Love With Dragon part -13

#Love_With_Dragon
#Episode_13
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]

রাহুল রিদিয়াকে নিয়ে রিদিয়ার বাড়ি আসলো।

— তোমার আম্মু আর বোনের কাছে আমায় নিয়ে চলো।(রাহুল)

— চলুন….(রিদিয়া)

রিদিয়া গেস্ট রুমে নিয়ে গেল রাহুলকে।গেস্ট রুমে আগে থেকেই নীল-অনিমা,আকাশ-মেঘলা,আদর-স্পর্শিয়া বসে ছিল রিদিয়ার মা-বোনের পাশে।
রিদিয়াকে দেখে স্পর্শিয়া,মেঘলা ও অনিমা জড়িয়ে ধরে।

— দোস্ত তুই এসে গেছিস।কত চিন্তায় ছিলাম আমরা সবাই। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ তোকে সুস্থভাবে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। (মেঘলা)

— তোমাদের যত কথা আছে সব পরে বলবে এখন আমাকে…….. (রাহুল)
কথার মাঝে মিসেস মেহের কে রাহুল দেখে থমকে গেল।

— ফুপিমণি…… (রাহুল)

— কে আপনার ফুপি….(রিদিয়া)

— এই যে যিনি অজ্ঞান হয়ে আছেন।তুমি কি তাহলে ফুপিমণির মেয়ে….(রাহুল)

— আপনি কি বলছেন কিছুই বুঝতে পারছি না।(রিদিয়া)

— পরে বলবো বুঝিয়ে আগে ওদের জ্ঞান ফিরাতে হবে।(রাহুল)

রাহুল মিসেস মেহের আর মিহির মাথায় ম্যাজিকেল হোয়াইট রোজ স্পর্শ করালো।আস্তে আস্তে দুজন চোখ খুললো। মিসেস মেহের চোখ খুলতেই চমকে গেলেন।
অবাক হয়ে রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছেন।

— রা…রাহুল তুই এখানে কি করছিস।(মিসেস মেহের)

সবাই অবাক হয়ে দুজনকে দেখছে।সবার মাথায় একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে ওরা কি দুজন দুজনকে আগে থেকেই চেনে।
মিসেস মেহের কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলেন।রাহুল টলমল চোখে মিসেস মেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে।

— ফুপিমণি বাবা – ভাইয়া আমি তোমায় অনেক খুঁজেছি কিন্তু পায়নি।তুমি কেন আমাদের ছেড়ে চলে আসলে। বাবা নিজের কাজের জন্য অনুতপ্ত ছিল।প্লিজ ফিরে চল রাজ্যে।(রাহুল)

— আম্মু কি বলছে এইসব ছোট রাজা।তোমাকে আজ সব বলতেই সব।প্লিজ আম্মু বলো।(রিদিয়া)

মিসেস মেহের কান্না করে দিলেন।

— আমি মেহের নই রিদিয়া।আমি ড্রাগন রাজ্যের রাজকুমারী লিনিয়া।তোর বাবা একজন সাধারণ মানুষ। তোর বাবা আর আমি দুজন দুজনকে ভালোবেসে বিয়ে করে ফেলি।একজন সাধারণ মানুষকে বিয়ে করাতে আমার ভাই আমাদের বিয়েটা মেনে নেয়নি। আমাকে আর তোর বাবাকে শাস্তি দিবে বলে ঠিক করে।পরে আমি তোর বাবাকে নিয়ে পালিয়ে চলে আসি এখানে। সবার থেকে দূরে যেন কেউ আমাদের আর না খুঁজে পায়।(মিসেস মেহের)

সবাই মিসেস মেহেরের দিকে তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে।

— তার মানে আন্টি আপনি ড্রাগন কিং এর বোন। (অনিমা)

— হ্যাঁ অনিমা….।আমি তোমাদের ব্যাপারে সবকিছুই জানি।স্পর্শিয়া আর আমার মেয়ে রিদিয়া ছাড়া সবাই মনস্টার তোমরা। (মিসেস মেহের)

সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মিসেস মেহেরের কথা শুনে।

— আপনি সব জানতেন আন্টি😳….(অনিমা)

— হ্যাঁ আমি সব জানতাম। তোমরা আমার মেয়ের কোনো ক্ষতি চাওনি কোনোদিন।বরং ওকে সবসময় সাহায্য করে গেছ ওর পাশে থেকেছ।তাই আমি তোমাদের কোনোদিন এইসব নিয়ে কিছু বলিনি।(মিসেস মেহের)

— আন্টি মিহি আপু কি সাধারণ মানুষ…..(অনিমা)

— না মিহি আমার মতো মনস্টার আর রিদিয়া তার বাবার মতো হয়েছে।(মিসেস মেহের)

