#ভালোবাসি_বলেই_তো ♥️
লেখিকা – #আদ্রিয়া_রাওনাফ
পর্ব – ৪৯
সকাল বেলা ঘুম ভাঙতেই পূর্ণতা নিজেকে আবরনের বুকে আবিষ্কার করলো । কাল রাতে আবরনের বলা কিছু দুষ্টু মিষ্টি কথা আর কাজ কারবারের কথা মনে পড়তেই পূর্ণতা একা একাই নিঃশব্দে হেসে উঠল ।
আবরনের দিকে তাকিয়ে দেখল ও গভীর ঘুমে আছে । ওর সিল্কি চকোলেট ব্রাউন চুল গুলো এলোমেলো হয়ে কপালে পড়ে আছে ।
পূর্ণতা ওকে মায়াভরা দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে আবারও সেই প্রথম আবরনের সাথে দেখা হওয়া থেকে শুরু করে ওর সাথে কাটানো কিছু বিশেষ স্মৃতির কথা মনে করতে লাগল ।
এরই মধ্যে আবরনের ঘুম ভাঙতেই ও চোখ খুলে দেখল পূর্ণতা অন্যমনস্ক ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে আছে আর মিটিমিটি হাসছে । আবরন ইচ্ছে করেই পূর্ণতাকে পেচিয়ে ধরে বলল ,
– ক্রাশ খেলে নাকি ?
পূর্ণতা আবরনের কথায় আর কাজে ভাবনা থেকে বেরিয়ে ভাব নিয়ে বলল ,
– ক্রাশ খেতে যাবো কেন ?? আপনার যেই না একটা খোমা , তার ওপর আবার ক্রাশ !! আসছে ক্রাশের কথা জিজ্ঞেস করতে , হুহ !!
আবরন ভ্রু কুচকে বলল ,
– তাহলে আমাকে বিয়ে করতে পারবে না শুনে কান্না করেছিলে কেন ?? ঢং !!
পূর্ণতা নাক মুখ ঘুচিয়ে বলল ,
– কি আমি ঢং করি ?
– আমি কি বলেছি যে তুমি ঢং করো ??
– দেখুন , একদম কথা ঘোরাবেন না । ছাড়ুন , আমাকে ছাড়ুন ।
আবরন পূর্ণতা কে আরো শক্ত করে চেপে ধরে বলল ,
– ধরলাম কোথায় যে ছাড়তে বলছো ??
পূর্ণতা চুপ করে রইল ।
আবরন ভ্রু নাচিয়ে বলল ,
– কি হয়েছে ? হঠাৎ মুড সুয়িং করলো যে ?
পূর্ণতা বলল ,
– আমি কি আপনার সাথে আপনার বাসায় থাকবো নাকি আমার নিজের বাসায় ??
আবরন একটু ভেবে বলল ,
– উমমম , তুমি কি চাও ??
– আমি চাইলেই কি আমাকে আমার মন মতো থাকতে দেবে ?
– দেবে না কেন ? তুমি কি চাইছো বলো !
পূর্ণতা বলল ,
– আমার তো মন চায় সবাই মিলে যদি একসাথে থাকতে পারতাম ! আই মিন আমার আপনাকেও চাই আর আম্মুকেও চাই ।
আবরন বলল ,
– তাহলে সমস্যা কোথায় ? যখন মন চাইবে আমার সাথে থাকবে আবার যখন মন চাইবে আম্মুর কাছে এসে থাকবে ।
পূর্ণতা ছলছলে চোখে বলল ,
– ভাইয়া আর বাবা চলে যাবে ২ দিন পরই । তখন তো ভাবির ও কষ্ট হবে আর আম্মুর ও !
আবরন বলল ,
– একটু তো কষ্ট হবেই কিন্তু ভাইয়া তো ভালো কিছু করতেই যাচ্ছে । আর সারাজীবনের জন্য তো আর যাচ্ছে না । দেশে তো আসা যাওয়া করবেই ।
– হুম , কিন্তু খুব মিস করবো ভাইয়াকে । জানেন , আমার সব প্রিয় মানুষগুলোই আমাকে কষ্ট দেয় !
আবরন বলল ,
– কষ্ট তো আপনরাই দেয় , কিন্তু বাধ্যবাধকতা ছাড়া কিন্তু দেয় না । তাই এইটুক কষ্ট বোঝাই করে নিয়েই সামনে এগিয়ে চলতে হবে ।
– আপনি আমাকে আর কষ্ট দেবেন না তো ?
