গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন পর্বঃ ২৪

গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন
পর্বঃ ২৪
লেখাঃ Shakil
..
..
..
—- একটু এদিক সেদিক হলেই তো আবার আপুর সংসারটা ভেঙ্গে যাবে অনু।
তুমি শুধু শুধু টেনশন করছো। এমন কিছুই হবে না আবির।
—–না হলে ভালো হবে অনু।
অনুর বাসার সামনে পৌঁছে অনুকে নামিয়ে দিলাম।
বাসায় এসে রুমে বসে আছি হঠাৎ আব্বু আমার রুমে আসলো। আব্বু কিছু বলবা??
—–নাহ মানে তোর আপু তো চলে গেলো এবার তুই বাসায় একজন কে নিয়ে আই। বাসাটি খালি খালি লাগছে বড়ো।
আব্বু কাকে আনবো বুজলাম নাহ,,??
তোর মা বলছিলো তুই বিয়ে কর। আর তুই নাকি অনুকে পছন্দ করিস আমরা কী ওর পরিবারের সাথে কথা বলবো…??
—–আব্বুর কথা শুনে আমি কিছুটা লজ্জা পেয়ে গিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলাম।
তাহলে বাবা আমরা কালকেই যাই অনুর বাসায়। বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে কি বলিস,,,,??
—–আব্বু কালকে নয় তোমরা বরং এক সপ্তাহ পরে যাও।
আচ্ছা তুই যা বলবি তাই হবে।
পরেরদিন অফিস গেলাম। যাওয়ার সময় অনুকে ফোন করে বললাম… দুপুর টাইমে আমি অফিস থেকে ডিরেক্ট তোমার বাসার সামনে যাবো। ওখান হতে আমরা আপুর বাসায় রওনা দিবো। তাই তুমি দুপুরের দিকে রেডি থেকো।
অনু আচ্ছা ঠীক আছে বললো।
—-দুপুরের দিকে অফিস হতে রওনা দিলাম। এক চায়ের দোকানের সামনে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে চা খাচ্ছি এমন সময় অপু কোথা থেকে যেনো হাজির৷
—–অপু কেমন আছো,,,??
আছি কোন রকম,, তুমি??
হুমম ভালো আছি অপু,, তা আজকাল একাই থাকো নাকি তোমার বন্ধুরা সব কোথায়,,,??
বাদ দেও ওদের কথা। সবাই বিয়ে করে সংসার মুখী হয়ে গিয়েছে৷ আমি কপাল পুড়া সবসময় এখন একাই ঘুরি।
—-মামা আর এক কাপ চা দেন । চলো অপু ভিতরে গিয়ে বসি বলে অপুর সাথে দোকানের ভিতরে গিয়ে বসলাম। আচ্ছা অপু মনে কিছু না করলে একটা কথা জিজ্ঞেস করি তোমাকে,,,,???
—– আরে কি মনে করবো বলো তুমি কি বলতে চাও।
আচ্ছা…. তুমি কী মিতুকে সত্যি ভালোবাসো অপু??
আসলে একসময় আমি মিতুর দেহ ও সহায় সম্পত্তিকে ভালোবাসতাম কিন্তু যেদিন ওকে আমি বিয়ে করেছিলাম ঐ দিন সত্যিই আমি ওকে নিজের বউ করে নিতে চেয়েছিলাম।
চেয়েছিলাম লোভ লালসা ছেঁড়ে নতুন করে জীবনটা শুরু করতে কিন্তু বাসর রাতে কী থেকে কী হয়ে গেলো ঐসব,,,,
—- অপুর চোখে দুফটা জল দেখে বুজলাম আগের অপু আর এখনকার অপু এক নয়। ও অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।
তারমানে অপু তুমি মিতুকে এখন মিস করো আর ভালোও বাসো তাইনা অপু??
অপু মাথা নাড়িয়ে বললো হুমমম। কিন্তু তাতে আর কি লাভ মিতুকে আমি হারিয়ে ফেলেছি অনেকবার ওর সাথে যোগাযোগ করতে চেয়েছি কিন্তু মিতু করেনি। ও শুধু আমায় এখন ঘৃণা করে৷
—– দেখো অপু মনে বিশ্বাস রাখো তুমি যদি মিতুকে সত্যিই এখন ভালোবাসো তাহলে তুমি মিতুকে অবশ্যই ফিরে পাবা৷
কিন্তু কিভাবে পাবো আবির,,,??
সেটা সময়ই বলে দিবে। আমার ফোনটা হঠাৎ বেজে উঠলো। ফোন হাতে নিয়ে দেখি অনু ফোন করেছে,, এক মিনিট অপু,,,
হুমম অনু বলো,,,, (বাইরে এসে)
এই কখন যাবা আবির আমি সেই কখন থেকে বার হয়ে বসে আছি,,,,??