রিদিয়া চুপচাপ শুনে যাচ্ছে সব কথা। রিদিয়ার মন খারাপ হয়ে গেল। তার কাছে থেকে তার মা এত বড় সত্যি লুকিয়েছে। রিদিয়া গেস্ট রুম থেকে বের হয়ে ছাঁদে চলে গেল।ছাঁদে গিয়ে দরজা বন্ধ দিল।

— রিদিয়ার থেকে আমি সবসময় চেষ্টা করতাম এইসব কথা লুকিয়ে রাখতে।কিন্তু সেটা আর হলো না। সত্যিটা ঠিকই ওর সামনে প্রকাশ পেল।(মিসেস মেহের)

— আন্টি ও আমাদের সবার ব্যাপারে জানে।(মেঘলা)

— তোমাদের ব্যাপারে সব জানে ওর ভয় লাগেনি… (মিসেস মেহের)

— না আন্টি বরং ও রাগ করেছে জানার পর অনেক কষ্টে বুঝিয়েছি।আন্টি রিদিয়া এইসবে ভয় পায় না।বরং ও দুষ্টামি করে… (মেঘলা)

— রিদিয়া প্রচুর দুষ্ট এই মেয়েকে নিয়ে আর পারি না।রাহুল রোহিতের কি অবস্থা। (মিসেস মেহের)

রাহুল মিসেস মেহেরকে রোহিতের অসুস্থতার বিষয়ে সবকিছু জানালো।
মিসেস মেহের থমকে গেলেন সব শুনে।

— এত কিছু হয়ে গেল আর আমি কিছুই জানি না।(মিসেস মেহের)

— আন্টি রিদিয়া আমাদের ও কিছু বলেনি।(আকাশ)

— ফুপিমণি রিদিয়ার হাতে যে আংটিটা….(রাহুল)

— এই আংটিটা আমি আসার সময় সাথে করে নিয়ে এসেছি। কারন আমার স্বামী একজন সাধারণ মানুষ। ওনি নিজেকে কিভাবে রক্ষা করবেন নেকড়েদের কাছ থেকে।যদি কোনো নেকড়ে আক্রমণ করে।তাই আমি ওনাকে দিয়েছিলাম আংটিটা।আকষ্মিক ভাবে মৃত্যু হয় ওনার।তারপর রিদিয়ার হাতে আংটিটি দেই আমি যেন সে নেকড়েদের থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।(মিসেস মেহের)

— এখন আমি যাচ্ছি ফুপিমণি। মাস্টার যদি জানতে পারে অনেক সমস্যা হবে।(রাহুল)

রাহুল চলে গেল মিসেস মেহেরকে বিদায় জানিয়ে। যাওয়ার আগে রিদিয়াকে আড়ালে একবার দেখে গেছে।

(🕍🐺 নেকড়ে রাজ্য 🐺🕍)

— ড্রাগন রাজ্যের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা হোক কিং হিউগো। (মন্ত্রী)

— ঠিক বলেছ মন্ত্রী। এখন ড্রাগন কিং অসুস্থ এই সুযোগ যুদ্ধ ঘোষণা করা। তার আগে ওই সাধারণ মেয়েটাকে খুঁজে নিয়ে আসো। (হিউগো)

— কিং হিউগো আমার মনে হয় ভাম্পায়ার রাজা পিটাস এর সাথে এইসব নিয়ে কথা বললে ভালো হয়। (মন্ত্রী)

— ওর সাথে কথা হয়ে গেছে আমার। দুজন একসাথেই যাব যুদ্ধে।ড্রাগন রাজ্য জয় করে দুজন একসাথে রাজ্য পরিচালনা করবো।ভাম্পায়ার রাজার ছেলে রবিনকে নিয়ে যেও মেয়েটির খুঁজ করতে।(হিউগো)

— যথা আজ্ঞা মহারাজা…..(মন্ত্রী)

(🕍🐉 ভাম্পায়ার রাজ্য 🐉🕍)

— কিং পিটাস নেকড়ে কিং হিউগো আমায় পাঠিয়েছেন। আপনার ছেলে রবিনকে আমার সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য। (মন্ত্রী)

— মেয়েটি কোথায় থাকে আমার ছেলে ভালো করেই জানে।আশা করি খালি হাতে ফিরবে না।মেয়েটাকে নিয়ে আসতে না পারলে কঠিন শাস্তি পাবে।আমার ছেলেকেও আমি ছাড়ব না।পিটাস)

— আমরা মেয়েটিকে না নিয়ে ফিরব না কিং পিটাস।(মন্ত্রী)
________________________

— রিদিয়া মামনি দরজাটা খুল।তোর ভালোর জন্য কিছু বলিনি আমি।(মিসেস মেহের)

এত ডাকাডাকি করার পরও মেয়েটা দরজা খুলছে না।

— আন্টি ও যতটা না দুষ্ট তার চেয়ে ও অনেক রাগী(নীল)

