#ক্যাসিনো
#পর্ব_৪৪
©লেখিকা_মায়া
চোখে কালো কাপর,হাত পিছন থেকে চেয়ারের সাথে বাঁধা মিনালের। নিশানের ফ্লাটের একটা ঘরে রাখা হয়েছে তাকে।
বাসা থেকে মিনাল কোন কাজে বের হওয়ার সময় তাকে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়।
মিনাল অজানা এক ভয়ে কুকড়ে আছে। হঠাৎ কে তাকে উঠিয়ে নিয়ে আসলো এটা ভেবেই ঘেমে একাকার হচ্ছে সে।
নিশান যেই ছেলে গুলো কে দ্বারা মিনালকে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে,, তাদের পাওনা টাকা মিটমাট করে শিষ বাজাতে বাজাতে হেঁটে আসছে মিনালের কাছে। কারো শিষ বাজানোর আওয়াজে, মিনালের ধুকপুকানি বেড়ে যায়। হাত পা ছুটাছুটি করার চেষ্টা করছে সে। কিন্তু শক্ত দরি তে বেঁধে রাখা হয়েছে,যা খোলা তার শক্তি তে সম্ভব নয়।
নিশান মিনালের কাছে এসে,,কানে কানে ফিসফিস করে বলে,, সারপ্রাইজ মিনাল!! তার পর মিনালের চোখের বাঁধন টা খুলে দেওয়া হয়। মিনাল সামনে নিশান কে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। তার পর সস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বলে। নিশান তুমি!! আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম। হঠাৎ করে কে আবার উঠিয়ে নিয়ে আসলো আমাকে?? কিন্তু তুমি এভাবে উঠিয়ে কেন নিয়ে আসলে?? আর এই হাত পা কেন বেঁধেছো আমার??
নিশান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,,ঐ আমার কিছু কথা জানার ছিল তাই নিয়ে এসেছি তোমাকে!! হ্যাঁ তো এভাবে নিয়ে আসার কি দরকার ছিল?? আমি তো এমনিতেই চলে আসতাম তুমি আসতে বললে!! আচ্ছা যায় হোক আমার বাঁধন টা খুলে দাও।
নিশান .. গম্ভীর গলায় বলে,, কেন এতো এতো মিথ্যা বলেছো আমায় তুমি মিনাল???
কি স্বার্থে??? কেন??
মিনাল হতভম্ব হয়ে বলে,,কি বলছো এসব তুমি?? আমি আবার কি মিথ্যা বললাম তোমায়?? মেহমেত নির্দোষ ছিল! কেন তাকে আমার চোখে খারাপ করেছিলে?? মিনাল চোখ বড় বড় করে নিশানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। মিনাল মনে মনে ভয় পাচ্ছে খুব,,তার পর ও জোর গলায় বলে,, আমি কোন মিথ্যা বলিনি যা সত্যি সেটাই বলেছি। মেহমেত তোমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। সে কখনো তোমার বন্ধু ছিল না!!
নিশান নিজের চোয়াল শক্ত করে,,হাত মুঠো করে নিজের ভিতরে থাকা রাগ কে সংযত করার প্রান পনে চেষ্টা করতে থাকে। তার পর আবারো ধীর কন্ঠে বলে, তোমার শত্রুতা কার সাথে??? আমার সাথে নাকি মেহমেতের সাথে?? কেন আমাকে ভুল ভাল বুঝিয়ে মেহমেতের সাথে এমন জঘণ্য কাজ করিয়েছিলে আমাকে দিয়ে??
নিশান কি বলছো তুমি?? আমি কিছু বুঝতে পারছি না! মেহমেত আবার তোমাকে বলেছে না যে এসব সে করেনি প্রমান দিয়েছে না?? ওর কথা বিশ্বাস করো না । ওর সব জাল প্রমান । আমি নিজে চোখে দেখেছি যে তোমার ওমন বিপদে সে মজমাস্তি তে ব্যস্ত দিন কাটিয়েছে। আর ঐ ড্রাগসের বক্স সে নিজে তোমার ঘরে রেখেছে!! বিশ্বাস করো আমার কথা!!
তখন মেহমেত আর মরিয়ম সেই ঘরে প্রবেশ করে। মিনারেল আত্মপুরি ভয়ে শুকিয়ে যায়। বার বার শুকনো ঢোক গিলছে সে।
মেহমেত মিনালের কাছে এসেই এলোপাতাড়ি চর থাপ্পর মারতে থাকে তাকে। অশ্রশিক্ত নয়নে বলে!! নিজের ভাইয়ের জায়গায় রেখেছি তোকে সব সময় আর তুই কিনা,ঘরের শত্রু বিভীষণ হয়ে গেলি??
