হাতটা রেখো বাড়িয়ে পর্ব -২৬

#হাতটা_রেখো_বাড়িয়ে
#পর্ব-২৬
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি

পথ যেন শেষ হওয়ার নামই নিচ্ছে না। দুরন্ত গতিতে ছুটে চলছে বাইক। পথের ধারের বৃক্ষরাজির দলকে একের পর এক পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে চলছে তারা। নতুন পিচ ঢালা প্রশস্ত রাস্তা। নির্জন। কোলাহল মুক্ত। সমানে শিহরিত করা হাওয়াও যেন আনন্দের সাথে ছুঁয়ে যাচ্ছে তাদের। ধারার ভীষণ ভালো লাগছে। ইচ্ছে করছে এই পথ আর না ফুরাক। পৃথিবীর স্থলভূমিকে কেন্দ্র করে তারা অনন্ত কাল এভাবেই ঘুরতে থাকুক। উদ্দেশ্যহীন। দল ছাড়া পাখির মতো। নেই কোন চিন্তা। নেই কোন খোঁজ। সামনের মানুষটির কাঁধে হাত রেখে ধারা একবার পূর্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো। শুদ্ধ’র গায়ের সুগন্ধি পারফিউমের ঘ্রাণ তার নাকে লাগছে। মাথা নিচু করে ধারা হেসে ফেললো। কখনো কি সে ভেবেছিল এভাবে কোনদিন একটা ছেলের সাথে তার বাইকে ঘোরা হবে! তার একঘেয়েমি, পানসে জীবনে কখনো কি এমন প্রেমময় ভাবনায় সে বিভোর হয়েছিল? অথচ আজ তাই হচ্ছে। স্বপ্নের মতো, কিন্তু স্বপ্ন নয়। সত্যি। পৃথিবীর দৃশ্যমান চন্দ্র, সূর্যের মতোই সত্যি।

শুদ্ধ বাইকের মিররে একবার ধারার দিকে তাকালো। ধারার গায়ে গাড় নীল রঙের একটা থ্রি পিছ। চুলগুলো খোলা। মুখে অতিরঞ্জন কোন প্রসাধনী নেই। হয়তো চোখে হালকা কাজল লাগিয়েছিল। চোখের পানিতে তাও ধুয়ে মুছে গেছে। তবুও তাকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। ঘন কালো পল্লববিশিষ্ট চোখ জোড়া নিচে নামানো। ফর্সা গালদুটোয় কেমন যেন লাল আভা ছড়িয়ে আছে। নিশ্চয়ই কিছু ভেবে লজ্জা পাচ্ছে৷ মেয়েটা এতো লাজুক! শুদ্ধ’র চোখ ফেরাতে মন চায় না। তবুও ফেরাতে হয়। সামনে পথ যে বাকি।

কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করেই বাইকে ব্রেক কষলো শুদ্ধ। ধারা খানিক অবাক হয়ে বলল,
‘এখানেই নামবো।’
শুদ্ধ বাইক থেকে নামতে নামতে বলল,
‘হুম।’
ধারা নামলো। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো জায়গাটা সুন্দর। দু ধারে সারি বেঁধে দাঁড়ানো সুপারি গাছ। প্রশস্ত রাস্তার পরে একটা সরু স্বচ্ছ পানির জলধারা চলে গেছে। তার ধারে সবুজ ঘাসে ভরা। শুদ্ধ গিয়ে সেখানে বসলো। ধারাও পেছন পেছন অনুসরণ করলো তাকে। আস্তে করে গিয়ে বসলো তার পাশে। শুদ্ধ হঠাৎ হেসে উঠলো। ধারা বলল,
‘হাসছো কেন?’
‘এখানে বসার পর হঠাৎ মনে হলো তোমাকে গান গাইতে বলবো। কিন্তু এরপরই মনে পড়ে গেলো তোমাকে গান গাইতে বলায় গতবার যা গেয়েছিলে, কি যেন? আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী…!
শুদ্ধ শব্দ করে হাসতে লাগলো। ধারা কপট রাগ নিয়ে ও’র হাতে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলল,
‘এমন করলে ভালো হবে না বলে দিচ্ছি। আমি কিন্তু চলে যাবো?’
‘আচ্ছা! কিভাবে? আমি তো আর একঘন্টার আগে কোন বাইক চালাচ্ছি না।’
ধারা একটু ভাব নিয়ে বলল,
‘আমি একাই বাইক চালিয়ে চলে যাবো। তুমি থাকবে এখানে বসে।’
‘তাই! তুমি চালাতে পারো?’
‘না পারলে না পারলাম। এক্সিডেন্ট করে পড়ে থাকবো একা একা।’
শুদ্ধ হঠাৎ গম্ভীর হয়ে বলল, ‘ধারা, এইসব কি ধরণের কথা!’
শুদ্ধ’র এমন রুক্ষ কণ্ঠ শুনে ধারার চেহারার ফাজলামো ভাব চলে গেলো। শুদ্ধ নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
‘মজার ছলেও খারাপ কথা মুখ দিয়ে বের করতে হয় না ধারা। তুমি একা একা বিপদে পড়ে থাকবে এমনটা আমি ভাবতেও পারি না। তোমাকে আর দূরে রাখতে ইচ্ছা করে না ধারা। তোমার জন্য অনেক ভয় হয়।’
শুদ্ধর কণ্ঠটা কেমন যেন শোনায়। ধারার একটা হাত শুদ্ধ নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলল, ‘একবার এই ঝামেলাটা মিটে যাক। তোমাকে আমি আর দূরে রাখবো না। তৎক্ষনাৎ একদম নিজের কাছে নিয়ে যাবো। একটুর জন্যও আর চোখের আড়াল হতে দিবো না। আমরা সবসময় একসাথে থাকবো ধারা।’

ধারা বিস্ময়বিমূঢ় দৃষ্টিতে শুদ্ধ’র দিকে তাকিয়ে রইলো। শুদ্ধ সাহসী, আত্মবিশ্বাসী, শক্ত মনোবলের ছেলে। তার মুখে কখনও কোন ভয়ের কথা শুনেনি ধারা। এই প্রথম শুনলো। তাও আবার তাকে নিয়ে। ধারার চোখ ছলছল করে উঠলো। সে শুদ্ধ’র হাতটা নিজের দু হাতের মধ্যে নিয়ে বলল, ‘আমার কিচ্ছু হবে না শুদ্ধ। তুমিই তো শিখিয়েছো ভয় না পেতে। শুধু তোমার হাতটা বাড়ানো থাকলে আমি এখন যে কোন কঠিন মুহুর্তেরই মোকাবেলা করতে পারবো। কারণ আমি তো জানি, আমি যদি দূর্বলও হয়ে পড়ি আমার পেছনে একটা শক্ত হাত আছে। যে আমাকে কখনো ভেঙে পড়তে দিবে না।’

ধারার হাতে ঈষৎ চাপ প্রয়োগ করে শুদ্ধ মৃদু হাসলো। ঘাসের মধ্যে ফুটে থাকা একটা নাম না জানা নীল রঙের ফুল ছিঁড়ে ধারার কানে গুঁজে দিলো। ধারা বলে উঠলো,
‘বাহ! ফুলটা তো খুবই সুন্দর।’
শুদ্ধ স্মিত হেসে বলল, ‘আমার সামনে যে মেয়েটি আছে তার থেকে না।’
ধারা লাজুক মুখে চোখ নামিয়ে ফেললো।

