#ভালবাসার_প্রহর
#লেখনীতে_মায়া_মনি
#পর্ব৯
কিছু সময় ধরে তিন জনের বেশ গভীর নিরবতা চললো।ড্রয়িংরুম থেকে উচ্চস্বরে ডাক পরলো জেরিনের।রেহানা ইসলাম হিমুকে বসার ঘরে নিতে বলছেন।বিয়ে হিমুর হলেও হাত ঠান্ডা হয়ে আসছে জেরিনের।বুকের ভিতর অস্থিরতা চলছে তুমুল।হিমু জেরিনের দিকে তাকিয়ে ভিত কন্ঠে বলে,
—-“আমার কেমন জেনো করছে রে।খুব ভয় ভয় লাগছে।”
জেরিন অপ্রস্তুত ভাবনা শূন্য চোখে তাকাল।শাওন পাশ থেকে খোঁচা মেরে বলে,
—-“তুই কাকে বলছিস এসব?নিজের স্বামীকে দেখে ওরই তো অবস্থা খারাপ।তোর তো সবে বিয়ে হচ্ছে।”
জেরিন একরাশ বিরক্তি নিয়ে শাওন কে বলে,
—-“আমার অবস্থায় তোরা থাকলে বুঝতি।আমি না হয় চিনলাম কিন্তু উনি কি আমাকে চিনেন?আমার বিষয় আদৌ পজেটিব কিছু ভাবে কিনা আমি তো জানি না।”
শাওন কিছুটা জোর দিয়ে বলে,
—-“অবশ্যই পজেটিব কিছু আছে।তুই দেখলি না,তোর নাম পুরোটা বলেছে।মনে না থাকলে কীভাবে নাম মনে রেখেছে? ”
কথার মাঝে ড়েহান ইসলামের আবারও ডাক এলো।সব অস্থিরতা সরিয়ে হিমুকে নিয়ে বসার ঘরে এগিয়ে গেলো।তখন ওভাবে চলে যাওয়াতে স্পর্শ কিছুটা চিন্তিত হলো।অনেকটা সময় পর হিমুকে নিয়ে বসার ঘরে এগিয়ে আসতে দেখলো জেরিন কে।হাল্ক হেসে মোহিত চোখে তাকাল স্পর্শ। সাথে সাথে জেরিনের হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে গেলো।চোখাচোখি হতেই দৃষ্টি নামিয়ে নিলো জেরিন।স্পর্শ জেনো সেই চাহনিতে মোহিত হলো অনেক।হিমু বার দু-এক ওদের খেয়াল করে ফিসফিস করে বলে,
—-“দোস্ত ভাইয়া তো সেই লুক দিচ্ছে তোর উপর।”
জেরিন অপ্রস্তুত হয়ে বলে,
—-“আমি কিভাবে জানবো?চুপ কর! ”
হিমু হাল্কা হাসলো।প্রলয়ের পাশে জায়গা করে দিলো আত্মীয়রা।হিমুকে প্রলয়ের বাম পাশে বসাতে কিছুটা ঝুকলো জেরিন।প্রলয়ের পাশে থাকা স্পর্শের গায়ের মাতাল করা মিষ্টি ঘ্রাণ এসে নাকে লাগলো তার।কেমন অপ্রস্তুত হাবভাব করছে জেরিন।স্পর্শের দিকে না চাইতেও চোখ চলে যাচ্ছে।লজ্জা , অস্থিরতা সবই ঘিরে ধরেছে জেরিন কে।ভালোয় ভালোয় বিয়েটা হয়ে গেলো।সবাইকে খেতে ডাকলো রেহানা ইসলাম।সবাইকে দেখে রেহানা ইসলাম জেরিন কে সন্দিহান কন্ঠে বলে,
—-“সবাইকে দেখছি কিন্তু প্রলয়ের বন্ধু স্পর্শ কোথায়?”
প্রলয় চেয়ারে বসে শান্ত ভাবে বলে,
—-“ওয়াসরুমে সে।”
রেহানা ইসলাম উদ্বেগি গলায় বলে,
—-“জেরিন মা তুই একটু যা তো।গেস্ট রুম থেকে স্পর্শ কে নিয়ে আয়।”
জেরিন বেশ বিস্ময় হয়ে বলে,
—-“আমি যাবো?”
রেহানা ইসলাম ব্যস্ত হাতে কাজ করতে করতে বলে,
—-“যা না মা।”
বিরিয়ানি মুখে তুলে আয়েশি কন্ঠে শাওন বলে,
—-“আরে যা দোস্ত। বেচারা কে রেখে তো সবাই খেয়ে ফেলবে।”
.
.
.
.