কেন?? মিনাল পাথরের মত চুপ করে আছে।
মিনালের হাতের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। তার সামনে বসে, নিশান, মরিয়ম,মেহমেত। মেহমেত মিনালের দিকে ঘৃনা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মরিয়ম কন্ঠ নরম করে মিনালের উদ্দেশ্য বলে,,এখন কি সত্যি শিকার করবে নাকি ?? আমাদের অন্য ব্যবস্থা নিতে হবে??? নিশান তখন একটা চকচকে চাকু বের করে মিনালের চোখের সামনে ধরে বলে,,এখন কিন্তু আমার রক্তের নেশা টা বেড়েছে,যখন তখন রক্ত দরকার হতে পারে আমার।
হঠাৎ মিনাল চোখ মুখ শক্ত করে বলে,,হ্যা
আমি ইচ্ছে করেই করেছি এসব ,,কারন মেহমেত কখনোই আমায় ভাই ভাবেনি ,, ছোট বেলায় তার ব্যাগ পত্র নিজের কাঁধে তুলে নেয়াটাই আমার বড় দায়িত্ব ছিল। তার সকল ফরমায়েশ পূরন করার কাজের লোক ছিলাম আমি। আস্তে আস্তে বড় হতে লাগলাম আর তার হাসির খোরাক হতে লাগলাম। তবু ও মেহমেতের প্রতি তেমন ক্ষোভ ছিল না কিন্তু ,, নিশান হঠাৎ আমাদের জীবনে এসে সব শেষ করে ফেললো। মেহমেত অনেক বদলে গেল। প্রয়োজন ছাড়া কথায় বলে না। ওর মত একটা সাধারণ ক্ষেত ছেলে কে নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়ে গেল। আমার স্বপ্নের স্কলার শীপ চলে গেল নিশানের কাছে। আর সব থেকে বড় কথা শাহানা!! যাকে আমি ছোট বেলা থেকে ভালোবাসতাম ,, আমার একটু একটু করে ভালোবাসা যা আমি শাহানার জন্য লালন করেছিলাম। তা নিশান আমার শাহানা কে নিজের করে নিল। বিয়ে করে নিল তাকে। আমি কি করে সহ্য করতাম তাহলে???
সবাই স্তম্ভিত হয়ে যায় মিনালের কথা শুনে। মিনালের মনে এতো গুলো ক্ষোভ ছিল। সে শুধু মাত্র, মেহমেতের উপর প্রতিশোধ নেয়নি সে , নিশানের উপরই সব থেকে বেশি প্রতিশোধ নিয়েছে।
পরবর্তী মিনালের কথা শুনে আরো অবাক হয়ে যায় সবাই । সে যখন জানতে পারে নিশান আর শাহানা বিবাহিত,,তখন থেকেই তার প্রতিশোধের আগুন জ্বলতে থাকে মনের ভিতর। আর যেই দিন নিশান আর শাহানা কে মেহমেত এক বাসায় নিয়ে যায়। সেটা মিনাল নিজে তাদের ফলো করতে যেয়ে জানতে পারে,,আর এই প্রতিশোধ
সে বাস্তবায়ন করতে যায় সেই রাতে ,সে প্লান করে নেয় আগে মেহমেত তাদের নিতে আসার রাস্তায় তাকে ট্রাক দ্বারা পিষে ফেলতে আর শাহানা আর নিশান কে সে নিজে হাতে হত্যা করবে,আর যখন সেখানে গিয়ে সে দেখে যে তাদের মেহমেতের ড্রাইভার নিয়ে আসে,তখন সে লুকিয়ে পড়ে, তার পর তাদের ফলো করতে থাকে, এবং সে তখন দেখে যে তাদের
একটা পুরনো বাড়ি তে নিয়ে যাওয়া হয় অবচেতন অবস্থায়। তখন সে চুপিচুপি সেই বাড়ির জানালায় উঁকি মেরে দেখতে যায় কিন্তু কিছুই দেখতে পারে না। কৌতুহল বশত,সে পা টিপে টিপে পুরো বাড়ি ঘুরিয়ে দেখতে লাগে আর তার পর বাড়ির পিছনের জানালা দিয়ে অনেক লোক জন কে সে দেখতে পারে কিন্তু শাহানা আর নিশান কে দেখতে পাই না। বাড়ির ভিতর থেকে বাচ্চাদের কান্নার আওয়াজ ও আসতে থাকে। সে খুব ভয় পেয়ে যায়,,আর বাইরে যাওয়ার জন্য বের হলে দেখতে পায় দুই জন লোক মেইন গেইটে তালা দিচ্ছে, এবং তারা সেখানেই পাহারা দিতে থাকে। তার জন্য মিনাল বের হতেও পারে না। সেখানেই একটা গাছের পিছনে ঘাপটি মেরে থাকে। লোক গুলো কখনো চলে গেলে সে পাঁচিল টপকে বেরিয়ে যাবে। অপেক্ষা করতে করতে এক সময় মিনালের চোখ লেগে যায়,
