#ছায়া_হয়ে_থাকব_পাশে (পর্ব ৩১)
#Humayra_Khan
·
·
·
সাবিনা সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে চারুকে………
সাবিনাঃ আমাকে তুই ক্ষমা করে দে মা…..
আমি অনেক খারাপ আচরন করেছি তোর সাথে….
আজ আমার কারনেই তোর উপর এই ঝড় বয়ে গেছে.
চারু ঃ না কাকিমা প্লিজ আপনি বড় হয়ে আমার কাছে ক্ষমা চাইবেন না….. তাছাড়া আমার ভাগ্য এ যা লিখা ছিল তাই হয়েছে……
সাবিনাঃ সত্যি….. তুই আমায় ক্ষমা করে দিয়েছিস মা.
আহানঃ চারু ক্ষমা করতে পারলেও আমি কখনো ভুলতে পারব না মা যে আজ তোমার ভুলের কারনেই….
কথাটি বলে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে আহান….
হঠাৎ আহানের ফোনটা বেজে উঠলে আহান বেলকনি তে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে…..
আহানঃ হ্যালো কিছু খবর পেয়েছো মেহেদী আর ওই ড্রাইভার টার????
ফোনের অপর পাশের লোকটিঃ
জ্বি স্যার…. আপনার ধারনাই ঠিক ছিল… দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্লেন করছিল…. কিন্তু সময় মতো ধরে ফেলেছি শয়তান গুলো কে….. এখন আপনি এসে দেখেন কি করবেন….
আহানঃ গুড… ওদের আমি পুলিশে দেওয়ার মতো ভুল করবো না ওদের আমি নিজ হাতেই উচিৎ শিক্ষা দিবো
আচ্ছা তাহলে… আমি আসছি….
কথাটি বলার সাথে সাথে ফোনটি কেটে দেয় আহান…
বেলকনি থেকে রুমের মধ্যে এসে–
চারু মিসেস সাবিনার কোলে মাথা রেখে কান্না করতে থাকে……
আহান চারুর এক হাত ধরে…..
আহানঃ উঠো চারু…..
চারু বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আহানের দিক এ.
আহানঃ অবাক হয়ে না তাকিয়ে চলো আমার সাথে..
দিশাঃ ভাইয়া কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন চারুকে….
আহানঃ ভাবি এখন বলার সময় নেই… বাসায় এসে সব কিছু বলবো….
চারু ঃ না আমি কোথাও যাব না….
আহান বেশি কিছু না ভেবে চারুকে কোলে তুলে নিয়েই বাসার থেকে বের হয়ে পরে…..
গাড়িতে চারুকে বসিয়ে খুব স্পিড এ গাড়ি চালাতে থাকে আহান…….
ফার্ম হাউস এ…..
মেহেদী ঃ ওয়াট থা হেল… কেন আমাকে বেধে রাখা হয়েছে….
লোকটিঃ স্যার আসলেই বুঝতে পারবি তোকে কেন বেধে রেখেছি……
কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা ফার্ম হাউস এ এসে পৌছালে-
আহান গাড়ি থেকে নেমে —
আহানঃ গাড়ি থেকে নামো চারু….
চারু ঃ আমি বাসায় যাব… কেন নিয়ে এসেছেন আমাকে এই খানে……
আহান চারুর কথা শুনে কিছু না বলেই চারুর এক হাত টেনে বের করে আনে গাড়ি থেকে…..
ফার্ম হাউসের ভিতরে ঢুকে
চারু ডাক্তার মেহেদী আর ড্রাইভারকে দেখে ভয়ে কাপতে থাকে….
আহানঃ কি হলো চারু ভয় পাচ্ছো কেন…আমি চাই তুমি নিজ হাতে শাস্তি দাও ওদেরকে…
মেহেদী আর ড্রাইভার টা বেশ অবাক হয় চারুকে দেখে..
মেহেদী ঃ তুমি বেচে আছো???( অবাক হয়ে)
চারু মেহেদীর বলা কথা শুনে রেগে মেগে ওর সামনে গিয়ে নিজের পায়ের জুতা খুলে অনবরত মারতে থাকে মেহেদীর গালে…..
চারু ঃ হ্যা বেচে আছি…. তোর মতো শয়তানকে শিক্ষা দেওয়ার জন্যই আল্লাহ আমাকে এখনো বাচিয়ে রেখেছেন……
মেহেদী ঃ প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও… সত্যি তখন আমার মাথা ঠিক ছিলো না।।।তাই তোমাকে অমানুষ এর মত মরার জন্য রাস্তায় ফেলে দেই…..