আবরন পূর্ণতার নাকের সাথে নিজের নাক ঘষা দিয়ে বলল ,
– আমি পুচকির ভাইকে অনেক আগেই কথা দিয়েছি যে আমি তার পুচকিকে কখনোই কষ্ট পেতে দেব না ।
পূর্ণতা আবরনের বাহুতে মাথা রেখে শুয়ে বলল ,
– আরো আগে বলেছেন বলতে ?
আবরন হেসে বলল ,
– তোমার মনে আছে আমরা তোমাদের বাসার ছাদে পার্টি করেছিলাম ?
– হুম । আছে তো ।
– সেদিনই ভাইয়া বুঝতে পেরেছিল আমি তোমাকে চাই । তাই তো কথা দিয়েছি আর তোমাকে নিজের করে নিয়েছি ।
পূর্ণতা বলল ,
– আপনারা এতোটা নিষ্ঠুর !! সবাই খারাপ , সবাই । আমার সাথে সবাই ভান ধরে ছিল যেন তারা জানেই না আপনার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করা !! আমাকে কষ্ট দিয়ে নিজেরা আনন্দ করে বেড়িয়েছেন !!
আবরন হেসে বলল ,
– আই প্রমিজ । আমি বেঁচে থাকতে তোমাকে আর কোনো কষ্ট পেতে হবে না । বাট একটা কথা আছে ।
– কি বলুন ?
– পড়াশোনা নিয়ে কোনো হের ফের চলবে না । এর জন্য আমি বকবো । তখন কষ্ট পেলে আমার কিছু করার নেই ।
পূর্ণতা বলল ,
– আপনি আমার স্বপ্ন পূরন করতে আমার পাশেই থাকবেন তো ??
– সবসময় পাশে আছি । এই বিষয়ে তুমি আমার থেকে যথেষ্ট সাপোর্ট পাবে । নিজে ডাক্তার হবো , তোমাকেও ডাক্তার বানাবো । তখন সব জায়গায় একসাথে চলতে ফিরতে পারবো । আর আমরা তো সারাজীবন একা একা থাকবো না । আমাদের বেবি হবে তখন ফ্যামিলি ট্যুরে যাবো ছুটি কাটাতে । আগে দেশ ঘুরবো তারপর বিদেশ । তখন দেখবে লাইফ কতটা এনজয়এবল হয় !
পূর্ণতা চোখ বন্ধ করে বলল ,
– হুম ।
– বাই দ্য ওয়ে , আমাদের ভবিষ্যতে কয়টা বেবি থাকবে ?
আবরনের প্রশ্ন শুনে পূর্ণতা চোখ খুলে তাকিয়ে বলল ,
– আমি কি করে বলবো ? আমি কি ভবিষ্যতবাণী বলতে পারি নাকি ??
আবরন হেসে বলল ,
– বলো না ! বলো না !
পূর্ণতা এক লাফে শোয়া থেকে উঠে বিছানা থেকে নিচে নেমে বলল ,
– আমি জানি না । আল্লাহ যে কয়টা দেবে ।
আবরন শোয়া থেকে উঠে বসে দাঁত কেলিয়ে বলল ,
– তাহলে তো একদল ফুটবল টিম , আরেকদল ক্রিকেট টিম হয়ে যাবে ।
পূর্ণতা বলল ,
– উফফ , হলে হবে । আপনি এত টেনশন নিচ্ছেন কেন ?
আবরন বিছানা থেকে নেমে পূর্ণতা কে হাত ধরে টেনে কাছে এনে বলল ,
– টেনশন নিচ্ছি কারন আমি যে একটা পুচকি বউ বিয়ে করেছি তার না আবার এত গুলো সামলাতে কষ্ট হয়ে যায় ।
পূর্ণতা হেসে বলল ,
– আচ্ছা , আপনি কি এই বিষয়টা নিয়ে একটু বেশিই মাথা ঘামাচ্ছেন না ?
আবরন দাঁত কেলিয়ে বলল ,
– বিয়ে করেছি যখন তখন তো একটু দায়িত্ব পালনে সতর্ক থাকতে হবে !
