বিয়ের ১ম রাতেই তৃপ্তিকে দেওয়ালের সাথে শ’ক্ত ভাবে চে’পে ধরে ওর গলায় ধা’রা’লো ছু’রি ঠে’কি’য়ে খুব সন্নিকটে দাঁড়িয়ে আছে ওর হাসবেন্ড আবরার রহমান তীব্র। পরমূহূর্তে রাগে হি’স’হি’সি’য়ে তৃপ্তিকে উদ্দেশ্য করে বললো…
_____খুব শখ না তোমার জানার আমি নারী জা’তি’কে কেনো এতো ঘৃ”ণা করি! কেন সহ্য করতে পারি না! তোমার এই অত্যাধিক কৌ’তু’হ’ল’ই তোমাকে আজ ম’র’ণে’র মুখে ঠেলে দিলো। আজ থেকে তোমার ম’র’ণে’র কাউন ডাউন শুরু হলো, পৃথিবীর সব নারীর প্রতি থাকা আমার সব রা’গ ঘৃ”ণা আমি তোমার উপর পা’ষ’বি’ক অ’ত্যা’চা’র করে মি’টা’বো প্রতিনিয়ত। একটা সময় আসবে যখন তুমি আমার অ’ত্যা’চা’র আর স’হ্য করতে না পেরে আমার কাছে তোমার মৃ”ত্যু ভি’ক্ষা চাইবে, কিন্তু না তোমাকে নিজের ম’র্জি’তে ম’র’তে দিবো আর না আমি নিজে তোমাকে মা’র”বো।
ব্যস সর্বক্ষণ তোমাকে ন’র’ক য’ন্ত্র’ণা দিয়ে দিয়ে তোমার এই অত্যাধিক কৌতুহলী স্বভাবের প’রি’ণ’তি কি হয় তা দেখাবো। ভিষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে তোমার এই কিউরিসিটি স্বভাব, তাই তোমার মৃ’ত্যু এতো সহজে হবে না। কি ভেবেছিলে কয়েকদিন খুব ভালো ব্যবহার করেছিলাম, তোমার পরিবারের সামনে ভালো সাজার নাটক করেছিলাম জন্য আমি পরিবর্তন হয়ে গেছি! হা হা হা হা, তা জীবনে হবার নয়, আমি শুধু তোমাকে আমার জি’ম্মা’য় আনার জন্য এতো নাটক করেছিলাম।
ওনার বলা প্রতিটি কথা আমার শি’রা’য় শি’রা’য় কেবল ওনার জন্য ঘৃ’ণা’র বিস্তার করাচ্ছিলো। মানুষ এতোটা নি’চ আর মু’খো’শ’ধা’রী কি করে হতে পারে! তৃপ্তির চোখে মুখে ভ’য়ে’র চিহ্ন দেখতে না পেয়ে তীব্র ওর (তৃপ্তি) গলার সাথে ঠেকানো ছু’রি’টা সরিয়ে কয়েক কদম পিছনে গিয়ে দাড়িয়ে পরে। তৃপ্তি তীব্রের উপর নিজের দৃষ্টি স্থির করে ভা’ঙা কন্ঠে বলে…
