তবুও তুমি পর্ব -০১

“এক্সকিউজ মি মিস, এটা ক্লাস রুম এখানে পড়াশোনা করার জায়গা। এটা কোনো চারুকলা প্রদর্শনী কেন্দ্র নয় যে আপনি বসে বসে আঁকাজোকা করবেন আর টিচার সেটা বরদাস্ত করবে! ”

এমন রাগী কন্ঠে বলা লোকটিকে দেখতে ইশা সামনে থাকা লোকটির দিকে তাকালো।

★★

“মা আমি যাচ্ছি!”
“আরে খাবারটা শেষ করে যা! খালি পেটে যাস না অসুস্থ হয়ে পড়বি!”
” না মা, আমি পরে ক্যান্টিন থেকে কিছু খেয়ে নেব!”

মাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ইশা বেরিয়ে পড়লো। বাসার নিচে আসতেই রাফিয়ার সাথে দেখা হলো।

” কতদিন এভাবে আমাকে দাঁড় করিয়ে রাখবি বলতে পারিস! “(রাফিয়া রেগে বলল)

” আরে আমার জানু এমন করছিস কেন? আমি না তোর একমাত্র জানু। জানুর জন্য ওয়েট করবি নাতো কার জন্য করবি?”(ইশা আহ্লাদী কন্ঠে বলল)

“হ্যাঁ রে তুই কি কোনো দিনও শোধরাবি না শুনি? আজ আমাদের কলেজে একজন নতুন টিচার জয়েন করেছে সে খবর আছে তোর, শুনেছি উনি নাকি অনেক রাগী একজন মানুষ।” (রাফিয়া)

“আরে ধুর এটা কোনো কথা! দেখিস আজই তার সাথে আমি ভাব জমিয়ে ফেলবো।” (ইশা)

“হ্যাঁ তা তো করবি এছাড়া আর পারিসই বা কি!” (রাফিয়া)

দুজন কথা বলতে বলতে কলেজ গেটে এসে পৌঁছে গেল। রিকশা ভাড়া চুকিয়ে দুজন মিলে চলে গেল ক্লাস রুমের দিকে। অনেকক্ষণ যাবত ক্লাসে এসে বসে আছে কিন্তু স্যারের আসার কোনো নাম গন্ধ নেই। ইশা এবার বিরক্ত হয়ে যায়।

“দেখ দেখ তোর রাগী স্যার ক্লাসে এসে বসে আছে! রাস্তায় তো আমাকে বকাবকি করে এনেছিস। শান্তিমত যে একটু খাবো তারও উপায় নেই। এখন ক্ষিদের ছোটে আমার পেটে থাকা ইদুর গুলো কিলবিল করে দৌড়াচ্ছে।” (ইশা)

“তুই থামবি? সারাদিন ধরে এতো বকবক করিস কিভাবে তোর মুখ ব্যাথা করে না? বসে বসে আঁকাজোকা কর তাও একটু চুপ কর বইন! তোর পায়ে পড়ি এবার অন্তত থাম একটু!”(রাফিয়া)

” হ্যাঁ হ্যাঁ, তাই তো করবো। আমার কষ্ট তুই কি বুঝবি। যার কষ্ট সেই তো বুঝবে। যা আর কথাই বলবো না, তোর নতুন বান্ধবী নিয়ে থাক তুই আমি গেলাম!”(ইশা নাক ফুলিয়ে বললো)

ইশা কথা বলতে বলতে রাফিয়ার পাশ থেকে উঠে একেবারে কর্ণারে গিয়ে বসলো। তারপর নিজের মতো খাতা বের করে ইচ্ছে মতো আঁজেবাজে আঁকতে শুরু করে।

কিছুক্ষণ পর ক্লাসে নিউ টিচারের আগমন ঘটলো।

” হাই! আমি তোমাদের নতুন শিক্ষক। আমার নাম নিলয় মাহমুদ সিগ্ধ।এবার আমার পরিচয় তো জেনে নিলে এবার তোমাদের এক এক করে সবার সাথে আমি পরিচিত হবো!”

এক এক করে সবার নাম জেনে নিচ্ছেন। ক্লাসের সবার আকার্ষন এখন শুধু স্যারের দিকে। হ্যান্ডসাম, ড্যানিস লুকিং যে কেউই তার প্রেমে পড়তে বাধ্য। প্রথম দিন তাই স্যার নিজের পরিচয় দিলেন তারপর এক এক করে সবার পরিচয় জেনে নিচ্ছেন। অতঃপর ইশার সামনে এসে থামলেন।

“এক্সকিউজ মি মিস, এটা ক্লাস রুম এখানে পড়াশোনা করার জায়গা। কোনো চারুকলা প্রদর্শনী কেন্দ্র না যে আপনি বসে বসে আঁকাজোকা করবেন আর টিচার সেটা বরদাস্ত করবে। ”

ইশা আঁকা আকিতে এতোটাই ব্যাস্ত হয়ে ছিলো। যার জন্য সামনে পিছনে কি ঘটছে সেগুলো নিয়ে তার কোনো খবরই নেই। এজন্য স্যারের রাগী কন্ঠ শুনে সামনে তাকিয়ে দেখতেই ঘাবড়ে যায়। সামনের লোকটিকে দেখে সে এতোটাই ঘাবড়ে যায় যে নিমিষেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

চলবে…..!

[ভালো রেসপন্স পেলে পরের পার্ট দেবো!]

#তবুও তুমি
~পর্বঃ০১~
~লেখায়ঃ ফাহমিদা_মুশাররাত~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here