প্রথম প্রেম পর্ব ৩৩+৩৪

#প্রথম_প্রেম
৩৩ তম পর্ব।

উর্মির আজ ভার্সিটি যেতেই ইচ্ছে করছেনা, সকাল থেকে এক কাপ কফি নিয়ে ছাদে বসে আছে। সকাল থেকে কতশত এস এম.এস দিচ্ছে উর্মি, একটার ও রিপ্লাই নেই। এতো কঠোর কেমনে হয় শাওন!

শাওনের আজ অফিসে একদম মন নেই, কেমন যেন খারাপ লাগছে। চাকরির খাতিরে সেইভ করে পরিপাটি হয়ে এসেছে। নয়তো যেকোনো জায়গায় ঝিম ধরে বসে থাকতো সে। তার মাথায় শুধু একটা প্রশ্ন উর্মি তো শুধু তারই ছিল। আজ কেন এমন হলো?

অনিক দুই বার ফোন দেওয়ার পর, উর্মি রিসিভ করলো।
হ্যালো,
– কি মিস কিউটি, কি হয়েছে?
– অনিক, আজ মন ভালো নেই, কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা।
– তোমার বয়ফ্রেন্ড অবশ্যই একটা থার্ড ক্লাস। তুমি কি অন্য কাউকে পছন্দ করতে পার না, জেলাস করছে।
– অনিক প্লিজ,
– আচ্ছা, আমি আসছি, তোমার বাসায়। নিচে নেমে আসো। মন ভালো করার মন্ত্র অনিক জানে।
– না, না। আমি আর ঘুরতে যেতে চাইনা অনিক।
,- নিষেধ নাকি?
– অনিক, আমি রাখছি।

উর্মি ফোন রাখার কিছুক্ষণ পরে উদয় ছাদে এসেছে, বলছে আপুনি, তোর গেস্ট এসেছে চারজন।
– আমার গেস্ট?
– হুম, আম্মু তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে। আয়।

উর্মি ভাবতে পারছেনা, তার আবার গেস্ট কে? আজ গেস্ট আসার দিন? সব এলেমেলো লাগছে, একটু একা থাকার অপশন নাই।

উর্মি ঘরে ঢুকতেই দেখে অনিক তার বন্ধু সাদ, ও তাদের ক্লাসের রুমিন আর তিশা এসেছে। হাতে একটা ফুলের বুকে এবং কেক।

উর্মি বলছে, কি রে তোরা? তিশা বললো
– কনগ্রেচুলেশন।
– কিসের জন্য?
– কাল তুই হুটহাট বেড়িয়ে গেলি, এর পর ফার্স্ট সেমিস্টারের রেজাল্ট দিয়েছে, তুই ফার্স্ট হয়েছিস।
– সত্যি?
– এইজন্য অনিক কেকে লিখছে কনগ্রেচুলেশন ফার্স্ট গার্ল।
– থ্যাংক ইউ।

রুনা খানম বলছেন, আজ আমার খুব আনন্দ লাগছে তোমরা কাল জানালেনা কেন?

রুমিন বললো আন্টি, অনিকের প্ল্যান, ওকে সারপ্রাইজ দিবে এজন্য।
– তোমরা থাক, আমি বিরিয়ানি রান্না করছি।
– আন্টি আমার আর তিশার একটু কাজ আছে, আরেকদিন আসবো।

অনিক বললো, দাঁড়া কেক কেটে উর্মি কে নিয়ে আমরা বের হবো। আন্টি আরেকদিন আসবো খাওয়ার জন্য।

উর্মি বললো না না আমি বের হবো না আজ, প্লিজ না।

রুবা খানম বললেন এমন অসভ্য হয়েছিস কেন? এরা কত খুশি হয়ে এসেছে, যা ঘুরতে যা। আর এই আমি ওকে দুই হাজার টাকা দিচ্ছি, তোমরা সবাই মিলে খেয়ে নিও।
– আম্মু, আমার ভালো লাগছেনা।
– চুপ করে যা।

উর্মি অনিচ্ছা সত্ত্বেও বের হলো, তিশা রুমিন রাস্তায় নেমে গেল। সাদ লাঞ্চ পরে চলে গিয়েছে। সাদ যাওয়ার সময় আস্তে করে উর্মিকে বলছে অনিক শুধু তোমাকে খুশি রাখার চিন্তা করে। জোড় করে সবাইকে গাড়ী করে নিয়ে এসেছে। সুন্দর সময় পাস কর, যাই। সাদ নামার পর উর্মির কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে।