_____নিজেকে খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে তাই না মি.আবরার রহমান তীব্র?
তৃপ্তির এমন কথায় তীব্র চ’ট করে তাকায় ওর দিকে, তীব্রের চোখ-মুখের আকৃতি মূহূর্তেই কেমন শীতল হয়ে গিয়েছে। তৃপ্তি ওর ঠোঁট প্রসারিত করে তা’চ্ছ্যি’লে’র হাসি ফুটিয়ে তুলে আবারও বলে…
_____দীর্ঘ দু’মাস ধরে আমার সাথে যে নি’খু’ত অভিনয় করে এলেন, আমার ইমোশন, আমার অনুভূতি গুলোর সাথে যে বি’শ্বা’স’ঘা’ত’ক’তা করলেন তার জন্য তো আজ আপনি অনেক বেশিই ক্লা’ন্ত হয়ে পড়েছেন তাই না! আমি জানি না আপনি নারী জাতিকে ঠিক তাদের কোন দো’ষে’র কারণে ঘৃ”ণা করেন তবে এতোটুকু বলতে পারি আজ এই মুহূর্ত থেকে সকল পুরুষ জাতির উপর আমার ঘৃ’ণা’র সৃষ্টি হলো, আর সেই ঘৃ’ণা’র রাস্তা সু’গ’ম করে দেওয়ার কাজটি খুব যত্ন নিয়ে আপনিই স’মা’প্ত করলেন।
এতো সময় ধরে তীব্র নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো তৃপ্তির মুখশ্রী পানে। তৃপ্তিকে চু’প হয়ে যেতে দেখে তীব্র ওর চোখজোড়া বন্ধ করে বারকয়েক জোড়ে জোড়ে নিশ্বাঃস নিয়ে এক হাত ওর ঘা’ড়ে’র একপাশে রেখে ঘা’ড় এপাশ ওপাশ করে না’ড়ি’য়ে নেয়। কিছুসময় পি’ন’প’ত’ন নিরবতা বিরাজ করে চার দেওয়ালের ভিতর থাকা দু’জন মানুষের মাঝে। পরমুহূর্তে তীব্র কোনো কথা না বলে দ্রুততার সাথে রুমের দরজা খুলে বাহিরে চলে যায়।
তীব্রের যাওয়ার পানে তৃপ্তি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে কিছুসময়, তারপর ধীরে ধীরে দেওয়াল ঘে’ষে বসে পরে মেঝেতে। এতোসময় ধরে চে’পে রাখা কান্না গুলো এখন যেনো দলা পে’কে পে’কে উ’প’চে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। তৃপ্তি ওর দা’ত দিয়ে নিচের ঠোঁট আলতো ভাবে কা’ম’ড়ে
মুখ হাত দিয়ে চে’পে ধরে কান্না নিয়ন্ত্রণ করার বৃ’থা চেষ্টা করতে থাকে। চোখের সামনে ভেসে উঠে তীব্রের সাথে ওর প্রথম দেখা হওয়ার মূহূর্ত গুলোর দৃশ্যপট….
~~~~~~~
ফ্লাশব্যক…..
~~~~~~~
আমি তাইয়্যবা ইসলাম তৃপ্তি, অনার্স ১ম বর্ষে পড়ি। আমার পরিবারে আমি, আমার বাবা, মা আর ছোট্ট একজন ভাই আছে। আমার বাবা A.R.T গ্রুপ অফ লিমিটেড কোম্পানিতে একটি সাধারণ প’দে চাকরি করেন। মধ্যবিত্ত হলেও ৪সদস্য নিয়ে আমাদের বেশ সুখেই প্রতিটিদিন কে’টে যায়। আজ আমার কলেজে অনার্স ১ম বর্ষের চূ’ড়া’ন্ত পরীক্ষার ১ম দিন।
বাসা থেকে বের হতেই কিছুটা দে’ড়ি করে ফেলেছিলাম, অনেক ক’ষ্টে একটা রিকশার সন্ধান পাই। রিকশায় উঠে হাতে থাকা ঘড়ির দিকে লক্ষ্য করতেই দেখি ১০ টা বাজতে আর ৪৫ মিনিট বাকি, রিকশাওয়ালা মামাকে একটু তা’ড়া দেই যাওয়ার জন্য। বেশকিছুসময় পেরিয়ে যায়, কলেজে পৌছাতে আর কিছুটা পথ বাকি হঠাৎ সামনের দিকে চোখ পড়তেই দেখি রাস্তায় লম্বা লাইনের জ্য’মে’র সৃষ্টি হয়েছে।