সারাদিনটা জুড়েই ও’রা ঘোরাঘুরি করলো। দূর থেকে দূরে। চেনা থেকে অচেনায়। কখনো জনশূন্যে, কখনো জনারণ্যে। সকাল থেকে দুপুর হলো। দুপুর গড়িয়ে বিকেল। শুদ্ধ ধারাকে কিছুটা কেনাকাটাও করে দিল। সেখান থেকে একটা রেস্টুরেন্টে গেলো তারা। মাঝের একটা খালি টেবিল দেখে বসে খাবার অর্ডার করলো। খানিক বাদে খাবার চলে এলো। স্যান্ডউইচ, মিট বল, আর চকলেট শেক। খাবারের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভেবে ধারা বলল,
‘আচ্ছা, এটা কি আমাদের ফার্স্ট ডেট হলো?’
শুদ্ধ মৃদু হেসে বলল, ‘বাহ! মিসেস ধারা, আপনি ডেটও বোঝেন?’
‘এক্সকিউজ মি! আপনি কি আমাকে ইনসাল্ট করছেন?’
‘করলাম। কেন সমস্যা?’
ধারা দাঁত চেপে বলল, ‘আমিও না সব মনে রাখবো। তুমি যে আমাকে বিয়ের পর থেকে এই পর্যন্ত কতগুলা খোঁচা মেরেছো সব একদিন সুদে আসলে তোমাকে ফেরত দেবো।’
শুদ্ধ মিট বল খেতে খেতে বলল,
‘তুমিও তো আমাকে ছাড়োনি। কি যেন নাম দিয়েছো….খোঁচারাজ!’
ধারার মুখ ঝুলে গেলো। স্ট্রিপ দিয়ে মিল্ক শেক টেনে আড়চোখে ভাবতে লাগলো ধারা তাকে খোঁচারাজ বলে এটা শুদ্ধ জানলো কিভাবে? ধারা তো কখনো সামনাসামনি বলেনি! ধারার মুখের অবস্থা দেখে শুদ্ধ ঠোঁট চেঁপে হেসে বলল,
‘যেভাবে রাগের চোটে বিরবির করতে দূর থেকেও স্পষ্ট শোনা যেত।’
কথাটা শুনে ধারার বিষম উঠে গেলো। ধারা তো আরও কতো কথাই এভাবে বলেছে সব কি শুদ্ধ শুনে ফেলেছে! শুদ্ধ বলে উঠলো,
‘আরে আরে কি করছো! আস্তে আস্তে খাও। তা কি যেন বলছিলে! এটা ফার্স্ট ডেট হলো কিনা? ফার্স্ট যেহেতু এভাবে বেড়িয়েছি। সেহেতু ফার্স্টই তো বলা যায়।’
শুদ্ধ’র কথা শুনে ধারা উৎসুক হয়ে বলল,
‘জানো, আমি যখন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়তাম তখন আমাদের ক্লাসের একটা মেয়ে মিলি করে নাম, একবার ক্লাস বাঙ্ক করে ও’র বয়ফ্রেন্ডের সাথে ফার্স্ট ঘুরতে বেড়িয়েছিল। ও’র বাবা তখনই নতুন একটা বেকারী শপ দিয়েছিল। সেটা কোথায় মিলি সঠিক করে চিনতো না। বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ও সেই শপেই পেস্ট্রি খেতে যায়। গিয়ে দেখে ও’র বাবা। সোজা ধরা খেয়ে যায়। এই খবর আমাদের ক্লাসে একদম হাইলাইট হয়ে ছিল। তার থেকেই আমি শুনেছি শুধু ফার্স্ট ডেট! ফার্স্ট ডেট! এতো হাসি পায় ঐ ঘটনা মনে পড়লে! কথায় আছে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়। মিলির অবস্থাটা হয়েছিল ঠিক সেরকম।’
কথাটা বলে ধারা তুমুল হাসিতে ভেঙে পড়লো। শুদ্ধও হাসলো। হঠাৎ শুদ্ধ’র চোখ ধারার পেছনে কাউন্টারের দিকে গেলো। হাসতে হাসতে ধারা যখনই স্যান্ডউইচে একটা কামড় বসাতে যাবে ঠিক তখনই শুদ্ধ ভ্রু কুঁচকে পেছনে দৃষ্টি রেখেই বলল, ‘আচ্ছা ধারা, তোমার বাবারও কি কোন রেস্টুরেন্ট আছে?’
ধারা স্যান্ডউইচে মুখ ভরে বলল, ‘কই না তো!’
‘তাহলে তোমার বাবা এখানে কি করছে?’
শুদ্ধ’র কথা শুনে ধারা পেছনে ঘুরে তাকালো। মুহুর্তেই তার চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। তার বাবা আজিজ তালুকদার কাউন্টারে দাঁড়িয়ে রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারের সাথে হাত মেলাচ্ছে। খাবার ধারার গলায় বেজে যাবার উপক্রম হলো। ধারা দ্রুত সামনে ঘুরে শুদ্ধকে কিছু বলার চেষ্টা করলো। খাবারে মুখ ভরে থাকায় তার কথা স্পষ্ট বোঝা গেলো না। শুদ্ধ কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে রইলো। ধারা কোনমতে দ্রুত খাবার গিলে বলল, ‘হয়তো বাবার পরিচিত কেউ। তুমি তাড়াতাড়ি এখান থেকে যাও! এখান থেকে যাও!’
ধারার অস্থিতিশীলতা দেখে শুদ্ধ আরো বিভ্রান্ত বোধ করলো। কোথায় যাবে? কি বলছে?
শুদ্ধ ফিসফিসিয়ে বলল, ‘আমি আবার কোথায় যাবো?’
ধারা হন্তদন্ত হয়ে বলল, ‘অন্য কোন টেবিলে গিয়ে বসো। পেছনে ঘুরে বসো।’
শুদ্ধ উঠে দাঁড়ালো। কি করবে না করবে বুঝতে না পেরে একটা মেয়ের সামনে টেবিলে বসে পড়লো। ধারা ঢুকে গেলো তার টেবিলের নিচে। আজিজ সাহেব তাদেরকে আর দেখতে পেলো না। যদি পেতো তাহলে হয়তো এই পাবলিক প্লেসেই কোন হট্টগোল বাঁধিয়ে ফেলতো। তার বাবার রাগ ধারা চেনে। টেবিলের নিচে বসে ধারা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিচ দিয়ে শুদ্ধ কোথায় দেখার জন্য তাকিয়েই তার মুখ ভোতা হয়ে গেলো। দেখলো শুদ্ধ একটা মেয়ের সাথে টেবিলে বসে আছে। দৃশ্যটা চক্ষুগোচর হতেই ধারা ভুলবশত উঠতে গেলেই মাথায় বারি খায়। দাঁত কিড়মিড় করে মাথা ডলতে ডলতে দেখতে থাকে তাদেরকে। শুদ্ধ পেছন ফিরে বসায় তাকে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু মেয়েটাকে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। শুদ্ধ’র মতো একটা ছেলেকে দেখে মেয়েটা আহ্লাদে গদগদ হয়ে কথা বলার চেষ্টায় আছে। আর শুদ্ধও দেখো, আর কোন সিট পেলো না। একটা মেয়ের সাথেই বসতে হলো! বাবার জন্য যেই আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল তা এখন রূপান্তরিত হয়ে বর নিয়ে জেলাসিতে চলে গেলো। ধারা কটমট করে তাকিয়ে রইলো। ফার্স্ট ডেট তো তাদের ছিল। অথচ হচ্ছে কি দেখো! ধারা এদিকে এতো কষ্ট করে টেবিলে বসে আছে আর তার বর মহাশয় আরামে চেয়ারে বসে মেয়েটার সাথে হাসি গল্প করছে।