অনিক হঠাৎ করে বললো, উর্মি, তুমি আমার জীবনের ফার্স্ট গার্ল, যাকে আমি আমার জীবনের চেয়ে ভালবাসি। শাওনের সাথে সম্পর্কে আছে জেনেও আমি তোমাকে ভালবাসি। যেকোনো ধরনের সম্পর্ক থাকুক, তবুও ভালবাসি।
– তুমি আমাকে নামিয়ে দাও।
– তুমিও আমাকে ভালবাসবে, কারণ শাওন যদি তোমাকে এতো ভালবাসে, বিশ্বাস করেনা কেন? বলো? হ্যা, আমি ঘুরেছি, খেয়েছি, এক দুই বার নৌকায় উঠার সময় হাত ধরেছি। কিন্তু খারাপ কিছু করিনি।
– শাওনের সাথে তুমি নিজেকে তুলনা দিওনা। আর আমাকে নামিয়ে দাও, আমার ভালো লাগছেনা।
– তুমি দুইদিন পরেই বুঝবে, তুমি শাওন কে নয়, আমি অনিক কেই ভালবাস।
– ইম্পসিবল, এখন নামিয়ে দাও।
– দিচ্ছি,

উর্মি তাড়াতাড়ি করে নামছে, অনিক হুট করেই উর্মির হাত ধরে বললো আই লাভ ইউ, মোর দ্যান মাই লাইফ।

রাজীব অফিসের নিচেই রাস্তার পাশে সিগারেট ধরিয়েছিল, তার চোখেই হঠাৎ উর্মি গাড়ী থেকে নামাটা চোখে পড়লো। রাজীব তখনই চিন্তা করলো একটা মেয়ে কতটুকু বেঈমান হয়! ভাবা যায়!

উর্মি রিকশা নিয়ে বাসায় এসে আবার শাওন কে কল দিল, কিন্তু শাওন কল ধরেনি যথারীতি।

শাওন লাঞ্চ ব্রেকে একটা সিঙ্গারা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে, কিন্তু খেতে ইচ্ছে করছেনা। তখনই রাজীব কল দিয়ে সব জানালো। শাওনের মনে হলো বড় ধরনের কোন পাথর তার মাথায় এসে পরেছে। রাজীব শুধু বললো তুই এখন কল দিয়ে দেখ সে আজকের বিষয় শেয়ার করে কিনা! প্রথমেই রাগ দেখাবিনা।

সাথে সাথেই উর্মিকে ফোন দিল শাওন।
হ্যালো
– এমন পাথর কেন তুমি?
– কনগ্রেচুলেশন।
– এস.এম.এস দিলাম সেই সকালে, আর এখন?
– খেয়াল করিনি।
– এই এখন আমার ফার্স্ট হওয়ার অনুভূতি টের পাচ্ছি।
– তাই? সারাদিন কি টের পাওনি?
– না। সারাদিন খুব খারাপ কেটেছে।
– কি রকম খারাপ?
– তুমি ছাড়া আমি বেঁচে থাকি কিন্তু অক্সিজেন পাইনা।
– ওহ।
– বাদ দিয়েছ, সব?
– উর্মি,
– হ্যা।
– আজ অনিকের সাথে হাত ধরাধরি করে কোথায় গিয়েছিলে?
– মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ। আজ ওরা বাসায় এসেছিল৷ রেজাল্ট জানাতে, পরে ওদের সাথে বাইরে গিয়েছিলাম।
– কিন্তু গাড়ীতে দুজন ছিলে তাইতো?
– তুমি আমার পিছনে গোয়েন্দা নিয়োগ দিয়েছো?
– লায়ার, মিথ্যা কথা বলো! ছিঃ
– তুমি আদলেই ন্যারো মাইন্ডেড
– উর্মি আমি তোমাকে চোখ বন্ধ করে ভালবাদি, বিশ্বাস করি। কিন্তু তুমি এখন প্রতিদিন অনেক কিছু আমার কাছ থেকে হাইড করেই যাচ্ছো।
বন্ধু থাকতেই পারে, তাই বলে সে তোমার হাত ধরবে? তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে? তুমি তার বাইকে যাচ্ছো প্রতিদিন! এগুলি কি মেনে নেওয়া যায়।
– কেন যাবেনা, হি ইজ মাই ফ্রেন্ড।
– আমি এই ফ্রেন্ডশিপ মানতে পারিনা। তুমি অনিক কে বাদ দিতে পারবে? ইয়েস ওর নো?
– হি ইজ মাই অনলি ফ্রেন্ড।
– ওকে আমি আনসার পেয়েগিয়েছি। তুমি ভালো থাকো, অনিক তোমাকে পছন্দ করে তাকে সময় দাও, প্লিজ আমাকে কল দিওনা।
– শোনো,
,-না আর কিছুই শোনার নেই।