আর ভোর বেলা গাড়ির শব্দ পাওয়া যায়, তখন মিনালের ঘুম ভাঙ্গে। আর সে দেখে গাড়ি থেকে আফজাল শরীফ বেরিয়ে আসছে আর সাথে পুলিশ অফিসার ও আছে। মিনাল অবাক হয়ে যায়,,পাহারা দেওয়া লোক গুলো তাদের সাথে ভিতরে যায়। তখন হয়তো মিনাল বের হতে পারতো কিন্তু সে দেখতে চাচ্ছিল ভিতরে , হচ্ছে টা কি। আর তখন যা সে উঁকি মেরে দেখে তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। শাহানা আর নিশান কে এমন ভাবে আঘাত করা হয়েছে। যে তাদের শরীরে হয়তো এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা ফাঁকা নেয় যেখানে মারের দাগ পাওয়া যাবে না। শাহানার মুখে শুধু থাপ্পরের দাগ। আর যখন আফজাল শরীফ কে চোখের সামনে খুন করতে দেখে । মিনালের জান গলার কাছে এসে যায়। আফজাল শরীফের সত্যতা মিনাল জানতে পারে,কত টা ভয়ঙ্কর মানুষ সে। আর তার থেকেও ভয়ঙ্কর অনিতের রূপ দেখেছে সে। যখন দেখতে পায় শাহানা কে গুলি করে হত্যা করা হয়। মিনাল আর এক দন্ড ও দাঁড়াতে পারে না সেখানে। ছুটে বাইরে চলে যায়।
পরবর্তী দিন গুলো ট্রমার মতো ছিল তাঁর। আফজাল শরীফের সরল সাদা মন দিয়ে যখন নিশান কে দোষী সাব্যস্ত করে জেলে পাঠানো হয়। মিনাল আরো অবাক হয়ে যায়,,যখন নিশানের বিরুদ্ধে সবাই মিথ্যে সাক্ষী দিচ্ছিলো।
নিশানের চোখ দিয়ে যেন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে। মিনাল নিজে এতো বড় একটা নাটক সাজিয়ে মেহমেত কে দোষী বানিয়ে নিজে সাধু সাজার অভিনয় করে গেছে। আর সে বুঝতে ও পারলো না। মেহমেতের চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে। এটা বন্ধুর বেউমানী তে নাকি এটা ভেবে যে মিনাল কখনো তার বন্ধুই ছিল না। আর মিনাল নিজেই তাকে মারার প্লান করেছিল??
মরিয়ম বেশ গম্ভীর হয়ে জিজ্ঞেস করে সব বুঝলাম। তুমি যদি মেসে ছিলে না সেদিন। তাহলে ঐ বক্স হাতে ছবি টা কোথায় পেলে??? সেটা আমি আকাশের ফোন থেকে পেয়েছিলাম। সে একটা ছবি তোলে আর তার পিছনে মেহমেত কে বক্স সহকারে দেখা যায়,,
এই ছবি টা যে কত বড় প্রমান ছিল। তা সে জানতো না। তার ফোন থেকে নিজের ফোনে ছবি টা নেয় আমি আর তার ফোন থেকে ডিলিট করে দেয়। আর আকাশ কে বাদ দিয়ে দেয় ছবি থেকে।
নিশান বলে উঠে ,, ব্রিলিয়ান্ট;!! অনেক ভালো অভিনয় করে গেছো তুমি। শুধু মাত্র তোমার কথা তে আমি মেহমেতের সাথে এমন নোংরা কাজ করছি।তার সকল সম্পত্তি নিজের করে নিয়েছি। শুধু মাত্র তাকে নিশ্ব করার জন্য।
#ক্যাসিনো
#পর্ব_৪৫ও৪৬
©লেখিকা_মায়া
আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে মিনাল তুই এমন টা করেছিস?? শুধু মাত্র প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য?? তুই সব থেকে বড় প্রমান ছিলি নিশান কে নির্দোষ প্রমাণিত করার জন্য! অথচ তুই তো সেটা করিসনি উল্টো, আমার নামে নিশানের কানে বিষ ঢেলেছিস??
ছিহ! আমি মানুষ কে বন্ধু ভাবতাম!