আমার চোখে-মুখে চ’র’ম বি’র’ক্তি’র ছা’প ফুটে উঠে, হাতে আর ৩০ মিনিট সময় বাকি আছে, পরীক্ষার হলে অন্তত ১০ মিনিট পূর্বে পৌঁছাতে হবে, নয়তো আর পরীক্ষা দেওয়া হবে না। মিনিট পাঁচেক ওভাবেই বসে রইলাম কিন্তু না জ্য’ম খো’লা’র কোনো নাম-গ’ন্ধ পেলাম না।
তাই মনঃস্থির করলাম বসে বসে সময় ন’ষ্ট করার থেকে বাকি পথটুকু হেঁটেই চলে যাই তবুও যদি সঠিক সময়ে হলে পৌঁছাতে পারি। যেমন ভাবনা তেমনি কাজ, দ্রুত রিকশা থেকে নেমে রিকশাওয়ালা মামার ভা’ড়া মিটিয়ে দিয়ে ফুটপাতের পথ ধরে সামনের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করলাম।
কিছুটা পথ অগ্রসর হওয়ার পর রাস্তার মাঝে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই দেখলাম একদল কালো পোশাকধারী লোক মিলে একজন মধ্যবয়স্ক লোককে নি’র্দ’য়ে’র মতো মা’র’ছে আর ওদের থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার মাঝ বরাবর একটা বিশালাকার কালো মাইক্রো দাড় করে রাখা হয়েছে সেখান থেকেই মূলত জ্য’মে’র সৃষ্টি হয়েছে।
সেইমূহূর্তে আমার দৃষ্টি পরে গাড়িটির সামনে রাখা একটা চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকা ফর্সা, সু’ঠা’ম দে’হে’র অধিকারী একজন লোকের দিকে। লোকটি যে আয়েশ নিয়ে বসে মা’রে’র অংশবিশেষ দেখছে তাতে এতোটুকু বুঝতে সক্ষম হলাম, যে কালো পোশাকধারী লোকগুলো ঐ মধ্যবয়স্ক লোকটিকে মা’র’ছে ওদের লি’ডা’র এই চেয়ারে বসারত লোকটিই।
আপাতত নিজের পরীক্ষার কথা ভু’লে ফু’ট’পা’ত থেকে নেমে লোকটির দিকে অগ্রসর হতে হতে চে’চি’য়ে বলে উঠলাম….
_____এই যে মি. ভি’লে’ন! ফা’ই’টিং করার এতো শখ তো ফাঁকা জায়গায় গিয়ে করুন, না করে নি তো কেও। এভাবে রাস্তা বন্ধ করে সকলের অ”সু’বি’ধা সৃষ্টি করার তো কোনো মানে হয় না।
আমার এতোটুকু কথায় মূহূর্তেই যেনো পুরো পরিবেশের রূপ পা’ল্টে গেলো। কালো পোশাকধারী লোকগুলো ঐ মধ্যবয়স্ক লোকটিকে মারার কার্য ব’ন্ধ করে দিয়ে আমার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। উপস্থিত সাধারণ জনতারা আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো তারা ভূ’ত দেখছে, এদের অ’দ্ভু’ত রিয়াকশনে আমার মাঝে কোনো পরিবর্তন হলো না।
আমি দ্রুত পায়ে ঐ চেয়ারে বসারত লোকটির সন্নিকটে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। তারপর আ’ঙু’ল উঠিয়ে বললাম….
