প্রপর্ণ পর্ব ৩৫

#উপন্যাস_প্রপর্ণ(৩৫)
#কুরআতুল_আয়েন

বুরাগ বেলীর মান অভিমানের পাল্লার সমাপ্তি ঘটেছে।সব কিছু মিলিয়ে বুরাগ বেলীর সংসার জীবন খুব ভালো চলছে।কেউ কাউকে ভালোবাসতে কোনো কমতি রাখে নি।বুরাগের ভালোবাসা যেনো দিনদিন দ্বিগুণ পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।সেই সাথে,আদর খুনশুটি তো আছেই।তাদের সুখ,দুঃখ,কষ্টের সাথে তাল মিলিয়ে ছোট্ট শিউলির আজকে পাঁচ বছর।সময় যে কীভাবে বয়ে যায় তা ভাবাই মুশকিল।এইতো আজ আছে তো কাল নেই।

বেলী বিছানায় বসে বই দেখছিলো।সামনে সপ্তাহ তার অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা।বুরাগের সাপোর্টে সে সামনে এগিয়ে গিয়েছে।সেই সাথে,জাবেদার মনের আশাও পূরণ করছে।জাবেদার স্বপ্ন ছিলো বেলী পড়াশোনা করে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।সেই স্বপ্নের দিকেই বেলী একধাপ একধাপ করে এগিয়ে যাচ্ছে।জাবেদা এখনো জেলে আছেন।আর,অলি সাহেবের শরীর দিনদিন অবনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।এইসব দিনগুলোতে বেলী বুরাগকে নিজের পাশে পেয়েছে।সুখ,দুঃখের প্রতিটি সময় বুরাগ বেলীর সাথে ভাগ করে নিয়েছে।এতে বেলী নিজেকে অনেক সুখী মনে করে।

শিউলি গুটিগুটি পা’য়ে রুমে এসে ঢুকে পড়লো।বিছানার সামনে এসে দাঁড়িয়ে রইলো ক্ষানিকটা সময় নিয়ে।বেলী শিউলিকে দেখে মুখে মিষ্টি একটা হাসি টেনে বললো,

–“কিছু লাগবে সোনা?”

শিউলি বেবি হেয়ার চুল গুলো কপাল থেকে সরিয়ে দিয়ে বেলীর দিকে এক পা এগিয়ে গেলো।চুল গুলো নাড়িয়ে নাড়িয়ে বলছে,

–“মা!আমার কিছু লাগবে না।তবে,বাবা বলেছে তোমার কাছে এখন আর না আসতে।”

বেলী বই বন্ধ করে দিয়ে শিউলির মুখপানে তাকালো।ছোট্ট মুখশ্রীতে একটা অভিমানের ছাপ দেখতে পাচ্ছে।ফোলা গাল দুটো যেনো আরো ফোলা হয়ে গিয়েছে।বেলী শিউলির দিকে এগিয়ে আসতে নিলেই শিউলি পিছনে চলে গেলো।বেলীর এবার খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছে শিউলির এরূপ আচরণ দেখে।কিছুটা চিন্তিত গলায় বললো,

–“তুমি আমার কাছে আসছো না কেনো?কোনো ব্যাপারে রাগ করেছে আমার সোনা?রাগ করে থাকলে মা’কে বলো সোনা।”

শিউলি কয়েক কদম পিছিয়ে গেলো।হাত নাড়িয়ে বেলীর কথার পিঠে বলতে লাগলো,

–“আমি আসবো না তোমার কাছে।বাবা দেখলে বকবে।”

বেলী এবার সত্যিই থম মেরে যায়।সে তো জানে,বুরাগ শিউলিকে কতোটা ভালোবাসে।বুরাগের কলিজা জুড়ে শুধু শিউলিই আছে।এমনকি,শিউলির জন্য জানও পর্যন্ত দিয়ে দিতে পারবে।তাহলে,আজকে কি এমন হলো যার জন্য শিউলি বারবার বলছে বাবা তাকে বকা দিবে।
বেলী ধীর গতিতে শিউলির দিকে এগিয়ে গিয়ে খপ করে শিউলির হাত ধরে কোলে তোলে নিলো।বিছানায় বসে শিউলির গালে টপাটপ কয়েকটা চুমু খেয়ে বললো,