গেস্ট রুমের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে জেরিন।ওয়াস রুম থেকে পানির শব্দ আসছে কানে।দরজায় শব্দ করবে কি করবে না বুঝতে পারছে না।দ্বিধান্বিত হয়ে দুবার দরজায় কড়া দিলো।কয়েক সেকেন্ডের মাঝে দরজা খুলে অতি সুদর্শন যুবক বেড়িয়ে এলো।সাদা শার্ট এবং আকাশি প্যান্ট পরিহিত যুবকটির চোখে চোখ পরতেই স্পর্শ হেসে দিলো। জেরিন দ্রুত চোখ নামিয়ে নিলো।স্পর্শ স্পষ্ট জেরিনের লজ্জা দেখতে পারছে।পুরো রুমময় জুড়ে নিস্তব্ধ নিরবতা।ঘনে ঘনে দমকা হাওয়া এসে দুজনকে ছুঁয়ে যাচ্ছে।জেরিন মৃদু অস্থিরতা নিয়ে নিচুস্বরে বলে,
—-“আন্টি আপনাকে খেতে ডাকছেন।প্রলয় ভাইয়া বসে আছেন।অপেক্ষা করছেন আপনার জন্য”
স্পর্শ ঠোঁট টিপে হেসে বলে,
—-“আর আপনি করছেন না?”
জেরিন অপ্রস্তুত হেসে বলে,
—-“আমি বলতে চাচ্ছি সবাই।”
—-“আমি প্রশ্ন করেছি, আপনি করছেন না অপেক্ষা?”
স্পর্শের এমন প্রশ্নে জেরিন বিভ্রান্ত হয়ে গেলো।মৃদু অস্থিরতা নিয়ে বলে,
—-“আমি আসছি আর আপনি ও আসুন। এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। ”
কথাটা বলে জেরিন রুম থেকে পা বারাতেই স্পর্শ পিছন থেকে হাত টেনে ধরে।জেরিনের পুরো শরীর থম মেরে যায়।হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।হার্টবিট দ্রুত চলছে খুব।প্রতিটা কথা এসে গলায় আটকে যাচ্ছে।জেরিন মৃদু ভিত কন্ঠে পিছু না ফিরেই বলে,
—-“কি,কিছু বলবেন আপনি?”
স্পর্শ মোহিত চোখে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে রইল।মৃদু হেসে তার পর জেরিনের সামনে এসে বলে,
—-“আপনি কি আমার কাছ থেকে পালাতে চাচ্ছেন?আমাদের মাঝে কি পালিয়ে যাওয়ার সম্পর্ক? ”
জেরিন স্তির চোখে তাকাল।এই মানুষটা কে সে চিনে।মাস খানেক আগে নিজের সব থেকে অসহায় মুহূর্তেই তো এসেছিল এই মানুষটা জেরিনের জীবনে।বৃষ্টি ভেজা রাতে সব চেয়ে আপন হয়েছিল এই যুবকটি। হঠাৎ স্পর্শের প্রতি মায়া এবং শিতল অনুভূতি জেগে উঠলো।শিতল চোখে জেরিন বলে,
—-“দুঃখিত আমি হয়তো আপনাকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম।আমার ব্যবহারের জন্য লজ্জিত আমি।”
স্পর্শ হাল্কা হেসে শান্ত গলায় বলে,
—-“কষ্ট তো তাকেই দেওয়া যায়, যে আমাদের প্রিয় মানুষ।আমি কি আপনার প্রিয় কেউ?”
জেরিন কিছুটা বিস্মিত কন্ঠে বলে,
—-“হয়তো তার থেকেও বেশি কিছু।”
স্পর্শ চোখ নামিয়ে চুলে হাত বুলিয়ে হাসলো।হঠাৎ কেউ একজন দরজায় দাঁড়িয়ে বলে,
—-“হয়তো মানে কি দোস্ত?অফিসিয়ালি এন্ড ট্রুলি তোরা কাপল ইয়ার।”
জেরিন এবং স্পর্শ বিস্ময় নিয়ে সেদিকে টাকাল।শাওন সাদা পাঞ্জাবির হাতা ব্লোড করতে করতে কাছে এলো।মুখে উচ্ছ্বাসিত হাসি।জেরিন স্পর্শের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ পাকিয়ে শাওন কে বলে,
—-“কি করছিস তুই?”