শাওন ফোন রেখেই ফোন বন্ধ করে দিল। উর্মি রাগে মনে হচ্ছে সব ভেঙে দিতে। এতো খারাপ লাগছে! চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে বলছে সে কি অনিক কে পছন্দ করে? না কখনোই না, সে শুধু শাওনের। হ্যা সে অনিক কে মিস করে, অনিক ক্লাসে না আসলে শূন্য শূন্য লাগে। তাই বলে কি এটা প্রেম। প্রেম তার জীবনে একবার ই এসেছে, কেন শাওন বুঝেনা।

শাওম অফিস থেকে বের হয়ে এক প্যাকেট সিগারেট খেয়েছে রাত বারো টার আগেই। সে স্মোকার না, দিনে একটা /দুই টা খায় মাঝে মধ্যে। কিন্তু আজ সে একের পর এক সিগারেট খেয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে দুই চোখ ঝাপ্সা হয়ে আছে।

উর্মি ফোন দিয়েছে জমিলা খাতুন কে,
সে ফোন দিয়ে কান্না কাটি করে বলছে, মা, শাওন আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে, আমাকে মাফ করে দিতে বলেন মা। আমি আপনার ছেলের বউ হতে চাই মা। আপনি ওকে বুঝান।

জমিলা খাতুন বলেছেন,মা তুমি কোন চিন্তা করবানা, আমার ছেলের দায়িত্ব আমার। আমি তোমারে আমার বউ করে মেনেই নিছি, সে না করলে হবে নাকি? সোনা মা তুমি শান্ত হও, আমি আছি।

– উর্মি এক বুক আশা নিয়ে বসে আছে শাওন তার মায়ের কথা রাখবে, সব আগের মতোই হবে। অনিক ফ্রেন্ড, শুধু ফ্রেন্ড থাকবে। তার সাথে ঘুরতে যাওয়া যাবেনা, গেলেই হয়তো তাকে মিসিং এর ব্যাপার টা আসবে, শাওন রাগ করবে।

শাওন ফোন বন্ধ করে রেখেছে, রাত বারোটা বাজে, শাওন একুশ নাম্বার সিগারেট ধরিয়েছে, পেট গুলিয়ে আসছে, সারাদিনে আধা ভাঙ্গা এক সিঙ্গারা খেয়েছিল৷ আর এখনো কিছু খায়নি৷ তার চারিদিকে আজ শুধুই শূণ্য লাগছে, একদম শূণ্য…..
#প্রথম_প্রেম
৩৪ তম পর্ব।

সকাল বেলা অফিসে এসে নিজের ডেস্কে বসেছে শাওন। চোখ গুলি লাল হয়ে আছে। তার পাশের ডেস্কের তারেক সাহেব শাওনের দিকে বার বার তাকাচ্ছেন। পরে উঠে আসলেন, বললেন শাওন সাহেব আপনার কি শরীর খারাপ?
– না, ঠিক আছি ভাই।
– আপনার চোখ এমন লাল হয়ে আছে কেন? রাতে ঘুম হয়নি?
– এমনি, এমনি লাল হয়েছে হয়তো।
– না, কিছু একটা সমস্যা আপনার হয়েছে। যাই হউক বলতে না চাইলে থাক, আর যদি আপন মনে করেন, বলতে পারেন।
– না, সেরকম কিচ্ছু হলে বলবো।