চারু ঃ তুই যদি আমাকে মেরেও ফেলতি তাও এতো টা কষ্ট হতো না আমার। কিন্তু আজ তোর জন্য সারা জীবন আমাকে সবাই ধর্ষিতা বলে ডাকবে….
কথাটি বলে চারু মেহেদীকে মারতে যাবে এর আগেই-
ড্রাইভারঃ ম্যাম আপনি ধর্ষিতা না….
ড্রাইভার এর বলা কথা শুনে চারু আর আহান দুইজন ই শকড…..
চারু ঃ মানে…….
মেহেদী ঃ মানে হলো তোমার সাথে তেমন কিছুই হয়নি…. তোমার সাথে কিছু করার আগেই তুমি ভয়ে বেহুস হয়ে পরো।।। তুমি অজ্ঞান হওয়ার পর কিছুই করিনা আমি তোমার সাথে.. বেশ ভয় পেয়ে যাই আমি…. তাই বেশি কিছু না ভেবে গাড়ি থেকে ফেলে দেই তোমাকে….
চারু ঃ মানে তখন গাড়ি তে আমার সাথে কিছুই হয়নি..?
ড্রাইভারঃ হ্যা ম্যাম কিছুই হয়নি আপনার সাথে আর আপনি বেচে ও আছেন.. প্লিজ আমাদের এখন ছেড়ে দেন… আমরা কখনো আর এমন ভুল করবো না..
আহানঃ তোদের ছেড়ে দিব এই কথা ভাবলি কিভাবে রে।।।।।
তারপর আহান মেহেদী আর ড্রাইভার কে মারতে থাকে নিজের শরীরের সব শক্তি দিয়ে..
তাদের অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গেলে-
চারু আহানকে থামানোর চেষ্টা করে কিন্তু আহান চারুর কথায় কান না দিয়ে মারতে থাকে দুইজনকেই
চারু ঃ আহান আমার কসম লাগে আপনি যদি আরেকবার ওদের উপর হাত উঠান……
চারুর কথা শুনে আহান চারু দিক এ অবাক দৃশটিতে তাকিয়ে–
আহানঃ তুমি ওদের বাচাতে চাইছো….
চারু ঃ আহান ডাক্তার এর দায়িত্ব মানুষ এর জীবন বাচানো কারো জীবন নেওয়া না…..আর আমি চাইনা আপনার হাতে কেউ খুন হোক…আর এদের উচিৎ শিক্ষা পুলিশ দিবে….
লোকটিঃ হ্যা স্যার ম্যাম ঠিক বলেছে এদের পুলিশ এর হাতে দেওয়াই ঠিক হবে….
আহান চারুর কথা শুনে —
নিজের ফোনটা নিয়ে কাউকে কল দেয়..
আধা ঘণ্টা মধ্যে দুই জন পুলিশ আসলে –
পুলিশ ঃ ইউ আর আন্ডার এরেস্ট মিঃ মেহেদী…
কথাটি বলার সাথে সাথে পুলিশ মেহেদী আর ড্রাইভারকে হেন কাপ পরিয়ে দিলে-
মেহেদী ঃ অই আমাকে ছাড়ুন বলছি… আমিতো কিছুই করিনি…. আই সেইড লিভ মাই হেনড
চারু মেহেদীর কথা শুনে সাথে সাথে একটা জোড়ে থাপ্পড় মেরে বসলো…….
চারুর হাতের থাপ্পড় খেয়ে মেহেদী খুব রাগি দৃশটিতে তাকিয়ে থাকে চারুর দিক এ….
চারু সেই দিক তোয়াক্কা না করে
মেহেদী মুখে থু থু ফেলে দিয়ে–
চারু ঃ তোরা জানিস আমাদের সমাজের এক প্রকার গারবেজ…
তোদের কারনেই আমাদের সমাজটা দূষিত হয়ে আছে..
তোদের কারনেই মেয়েরা এখনো স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে পারেনা….রাস্তায় বের হতে গেলেই ভয়ে থাকে তোদের মত অমানুষ এর কারনে…
মন তো চাচ্ছে তোকে ডুবন্ত তেল এর মধ্যে চুবিয়ে চুবিয়ে মারি।। কিন্তু তোর মতো আবর্জনাকে মেরে নিজের হাতকে নোংরা করতে চাইনা…..