শাওন জেরিনকে থামিয়ে কুল ভাব নিয়ে বলে,
—-“ভাইয়া আপনি বলুন তো আমি ভুল বললাম?জেরিনের মুখের কথা সে বাল্যবিবাহ মানে না কিন্তু কক্সবাজারে হওয়া সেই রোমাঞ্চকর গল্পটা মানে।”
জেরিন বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পরে স্পর্শের সামনে।স্পর্শ জেরিনের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে হেসে বলে,
—-“সবটা অপ্রত্যাশিত ছিল।”
—-“কথা পরে হবে এখন আন্টি ডাকছে।”
কথাটা বলে জেরিন দ্রুত রুম থেকে চলে গেলো।শাওন কিছুটা হেসে বলে,
—-“চলুন খেয়ে আসি আগে।কথা তো এখন প্রায় হবেই।”
________________________
শেষ বিকেলে মেহমানের ভীর থেকে স্পর্শ ছাদে এলো।নিচে এতো গান বাজনা এবং হাসা হাসি তার পছন্দ না।শুভর বিয়েতেও যথেষ্ট দূরে ছিল স্পর্শ। কক্সবাজার থেকে ফিরেই শুভ তার বিয়ের খবর দেয়।প্রথমে অবাক হলেও খুশি হয় সে।মাঝে মাঝেই স্পর্শ এটা ভেবে হাসে, বড় ভাইয়ের আগেই সে বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করেছে।ছাদের রেলিঙে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে।কিছু সময় পর কানে ভেসে এলো কারো হাতের চুড়ির টুংটাং শব্দ।এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে টাংকির পিছন থেকে জেরিন কে এগিয়ে আসতে দেখতে পেলো।স্পর্শের মুখো মুখি আবারো হতে হলো।স্পর্শ মৃদু হেসে দূর আকাশে চোখ রাখে।জেরিন কি কথা বলবে?মন থেকে সায় এলো, সে তো আমারই আপনজন।জেরিন গুটি গুটি পায়ে স্পর্শ পাশে এসে দাঁড়ায়।মিনিট দু-এক চুপ থেকে জেরিন প্রথম বলে,
—-“ছাদে কি করছেন আপনি?”
স্পর্শ ছোট্ট করে নিশ্বাস নিয়ে শান্ত গলায় বলে,
—-“ওতো শব্দ ভালো লাগছিল না তাই আকশের নিচে সতেজ নিশ্বাস নিতে এলাম।আপনি কি করছেন?”
জেরিন কিছুটা শিশুসুলভ মুখ করে বলে,
—-“কাউ কে বলবেন না তো?প্রলয় ভাইয়ার জুতো লুকিয়েছি।”
স্পর্শ কয়েক সেকেন্ড সেই মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে,
—-“আচ্ছা বলবো না কিন্তু আমার লাভ?”
—-“মনে হচ্ছে বৃষ্টি হবে আজ।সেদিন আপনি আমায় নিয়ে ছুটে ছিলেন। আজ আমি আপনাকে নিয়ে ছুটবো।”
কথাটা বলে বেশ অপ্রস্তুত হলো জেরিন।স্পর্শ তা বুঝে মৃদু হেসে বলে,
—-“আচ্ছা বেশ!তা কোন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আজ গাড়িটা নষ্ট করতে হবে?”
জেরিন স্পর্শের এমন স্বাভাবিক মার্জিত কথায় বেশ বিস্মিত এবং মৃদু আনন্দিত।স্পর্শের দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে মাথা নিচু করে লজ্জিত মুখে হেসে দিলো।স্পর্শ বুকের উপর দুহাত ভাজ করে ভ্রু উঁচিয়ে শান্ত কন্ঠে বলে,
—-“তা পড়াশুনা কেমন চলছে?”
জেরিন মাথা দুলিয়ে হাল্কা হেসে বলে,
—-“ভালোই চলছে।ফার্স্ট সেমিস্টার এক্সাম শেষ।”
—-“গুড ম্যাডাম।”
আবার শুরু হয় দুজনের মাঝে নিরবতা।জেরিন অনেকটা সাহস নিয়ে বলে,
—-“আচ্ছা আমি তো তেমন কিছুই জানি না আপনার বিষয়।আপনি কি করেন,আপনার পরিবার?”