পূর্ণতা বলল ,
– হয়েছে ! অনেক পালন করেছেন দায়িত্ব ! এখন ছাড়ুন । অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে । আজকে তো আবার সবাইকে ব্যাক করতে হবে তাই না ।
– হুম । বৌভাত আমি নিজ পায়ে দাঁড়ালে তখন হবে । so , আজ ব্যাক করতে হবে ।
…………………………………………………
দুপুর ৩ টা ,
সবাই যার বাসার উদ্দেশ্যে চলে গিয়েছে । এদিকে জল সায়নের সাথে আর শিউলি রহমান , অয়ন এবং সাহেদ হাসানের সাথে আপাতত পূর্ণতাদের বাসায় উঠেছে । ওরা সবাই জিব্রান আর আফতাব উজ্জামান কে বিদায় দিয়ে একেবারেই সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ।
ওদিকে পূর্ণতা কে আজ ওদের বাসায় ই চলে আসতে হয়েছে কারন আর ৭ দিন বাদে জিব্রান আর আফতাব উজ্জামান ফ্রান্সের উদ্দেশ্য নিয়ে বেরিয়ে যাবেন । তবে আবরন প্রতিদিন ই এসে দেখা করে যাবে । আর আধিরা আনজুম এবং শাদমান চৌধুরী বলেছেন , জিব্রান এবং আফতাব উজ্জামান চলে গেলে পূর্ণতা কে তাদের বাসায় নিয়ে যাবে এবং মাঝেমধ্যে সবাই মিলে আবার পূর্ণতাকে নিয়ে এই বাসায় চলে আসবে ।
অর্থাৎ পূর্ণতা দুইবাসাতেই মিলিয়ে ঝিলিয়ে থাকবে ।
নাদিরাও জিব্রানদের বাসায় থাকবে বলে ঠিক করেছে । মাঝেমধ্যে নিজের বাসায় গিয়ে থাকবে । কারন মিলি রহমান নাহলে একা হয়ে যাবেন ।
বাসায় ফেরার দুইদিন পর আজ পূর্ণতা ভার্সিটিতে যাচ্ছে । সামনে পরীক্ষা আছে । এখন আর হেরফের করে পড়াশোনা চালানো যাবে না । এর মাঝে অনেক কারনেই তো পড়াশোনায় গ্যাপ পড়েছে । তবে আর তা করার সুযোগ নেই ।
পূর্ণতা রেডি হয়ে খেয়ে দেয়ে বাসা থেকে বের হচ্ছিল তখন জল বলল ,
– পূর্ণতা , আমাকেও নিয়ে চলো । আমিও ভার্সিটিতে যাচ্ছিলাম ।
– হ্যা , চলো না ।
– আমার মেডিক্যাল ট্রান্সফারের এপলিকেশন নিয়ে যেতে হবে ।
পূর্ণতা মন খারাপ করে বলল ,
– তুমি সত্যি সিলেট চলে যাবে আপু ?
– হুম ।
– ঢাকা মেডিক্যাল ছেড়ে সিলেট মেডিক্যাল এ এডমিশন নিতে চাইছো ! আরো এক বার ভেবে দেখো ।
জল মুচকি হেসে বলল ,
– ভাবাভাবির কিছু নেই পূর্ণ । জীবনে অনেক অনেক ভুল করেছি । এখন যখন সুযোগ পেয়েছি নিজেকে বদলানোর তখন কেন চান্সটা নিব না বলো ?
পূর্ণতা বলল ,
– হুম । ঠিক আছে চলো তাহলে ।
এরই মধ্যে সায়ন এসে বলল ,
– তোমরা একা যাবে ?
জল বলল ,
– আপনি যাবেন নাকি সাথে ?
পূর্ণতা দাঁত কেলিয়ে বলল ,
– ভাইয়া ও তো ৩ মাস পর আবার অস্ট্রেলিয়া তে ব্যাক করবে । তাই তোমার সাথে বেশি বেশি সময় কাটাতে চাইছে ।
সায়ন বলল ,
– এই তো , বুদ্ধমতী মেয়ে ঠিকই বুঝতে পেরেছে ।
জল বলল ,
– ধুর , তোমরাও না । পূর্ণতা চলো তো !