কিছুক্ষণ পর আজিজ সাহেব চলে গেলে ধারা নিচ থেকে উঠে বসে। শুদ্ধও ফিরে আসে নিজের জায়গায়। বুকের শার্ট টা নাড়িয়ে বাতাস করতে করতে বলে, ‘হায় রে! কি একটা অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য ভালোই! বিয়ের পরেও একটা প্রেম প্রেম ফিলিংস পাচ্ছি। সেই লুকিয়ে ছুপিয়ে দেখা করা।’
এই বলে শুদ্ধ মৃদু হাসলো। ধারা টেবিলের উপর দু হাত রেখে গুমোট মুখে বলল,
‘সুন্দর ছিল?’
শুদ্ধ অবাক হয়ে বলল, ‘কে?’
‘ঐ মেয়েটা!’
‘কি যেন এতো কি খেয়াল করেছি নাকি!’
‘ও আচ্ছা, আপনার সামনে বসা ছিল আর আপনি দেখেনিই নি না?’
শুদ্ধ সরল গলায় বলল,
‘হ্যাঁ, মোটামুটি সুন্দরই।’
ধারা হাত নামিয়ে দ্রুত বলে উঠলো,
‘ও, তার মানে এতো ভালো করেই খেয়াল করেছেন! তা এতো কি কথা বলছিলেন মেয়েটার সাথে?’
‘কি বলো ধারা! হঠাৎ করে অভদ্রের মতো মেয়েটার সামনে বসে পড়েছি কিছু তো একটা বলতেই হয়, না?’
‘হেসেছিলেন?’
‘সৌজন্যতার হাসি।’
‘গালে টোল পড়েনি তো আবার?’
‘না।’
‘তাহলে ঠিক আছে।’
শুদ্ধ কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে থাকে। এতক্ষণে ঠোঁট প্রসারিত করে শুদ্ধ’র দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসি ফুটে উঠে ধারার।

