#ভালবাসার_প্রহর
#লেখনীতে_মায়া_মনি
#পর্ব৩৫
বাড়িতে আজ গমগমে অবস্থা।এদিক ওদিক মহিলারা ছুটছে।রান্নাঘর থেকে বাহারি খাবারের ঘ্রাণ ভেসে আসছে।সোফায় বসে সেই ঘ্রাণ নিচ্ছে লতিফ সাহেব।এই মানুষটা যেখানেই যাবে খাওয়া তার চাই।জসীম সাহেব একটু পর পর কী লাগবে বাজার থেকে আনছে।স্পর্শ সকালেই বাজার করে অফিস চলে গেছে। সেলিনা শাড়ির আচল কোমরে গুঁজে রুমে যাচ্ছে ফ্রেশ হতে।টেবিলের উপর রাখা মিষ্টির প্যাকেটে হাত দেওয়াই আগেই লতিফ সাহবে মৃদ ধমক দিলেন,
—-“একদম হাত দিবে না।সব সময় এগুলো ভালো লাগানে না বললাম।যাওয়া রেডি হয়ে এসো।”
লতিফ সাহেব আহত হয়ে বলেন,
—-“কী সমস্যা, একটাই তো মিষ্টি?”
—-“ডায়াবেটিস নিয়ে মিষ্টি না?চলো রুমে।”
এক প্রকার টেনেই রেডি হতে রুমে নিয়ে গেলো সেলিনা।নাজমুন বেগম সব টেবিলে সাজিয়ে একবার দেখে নিলেন।জেসমিন। শেষ রান্নার বাটি টেবিলে এনে হাসি দিয়ে বলেন,
—-” আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে আজ।জেরিনের শ্বশুর বাড়ি থেকে মেহমান আসবে। ”
নাজমুন বেগম হাল্কা হেসে বলেন,
—-“হ্যা রে আপা,ওদের পছন্দ হবে তো সব?”
—-“এতো চিন্তা করছিস কেনো? হবে, না হয়ে যাবে কোথায়?”
জসীম সাহেব রুম থেকে ব্যস্ত পায়ে এসে বলেন,
—-“তোমাদের হলো? মেহরাব পরিবার কিন্তু চলে এসেছে।যাও রেডি হয়ে নাও।”
জেসমিন মৃদু উদ্বেগি হয়ে বলেন,
—-“আমরা পরে হলেও হবে আগে তো জেরিন কে করতে হবে।”
জসীম সাহেব হেসে বলেন,
—-“রিয়া আছে না? ও জেরিন কে রেডি করে দিবে।”
নাজমুন বেগম হাল্কা ব্যস্ত হয়ে বলেন,
—-” সব ঠিক আছে কিন্তু স্পর্শ কোথায়?”
এমন সময় মেইন দরজা ঠেলে নাজমুল ইসলাম প্রবেশ করে।হাতে ফলের প্যাকেট। স্বভাবসুলভ হাসি দিয়ে জুতা খুলে কাছে এসে বলে,
—-“কী ব্যপার আপু? আজ দেখি বেশ হাসি খুশি?”
নাজমুন বেগম কিছুট লজ্জা পেলেন।জসীম সাহেব প্রসঙ্গ পাল্টে বলেন,
—-“কেমন আছো ভাই?”
—-“আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?”
—-” এইতো আছি ভাই!”
.
.
.
.