–“কি হয়েছে আমার সোনার।মা’কে বলো।”

শিউলি ঠোঁট ফুলিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।বেলীর কথার উত্তর দিচ্ছে না।চোখ দুটো টলমল করছে।বেলী শিউলির থুঁতনীটা ধরতেই শিউলি কেঁদে উঠলো।শিউলির কান্নার আওয়াজ কানে যেতেই বেলী চমকে তাকালো ছোট্ট শিউলির দিকে।বেলী,শিউলিকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই শরীর মোচড়ামুচড়ি করে নিচে নেমে দৌড়ে চলে গেলো।আর,বেলী আহাম্মকের মতো তাকিয়ে রইলো সেদিকে।

রাতে!!বারান্দায় দাঁড়িয়ে বেলী আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।বুরাগ ফ্রেশ হয়ে বেলীর কাছে গিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।কাঁধে থুঁতনী রেখে বুরাগ বেলীর দিকে তাকিয়ে আছে।বেলীর সেদিকে কোনো হেলদোল নেই।সে,একমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।বুরাগ বেলীর কোনো রেসপন্স না পেয়ে,বেলীকে নিজের দিকে ফিরালো।বেলীর চোখে পানি দেখে বুরাগ কিছুটা ভ্রুকুটি কুঁচকে বললো,

–“বেলী তুমি কান্না করছো কেনো?কি হলো হঠাৎ করে তোমার।বাবা ঠিক আছেন বেলী।”

বেলী এবার শব্দ করে কেঁদে দিলো।বুরাগের কথার উত্তর দিচ্ছে না।এমনকি তার দিতেও ইচ্ছা করছে না।তাই,বুরাগকে বারান্দায় রেখে রুমে চলে আসলো।বুরাগও বেলীর পিছু পিছু এসে দাঁড়িয়েছে।বেলী ঘুমন্ত শিউলির দিকে তাকিয়ে আছে।শিউলির আজকের কথাগুলো তাকে ভিষণ কষ্ট দিচ্ছে।

বুরাগ বেলীর মুখ পানে তাকিয়ে থাকলেও কিছু বুঝতে পারছে না।কিছুটা অস্থিরতা নিয়েই বেলীকে পুনরায় বললো,

–“চুপ করে না থেকে আমার কথার উত্তর টা অত্যন্ত দাও বেলী।”

বেলী এবার খুব রেগে যায়।কিছুটা জোরে চিল্লিয়ে বললো,

–“কিসের উত্তর দিবো আপনাকে আমি।কি বলেছেন আপনি আমার মেয়েকে।”

বুরাগের কপাল যেনো আরো কুঁচকে গিয়েছে।এমতাবস্থায় বললো,

–“মানে!”

–“এখন বুঝতে পারছেন না তাই তো।বুঝবেন কীভাবে আপনি।আপনার জন্য ও আমার কাছেও আসছে না।”

–“বেলী তোমার কি মাথা ঠিকাছে।আমি কেনো শিউলিকে এমন কথা বলবো যার কারণে ও তোমার কাছে আসবে না।তুমি কি জানো না,শিউলি আমার কাছে কি।ওর কিছু হলে আমি একদন্ডও ঠিক থাকতে পারি না।এমনকি ওর চোখের পানিও আমাকে কতোটা অস্থিরতা করে তোলে সেটা কি তুমি জানো না!”

