#মান_অভিমান
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#১৪_পর্ব
,
আজ প্রায় অনেক দিন পর মেহরাব আর্দ্রদের বাসায় এসেছে,কাজের চাপে তো তেমন আসাই হয় নাহ আর আর্দ্র ও বাসায় তেমন থাকে না সকালে বেরিয়ে যায় আর সেই রাত করে আসে কারো সাথে দেখায় হয় না। আজকে শুক্রবার বিধায় মেহরাব আসতে পেরেছে আর মেহরাব এর আসার কথা শুনে মাহি ও আসতেছে। মেহরাব ডয়িং রুমের সোফায় বসে ছিলো আর আর্দ্র ওর রুমে গিয়েছে ফ্রেশ হতে।
এই তোর আসার সময় হলো কতদিন পর আসলি বলতো আমাদের কথা তো ভুলেই গিছিস, আগে তো কত আসতি এখন আসিস না কেনো??
তোমার ছেলে কত কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে যানো বড়মা, মাথায় তো তুলতে পারি না আবার এখানে আসা।
কি যে হয়েছে ছেলেটার আমাদের তো এতোকিছু আছে তার পরেও ওর নাকি নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে এটা কোনো কথা হলো বল তো? ঠিক মতো গোসল নেই খাওয়া নেই দুটোর কি হাল হয়েছে, আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখেছিস একয়দিনে কি করেছিস চেহারার।
মেহু আমার মতো মুখে ফেসপ্যাক লাগিয়ে চোখে দুটো শশা লাগিয়ে আরাম করে বসে থাকো দেখবে একদিনেই চেহারা কেমন চকচক করছে।
না না ছোট মা আমার ফেসপ্যাক লাগানো লাগবে না তুমিই বরং লাগাও কেননা আর কয়দিন পরে তো অনুর বিয়ে দেবে তখন তো তোমাকে সুন্দর দেখানো লাগবে বলো?? মেয়ের থেকে মেয়ের মাকে বেশি সুন্দর না লাগলে কি হয়।
তুমি একদম ঠিক বলেছো মেহু আর আমি তো জানিই আমি কত্তো সুন্দরী আহ মে ইতনি সুন্দর হু মে কিয়া কারু হায়!
ছোট মা আমার নাম মেহু নাহ মেহরাব, দেখেছো বড়মা ছোট মা শুধু মেহু মেহু করে।
আমি আর কি দেখবো বল তোরা তো দু ভাই কোনো বোন নেই বলেই তো ছোট তোকে আদর করে মেহু বলে, আচ্ছা তুই একটু বস আমি তোর জন্য খাবার আনছি ওকে।
আচ্ছা, অনেক ক্ষিদে পেয়েছে গো এমনিতেই আজকে যা দেখেছি তারপর তো ক্ষিধে আরো বেড়ে গেছে শেষের কথাটা আস্তে আস্তে বলল মেহরাব।
কিহ কিছু বললি নাকি?? শুনতে পাইনি।
আব না না বড়মা তুমি যাও তো আমার ক্ষিধে পেয়েছে।
আচ্ছা ঠিক আছে,, আর্দ্রর মা চলে যাওয়ার পর পরই মাহি ডুকলো মেহরাব মাহিকে দেখেই মাহির হাত ধরে টেনে নিজের কোলের উপর বসিয়ে দিলো,, আরে কি করছেন টা কি এখানে তো ছোট মামি আছে আর এখন যদি দাদু বা কেউ এসে পড়ে তাহলে কেলেংকারী হয়ে যাবে৷
এই তুই এতো ভীতু কেনো হুমম দেখছিস না ছোট মা চোখে শশা লাগিয়ে রেখেছে তাই দেখার কোনো চান্সই নেই আর বড়মা কিচেন এ আর দাদু তার রুমে ঘুমায় আর আর্দ্র দেখলে কি ওহ শোন তোকে তো একটা কথা বলতে ভুলেই গিছি।
কি কথা বলেন বলেন।
আজকে না আমি হেব্বি একটা জিনিস দেখে ফেলেছি ভাবা যায় আম শিওর তুই ওখানে থাকলে নির্ঘাত অঙ্গান হয়ে যেতি।
কি দেখেছেন বলুন বলুন যলদি বলুন আমার তো আর তর সইছে নাহ।
আরে আমাদের আর্দ্র ভাই তো প্রেমে একেবারে হাবুডুবু খাচ্ছে, আমি আরো ভেবেছিলাম আমাদের আর্দ্র সারাজিবন চির কুমারই থেকে যাবে কিন্তু আমি আজকে যা দেখলাম এর পর আমার ভাবনা পুরোপুরি পাল্টে গেছে।
তাই নাকি আপনি সত্যি বলছেন আর্দ্র ভাইয়া প্রেমে পরেছে?