রিয়া লাফা-লাফি করে জেরিন কে স্পর্শের দেওয়া সেই নীল শাড়ি পরিয়েছে।হাল্কা সাজিয়ে দেখে এতেই অপ্সরী লাগছে।আয়নাতে জেরিন কে দেখে রিয়া গাল টেনে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।জেরিন এক গাল হাসি দিয়ে বলে,
—-” তুমি বধু সেজে থাকবে, দুলাভাই পালকি নিয়ে আসবে।”
—-“শুধু দৃষ্টি বিনিময়ে তুমি মিষ্টি করে হেসো।”
দরজায় শার্ট এর হাতা গুটিয়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্পর্শ। মুখে অদ্ভুত স্নিগ্ধকর মায়া।রিয়া আর জেরিন ঘাড় ঘুরিয়ে সেদিকে তাকিয়ে অবাক হলো।রিয়া অধৈর্য গলায় বলে,
—-“ভাইয়া আপনি কখন এলেন? এসেই তো হিরোর লাইন শুনিয়ে দিলেন।আপনি কী লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের গান শুনছিলেন? অবশ্য না শুনলে এভাবে পরের লাইন বলতে পারতেন না।”
স্পর্শ রিয়ার গাল টেনে পাশ কেটে আয়নার সামনে বসে থাকা জেরিন কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আদুরে গলায় বলে,
—-“শালিকা দম নাও একটু।আমার প্রিয়তমাকে আগে মন ভরে দেখতে দাও।”
জেরিন লজ্জায় লাল হয়ে স্পর্শ কে বাম হাতের কোনুই দ্বারা হাল্কা আহত করে বলে,
—-“সরুন তো ভাইয়া ”
স্পর্শ বুকের বা পাশে হাত রেখে আহত কন্ঠে বলে,
—-“ভাইয়া ডেকে আহত না করে ডিরেক্ট আংকেল ডেকে নিহত করে দাও।”
জেরিন মুখে হাত দিয়ে হাসলো।রিয়া এতো সময় নিরব দর্শক ছিল।কোমরে দুই হাত রেখে ভ্রু উঁচিয়ে স্পর্শের সামনে এসে বলে,
—-” ও হ্যালো মি.মেহরাব!আজকে নতুন করে পাত্রি দেখার পালা।এখানে কী চাই আপনার? পরিবার কে নিয়ে আমার ডার্লিং কে নিয়ে যাবেন। ”
স্পর্শ মৃদু হেসে বলে,
—-“পরিবার আসুক বা না আসুক সে তো আমারই। যার মাঝে আমার প্রতিটা “ভালবাসার প্রহর” তাকে কীভাবে ছেড়ে যাই?”
রিয়া হাল্কা কাশি দিয়ে বলে,
—-” রোমান্টিক মুডে আছেন দেখছি! যাই হোক,রাতে সব রোমান্টিক ডায়লগ ছাড়বেন।আপাতত আপনি এখানে পাত্রি দেখতে এসেছেন সো রেডি হয়ে নিন।”
—-“ওকে শালিকা আমার!”
রুম জুড়ে এক মিষ্টি হাসির শব্দ ভেসে গেলো।তিনটি প্রাণের সেই আহবান, সেই মুগ্ধকর হাসি।কিছু আনন্দ,কিছু নতুত আশার অপেক্ষা।
__________________________
দরজায় বেল বাজতেই সবার ছুটাছুটি। এ’ওদিক তো ও’ এদিক।মহিলারা শাড়ির আচল ঠিক করতে ব্যস্ত।পুরুষরা পাঞ্জাবি ঠিক করে যা কে পাচ্ছে জেনে নিচ্ছে কেমন লাগছে দেখতে।কাজের মেয়ে দরজা খুলতেই পাঁচজন হাস্য মুখের মানুষের দেখা।নাজমুন বেগম,জসীম সাহেব এগিয়ে গেলো দরজায়।সালাম দিয়ে ভিতরে আসতে অনুরোধ করলেন মেহরাব পরিবার কে।কাজের মেয়ে দরজা বন্ধ করতেই রান্নাঘর থেকে শাওন ডাক দিলো।কাজের মেয়ে দুলকি চালে শাওনের সামনে এসে দাঁড়ায়।শাওন ভ্রু উঁচিয়ে প্রশ্ন করে,
—-“স্পর্শ ভাইয়া কই?”
কাজের মেয়ে এক কথায় বলে,
—-“আফা মনির রুমে আছে।”
—-” আচ্ছা তুই এই সবুজ শরবতের গ্লাস দেখছিস? ”
—-“হ দেখছি ক্যান?”
শাওন রহস্যময় হাসি দিলো,
—-” একটু পর ভাইয়ার কয়েক জন বন্ধু আসবে। শুধু মাত্র বন্ধুদের আর ভাইয়া কে এই সবুজ শরবতের ট্রে দিবি।বাকিদের ওখানে রাখা শরবত।”
কাজের মাথা চুলকে বলে,
—-“ঠিক আছে কিন্তু আলাদা ক্যান? ও আচ্ছা, আপনারা ভাইয়ারে মজা দেখাবেন?”