_____আপনার এই উ’দ্ভ’ট কার্যকলাপের জন্য কতো মানুষের কতো ধরনের স’ম’স্যা’র সম্মুখীন হতে হচ্ছে জানেন আপনি?
কতো ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে যাবে বলে নিজের বাবা-মায়ের সাথে এখানে অপেক্ষা করছে, কতো চাকরিজীবীরা নিজের কাজের জায়গায় যাবে বলে অপেক্ষা করছে আর আপনি কি না নিজের পা’ও’য়া’র দেখাতে এভাবে রাস্তা ব’ন্ধ করে একজন নিরাপরাধ মধ্য বয়স্ক লোকের উপর নি’র্যা’ত’ন চালাচ্ছেন? আপনার মতো উচ্চবিত্ত মানুষের কাছে সময়ের মূল্য নাই থাকতে পারে কিন্তু আমাদের মতো ম’ধ্য’বি’ত্ত পরিবারের মানুষের কাছে একেকটা সেকেন্ডের মূল্য ও অনেক অনেক বেশি।
কথাগুলো বলা শে’ষ করে তৃপ্তি জো’রে জো’রে বার কয়েক নিশ্বাঃস নেয়। কালো পোশাকধারী লোকগুলোর মাঝে একজন তৃপ্তিকে থা’মা’তে ওর দিকে এগিয়ে আসতে নিলে তৃপ্তি তা বুঝতে পেরে ওর সামনে চেয়ারে বসারত লোকটির পাশে থাকা গাড়িটির উপর দৃষ্টি পা’ত করে, গাড়িটির উপর রাখা একটা ব’ন্দু’ক দেখে সঙ্গে সঙ্গে তা হাতে উঠিয়ে নিয়ে চেয়ারে বসারত সেই লোকটির মাথায় ঠে’কি’য়ে চে’চি’য়ে বলে উঠে…..
_____খ’ব’র’দা’র আমার কাছে কেও আসবেন না নয়তো আমি আপনাদের বসের মাথা গু’লি করে উ’ড়ি’য়ে দিবো।
তৃপ্তির এহেনু কথায় কালো পোশাকধারী লোকটি সেখানেই থে’মে যায়, চেয়ারে বসারত লোকটির ফর্সা মুখশ্রী ইতিমধ্যে লাল বর্ণ ধারণ করেছে, এতোসময় ধরে তৃপ্তির বলা প্রতিটি কথা ও প্রতিটি কাজ চুপচাপ দা’তে’র সাথে দা’ত চে’পে দেখে গিয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে এসে তৃপ্তি যখন ওর মাথায় গু’লি ঠে’কা’লো আর চে’চি’য়ে ওকে মা’রা’র হু’ম’কি দিলো তখন আর চুপচাপ বসে থাকতে পারলো না। বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তৃপ্তিকে উদ্দেশ্য করে উচ্চসরে রা’গা’ন্বি’ত কন্ঠে বলে উঠলো…
_____মা’ফি’য়া কিং আবরার রহমান তীব্রের মাথায় তারই গা’ন ঠেকিয়ে এমন উঁচু গলায় কথা বলার সাহস তোমার মতো মি’ডে’ল’ক্লা’স ফ্যমিলির মেয়ের হয় কি করে! জানো কি করতে পারি এই মূহূর্তে আমি তোমার!
তীব্রের ধ’ম’কে’র সু’রে বলা কথা কর্ণপাত হতেই হু’স ফিরে তৃপ্তির। তৎক্ষণাত তীব্রের মাথায় ঠে’কি’য়ে রাখা ব’ন্দু’ক’টি নিজের হাত থেকে ফেলে দিয়ে দুহাতে নিজের চে’পে ধরে ভ”য়ে দু’কদম পিছিয়ে যায় তৃপ্তি। তীব্র দ্রুত পায়ে তৃপ্তির সন্নিকটে এসে ওর (তৃপ্তির) দ’বাহু খুব শ’ক্ত করে ধরে হি’স’হি’সি’য়ে বলে…..
_____আজ থেকে তোমার জীবন ন’র’ক য’ন্ত্র’ণা’য় ছে’য়ে যাবে, আর খুব যত্ন নিয়ে সেই ন’র’ক য’ন্ত্র’ণা দেওয়ার দায়িত্ব আমি নিলাম মিস.মি’ডে’ল’ক্লা’স।
#তোমাতেই_খুজি_আমার_পূর্ণতা🤗
#সূচনা_পর্ব
#Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)
[