বসে বসে মিরাকে শাস্তি দেওয়ার উপায় খুঁজতে গিয়ে মিরার সাথে কাটানো সুখের মুহূর্তগুলোই মনে পড়ে যায় সোহাগের। বুকের ভেতরটাই এক চিনচিনে ব্যাথা হয় মিরাকে কস্ট দিলে। কিন্তু মিরা যে অপরাধী। ওর ভাই যে অপরাধী। ছোটবেলা নৃশংস ভাবে চোখের সামনে বাবা-মাকে হত্যা হতে দেখেও কিছু করতে পারে নি সোহাগ।তারপর থেকে বোনই তো সোহাগের সবটা জুড়ে। খুব বেশি দিন না হলেও সোহাগের জীবনে মিরার আগমন হওয়াতে ভেতর থেকে মিরার অস্তিত্বের জানান দেয়া অস্বীকার করা যায় না।সোহাগ যেদিন মিরাকে প্রথম দেখেছিল সেদিন থেকেই মিরাকে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। আর আজ এতো কাছে পেয়েও পারছে না আপন করে নিতে।এটাই হয়তো বিধির বিধান!}
হঠাৎ সোহাগের সেলফোনটা বেজে ওঠে। তাকিয়ে দেখে হসপিটাল থেকে ডা. শিহাব কল করেছে।কলটা রিসিভ করার পর সোহাগের চোখে মুখে এক উজ্জ্বল রেখা ফুটে ওঠে।
সোহাগ মির্জাঃ কি বললেন ডাক্তার? আমার বোনের জ্ঞান ফিরেছে? কথা বলতে পারছে? আমি এক্ষুনি আসছি!
অনেক আনন্দ আর উল্লাস নিয়ে হসপিটালের উদ্দেশ্য রওনা হয় সোহাগ মির্জা।
আর এদিকে মিরা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে সোহাগকে খোঁজে।
মিরাঃ গেল কোথায় মানুষটা? বলে তো ছিল আজ সারাদিন বাড়িতে থাকবে! আসলে এই লোকটা শুধরাবে না কখনও। পরনারীর নেশায় আসক্ত হয়ে গেছে।যার জন্য বাড়িতে মন বসে না।আজ আসুন আপনি কোনো মেয়েকে সাথে নিয়ে যদি ঘার ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের না করেছি তাহলে আমিও আপনার স্ত্রী নই।
চলবে……