দ্বিতীয় বাসর(গল্প) পর্ব-১০
হাসিনা সাঈদ মুক্তা
কতক্ষণ ধরে বন্ধন মিতুর মুখটা নিজের মুখে এনে ধরে রাখল মিতু বুঝে উঠতে পারে না।মিতুর শুধু মনে হতে লাগল,কেন এত ভালো লাগা?আগে তো কখনো লাগেনি?২৭ বছরের জীবনে এ তৃপ্তি,জীবনের সাধ… এ অনুভূতি,এ মাহেন্দ্রক্ষণের কোন তুলনাই হয় না!প্রতিটি সেকেন্ড,প্রতিটি মিনিট মনে হতে লাগল কতখানি অর্থবহ তার কাছে।যদি তা ধরে রাখা যেত?যদিও তার মামাতো ভাই হিমেলের সাথে সম্পর্ক ছিল।হিমেল বহুবার তার বহু কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতো।লাজুক স্বভাবের ও ধার্মিকপরায়ন মিতু হাত ধরার বাইরে কখনো ঘনিষ্ঠ হতে দেয়নি।আর তেমন সুযোগও ছিল না।কারন হিমেলও অনেক ব্যস্ততা দেখাতো এবং মিতুকে অন্যসব পুরুষের মতো এত ভালোবাসা জাহির করতো না।সবকিছুতে ছিল নিজেরই প্রশংসা।ইঞ্জিনিয়ার ও দেখতে ভালো বলে অযথা নিজেকেই জাহির করতো হিমেল।একবার খুব একান্তে মিতুকে সু্যোগ বুঝে কাছে নিতে চেয়েও পারেনি তার এই অহমিকা ও অভদ্র আচরনের জন্য।মিতু বুঝতো হিমেল মুখে কিছু না বল্লেও সবই চাইতো কিন্তু তাই বলে মিতুকে অবহেলা করে তাকে পাওয়ার চেষ্টা এতটা নির্বোধ মিতু নয় তাই ধরাও দেয়নি।আর আজকে,এই মুহুর্তে যা হচ্ছে তার জন্য প্রতিটা মেয়েই অপেক্ষায় থাকে।আজকাল তো প্রেম করলেই কত কিছু হয় আর সে তার বান্ধবীদের কাছেও শুনেছে এমন অনেক ঘটনা।তাতে সে বারবার শিহরিত হয়েছে,কখনো ব্যাকুলও হয়েছে।কিন্তু তা ছিল শুধু মাত্র তার নিজের ভিতর।কখনো এমনি করে কাউকে কল্পনায় আনে নি মিতু।কারন হিমেলের রূঢ় আচরণ তাকে কেমন কঠিন করে তুলেছিল বিয়ের কিছু দিন আগে থেকেই।আর যেদিন থেকে মিতু আবারো শুনলো বন্ধন তাকে ভালোবাসতে পারবে না মিতু যেন নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করে রেখেছিল।কিন্তু মিতু অসুন্দর নয়,যৌবনও তাকে কামুক করেছে ্”তাই বলে এত দিন পরে?’
মিতু সব ভুলে যেতে চায়।আজ তো কোন পাপ হচ্ছে না তার বিয়ে করা বর তাকে স্পর্শ করছে।বন্ধন মিতুর সারা মুখে কপালে,গালে,ঠোঁটে আস্তে আস্তে আদরের উষ্ণ পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে পরম যত্নে।তার পর তার গলা,ঘাড় ধীরে ধীরে মিতুর বাহুর দিকে ধাপে ধাপে এগোয় বন্ধন।দুজনের নিঃশ্বাস প্রশ্বাস আরো ঘণীভুত হয়,সে উত্তাপে মিতু যেন নিজেকে সমর্পণ করে স্থির আবেগে।তার নাইটির উপরের পার্টটা খোলা বন্ধনের আকাংক্ষার পরিমাণটাও বেড়ে যায় সেরূপে।বন্ধন বুঝতে পারে মিতু সম্পূর্ণ আনকোরা।
“আদরের অনেক কিছুই মেয়েটা জানেনা হয়তো?’
