তুই যে শুধুই আমার পর্ব ১৮

#তুই_যে_শুধুই_আমার [❤You are only mine❤]
#Part_18
#Writer_Tanzin_Islam_Ishika [Asfiya Islam Jannat]

সায়রা আর আরুশের খাওয়ার শেষে সায়রা সব গুছিয়ে রুমে যায়,, রুমে ঢুকতেই যা দেখলো তাতে সায়রা জোরে এক চিৎকার দিল,,,

সায়রাঃ আয়ায়ায়ায়া,,

সায়রার চিৎকার শুনে আরুশ হতভম্ব হয়ে তারাতারি সায়রার কাছে আসে,, আর ওকে বলে,,

আরুশঃ কি হয়েছে,, এমন ভাবে চিৎকার দিলে কেন,, কোথায় ব্যথা পাওনি তহ,,

সায়রা কিছু না বলেই আরুশকে জাপ্টে ধরে,,, এতে আরুশ খানিকটা শকড হয়,, কেন না সায়রা তহ নিজ থেকে কাছে আসার মানুষ না,, আরুশ সায়রার মুখে তাকিয়ে দেখে ওর চোখ মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট,, আরুশ বুঝে উঠতে পারছে না সায়রা এমন দেখলো যে ও এত ভয় পাচ্ছে,,

আরুশঃ কি হয়েছে,,, এইভাবে ভয় পাচ্ছ কেন,, বলো আমাকে,,

সায়রাঃ ও,,,ও,,ও,,ইইই,, খানে,,

আরুশঃ কোনখানে,,

সায়রা এক আঙুল দিয়ে সামনের দিকে ইশারা করে,, আরুশও সেইখানে তাকায়,, আর বুঝার চেষ্টা করে আসলে কি দেখে সায়রা এত ভয় পাচ্ছে,, আরুশ ভালো মত পর্যবেক্ষণ করার পর সে বুঝতে পারলো সায়রার এমন ভয় পাওয়ার কারন,, আরুশ তখন হো হো করে হেসে উঠে,,, হাসতে হাসতে ওর দম বন্ধ হয়ে আসতাসে,, অনেক কষ্টে নিজের হাসি থামিয়ে বলে,,

আরুশঃ তুমি আর শুধরএ না,, তুমি সেই আগের মত ওই আরশোলাকে দেখে আবার ভয় পাচ্ছ,,,

সায়রা মুখ কাচু মাচু করে বলে,,
সায়রাঃ হু,,

আরুশঃ হাইরে,,, তুমিও না,,এই বলে আবার হাসতে থাকে,,

[ সায়রা ছোট থেকে আরশোলাকে অনেক বেশি ভয় পায়,, ভয় পায় বললে ভুল হবে,, যমের মত ভয় পায়,, যেখানে আরশোলা দেখবো সেখানেই সায়রা চিল্লা পাল্লা শুরু করে দেয়,,
একবার সে রুমে আরশোলা দেখসিল,, তা দেখে কি চিল্লানি,, ভয়ে সায়রা ওদের বাগানের গাছের উপর উঠে আরশোলা আরশোলা চিৎকার করে করে পুরো মহল্লাকে এক করসিল,, সবাই তহ ভাবসিলো হয়তো ডাকাত পরসে,, কিন্তু পরে জানতে পারে আসল কাহিনি,, সারাদিন গাছের উপর বসে ছিল,, সেইদিন আরুশ ওকে অনেক কষ্টে গাছ থেকে নামায়,, কিন্তু ওই দিনের পর ওই ওর রুমেই যায় নি,, রুম চেঞ্জ করে ফেলসিলো এই বলে যে ওইখানে আরশোলা আসে,,
এখনও আরশোলা দেখলে ভয় পায়,, আগের চেয়ে একটু কম কিন্তু তাও দেখলে চিৎকার করে করে মাথা নষ্ট করে ফেলে,, ]

সায়রাঃ প্লিজ সরিয়ে দাও না,,, আমার অনেক ভয় করতাসি,, প্লিজ,,

আরুশ কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল,, তারপর কি জানি ভাবলো,, ভাবা শেষেই ওর মুখে এত দুষ্টু হাসি ফুটে উঠে,,

