#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(৪৯)
বিষন্ন মনে আঁখি বসে আছে হাসপাতালের এক প্রান্তে,আদৃত বুঝতে পারল তার মনোভাব,পাশে গিয়ে বসল তার।
″খারাপ লাগছে আঁখি আদ্রিশের জন্য?″
″ছোটবেলা থেকেই ও আমার বন্ধু, পাঁচ বছর প্রেমের সম্পর্কে থেকেছি এরপর তিন বছর ওর সাথে সংসার করেছি,মিথ্যের আশ্রয়ে হলেও ভালোবেসেছিলাম ওকে,খারাপ লাগাটা কি অস্বাভাবিক কিছু হবে?″
″আদৃত জবাবে কিছু বলল না,আঁখি তার বুকে ঠাই খোঁজে নিল,আদৃত শক্ত করে ধরল তাকে বুকের সাথে মিলিয়ে,যদি পারত তবে বুকে লুকিয়েই নিত আঁখিকে,আঁখির মনে অন্যের জন্য খারাপলাগা মেনে নেওয়াটা কতটা কঠিন আদৃতের জন্য তা শুধু সেই জানে,কিন্তু কঠোর এই সত্য তাকে মেনে নিতেই হবে।
পুরো একদিন পর আদ্রিশের জ্ঞান ফিরল,চোখ খুলে দেখতে পেল আঁখি তার চেক আপ করছে।আদ্রিশ মুখে হাসি টেনে ডাকল তাকে।
″আঁখি…″
চোখ দিয়ে অশ্র বইতে শুরু হয়েছে আদ্রিশের দেখতে পেল আঁখি, একজন নার্স সেখানে থাকলে তাকে যেতে বলে আদ্রিশের পাশে বসল এবার,তার চোখের জল মুছে দিয়ে বলল।
″আঁদ্রিশ,তুমি যা করেছ একদমই ঠিক করো নি।সুইসাইড সবকিছুর সমাধান হয় না,জীবনে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা নিয়ে ভেবে নেওয়া উচিত, কিন্তু তুমি কখনও এমনটা ভাবো নি,না তো ডা.আদৃতকে আমার কাছ থেকে দূর করতে ভেবেছ,না তো রিদিকাকে বিয়ে করতে,আর না তো সুইসাইড করার আগে।সবকিছুর পরিমাণ দেখে নিয়েছ?কিছুই ভালো হয় নি।যা হবার হয়ে গেছে আদ্রিশ,তুমি চাইলেই এখন কিছু ঠিক করতে পারবে না,সবকিছুর সমাধান যদি মৃত্যু হতো তবে আমাকে তো সেই ছয় বছর আগেই মরে যাওয়া উচিত ছিল।ধৈর্য্য ধরলে জীবন অনেক কিছুই দিয়ে যায় আদ্রিশ,যাক গে,এখন আর কিছু করার নেই,আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি আদ্রিশ,যেভাবে পারো জীবনটা গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করো,আমি তোমার জন্য এর থেকে বেশি কিছু করতে পারব না,আমি জীবনে অনেক এগিয়ে গেছি, আমার শরীর ও মনে এখন শুধু মিশে আছেন ডা.আদৃত,আর তুমি এখন আমার জন্য পরপুরুষ মাত্র। আশা করি তুমি বুঝতে পেরেছ আমার কথা।″