মিতুর কম্পন টের পায় বন্ধন।বন্ধনের আদরের তীব্রতায় মিতু কিছুটা পড়ে যায়।তাদের শোবার ঘরে মিতু আধশোয়া হয়ে বিছানায় হেলে যায়।বন্ধনের ভীষন মায়া হয় ।
“আহা ব্যাথা পাবে তো মিতু।’
বলে মিতুর পা দুটো বিছানায় তুলে দেয়।মিতুর চোখ দুটো বন্ধ, তার মাথা বালিসে দিয়ে পরম মমতায় আবারো চুমু খেতে থাকে বন্ধন একের পর এক।মিতুর নূপুর পড়া ফর্সা পায়ে অনাবিল আনন্দে বন্ধন আদর বুলাতে থাকে।ফের মিতুর ফর্সা বাহুতে এবার যেন পাগলের মতো চুমু খেতে থাকে।মিতুর স্পর্শকাতর অংগগুলোয় বন্ধন দিতে নেয় ভালোভাসার তীব্র ছোঁয়া।বন্ধন খেয়াল করলো মিতু মাঝে মাঝে হাত দিয়ে বাঁধা দিচ্ছে। কখনো আড়ষ্ট হয়ে যাচ্ছে সে।
“প্রথম আদর হয়তো তাই এমন করছে মিতু?কিন্তু আমার কাছে এত লজ্জা কিসের বোকা মেয়ে ?’মনে মনে অবাক হয় বন্ধন।
বন্ধন তার পেশাগত কারনে বেশীর ভাগ ফরমাল পোশাক পড়ে।হাফহাতা সার্ট কখনো ফুল হাতা মিতুর প্রিয় নীল রঙা স্যুট পড়ে থাকে আর চোখে চকচকে গগলস। এই গেটআপে ভীষন মানায় লম্বা চড়া সুন্দর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষটাকে।
ঘুমাতে গেলে হাফ হাতা হাওয়াই সার্ট বা ভিতরের গেঞ্জি পড়ে।আজকেও হাফ হাতা সাদা সার্ট পড়া ছিল বন্ধন।মিতু টের পায় বন্ধন তার সার্ট খুলে ফেলছে।ফর্সা রোমশ শরীর। বন্ধনের বুকের মাঝে লোম,গড়নটা বেশ মজবুত।মিতু একবার চোখ খুলে ফের অন্যপাশে তাকিয়ে চোখ বুজে যায় লজ্জায়।বন্ধন মিতুর মুখের কাছে আসে।আদুরে গলায় বলে
“চোখ খুলো না মিতু,তোমার স্বামী তোমাকে আদর করছে দেখবে না বলো?’
মিতু এবার উঠে বসে মনে হলো যেন সম্বিত ফিরে পেয়েছে মিতু।বন্ধনের মুখের পানে চেয়ে বলে
“আদর শেষ হয় নি?আমি এখন যাব।’
মিতুর কথায় তাজ্জব বনে যায় বন্ধন।কিছুটা উদগ্রীব হয়ে বলে
“যাবা মানে কই যাবা?আদর এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়?এটা কি এত তাড়াতাড়ি শেষ হবার জিনিস?’ফের দুহাত দিয়ে মিতুকে বুকে টেনে নিয়ে বলে,
“আজ তোমার মাঝে নামবো আমি তোমার ভিতর ডুব দিবো বুঝছো?’
“পারবেন না।আজ আমাকে ছাড়েন?’মিতুর জবাব।
“পারবো না মানে?তুমি চাও না?’
“চাই…….কিন্তু আজ পারবো না আমার শরীর খারাপ।’
“শরীর খারাপ? কি হয়েছে বাবু তোমার?’মিতুর মুখটা হাত দিয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে বন্ধন।
“কি বল্লেন?আমি বাবু?’
“হুম তুমি আমার বাবু,আমার সোনামনি,আমার জান পাখি বউ।’
“তাই?’শুনে মিতু শব্দ করে হেসে ওঠে।
“হুম এখন ছাড়েন।’
“কি তখন থেকে ছাড়েন ছাড়েন করছো?কি হয়েছে তোমার এমন করছো কেন?আমার আদর তোমার ভাল লাগছে না মিতু?’বন্ধন যেন একটু রেগে যায় এবার।
“খারাপ লাগবে কেন?শরীর খারাপ বুঝেন না?আমাদের মেয়েদের যেটা হয় প্রতি মাসে? আমার সেটা এখন হয়েছে।’বলে ওয়ার্ডরবের উপর রাখা পিরিয়ডের প্যাকেটটার দিকে ইঙ্গিত করে মিতু।
“ঐটা নিতেই এই ঘরে এসেছিলাম।’মাথা নীচু করে লাজুক হাসে মিতু।
বন্ধন এইবার পুরাই বোকা বনে যায়।সে তো ভুলেই গিয়েছিল মেয়েদের এই প্রবলেম এর কথা।তাছাড়া কেয়ার অসুস্থতা,মারা যাওয়া নানারকম টেনশনে সে এসব ব্যাপারগুলো মনেই রাখেনি।অসহায়ভাবে বলে
“কতদিন লাগবে ভালো হতে?’