শাওন গলা ঝেরে বলে,
—-” তোর বুঝতে হবে না।যা বললাম তাই কর।”
শাওন রান্না ঘর থেকে বেড়িয়ে জেরিনের দরজায় নক করে।রিয়া দরজা হাল্কা খুলে মাথা বেড় করে ফিসফিস করে বলে,
—-” কী হইছে?”
শাওন এদিক ওদিক তাকিয়ে বলে,
—-“কাজের মেয়েকে সব বলে রেখেছি তুই শুধু সাথে থাকবি।সাদিয়া চলে আসবে এখনি আর শোন ভাইয়ার বন্ধুরা ও আসবে।”
রিয়া দাত কেলিয়ে বলে,
—-” চাপ নাই ব্রো, চিল!”
.
.
.
.
চার দিকে মৃদু গমগমে পরিবেশ।শুভ’র স্ত্রী স্নেহা এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে।মহিনি মেহরাব স্নেহার দৃষ্টি অনুসরণ করে শান্ত গলায় বলেন,
—-“কিছু খূজছো তুমি?”
স্নেহা নিচুস্বরে বলে,
—-“আসলে মা, জেরিন কে দেখছি না।”
শুভ পাশ থেকে উৎফুল্ল কন্ঠে বলে,
—-” আসবে আসবে, এখনই দেখবে স্নেহা।”
স্নেহা মৃদু হেসে নড়েচড়ে বসে।পাশের সোফা গুলোতে স্পর্শের মাত্র আসা বন্ধুরা বসেছে।রেহান,নীল আকাশ,সাথে প্রলয়ের মামাতো ভাই নিরব যে মেহরাব পরিবারের সাথেই এসেছিল।স্পর্শ সবার চোখ এড়িয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে বসার ঘরে পা দিলো।স্পর্শকে দেখেই আশরাফ মেহরাব হেসে বলেন,
—-“কখন এলি তুই?”
স্পর্শ গলা ঝেরে বলে,
—-“এইতো বাবা মাত্রই এলাম।”
রেহান ভ্রু উঁচিয়ে বলে,
—-” তাই বন্ধু,মাত্রই?”
—-“হ্যা বেয়াই সাব, মাত্রই।”
রান্না ঘর থেকে কাজের মেয়ের হাতে সেই সবুজ শরবতের ট্রে নিয়ে রিয়া আর সাদিয়া এগিয়ে আসে।রিয়ার হাতে থাকা লেবুর শরবতের গ্লাস গুলো নিয়ে স্পর্শের পরিবারের সামনে যায়।রেহান পাশ থেকে বলে,
—-” আহা বেয়াইন সাব দেখি আজ খুব খুশি মনে আছে।”
রিয়া সবার হাতে শরবত দিতে দিতে বলে,
—-“বহুত খুশি বেয়াই সাব।”
রিয়ার হাসির তালে তালে কাজের মেয়ের হাত থেকে শরবতের গ্লাস নিয়ে চুমুক দিলো স্পর্শসহ সবাই।এক মিনিটের মাঝে এক দল যুবকের কাশির সুর ভেসে উঠে।সবাই কপাল কুঁচকে সেদিকে তাকালো।রিয়া দাত কেলিয়ে বলে,
—-“আরে বেয়াই সব দেখি শরবত ও খেতে পারে না।”
সাদিয়া মুচকি হেসে বলে,
—-“বেয়াই সাব,শরবতে মিষ্টি হয়েছে তো?”
রেহানের চোখে পানি।কাশতে কাশতে বলে,
—-“যেই মিষ্টি দিলেন,আজীবন মনে থাকবে।”
স্পর্শ অসহায় চোখে রিয়ার দিকে তাকালো।আহত কন্ঠে বলে,
—-“আমাকে কেনো বোইন?”
রিয়া হাল্কা কেশে বলে,
—-“আহা, পাত্রি দেখতে আসলে এমন একটু হবেই।”
আশরাফ মেহরাব পাশ থেকে বলে,
—-“কিরে, তোর বয়সে আমি মহিনি কে দেখতে যেয়ে দুই গ্লাস করলার জুস খেয়েছি আর তুই?”
