অন্ধপ্রেম
Writer_Shabnaj_Hossain_Moon
#Part_6
রাজ সিংহের মতো গর্জন দিচ্ছে আর শীতলকে ডাকছে ..
শীতল এতো সহজে ধমে যাওয়ার মেয়ে নয় সে ঠিক করেছে কিছুতেই রাজের দেওয়া ড্রেস পড়বেনা ,,
রাজ যদি তাকে জবাই করে ফেলেও তাহলেও না .
.
.
.
রাজ একপর্যায়ে ডোর ওপেন করে ফেলে ,,,
ডোর ওপেন করে রাজ দেখে শীতল ভেজা কাপড়ে দাড়িয়ে আছে ,,
_তোমার এতো বড় দুঃসাহস তুমি আমার কথা শোনোনা ,,,
_আমি আমার নিজের মর্জি মতো কাজ করি ।
আমি কারো কথা মানতে বা শুনতে বাধ্য নয় .
_আমার মুখে মুখে কথা বলবেনা বলে দিলাম ।
এটা তোমার বাড়ি নয় .
এটা আমার বাড়ি তাই আমি কথা বলবো আর তুমি শুনবে ।
শীতল একরাশ ঘৃনা নিয়ে রাজের দিকে
তাকিয়ে রইলো শুধু ।
.রাজ খেয়াল করে দেখলো শীতল তার দেওয়া ড্রেসটা বাথটাবে ডুবিয়ে রেখেছে ।
এবার রাজের রাগ. চরম পর্যায়ে গেলো ,,,
.
.
.
রাজ শীতলের শাড়ি আচল ধরে একটানে খুলতে থাকে ,,,
শীতল ভাবেনি রাজ এমন কাজ করবে ।
_কি করছেন কি আপনি ,,শাড়ি ছাড়ুন প্লিজজ আল্লাহর দোহায় ,,,
_যা করছি দেখতেই তো পাচ্ছো .
সারা রাত শাড়ি ছাড়া ভেজা সিচিয়েশনে এখানেই থাকবে ।
এটাই তোমার শাস্তি ।
_প্লিজজজ আমাকে ছেড়ে দিন ।
আমার সাথে এমন করবেননা ,,
এই শীতে আমি এখানে থাকবো কি করে ।
ড্রেসটা বাথটাবে ভেজানোর সময় এই কথা মনে রাখা উচিৎ ছিলো ।
এখন লেইট হয়ে গিয়েছে .
এই শাস্তি তোমায় পেতে হবে ।
.
.
.
রাজ শীতলের শাড়ি খুলতেই শীতল চোখ বন্ধ করে দুই হাত দিয়ে নিজের শরীর ঢেকে ফেললো ,,
রাজ কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে ওয়াস রুমের ডোর বাহির থেকে লক করে চলে গেলো .
শীতল বেচারি এখনো দুইহাত দিয়ে নিজেকে ঢেকে রেখেছে ..
প্রচুর শীত লাগছে শীতলের ,,
অলরেডি ঠান্ডাও লেগেছে শীতলের ,,
রাজ আরাম করে পুরো বেড দখল করে ঘুমিয়ে আছে ।
যেনো ওর মতো সুখি আর কেউ নয় ।
ভোর হয়েছে ,,
শীতলের মাথাটা বেশ ভারি লাগছে ।
চোখ খুলে নিজেকে রাজের রুমে আবিষ্কার করলো ।
সে তো ওয়াসরুমে ছিলো বাট রুমে কিভাবে এলো ।
_একি আমার গায়ে শুকনো কাপড় কোথা থেকে এলো ।
এগুলো কে পড়ালো ।
.
.
.
শীতল রাজকে রুমে দেখতে পেলোনা ।
রান্নার মহিলা মানে খালাকে শীতল তার পাশেই আবিষ্কার করলো ।
একরাশ মায়া নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে খালা।
.
.
.
_বউরানি এখন কেমন লাগছে ??
_জি ভালো বাট একটু শীত করছে আর হালকা ঠান্ডা লেগেছে বোধ হয় ।
আচ্ছা আমি এখানে কিভাবে এলাম ??
_রাজ বাবা বলেছেন তুমি জেদ করে রাতে গোসল করেছে ,,আর বেশি শাওয়ার নেওয়াতে জ্ঞান হাড়িয়েছো ,
আমিতো একটু আগে এলাম তোমায় দেখতে ,,
শীতল মনে মনে ভাবলো ভালোই নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপাতে জানে ,,অবশ্য এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায়না রাজের কাছ থেকে ।
.
.
.
রাজ অফিসে গিয়েছে সকালে এখনো আসেনি ,,
শীতলের ঠান্ডা লাগাতে সে বেড রেস্ট নিচ্ছে শান্তিতে ।
রাজের ফেস দেখতে ইচ্ছে করেনা শীতলের ।এখনতো রাজ নেই তাই শীতল কিছুটা স্বস্তির নিঃস্বাস নিতে পাচ্ছে ।
.
