Love With Dragon part -12

#Love_With_Dragon
#Episode_12
[✖️গল্পটি কাল্পনিক দয়া করে কেউ বাস্তব এর সাথে তুলনা করবেন না✖️]

— রাহুল তোমায় আমি যে দায়িত্ব দিয়েছি তুমি সে দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করনি কেন…(মাস্টার)

— কি হয়েছে মাস্টার আমি তো সব….(রাহুল)

— চুপ করো তুমি ড্রাগন রাজ্যে মানুষ কিভাবে প্রবেশ করলো।নিশ্চয়ই তাকে কেউ এখানে আসতে সাহায্য করছে। (মাস্টার)

— মাস্টার আপনার ভুল হচ্ছে এখানে কোনো মানুষ নেই…(রাহুল)

— আমার চোখ ফাঁকি দেওয়া এতো সহজ নয়। আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি কোনো মানুষ রাজ্যে প্রবেশ করেছে।কতবড় সাহস এত পাহারাদার থাকা সত্বেও কিভাবে কোনো সাধারণ মানুষ রাজ্যে প্রবেশ করে।(মাস্টার)

— মাস্টার…. (রাহুল)

— তোমার কোনো কথা আমি শুনতে চাইছি না।আমার কক্ষে পর্যন্ত সে প্রবেশ করেছে। তার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি।আমার কক্ষের সামনে এত কড়া পাহারাদার থাকা সত্বেও কিভাবে সম্ভব ভিতরে প্রবেশ করা।(মাস্টার)

রাহুল কি করবে বুঝতে পারছে না। রিদিয়াকে লুকিয়ে রেখেছে নিজের কক্ষে। মাস্টার যদি পুরো কক্ষটা দেখে তাহলে যে কি হবে মেয়েটার।

— আমি আলোচনা সভায় যাচ্ছি তুমি তাড়াতাড়ি আসো ।(মাস্টার)

— জ্বি মাস্টার…. (রাহুল)

মাস্টার রাগারাগি করে রাহুলের কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল।
রাহুল রিদিয়াকে খাটের নিচে লুকিয়ে রেখেছে।
রাহুল খাটের নিচে মুখ দিয়ে দেখে রিদিয়া চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে।

— বাহ্ এইটুকু সময়ে মেয়েটা কিভাবে ঘুমিয়ে গেল। মেয়েটা অদ্ভুত প্রকৃতির। মাস্টার যে বুঝতে পেরেছে মানুষ রাজ্যে প্রবেশ করেছে সেদিকে মেডামের কোনো খেয়ালই নেই। কি আরাম করে ঘুমাচ্ছে খাটের নিচে।(রাহুল)

রাহুল রিদিয়াকে খাটের নিচ থেকে বের করে খাটের ওপর শুইয়ে দিলো।রাহুল রিদিয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

— সত্যিই এই উজ্জ্বল শ্যামবর্নের মেয়েটা সাধারণ হলেও মেয়েটার ভিতর কাউকে মায়ার জড়িয়ে পেলার পাওয়ার আছে।যে কেউ তার মায়ায় পরতে বাধ্য। (রাহুল)

রাহুল রিদিয়ার মুখের কাছাকাছি নিজের মুখ আনল।রিদিয়ার কপালে চুম্বন দিতে গিয়ে আবার মুখ সরিয়ে নিল।

— এইসব কি করছিস তুই রাহুল। আমার ভাই তার শ্যামবতীকে আমার কাছে আমানত হিসেবে রেখেছে।আমি কি করে এর সুযোগ নিতে পারি।(রাহুল মনে মনে বলে)

((*ফ্ল্যাশব্যাক……🍁
রিদিয়াকে বাঁচাতে ভাম্পায়ারদের সাথে রোহিতের লড়াই হওয়ার পর রোহিত প্রচুর আঘাত পেয়েছিল।অতিরিক্ত আঘাতে রোহিত জ্ঞান হারিয়েছিল।রাহুল যখন রোহিতকে রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছিল তখন রোহিতের কিছুসময়ের জন্য জ্ঞানে ফিরে এসেছিল।তখন রোহিত বলেছিল….