প্লিজ ইন্সপেক্টর নিয়ে যান এই শয়তান টাকে আমার চোখ এর সামনে থেকে……
পুলিশ মেহেদী আর ড্রাইভার কে নিয়ে গেলে—
চারু আহানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে…
আহানঃ এখন কান্না করছো কেন এখন তো সব ঠিক হয়ে গেছে…..
চারু ঃ আপনি ওই সময়টাতে আমার পাশে না থাকলে আজ হয়ত আমি বেচে থাকতাম না আহান। আর এই সত্যি টাও কখনো জানা হতো না যে তখন আমার সাথে কিছুই হয়নি……
আহানঃ দাঁড়াও বাসায় কল দিয়ে জানিয়ে দেই বিষয় টা.
আহান দিশাকে কল দিয়ে সমস্ত বিষয় খুলে বললে –
দিশা সাথে সাথে মিসেস সাবিনাকে জানিয়ে দেয় বিষয় টা….
সাবিনাঃ আমি গিয়ে রিয়া আর মায়াকে বলে আসি এই ব্যাপার টা মায়ার রুমে গিয়ে….
মায়াররুমে…….
রিয়াঃ দেখলে মা আহান আমাকে কতটা অপমান করলো……তাও তুমি থাকতে চাইছো এই বাসায়…
মায়াঃ হুম থাকতে চাইছি কারন সেইটা তুইও জানিস.
রিয়াঃ খালামনি থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য…
মায়াঃ হ্যা……ছোট কাল থেকেই বাবা মা আমার থেকে আপুকে বেশি আদর করতো….. কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার সময় যখন আমার থেকে বেশি আপুকে তার সম্পওি দিয়ে যায় তখন আপুর প্রতি ঘৃনার পরিমান টা হাজারো গুন বেড়ে যায় আমার মনের মধ্যে……
তখন ই সিদ্ধান্ত নেই যে আমি যতটা কষ্ট পেয়েছি তার যে দ্বিগুণ কষ্ট আমি আপুকে দিবো আর সেইটা একমাত্র তুই করতে পারবি আহানকে বিয়ে করে…..
এই বাসার বউ হয়ে…..নিবি না মা আমার প্রতিশোধ..
রিয়াঃ হ্যা মা.. নিবো।। এই বাসার বউ হলে অই সাবিনা ডায়নিকে এমন উচিত শিক্ষা দিবো…
কিন্তু সেইটা হয়ত আর পসিবেল না মা….কারন আহান অই চাকরানিকে ভালোবাসে…..
মায়াঃ টেনশন নিস না… রিয়া…. আহান একটা ধর্ষিতা মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হলেও অই সাবিনা ডায়নি রাজি হবে না কখনো……
হঠাৎ কেউ জোরে জোরে তালি বাজিয়ে মায়ার রুমে প্রবেশ করে আর সেই ব্যক্তি টা আর কেউ নয় সয়ং মিসেস সাবিনা খান…..
মায়া আর রিয়া বেশ ভয় পেয়ে যায় মিসেস সাবিনাকে দেখে………
মায়াঃ আপু তুমি???
সাবিনাঃ আপু কেন বলছিস এতো ক্ষন তো দুই জন মা মেয়ে আমাকে ডায়নি বলে ডাকছিলি….
মায়াঃ আপু তুমি নিশ্চয়ই ভুল কিছু শুনেছো।।।
মিসেস সাবিনা সাথে সাথে মায়ার গালে একটা থাপ্পড় মেরে বসে….
সাবিনাঃ ভুল কিছু না সঠিক কথাই শুনেছি আমি…
জানিস চারুর সাথে যে তখন কিছুই হয়নি সেইটা বলতে আসছিলাম তোর রুমে কিন্তু রুমের দরজার সামনে এসে তোদের এই জগন্য সত্য টা জানতে পারি…
জানিস বাবা মারা যাওয়ার সময় তোকে কিছুই দিয়ে যায়নি… তোর উপর রাগ করে… কারন তুই দেশের বাইরে গিয়ে বাবাকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলেছিস এর পর বাবার আর কোন খোজ খবর রাখিস নি…. সে বেচে আছে নাকি মারা গেছে…
তাই বাবা রাগ করে তোকে কিছুই দিয়ে যায়নি মারা যাওয়ার সময়….