“পাঁচদিন।’
মিতু এবার উঠে দাঁড়ায়।নিজেকে ঠিক করে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়।বন্ধন ফের পেছন ফিরে ওর হাতটা ধরে।
“কোথায় যাচ্ছো ?কিছু করবো নাতো? এভাবেই আদর করবো।থাকো।তারপর তোমার বুকে ঘুমিয়ে থাকবো।’
মিতুর এই কথাগুলোয় খুব ভালো লাগে।খুব মায়াও হয় বন্ধনের জন্যে।কিন্তু তাতেও সায় দিতে পারেনা মিতু।বন্ধনের উত্তাপ বুঝে গেছে মিতু।আপাতত আজ পালিয়ে বাঁচতে হবে তাকে।
“ঐঘরে নানু একা, নানুর শরীরও আজ ভালো না।আমার এভাবে আপনার কাছে থাকা ঠিক না।’
“ও আচ্ছা তাই না? নানুর কথাটাই ভাবলা?আর আমার যে কি অবস্থা সেটা কিছুনা?একবারো ভাবছো সেটা?’বেশ রেগে যায় বন্ধন।
“আমার কি দোষ বলেন?’ফের বলে মিতু
“এই এতদিন পাঁচটা মাস পরে বুঝলেন কেমন লাগছে?এতদিন তবে কিভাবে পারলেন এভাবে আদর ছাড়া থাকতে?কই এতদিন তো কিছু বলেন নি?আমাকেও তো কিছু বুঝতে দেন নি?’
বন্ধন মিতুর কথার কোন উত্তর দিতে পারেনা।বেচারা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে মিতুর দিকে।এভাবে আজ তার শিক্ষা হবে সে ভাবেনি।কত সখ করে পছন্দ করে এই নাইটিটা কিনেছিল আজকের এই রাতটার জন্যে?মিতুকে কাছে পাবার জন্যে?পাঁচটা মাস সে দেরী করে ফেলেছে মিতুকে সোহাগ করতে এখন মনে হচ্ছে পাঁচদিন সবুর করার মতো ধৈর্য্য তার নেই।মিতুরও খুব খারাপ লাগছে। নাইটির উপরের পার্টটা পড়ে বন্ধনের কাছে আসে।বন্ধনের গালে হাত ছুঁইয়ে বলে
“মন খারাপ করছেন কেন?পাঁচটা দিনই তো এমনি কেঁটে যাবে?আমি এখন নানুর রুমে যাই কেমন?আর প্লিজ এমন মন ভার করে রাখবেন না।’
মিতু বন্ধনের গালের থেকে হাত সরিয়ে নিতে নেয়।বন্ধন ফের হেচকা টাঁনে মিতুকে কাছে টানে।ফের মুখটা বাড়িয়ে দিয়ে মিতুর ঠোঁটগুলো জোরে চেপে ধরে ওর যাবার বেলায়।মিতু আবারো বিভোর হয়ে যায়।প্রচণ্ড ভালোলাগার নেশাতে সেও ডুবে যায়।অজান্তে মিতুর হাতগুলো বন্ধনের চুলে,বাহুতে ছেঁয়ে যায় আবেশে।এ কেমন জাদু মিতুকে মাতাল করে দিচ্ছে আবার?বন্ধন তাদের কাবার্ডে মিতুকে ঠেক দিয়ে দাঁড়ানো।মিতুর দুপাশের দুহাত শক্ত করে ধরে রাখে, তার হাত দুটো দিয়ে চেপে ধরে।মিতুর পা দুটো আঁটকে থাকে।কিন্তু নানুর রুমেই তার দ্রুত যাওয়া দরকার।এবার যেন মিতুই আর যেতে চায় না……..(চলবে)দ্বিতীয় বাসর(গল্প),পর্ব-১১
হাসিনা সাঈদ মুক্তা
মিতু পা টিপেটিপে নানুর রুমে চলে এল।
“কয়টা বাজে কে জানে?’