ঠোঁট মুখ শক্ত করে মেহমেত কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে। তবু ও বেহায়া চোখ বাঁধা মানছে না। দু ফোঁটা নোনা জল টুপ করে পড়লো মাটিতে।
মরিয়ম মেহমেতের কাঁধে হাত রেখে, শান্ত হতে বলে!! মেহমেত বা হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে চোখের কোণের পানি টা মুছলো। অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে সে। মিনালের মুখ দেখতেও এখন ঘৃনা লাগছে তার।
নিশানের ধামা চাপা দেওয়া রাগ ক্ষোভ ,যেন তার শিরা উপশিরায় বয়ে যাচ্ছে। পায়ের রক্ত মাথায় উঠেছে তরতর করে। নিজের চোয়াল শক্ত অগ্নিদগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে মিনালের দিকে!! নিজের হাতের ছুরিটা মিনালের গলায় ধরে সে। মরিয়ম চোখ বড় বড় করে নেয়।
ভাইয়া কি করতে যাচ্ছেন আপনি?? মাথা ঠিক আছে আপনার?? ঝাঁঝালো কন্ঠে নিশান জবাব দেয়,খুন করে ফেলবো আমি ওকে?? নাহ তোর গলার নার্ভে আমি আঘাত করে এতো সহজে মরতে দিবো না। নিশান তার ছুড়ি টা গলা থেকে সরিয়ে মিনালের হাতে পরপর বেশ কয়েক টা ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে। মিনাল আতংকিত হয়ে বিলাপ করতে থাকে ব্যাথায়। মরিয়ম নিশানের কাছে এসে তাকে দূরে সরে দিয়ে বলে,কি করছেন?? ওকে আমরা এভাবে মেরে ফেললে আমাদের নিজেদেরই ক্ষতি।
নিশান অবাক হয়ে বলে আমাদের ক্ষতি মানে?? এর মত একটা নর্দমার কীট কে মেরে ফেললে ক্ষতি কি ভাবে হতে পারে???
আপনি বুঝতে পারছেন ভাইয়া। মিনাল আমাদের অনেক বড় একটা প্রমান। আপনাকে আবার নির্দোষ প্রমাণিত করার জন্য। আপনার এই কেইস আবার নতুন করে শুরু করা হবে । আপনি যে শুধু মাত্র একটা ষড়যন্ত্রের শিকার তা আমরা প্রমান করবো। আর যারা যারা এই কেইসে সাক্ষী দিয়েছে তাদের আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
আপনার সম্মান আবার ফিরিয়ে আনতে পারবো। লোক জন যেটা কে ঘিরে আপনাকে দোষী ভেবেছিল, আপনাকে ঘৃনা করেছিল। তাদের সেই ভুল আমরা প্রমান সহকারে ভাঙ্গবো।
নিশান মরিয়মের কথায় কোন উত্তর দিলো না। আর না নিজের চেহারার অবয়ব পরিবর্তন করেছে। কিছু ক্ষন থম মেরে থাকার পর,ক্লান্ত শরীর টা নিয়ে ধপ করে বসে পড়লো মাটিতে। দেওয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে, চোখ জোড়া বন্ধ করে নিয়ে ,এক দীর্ঘশ্বাস ফেললো নিশান। বুকের পাঁজর টা চেপে ধরে বলে,,কি হবে এসব করে?? কি লাভ হবে?? আমাকে নির্দোষ প্রমাণিত করে কি আসবে যাবে বলতে পারো?? আমার মান সম্মান ফিরে আসবে?? জনগণ আফসোস করবে। হাইকোর্ট আমার কাছে মাফ চাইবে। আর মেইন ক্রিমিনালরা ধরা পড়বে। তাদের আইন শাস্তি দিবে। কিন্তু আমার পরিবার কি ফিরে আসবে?? মা বাবা নির্জনী?? আর শাহানা!! নাকি ১০বছর প্রতি নিয়ত যে মৃত্যুর যন্ত্রনা আমি পেয়েছি সেই কষ্ট টা কি ফিরিয়ে দিতে পারবে কেউ??
আর সব চেয়ে জরুরি একটা কথা,অনিচ অরা কোন সাধারণ ক্রিমিনাল নয়। তারা international ক্রিমিনাল।
নিজের দেশ থেকে যদি কোন সাধারণ জিনিস ও পাচার হয় তো তার সাথে নিজের দেশের মানুষের অবশ্যই হাত থাকে। আর ওরা তো জলজ্যান্তু মানুষ পাচার করে। তাদের সাথে কত বড় বড় লোক যুক্ত আছে তার কোন হিসাব হবে মনে হচ্ছে তোমার?? আজ ওদের আইনের হাতে তুলে দিবে,কাল তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে, এবং বুক ফুলিয়ে বেরুবে তারা। আবার পুনরাবৃত্তি হবে তাদের খুন খারাবি, শিশু পাচার,নারী পাচার। আর এর পুনরাবৃত্তি আমি কখনোই হতে দিবো না। নিশান নিজের ছুড়ি হাত ঘুরিয়ে নেয়,কথার মাঝে জোস নিয়ে এসে আত্মচিৎকারে ফেটে পড়ে বলে,আমি নিজ হাতে শাস্তি দিবো ওদের।কথা টা বলেই মিনালের হাতের পিঠে ছুরি বসিয়ে দিয়ে আবার চোয়াল শক্ত করে নেয়, কপালের রগ দপদপ করছে!! রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে,,মেরে ফেলবো ওদের,,নিজ হাতে মারবো,, ভয়ঙ্কর মৃত্যুর থেকে আরো ভয়ঙ্কর মৃত্যু তাদের উপহার দিবো!!!
মিনাল নিজের হাতের অবস্থায় আহাজারি করে ফুঁপাতে লাগে। মেহমেতের পা জড়িয়ে ধরতে যায়,,ভাই দয়া করে বাঁচা আমাক, আমি ভুল করেছি, আমার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে, তুই বললে নিশান আমাকে ছেড়ে দিবে।কিন্তু মেহমেত সরে যায়,, মরিয়ম নিশানের বলা কথায় আর এমন হিংস্র ভরা চাহনী তে আঁতকে উঠে। নিস্পলক চোখে তাকিয়ে আছে নিশানের দিকে,, হঠাৎ মিনাল মরিয়মের পা ধরতে আসলে মরিয়ম হাত উঠিয়ে দূরে থাকতে বলে,কি করছেন টা কি?? ভাবি দয়া করুন,, আপনি অন্তত বুঝুন। আমার পরিবার আছে। আমার ছোট ছেলে টা এতিম হয়ে যাবে, আমার বউ টা বিধবা হয়ে যাবে,আমি আর জীবনে এমন ভুল করবো না। মিনাল হাত জোর করে মিনতি করছে। মরিয়মের মন নরম তবে,এতো বড় বেঈমান আর বিশ্বাসঘাতক কে দেখে তার মায়া জন্ম নিচ্ছে না। মরিয়ম খুব কঠোর মুখে বলে,ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না!!
তুমি এমন কাজ করেছো যার শাস্তি তোমার অবশ্যই পাওয়া উচিত। তবে জানে বাঁচতে চাইলে , একটা শর্ত আছে!! নিশান আর মেহমেত চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,, মরিয়ম কি বলছে ও কি ভেবে বলছে??
ওর মত একটা ঘাতক কে ছেড়ে দিবে??
মিনাল খুশি হয়ে বলে,যা শর্ত দিবেন তাতেই আমি রাজি। কিন্তু আমাকে ছেড়ে দেন প্লিজ।
আগে শর্ত টা তো শুনে নেন!! হ্যাঁ বলুন,,
এখন সোজা পুলিশ কাস্টেডি তে যাবেন,আর নিজেই সেলেন্ডার করবেন। নিজের ভুল স্বীকার করবেন । আর কি কি সেদিন দেখেছেন,,তা সব পুলিশ কে বলবেন। আর তখন আমি আবার এই কেসের নতুন করে শুরু করবো।
মেহমেত মরিয়মের কাছে আসে এবং বলে কি করছো টা কি তুমি?? ভেবে করছো তো?? হ্যাঁ আমি ভেবেই করছি। নিশানের উদ্দেশ্য মরিয়ম বলে,, ভাইয়া !! জিবনে সব কিছু হেরে যাওয়া মানে এই নয় যে এমন কোন সুযোগ আসলো আপনাকে দেশবাসীর কাছে নির্দোষ প্রমাণিত করার জন্য। সেখানে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়াটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয় আর সেটা শুধু মাত্র এই জন্য যে আপনি সব হারিয়ে নিঃস্ব,, আপনার সাথে অন্যায় হয়েছে,,সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ আপনি ছাড়ছেন??আইনের কাছে আপনাকে শুধু মাত্র নিদোর্ষ প্রমান করবো!! এই জন্য যে সত্যির কখনো মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যায় না । নির্দিষ্ট একটা সময়ে সত্যি টা বেরিয়েই আসে। আর গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো,,, আপনার নির্দোষ প্রমাণ হওয়া টা জরুরি,আইনের আওতায় ক্রিমিনাল দের নিয়ে এসে শাস্তি দেওয়া টা জরুরী নয়।
মরিয়মের কথায় নিশান আর মেহমেত কেউ কিছু বুঝলো না। তারা হতভম্ব হয়ে একে অপরের দিকে চাওয়া চায়ি করলো।
মরিয়ম বাঁকা হেসে বলল,,
The twist of game this…
চলবে____????
৪৬
তিন দিন কেঁটে গেছে,, প্রান বাঁচার ভয়ে মিনাল বাধ্য হয়েছিল সব কিছু স্বীকার করে নিতে। মিনালের শাস্তি পাওয়া জরুরি,,তবে তার পরিবারের চিন্তায় সে খুব কান্নাকাটি করছিল,, মরিয়ম আস্থা দিয়েছে যে.তাদের পরিবারের কোন সমস্যা সে হতে দিবে না। তার পরিবার এখন তার দায়িত্বাধীন , মিনাল দোষী,শাস্তি তার পাওয়া উচিত,তার পরিবারের নয়। মিনাল কে জেলে রাখা হয়েছে। তাকে হাইকোর্টে নিয়ে যাওয়া হবে সামনের সপ্তাহে। তার পর সত্যতা যাচাই করে তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে। মরিয়ম নিশানের কেইস টা হাতে নিয়েছে। কমিশনার কে নিশানের কেইস নিয়ে কোন হৈচৈ করতে মানা করা হয়েছে। এতে ক্রিমিনালরা সতর্ক হয়ে যাবে। প্রথম প্রথম মরিয়ম কে এই কেইসের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে ভিষন তর্ক বিতর্ক হয়েছে। আর নিশানের কেইস নিয়ে সেটা জানতে পেরে আদালত ও বিরক্তি প্রকাশ করেছে। কিন্তু মরিয়ম দৃঢ়তার সহিত বলেছে,যে ১০ বছর আগের করা মামলায় নিশান কে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল। সে সম্পূর্ণ নির্দোষ। তাকে কেন ফাঁসানো হয়েছে তার কোন ধারাবাহিক উক্তি মরিয়মের থেকে পাওয়া যায়নি। কিন্তু আদালত থেকে তাকে ১০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। যে নিশান নির্দোষ ছিল তা প্রমান করার জন্য।
মরিয়ম চঞ্চলতার সাথে তা গ্রহন করেছে। এবং অনুরোধ করেছে যেন কেইস টা গোপন রাখা হয়,কারন এখন আশেপাশের কে শত্রু আর কে মৈত্র তা বুঝা দুষ্কর। মিনালের কাছে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী,তার সাথে অন্য কেউ যুক্ত ছিল না। সে শুধু মাত্র সুযোগে সৎ ব্যাবহার করে মেহমেত কে ফাঁসিয়েছে আর নিশান কে সাহায্য করার বদলে নিজে নিশ্চুপ ছিলেন।
প্রথমে সে লিস্ট তৈরি করেছে,যারা যারা মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছিল। আর মেহমেতের ফ্রেন্ড সার্কেল কে লিস্টের মধ্যে সবাইকে পাওয়া যায়নি, শুধু এক জন কে পাওয়া গেছে সে হলো!! আর সে হলো সামিরা!! যে নিশান কে হেনস্থা করেছিল,ভার্সিটির প্রথম দিন।
মরিয়ম মনে মনে ভাবছে সামিরা মিথ্যা সাক্ষী কেন দিলো?? নিশানের সাথে সামিরার আবার কি শত্রুতা ছিল?? নাকি ট্রাফে পড়ে এমন কাজ করেছে সে?? মরিয়ম প্রতিটা স্টুডেন্টের এ্যাডরেস ভার্সিটি থেকে কালেক্ট করেছে। তাদের সবার বাসায় যাবে সে এবং এ ব্যাপারে কথা বলবে!! আর সেই কাজি অফিস টা হঠাৎ উধাও হয়ে গেছিল কোথায়?? সেটাও জানতে হবে।
সারা দিন মরিয়ম কেইস টা নিয়ে ভাবতে থাকে,, কাল থেকে তার জার্নি শুরু।
মরিয়ম রাতের খাবার তৈরি করছে তারা এখন নিজেদের বাসাতেই আছে। নিশান তাদের রিকুয়েস্ট করেছে তাদের বাসাতেই থাকতে।
মরিয়ম আর মেহমেতের পুরো পরিবার এক সাথেই রয়েছে। মা বাবার চিন্তার অন্তি নাই। মরিয়ম মা তো তাকে বলেছিল আবার,যে ছেলেটা তাদের সকল সম্পত্তি গ্রাস করছে অবৈধ ভাবে তার কেইস আবার হ্যান্ডেল করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কেন?? মরিয়ম প্রতিউত্তরে মুচকি হেসে বলেছিল, নিশান পরিস্থিতির শিকার। তা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর এই সম্পদ কোন টাই কারো হস্তে যায়নি চিন্তা করো না। তোমার মেয়ের উপর ভরসা রাখতে পারো । এতো টুকু তো মেয়েকে চিনো নাকি যে তোমার মেয়ে কখনো অন্যায় কে সাহায্য করে না । হুমম বুঝলাম, কি বুঝলে?? তোমাকে কিছু বলে লাভ হবে না,যা ভালো বোঝো করো । কিন্তু কোন বিপদে যেন না পড়ো। জীবনের প্রথম কেইস, সাবধানে চলা ফেরা করবে উল্টা পাল্টা কোন ঝুঁকি নিবে না। মায়ের কথা তো শুনো না। নিজের ছোট একটা মেয়ে আছে তাকে এখন দেখে রাখবে,সংসার সামলাবে তা না করে এখন জজ ব্যারিস্টার হতে চলেছো!! মেয়েরা কি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না মা?? হ্যাঁ পারে কিন্তু না করলে কি সমস্যা?? মা আমি পর্দার সাথে সব মেইনটেইন করার চেষ্টা করবো ওয়াদা করছি। মরিয়মের মা মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো,, নামাজ যেন কাজা না হয় সেই দিকেও খেয়াল রাখবে বুঝেছো??
হুমম।
মিহিরিমা কোলাহলে সারা বাড়ি মুখোরিত
,, ছোট মিহিরিমা খুশিতে গদগদ হয়ে থাকে সারাটা দিন,তার দাদু নানু সবাই তার সাথে থাকছে বলে। মিহিরিমার দুষ্টুমি ও বেড়ে গেছে ইদানিং। মরিয়ম মিহির পিছনে ছুটছে , খাবারের জন্য। মেয়ে টা সারা দিন ঠিক মতো খায় না। মরিয়ম নিজেও সময় দিতে পারছে না মিহি কে। কিন্তু ফ্রি টাইমে মেয়ে কে নিয়ে গল্পে বসতে ভোলে না সে।
।
মরিয়ম খানিক রাগ মিশ্রিত কন্ঠে মিহি কে বকছে,,মিহি, দাঁড়াও বলছি!! খাবার টা শেষ না করলে কিন্তু মাইর দিবো আজ কে তোমাকে,,মিহি আদুরে ভঙ্গিতে চেয়ারে পিছনে লুকিয়ে বলছে
আম্মু মিহির আর খেতে ইচ্ছে করছে না! প্লিজ আমি খাবো না!! আপনি এগুলো খেয়ে নেন। মা বলছি বেরিয়ে আসো!! আম্মু কে হাঁপিয়ে ফেলেছো তুমি! বুঝতে পারছো! আম্মূ না না। আর একটু বাকি আছে দেখো, আচ্ছা আর এক লোকমা তাহলে আজ তোমাকে রাতে অনেক গল্প শুনাবো!!
মিহি খুশি হয়ে বলে সত্যি তো!! নাকি মজা করছেন?? আমি সত্যি বলছি.. আচ্ছা তাহলে এখন খাইয়ে দিতে দিতে একটা রাজকুমারীর গল্প শুনাবেন আপনি… আচ্ছা শুনাবো বেরিয়ে আসো।
মিহি বেরিয়ে আসে,সোফা তে পা তুলে বসে, মরিয়ম মিহির মুখে এক লোকমা ভাত দিয়ে বলে,,
এক ছিল রাজকুমারী তার নাম হলো মিহিরিমা বুড়ি! সে খুবই দুষ্টু সব সময় আম্মু কে জ্বালায়,তাই একদিন আম্মু রাজকুমারী কে শাস্তি দিলো,,,
মিহিরিমা হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে,, মরিয়মের গল্প শুনে। হঠাৎ তার ফোন বেজে উঠে। নিশান ফোন দিয়েছে। জরুরী ভাবে তার আর মেহমেতের সাথে দেখা করতে চায়।
একটা ক্যাফে তে সামানা সামনি টেবিলে মরিয়ম আর মেহমেত নিশান আর মিহিরিমা বসে আছে। নিশান মিহিরিমা কে কোলে করে নিয়ে আছে। মিহিরিমার স্নিগ্ধ চেহারা দেখে নিশানের বুকে এক সূক্ষ ব্যাথার অনুভূতি হয়, তাদের ও তো এমন ফুটফুটে সন্তান হতো শাহানা বেঁচে থাকলে। আর সেই ছোট্ট বাচ্চা পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখতো। মা বাবার সাথে খেলতো।নির্জনীর সাথে দুষ্টুমি করতো।
আরো কত রঙিন স্বপ্ন যে তাদের অসমাপ্ত জীবন পাতায় বন্দি রয়ে গেল।
মিহিরিমার আইসক্রিম খাওয়ার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে নিশান। চোখের কোণে জমে থাকা অশ্রু বিন্দু,ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে মুছে নিল সে। মরিয়ম আর মেহমেত নিশানের কষ্ট টা উপলব্ধি করতে পারলো। তারা নিস্পলক তাকিয়ে আছে নিশানের দিকে। নিশান একটা কাগজ এগিয়ে দিল মরিয়মের দিকে। মরিয়ম কপালে ভাঁজ টেনে বলে! কিসের পেপার এটা?? নিশান নিঃসংকোচিত ভাবে হেসে বললেন,,সকল সম্পত্তি আবার তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দিলাম আমি। মরিয়ম হাসলো ! কিছুই বললো না। মনে মনে ভাবলো। নিশান সম্পর্কে কোন কিছু না জানাই সে অজানা এক ভয়ে ,সেই সমস্ত সম্পত্তি সে আগেই বাঁচিয়ে নিয়েছিল। আসলে সেদিন কাগজে সে দেখেছিল যে সকল সম্পত্তি মেহমেত নিজের নামে করতে যাচ্ছে তাই নিজে একটা উইল তৈরি করে যেখানে শুধু মাত্র ১২ঘন্টার জন্য মেহমেত পুরো সম্পত্তির মালিকানা ছিল। ১২ঘন্টা পর সেই সমস্ত সম্পত্তি আবার হামিদ খানের নামেই চলে যাবে। আর ১২ ঘন্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর নিশানের উইলে সাইন করে মেহমেত আসলে তখন তার নামে কোন সম্পদই ছিল না। তাই সেটা নিশানের নামে হয়ে যায়নি। মরিয়ম সব জেনে ও শুধু চুপ ছিলো নিশান কে সামনে নিয়ে আসার জন্য।
তবু ও সে কাউকে কিছু বললো না এব্যাপারে।
নিশান মাফ ও চাইলো সব কিছুর জন্য। মেহমেত নিশানের হাত ধরে বলে,মাফ চাওয়ার কিছু নেই। তুই যে এখন আর আমায় ভুল বুঝিসনি এতেই আমি অনেক খুশি।
নাহ আমি অন্যায় করেছি তোর সাথে অনেক বড় অন্যায়। এর জন্য তুই যা শাস্তি দিতে চাস,আমি সয়ে নিবো সব। মেহমেত অশ্রুসিক্ত নয়নে বলল। বন্ধুত্বে কোন শাস্তি থাকতে পারে না। তুই যা করেছিস তা শুধু মাত্র পরিস্থিতির শিকারে করেছিস। নিশান চোখের পানি মুছে বলল। সব হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হয় প্রিয় বন্ধু টা রয়ে গেছে। মেহমেত মুচকি হেসে বলে,আমি সকল পরিস্থিতি তোর পাশে আছি। হয়তো তোর সব থেকে দূর্গম পরিস্থিতিতে আমি তোর পাশে থাকতে পারিনি কিন্তু এখন আছি। আর সব সময় থাকার চেষ্টা করবো।
হঠাৎ নিশানের ফোনে একটা মেসেজ আসে,সে মেসেজ টা অপেন করেই মুখের অভিব্যক্তি বদলে বলে,,একটা গুড নিউজ আছে? মেহমেত আর মরিয়ম আগ্রহের সাথে বলে, আফজাল শরীফের খোঁজ পাওয়া গেছে। গোপনে নিশান,অনিত আফজাল শরীফ আর শিরীনের খোঁজ চালিয়েছে। ২মাস পর খোঁজ পাওয়া গেছে শুধু আফজাল শরীফের।
শাহানা মারা যাওয়ার ২মাস পর শিরীন কে নিয়ে পাড়ি জমান বিদেশের উদ্দেশ্য। তখন করা ভাষ্যমতে আফজাল শরীফ আর শিরীন নাকি বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। এখানে থাকলে নাকি তার দম বন্ধ হয়ে আসবে। এমন নানান বাহানায় দেশ ছাড়েন তারা।
এবং তার পর থেকে শিরীন কে আর দেশের মাটিতে দেখা যায়নি। তবে আফজাল শরীফ আর অনিত এখানে এসেছিল বহুবার।
হয়তো নতুন কোন কু কর্ম করার জন্য এখানে আসা। নতুবা তাদের নিকৃষ্ট মানুষরা কেনি বা আসবে।
মেহমেত উত্তেজিত কন্ঠে বলে কোথায় আছে আফজাল শরীফ এখন?? মুম্বাই শহরের নাকি। আমি আজ রাতেই রওনা হবো। তুই কি আর্জেন্টলি কোন ব্যাবস্থা করতে পারবি। মেহমেত চিন্তিত স্বরে বলে। এক দিনের মধ্যে কিভাবে সব সম্ভব হবে?? পাসপোর্ট ভিসা এসব করতে তো সময় লাগবে। প্লিজ কিছু একটা ব্যাবস্থা কর। আমি কোন সময় নষ্ট করতে চাই না। আচ্ছা! আমি দেখছি কি করা যায়। তুই চিন্তা করিস না। নাহলে ফেইক কারো পাসপোর্ট ভিসা তে হলেও আমি ব্যাবস্থা করবো। তবে একলা আমি যেতে দিবো না তোকে। সাথে আমিও যাবো। মাথা ঠিক আছে তোর?? আমি কোন বিপদে তোকে আর ফেলতে পারবো না।
চলবে_____?????
গত কাল পর্ব না দেওয়ার কারণে আজ দুই পর্ব দিলাম। 🥰🥰
কেমন হয়েছে জানাবেন। অতি শীঘ্রই শেষ হতে সমাপ্ত হতে চলছে।
চলবে____????
ইনশাল্লাহ আগামী পর্ব থেকে রহস্য শেষ হয়ে যাবে!!