শাওন নিজের ফোন অন করে, মাকে কল দিল। রাতে ফোন খুলতেই ইচ্ছে করেনি।

আসসালামু আলাইকুম মা।
– আমি সাগর।।
– ভাইয়া কেমন আছ? মা কোথায়?
– তুই কি? নিজেকে কি মনে করিস? সারারাত ফোন বন্ধ করে রেখেছিস। বাড়ীতে একটা মানুষ ঘুমাতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত শিরিনের হাজবেন্ড সকালে রওনা হয়েছেন রাজশাহীর উদ্দেশ্যে।
– আমি ভালো আছি, এমনি ফোন বন্ধ রেখেছি৷ মা কোথায়?
– মা, সারারাত কান্নাকাটি করতে করতে, সকালে প্রেশার লো হয়ে সেন্স লেস হয়েছেন, এখন হারু কাকা এসে,ঘুমের ঔষধ দিয়েছেন। এখন ঘুমাচ্ছেন।
– মা, উঠলেই আমাকে কল দিবে।
– আর, তুই ভাই এখন ম্যাচুউর হয়েছিস, একটু ম্যাচুউর হয়ে থাকিস।
– সরি ভাইয়া।
– শিরিনের হাজবেন্ড কে কল দিতে হবে রাখি।
– ভাইয়া মা সুস্থ আছেন তো?
– এখন ঘুমাচ্ছেন। ভালো আছেন।
– উঠলেই কল দিও প্লিজ।
– আচ্ছা। রাখছি।

শাওন ফোন কাটতেই শিরিনের কল, শিরিনের গলা ভেঙে গিয়েছে।
– আপা, কি হয়েছে।
– তুই ঠিক আছিস ভাই?
– কেন? কি হয়েছে?.
– কাল সারারাত ঘুমায়নি, কত কি ভেবেছি!
– কেন আপা?
– উর্মি মাকে কান্নাকাটি করে ফোন দিয়েছে, তুই কথা বলছিস না। মা ফোন দেন, কিন্তু তোর ফোন বন্ধ। সকালে শেষ পর্যন্ত তোর দুলাভাইকে পাঠিয়েছি। এরমধ্যে মাকে নিয়ে ভাইয়া আছেন চিন্তায়, মায়ের শরীর খারাপ করেছে।
– আপা, আমি তোকে দশ মিনিট পরে কল দিচ্ছি, আমি ভালো আছি। এখন একটু রাখছি।
– ভালো আছিস, তাই শান্তি। আচ্ছা রাখ।

শাওন কট করে ফোন কেটে ম্যানেজারের রুমে গেল, এবং বললো স্যার, মায়ের শরীর খারাপ, আমি আধাঘন্টার জন্য বাইরে যেতে পারি?
– এখন?
– জি স্যার।
– আপনি এখন বাইরে গিয়ে কি করবেন?
– স্যার, আর্জেন্ট কল আছে।
– এখন সকাল বেলা! ব্যস্ত সময়৷ আচ্ছা যান। তাড়াতাড়ি আসবেন।
– জি স্যার, থ্যাংক ইউ স্যার।

শাওন অফিসের ছাদে গেল, গিয়ে উর্মিকে কল দিয়েছে। উর্মি এক রিং হতেই কল ধরলো।
হ্যালো।
– তুমি কেমন আছ? ঠিক আছ তুমি?
– কেন? আমি ঠিক থাকবো না?
– তুমি ফোন অফ করেছিলে? মা আর আমি কত চিন্তা করেছি।
– তুমি কি আমার বউ, যে আমাকে নিয়ে চিন্তা করবে? আমার মাকে মা ডাকবেনা।
– তুমি এরকম ব্যবহার করছো কেন?
– উর্মি, তুমি প্লিজ আমাকে ডিস্টার্ব করবেনা, এবং আমার পরিবারের কাউকে না। তুমি তোমার মতো থাকো।
– তাহলে এই পাঁচ বছরের সম্পর্ক তোমার নাটক ছিল?
– কি ছিল, সেটা তুমি জানো এবং খুব ভালো করে। এখন আর কিচ্ছু নেই।
– আমার অনিকের সাথে ঘুরার জন্য তুমি এই রকম।করছো?
– শোন বন্ধুত্বের কোন জেন্ডার হয়না, বন্ধু ইজ বন্ধু। আমি বন্ধুত্ব কে খুব সম্মান করি। কিন্তু তোমার অনিকের সাথে বন্ধুত্ব ছিল না।
– কি ছিল প্রেম?
– সেটা আমি জানিনা। আর হ্যা, তোমার প্রিয় বন্ধু কাল রআত একটায় আমাকে তোনার চ্যাটিং এর কনভারসেশন মেইল করেছে, উইথ ইউর পিক। যেটায় তুমি শাড়ি পরে তার হাত ধরে ছিলে।
– আমি ওর সাথে কি চ্যাট করেছি?
– তুমি আমাকে যখন বলতে সকালে ক্লাস আছে ঘুমাবে, তারপর তুমি ওকে টেক্সট করতে, এবং লিখতে শাওন ঘুমিয়েছে।।
– শাওন আমি শুধুই তোমার!
– না উর্মি, তুমি আর আমার নও। তুমি একজন উচ্চপদস্থ চাকরিজীবির মেয়ে, আর অনিক এর বাবা বিজনেস ম্যান। তোমাদের ক্লাস ম্যাচিং করবে ইজিলি। প্লিজ আমাকে বাদ দিয়ে দাও।
– এরকম বললে, আমি মরেই যাবে।
– তুমি আমার সেই বালিকা প্রেমিকা নও, যে আমার জন্য মরতে পারতো। তুমি আমার উর্মি নও। আমার মা অনেক অসুস্থ, তোমার ফোনের জন্য। আমি অনেক রুড হয়ে কথা বলবো বলেই লাস্ট কল দিয়েছি। কিন্তু বরাবরের মতোই তোমাকে কিছুই বলতে পারলাম না। কিন্তু অনিকের মেইল এবং কালকের ঘটনা সব মিলিয়ে একটা কথা বলতে চাই আই হেইট ইউ,আই হেইট ইউ। নেভার কল মি, নেভার টেক্সট মি। আর যদি আমাকে ডিস্টার্ব দাও আই কল ইউর মাদার, মাইন্ড ইট।
– শাওন।
– ভালো থাকো, বড় হও, সুখী হও। আল্লাহ হাফেজ।