আরুশঃ আমি সরাইয়া দিতে পারি বাট এতে আমার লাভ কি,,

সায়রাঃ আরেহ ভাই এইখানে আমার জান পরনের কথা আর তুমি আসো তোমার লাভ নিয়া,,

আরুশ ভাই শব্দটা শুনে রেগে গিয়ে বলে,,

আরুশঃ ওই আমি তোর ভাই লাগি এখন,, যে আমারে ভাই কইতাসো,,

সায়রাঃ আরেহ ভাই থুক্কু আমার পেয়ারা জামাই,, পেরে পাতি পারমেসোয়ার,, আমার কথা এত কান না দিয়া ওই লিচুর বিচি থুক্কু ওই কালা কাঠাল,, ধ্যাত কি কইতাসে,, ওই আরশোলারে সরাও,,,

আরুশঃ হুহ সরামু না,,

সায়রা এখন কাদো কাদো হয়ে বলে,,
সায়রাঃ জামাই ও জামাই এমন কয় না,, তুমি বাদে আমার এই রুমে এখন আসেই বা কে বলো,, প্লিজ সরাইয়া দাও না,,

আরুশঃ আচ্ছা সরিয়ে দিব,, কিন্তু এর বদলে আমি যা যা বলবো তা কিন্তু তোমায় করতে হবে,,

সায়রাঃ তুমি যা বলবা তাই করুম,,, পারলে আকাশের নক্ষত্র থুক্কু তারা আইনা দিমু,, তাও সরাইয়া দাও,, প্লিজ প্লিজ,,,
[সায়রা নিজের মধ্যে নেই,, ওই কি বলতাসে না বলতাসে তার কোন জ্ঞান নেই,, ওর তহ এখন পুরা এটেনশন ওই আরশোলার দিকে,, যেমনেই হোক ওইটা সরাইতে হইবো,, জান দিয়া হইলেও সরাইতে হইবো]

আরুশঃ মনে থাকে যেন,,

সায়রাঃ হু,, প্লিজ সরাও,,,আমার ভয় করতাসে,,

আরুশ সায়রাকে নিজ থেকে সরিয়ে,, একটা খালি কোন্টেইনার খুঁজে বের করে,, তারপর তা নিয়ে ওই আরশোলার সামনে যায়,, তারপর ওইটারে ধরে ওই কোন্টেইনার এ ভরে বাইরে রেখে আসে আর হাত ধুয়ে নেয়,,
পরে সায়রার সামনে এসে দাড়ায়,,

আরুশঃ নাও সরাইয়া দিসি,,

সায়রা যেন এইবার হাফ ছেড়ে বাঁচে,, অতঃপর একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,,

সায়রাঃ থেংক ইউ,,,

আরুশঃ থেংক ইউ দিলে কাজ হইতো না,, মনে আসে না কি বলসিলাম,, আমি যা যা বলবো তা কিন্তু তোমায় করতে হবে,,

সায়রাঃ কখন,, অবাক হয়ে,,

আরুশঃ বাহ এত তারাতারি ভুলে গেলে,, একটু আগেই তহ বলসো,,

সায়রা মনে করার চেষ্টা করে,, তখন তার মনে পরে যে তখন কি বলসিল,, সব মনে করেই সায়রার মুখ ছোট হয়ে যায়,,, সে জানে এখন বাঁচার কোন উপায় নেই,, তাই সে কাচুমাচু হয়ে আমতা আমতা করে বলে,,
সায়রাঃ কি করতে হইবো,,

আরুশঃ তা আস্তে আস্তে জানতে পারবা,, আপাতত এখন আমায় কিস করলেই হবে,,

সায়রাঃ কিইইইইইইইইই,,, কোন দিনও না,, আমি তোমায় কিস করতে পারবো না,,

আরুশঃ তুমি কিন্তু বলসো আমি যা যা বলবো তা কিন্তু তোমায় করবা,,

সায়রাঃ বলসি ঠিক আসে কিন্তু তাই বলে কিস করতে পারবো না,,

আরুশঃ বুঝে বলতাসো তহ,,

সায়রাঃ হুম

আরুশঃ আরশোলাটা কিন্তু বাইরে ফালাইনি,, এখন কিন্তু ওই কোন্টেইনার এ বন্ধি আসে,, কথা না শুনলে কিন্তু তোমার উপর ছেড়ে দিব,,,