পূর্ণতা হেসে বলল ,
– ঠিক আছে চলো । বায় সায়ন ভাইয়া ।
সায়ন বলল ,
– বায় ।
জল সায়নের দিকে তাকাতেই সায়ন চোখ মেরে বলল ,
– টাটা বউ । 😉
জল ভেংচি কেটে চলে গেল । আর পূর্ণতা হাসল ওদের কান্ড দেখে ।
ভার্সিটিতে ঢুকতেই ফাহিম আর তাসিনের সাথে দেখা । জল বলল ,
– তোমরা চলো তো আমার সাথে । প্রিন্সিপালের রুমে যাবো । কমিউনিটিতেও এপ্লিকেশন জমা দিতে হবে ।
ফাহিম আর তাসিন বলল ,
– ঠিক আছে চলো ।
এই বলে পূর্ণতা কে ফাহিম বলল ,
– আবরন ওর রুমে আছে । এই কয়দিনের জমানো কাজ করছে । আবার সামনে আমাদের মেইন এক্সাম । তুমি ওর অফিস রুমে গিয়ে দেখা করে নাও ।
– ঠিক আছে ভাইয়া ।
– ওকে ।
ফাহিম , তাসিন আর জল চলে গেল ।
পূর্ণতা হেঁটে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল প্রেনার উদ্দেশ্যে । ওকে সাথে নিয়ে আবরনের রুমে যাবে তাই ।
এরই মধ্যে ফোনটা বেজে উঠল । পূর্ণতা ফোনটা ব্যাগ থেকে বের করে দেখল আবরন কল করছে । পূর্ণতা ফোনটা রিসিভ করে কানে দিতেই ওপাশ থেকে আবরন বলল ,
– কোথায় আছো ?
– এই তো ক্যাম্পাসে ।
– একবার আমার রুমে এসো তো ।
– হ্যা , ফাহিম ভাইয়া বলেছে যেতে । আমি মাত্রই এসেছি । প্রেনাকে সাথে নিয়ে আসছি ।
– প্রেনাকে আনতে হবে কেন ?
– তো আমি একা যাবো নাকি ?
– হু । একা আসবে ।
– সবাই পরে আমাকে নিয়ে সমালোচনা করবে ।
– এখন কিছু কথা তো মানুষ বলবেই । মানুষের কাজই হচ্ছে সমালোচনা করা । তাই বলে কি আমার বিয়ে করা বউ আমার সাথে এসে পারসোনালি দেখা করতে পারবে না ??
পূর্ণতা বলল ,
– ইদানিং ফিল্মি হয়ে যাচ্ছেন !
আবরন হেসে বলল ,
– এখন মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে কথা না বলে উপরে এসো । সবাই কেমন করে তাকিয়ে আছে তোমার দিকে । আর পড়ে এসেছো গোলাপি আর নীল জামা ।
পূর্ণতা আবরনের কথা শুনে বুঝলো আবরন ওকে দেখছে । তাই আবরনের রুমের দিকে তাকাতেই দেখল ও করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে । পূর্ণতা সেদিকে তাকিয়েই বলল ,
– কেন , এই ড্রেসে কি খারাপ লাগছে ??
– হুউউম ,, এতোওও খারাপ লাগছে , এতোওও খারাপ লাগছে যে ভার্সিটির সব ছেলেগুলো দেখো কেমন করে তোমাকে দেখছে । জলদি উপরে এসো , জলদি ।
পূর্ণতা হেসে বলল ,
– আসছি । রাখুন ফোনটা ।
– নো , নো , কল কাটবে না । কলে থেকেই আসো ।
– কেন ?
– আসোই না ।
– উফফফ , আচ্ছা ।
পূর্ণতা কলটা না কেটেই আবরনের রুমের দিকে এগিয়ে গেল । সিড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে করিডোর দিয়ে হেঁটে আবরনের দিকে এগিয়ে গেল পূর্ণতা ।
আবরনের একদম কাছাকাছি গিয়ে পূর্ণতা বলল ,
– এখন কলটা কাটা যাবে কি ?
আবরন হেসে বলল ,
– অবশ্যই । এখন আপনি কাটতে পারেন ।
পূর্ণতা কলটা কেটে বলল ,
– আপনি না ব্যস্ত । কথা বলে সময় নষ্ট করছেন কেন ?
আবরন বলল ,
– রুমের ভেতরে গিয়ে কথা বলি !
– ঠিক আছে চলুন ।
আবরন পূর্ণতা কে রুমে ঢুকিয়ে দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে পূর্ণতা কে বলল ,
– জল এসেছে তোমার সাথে ?
– হুম । আপুর তো কাজ আছে ।
– হ্যা , আমি অর্ধেক কাজ এগিয়ে দিয়েছি । বাকিটা কমিউনিটি করবে ।
– ওও ।
আবরন পূর্ণতার কাছে এসে ওর কোমড় পেঁচিয়ে ধরে বলল ,
– পড়াশোনা কেমন চলছে ?