তার বেডরুমে ডিমলাইটের আলোয় ঘড়িতে সময়টা ভালো করে দেখতে পারেনি মিতু।মিতু চুপচাপ নানুর বিছানায় তার পাশে শুয়ে পড়লো।নানু পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছেন বেশ।নাক ডাকাটা এখনো চলছে।বিছানায় শুয়ে পড়ে আর মুখ টিপে হাসে।কি ভীষন ভালোলাগায় প্রবল আন্দোলিত হয় সে।সারা শরীরে তার আনন্দের ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাকে।মিতু তার হাতের আঙুল দিয়ে বারবার তার ঠোঁট ছুঁয়ে দেখে।সারা হাতে হাত দিয়ে ছোঁয়ায়,এরপর সমস্ত বাহুতেও স্পর্শ করে যেখানে যেখানে বন্ধন তাকে ভালবাসার উষ্ণতা দিয়ে ভরিয়েছে।
“আচ্ছা বন্ধন কি তবে তার প্রাণভ্রমরা?ফুল তো হয় নারী আর সেই ফুলের গায়ে ভ্রমর বসে,মধু খায় ভ্রমরবেশী পুরুষ।’কত নাটক নোভেলে তো এমনটাই দেখায়।
তবে তার কাছে মনে হয় মধুর স্বাদ তো সেও পেয়েছে।২৭ বছরের জীবনে আজ অনেকদিন পর মিতু নিজেকে আবিষ্কার করল ভিন্ন রূপে। সে যে এক নারী?যার রূপ আছে,আছে ভরা যৌবন,যার দুটি চোখে অফুরন্ত স্বপ্ন।যে স্বপ্নের বাসরের কথা তার মতো প্রতিটা মেয়েই ভাবতে ভালোবাসে নিভৃত চিত্তে,একাকী নিরালায়।যতটাই ভাবে ততোটাই রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠে।নিজেকে দোষারোপ করে ফের।
কেন সে এভাবে ভাবেনি?কেন তার ভালোবাসা সে এতদিন আদায় করতে পারেনি?বন্ধন কবে কি না কি বলেছে বিয়ের আগে কেন সে এটা নিয়ে পড়েছিল?
হঠাৎ মিতুর একটা কথা মনে হলো
“আচ্ছা বন্ধন কি তাকে ভালোবাসে?’
বন্ধন এটা জিজ্ঞেস করেছিল।মিতু তার জবাবও জানিয়েছে তার প্রাণনাথ, তার সোহাগকে।
“হায় আল্লাহ কি করলাম এটা একবারও জিজ্ঞেস করে নিলাম না কেন উনাকে?কিন্তু বন্ধন আমাকে আজ বাবু বলে ডেকেছে।সোনাবউ,জানপাখি আরো কত কিই তো বল্ল।’
মিতু মুখে হাত দিয়ে ফের হাসে।তার চোখে মুখে আনন্দের বন্যা সারা শরীরে তরংগের মতোন বিজলী খেলে যায়।
“আচ্ছা কি করছে বন্ধন এখন?’
ফের মনে পড়ে তার মাথার পিছনে বালিশের উপরের পাশে তার মোবাইল।মোবাইলে বন্ধন ও মিতুর বিয়ের কিছু ছবি আছে।এছাড়া নীবিড়কে নিয়ে যেদিন শপিং করলো রেষ্টুরেন্টে খেতে গেল আর ঐদিন যে মিতু গাড়ীর সাথে লেগে হাতে ব্যাথা পেয়ে সেন্সলেস হয়ে পড়ে গিয়েছিল সেদিনেরো কিছু ছবি আছে।বন্ধনের একটা নীল সার্ট পড়া সিঙ্গেল ছবি নীবিড় তুলে দিয়েছিল সেদিন মিতুর মোবাইলে।মিতু এবার সেই ছবিটা দেখে ।
“সত্যিই কি এখন আপনার, আমাকে ছাড়া ঘুমাতে কষ্ট হচ্ছে বাবু?’বাবু নানীর দেয়া বন্ধনেরই নাম।
“কিন্তু আমার যে আর ভালো লাগছে না আপনাকে ছাড়া?কি জাদুর ছোঁয়া দিলেন আমায়?’