মায়াঃ কিন্তু আমি যখন দেশে ফিরে আসলাম তখন তো উকিল আংকেল বললো… বাবা মারা যাওয়ার সময় ফোরটি পারসেন্ট সম্পওি আমার নামে লিখে গেছে…
সাবিনাঃ অই টা আমিই বলতে বলেছিলাম তাকে….
জানিস আমি চাইলে তোকে অর্ধেক সম্পওি দিয়ে দিতে পারতাম কিন্তু বাবাকে যে কষ্ট টা দিয়েছিস তাই.
কিন্তু আজ মনে হচ্ছে বাবা যা করে ছিলেন তা ঠিক করেছেন তুই কারই ভালোবাসা পাওয়া যোগ্য না..
কাল সকাল সকাল দুই জন মা মেয়ে বের হয়ে যাবি এই বাসা থেকে….তোদের চেহারা টাও আমি দেখতে চাইনা।
কথাটি বলে মিসেস সাবিনা বের হয়ে পরে মায়ার রুম থেকে……
চারু আর আহান বাসায় এসে পৌছালে—
দিশা শক্ত করে চারুকে জড়িয়ে ধরে……..
দিশাঃ উফফ আমি যে কত খুশি তোমার জন্য আমি বলে বোঝাতে পারবনা চারু….
হঠাৎ মিসেস সাবিনা আসলে আহান মিসেস সাবিনাকে দেখে সাথে সাথে চলে যায় সেই খান থেকে…..
মিসেস সাবিনা আহানের এইভাবে চলে যাওয়া দেখে মন খারাপ করলে–
চারু ঃ কাকিমা আপনি মন খারাপ করবেন না…
আমি আহানকে বুঝিয়ে বলবো….
সাবিনাঃ ওর রাগ করাটা জায়েজ রে মা অই মেহেদী সাথে সাথে আমিও কম দোষী নই….
কথাটি বলার সাথে সাথেই কান্না করতে করতে চলে যায় মিসেস সাবিনা…….
চারুঃ আহানকে আমার বুঝাতে হবে…
চারু আহানের সাথে কথা বলার জন্য ওর রুমে গিয়ে ওকে খুজলে–
রুমে আহানকে না পেলে—
চারুঃ জানি কোথায় আছেন……..
তারপর চারু সোজা চলে যায় ছাদ এ………..
ছাদ এ গিয়ে দেখে আহান ছাদের রেলিং ধরে আকাশের দিক এ তাকিয়ে আছে…….
চারু দৌড় দিয়ে আহানকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে..
আহানঃ চারু…
চারু ঃ হুম আমি…. আহান আজ আমি অনেক বেশি খুশি…. মন তো চাচ্ছে লুঙ্গী ডান্স দেই…..
চলেন আজ আপনাকে সাথে নিয়েই লুঙি ডান্স দেই..
(হেসে)
আহানঃ………….
·#ছায়া_হয়ে_থাকব_পাশে (পর্ব ৩২)
#Humayra_Khan
·
·
·
চারু আহানকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলে —
আহানঃ চারু….
চারু ঃহুম আমি…. আজ আমি অনেক বেশি খুশি আহান.মন তো চাচ্ছে লুঙ্গী ডান্স দেই…..
চলেন আজ আপনাকে নিয়েই লুঙ্গী ডান্স দেই….
আহানঃ লাইক সিরিয়াসলি চারু?????
তোমার এই মুহূর্তে ডান্স করতে ইচ্ছে করছে তা আবার লুঙ্গী ডান্স……….
চারু ঃ হুম আমার তো এখন লুঙি ডান্স ;পাগলু ডান্স এমনকি ডিসকো ডান্স ও করতে ইচ্ছে….
কারন আজ আমি অনেককক খুশি…….
আহানঃ তোমার মতো অদ্ভুত মেয়ে আমি জগতেও দেখিনি চারু…….(হেসে)
চারু আহানের পাশে দাঁড়িয়ে চাদের দিক এ তাকিয়ে থাকে পলকহীন ভাবে….
আহানঃ কি হলো আমার এফএম রেডিও হঠাৎ চুপ হয়ে রইলে কেন????
চারু ঃ আহান..
আহানঃ কি??
চারু ঃ মানুষ এর জীবন বড়ই অদ্ভুত তাইনা???
আল্লাহ চাইলে সেকেন্ডে এর মধ্যে সবকিছু বদলে দিতে পারে… কিছুক্ষণ আগে আমি আত্নহত্যা করতে নিয়েছিলাম..? কিন্তু এখন?
