গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন পর্বঃ ২৩

গল্পঃ ভাগ্যর_লিখন
পর্বঃ ২৩
লিখাঃ Shakil
~
~
~
—– তার মানে আপু মাসুদ ভাইয়াকে মেনে নিয়েছেন …!!
আমি রুমে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে।
—– আমিও গিয়ে সবার সাথে খেতে বসলাম। খেয়াল করে দেখি আপু আর মাসুদ ভাইয়া খাওয়া বাদ দিয়ে চোখের ভাষায় কথা বলছে। কী দুলাভাই খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো খেয়ে নিন।
—– আমার কথা শুনে মাসুদ ভাইয়া একটু লজ্জা পেয়ে গিয়ে বললেন ও হ্যাঁ সালাবাবু। সবার খাওয়া শেষ হয়ে গেলো। আমি ভাগ্নে কে নিয়ে মজা করছি। এমন সময় আপু এসে বললো ভাই উনি তো আমায় নিতে এসেছেন আমি যাবো কী…??
——- হুমম আপু… অবশ্যই যাবি তুই। কেননা মাসুদ ভাইয়া এখন উনার সব ভুল বুজতে পেরেছেন।
আচ্ছা ভাই আমি তাহলে রেডি হই,,,??
—– হুম আপু যাহ তুই রেডি হও।
আপু রেডি হয়ে গেলো। মাসুদ ভাইয়া ও আপু গাড়িতে বসে আছে। মিতুর আসতে দেরি হচ্ছে দেখে আপু আমাকে বললো… দেখতো ভাই মিতু কোথাই,,,??
—– আচ্ছা আপু। আমি বাড়ির ভিতরে এসে দেখি মিতু আমার রুমে। আমি দরজায় দাঁড়িয়ে মিতুকে বললাম…
মিতু তোমার জন্য সবাই অপেক্ষা করছে বাইরে চলো।
মিতু আমার কথা শুনে আমার দিকে ঘুরে তাকালো।
সরি আবির আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও আমি অনেক পাপ করেছি তোমার সাথে।
—– আরে কিসের পাপ৷ আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি তো। এখন চলো ভাইয়া ও আপু গাড়ীতে বসে আছে।
—- মিতু আমার পাশ দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে আবার হঠাৎ থেমে গেলো৷
পিছন ফিরে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো৷
আরে আরে মিতু এসব কি করছো,,,?? মিতু ছাড়ো বলছি আমায়,,,
—– আবির আমি বাসায় যেতে চাইনা৷ প্লিজ তোমার বুকে আমায় একটু জায়গা দাও। আমি ভুল মানুষের পিছনে ছুটতে ছুটতে এখন বুজেছি আসলে প্রকৃত ভালোবাসা কাকে বলে। আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে তোমার আপন করে নাও প্লিজ আবির।
—- ছিঃ মিতু এসব কি বলছো তুমি…??
আর আমাকে ছাড়বে কী। সবাই এসে দেখে ফেললে আজকে আবার উল্টোপাল্টা কিছু বুজে বসবে। ছাড়ো বলছি,,,, (এক ঝাঁকানি দিয়ে)
—— মিতু আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো..
আবির তোমাকে আমি ভালোবাসি
তোমাকে পাওয়ার জন্য,, স্বামীর হোক নষ্ট না করার জন্য ঐ দিন অপু কে বিয়ে করে বাসের রাতেও আমাকে স্পর্শ করতে দেইনি। আমার জীবনের শুধু এখন দুইটা লক্ষ্য এক তোমার বউ হওয়া আর নয়তো মরে যাওয়া।
—– দেখো মিতু পাগলামি করো না মাথা থেকে এসব ভুত ঝেড়ে ফেলো।
আমি যা বলছি তাই করবো।
মিতু চোখে জল নিয়ে চলে গেলো। আমি ওর পিছন পিছন এসে ওদের বাই জানালাম। ওরা সবাই চলে গেলো।
—- আমরা বাসাই ঢুকতে বাসাটা কেমন যানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।
এতদিন বাসাটা আনন্দে ভরপুর ছিলো। মা ভাগ্নে কে নিয়ে সারাক্ষণ মজা করতো৷ বাসায় কত চিল্লাচিল্লি হতো। আর আজকে যেনো বাসাটি নিরবতায় রুপ নিলো।
—- আমি রুমে চলে গেলাম।
মুতু আমাকে পাওয়ার জন্য আবার উল্টো পাল্টা কিছু করে বসবে নাতো আবার,,,!! ও আবার আপুর সংসারে ঝামেলা পাকিয়ে দিবে নাতো,,,!!
এসব ভাবতে আমার খুব টেনশন হতে লাগলো।
—- আমি একটু শুয়ে পরলাম। একটপর অনু ফোন দিলো। একটু কথা না বলেই আমি অনুকে ফোনটি কেটে দিতে বললাম। অনু ফোন কাটলে আমি ভাবছি,, মিতুর বিষয়টা অনুকে কী বলবো আমি,,,??
নাকি বলবো নাহ বুজছি নাহ।
—-একবার ভাবলাম মিতুর বিষয়টা অনুকে না বলে মাসুদ ভাইয়াকে বলে দেখি। কিন্তু আবার ভাবলাম আজকে সবে মাত্র আপুকে মাসুদ ভাই উনার বাসায় নিয়ে গিয়েছেন এখনি আবার এসব কথা বলা কী ঠীক হবে,,,??
না থাক মাসুদ ভাইয়া কে বলা যাবে নাহ। কি করবো কিছুই বুজছি নাহ।
—– এমন সময় অনু আবার ফোন করলো৷
হুমম অনু বলো..
আচ্ছা আবির তোমার কী কিছু হয়েছে,,,??
কই কি হবে কিছু নাতো অনু।
আবির প্লিজ বলো আমায়।
—আরে কি হবে কিছুই না। মাসুদ ভাইয়া এসেছিলেন আপুকে নিয়ে গেলেন।
তারমানে আপুকে মাসুদ ভািয়া মেনে নিয়েছেন আবির???
হুমমম
এতো খুশীর খবর আবির। মন খারাপ মনে হচ্ছে কেন তাহলে তোমার…??
আপু চলে গেলো। আমার ভাগ্নেটার সাথে কত মজা করতাম আজকে ও নাই তাই একটু খারাপ লাগছে আরকি।
ওহ আচ্ছা
—- অনু কালকে ফ্রী আছো চলো না কালকে একটু একসাথে কোথাও ঘুরতে যাই,,,??
আচ্ছা ফ্রী আছি
হুমমম তাহলে কালতো অফিস ছুটি সকাল সকাল বার হয়ে যাবো তাহলে??
অনু ঠীক আছে বললো। কিছুক্ষণ কথা বলে ফোনটি রেখে দিলাম।
—- পরেরদিন গাড়ি নিয়ে অনুর বাসার সামনে চলে গেলাম।
অনুকে নিয়ে চললাম ঘুরতে । একটু ঘুরাঘুরি করার পর এক দোকানের পাশে এক গাছের নিচে বসলাম। দোকানদারকে দুটি চা দিতে বললাম৷
—– চা খেতে গেলে অনু বললো চা পরে খাবে আগে এগুলো খেয়ে নাও।
তারমানে আজকেও তুমি রান্না করে নিয়ে এসেছো অনু,,,??
হুমমম..ভয় পেয়ো না তুমি আজকে তোমাকে খাইয়ে দিতে চাইবো নাহ।
—- আচ্ছা আচ্ছা ঠীক আছে। অনুর হাতে রান্না করা খাবার গুলো খেলাম। বেশ ভালো রানৃনা করেছে অনু তাই ওকে ধন্যবাদ জানালাম।
—- খাওয়া-দাওয়া শেষ । হঠাৎ আপু ফোন দিলো।
হুমমম,, আপু কেমন আছিস??.
ভালে আছি ভাই,, তুই কেমন আছিস??
হুমম ভালে আপু,, ভাগ্নে কী করছে??.
ভাই আর বলিস নাহ আসার পর থেকে তোর ভাগ্নে শুধু মামা মামা করছে । কাল আই একটু বেরিয়ে যাহ।
—- আচ্ছা আপু। অনুকে নিয়ে আসবো সাথে??
আচ্ছা কাল আশিস তাহলে।
হুমম বলে ফোন রেখে দিলাম। অনু চল এখন বাড়ির দিকে যাওয়া যাক আর কালকে চলো আপুর বাসাই ঘুরে আসি।
আচ্ছা (অনু)
অনুকে নিয়ে গাড়িতে আসছি আর ভাবছি নাহ মিতুর বিষয়টা অনুকে বলেই দেই তাহলে।
—- মিতুর বিষয়ে অনুকে সব খুলে বললাম।
অনুঃ- মিতু যে আমার বান্ধবী আমার ভাবতেই অবাক লাগে আমি ওর বান্ধবী ছিলাম।
—-দেখো অনু আজকে সব সমস্যা ও ভুলের সমাধান হয়েছে কিন্তু মিতুর জন্য মনে হয় আবার নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হবে।
নাহ আবির কিছু হবে নাহ। মিতুকে অপুর সাথে মিলিয়ে দিলেই তো কিছু হবে নাহ সব সমস্যা সমাধান৷
—–হুমমম তুমি ঠীক বলেছো কিন্তু একবার ভেবে দেখেছো কী….
আমার একহাতে আপুর পুনরায় ফিরে পাওয়া সুখের সংসার আর অন্য হাতে মিতুর ভালোবাসা নামের পাগলামী,,,
একটু এদিক সেদিক হলেই আবার…..
..
..
..
চলবে?
..
(গল্পটি ভালো লাগলে জানাবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here