“ইশ কি দরকার ছিল নানুর ঘরে আসার?’এখন বাজে সাড়ে চারটা।মোবাইলে ঘড়ি দেখে মিতু।আর একটু পরেই তো ফজরের আযান দিবে।বন্ধন তার বুকে ঘুমাতে চেয়েছিল।
“এতক্ষন ছিলাম উনার কাছে?’বন্ধনের সোহাগের ঠেলায় সময়ও কত দ্রুত চলে যায়?আর তাকে কতখানি বন্ধন ভালোবাসে তাও জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছে মিতু স্বামীর ঠোঁটের জাদুকরী চুম্বনে।বন্ধন আজ তার বাহুতে কামড়ে দিয়ে দাগও বসিয়ে দিয়েছে বাহুর জায়গায় জায়গায়।
“বুড়ী জানলে তো একটা লাফ দিবে তার বাবু সোনা আজকে আমাকে কি কি করেছে?’
ফের ছবিটা আংগুল দিয়ে স্ক্রীনে বড় করে দেখে তার সোহাগকে।এবার মিতু তার ঠোঁট লাগিয়ে চুমু খায়।শিহরনে মিতু সেই মুহুর্তগুলোতে নিমিষে হারায়।মিতুর চোখে পানি চলে আসে।
“এত এত বেশী ভালো আমি আপনাকে বেসেফেলেছি বন্ধন।এখন যে আপনাকে ছাড়া আমি থাকতেই পারবোনা।পাঁচটা মাস কেন লাগায় দিলেন?এতদিনে তো আমি মাও হতে পারতাম?বলেন? বলেন না….? ‘
তবু তার মাঝেও মিতু নীবিড় সুখ খোঁজে।কারন ভালোবাসার প্রতি সেও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিল।দেরীতে হলেও বন্ধন নতুন করে তার ভেতরে সেই অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে তাই বা কম কিসে?
“এখন আর কোন সময় নষ্ট করবো না,আপনাকে নিয়ে আমি স্বপ্ন বুনবো।নতুন করে আমাদের পৃথিবী সাজাবো….’
ভাবাবেগের রংবেরং মোহনীয়তায় মিতু নিজেকে হারাতে চায়।সেই মুহূর্তকাল চোখের সামনে যতই ভাসে ততোই স্বপ্ন সুখের ঘোর লাগে…… সারা চোখে মুখে,দেহেপ্রানে তার উচ্ছ্বাসের তীব্রতা ছেয়ে যায়….ভালোবাসার ছোঁয়া এ যে অন্যরকম জাদু?স্পর্শের তীব্রতায় মিতু আজ নতুন করে অপেক্ষার প্রহর গুনে।শিহরনে পা দিয়ে এবার তার পা স্পর্শ করে।
“হায় আল্লাহ আমার পায়ের নূপুর গেল কই?কখন খুলে গেল নূপুরটা?’বন্ধন যখন তাকে এসব জায়গায় আদর করছিল তখনও তো ছিল নূপুরটা?
একে তো সোনার নূপুর।তার উপর বন্ধনকে কত বুঝিয়ে আজ নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে।বন্ধন আজ পুরোদস্তুর নাছোড়বান্দা।মনে হচ্ছিল বহুকষ্টে নিজেকে সংবরণ করেছে।কিন্তু সোনার নূপুর বলে কথা।বন্ধনের আদর-সোহাগের কথা ভাবতে ভাবতে মিতুর চোখে ঘুমও চলে এসেছিল ততক্ষণে।কিন্তু নূপুরের চিন্তায় তো এখন ঘুমই আসবে না।আর এইবার বন্ধন তাকে কাছে পেলে মনে হয় না ছাঁড়বে।
“আচ্ছা চুপিচুপি যেয়ে দেখে আসবো?’
কিংকর্তব্যবিমূঢ় মিতু দরজার ওপাশে চেয়ে থাকে…..যার ওপাশে তার শোবার ঘর…. একবার বিছানা ছেড়ে ওঠে ফের শোয়….ওঘরে যাবে কি যাবে না ভেবে ব্যাকুল হয় মিতু।(চলবে)