–“তাহলে কি!ও মিথ্যা বলবে।আমি ওকে আমার কাছে আসতে বললেই ও শুধু বলেছে,আমি আসলে বাবা আমাকে বকা দিবে।আপনিই বলুন!আমার মেয়ে এই কথা কেনো বলতে যাবে।”

বুরাগ কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়।আচমকাই তার মনে পড়ে যায় সকালের ঘটনা টা।বুরাগ স্টাডি রুমে বসে অফিসের কাজ করছিলো।সাথে শিউলিকেও নিয়ে এসেছিলো।শিউলিকে নিয়ে আসার মূল কারণ বেলীর সামনে সপ্তাহ পরীক্ষা তাই।বুরাগ ব্যস্ত কাজে আর বেলী ব্যস্ত পড়াশোনায়।শিউলির স্টাডি রুমে ভালো লাগছিলো না বলে,বুরাগের কাছে বায়না ধরে সে বেলীর কাছে যাবে।বুরাগ কাজে এতোটায় ডুবে গিয়েছিলো যার ফলে,ও কিছুটা উঁচু গলায় শিউলিকে না করে দিয়ে বলেছে,”এখন বেলীর কাছে যাওয়া যাবে না।”ব্যাস!!ওই কথাটাই ছোট্ট শিউলির মনে অনেকটা আঘাত আনে।মনে এসে ভিড় করে একরাশ অভিমান।

বুরাগ ধপাস করে বসে পড়লো সোফায়।বিছানার কোণায় শুয়ে থাকা ঘুমন্ত শিউলির মুখটার দিকে তাকিয়ে দেখতেই তার বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো।নিজের অজান্তেই সে তার কলিজাকে কষ্ট দিয়ে ফেললো।ভাবতেই বুরাগের ভিতটা হু হু করে উঠলো।ভিতর থেকে দলা পাঁকিয়ে কান্না আসছে বুরাগের।বুরাগ জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে বেলীর দিকে তাকালো।বেলী এখনো তার দিকে তাকিয়ে আছে উত্তরের অপেক্ষায়।বুরাগ বেলীর থেকে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে মাথা নিচু করে মিনমিনে গলায় বললো,

–“বেলী!ভুল টা আমারই।নিজের অজান্তেই ওকে আমি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি।তোমার পরীক্ষা বলে আমি তাকে তোমার কাছে আসতে না করেছিলাম।কিন্তু,আমি বুঝতে পারি নি কথাটা তার কাছে খুব খারাপ লাগবে।”

বেলী ফোঁসফোঁস করে উঠলো।এমতাবস্থায় বললো,

–“আপনার তো সাহস কম না।নিঁকুচি করেছে পরীক্ষা।আমি দিবোই না আর পরীক্ষা।আমার মেয়ে সবার আগে।আজকে,কতো ডেকেছি একটিবারও আসলো না আমার কাছে।তখন যে মনের অনুভূতি কি হয়েছিলো আমার সেইটা একমাত্র আমিই জানি।আর,সব দোষ আপনার।আপনার জন্যই আমার এইটুকুন বাচ্চাটা অভিমান করে বসলো।কতোটা কষ্ট পেলো আমার মেয়েটা।আর,একটা কথাও আপনি বলবেন না।”

বেলী কথাগুলো বলেই বিছানায় এগিয়ে গেলো।শিউলিকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পড়লো।আর,এইদিকে বুরাগ অসহায় আর অস্থিরতা নিয়ে তাকিয়ে রইলো বেলীর যাওয়ার দিকে।মা,মেয়ের এই অভিমান কীভাবে ভাঙাবে বুরাগ তা ভেবে ভেবেই বুরাগ বারান্দায় চলে গেলো।তার মাত্রাতিরিক্ত কষ্ট হচ্ছে।ইচ্ছে করছে শিউলিকে বুকে আগলে ধরে চেপে রাখতে।
—-
খুশি আজ স্কুল যায় নি।শরীরের দিক দিয়ে সে আজকে খুবই দূর্বল।তাই,সিদ্ধান্ত নিলো!আজকে সে বাসায় থাকবে।স্কুল,কোচিং কিছুই করবে না।সেই সাথে টুকটাক পড়েও নিবে।সামনেই তো এসএসসি পরীক্ষা তাদের।