— ভাই আমি যতদিন অসুস্থ আমার শ্যামবতীকে তোর কাছে আমানত হিসেবে রাখছি।তুই আমার শ্যামবতীকে সবরকম বিপদ থেকে রক্ষা করিস। আমি আমার শ্যামবতীকে ভালোবাসি।আমার ভালোবাসাকে তুই দেখে রাখিস যতদিন আমি সুস্থ না হবো।(রোহিত)

বলেই রোহিত আবার অজ্ঞান হয়ে যায়।ভাইয়ের মুখ থেকে এসব শুনে রাহুল সেদিন অনেক কান্না করেছিল।সে ও যে তার ভাইয়ের শ্যামবতীকে মন দিয়ে ফেলেছে। রাহুল ইচ্ছে করলে রোহিতের থেকে রিদিয়াকে কেড়ে নিতে পারতো কিন্তু রাহুল তা করেনি।সে তার ভাইকে ভীষণ ভালোবাসে। ভাইয়ের জন্য রাহুল নিজের জীবন দিতে ও প্রস্তুত। সেখানে সে কিভাবে প্রতারণা করে।))

রাহুল কক্ষ থেকে বের হয়ে আলোচনা সভায় গেল।সবাই অপেক্ষা করছে মাস্টারের জন্য।

— আজব সবাইকে অপেক্ষা করতে বলে মাস্টারেরই এখন খবর নেই। (রাহুল)
__________________________

— কি করে সম্ভব হলো।আমার সব প্লানিং নষ্ট করে দিলো। কে করলো এই কাজটা। ম্যাজিকেল বুক থেকে আমি উনিশ নাম্বার পৃষ্ঠাটি ছিঁড়ে পেলেছিলাম।
রোহিতের যে বিপদ সেটা শুধু ওই মেয়ের দ্বারা সম্ভব রোহিতকে বিপদ থেকে উদ্ধার করা। কিন্তু কিভাবে রোহিতের জ্ঞান ফিরলো।তাহলে কি অন্য কোনো উপায় আছে।আমার উদ্দেশ্য রোহিতকে শেষ করা।এত কষ্ট করে সব ঠিক করেছিলাম।আজই রোহিতকে শেষ করে দিতাম।কি থেকে কি হয়ে গেল।তবে কেউ তো তাকে বাঁচিয়েছে।তবে কি ওই মেয়েটি আমাদের রাজ্যে আছে।ওই মেয়েই শুধু রোহিতকে বাঁচাতে পারে আর কেউ না।কারো হাতে পরার আগে ওই মেয়েকে আমার খুঁজে বের করতে হবে যে করেই হোক।ওই মেয়েকে আগে শেষ করতে হবে তারপর ড্রাগন কিংকে শেষ করে দিব।(মাস্টার)

নিজ কক্ষে এইসব বলছে আর চিন্তিত হয়ে পায়চারি করছে মাস্টার। তখন একজন রক্ষী আসলো মাস্টারের কক্ষে।

— মাস্টার সবাই আপনার জন্য রাজসভায়। অপেক্ষা করছে। (রক্ষী)

— সবাইকে বলে দেও চলে যেতে। আজকে আমার শরীরটা ভালো নেই। রোহিত সুস্থ হয়ে গেছে রাহুলকে খবরটা দিয়ে এসো।রাহুলকে আমার কক্ষে আসতে বলবে।(মাস্টার)

— আপনি যেমনটি বললেন মাস্টার। (রক্ষী)

রক্ষী চলে গেল রাজসভায়।
___________________

— মাস্টারের শরীর অসুস্থ তাই মাস্টার সবাইকে আজ চলে যেতে বললো। (রক্ষী)

রক্ষীর কথায় সবাই চলে গেল। রক্ষী রাহুলকে বললো মাস্টারের কক্ষে যেতে।রক্ষীর কথামতো রাহুল মাস্টারের কক্ষে গেল।
____________________

— আসবো মাস্টার…. (রাহুল)

— আসো…..(মাস্টার)

— কেন ডেকেছেন মাস্টার… (রাহুল)

— রোহিত কিছুটা সুস্থ হয়েছে ওকে ওর কক্ষে দিয়ে আসো।(মাস্টার)

রোহিতের সুস্থতার কথা শুনে খুশিতে রাহুল মাস্টারকে জড়িয়ে ধরলো।
মাস্টার রেগে গেল রাহুল জড়িয়ে ধরাতে।রেগে বলে ফেললো,,,,,

— এতে খুশি হওয়ার কি আছে রোহিতকে নিয়ে এখান থেকে যাও আর আমায় একা থাকতে দেও।(মাস্টার)

মাস্টারকে হঠাৎ রেগে যেতে দেখে রাহুল আশ্চর্য হলো।কারন মাস্টার এই প্রথম তার সাথে এমন রেগে কথা বলেছে।আগেও রেগে কথা বলেছিল কিন্তু এমনভাবে কোনোদিন বলেনি।

রাহুল কিছু না বলে রোহিতকে নিয়ে রোহিতের কক্ষে চলে গেল।
রোহিত এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি।এখন ঘুমিয়ে আছে। আরো কিছুদিন লাগবে সুস্থ হতে।রোহিতকে রেখে রাহুল নিজের কক্ষে গেল।

— পাগলিটা এখনো ঘুমাচ্ছে….. (রাহুল)