স্পর্শ সায় দিয়ে মাথা দুলিয়ে মৃদু কন্ঠে বলে,
—-“আমি স্পর্শ মেহরাব। আশরাফ মেহরাবের ছোট ছেলে।পড়া শুনা সবই লন্ডনে থেকে করা।বলতে পারেন অল্প বয়সে নিজের একটা যোগ্যতা করে নিয়েছি।বড় ভাইয়া শুভ মেহরাব বাবার সাথেই বিজনেস করছে।”
জেরিন অবাক হয়ে বলে,
—-“আপনি তো অনেক নাম করা ফ্যামিলি থেকে বিলং করেন।”
জেরিনের চোখে মুখে স্পষ্ট মুন খারাপের ছাপ।এতো নাম করা ব্যক্তির জীবনে এভাবে চলে এলেই কি প্রিয়তমা হতে পারবে সে?জেরিনের এই ভাবনার পিঠে স্পর্শ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জেরিনের অনেকটা কাছে এসে শিতল কন্ঠে বলে,
—-“প্রিয়তমা হওয়ার জন্য কি লাগে জানেন?শুধু ভরসার একটা হাত এবং ভালবাসা, বিশ্বাস।আপনার মাঝে এই সব জিনিস আছে আমার মনে হচ্ছে।”
জেরিন কয়েক মিনিটের জন্য ভাবনা শূন্য হয়ে গেলো।ফ্যালফ্যাল চোখে স্পর্শের শিতল চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,
—-“আপনি সত্যি অদ্ভুত রকমের প্রশান্তি দিতে পারেন।”
স্পর্শ মৃদু হেসে জেরিনের গালে আলতো হাত ছুঁয়ে নিচে চলে গেলো।জেরিন জেনো হ্যাং হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আশে পাশের সব ভাবনা থেমে গেছে।স্পর্শের কি তবে কোনো দ্বিধা নেই জেরিনের প্রতি?#ভালবাসার_প্রহর
#লেখনীতে_মায়া_মনি
#পর্ব১০
বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে আছে জেরিন।মাথাটা ফ্লোরে ঝুলিয়ে আছে।ঘড়িতে রাত ১ঃ২০ বাজে।হিমুদের বাসা থেকে সন্ধ্যায় ফিরেই নিজেকে রুমে বন্ধি করেছে সে।মাথাটা বড্ড ভার লাগছে আজ।অদ্ভুত চিন্তায় দুর্বল হয়ে পরেছে জেরিন।রাতে খেতেও যায়নি। অবশ্য বার দু-এক জসীম সাহেব ডেকে ছিলেন।জেরিন উত্তরে বলে ছিল “খিদে নেই বাবা” জসীম সাহেব ও জোর করেন নি।নাজমুন বেগম বাইরে থেকেই মনে করিয়ে দেন হিমুর বিয়ে শেষ।সেই ছেলেকে আনতে হবে। উফফফ!আর ভাবতে পারছে না জেরিন।অস্থিরতা নিয়ে উঠে বসে। চিন্তায়, অস্থিরতায় বড্ড অসহ্য লাগছে আজ।স্পর্শের সাথে এভাবে দেখা হবে কল্পনা ও করেনি।এদিকে জেরিনের স্বামীকে দেখানোর চাপ দিচ্ছে।স্পর্শের কাজে,স্বভাবে মনে হয়নি সে জেরিনের থেকে পালাতে চায় তবে,হুট করে কী আর স্পর্শ আসবে দেখা করতে এখানে?সব চেয়ে বড় কথা স্পর্শ কে পাবে কোথায় আর?
পিচঢালা রাস্তায় রিকশার জন্যে দাঁড়িয়ে আছে জেরিন।ভার্সিটি থেক কিছুটা হেটে চৌরাস্তার মুখে এসেছে। গায়ের সাদা জামাটা কিছুটা ঘেমে আছে।আজ নাকি ভালবাসা দিবস “পহেলা ফাল্গুন”।জেরিনের সঠিক খেয়াল হচ্ছে না,কারণ এসবে তেমন গুরুত্ব নেই।আচ্ছা,যদি স্পর্শ পাশে থাকতো তাহলে কী গুরুত্ব হতো না?দীর্ঘশ্বাস ফেলল জেরিন।ডান হাতের কব্জিতে থাকা ঘড়িতে সময় দেখে রাস্তায় চোখ দিলো।রিকশা খুজেও পাচ্ছে না।হয়তো প্রেমিক-প্রেমিকা রিকশায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তাই।কী বুঝে জেরিন মৃদু হাসলো।ছোট্ট নিশ্বাস ফেলে পা চালিয়ে সামনে হেটে গেলো।মিনিট দু-এক পর কারো হেচকা টানে পিছিয়ে গেলো জেরিন।আকস্মিক কাজে জেরিন বেশ ভয় পেয়ে যায়।
—-“কী করছেন আপনি?আর একটু হলেই তো লেগে যেতো।”
কারো অস্থির কণ্ঠ শুনে জেরিন সামনে তাকালো।সাথে সাথে চোখ জোড়া থমকে এলো।সাদা -কালো ফর্মাল পোশাকে দাঁড়িয়ে আছে স্পর্শ।চোখে-মুখে অস্থিরতা। কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে জেরিন বুঝে নিলো কী হয়েছিল।পাশ দিয়ে কালো রঙের একটি গাড়ি লাগামহীন ভাবে এগিয়ে এসে ছিল।স্পর্শ হাত টেনে না সরালে হয়তো জেরিনের অস্তিত্ব খুজেও পেতো না কেউ।জেরিন নজর নামিয়ে নিচুস্বরে বলে,
—-“ধন্যবাদ আপনাকে।আসলে রিকশা পাচ্ছিলাম না তাই হেটে যাচ্ছিলাম।”
স্পর্শ চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস ফেলল।শান্ত হওয়ার চেষ্টা করে গলায় থাকা টাই লুস করে বলে,
—-“একটু দেখে শুনে চলতে হয় ম্যাডাম।”
জেরিন হাল্কা হাসার চেষ্টা করে বলে,
—-“তা কেমন আছেন মি. মেহরাব?”
