গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন পর্বঃ ১৬

গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন
পর্বঃ ১৬
লেখাঃ Shakil
..
..
..
ধরুন আপনার একটা মেয়ে বেস্টফেন্ড আছে। তার একটা বিএফ আছে যে এতটাই খারাপ যে অনেক মেয়ের সাথে সে সম্পর্কে জরিয়ে আছে এবং রুমডেট অবদি করেছে।
—- আপনি সব জানেন যে আপনার বেস্টফেন্ডটি এমন একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জরিয়ে গেছে এমতাবস্থায় আপনি বা আপনারা কী করবেন??
নিশ্চয়ই তাকে বুঝাবেন, বাঁধা দিবেন, তাতে যদি কাজ না হয় তাহলে কী করবেন??
—- কেউ কেউ বলে বসলো আমি হলে তাকে আমার বেস্টফেন্ড থেকে রিমুভ দিয়ে বলবো আমি চললাম বন্ধু।
অনেক এ অনেক কিছু বললো। আমি সব শুনে বললাম… আমি কি করেছি শুনবেন…??
সবাই হুম বলাই বললাম…

— একদিন সে তার বিএফ এর সাথে পার্কে বসে থেকে চুমাচুমি করছিলো । আমি তা দেখে রাগের বশে গিয়ে দুটো চড় মেরে বসি এবং সে ও আমায় চড় মেরেছিলো। কিন্তু এই চড় মারায় সে সীমাবদ্ধ থাকে নি। এমন কিছু করেছে তা হয়তো একজন বেস্টফেন্ড হয়ে একজন মেয়ে হয়ে অন্য একটা মেয়ের যে এতটা সর্বনাশ কেউ করতে পারে আপনারা ভাবতেও পারবেন নাহ।
—— সবাই বললো কি করেছে আমরা শুনতে চাই।
আচ্ছা… আমার নামে সে নারী নির্যাতন এর মামলা করে বসে । ফলে আমার একমাস জেল খাঁটতে হয় আবার আমার বোনের সংসারটিও সে ভেঙ্গে দিয়েছে।
— আমার আপুর বিয়েটা ভাগ্যক্রমে তারই ভাইয়ের সাথে হয় । আমি যখন আপুর বিয়ের চারদিনের মাথায় আপুর বাসায় বেড়াতে যাই তখন সে রাতে আমার রুমে আসে।
—- সে আমার অনেক কাছে আসতে চাইলে আমি না করি। তবুও ও সে কাছে আসতেই থাকে,, তাই কোন উপায় না পেয়ে আবারও ঐদিনের মত ঠাসস করে তাকে চড় মেরে দেই। কিন্তু সে যে চড়ের প্রতিশোধ টা এভাবে নিবে ভাবি নাই।
—- ও চিৎকার দিয়ে বসে এবং ওর ভাইসহ আমার আপু রুমে চলে আসে। আশা করি তারপর কি হয়েছে সব বলতে হবে নাহ বুজতে পেরেছেন।
আমি বাসায় আসার কয়েকদিন পর আমার আপুকেও ওর ভাই আমাদের বাসার রাস্তা মাপতে বাধ্য করেছে । আজ এক বছর আমার আপু স্বামী বেঁচে থেকেও যেনো বিধবা৷
—- আজও দেখি আমার আপু নিরবে চোখের জল ফেলে। ভাবে যে কবে তার ভালোবাসার মানুষের ভুলটা ভাঙ্গবে। কবে এসে বলবে আমায় ক্ষমা করো বাসায় চলো।
—- আপনার এটা জানলে খুশি হবেন যে… সে অন্যর ঘর ভেঙ্গে নিজে সুখী হতে পারেনি তার ও ঘর ভেঙ্গেছে। বিয়ের কয়েকদিনের মাথায় তার স্বামীও তাকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে।
—- আমি যেমন ভাই হয়ে নিজের আপুকে তার বর ডিভোর্স পেপার দিয়েছে বলে তাতে সই করতে বলেছি ঠীক তেমনি তার ভাই ও তার বোনের ডিভোর্স পেপার নিয়ে তাতে সই দিতে বলেছে।
—- আমি এই থেকে এটাই বুঝাতে চেয়েছি এখানে উপস্থিত সব মেয়েদের যে…
বেস্টফেন্ড কে বিএফ এর থেকে কখনও ছোট চোখে দেখবানা মনে রাখবা যে তোমার বেস্টফেন্ড সে কখনোই তোমার খারাপ চাইবে নাহ।
—– তুমি যদি কোন ভুল করো তাহলে সে তোমার ভুল ধরে দেওয়ার অধিকার রাখে । তুমি যদি তার কথা না শুনো তাহলে বেস্টফেন্ড হিসাবে তোমার ভালোর জন্য সে তেমার গায়ে হাত তুলা অবদি অধিকার রাখে।
—- আমি চাইনা আমার মত পরবর্তীতে কারো সাথে আর এমন কিছু হোক।
এবার আসি এক বাবার কথা নিয়ে তার পিতৃত্তর সত্যিই প্রশংসা হয় না,,,,😥😥