চলবে#ভালবাসার_প্রহর
#লেখনীতে_মায়া_মনি
#পর্ব৩৬
শুভ বাবার সাথে তাল মিলিয়ে দিলো।স্পর্শ আহত হলো বিষণ। মিনিটের মাথায় স্পর্শ নিহত হলো মারাত্মক ভাবে।সেলিনা এক হাতে ধরে রুম থেকে সদ্য সজ্জিত নীল পরী নিয়ে আসছে।বাতাসে কপালের উপর থাকা চুল গুলো যতবার উড়ছে জেরিনের, স্পর্শ ততবার নিহত হচ্ছে।হঠাৎ ইচ্ছে করলো,একটু ছুঁয়ে দিবে সেই চুল।পরিস্থিতি খুবই খারাপ স্পর্শের। পরিবারের সামনে কিছুই করতে পারছে না।জেরিন মাথা নিচু করে হেটে এলো।মহিনি মেহরাবের বরাবর সোফায় জেরিনকে বসায়।নম্র গলায় সবাইকে সালাম দিলো সে।স্পর্শ চোখ জেনো সরেই না।সাদিয়া ফিসফিস করে স্পর্শের কানে বলে,
—-“কী দুলাভাই,কেমন লাগে?”
স্পর্শ ঘোরের মাঝেই বলে,
—-“আহা,কী মারাত্মক আহত আমি।”
সাদিয়া মুখ চেপে হেসে দিলো।রিয়াকে উদ্দেশ্য করে রেহান বলে,
—-“তোমার জন্য মরতে পারি,ও সুন্দরী তুমি গলার মালা।”
রিয়া বুক বাকিয়ে বলে,
—-“সামান্য করলার জুস খেতে পারে না,আবার আসছে মরতে,যা ভাগ!”
রেহান ভড়কে গেলো।আকাশ এক নিশ্বাসে পুরো শরবত খেয়ে বলে,
—-“আমি কিন্তু শেষ করে ফেলেছি,এখন যদি মিষ্টি কথা না পাই তুলসি পাতা দিয়ে বেয়াইন আপনাকে ঢেকে দিবো।”
রিয়া দাত কেলিয়ে বলে,
—-“প্রেম করতে হলে আপনার সাথেই করবো,একদম টুরু লাভ।”
সবাই হেসে দিলো।নাজমুন এবং শাওন জেরিনের দুদিকে পিছনে দাঁড়ালো। মহিনি মেহরাব আলতো স্বরে বলেন,
—-“কেমন আছো মা?”
জেরিন মাথা নিচু রেখে আস্তে করে বলে,
—-“আলহামদুলিল্লাহ, ভালো!আপনারা ভালো আছেন?”
আশরাফ মেহরব হেসে বলেন,
—-“অনেক ভালো আছি মা।তোমাকে দেখার জন্য তো পেরেশান ছিল সবাই।অবশেষে চলে এলাম।”
নাজমুন বেগম হেসে বলেন,
—-“এসে ভালোই করেছেন।যখন ইচ্ছে চলে আসবেন সবাই।”
স্নেহা স্তির চাহনিতে জেরিনকে দেখছে।একদম মায়াবি মুখ মেয়েটার।শুভ মৃদু গলায় বলে,
—-“শুনো,আমি কিন্তু ওতো তুমি আজ্ঞে করবো না,ফর্মালিটি ছাড়াই তুই করে বলবো।”
জেরিন হেসে সম্মতি দিলো।পরিবেশটা আনন্দিত।জেরিন মাথা নিচু রেখে বার দু’এক স্পর্শের দিকে তাকালো।স্পর্শ এখনো চেয়ে আছে।স্নেহা মৃদু গলায় বলে,
—-“আমি স্পর্শের ভাবি।আমাদের আগে দেখা হয়নি। ”
জেরিন স্তির চোখে তাকিয়ে দেখলো স্নেহাকে।বেশ শুকনো,লম্বা, দেখতে বেশ সুন্দর।মহিনি মেহরাব এবার হেসে উদ্বেগি কন্ঠে বলেন,
—-“এবার আসল কথায় আসি, ভাবি। জেরিন কে আমাদের খুবই পছন্দ। স্নেহা যেমন আমাদের মেয়ে, জেরিন ও আমাদের মেয়ের জায়গা নিয়ে ফেলেছে।”
