ভালোবাসার_নীল_জোছনা পর্ব ৭
#আরিয়ান_অরণ্য
দিয়া বলল- আমিও একটা কথা বলবো, কিন্তু আজকে না। কাল শ্রাবণের প্রথমদিন, বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল হাতে নিয়ে কথাটা বলবো তোমাকে।
রাহুল- কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবো না আমি, দিয়া।আজই বলবো কথাটা। আমি তোমাকে…
দিয়া- (রাহুলের মুখ চেপে ধরে) না রাহুল। আগামীকাল।
রাহুল চলে গেল। দিয়া পিছন ফিরে দেখল টিনা আসছে। সে টিনার কাছে গেল।
টিনা- (গম্ভীর হয়ে) তুই যে রাহুলের প্রেমে পড়েছিস এটা ক্লাসের সবাই জানে। তুই ভুল করছিস দিয়া। রাহুলকে যতটা ভালো ছেেল ভেবেছিলাম তত ভালো ছেলে ও না।
দিয়া- (বিস্মিত হয়ে) কি বলিস এসব?
টিনা- তুই আজ বিকালে আমাদের বাসায় আসিস। তোকে প্রমাণ দেখাবো।
বিকেলে দিয়া টিনাদের বাসায় গিয়ে দেখল, অচেনা এক মেয়ে বসে আছে। টিনা বলল- ওর নাম ঝর্ণা, রাহুলের সাথে ওর রিলেশন ছিলো দুবছর। পরে ও প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়লে রাহুল ওকে ছেড়ে চলে যায়। রাহুলের ফ্যামিলি অনেক প্রভাবশালী, টাকা আর হুমকি দিয়ে ধামাচাপা দিয়ে দেয় সব। শুধু ঝর্ণাই না, আরো অনেক মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট করেছে রাহুল।
দিয়া- কোন প্রমাণ আছে তোর কথার?
এসময় ঝর্ণা নিঃশব্দে তার মোবাইলটা দিয়াকে দেয়। দিয়া দেখে সেখানে একটা ছবি, ছবিতে রাহুল খালি গায়ে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে, চোখ বন্ধ, সারা মুখে পরিতৃপ্তির ভাব। আর তার উপর শুয়ে আছে ঝর্ণা, রাহুলের মতো অবস্থাতেই। ছবিটা ঝর্ণারই তোলা সেলফি মুডে। দিয়া তাকিয়ে দেখলো- নিঃশব্দে কাঁদছে ঝর্ণা।
দিয়ার পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে গেল। এই জীবনে যাকে বিশ্বাস করেছে সেই ঠকিয়েছে তাকে, কিন্তু রাহুলকে সে যেন বেশিই বিশ্বাস করেছিলো, আরো বেশি ভালোবেসেছিলো। সারারাত ধরে কাঁদল সে।
পরদিন কলেজে গিয়ে দেখল রাহুল কদম ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছে গেটে, দিয়াকে দেখেই হাসিমুখে এগিয়ে এলো।
রাহুল- অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি তোমার জন্য। আর অপেক্ষা করতে পারছি না তোমাকে কথাটা বলবো বলে। দিয়া, ভালোবাসি তোমায়।
দিয়া জোরে এক চড় মারলো রাহুলের গালে।
দিয়া- (চিৎকার করে) লম্পট, জোচ্চোর। এক মেয়ের জীবন নষ্ট করে আরেক মেয়েকে ভালোবাসার কথা বলতে লজ্জা করেনা তোর?
রাহুল- কি বলছ এসব?
দিয়া- ঠিকই বলছি। তোকে ভালো মনে করেছিলাম কিন্তু তুই আর দশটা জানোয়ারের মতোই। আর আসবি না আমার সামনে। তোর মতো ছেলেদের ঘিন্না করি আমি।
বলেই দিয়া কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল সেখান থেকে। রাহুল কি করবে বুঝতে পারলো না। সবাই তাকিয়ে আছে ওর দিকে। (চলবে)