আদৃত আদ্রিশের কেবিনের বাইরে পায়চারি করছে,মনের ভিতর তার উথাল–পাতাল ভাবনা, আঁখিকে অনেক আগে ভিতরে ঢুকতে দেখেছে,আঁখি আদ্রিশের পাশে গেছে কথাটা ওর বুকের জ্বালাতনের বড় কারণ হয়ে দাড়িয়েছে বর্তমানে।জানে আঁখি তার জায়গা কাউকে দিবে না তবুও আঁখিকে নিয়ে ঈর্ষা ধরে রাখতে পারে না সে।এবার আর নিজেকে আটকাতে না পেরে ভিতরে ঢুকে গেল।আঁখি আদ্রিশ দু’জনই তার দিকে তাকালো,আঁখিকে আদৃতের পাশে বসে থাকতে দেখে আদৃতের বুকে আদেকদফা মোচড় দিয়ে গেল,খুব কষ্টে নিজেকে আয়ত্ব করে বলল।
″আঁখি আদ্রুিশকে দেখা হয়ে গেলে চলো,কাজ আছে।″
″ভাই এমনিই তো জীবনভরের জন্য পেয়ে গেছ ওকে,একটু সময়ের সহানুভূতিতে কি অধিকার জমাতে পারি না আমি।″
আদ্রিশের বলা উক্ত কথায় তার জন্য খারাপ লাগল আদৃতের, খুব কঠিন হলেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টায় বলল।
″আচ্ছা ঠিক আছে,আমি আসছি।″
″আদৃত নিরাশ চেহারায় বেড়িয়ে গেল কেবিন থেকে।আঁখি বুঝতে পারল তার অনুভুতি।″
_________
রাত ১২ টা,আদৃত বিছানায় হেলান দিয়ে বসে বই পড়ছে,হঠাৎ টান দিয়ে আঁখি বইটা সরিয়ে দিয়ে তার কোলে এসে বসল।আদৃত প্রতিক্রিয়াহীন হয়ে তাকিয়ে আছে আঁখির দিকে।
″কি হয়েছে এই চোখা নাকটার?এমন চুপসে আছে কেন?″
″কি হবে কিছুই হয় নি।″
″ব্যর্থ চেষ্টা করবেন না ডা.সাহেব,বয়সে আপনার থেকে ছোট হতে পারি বোধগম্যে নয়,ভালোবাসি আপনাকে আপনার না বলা কথাও অনুভব করে নিতে জানি।″
তারপর আঁখি আদৃতের বুকে মুখ গুঁজে বলল।
″আমি শুধু আপনাকে ভালোবাসি ডা.আদৃত,ব্যথাভরা সহানুভূতির টান কখনও ভালোবাসার সমতুল্যে মান পায় না,আদ্রিশের জন্য যদিও আমার মনে কিছু থেকে থাকে তা একটা তিক্ত টান যা সময়ের সাথে ফুরিয়ে যাবে।″
″যখন ভালোবাসার অনুভুতি বুঝতে অক্ষম ছিলাম তখনও তোমায় ভালোবেসেছি,ভালোবাসার মানে তোমার থেকে জানতে পেরেছি,ভালোবাসতে শিখেছি তোমার কাছেই,হারিয়ে গিয়ে বিচ্ছেদের ব্যথা গায়ে মেখেছি,নিয়েছি বিষাদময় নিশ্বাস,বছরের পর বছর তিক্ততায় কাটিয়ে অবশেষে পেয়েছি তোমায়,অযুক্তিক হিংসুটে ভাবটা কি সত্যিই অযুক্তিক হবে আজ আমার?″
আলতো হেসে মাথা তুলল আঁখি।
″আমাকে আমার মতোই বোঝাতে চাইছেন?″
″কিছুই বোঝাতে চাই না আঁখি,শুধু জানাতে চাই এই মন তোমার নে*শা*য় পাগল,এ মন জানে তার ভাগটা আর কেউ নিতে পারবে না,তুমি শুধুই তার,তবুও করে অভিমানী জেদ,দোষ কি তার বড্ড?