আশরাফ মেহরাব অনুরোধের সুরে বলেন,
—-“এই মেয়েটাকে আমাদের চাই ভাই।আমরা আজকেই জেরিন কে রিং পরিয়ে নিতে চাই।”
জসীম সাহেব মারাত্মক খুশি হয়ে গেলেন।উৎসাহিত হয়ে বলেন,
—-“স্পর্শকেও আমাদের খুব পছন্দ।আপনার যা ভালো মনে হয় করুন,আমাদের আপত্তি নেই।”
জেরিন লজ্জায় লাল হয়ে আছে।স্পর্শ মুচকে হেসে সবার সামনে উঁচু গলায় বলে,
—-“ও হ্যালো মিস নীল পরী,আপনার কী আপত্তি আছে আমার হতে?থাকলে ও সরি,আপনাকে তো আমারই হতে হবে।”
শাওন পিছন থেকে বলে,
—-“এতো সহজে আমার বান্ধুবীকে দিচ্ছি না ভাই।অনেক দামি জিনিস আমার বান্ধুবী।”
স্পর্শ জেরিনের দিকে স্তির চাহনি নিয়ে বলে,
—-“জীবন দিতে পারবো না,কারণ মরে গেলে ভালবাসবে কে? এই ছাড়া বাকি সব কিছুর বিনিময়ে হলেও আমার এই পরীটা কেই চাই।”
শুভ শীষ বাজিয়ে উঠে।আনন্দিত হয়ে বলে,
—-“আরে ভাই,তুই যে এতো রোমান্টিক জানতামই না।”
স্নেহা পাশ থেকে হেসে বলস,
—-“ভাই আমার হিরা বুঝলে,সব কিছুই সময় মতো করে।”
রেহান, আকাশ চেঁচিয়ে বলে,
—-“ভাবির কী আপত্তি আছে? ”
জেরিন হেসে দিলো।সবাই বলে উঠে,
—-“নিরবতাই সম্মতির লক্ষ্যণ। ”
মহিনি মেহরাব রিং বেড় করে স্পর্শ কে কাছে ডাকলেন।জেরিনের বাম হাতে পরম যত্নে রিং পরিয়ে দিলো স্পর্শ। দুনিয়ার সব থেকে সেরা মুহূর্তের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করে জেরিন।
_______________________________
সবাই খাওয়া দাওয়া করে বসার ঘরে গল্প করছে।জেরিন রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।বিকেল হয়ে গেছে। শিতল হিম বাতাসে গায়ের শাড়ি উড়ছে।পিছন থেকে কারো শক্ত হাতের মাঝে নিজেকে আবদ্ধ অনুভব করল।বুঝতে পারলো স্পর্শ এসেছে।জেরিন ছোট্ট করে নিশ্বাস ফেলল।স্পর্শ কাধে চুমু খেয়ে আদুরে গলায় বলে,
—-“বউ আমার চুপ করে আছে কেনো? আজা এতো বড় খুশির দিন সে মন খারাপ করেছে কেনো?”
জেরিন ধরা গলায় বলে,
—-“এখন কী চলে যাবে তুমি বাসায়?”
স্পর্শ অবাক হলো এমন প্রশ্ন শুনে।হাল্কা হেসে বলে,
—-“এই প্রশ্ন কেনো শুনি?”
জেরিন স্পর্শের দিক ফিরে পাঞ্জাবির কলার চেপে বলে,
—-“আপনি না গেলে কীভাবে আসবেন আমাকে নিতে?”
স্পর্শ লম্বাশ্বাস ফেলে বলে,
—-“আমি হলুদের আগে যাবো বাড়ি।তোমাকে রেখে কোথাও যাচ্ছি না আমি।”
স্পর্শ জেরিনের কপালে চুমু খেলো।মেয়েটার মুখের দিকে তাকালেই জেনো স্পর্শের অদ্ভুত অনুভূতি হয়।বুকের বা পাশে চিন চিন করে উঠে। হয়তো এরই নাম ভালবাসা!
চলবে