স্পর্শ নিঃশব্দে হেসে বলে,
—-“ভালো আছি, আপনি?”
—-“এই তো আছি।”
স্পর্শ হাত ঘড়িতে সময় দেখে নম্রভাবে বলে,
—-“আপনি কিছু মনে করলে আমরা কী কোথাও একটু বসতে পারি?”
জেরিন কয়েক সেকেন্ড সময় নিয়ে বলে,
—-“অবশ্যই পারি।”
স্পর্শ হেসে গাড়িতে বসতে বলে।ধানমন্ডি লেকের ধারে বসে আছে ওরা দুজন।কেউ কিছু বলছে না।আশে পাশে থাকা দম্পতিদের মনযোগ দিয়ে দেখছে জেরিন।কেউ বাদাম খাচ্ছে তো কেউ হাতে হাত ধরে গল্প করছে।কেউ ফুল হাতে অপেক্ষা করছে প্রিয়জনের জন্যে।সেদিকে তাকিয়ে জেরিন হাসলো।চোখের সামনে একটি সতেজ গোলাপ ফুল দেখে কিছুটা অবাক হলো জেরিন।স্পর্শের সুন্দর হাতে ফুলটা অসম্ভব সুন্দর মানিয়েছে।স্পর্শ ঠোঁট টিপে হেসে বলে,
—-“আজ ভালবাসা দিবস এবং পহেলা ফাল্গুন।আপনার সাথে দেখা হবে জানলে, বিশেষ কিছু নিয়ে আসতাম।আপাতত এটাই আছে আপনাকে দেওয়ার মতো।”
জেরিনের চোখে হঠাৎ পানি জমে এলো।বুকটা ভাড়ি হয়ে আসছে।গলায় কান্না দলা পাকিয়ে যাচ্ছে।ফুলটা হাত থেকে নিয়ে শিতল চোখে তাকালো।স্পর্শ জেরিনকে ভালো করে খেয়াল করল।সাদা কামিজ এবং কালো জিন্সে বেশ মানিয়েছে।বাম কাধে বেনি করে রাখা চুল।চোখে চিকন করে দেওয়া গাঢ় কাজল।বিশেষ করে জেরিন চোখ স্পর্শের বিষণ ভালো লাগে শুরু থেকেই।কপালে জমা বিন্দু বিন্দু ঘাম।স্পর্শ একটি রুমাল জেরিনের সামনে রেখে মৃদু গলায় বলে,
—-“আপনি ঘেমে গেছেন।”
জেরিন একবার স্পর্শের দিকে তাকিয়ে হাত থেকে রুমালটা নিলো।ঘাম মুছতে কপালে রুমাল ছুঁয়ে দিতেই অদ্ভুত ভাবে শরীর শিহরিত হলো।স্পর্শ কী তা বুঝেছে?
—-“ধন্যবাদ আপনাকে।”
কথাটা বলে স্পর্শ কে রুমাল ফেরত দিলো জেরিন।চারপাশে তাকিয়ে স্পর্শ শান্ত ভাবে বলে,
—-“বছরে এই দিনেই সব ছেলে মেয়েকে খুজে পাওয়া যায় এখানে।হাজার ব্যস্ততা থাকলেও প্রিয়জনের কাছে আসতেই হয়।”
জেরিন কথার পিঠে বলে,
—-“আপনার প্রিয়তমা নেই?”