— এই পুচকি আর কতো ঘুমাবি উঠ। আমাদের হোয়াইট রোজ আনতে যেতে হবে।(ম্যাজিকেল আংটি)

মিট্টুর কথায় রিদিয়া নড়েচড়ে উঠলো।

— কি হলো কানের কাছে এমন বকবক করছো কেন একটু শান্তিতে ঘুমাতে দেও তো।(রিদিয়া)

রিদিয়াকে নিজে নিজে কথা বলতে দেখে রাহুল কিছুটা অবাক হলো।

— এই যে মিস আর কতো ঘুমাবেন উঠুন।আমাদের যেতে হবে।(রাহুল)

রিদিয়া উঠে বসলো।রিদিয়া রাহুলের দিকে তাকালো।রিদিয়ার চোখে চোখ পরতেই রাহুলের বুক ধুকপুক করা শুরু করলো। রাহুল চোখ সরিয়ে পেললো।

__________________________

রাহুল আর রিদিয়া চললো ড্রাগন রাজ্যের ম্যাজিকেল ফুলের বাগানের উদ্দেশ্যে…..

রাহুল ড্রাগন রূপে আকাশের দিকে পাখনা উড়িয়ে সামনে দিকে অগ্রসর হচ্ছে আর রিদিয়া রাহুলের পিঠে বসে সবকিছু উপভোগ করছে।রিদিয়া ওপর থেকে নিচে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেল।

— যদি আমি একবার পরে যাই তাহলে আমার শরীরের একটা হাড়গোড় আর থাকবে না।(রিদিয়া)

— তুৃমি নিচে তাকিও না ভয় পাবে।বেশি ভয় লাগলে আমায় শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে রাখ। (রাহুল)

কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ম্যাজিকেল ফুলের বাগানের সামনে হাজির হলো।
রাহুল ওপর থেকে নিচে নামার সময় রিদিয়া অনেক ভয় পেয়ে যায়। ভয় পেয়ে রাহুলকে জড়িয়ে ধরে।
রিদিয়ার স্পর্শে রাহুল যেন থমকে গেলো।অনেক কষ্টে সে নিজেকে সামলে নিল।নিজেকে সামলে রাহুল বলে,,

— ভয় পেয়ো না আমি আছি তো।(রাহুল)

— আ…আসলে সরি ভাইয়া আমি বেশি ভয় পেয়ে এই কাজটা করেছি সরি….(রিদিয়া)

ভাইয়া শব্দটা রাহুলের ভালো লাগেনি।মন খারাপ হয়ে গেল রাহুলের। মন খারাপ করে বললো,,,,

— ইটস’ ওকে মিস’……(রাহুল)

রিদিয়া আর রাহুল ম্যাজিকেল ফুলের বাগানে প্রবেশ করলো।রিদিয়া বাগানে প্রবেশ করতেই আপনাআপনি মুখ হা হয়ে গেল।

— ওয়াও এত সুন্দর ফুলের বাগান আমি কোথাও দেখিনি।(রিদিয়া)

— চল হোয়াইট রোজ নিয়ে আসি।(রাহুল)

দুজন হোয়াইট রোজ গাছের সামনে গেল।রিদিয়া একটি রোজ নিতে যাবে তার আগেই রাহুল বাঁধা দিল।

— তুমি এইভাবে নিতে পারবে না৷ ফুলটি ম্যাজিকের সাহায্যে নিতে হবে। (রাহুল)

রিদিয়া সরে দাঁড়ালো। রাহুল মনে মনে একটি স্পেল পড়লো।সাথে সাথে একটি হোয়াইট রোজ রাহুলের হাতে চলে আসলো।

রিদিয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। রাহুল রিদিয়ার হাতে হোয়াইট রোজটি দিল।রিদিয়া রোজটিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে।

— ওয়াও এত সুন্দর রোজ তাও আবার হোয়াইট আমার ফেভারিট কালার।অসম্ভব সুন্দর রোজটি।(রিদিয়া)

— এবার চল এখান থেকে তোমায় প্রাসাদে নয় সোজা বাড়িতে দিয়ে আসবো।(রাহুল)

— কিন্তু…. (রিদিয়া)

— কোনো কিন্তু নয় এখানে তোমার অনেক বিপদ। আমি চাই না তুমি কোনো বিপদে পরো।(রাহুল)

রিদিয়ার মন খারাপ হয়ে গেল রাহুলের কথায়।রিদিয়া চেয়েছিলে তার কিউট ড্রাগনকে আর একটি বার দেখতে। তা আর পূরন হলো না।রিদিয়া মন খারাপ করে বলে,,,

— আচ্ছা ঠিক আছে চলুন☹️…..(রিদিয়া)

চলবে…….
#লেখনীতে__ফিহা
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]
______________________

[বানানে ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]

[গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি পাঠক-পাঠিকাদের কাছ থেকে। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here