আরে শুধু প্রেমে পড়লে তাও হতো কিন্তু ওতো এতোই ফাস্ট যে শুধু প্রেমে থেমে নেই একেবারে কিসিং সীনে চলে গেছে।
কিহ বলেন কি, কাকে কে কখন কিস করল?? অবাক হয়ে বলল মাহি।
আরে শোননা তারপর মেহরাব তখনকার ঘটা সব কিছু মাহিকে বলল, সবটা শুনার পরতো মাহি একেবারে ফিট হয়ে গেছে তাই কোনো রিআ্যাকশন না দিয়ে পুরো স্ট্যাচু হয়ে বসে আছে।
দেখেছিস শুধু শুনেই তোর এই অবস্থা তাহলে ভাব সরাসরি দেখলে কি হতো, আর আমি তো তাও লাইফ দেখেছি, এই শোননা আমারও না এখন কিসি করতে মন চাইছে।
ছি সরুন সামনে থেকে ছোট মামীর সামনে কি সব কথা বলছেন একবার কেউ দেখে ফেললে সর্বনাশ হয়ে যাবে আপনি ছাড়ুন আমায়।
হুট ,কেউ দেখবে নাহ আর ছোট মা তো বসে বসেই ঘুমাচ্ছে, আর বড়মা রান্নায় ব্যাস্ত ওমম এখন সময় রোমান্স করার,, এই বলে মেহরাব মাহির কমর শক্ত করে চেপে ধরে একদম নিজের সাথে লাগিয়ে দিলো, আর মাহিও নিজের দু হাত দিয়ে মেহরাব এর গলা জরিয়ে ধরলো, মেহরাব আর মাহির ঠোঁট অনেকটাই কাছাকাছি চলে এসেছে দুজনের ঠোঁট প্রায় ছুঁই ছুঁই তখনি কেউ শব্দ করে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো, মাহি মেহরাব ছিটকে একে অপরকে থেকে সরে গেলো মাহি অন্য সোফায় বসে পড়ল আর অনুর মা চমকে ঘুম থেকে উঠে বসে পড়ল আর ওনার চোখ থেকে শশা দুটো নিচে পড়ে গেলো ওনি চোর ভেবে জোরে জোরে চোর চোর বলে চিল্লাতে লাগল,, আরে মা চেঁচাও কেনো আমি অনু।
ওহ তুই আগে বলবি তো, কি সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম যে আমি বিশ্ব সুন্দরী আওয়ার্ড পেয়েছি আহ কি সুন্দর স্বপ্ন, পুরুষ্কার টা নেওয়ার আগেই তুই চলে আসলি আর এতো জোরে কেও দরজা খোলে বিয়াদপ মেয়ে।
আর অনু তুই এভাবে ভিজলি কীভাবে বেরোনোর সময় ছাতা নিয়ে বার হসনি??
নিয়েছিলাম তো ভাইয়া কিন্তু আজকে যা দেখলাম তাতে তো পুরাই ফিট হয়ে গেছি আর ছাতা।
কিহ কিছু বললি??
আব না ক কিছু বলেনি, আরে মাহি আপু তুমি কখন আসলে?
আব আ আমি?? যাগ বাবা ও কিছু দেখেনি বেঁচে গেছি।এই তো একটু আগেই
তুই একটু আগে আসলি তা আমায় ডাকলি না কেনো?