আমি তোমাকে বিশ্বাস করি আঁখি,নিজের থেকেও বেশি।মনকে না হয় তার হালেই ছেড়ে দাও,একে বোঝানো নিরর্থক।″
আঁখি এবার এগিয়ে গিয়ে আদৃতের কপালে চুমু কাটল,অতঃপর তার দুই গাল বরাবর ভালোবাসার পরশ মেখে বলল।
″ভালোবাসি।″
″আমিও ভালোবাসি সুখ।″
রাত ২ টা,আদৃতের উন্মুক্ত বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে আঁখি গায়ে আদৃতের শার্ট জড়ানো,আঙুলে তার বুকে কাল্পনিক কিছু আঁকিবুঁকি করতে করতে আনমনা হয়ে জিজ্ঞেস করল।
″আমি আমার সারনেইম চেঞ্জ না করলে সমস্যা হবে আপনার?″
″জানো তোমার মধ্যে আমার সবথেকে পছন্দের দিক কোনটা?″
″কোনটা?″
″এই তোমার আত্মনির্ভরশীলতা আর আত্মসম্মান। যে মেয়ে খান বংশে জন্মগ্রহণ করেও সে উপাধী মাথায় নেয় নি,জন্ম দিয়েছে নিজের এক আলাদা সত্তা,বিয়ের পরও স্বামীর উপাধী নিতে চায় নি,নিজেকে আলাদাভাবে তুলে ধরেছে পৃথিবীর সামনে।সত্যি বলতে আঁখি আমি কখনও তা কল্পনাও করতে পারি না তুমি আমার পরিচয়ে পরিচিতি পাও।তুমি যে নিজেই এক আলাদা পরিচিতি।আমি চাই সমাজের লোক তোমাকে আমার স্ত্রী হিসেবে না আমাকে তোমার স্বামী হিসেবে জানুক।
তা আমার একটা আবদার আছে কিন্তু। ″
″কি বলুন তো?″
″এই আপনি করে ডাকটা বাদ দিয়ে তুমি করে বলবে।″
″আমি তা পারব না।″
″কেন?″
″কারণ আমার অভ্যেস হয়ে গেছে আপনাকে আপনি করে ডেকে,তাছাড়া আপনি ডাকটা যেমন সম্মাননায় প্রকাশ পায় তেমনই অগাধ ভালোবাসার সাক্ষ্য দিয়ে যায়।″
″তবে আমিও তোমাকে আপনি বলে ডাকব।″
″একটা ঘুষি দিয়ে এই চোখা নাক বোঁচা করে ফেলব যদি আপনি করে ডেকেছেন তো।এই অধিকার শুধু আমার আর আমিই ডাকব।″
″মা গো বউ নামক এ কেমন প্র*লয় সাথে নিয়ে ঘুরি আমি।″
″আমি প্র*ল*য়,যান কথা নেই।″
″আরে আমার লক্ষী বউটা রাগ করেছে,এখনই ভেঙে দিব সব রাগ।″
″ছাড়ুন আমায়,গুতো দিয়ে পেট ফুটো করব।″
″ডাক্তার আছি সেলাই করে নিতে পারব।″
″ছাড়ুন,হা হা হা হা″
_____________
দেখতে দেখতে কেটে গেল ৩ টে মাস,এরই মধ্যে আঁখি আদৃত সুইজারল্যান্ড ঘুরে আসলো হানিমুনে। অনেক ভালো কাটছে তাদের দিন,আদ্রিশ বেশ সুস্থ হয়েছে,এক পা ভেঙে যাওয়াতে ওয়াকিং স্টিক ব্যবহার করে হাঁটে,নিজের অবস্থাতে কোনো খারাপ লাগা নেই তার,আল্লাহর দেওয়া সাজাতে বেশ খুশি হয়েছে সে।নিজের হাতে নিজের জীবন শেষ করে গেছে তিক্ত এই সত্য মানতে হবেই তাকে।আঁখি ছাড়া তার জীবনে অন্য কোনো সুখ যে তার আর এমনিতেই চাই না।নিজের কাজে যোগ দিবে আবার ভাবছে,যতদিন বাঁচার এভাবেই বেঁচে থেকে মৃত্যুর অপেক্ষা করবে ভেবে নিয়েছে,আল্লাহর ইবাদত করে বাকি জীবন পার করে দিবে।পুরো সম্পত্তি আদ্রিশ লিখে দিয়েছে আদিলের নামে।