#মিস্টার__সিনিয়র
#পর্বসংখ্যা_১০
®ফিহা আহমেদ
“এখানে কেন নিয়ে আসলেন আপনারা আমায় ? (পরশি)
“বাড়ির ভিতর গেলে সব ক্লিয়ার হয়ে যাবে তোমার”। (নিহান)
সবাই একসাথে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করলো। সবাই প্রবেশ করতেই একটা বাচ্চা মেয়ে এসে পরশির হাঁটু জড়িয়ে ধরলো। হঠাৎ এমন হওয়াতে পরশি ভয় পেয়ে গেল। তারপর নিজেকে সামলিয়ে পরশি বললো,,,
“কে তুমি পিচ্চি ?
পরশির কথায় বাচ্চা মেয়েটি মুখ তুলে পরশির দিকে তাকালো। মেয়েটির মুখ দেখতেই পরশি আ/শ্চ/র্য হলো।পরশি মেয়েটিকে কোলে তুলে নিলো।
“কেমন আছো সিফা?
“ভালো আতি পরতি তুমি তেমন আতো ? (সিফা)
সিফার কথা শুনে সবাই মুখ টিপে হাসছে। কিন্তু পরশি মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
তখন সেদিনকার মহিলাটি পরশির সামনে হাসিমুখে এসে দাঁড়ালো।
“তোমার সব প্রশ্নের উওর দেওয়া হবে আগে বসো।
আমি রুবি নিহানের বোন হই” ।
পরশি কিছু না বলে তাকিয়ে আছে কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না। নয়ন পরশিকে সোফায় বসিয়ে দিল।
“আমি সবটা বলছি তারপর তুমি সব বুঝতে পারবে” । (নয়ন)
পরশি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।
“ভার্সিটির প্রথম দিন তুমি সিফাকে বাঁচিয়েছ।সেদিন তোমার কথা রুবি আপু বলেছে কিন্তু চিনতে পারিনি আমরা কেউ। কিন্তু জোভান প্রথম দিন তোমায় পুকুরে ফেলেছিল তখন নিহান দুষ্টুমি করে তোমার আর জোভানের ছবি তুলে রেখেছিল।তারপর আবার তুমি সেদিন বিকেলবেলা আবার সিফাকে বাঁচিয়েছ।আজ সিফা নিহানের ফোনের গ্যালারি ফটো দেখছিল।তখন তোমার আর জোভানের ফটোটি দেখে সিফা নিহানকে বলে মামা এই মেয়েটা আমায় বাঁচিয়েছে। নিহান তো তোমায় চিনে সব ক্লিয়ার হয়ে গেল মেয়েটি আর কেউ নয় আমাদের সবার পরশি।নিহান তখন রুবি আপুকে বলেছে আমি তো এই মেয়েটাকে চিনি আপু।তখন রুবি আপু অনেক করে বলছিল তোমায় আজ নিয়ে আসতে তাই নিয়ে আসলাম” । (নয়ন)
সব শুনে পরশির মুখ হা হয়ে গেল।
“কিন্তু আমার থেকে তো ওই লোকটি সিফাকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিল ওইদিন”। (পরশি)
“লোকটি পুলিশের সামনে পড়াতে সিফাকে রেখে পালিয়ে গেছে।তখন নিহান আর রুবি আপু খুঁজতে খুঁজতে পুলিশের কাছে গেল।তখন পুলিশ সিফাকে দেখিয়েছিল। এইভাবে সিফাকে আমরা পেয়েছি”। (নয়ন)
“একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে কি শএুতা তার ? (পরশি)
“সেটা তো ওই লোক ই বলতে পারবে। কয়দিন পর পর সিফাকে পাওয়া যায় না। সিফার কাছ থেকে সরে গেলেই সিফাকে কিডন্যাপ করে ফেলে। তার অবশ্য বিশেষ কারন ও আছে। সিফার বাবার মৃত্যুর পর সব সম্পওির মালিক সিফা এই জন্য মেয়েটার আজ এই অবস্থা। (নয়ন)