.
.
শীতলের এই শান্তি টুকু বেশি ক্ষন রইলোনা .
রাজের বিয়ের খবর শুনে তার কিছু দুঃসম্পর্কের আন্টিরা বিকেলে বাসায় আসে ।
সবাই শীতলকে দেখতে এসেছে ।
শীতলকে রাজের কথা মতো আন্টিদের সামনে বসে থাকতে হলো চিড়িয়ার মতো ।
নানান ধরনের কথা বলছে শীতলকে আন্টি টাইপ মহিলারা ।
সবাই শীতলকে খোচা দিয়ে কথা বলছে ।
নতুন বউ হিসেবে শীতল তেমন কোনো কথায় বলছেনা .
.
.
.
_একজন বললো ,,,নতুন বউ তোমার রুপ দেখেই আমাদের রাজকে পাগল বানিয়েছো মনে হয় ।
দেখো তোমার রুপ শেষ হয়ে গেলে রাজ আবার চলে না যায় ।
রাজও তাদের সাথে বসে আছে ল্যাপটো নিয়ে বাট কোনো কথা সে শুনতে পাচ্ছেনা এমন ভাব করছে ।
_আরেকজন ,,,তা বউরানি তোমার ফ্যামিলিতে তোমাদের মেনে নিয়েছেতো ।
আমি হলে কিছুতেই আমার মেয়ের এমন কান্ড মেনে নিতামনা ।
_অন্যজন ,,কেনো মেনে নেবেনা ,,রাজ হলো হিরের টুকরো ছেলে ,
এমন ছেলে সবাই লোফে নেয় ।
বউরানির ভাগ্য রাজের মতো ছেলে পেয়েছে ।
শীতলের গা জ্বলে যাচ্ছে কথাগুলো শুনে ,,
ইচ্ছে করছে সবগুলোর কথার উওর দিতে ,,,
.
.
.
শীতল সবার জন্য কি কি নাশতা বানানো হচ্ছে তা রান্না ঘরে দেখতে গেলো ,,,
তখন একটা মহিলা শীতলকে কিছু কথা বলতে রান্না ঘরে গেলো ,,,
_জানো বউরানি আমি তোমার মতো সুন্দরি ছিলাম যখন তখন আমার স্বামি আমাকে অনেক ভালোবাসতো ,,যাকে বলে আমার প্রেমে অন্ধ ,,
এখনো আমাকে একরকমই ভালোবেসে ।
আমি ভেবেছিলাম আমার রুপ যেদিন থাকবেনা তখন এতো ভালোবাসবেনা আমাকে ।
এই দেখোনা এখনো আমাকে কলের উপর কল দিচ্ছে বাসায় যাওয়ার জন্য ।
আমাকে ছাড়া একমুহূর্ত থাকতে পারেনা ।
এজন্য কোথাও যেতে দেয়না ,বাবা বাড়িতে আজ পর্যন্ত এক রাত থাকতে পারিনা উনার জন্য .
.
.
.
কথা গুলো বলেই মহিলাটা অনেক হাসলো যাকে বলে সুখের হাসি ,,
শীতলের হঠাৎ হিংসে হলো মহিলার উপর ,,
কলেজে পড়া কালীক বান্ধবিরা বলতো শীতলের সৌন্দর্য দেখে ওর স্বামী অন্ধের মতো ওকে ভালোবাসবে ,,
শীতলের প্রেমে অন্ধ হয়ে একবার উঠবে আর বসবে ।
শীতল যা বলবে তাই করবে শীতলের স্বামি ।
.
.
.
শীতলের ভাগ্য এমন হবে তা শীতল ভাবতেই পারছেনা ।
রাজ ওকে কষ্ট দেওয়ার জন্য বিয়ে করেছে ভালোবেসে নয় বা .
.
.
.
সবাই নাশতা করছে আর শীতলকে নানান প্রশ্ন করছে .
রাজ এসব তোয়াক্কা করছেনা সে নিজের কাজ করছে ।
শীতলের রুপের প্রসংসা করতে গিয়ে এক মহিলা শীতলে গায়ে আচরের দাগ গুলো দেখে ফেলে ,,
_বউরানি রাজ তোমাকে কেমন আদর করেছে যার জন্য এমন দাগ হয়েছে ,,
শীতলের লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে আছে ,,
রাজ শীতলের দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিচ্ছে ,,তারপর আবার নিজের কাজে মন দিচ্ছে ,
.
.
.
সবাই হাসাহাসি করছে শীতলকে নিয়ে ।
যেনো শীতল কোনো জোকার ।
সবাই চলে গেলে শীতল রুমে গিয়র তার বাড়িতে ফোন করে ,,তখনি রাজ সিংহের মতো গর্জে উঠে আর শীতলের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ফ্লোরে ছুরে মারে ,,
ফোন ভেঙে টুরো টুকরো হয়ে যায় ।💔💔💔
চলবে,,,