শাওন কল কেটে উর্মির নাম্বার ব্লক লিস্টে এড করে দিল, এবং হাউমাউ করে কাঁদছে, তার উর্মি তাকে রেখে অন্য কারো সাথে অনেক রাত পর্যন্ত চ্যাট করতো, দেখা করতো শাড়ি পরে। তার আজ অক্সিজেন নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে খুব।

মাকে গলা ফাটিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে, মাগো কাল সিগারেট খেয়েছিলাম দুঃখে, রাগে, কত বার ভেবেছিলাম মাফ করে দিব। কিন্তু রাত এক টার দিকের মেইল সব এলেমেলো করে দিয়েছে মা। আমার সত্য সুন্দর ভালবাসার মৃত্যু এভাবে হলো! কিভাবে আর ফোন খোলা রাখি বলো। শাওন শুধু মনে মনে বলছে মাফ করে দাও মাগো, মাফ করে দাও।

উর্মি অনিকের সাথে চ্যাটিং করেছে সত্য, ফ্রি হয়ে অনেক কিছু বলেছে, কিন্তু তার মনে একজন ছিল সে শুধুই শাওন। কিন্তু অনিক বন্ধু হয়ে এভাবে মেইল করে সব নষ্ট করে দিল উর্মি চোখ মুছে ব্যাগ হাতে নিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্য বেড়িয়ে গেল, অনিকের সাথে আজ কিছু একটা বিহিত করতেই হবে।

শাওনের মা একটু পরেই ফোন করে বলছেন, বাবা আর কখনো এমন কাজ কইরো না বাবা। আমি প্রায় পাগল হয়েছিলাম বাবা। আর উর্মির উপর রাগ থাইকো না বাপ, মেয়েটা পাগল তোমার জন্য।

শাওন শুধু বললো তুমি সুস্থ হও মা, সব ঠিক হবে। তুমি সুস্থ হও।

শাওনের আজ কোন কাজ করতে ইচ্ছে করছেনা। মাকে কি বলবে সে! আর কষ্ট পেয়ে কি হবে, তার কষ্ট শুধুই তারই থাকুক। প্রেম বলে কিছু নেই, নেই সত্যি নেই।

উর্মি সি.এন.জি রিজার্ভ করে দ্রুত গতিতে ভার্সিটি যাচ্ছে। কেন এমন করলো অনিক, আজ সে এটা দেখবে। তারপর কি তার শাওন তার কাছে ফিরবে সব ভুলে, উর্মি বারবার চোখ মুছেই যাচ্ছে….

চলবে…

আন্নামা চৌধুরী।
১৮.১০.২০২১
চলবে….

আন্নামা চৌধুরী।
১৫/১০/২০২১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here