এরপর আর খুব বেশি ঝুঁকি নেয় না তারা। রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে শুদ্ধ ধারাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। উৎফুল্ল হয়ে বাড়িতে ফিরে ধারা দেখে তার বাবা আর কাকা এখনও ফেরেনি। শুদ্ধ তাকে আজ অনেকগুলো রঙের কাঁচের চুড়ি কিনে দিয়েছে। রুমে গিয়ে সর্বপ্রথম আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ধারা সেটাই ব্যাগ থেকে বের করে দেখতে থাকে। পেছন থেকে জমিরন বিবি এসে বলে,
‘কি রে কেমন আনন্দ করলি তোরা?’
ধারা কোন জবাব দেয় না। শুধু মুচকি হাসে। জমিরন বিবি বলতে থাকেন,
‘এমনেই হাসিখুশি থাকবি। অতো বেশি চিন্তা করোন লাগবো না। যা হওয়ার হইতে থাক। তুই না চাইলে তো আর তোগো আলাদা করতে পারবো না। এমন টুকটাক ঝামেলা সবখানেই হয়। আমার যহন নতুন নতুন বিয়া হইলো তহন তোর দাদার লগেও আমার বাপের ছোডো খাডো একটা গ্যাঞ্জাম হইছিলো। বাপজানে আমার লগে কতা কইলেও আগের মতো হেই সহজ ভাবটা ছিলো না। হের পর যহন তোর বাপে আমার পেটে আইলো নাতি পাইয়া আমার বাপে যে কি খুশি হইলো! পেছনের সব ভুইলা গেছিলো।’

জমিরন নিজের কালের কথা জমিয়ে গল্প করে কিছুক্ষণ পর চলে গেলো। ধারাও আগ্রহের সহকারে শুনছিল দাদীর কথা। জমিরন বিবি চলে যাওয়ার পর বিছানা ছেড়ে উঠতে গিয়েই হঠাৎ তার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। এমন একটা বুদ্ধি যার পর তার বাবা নিজে শুদ্ধকে ডেকে ধারাকে তার হাতে তুলে দেবে। ধারা ভীষণ উৎফুল্ল হয়ে উঠলো।

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here