— আমি দেখছি…. (আকাশ)

আকাশ ম্যাজিকের সাহায্যে দরজা খুলে পেললো।কিন্তু কেউ নেই ছাঁদে।

— আম্মু বোন তো নেই ছাঁদে। তাহলে ভিতর থেকে বন্ধ ছিল কিভাবে।বোনের কিছু হয়ে যায়নি তো আবার।(মিহি)

— আন্টি চিন্তা করবেন না। হয়ত কোথাও লুকিয়ে আছে আমাদের ভয় দেখাচ্ছে।(স্পর্শিয়া)

— কিন্তু এইটা কেমন ধরনের দুষ্টামি আমার মন অন্য কিছুর ইঙ্গিত করছে। আমার মেয়ের সাথে খারাপ কিছু হতে চলেছে।(মিসেস মেহের)
_________________________

— ছাড় আমাকে গুন্ডার বাচ্চা। না না কি বলে ফেললাম। ভাম্পায়ারের বাচ্চা ছাড় আমায়।(রিদিয়া)

— জানপাখি তোমার এতো তেজ কেন।আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার রাজ্যে তোমায় নিয়ে যাব।(রবিন)

— আমার কিং আমায় ঠিক বাঁচিয়ে নিবে দেখিস।ছাড় আমায় শয়তান।(রিদিয়া)

— তুমি নিজে বাঁচলে তো… (রবিন)

— কি বলতে চাইছিস তুই… (রিদিয়া)

— তুৃমি হলে আমাদের ড্রাগন কিং এর প্রাণভোমরা। তোমাকে দিয়ে কিংকে হত্যা করবো।তারপর তোমাকে মেরে ফেলবো।আরেকটা অপশন আছে তুমি যদি রাজি থাকো তাহলে……(রবিন)

রিদিয়া চটপট করছে ছাড় পাওয়ার জন্য। রবিন রিদিয়ার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে।রবিনের স্পর্শে রিদিয়ার ঘৃণা লাগছে। প্রচন্ড খারাপ লাগছে রিদিয়ার।কিছু করতেও পারছে না।

— আংটিটা কিছুক্ষণের জন্য খুলে রেখেছিল।তাহলে মিট্টু কোনো উপায় বলতো আমায়। এখন আমার কি হবে। আমি কি করে নিজেকে বাঁচাবো আর আমার কিং কে কিভাবে রক্ষা করবো।আমি তো একজন সাধারণ মানুষ।আর আমার দ্বারা কিং এর মৃত্যু কিভাবে সম্ভব এইটা………(রিদিয়া)

🐉________________________🐉

— ভাই আমার শ্যামবতী ঠিক আছে তোহ্।(রোহিত)

— হ্যাঁ ভাই সব ঠিক আছে তুই চিন্তা করিস না।মাস্টার বলেছে আর কিছুদিন বিশ্রাম নিতে।(মাস্টার)

— আমি সুস্থ হয়ে গেছি ভাই।আমার শ্যামবতীকে দেখতে চাই। (রোহিত)

তখনই একজন রক্ষী আসলো রোহিতের কক্ষে।

— কিং প্রতিবেশী রাজ্য থেকে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।দু’দিন পরই যুদ্ধ। (রক্ষী)

রোহিত যুদ্ধের কথা শুনে উওেজিত হয়ে গেল।

— কিহ্ কিং হিউগো আর পিটাস কেন জামেলা করতে চাইছে।মানছি ওদের সাথে আমাদের শএুতা। কিন্তু আমি চাই না এইসবে জড়াতে।(রোহিত)

— কিন্তু কিং ওরা মানবে না। ওরা জোর দিয়ে বলেছে যুদ্ধ হবেই।(রক্ষী)

— ভাম্পায়ার – নেকড়ে একসাথে হওয়াতে ওরা শক্তিশালী হয়ে গেছে।আমাদের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে।তুমি যাও সবাইকে প্রস্তুতি নিতে বলো যুদ্ধের জন্য। (রোহিত)

রক্ষী চলে গেল।

— ভাই তুই অসুস্থ। এখন এইসব জামেলায় তোর থাকার দরকার নাই।যা করার আমি করবো।ভাই মাস্টারের ব্যাপারে রিদিয়া আমায় সব বলেছে।রিদিয়ার কথা মতো মাস্টার আমাদের শএু। কিন্তু কোনো প্রমান ছাড়া কিছুই করতে পারছি না।(রাহুল)

— মাস্টারের ওপর নজর রাখ।রিদিয়া দুষ্ট হতে পারে কিন্তু মিথ্যা বলবে না। (রোহিত)

— ঠিক আছে ভাই।(রাহুল)

চলবে………
#লেখনীতে__ফিহা
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]
____________________

[বানানে ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]

[প্রিয় পাঠক-পাঠিকারা গল্প পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করে যাবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here