বাসর রাতে ঘরে ঢুকেই চমকে উঠলো রাহুল। দিয়া খাটে বসে আছে। রাহুলকে দেখে দিয়াও চমকে উঠলো।
-তুমি? (দিয়া)
-আমারো একই প্রশ্ন, তুমি এখানে কেন? (রাহুল)
– তবে কি তোমার সাথেই বিয়ে হয়েছে আমার? (দিয়া)
– তাই তো দেখছি। (রাহুল)
– বাবা মার পছন্দে ছেলে না দেখে বিয়ে করে কি সর্বনাশ করলাম নিজের। (দিয়া)
– মিথ্যুক, লোভী, তুমি জেনেশুনেই বিয়ে করেছো আমাকে। মনে করেছো আমেরিকায় স্যাটেল ধনী পাত্র বিয়ে করে খুব সুখে থাকবে তাই না? (রাহুল)
– চুপ, মুখ সামলে কথা বলো। (দিয়া)
– তুমি মুখ সামলে কথা বলো। (রাহুল)
সবাই নিশ্চয়ই ভাবছেন ওরা এরকম করছে কেন। তাহলে চলুন আগে ওদের কলেজ লাইফের গল্প জেনে আসি। পাঁচ বছর আগের কথা, রাহুল প্রথম দিন কলেজে ঢুকে তাড়াহুড়োতে ধাক্কা খেলো এক মেয়ের সাথে। সেই মেয়েটাই হলো দিয়া।
– সরি (রাহুল)
– কিসের সরি? ইচ্ছা করে ধাক্কা খেয়ে আবার সরি বলেন। (দিয়া)
– কে বললো ইচ্ছা করে ধাক্কা খেয়েছি? (রাহুল)
– কেউ বলেনি। আপনার মতো মিচকা শয়তানদের আমার চেনা আছে। (দিয়া)
– মুখ সামলে কথা বলুন। (রাহুল)
– আপনি মুখ সামলে কথা বলুন। (দিয়া)
রাহুল এরপর কিছু না বলে সরে আসলো ওখান থেকে। রাহুলের বন্ধু অভি এতক্ষণ সব দেখছিলো দূর থেকে। রাহুল ওর কাছে আসতেই অভি বললো
– কি ব্যাপার বন্ধু কলেজে পা রেখেই ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেললি? (অভি)
– আরে ইচ্ছা করে করেছি নাকি? কি গুন্ডি মেয়েরে বাবা। ইচ্ছা করে ঝগড়া বাধালো। (রাহুল)
– তোর লাক খারাপ বন্ধু। এই মেয়ের দিয়া, ওর খুব বদনাম আছে বদমেজাজি হিসেবে। অন্য কোনো মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগলে প্রেম হয়ে যেতো এতক্ষণে। (অভি)
– বাদ দে তো। তুই তো জানিস প্রেম ভালোবাসা এসব হয় না আমাকে দিয়ে। পড়ালেখা করতে কলেজে এসেছি, ভালো মতো পড়ালেখা করবো। (রাহুল)
কথা বলতে বলতে ক্লাসে গেলো ওরা। রাহুল ক্লাসে ঢুকে একটা খালি চেয়ারে বসল। ওর ঠিক দুসারি পরেই দিয়া বসে আছে। রাহুলকে দেখেই ও আস্তে আস্তে বললো
– অসভ্য।
– কাকে বলছিস। (দিয়ার বেস্টফ্রেন্ড টিনা)
– সামনের ওই বেয়াদপটাকে।(দিয়া)
– ওমা ঐ ছেলেটা। ওর নাম তো রাহুল। অনেক বড়লোক ঘরের ছেলে। অনেক ভালো আর ভদ্র ছেলেটা। কি করেছে তোকে? (টিনা)
– আরে ইচ্ছা করে ধাক্কা দিয়ে বলে কিনা সরি (দিয়া)
– উফ দিয়া এতো হ্যান্ডসাম ছেলে তোকে ধাক্কা দিলো আর তুই ঝগড়া করলি ওর সাথে। আহারে আমাকে যদি ও ধাক্কা দিতো এভাবে। (টিনা)
এমন সময় ওদের স্যার ক্লাসে ঢুকলেন। (চলবে)
ভালোবাসার_নীল_জোছনা পর্ব ১
#লেখক_আরিয়ান_অরণ্য