” তোমাকে একটা আছাড় দিয়ে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করতেছে ”
আমি রিয়ান ভাইয়ের কথা শুনে চমকে পিছনে তাকালাম । তাকিয়ে দেখি উনি অগ্নি দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । ইশশশ এখন কি হবে ? উনি তো অফিসে চলে গেছিলেন তাহলে এখানে আসলো কিভাবে ? উনি আমায় একটা রাম ধমক দিয়ে বললেন,
” তুমি জানো না কেউ আমার রুমে আসার সাহস পায় না । তুমি কেন আসলে আমার রুমে ?
কেন রে তোর রুমে কি এমন সোনা, রূপা , হীরা আছে যে কেউ তোর রুমে এসে চুরি করে নিয়ে চলে যাবে । যওসব ঢং ! কথাটা মনে মনে বললেও মুখে বলার সাহস আমার হলো না । তাই আমি চুপ করেই আছি। আমাকে চুপ থাকতে দেখে রিয়ান ভাইয়া আবার ধমক বলল,
” এখনই বের হও আমার রুম থেকে ।
আমি উনার ধমকে কেঁপে উঠলাম । তাও মনের মধ্যে এক ঝাঁক সাহস নিয়ে উনাকে বললাম,
” আমার মতো একটা নিষ্পাপ বাচ্চাকে এতো জোরে ধমক দেওয়া লাগে ? দেইখেন আপনি জীবনে ও বউ পাবেন না !
আমি মুখে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি । এটা কি বলে ফেললাম আমি। এখন দেখা যাবে আমাকে সত্যি সত্যি আছাড় দিয়ে মেরে ফেলবে । আল্লাহ গো আমাকে এই দানবটার কাছ থেকে রক্ষা করো। আমি এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলেই আমার উপর দিয়ে সুনামি বয়ে যাবে। তাই কিছু না ভেবেই দিলাম দৌড় । পিছন থেকে রিয়ান ভাইয়া চিৎকার করে বলে উঠলো ,
” বর্ষা দাঁড়াও বলছি !
কে শুনে কার কথা আমি তো আর এক মূহুর্ত উনার কাছে থাকবো না । আমি এক দৌড়ে তিন্নির রুমে চলে গেলাম। আমি তিন্নির রুমে গিয়ে হাঁপাতে লাগলাম । আমাকে এভাবে হাঁপাতে দেখে তিন্নি এক গ্লাস পানি দিয়ে বলল,
” এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন ? কি হয়েছে ?
আমি পানিটা খেয়ে বললাম,
” তোর ভাইয়ের কাছ থেকে প্রান নিয়ে ফিরে এসেছি।
” তুই কি করেছিস ভাইয়াকে ?
” তর কেন মনে হলো আমি কিছু করেছি ? তর ভাই কি কিছু করতে পারে না ?
” তুই কিছু ঝামেলা পাকিয়েছিস না হলে ভাইয়া চিৎকার করে তোকে ডাকলো কেন ?
” আরে আমি কিছুই করেনি শুধু তোর ভাইয়ার রুমে গিয়েছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে কোথা থেকে জানি তোর ভাইয়া চলে এলো ।
” তোকে আমি কতো বার বারন করেছি ভাইয়ার রুমে যেতে তাও তুই গিয়েছিস !
” তর ভাইয়া কাউকে যেতে দেয় না তাই তো আমি কৌতুহল বশত গেলাম উনার রুমে কি আছে দেখার জন্য । তর ভাইয়ার রুমটা কিন্তু অনেক গোছানো । আমার রুমটা ও এতো সুন্দর করে গোছাতে পারি না । উনি ছেলে হয়ে কিভাবে এতো সুন্দর করে রুমে গুছিয়ে রাখে ?
” ভাইয়া সবদিক দিয়েই পারফেক্ট তাই এতো সুন্দর করে রুম গুছাতে পারে !
” তর ভাইয়াকে একদিন বলবো আমার রুমটা যেন সুন্দর করে গুছিয়ে দেয় !
” এটা কোনো দিন ও সম্ভব না । ভাইয়া দিবে তর রুম গুছিয়ে ইম্পসিবল !
” তুই তো বলেছিলি আমি তর ভাইয়ার রুমে যেতে পারবো আমি গিয়ে দেখিয়েছি । এইবার উনাকে দিয়ে আমার রুম ও গুছিয়ে দেখাবো !
” অসম্ভব !
” তুই শুধু দেখিস আমি কি করি ! কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যা হয়ে যাবে আমি এখন বাসায় যাই !
” আজকে থেকে যা !
” আম্মু বকবে আজ যাই !
” আচ্ছা চল আমি এগিয়ে দেই ।
” হুম চল !
তিন্নি আমার একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড । রিয়ান ভাইয়া তিন্নির বড় ভাই এবং আমার ভাইয়ার বেস্ট ফ্রেন্ড । আজকে কলেজ থেকে তিন্নির সাথে ওদের বাসায় এসেছিলাম । আমি আন্টির হাতের রান্না খেতে অনেক ভালোবাসি তাই আন্টি আমাকে আসতে বলেছিলেন।
আন্টি আমাকে তিন্নির মতোই ভালোবাসে । আমার কোনো কথাই আন্টি ফেলতে পারে না । আমি আমাদের বাসায় আসার পর নাচতে নাচতে সিঁড়ি বেয়ে আমার রুমে উঠতে লাগলাম । তখন ভাইয়া আমার সামনে এসে বলল,
” কিরে এভাবে ব্যাঙের মতো লাফালাফি করছিস কেন?
” আমি মোটেও ব্যাঙের মতো লাফালাফি করছি না তুমি কেন আমার সাথে কাকের মতো কা কা করছো ?
” বেয়াদব মাইয়া বড় ভাইয়ের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানিস না ?
” ছোট বোনের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটা তুমি জানো না ?
” কে ছোট বোন ? তোকে তো আমরা রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনেছিলাম !
” দেখো ভাইয়া আমার সাথে ঝগড়া করতে আসলে একদম ভালো হবে না !
” আমি কি ঝগড়া করছি নাকি সত্যি কথাই বলছি!
” আম্মু !
আমি ডাক দেওয়ার সাথে সাথে আম্মু রান্নাঘর থেকে ছুটে এলো তারপর বলল,
” আবার দুজনে ঝগড়া করছিস ! শুভ্র তুই কোথায় যাচ্ছিস যা তো !
” হুম যাচ্ছি যাচ্ছি !
ভাইয়া কথাটা বলেই আমার চুল গুলো টান দিয়ে চলে গেল। আর আমি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে রুমে গেলাম । রাতে রুমে শুয়ে শুয়ে ফেসবুকিং করছি তখন হঠাৎ করে রিয়ান ভাইয়ার আইডিটা সামনে এলো । সাথে সাথে মাথায় দুষ্টা বুদ্ধি খেলতে লাগলো । আমার একটা ফেইক আইডি দিয়ে রিয়ান ভাইয়াকে মেসেজ দিলাম,
” কি করছো জান !
কিছুক্ষণ পর রিপ্লাই আসলো ……
#চলবে
#তোমাতেই_পূর্নতা
#পর্বঃ১
#লেখিকা_নিদ্রানী_নিদ্রা
[ পাঠকগণ নতুন গল্প নিয়ে আসলাম । কেমন লাগলো জানাবেন সবাই । ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ]