তুমি যে আমার পর্ব -০৯

#গল্পের_নাম_তুমি_যে_আমার
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:৯

ইলহাম বাসায় পৌছে কলিংবেল টিপতেই মাহমুদা বেগম থমথম মুখে সে দরজা খুলে দিলো।মাহমুদা বেগমের চেহারা দেখে ইলহামের মনটা খা/রা/প হয়ে গেলো।মাহমুদা বেগম দরজা থেকে সরে দাড়ালেন ইলহাম বাসায় প্রবেশ করেই দেখতে পেলো হাসান সাহেব,আবির আর রুমকি বেগম সোফায় বসে আছে।তাদের দেখে ইলহাম অবাক হলো জুতো খুলে সবার সাথে কুশলাদি করে বললো,

~আপনারা এখানে?

হাসান সাহেব বললেন,

~বাহির থেকে এসেছো যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।

হেমন্তি রান্নাঘর থেকে নাস্তার ট্রে নিয়ে এসে টেবিলে রাখলো ইলহামের দিকে একপলক তাকিয়ে রুমকি বেগমের পাশে গিয়ে বসে পরলো।ইলহাম বললো,

~আমার চাকরিটা হয়ে গেছে।

ইলহামের কথা শুনে সেই নিরব পরিবেশে একটু আনন্দের বাতাস পেলো।মাহমুদা বেগম খুশি হয়ে ছেলেকে মন ভরে দোয়া করলেন।আবির ইলহামের সাথে হাত মিলিয়ে বললো,

~অভিনন্দন।

হেমন্তিও তাকে অভিনন্দন জানালো খালা সেই খুশিতে সেমাই রান্না করতে চলে গেলেন।হাসান সাহেব বললেন,

~খুবই খুশির খবর এটি।

ইলহাম মলিন হেসে নিজ রুমে চলে আসলো শার্ট খুলতে খুলতে ভাবতে লাগলো তারা এখানে কেন এসেছে হয়তো হেমন্তিকে নিতে এটা ভাবতেই ইলহামের মনটা মোচড় দিয়ে উঠলো।সে কোনো মতো নিজেকে সামলে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হয়ে কাপড় পাল্টে রুমের বাহিরে চলে গেলো।সোফার ঘরে এসে বসে পরলো। হেমন্তি ইলহামের জন্য চায়ের কাপ এনে তার সামনে রেখে দিলো আর রুমকি বেগমের পাশে বসে পরলো হাসান সাহেব মাহমুদা বেগমের দিকে তাকিয়ে বললেন,

~আপা,আপনার সাথে অনেক জরুরি কথা আছে।

মাহমুদা বেগম বললেন,

~জ্বী ভাই বলুন।

হাসান সাহেব বললেন,

~আমি হেমন্তিকে নিয়ে যেতে চাই।

হাসান সাহেবের কথা শুনে ইলহাম তার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।মাহমুদা বেগম কী বলবেন কিছুই বুঝতে পারলেন না হাসান সাহেব বললেন,

~মেয়ের বিয়ে আমি তাড়াতাড়ি দিতে চাই আপা তাই মেয়েকে নিয়ে যেতে চাই।

মাহমুদা বেগম বললেন,

~আপনার মেয়ে আপনি নিয়ে যেতে চান এতে আমার কোনো আপত্তি নেই।

হাসান সাহেব বললেন,

~তাহলে আজই বিয়ের তারিখটা ঠিক করে যাই কী বলেন আপা।

হাসান সাহেবের কথা শুনে আবির, হেমন্তি আর রুমকি বেগম ছাড়া সবাই অবাক।হাসান সাহেব মৃদ্যু হেসে বললেন,

~আগেরবার যা হয়েছে তা ভুলে যাই সবাই নতুন করে সব শুরু করি।

ইলহাম একবার হেমন্তির দিকে তাকালো হেমন্তি মাথানিচু করে বসে আছে।ইলহাম বললো,

~আপনি একবার হেমন্তির মতামত জেনে নিন।

হাসান সাহেব বললেন,

~সবই জানি বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি কী হেমন্তি?

হেমন্তি কিছু না বলে নিজ রুমে চলে গেলো মাহমুদা বেগম বললেন,

~আগামীকালই শুভ কাজটা সেরে ফেলি ভাই।

মাহমুদা বেগমের কথায় সবাই একমত হলো ইলহাম উঠে হেমন্তির কাছে চলে গেলো। রুমের সামনে এসে দরজায় টোকা দিলো ভিতরে থেকে হেমন্তি বললো,

~আসুন।

ইলহাম রুমে প্রবেশ করলো হেমন্তি তাকে দেখে বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়ালো ইলহাম বললো,

~তুমি কী এই সিদ্ধান্তে রাজি?

হেমন্তি বললো,

~রাজি না থাকলে অবশ্যই প্রতিবাদ করতাম আর বাবা আমার ইচ্ছে ছাড়া কোনো কিছুই করে না।

ইলহাম অবাক হয়ে বললো,

~এর মানে তুমিই এসব বলেছো?

হেমন্তি মৃদ্যু হেসে বললো,

~আজ যাই বাবার সাথে কাল আবার চলে আসবো।

বলেই হেমন্তি ব্যাগটা হাতে নিয়ে বের হয়ে আসলো ইলহাম সেখানে দাড়িয়ে রইলো এখনো তার কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে। ইলহাম রুম থেকে বাহিরে চলে আসলো হেমন্তিরা চলে যাচ্ছে ইলহাম তাদের বাসার নিচ পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসে।মাহমুদা বেগম খুবই খুশি তার একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা খালা বললেন,

~আপা,তোমার সঙ্গী চলে আসছে এখন তো খুশি?

মাহমুদা বেগম বললেন,

~তা আবার বলতে আমার মনের আশা পূরণ হচ্ছে শুকরিয়া আল্লাহ।

বলেই সে হাসিমুখে নিজ ঘরে চলে যায় হেমন্তিকে বিদায় দিয়ে ইলহাম বাসায় চলে আসলো মায়ের কাছে গিয়ে তার পাশে বসে বললো,

~মা,হেমন্তির জন্য তো কেনা কা/টা করতে হবে।

মাহমুদা বেগম বললেন,

~হ্যা ঠিক বলেছিস।

ইলহাম উঠে আলমারি থেকে তিনটি শাড়ির প্যাকেট বের করে লাল শাড়ির প্যাকেটটা এগিয়ে দিয়ে বললো,

~এটা চলবে না মা কারণ আমার কাছে বেশি টাকা নেই।

মাহমুদা বেগমের ছেলের কথা শুনে চোখ টলমল করে উঠলো সে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

~ভালোবেসে তুই যা দিবি তাই হেমন্তির কাছে শ্রেষ্ঠ।

তখনই খালা এসে নিজ ফোন মাহমুদা বেগমের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন,

~হেমন্তি ফোন দিয়েছে।

মাহমুদা বেগম ফোন কানে দিতেই হেমন্তি বললো,

~আন্টি আপনার ছেলেকে বলে দিয়েন টাকা অপচয় করার কোনো দরকার নেই বিয়ে সাধারণ কাপড়েও করা যায়।

মাহমুদা বেগম হেসে বললেন,

~বলে দিবো।

হেমন্তি আরো কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রেখে দিলো এরপর মনে মনে বললো,

~কাল থেকে নতুন জীবন শুরু

চলবে

(বিদ্র:কেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here