খুশি লম্বা চুল গুলো হাতখোঁপা করে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলো।বিকেলের শুরুর সময়টায় তার চা না খেলে হয় না।খুশি জানে সবাই ঘুমে বিভোর।তাই,সে নিজেই চলে এলো চা করতে।কিন্তু,কলিং বেলের কড়া শব্দে খুশির মাথায় রাগ চড়ে যায়।ধপাধপ পা’য়ে মেইন দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।দরজা খুলেই খুশি চমকে উঠলো দরজার অপাশে দাঁড়িয়ে থাকা দু’জন মানুষকে দেখে।রায়ানকে চিনতে তার মোটেও অসুবিধা হয় নি।আর রায়ানের পাশে শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা অনামিকাকেও।তবে,খুশির কিছুটা খটকা লাগলো,অনামিকাকে রায়ানের সাথে দেখে।এমনকি তার মোটেও ভালো লাগছে না রায়ানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অনামিকা নামক সুন্দরী মেয়েটিকে।দরজা থেকে দূরে সরে দাঁড়িয়ে তাদের আসার সুবিধা করে দিলো খুশি।

আর,রায়ানের যেনো চোখের পলকেই পড়ছে না।বেহায়া মন শুধু খুশির দিকে চলে যাচ্ছে।শুধু তাই নয়,তার মনে কতো জল্পনাকল্পনা রাজ্য ভেসে বেড়াচ্ছে খুশিকে দেখে।রায়ান মুচকি হেসে খুশির দিকে তাকিয়ে থেকে বিরবির করে নিজের মনে সাথে আওড়াতে লাগলো,

–“কতো বড় হয়ে গেলো।ভিডিও কলে আমার থেকে পালালেও এখন তো আর পালাতে পারবে না।আর,পালাতে চাইলেও আমি তোমাকে পালাতে দিবো না।বুঝতে পারছো না!বিদেশ থেকে বিডিতে ব্যাক করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা ছিলো না,শুধুমাত্র তোমার জন্য ফিরেছি আমি।আমার মনে শুধু খুশি নামক পোকাটা কিলবিল করে উঠে।তখন,তোমার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে খুব কষ্ট হয়।এবার তোমার টার্ন খুশি।অনেক জ্বলেছি আমি!তুমিও একটু না জ্বললে হয় নাকি।”

খুশি রায়ানের দিকে একপলক তাকিয়ে চলে গেলো রান্নাঘরে।খুশির একপলক তাকানো টা রায়ানের চোখ উপেক্ষা করতে পারে নি।কারণ,সে তো সেই কখন থেকেই তাকিয়ে আছে খুশির দিকে।খুশির একপলক তাকানোতেও যেনো রায়ান বেশ শান্তি অনুভব করছে।
—-
বিকেলে সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছে।অনামিকা প্রথম এসেও সবার সাথে মানিয়ে নিয়েছে।অনামিকার ব্যাপারে বড়োরা সবাই জানে।শিউলি রায়ানের কোলে বসে আছে।রায়ান এই প্রথম শিউলিকে দেখেছে।আর,না হলে সবসময় ভিডিও কলেই দেখা হতো।আড্ডাতে সবাই থাকলেও খুশি নেই।রায়ান আশপাশ খুঁজেও খুশিকে পায় নি।হাসি সামনে বসে থাকলেও তাকে বলার সেই সাহস টাও গড়ে উঠছে না তার।তাই,রায়ান শিউলিকে অনামিকার কোলে দিয়ে আড্ডা ছেড়ে চলে আসলো।সব জায়গা খুঁজেও রায়ান খুশির খোঁজ পেলো না।মন টা নিমিষেই তার খারাপ হয়ে গিয়েছে।ফ্লোরের দিকে একধ্যানে তাকিয়ে,শিউলির কথা ভাবছে।এমতাবস্থায় আফিয়া রায়ানকে দেখে কিছুটা অবাক হয়ে বললো,

–“কিরে রায়ান!মন খারাপ নাকি।তোর কি তোর অনার সাথে কিছু হয়েছে।মেয়েটা কিন্তু ভারী মিষ্টি।আমার আরেক ছেলের বউ হলে সমস্যা নেই।করে নিতে পারিস বিয়ে।”