আদ্রিশের করুণ পরিণতি দেখে তার পরিবারও আর তার থেকে দূরে থাকতে পারে নি,তারা চলে এসেছে আদ্রিশের কাছে,আদিলের ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয়েছে,এখন নিজের সাথে পরিবারের সবার দায়িত্ব সে নিজের ঘাড়ে নিয়েছে,আদ্রিশের দেখাশোনা এতদিন তার পরিবারই করেছে,খারাপ এ সময়ে অবশেষে নিজের একান্ত আপনজনদের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে আদ্রিশ,আঁখি আদৃত এর মধ্যে বেশ কয়েকবার এসে দেখে গেছে আদ্রিশকে।এদিকে মাইশা একটা মেয়ে সন্তানের জননী হয়েছে,খান বংশে আবারও একটা মেয়ের আগমণে হৈ-হুল্লোড় পরল পুরো খান ম্যানশন জুরে,তাতে আঁখির অবদানটা বেশি ছিল।শুভ্রতা আবারও কনসিভ করেছে।এদিকে আঁখির আংকেল ডাকে নারাজ হলেও আরিয়ান মির্জা, উনাকে আব্বু বলে ডাক্তার আবদার রাখলেন।
আদৃতের আজকে হঠাৎ একটা এমারজেন্সি থাকায় হাসপাতাল থেকে আসতে দেরি হলো,আঁখিকে সে আগেই পাঠিয়ে দিয়েছে।শায়েলা আর আরিয়ান মির্জা ইশিকার বাড়িতে বেড়াতে গেছেন আজকে থাকবেন জানে আদৃত, বাড়িতে ঢুকল তবে আঁখিকে পেল না,কর্মচারী হালিমাকে জিজ্ঞেস করল।
″হালিমা আঁখি কোথায়?″
″জানিনা স্যার,আসার পর থেকে আর নিচে নামতে দেখি নি উনাকে।″
″আচ্ছা আমি দেখছি।″
আদৃত সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠল,আঁখি বলে ডাকছে তবে তার কোনো সাড়াশব্দ নেই।কক্ষের পানে এগিয়ে গেল,দরজা আজানো, ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকলে দেখতে পেল পুরো কক্ষ অন্ধকার,বিছানার উপর একটা বড় আকারের টেডি বিয়ার রাখা,তার শরীরে বিভিন্ন রঙের রঙিন বাতি জলছে যার আলোতে তার কোলে রাখা স্পষ্ট একটা কাগজ দেখা যাচ্ছে। আদৃত আঁখি নামে দু-তিনবার ডেকেও সাড়া না পেয়ে কৌতুহলবশত এগিয়ে গেল সেদিকে,বুঝতে পারলো একটা রিপোর্ট,হাতে নিল ওটা অতঃপর ফোনের টর্চ জালিয়ে তা পড়তে নিলে মুহুর্ত যেন থমকে গেল আদৃতের সেখানেই,চোখ বেয়ে সাথে সাথে গড়িয়ে পরল সুখের জল।
ঘরের বাতি জ্বলে উঠল, সামনে দাঁড়িয়ে আছে আঁখি,মুখে একফালি হাসি নিয়ে,আদৃত ছুটে গিয়েই জড়িয়ে ধরল তাকে।
″কি হয়েছে ডা.সাহেব?ডোজটা কি খুব বেশি হয়ে গেল?″
″তুমি না মা হতে পারবে না?তবে এই রিপোর্টটা!″
″আপনি কি এমন কোনো রিপোর্ট দেখেছিলেন যেখানে লিখা আমি মা হতে পারব না?″
″কিন্তু আদ্রিশ তো তোমাকে এই দোহাই দিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করেছিল,মিডিয়াতে তো এই নিউজ ছড়িয়ে আছে।″
″আপনি কি মিডিয়া বা আদ্রিশকে জিজ্ঞেস করেছিলেন কখনও যে তারা আমার রিপোর্ট দেখেছে কি না?
আরে আদ্রিশের বিয়ে করার শখ জেগেছিল তাই বিয়ে করেছে আর মিডিয়া এরা তো নিউজের নামে গুজব ছড়াতে বেশি পছন্দ করে।″
″তবে তুমি সেদিন বাবাকে বলো নি কেন?আর আমাকে কেন বলো নি?″
″আব্বুকে বলি নি আত্মসম্মানবোধ থেকে,আর আপনাকে বলি নি স্যারপ্রাইজ দিব বলে।যদি তখন বলে দিতাম তবে আজ এতটা আশ্চর্য লাগত না যতটা এখন লাগছে।″