আচ্ছা আমি আসছি একটু অপেক্ষা করো।
—-ফোন কেটে দিয়ে দোকানের ভিতরে গেলাম।
আচ্ছা অপু আজ চলি তাহলে অন্য একদিন আবার কথা হবে। আমি চায়ের বিল দিতে গেলে অপু আমাকে বিল না দিতে দিয়ে ও বিল পে করে দিলো।
—– আমি গাড়ি নিয়ে এসে মিতুর বাসার সামনপ গাড়ি থামিয়ে অনুকে ফোন দিলাম৷ আসছি একটু দাঁড়াও।
২ মিনিট পর অনু বাসা থেকে বের হয়ে আসলো। ও বার হতেই আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম।
—– বাহ বেশ ভালো লাগে তো অনুকে শাড়ীতে। শাড়ী পরে অনু দেখি পিঁপড়ার মতো আস্তে আস্তে হেঁটে আসছে। ওর হাঁটা দেখে আমি হাহা করে হেসে দিলাম।
—- আমার হাসি দেখে অনু গাড়ির কাছে এসে জানালা দিয়ে বললো এই শুনো একদম হাসবা নাহ বলে দিলাম,,, প্রথমবার শাড়ী পড়েছি হুমমমম
— আচ্ছা উঠো।
অনু শাড়ীতে তোমাকে বেশ সুন্দর লাগছে।
তাই নাকি ধন্যবাদ মিস্টার
মনে হচ্ছে কি জানো অনু,,, মনে হচ্ছে তুমি বিয়ে করা কার যেনো বউ।
কার বউ মানে তোমার বউ আমি,,, তোমার ফিউচার বউ আমি।
—- হুমমম।
অনু আসার সময় এক দোকানে অপুর সাথে দেখা হয়েছিলো।
ওহ আচ্ছা
হুমম অনু,, অপুতো অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। অপু এখন মন থেকে মিতুকে ভালোবাসে।
ওহহ তাহলে তো ভালোই হবে। মিতুর সাথে অপুকে আমরা মিল করে দিবো।
—- কিন্তু মিতুকে রাজি করাতে পারবো কী আমরা অনু,,,??
হুমম অবশ্যই পারবো আবির।
আচ্ছা।
আবির শুননা,, একটা কথা??
হুমম বলো অনু,,,।
আবির তুমি আমাকে কবে তোমার বউ করে নিবা,,,??
খুব শীঘ্রই তোমাকে বউ করে নিবো আমি।
আব্বু আজকে সকালে তোমার আমার বিয়ের বিষয়ে কথা বলছিলো । আগামী সপ্তাহে আমার পরিবার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তোমাদের বাসায় যাবে,,,,।। কি বলো আবির সত্যিই,,,??
—– হুমম সত্যিই।
উম্মাহ বাবু
আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই অনু আমাকে পুরো ১০ সেকেন্ডর একটা চুমু আমার গালি বসিয়ে দিলো। অনুকে আমি এক ঝাঁকি দিয়ে বললাম,,, এসব কী অনু??
ধেত তুমি একদম আনরোমান্টিক আবির,,, আমার হবু বরকে আমি চুমু দিয়েছি তাতে কী হয়েছে হুমম,,,!!
—- দেখো অনু বিয়ের আগে এসব রোমান্টিকতা নামে লুচ্চামি করা হারাম। আমি চাইনা বিয়ের আগে তোমাকে স্পর্শ করে দেখতে রোমান্টিকতা নামে এমন নষ্টামি করতে। আর তুমি সবসময় আমাকে আনরোমান্টিক বলো তাই না,,, আগে বউ হও তারপর বুজবে আমি আনরোমান্টিক নাকি রোমান্টিক।
সারাদিন শাড়ীর আঁচল টানবো।
—–ওহ আচ্ছা তাই। আমিও দেখবো তাহলে।
আপুর বাসায় পৌঁছে গেলাম। গেইটে গিয়ে দুটো হর্ণ দিতে দারোয়ান গেইট খুলে দিলো। আমি গাড়ির জানালা দিয়ে মাথা বার করে বললাম কেমন আছেন চাচা,,,??
হুমমম ভালো,,, তুমি কেমন আছো বলতে গিয়ে চাচার মুখে কথাটি আঁটকে গেলো। কেননা আমাকে এভাবে দেখে হয়তো উনি অবাক হয়ে গিয়েছেন৷
—– গাড়ি থেকে নামতে আপু ভাগ্নে কে কোলে নিয়ে বেরিয়ে আসলো। আমার গুলুমুলু ভাগ্নেটা কেমন আছে বলে ভাগ্নে কে কোলে নিলাম। অনুর সাথে আপু গল্প করতে করতে আমার পিছনে আসছে আর আমি
—- ভাগ্নে কে কোলে নিয়ে আগে বাসায় ঢুকলাম।
আমাকে দেখে মিতু অনেক খুশী হলো। কিন্তু ওর খুশী ভরা মুখটা নিমিষেই কালো হয়ে গেলো আপুর সাথে অনুকে দেখে,,,
—- মিতু হয়তো ভেবেছে,,
আমি আর অনু মনে হয় বিয়ে করে ফেলেছি…
..
..
..
চলবে,,,??
..
(গল্পটি ভালো লাগলে জানাবেন প্লিজ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here