সব শুনে পরশির অনেক খারাপ লাগলো। কিছুক্ষন চুপ থেকে পাশে তাকাতেই দেখে জোভান গালে হাত দিয়ে এক দৃষ্টিতে পরশির দিকে তাকিয়ে আছে। পরশি চোখ নামিয়ে ফেললো।
“আমার বাড়ি যাওয়া দরকার দেরি হলে আমার সমস্যা হবে”৷ (পরশি)
তখন রুবি এসে বললো,,,,
“না খেয়ে যেতে দিচ্ছি না তোমায়”।
রুবি জোর করে পরশিকে খাইয়ে দিল। যাওয়ার আগে পরশিকে জড়িয়ে ধরে বললো,,,,,
“আমি তোমার আরেকটা বোন। কোনদিন কোনো সমস্যায় পড়লে আমার কাছে এসো আমি তোমার পাশে আছি”।
পরশিকে জোভান বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে চলে গেল।
_____
“কিরে নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছিস যে বাড়ি যাবি না? (নিহান)
“অটোর জন্য দাঁড়িয়ে আছি”। (নয়ন)
“অটো যেহেতু পাচ্ছিস না চল হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি”। (নিহান)
“এই সন্ধ্যায় তুই হাঁটাবি আমায়। আমার পা ব্যথা আমি হাঁটতে পারব না”। (নয়ন)
“বললেই তো হয় আমার কোলে উঠতে মন চায়”। (নিহান)
“মানে তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেল। কি বলছিস এইসব তুই নিহান”। (নয়ন অবাক হয়ে বললো)
“আরে মজা করেছি”। (নয়ন)
“অটো চলে এসেছে আমি যাই নিহান” । (নয়ন অটোতে উঠে বললো)
নিহান কিছু বললো না। মন খারাপ করে নয়নের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
_____
পরশি বাড়িতে ডুকে দেখলো বাড়ির সব আলো বন্ধ। পুরো বাড়ি একদম অন্ধকার হয়ে আছে।এতো অন্ধকার দেখে পরশির ভয় লাগতে শুরু করলো।পরশি ভয়ে ভয়ে বলে উঠলো,,,,
“জেঠু, ইয়ানা আপু, দাদী তোমরা সবাই কোথায়? সবাই কি শপিং করতে চলে গেল নাকি আমার সাথে মজা করছে। খুব ভয় লাগছে”। (পরশি)
পিছন থেকে একটা কারো উপস্থিত অনুভব করলো পরশি।পরশি ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকালো। কিন্তু কেউ নেই। হঠাৎ পিছন থেকে কেউ পরশির গলা টিপে ধরলো। হঠাৎ এমন আক্রমনে পরশি ভয় পেয়ে গেল তার ওপর গলা টিপে ধরেছে৷ পরশি ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু লোকটি কিছুতেই পরশিকে ছাড়ছে না।বাহিরে থেকে গাড়ির শব্দ আসতেই লোকটি পরশিকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে চলে গেল সেখান থেকে।
পরশি গলায় হাত দিয়ে কাশতে কাশতে আলো জ্বালালো। তখন ইয়ানা, মিসেস লিমা,আহাদ সিকদার আর মিসেস শিখা বাড়িতে প্রবেশ করলো। পরশিকে গলায় হাত দিয়ে কাশতে দেখে ইয়ানা টেবিল থেকে পানি নিয়ে পরশির সামনে ধরলো।পরশি পানির গ্লাস নিতে যাবে ইয়ানা পানির গ্লাস সরিয়ে নিয়ে বললো,,,,
“আহারে খুব তেষ্টা পেয়েছে বাবুটার তাই না।নে নে পানি নে”।