সব কিছু আমার কাছে সপ্নের মতো মনে হচ্ছে…
আহান চারুর কথা শুনে ওর হাতে জোড়ে একটা চিমটি কেটে বসলে–
চারু ঃ আহহ…
আহানঃ এখন তো বিশ্বাস গেলে এইটা সপ্ন না??(হেসে)
চারু ঃ তাই বলে এতো জোরে চিমটি মেরে বসবেন আমাকে??(রেগে)…
আহান চারুর কথা শুনে জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে..
চারু ঃ আহান প্লিজ কাকিমার উপর আর রাগ করে থেকেন না… সে তো জানতো না যে এমন কিছু হয়ে যাবে……
আহান চারুকে কিছু বলতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে পানির কয়েকটা ফোটা আহানের মুখের এসে পরে….
আহান আকাশের দিক এ তাকিয়ে–
আহানঃ উফফ বৃষ্টি পরছে…. তাড়াতাড়ি করে বাসার ভিতর এ চলো….
কথাটি বলে আহান চারু হাত ধরে ছাদ থেকে নামতে নিবে
চারু ঃ আমি মোটেও নামছিনা নিচে…
আহানঃ তুমি কি পাগল হয়ে গেছো চারু???এই রাত বে রাতে বৃষ্টি তে ভিজলে তোমার ঠান্ডা লেগে যাবে…..
চারু ঃ আগে জানলে আমি কখনো ডাক্তার এর সাথে প্রেম করতাম না… আপনি কতো বোরিং।…….
হঠাৎ বৃষ্টি আরো জোড়ে জোড়ে পরতে লাগলো খোলা আকাশ থেকে…..
আর সেই বৃষ্টিতে আহান আর চারু ভিজে একাকার…
বৃষ্টিতে চারুর চুল গুলো কপালের সামনে এসে পরলে আহান চারু কাছে গিয়ে চারুর ভিজা চুল গুলো ওর কানের পিছনে গুজে দিলে আহানের স্পর্শ পেয়ে চারুর শরীর যেন কেপে উঠে………
আহান চারু হাত দুটো নিজের হাত এ রেখে ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে পরে………
আহানঃ চারু উইল ইউ মেরি মি?????? তোমাকে নিজের করে সারাজীবন টা তোমার সাথে পারি দিতে চাই…. তোমার এই হাতটা নিজের হাত এ রেখে ছায়া হয়ে তোমার পাশে থাকতে চাই………
চারু আহানের বলা কথা শুনে আহানকে ফ্লোর থেকে দাঁড় করিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আহান কে…..
চারু ঃ আহান আপনাকে আমার জীবন এ পেয়ে আমার জীবন স্বার্থক….কিন্তু এক শর্তে আমি আপনার সাথে বিয়ে করতে রাজি আছি….
আহান চারুকে নিজের থেকে ছারিয়ে —
আহানঃ ওয়াট…..?? (অবাক হয়ে)
চারু ঃ আপনি যদি সারা জীবন আমার সাথে লুঙ্গী ডান্স দিতে রাজি থাকেন….(হেসে)
আহান চারুর বলা কথা শুনে জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে…..
চারু ঃ কি হলো হাসছেন কেন??
আহানঃ আচ্ছা বাবা… রাজি আছি…
চারু আহানের বলা কথা শুনে মুচকি একটা হাসি দিয়ে আহানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো…….
আহানও নিজের বুকের সাথে নিজের ভালোবাসার মানুষ টাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিলো…..
এই বৃষ্টি ভেজা রাতে দুইজন দুইজনকে এইভাবে জড়িয়ে ধরে বেশ সময় ধরে ভিজতে লাগলো…….
সকালে……….
চারু আর দিশা ডায়নিং টেবিলে খাবার বারতে নিলে–
চারু ঃ ভাবি রিয়া আপু আর মায়া খালাকে যে দেখছিনা??
দিশাঃ হুম আমিও তো দেখেনি এখন পর্যন্ত
কোথায় হাওয়া হয়ে গেল এই দুইজন শাকচুন্নি (হেসে)
হঠাৎ মিসেস সাবিনা চলে আসলে-
চারু আর দিশা মিসেস সাবিনাকে দেখে বেশ ভয় পেয়ে যায়…..
সাবিনাঃ কি বলছিলে দিশা ( রাগি দৃশটিতে)
চারুঃ কাকিমা….