সায়রাঃ এএএএএএএএএ

আরুশঃ হেএএএএ,,

সায়রাঃ তুমি এমন করতে পারো না,, কাদো কাদো হয়ে,,

আরুশঃ আমি ঠিক কি কি করতে পারি তা তুমি ভালো করেই জানো,, এখন বলো কিস করবা নাকি,,

সায়রাঃ করতাসি তহ,,

আরুশঃ গুড হারিয়াপ,,

সায়রা আস্তে আস্তে আরুশের দিকে এগিয়ে যায়,, ওর সামনে এসে ওর গালে হাল্কা ভাবে ঠোঁট ছুঁয়ায়,, স্বরে আসতে নিলেই আরুশ সায়রার কোমড় জরিয়ে ধরে ওর ঠোঁট দুটো দখল করে নেয়,,,
কিছুক্ষণ পরে ওকে ছেড়ে দিয়ে আরুশ খাটে গিয়ে শুয়ে পরে,, আর সায়রা সেখানেই হ্যাং মেরে দাড়িয়ে থাকে,, সে বুঝার চেষ্টা করে ওর সাথে আসলে হলো টা কি,, যখন বুঝতে পারে তখন সায়রা রাগি চোখে আরুশের দিকে তাকায়,, আর আরুশ সে আরামসে পায়ের উপর পা তুলে তুলে গুন গুন করতে থাকে,,

“🍁 এক সুন্দরী মাইয়া
আমার মন নিলো কারিয়া
পারো যদি তোমরা তারে
দাও গো আনিয়া,,,
এক সুন্দরী মাইয়া
আমার মন নিলো কারিয়া,,
পারো যদি তোমরা তারে
দাও গো আনিয়া 🍁 ”

এই গান শুনে সায়রা যেন জ্বলে পুরে বেগুন,, সায়রা রাগে ফুসতে ফুসতে ধুপধাপ করে সোফায় গিয়ে শুয়ে পরে,, আর কি জানি বির বির করতে থাকে,, কিছুক্ষণ পর সায়রা অনুভব করে সে আকাশে ভাসতাসে,, অতঃপর সে বুঝতে পারলো আরুশ তাকে কোলে নিয়েছে,, সায়রা হাত পা ছুটাছুটি শুরু করে দেয়,, আরুশ সেই দিকে তাকোয়া না করে সায়রাকে শুয়ে দেয়,, আর নিজেও ওর পাশে শুয়ে ওকে বুকে জরিয়ে নেয়,, সায়রা তখনো ছুটাছুটি করেই চলেছে,, তা দেখে আরুশ রেগে বলে,,

আরুশঃ আরেকবার যদি এমন মোচড়া মোচড়ি করসো,,, বাইরে থেকে ওই আরশোলাটা এনে সোজা তোমার শরীরে ছেঁড়ে দিব,,,

এইবার সায়রা কাচুমাচু হয়ে যায়,, সে জানে এখন কথা না শুনলে আরুশ সত্যি এইটাই করবে,, তাই কিছু না বলে চুপটি করে ওর বুকে শুয়ে থাকে,, একসময় ঘুমিয়েই পরে,, আরুশ সায়রার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,,

আরুশঃ যাহ এই আরশোলার জন্য তোমায় কাছে তহ পেলাম,, চিন্তা করো না খুব জলদি তোমার এই সকল রাগ আমি দূর করে দিব,,, সব সময় আগলে রাখব তোমায়,,যত দিন বেঁচে থাকবো তত দিন আমার এই বুকে তোমায় আগলে রাখব,,

আরুশ সায়রার কপালে ভালবাসার এক স্পর্শ একে ওকে জরিয়ে ধরে শুয়ে থাকে,,,



#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here