প্রশ্নটা করে বেশ অপ্রস্তুত হয়ে গেলো।স্পর্শ স্তির চোখে জেরিনের অপ্রস্তুত মুখের দিকে চেয়ে হেসে বলে,
—-“আছে তো।”
সম্পর্কে উত্তরে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেলো।মুখটা কালো হয়ে গেলো জেরিনের।কোনো কথা আর বলেনি সে।সেটা দেখে স্পর্শ অন্য দিক তাকিয়ে বলে,
—-“প্রিয়তমাকে নিয়েই তো বসে আছি।আপনি হয়তো জানেন না, আজ প্রিয়তমা ছাড়া এখানে আসা যায় না।”
জেরিনের হঠাৎ শরীর কেপে উঠে।বুকের ভিতর প্রচণ্ড ধুকপুকানি শুরু হয়।স্পর্শের দিকে তাকানোর শক্তি ও জেনো হারিয়ে যায়।স্পর্শ তা দেখে ঠোঁট টিপে হেসে বলে,
—-“আপনি কী লজ্জা পাচ্ছেন? ”
জেরিন উত্তর দিলো না।মাথা নুইয়ে হাসলো শুধু।স্পর্শের সামনে একটা বাচ্চা মেয়ে বেলি ফুলের মালা নিয়ে হাজির হলো।আদো আদো গলায় বঅলে,
—-“ভাইয়া,ভাইয়া এইটা আপুকে দিন না।আপু অনেক খুশি হবে। ”
জেরিন অপ্রস্তুত হয়ে স্পর্শের দিকে তাকালো।স্পর্শ এক গাল হাসি দিয়ে মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দুটো বেলি ফুলের মালা কিনলো।এক হাজার টাকার দুটো নোট দিলে মেয়েটা বলে,
—-“আমার কাছে তো এতো টাকা নেই। ”
স্পর্শ হেসে মেয়েটা কে কোলে তুলে বলে,
—-“এই তোর নাম কী রে?বয়স কতো তোর?”
মেয়েটা আদো আদো গলায় বলে,
—-“আমার নাম মিরা।ছয় বছর আমার।”
জেরিনের হঠাৎ মনটা খারাপ হয়ে গেলো।এটুকু মেয়ে ফুল বিক্রি করছে!স্পর্শ মিরার গালে চুমু খেয়ে বলে,
—-“এই সব টাকা তোর বুঝলি?আর শোন এভাবে ফুল বিক্রি করবি না তুই।স্কুল যাবি মিরা?”
মিরা তার টোল ওয়ালা এক গাল হাসি দিয়ে বলে,
—-“সত্যি ভাইয়া?আমি যাবো স্কুলে তাহলে,তোমার মতো একদিন একটা ভাইয়া এসে আপুটার মতো আমাকেও ফুল কিনে দিবে।”
স্পর্শ বিস্মিত চোখে তাকিয়ে বলে,
—-“তুই তো পেকে গেছিস রে।এখন থেকে এতো চিন্তা তোর?একদম পাকনা বুড়ি।”
জেরিন স্পর্শের দিকে তাকিয়ে রইল।কত মধুর সুরে সে কথা বলছে।স্পর্শ মিরার হাত ধরে বলে,
—-“চল তোকে ড্রাইভার চাচ্চু বাড়ি দিয়ে আসবে।কাল আমি এসে তোকে স্কুলে ভর্তি করে দিবো।”
মিরা হেসে স্পর্শের গালে চুমু খেলো।স্পর্শ কল করে ড্রাইভার এখানে আসতে বলে।মিরাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলে বিদায় দেয়।পুরোটা সময় জেরিন অবাক চোখে স্পর্শের মুখের দিকে চেয়ে ড়ইল।চোখ থেকে টুপ করে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পরলো।স্পর্শ পাশ ফিরতেই বাম হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মুছে নিলো।স্পর্শ কপাল কুঁচকে সিরিয়াস হয়ে প্রশ্ন করে,
—-“আপনি ঠিক আছেন?কাঁদছেন কেনো জেরি?”
“জেরি” নামটা শুনেই একরাশ ভালো লাগা নিয়ে স্পর্শের মুখের দিকে চাইলো।স্পর্শ কোনো বনিতা ছাড়াই বেলি ফুলের মালা বেনিতে পরিয়ে বলে,
—-“এই অবস্থায় আপনার চোখে পানি বেশ মানাচ্ছে।”
জেরিন না চাইতেও ঠোঁট টিপে হেসে দিলো।স্পর্শ নিজেও হেসে দিলো তা দেখে।জেরিন বুক ভরে নিশ্বাস নিয়ে বলে,
—-“মিরা কোতো মায়াবি পুতুল তাই না?অথচ,এইটুকু বাচ্চা ফুল বিক্রি হচ্ছে।আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছি নিজেকে বাচানোর জন্য। আচ্ছা, ওদের তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। চারপাশে সব অমানুষে ভরে গেছে।সবাই তো আপনার মতো না যে, দায়িত্ব নিবে।”
স্পর্শ এবার বুঝলো জেরিনের মন খারাপের কারণ।প্রসঙ্গ পাল্টে সে বলে,
—-“মিস জেরিন আপনার বাসাটা কোথায়?”