ওই আসলে হয়েছে কি ছোট মামী তুমি তো ঘুমাচ্ছিলে তাই আর কি ডাকিনি।
আচ্ছা তোমরা কথা বলো আমি দেখে আসছি আর্দ্র কি করছে ওকে, এই বলে মেহরাব ওখান থেকে উপরে চলে গেলো।
,,,,,,
আর্দ্র শাওয়ার নিয়ে সেই কখন থেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে আসলে নিজেকে দেখছে বললে ভুল হবে আসলে ও ওর ঠোঁট টাকে দেখছে,, মানে কীভাবে হলো এটা আমি ওই ঝগড়ুটে মেয়েটাকে কিস করলাম নাকি ওই মেয়েটা আমায় কিস করলো কোনটা? কিছুই তো বুঝতে পারছি নাহ তবে যাই হোক যা হয়েছে ভালোই হয়েছে আমি তো জানতামই নাহ মেয়েদের ঠোঁট এতো নরম হয় নাকি শুধু ওর ঠোঁটটাই নরম কিছুই তো বুঝতে পারছি নাহ।
সবি বুঝতে পারবি এক কাজ কর তুই বরং আবারও ওই মেয়েটার নাম কি যেনো হুম ইয়ানা,, তুই ওকে গিয়ে আবার একটা কিস কর তাহলে বুঝতে পারবি, ভালো আইডিয়া তাই নাহ??
আব তুই এখানে কখন এলি আর কীসব ভুলভাল কথা বলছিস আমি মোটেও ওকে কিস করতে চাইনি ওকে ওটা একটা এক্সিডেন্ট ওকে এখন কথা না বলে চল কাজ আছে শার্ট পরতে পরতে বলল আর্দ্র।
হুমম তুই আবার ওকে কিস করতে চাস কি নাহ তুই ওর কথা ভাবছিস কি না সেটা তোকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওকে।
মানে??
মানে হলো একবার নিচের দিকে দেখ সালা, টাওয়াল পড়ে আছিস, তার উপর শার্ট পড়ে বলছিস বাইরে যাবি মাথা ঠিক আছে তোর?? আর মনটা কোথায় তোর ইয়ানার কাছে রেখে এসেছেন নাকি হুম হুম।
মেহরাব এর কথা শুনে আর্দ্র নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো সত্যি ও নিচে টাওয়াল পড়ে আছে আসলে তখন ওসব ভাবতে ভাবতে প্যান্ট পরার কথা ভুলেই গিছিলো এই জন্যই তো মেহরাব এর সামনে পেজটিস পাংচার হয়ে গেলো,, আরে আমি তো এমনও বলছিলাম তুই ভুলভাল কথা বলছিলি তাই বললাম বাইরে যাবো আসলে আমি তো প্যান্ট পরতেই যাচ্ছিলাম।
ওওওওও তাই বুঝি,, আর্দ্র কিছু বলবে তখনি নিচে থেকে চেঁচামির আওয়াজ আসলো, কিরে নিচে কি হয়েছে এতো কথা কিসের?
চলতো গিয়ে দেখি কি হয়েছে, আর হ্যাঁ তুই আবার ইয়ানার কথা ভাবতে ভাবতে প্যান্ট ছাড়ায় চলে আসিস নাহ। কথাটা বলে মেহরাব দৌড়ে নিচে চলে গেলো কেননা ও জানে আর এক মিনিট ও এখানে থাকলে আর্দ্র ওকে মেরে আলু ভর্তা বানিয়ে দিবে। আর্দ্র ও মেহরাব কে বকতে বকতে প্যান্ট পড়ে নিচে গেলো দেখতে কি হয়েছে।
ইয়ানা মাহির সাথে কথা বলতে বলতে সিঁড়ির দিকে তাকাতেই দেখল আর্দ্র আসছে আর্দ্র কে দেখে ইয়ানা টুপ করে নিজের মুখে হাত দিয়ে ঠোঁট ঢেকে ফেলল।
চলবে,,,,,,,,,??