নিজের স্ত্রীর কোন দোষ না করা সত্ত্বেও তাকে সাজা দেওয়া বিয়ের সাত দিনের মাথায় ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেওয়া এটা শুধু কিছু মানুষরুপী অমানুষদের দারাই সম্ভব।
—- নিজের বোনকে এতটা ভালোবাসা উচিৎ নয় যে তার মিথ্যা অভিনয়টা হাজার টা সত্যকে হার মানায় অথচ ভাই হয়ে সে অন্ধ ভালোবাসায় বোনের মিথ্যা অভিনয়টা বুজতে না পারা।
—- আমি না হয় ভুল করেছিলাম। আমার বেস্টফেন্ড টাকে কোন খারাপ ছেলের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে দুটো চড় মেরে। সেই সাজা তো আমি একমাস জেল খেঁটে পেয়েছি কিন্তু তারপরও আমার সাজা কেন এই এক বছরের ছোট্ট নিষ্পাপ বাচ্চা টা পেলো
পেয়েই যাচ্ছে আপনারা বলতে পারেন কী,,,???
—– ও যখন আর একটু বড় হয়ে ওর আম্মুকে বলবে আমার আব্বু কোথায় উনার নাম কী তখন তার মা কি বলবে তাকে বলতে পারেন,,,
আর আমি মামা আমায় যখন এসে বলবে মামা আমার আব্বু কোথায় তখন আমিই বা কি বলবো,,,,
—– বলবো কী তোমার বাবা পুলিশ অফিসার। যে তোমায় শুধু জন্মদাতা আর কিছু নয়।
তুমি যখন জন্ম নিয়েছিলে তখন সবটা জেনেও তোমায় দেখতে আসে নি।
—- তখন যদি সে উঠে বলে বসে
মামা তুমি না হয় ভুল করেছো আর আম্মু তোমার পক্ষ নিয়ে ভুল করেছে কিন্তুু আমি কি করেছি যে আমি সাজা পাচ্ছি??
—- বলতে পারেন তখন মামা হয়ে আমি কী উত্তর দিবো??
—- কথাগুলো বলছিলাম মাসুদ ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছিলাম উনি অধীর আগ্রহে আমার কথা গুলো শুনে যাচ্ছিলো।
—– আপনারা যানেন কি ঐ বাবা আপনাদের মাঝে উপস্থিত রয়েছে যে কিনা বিনা দোষে তার ভালোবাসার মানুষটাকে ত্যাগ করেছে। নিজের সন্তানকে ত্যাগ করেছে।
—– আমি নাম না বললেও অনেকেই হয়তো বুজে গেলো কে হতে পারে। তবুও অনেকে বললো উনার নামটি বলুন একবার উনার মুখে আমরা থুথু মারবো উনার বোনের গলায় জুতার মালা পড়াবো।
—- আমি হাতের আংগুল তুললাম ।
তুলে…
ঐ নিষ্টুর বাবাকে দেখাতে গিয়েও হাতের আংগুলটা নামিয়ে নিলাম ৷
কয়েক সেকেন্ডের জন্য নিরব হয়ে ভাবলাম…
— উনি যে ভুল বুজে আপুকে ত্যাগ করেছেন উনার সেই ভুল হয়তো একদিন ভাঙ্গবে। সেদিন ভুল ভাঙ্গলে হয়তো..
উনি আবার আপুকে উনার ঘরে ফিরিয়ে নিবেন ৷ কিন্তু আজকে যদি আমি এভাবে সবার সামনে উনার নামটা বলে দেই তাহলে হয়তো সেদিন ভুল ভাঙ্গলেও উনি আর আপুকে মেনে নিবেন নাহ । ভুল ভেঙ্গে আপুকে আবার ফিরিয়ে নেওয়ার যে সম্ভবনা রয়েছে তা হয়তো আর থাকবে নাহ।
—- তাই হাতের আংগুলটি নামিয়ে নিয়ে বললাম,,, আমি আর চুপ থাকবো নাহ । এবার আমিও আইনি ব্যবস্থা নিবো। আমার ভাগ্নে কে ওর সব অধিকার হয় ফিরিয়ে দিবো নয়তো ওর বাবাকে উচিৎ শিক্ষা দিবো।
এবং তারপর থেকেই আমার ভাগ্নে ওর বাবা কে জানতে চাইলে ও জানবে ওর বাবা মৃত ৷
—– যাই হোক এবার আসি মূল কথায়…
আমি কখনো ভাবি নাই যে এমন একটা মহৎ উদ্দেশ্য পরিচালিত ক্লাবটিতে আমি দাওয়াত পাবো । কিছুটা সাহায্য করে এর অংশ হতে পারবো । আপনারা যত দ্রুত সম্ভব ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করে ফেলুন । ক্লাবের সকল দরকার ও সাহায্য সহযোগিতায় আমায় পাবেন ।
ইনশাল্লাহ সবার আগে আমি আমার হাতটি বাঁড়িয়ে দিবো।
—- আমার কথা শুনে সবাই হাত তালি দিয়ে উঠলো।
—- আর এই অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ করাই প্রিন্সিপাল স্যারকে আন্তরিক ভাবে জানাচ্ছি…ধন্যবাদ
এই বলে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।

সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর কাছের মানুষ গুলোকে ভালো রাখবেন। আল্লাহ হাফেজ।
— স্টেজ হতে নেমে গেলাম। এক স্যার এসে বললো চলুন আপনার জন্য হাল্কা কিছু নাস্তার ব্যবস্তা করেছি আমরা। উনার সাথে অফিসের দুই তালায় গেলাম নাস্তা শেষ করে স্যারদের সাথে কথা বলার মাঝে ড্রাইভারকে ফোন করে গাড়ি নিয়ে আসতে বললাম।
— দুইজন ম্যাম এসে আমার ভাগ্নে কে কোলে নিয়ে বলতে লাগলো কি কিউট। অনেক মিষ্টি হাসি। এমন মুখের দিকে তাকিয়ে যে মনটা ভরে যাই। উনারা আমার ভাগ্নে কে বেশ আদর করলেন।
— ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসলে স্যারদের বিদায় জানিয়ে সালাম দিয়ে গাড়িতে এসে বসলাম। ড্রাইভারকে যেতে বললাম। কলেজ গেইট হতে বের হয়ে একটু দুরে এসে দুর থেকে দেখছি অনুসহ ওর কিছু বান্ধবীরা একসাথে যাচ্ছে।
—- ড্রাইভার কে বললাম শুনো ঐ সামনে মেয়েগুলোর কাছাকাছি গিয়ে গাড়ির বন্ধ করে দিবা এবং আমি বলা মাত্রই কড়া কয়েকটি হর্ণ বাজিয়ে বসবা…আচ্ছা স্যার
—- আমার কথামত ড্রাইভার গাড়ি বন্ধ করে দিলো কিন্তু রানিং গাড়ি শব্দ ছাড়া ওদের কাছাকাছি পৌঁছাতে আমার কথায় ড্রাইভার বসিয়ে দিলো কড়া হর্ণ।
— সব কয়টা দেখি এক লাফ মেরে
ভয়ে রাস্তার পাশে নেমে গিয়েছে।
এই এই কানা ড্রাইভার চোখে দেখেন নাহ নাকী,,,??
ফাজিল কোথাকার,, আমি ড্রাইভার কে বললাম কিছু বলো নাহ ওরা বাইরে থেকে আমাদের দেখছে নাহ,, ওরা কি করে তাই দেখবো ব্রেক করে বসে থাকো।

—– অনু উঠে এসে গাড়ির জানালায় হাত দিয়ে ঠকঠক করতে লাগলো,,,
আমি জানালার কাঁচ নামিয়ে মুখটা বার করায় ও আমার মুখটি দেখে কিছুটা শক খেয়ে দুরে সরে গেলো। ড্রাইভার কে বললাম চলো এবার ।
— এখন হয়তো ওর বান্ধবীরা এসে অনুকে বলবে কে ছিলো রে ফাজিল লোকটি??
উনাকে দেখেই দুরে সরে আসলি যে??
অনু হয়তো কিছুই বলবে নাহ কেননা ও হয়তো আমার নামটি
মুখে নিতে চাইবে নাহ।
—- বাসায় চলে আসলাম। আপু এসে বললো এই মামা ভাগ্নে কোথায় বের হয়েছিলি,,,?? খোকার বুজি খিদে পাই নি সেই কখন খেয়েছে,,,?? দে খোকাকে আমায়
তুই যা ফ্রেশ হয়ে খাবি আয়
—- আপু আমি না খাই খিদে পাইনি বলে রুমে চলে আসলাম। একটু শুয়ে ভাবছি আজ তো মাসুদ ভাইয়া সব সত্যিটা জেনে গিয়েছে,,, আমি ঐদিন বললেও উনি হয়তো বিশ্বাস করে নি আজ কি উনি বিশ্বাস করবেন নাহ৷
—- বাসায় গিয়ে কী মিতুকে উনি আজ প্রশ্ন করে বসবেন নাহ,,, সব সত্যি কী উনি জানতে চাইবেন নাহ??
—– জানিনা কী হবে,,!! জানিনা ভাগ্য কী লিখা রয়েছে ।
তবে এবার যদি উনি চুপ থাকেন এবং মিতুর কাছে উনি কিছু না জানতে চান তাহলে এবার আমি মিতুকে ওর মুখ দিয়েই সব সত্যি কথা বলাতে বাধ্য করাবো…….
শুধু সময়ের অপেক্ষা
..
..
..
(আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা
চলছে তাই গল্পটি নিয়মিত দিতে পারি নাহ,,

সেইজন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত 😥😥
গল্পটি ভালো লাগলে একটু জানিয়ে দিয়েন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here