″এসব তুমিই পারো একমাত্র।আই লাভ ইউ,তুমি জানো না তুমি আমাকে কতো বড় সুখ পাইয়ে দিয়েছ।″
″আই লাভ ইউ মোর″
খবরটা পেয়ে সবাই খুশি,চারিদিকে পরেছে খুশির হৈ-হুল্লোড়।এদিকে আজ পাওয়া গেল আরও দু’জনের লা*শ।দু’জনকে একই বিছানায় বি*ব*স্ত্র অবস্থায় একটা চাদরের নিচে পাওয়া গেছে,দু’জনেরই গলা কা*টা।পাশে তাদেরই রক্তে বড় বড় করে লিখা।
পরকীয়া কারীদের একটাই সাজা হওয়া চাই,মৃত্যুদন্ড।
প্রমত্ত অঙ্গনা।
এদিকে আজকেই ইন্সপেক্টর জিসান প্রমত্ত অঙ্গনা কেস ছেড়ে দিলেন।
″স্যার আজকে আবারও দুটি খু*ন হলো,আপনি কি সত্যিই আর প্রমত্ত অঙ্গনা কেস দেখবেন না?″
″আরে না সুমন,আমি কেন কোনো ইন্সপেক্টরই এই কেস হাতে নিতে চায় না,১৩ বছর থেকে ১৪ বছরে চলে এসেছে তবে কেস তার জায়গায়ই। সিআইডি,র্যাব কোনো টিম বাদ যাচ্ছে না কিন্তু কোনো খবর নেই।আমি আর এই প্যাচাঁল এ থাকছি না।″
″আচ্ছা স্যার আপনার কি খটকা লাগে না।সব পরকীয়া কারীদের প্রমত্ত অঙ্গনা মৃ*ত্যু*র সাজা দেয়,তবে আদ্রিশ রিদিকাকে কেন দিলো না,আদ্রিশের বিষয়টা তো মিডিয়াতে উঠে এসেছে এমন তো নয় যে তার বিষয়ে প্রমত্ত অঙ্গনা জানে না?″
″আদ্রিশের বিষয়ে জানি না তবে রিদিকাকে প্রমত্ত অঙ্গনা ছাড়ে নি।ওর শরীরে ভাইরাস পাওয়া গেছে,ডাক্তারের থেকে জানা গেছে তা মনুষ্য সৃষ্ট, কিন্তু চাইলেও কেউ তার প্রতিষেধক বানাতে পারছে না কারণ ওর শরীরে দুইটা ভাইরাস দেওয়া হয়েছে,আর দুইটা ভাইরাস ওর শরীরে ছড়িয়ে একে অন্যের সাথে মিলে গেছে যার ফলে এদের আলাদা করে আলাদা ওষুধ বানানো সম্ভব হচ্ছে না।আমার মনে হয় এমনটা প্রমত্ত অঙ্গনাই করেছে।″
″কিন্তু সবাইকে সে মৃ*ত্যু দিলেও তাকে কেন দিলো না?ওকে এতো যন্ত্রণা দিয়ে জীবিত রেখেছে নিশ্চিত রিদিকা তার জন্য আলাদা কেউ না হলে তো এমনটা করত না,এমনও তো হতে পারে সে রিদিকার পরিচিত কেউ,যার অনিষ্ট রিদিকা করেছে আর তার ফলস্বরূপ তাকে এমন সাজা দেওয়া হয়েছে।″
″এমনটা হলে সন্দেহ যায় প্রথমত আঁখির উপর।″
″তবে ডা.আঁখিকে আমরা জবাবদিহি করলে পারি।″
″না সুমন,কোনো প্রমাণ ছাড়া আমরা এতো ক্ষমতাসম্পন্ন কাউকে জবাবদিহি করতে পারব না শুধু অল্প একটু সন্দেহের জোরে,আঁখির এতটা ক্ষমতা যে উপযুক্ত প্রমাণ ব্যতীত ওকে হেনস্তা করা মানে আমার জব হুমকিতে ফেলা,তাছাড়া ওর আশপাশে যা নাম ডাক,প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ টাকা দেশের বিভিন্ন অনাথ আশ্রম ও বৃদ্ধাশ্রমে যায় আঁখির একাউন্ট থেকে।দেশের বড় অংশের জনসমর্থন আছে ওর পক্ষে, বুঝতে পারছ এখানে সন্দেহের বশে কিছুই হবে না।আঁখির বিরুদ্ধে আমরা অনেক ইনভেস্টিগেশন করেছিও কিন্তু শূণ্য হাত ছাড়া আমরা কখনই ফিরি নি।তাছাড়া রিদিকাকে যে প্রমত্ত অঙ্গনাই ভাইরাস দিয়েছে তারও তো কোনো প্রমাণ নেই,সবই আমাদের চিন্তা মাত্র,বাস্তবে আমরা কিছুই করতে পারি নি এখন অব্দি।″
চলবে…