রায়ানের সম্পূর্ণ জানা আছে এইসব উল্টো পাল্টা কথা বুরাগেই বলেছে।বুরাগ মজা করে বললেও বড়োরা সেইটা যে সিরিয়াস ভঙিতে নিয়েছে তাও তার জানা।কিন্তু,তার মনে তো অনামিকাকে নিয়ে এইরকম কোনো ভাবনা নেই।যা ভাবনা তো সব খুশিকে নিয়ে।রায়ান আফিয়ার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে নিবে কিন্তু,তার আগেই আফিয়ার পাশে খুশিকে দেখে রায়ানের দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।তার মনে,শুধু একটাই ভয় খুশি এই কথার ভিত্তিতে তাকে খারাপ ভেবে ফেলে নি তো।

অনামিকাকে বিয়ে করার কথাটা শুনে খুশির মন কেনো খারাপ হয়েছে তা সে নিজেও জানে না।নিজের মনকে প্রশ্ন করেও সে এর সঠিক উত্তর পাচ্ছে না।তবে,সে শুধু এতোটুকুই জানে তার খুব কষ্ট হচ্ছে।খুশি ইনিয়েবিনিয়ে অনেক কথা বলে সেখান থেকে চলে আসে নিজের রুমে।খুশির চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আফিয়াও চলে যান।এই সুযোগ টা রায়ান কিছুতেই হাতছাড়া করতে পারবে না।সে খুশির চোখে তার জন্য কিছু একটা দেখতে পেরেছে।এখন শুধু তা পরোক্ষ করে দেখার পালা।

খুশি রুমে এসে দরজা বন্ধ করে নিবে এমন সময় দরজার সামনে রায়ানকে দেখে সে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।তা দেখে রায়ানের ঠোঁটে এক বিশ্বজয় করা হাসি ফুটে উঠলো।তার মানে,ও যা ভেবেছিলো তাই।খুশির মনেও তার জন্য কিছু হলেও অনুভূতি রয়েছে।রায়ান ভিতরে আসতে নিলেই খুশি ভয় পেয়ে দরজা আটিকে দিতে যায় তবে,রায়ানের সাথে পেরে উঠতে পারে না।আর,না পারার এই কথা।ত্রিশ প্লাস বুড়োর সাথে খুশির মতো মেয়ে পারবেও না।রায়ান দরজা বন্ধ করে দিয়ে খুশিকে পাশের দেওয়ালে চেপে ধরলো।খুশি শুধু ভয়ার্ত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে রায়ানের দিক।একপর্যায়ে রায়ান আলতো ছোঁয়ায় খুশির গালে ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো।এবার খুশি অবাকের চরম পর্যায়ে চলে গিয়েছে।খুশির মুখের মতিগতি দেখে রায়ান ঠোঁট দুটো প্রসারিত করে খুশির মাথাটা নিজের বুকে চেপে ধরে বললো,

–“অনুভূতিরা জন্ম নিচ্ছে তাই তো।সমস্যা নেই!আস্তে আস্তে জন্ম নিক।ততদিনও আমি অপেক্ষা করতে রাজি।এই বুকে শুধু তোমারেই জায়গা হবে।আর,কোনো তৃতীয় ব্যক্তির অবতরণ ঘটবে না।”

খুশি রায়ানের কথার আগামাথা কিছুই বুঝে নি।তবে,এইভাবে রায়ানের বুকে মাথা রেখে তার বেশ ভালো লাগছে।অজান্তেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো।তাও রায়ানের চোখ এড়িয়ে যায় নি।যার ফলে,রায়ান নিজের সাথে খুশিকে আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরলো।খুশির হাতও যেনো আপনাআপনিই রায়ানের ইনকরা শার্টের উপর খামচে গিয়ে পড়লো।মুহুর্তেই শার্টের সেই জায়গা কিছুটা কুঁচকে গিয়েছে।সমস্যা কি তাতে!ধরে নেওয়া যাক এইটা তাদের কাছে আসার প্রথম চিহ্ন।

চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here