জেরিন মৃদু কন্ঠে বলে,
—-“বনানী। ”
দুজনের মাঝে কিছুটা নিরবতা বয়ে গেলো।ফোনের শব্দে মৃদু চমকে গেলো জেরিন।সাইড ব্যাগ থেকে ফোন বেড় করে ভ্রু কুঁচকে তাকাল।অলস হাতে ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে,
—-“কী করছিস নিরামিষ? ”
জেরিন কপালে ভাজ ফেলে বলে,
—-“দেখ,আমাকে নিরামিষ বলবি না শাওন।”
জেরিনের কথার মাঝে স্পর্শ ১০ টাকার বাদামের ঠোঙা এগিয়ে দিলো।জেরিন শিতল চোখে তাকিয়ে মৃদু হেসে হাতে নিলো।বিনিময়ে স্পর্শ তার দুর্লভ হাসি উপহার দিলো।শাওন বেশ উত্তেজনা নিয়ে বলে,
—-“মামা তুই আজকের দিনে ও নিশ্চয় বাসায়?আমি মাত্র কাসপিয়াকে বাসায় রেখে এলাম।”
জেরিন বাদাম চিবুতে চিবুতে বলে,
—-“কেনো? বাসায় না থাকলে কী লেকের পাড়ে বসতে পারি না?”
শাওন চাপা চিৎকার করে বলে,
—-“উফফফ!আমি তো ভুলেই গেছি তুই এখন রোমাঞ্চকর দুনিয়াতে আছিস।তুই তো মামা বিবাহিত এখন।”
জেরিন বেখেয়ালি চোখে স্পর্শের দিকে তাকাল।হাস্যউজ্জ্বল ছেলেটার চোখে চোখ পরতেই হেসে দিলো স্পর্শ। জেরিন চোখ সরিয়ে নিচুস্বরে বলে,
—-“চুপ করবি তুই?ফোন কেনো দিয়েছিস?”
—-“আচ্ছা শুন, হিমুর তো বিয়ে হয়ে গেলো এখন কী করবি?স্পর্শ কে তো বাসায় নিতে হবে, সবার সাথে কথা বলিয়ে দিতে হবে।আন্টি কিন্তু এবার পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ রাখবে না।সোজা হাসানের বউ করে দিবে। ”
জেরিন কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলে,
—-“জানি না কী করবো?কীভাবে বিষয়টা হ্যান্ডেল করবো?আচ্ছা, আমি পরে কথা বলবো দোস্ত।”
জেরিন ফোন কেটে দিলো।চিন্তিত মুখে হাসার চেষ্টা করলো।স্পর্শ বাদাম মুখে দিয়ে চিবুতে চিবুতে বলে,
—-“চিন্তিত মনে হচ্ছে আপনাকে।এই সামান্য বিষয় কেনো ভাবছেন বলুন তো?আমি তো পাশেই আছি।”
জেরিন চোখ বড় করে বিস্মিত হয়ে বলে,
—-“আপনি কী বলছেন বুঝতে পারছি না।”
স্পর্শ বাদামের খোসা ফেলে দুহাতের তালু ঝেরে বাকা হেসে বলে,
—-“আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন, আপনার ফোনের স্পিকার একটু লাউড।এখান থেকে অনাহেসে সবটা স্পষ্ট শুনা যায়।”
জেরিন হতভম্ব চোখে চাইলো।স্পর্শ সবটা জেনে গেছে সবে?জেরিন লজ্জিত হয়ে বলে,
—-“আসলে আপনার সাথে দেখা হবে ভাবতে পারিনি।আপনি বলে ছিলেন আপনাকে প্রয়োজন হলেই পাশে পাবো।অদ্ভুত ভাবে ঠিক সেটাই হলো।বাড়িতে হঠাৎ শাওনের সাথে সেদিনের কথা প্রথমবার জানিয়েছি। মা আড়াল থেকে শুনতে পায় তবে, তাদের ধারণা আমরা বয়ফ্রেন্ড -গার্লফ্রেন্ড। আমি বিষণ লজ্জিত আপনার কাছে।”
স্পর্শ দ্রুত জেরিনের হাত আলতো ধরে বলে,
—-“আরে লজ্জিত কেনো হচ্ছেন?বুঝতে পারছি অবস্থা খুবই অপ্রস্তুত কিন্তু গল্পটা কী মিথ্যে?আমাদের কী কোনো সম্পর্ক আছে নেই?যদি থাকে অবশ্যই যেতে পারি আপনার বাসায়।”
__________________________
অস্বস্তিকর এক অবস্থায় পরবে দুজন।সন্ধ্যার শেষ প্রহরে অফিসের ফর্মাল ড্রেস পরেই হাজির স্পর্শ। বাড়ির সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে দুজন।জেরিন এই দ্বিতীয় বার ক্রাশ খেলো স্পর্শের উপর।কালো শার্ট – কালো প্যান্ট এবং হাতে কালো কোট।ক্লান্ত দেহে এক গাল হাসি নিয়ে জেরিন কে বলে,
—-“আপনার বাবা কী এখানেই রেখে কথা বলবে?”