ইয়ানা পানির গ্লাস ওপর নিচ করতে লাগলো।এক পর্যায়ে ইয়ানা পরশির মুখে পানি ছুঁড়ে মারলো। পরশি স্তব্ধ হয়ে গেল ইয়ানার কাজে।টলমল চোখ ইয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে।
“সেকেন্ডে সেকেন্ডে রূপ বদলিয়ে ফেলে এরা” । (পরশি মনে মনে বললো)
_____
জোভান আর জিহা বাড়িতে পৌঁছে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করতে যাবে তখন ওরা অনেকগুলো মেয়েকে তাদের বাড়ির ভিতর ঝগড়া আর মারামারি করতে দেখলো।জোভান আর জিহা দরজার আড়ালে লুকিয়ে পড়লো।
“ভাই এইগুলো তো সব তোর গার্লফ্রেন্ড”। (জিহা ফিসফিস করে বললো)
“এখন কি হবে জিহা বোন আমার” । (জোভান কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো)
জোভানের কাঁদো কাঁদো চেহারা দেখে জিহা মুখ টিপে হাসছে। জিহাকে হাসতে দেখে জোভান রাগী দৃষ্টিতে জিহার দিকে তাকালো।
“আমি বিপদে আর তুই হাসছিস” । (জোভান)
“বিপদে পড়ার মতো কাজ করলে বিপদে তো পড়বেই ভাই আমার”। (জিহা)
“চুপ কর তো। দেখি কি হচ্ছে ওখানে”৷ (জোভান)
“চল দেখি” । (জিহা)
.
“জোভান আমায় ভালোবাসে ডাইনি তোকে না” । (১ নম্বর জন)
“জোভান আমায় বলেছে ও আমায় ভালোবাসে পেত্নী” । (২ নম্বর জন)
“জোভান তোদের কাউকে ই ভালোবাসে না আমায় ভালোবাসে” (৩ নম্বর জন)
“তোদের নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখেছিস ওয়াক থু। দেখলেই বমি আসে। জোভান তোদের মতো মেয়েদের কখনো ই ভালোবাসবে না। আমায় দেখ আমি কতো কিউট জোভান আমায় ভালোবাসবে”। (৪ নম্বর জন)
চতুর্থ মেয়েটির কথায় প্রথম মেয়েটি রেগে গিয়ে চতুর্থ মেয়েটির চুলের মুঠি ধরে বলে,,,,,
“তোকে প্রতিবন্ধীদের মতো লাগে বেয়াদব মেয়ে।
আবার চতুর্থ মেয়েটি প্রথম মেয়েটিকে কামড় বসিয়ে দেয় হাতে।শুরু হলো মারামারি। এসব দেখে ভয়ে জোভানের অবস্থা খারাপ।
“ভাই তুই আজ বাড়ি থেকে চলে যা। না হয় আম্মুর মার আছে তোর কপালে।সবকিছু শান্ত হলে তোকে আমি বাড়িতে আসতে বলবো”। (জিহা চিন্তিত হয়ে বললো)
“ঠিক আছে আমি নিহানের বাসায় যাচ্ছি। তুই এইদিকটা সামলা”। (জোভান)
জোভান একরকম চোরের মতো বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল।
এইদিকে হঠাৎ কারো ধমক শুনে সব মেয়েগুলো চুপ হয়ে গেল।
“কারা তোমরা আর এমন মারামারি করছো কেন? (মিসেস স্বর্ণা রেগে বললো)
সবগুলো মেয়ে একসাথে বলে উঠলো ,,,,,
“আপনার বাড়ির হবু বউ”।
‘
চলবে…..
_____
(বানানে ভুল-ক্রটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)
‘
(গল্প পড়ে সবাই লাইক – কমেন্ট করবেন। নাইচ,নেক্সট না বলে গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ।পাঠক-পাঠিকাদের ভালো রেসপন্স ফেলে পরবর্তী পর্ব দেওয়া হবে।)
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]