পূর্ণতা হকচকিয়ে বলল ,
– কি করছেন টা কি ? কেউ হুট করে রুমে ঢুকে গেলেই দেখে নিবে ।
আবরন হেসে পূর্ণতার নাকের সাথে নাক ঘষা দিয়ে বলল ,
– না , মিসেস চৌধুরী ….. এটা পাবলিক প্লেস না যে চাইলেই যে কেউ ঢুকে পড়বে । এটা শাহরিদ আহনাফ আবরনের রুম । এই রুমের বাহিরে পা মাড়াতেই অনেকে ভয় পায় । আর কেউ আসলে রুম নক না করে ঢুকবে না ।
পূর্ণতা হেসে আবরনের বুকে হাত দুটো রেখে বলল ,
– আচ্ছা । আপনি পড়াশোনার কথা স্ট্রেইটলি জিজ্ঞেস না করে এতো রোম্যান্টিক ভাবে জিজ্ঞেস করলেন কেন ??
– পরে পড়া না দিতে পারলে তো ধোলাই দিব তাই এখন একটু আদর করে বললাম !
– আচ্ছা , এখন ছাড়ুন । আমার ক্লাস শুরু হয়ে যাবে ।
– আচ্ছা , ছাড়ছি কিন্তু আমার একটা জিনিস চাই ।
– আমি জানি , কিন্তু এটা জিনিস দেয়ার জায়গা না । পরে ভেবে দেখবো । এখন ছাড়ুন ।
আবরন বলল ,
– তুমি জীবনেও দিবে না । আমার জিনিস কিভাবে আদায় করতে হয় আমি ভালোই জানি !
পূর্ণতা বলল ,
– মানে !!
– মানে………….
এই বলে আবরন পূর্ণতার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে আসতেই পূর্ণতা চোখ বন্ধ করে নিল । আবরন দুষ্টুমি করে পূর্ণতা চোখ বন্ধ করতেই ওর কপালে চুমু এঁকে বলল ,
– যাও ক্লাসে । দেড়ি হয়ে যাবে নয়তো । বাকিটা পাওনা রইল , সময় বুঝে সেড়ে নিব ।
পূর্ণতা চোখ খুলে হেসে আবরনকে জড়িয়ে ধরে বলল ,
– পরে দেখা হচ্ছে । আল্লাহ হাফেজ ।
আবরন ও ওকে জড়িয়ে ধরে বলল ,
– আল্লাহ হাফেজ ।
………………………………………………..
দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ এভাবেই কেটে গেল । আজ সবাই এসেছে এয়ারপোর্ট এ । আজ জিব্রান আর আফতাব উজ্জামান এর ফ্রান্সে যাওয়ার ফ্লাইট । ওদের কে বিদায় দিতে সবাই এসেছে ।
সবাই ই কম বেশি মন খারাপ করলেও পূর্ণতা , মিলি রহমান , নাদিরা কান্নাকাটি করছে ।
পূর্ণতা জিব্রান কে জড়িয়ে ধরে কেদেই যাচ্ছে । জিব্রান কাদতে চেয়েও পারছে না তা নাহলে ও আর যেতে পারবে না ।
জিব্রান আবরনকে ডেকে বলল ,
– তুই কিন্তু আমাকে কথা দিয়েছিস আমার পুচকি কে অনেক ভালোবাসবি আর ওর সব দায়িত্ব নিজে নিবি । ওকে কষ্ট পেতে দিবি না । আমার পরে কিন্তু এখন সব দায়িত্ব তোর । তোর উপরে অনেক ভরসা করেই কিন্তু আমি ওকে তোর কাছে আমানত হিসেবে রেখে যাচ্ছি । কথা দে , ওকে দেখে রাখবি । ওর স্বপ্ন পূরনে সাহায্য করবি !!
আবরন জিব্রান কে জড়িয়ে ধরে বলল ,
– আমি কথা দিচ্ছি ভাইয়া । শেষ নিঃশ্বাস ফেলার আগ পর্যন্ত ওর সব রকম খেয়াল রাখবো আর ওর সব দায়িত্ব আমার ।
অবশেষে সবাইকে বিদায় জানিয়ে আফতাব উজ্জামান আর জিব্রান চলে গেল ইমিগ্রেশন পাশ করতে এয়ারপোর্টৈর ভেতরে ।
#চলবে ♥️
। ♥️