সাবিনাঃ এই মেয়ে তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি আমি.?.. মাঝখান দিয়ে কথা বলো কোন সাহসে???
চারু মিসেস সাবিনার বলা কথা শুনে পুরাই শকড..
চারু ঃ আসলে.. (কান্না জড়িত কন্ঠে)
মিসেস সাবিনা চারুর কান্না দেখে চারুর সামনে দাঁড়িয়ে চারুকে থাপ্পড় মারতে নিলে চারু ভয়ে ওর চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেলে……
হঠাৎ চারু অনুভব করে কেউ ওকে জড়িয়ে ধরে আছে
চারু ওর চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে ব্যক্তি টি আর কেউ নয় মিসেস সাবিনা খান….
সাবিনা খান চারুকে নিজের থেকে ছারিয়ে —
সাবিনাঃ কি ভেবেছিলে??? সাবিনা খান থেকে আবার রিনা খান হয়ে গিয়েছি??
তোমরা দুইজন এতো দিন আমাদের সামনে একটিং করেছিলে তাই ভাবলাম আমিও একটু… এ্যাকটিং করে নেই (হেসে)
চারু মিসেস সাবিনার বলা কথা শুনে শক্ত করে ওনাকে জড়িয়ে ধরলো….
দিশাঃ মুজে কই পেয়ার হি নেহি কারতা( মুখ বাকা করে)
মিসেস সাবিনা দিশার কথা শুনে দিশাকেও নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নিলেন……
চারু ঃ কাকিমা রিয়া আপু মায়া খালা কোথায়????
মিসেস সাবিনা চারুকে কিছু বলতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে বাড়ির কলিং বেল বেজে উঠে……
চারু গিয়ে দরজা খুলে দিলে সামনে তাকিয়ে দেখে
একটা লোক মুচকি হাসি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে…..
চারু ঃ জ্বি???
লোকটি ঃ ম্যাম এই কার্ডটি আহান স্যারকে দিয়ে দিবেন….
চারু লোকটি থেকে কার্ডটি নিয়ে নিলে —
লোকটি চলে যায় সেই খান থেকে…….
সাবিনাঃ কিরে চারু কে এসেছে…
চারু দরজা টা লাগিয়ে দিয়ে….
চারু ঃ একটা লোক এসেছিলো কাকিমা এই কার্ডটি দিয়ে গেল……..
মিসেস সাবিনা চারুর হাত এ কার্ডটি দেখে-
সাবিনাঃ মনে তো হচ্ছে কারো বিয়ের কার্ড…
চারু ঃ জ্বি কাকিমা… হয়ত আহানকে কেউ তার বিয়ের কার্ড পাঠিয়েছে…..
আহানঃ এইটা অন্য কারো না আমার বিয়ের কার্ড…
কথাটি বলতে বলতে সিড়ি থেকে নেমে পরলো আহান..
আহানের বলা কথা শুনে সবাই অবাক…
বিশেষ করে চারু…………..
চারু ঃ মানে????
আহানঃ মানে হলো এক সপ্তাহ পর আমার বিয়ে..
আর তোমরা সবাই ইনভাইটেড………
দিশাঃ ভাইয়া কার সাথে????
আহানঃ কার আবার আমার ভালোবাসা
চারু আহানের বলা কথা শুনে হেসে উঠলে-
আহানঃ রিয়ার সাথে……
আহানের বলা কথা শুনে চারু পা থেকে মাটি সরে যায়.
আর ও ধপাস করে মাটিতে বসে পরে……
চারু রাগের মাথায় কার্ডটি খুলে ছিড়তে নিলে হঠাৎ কার্ড এর উপর চারুর চোখ পরলে-
চারু খেয়াল করে কার্ড এ বড় বড় করে লিখা….
Ahan weds Caru…….
চারু ওর কান্না বন্ধ করে-
চারু ঃ আপনি আমার সাথে মজা করছিলেন( রেগে)
আহানঃ অই আমার কোন দোষ নেই সব দোষ ভাবির..
ভাবিই বলেছে রিয়ার নাম নিতে……
চারু দিশার দিক এ রাগি দৃশটিতে তাকালে–
দিশাঃ আরে দেবর এর হবু বউ এর সাথে একটু তো ফান করাই যায় তাইনা মা????
সাবিনাঃ…………..
·
·
·
চলবে…………………..
·
·
চলবে………………