জেরিন অপ্রস্তুত হয়ে বলে,
—-“দুঃখিত আমি আসলে…!খুব ভয় করছে আমার।”
—-“কেনো?”
জেরিন মাথা নিচু করে বলে,
—-“আপনাকে কেউ কিছু বললে আমি নিতে পারবো না।”
স্পর্শ হেসে বলে,
—-“আগে তো ভিতরে যাই?”
জেরিন হেসে সম্মতি দিলো।কোনো কথা ছাড়াই স্পর্শের হাতে থাকা কোট নিজের হাতে নিলো।স্পর্শ সেদিকে চেয়ে শুধুই হাসলো।দরজা ঠেলে বাসায় প্রবেশ করতেই ভয়ে হাত ঠান্ডা হয়ে গেলো জেরিনের।স্পর্শ কে দেখে কী রিয়েকশন দিবে সবাই?
ড্রয়িংরুমে কোনো কথা ছাড়া সুদর্শন যুবক নিয়ে জেরিন কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সবাই এগিয়ে এলেন।মামা -মামি, খালা-খালু সবাই এলেন।জসীম সাহেব রুম থেকে এসে স্পর্শ কে দেখে বেশ অবাক হলেন।স্পর্শ মৃদু কন্ঠে সবাইকে সালাম দিলো,
—-“আসসালামু আলাইকুম। ”
—-“তোমাকে আগে কোথাও দেখেছি আমি।উমমম,এ’বছর ম্যাগাজিনে তোমার ছবি দিয়ে ছিল, বিসনেস আইকোন হিসেবে?”
জসীম সাহেবের প্রথম প্রশ্ন এটাই ছিল।ঘর ভর্তি মানুষের সামনে স্পর্শ জেনো খুবই আগ্রহের জিনিস হয়ে উঠে।স্পর্শ গলা ঝেরে বলে,
—-“জি আমি স্পর্শ মেহরাব।”
জেরিনের মামা ভ্রু উঁচিয়ে তাকায়।জসীম সাহেব গম্ভীর মুখে বলে,
—-“জেরিন ওকে নিয়ে বসার ঘরে আয়।”
জেরিন সম্মতি দিলো।সবাই বসার ঘরে বসে আছে।সোফায় জেরিনের পাশেই ক্লান্ত দেহে বসে আছে স্পর্শ।জেরিনের মামি এক গ্লাস জুস দিয়ে লতিফ সাহেবের পাশে বসেন।নাজমুন বেগম চুপ করে বসে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখছে।গায়ে গরে একদম উচ্চঘরের সন্তান তা স্পষ্ট। দেখতে যেমন কথার সুর ও তেমন।নাজমুন বেগম সবার নিরবতা ভেঙে বলে,
—-“জেরিনের সাথে তোমার কী সম্পর্ক? ”
স্পর্শ কপাল কুঁচকে হেসে বলস,
—-“আপনার সাথে ওর বাবার যেই সম্পর্ক। ”
জেরিন ভিত চোখে স্পর্শের দিকে টাকাল।সবাই নড়ে চড়ে বসে।নাজমুন বেগম কঠিক চোখে তাকিয়ে বলে,
—-“তুমি কী জানো ওর বিয়ে হয়েছে এবং সেটা এখনো আছে?”
স্পর্শ কয়েক সেকেন্ড চুপ করে শান্ত গলায় বলে,
—-“সব কিছুই আমি জানি এবং বিশ্বাস করি সবটাই আল্লাহর ইচ্ছেতে হয়েছে।জেরিন আমার পাশে থাকলে এই সব খুবই সামান্য বিষয়।”
নাজমুন বেগম বেশ অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন।জসীম সাহেব শক্ত গলায় বলে,
—-“জেরিনের কাছ থেকে এমন কিছু আমরা আশা করিনি।এখন আমরা দেখতে চাই কেনো সে হাসান কে অতিক্রম করে তোমার হয়েছে।”
স্পর্শ ভ্রু কুঁচকে নম্রভাবে বলে,
—-“মানে ঠিক বুঝলাম না?”
লতিফ সাহেব ফোঁড়ন কেটে বলে,
—-“এতো কিছু বুঝে আর এটা বুঝে না।মানে হচ্ছে তোমাকে এ’বাড়িতে কিছু দিন থাকতে হবে।আমরা দেখতে চাই কতটা গভীর তোমাদের সম্পর্ক। ”
চলবে