#তবুও_চাই_তোকে🍂
#আভিরা_রয়🍁
#Part_4
🍂🍁
.
রুদ্র: জাস্ট সাট আপ একদম হাসবিনা আর এখানে কি সার্কাস চলছে কোন কাজ নেই তোমাদের গো টু ইওর ক্লাসেস আর নিজের কাজে মন দাও এক মিনিটের মধ্যে জানি এখানে কোন ভির আমি দেখতে না পাই😡😡!!
.
কুহু: রুদ্র শান্ত হ!! আর সবাই যে যার নিজের কাজে মন দাও। আর তোদেরও বলিহারি কেন বেচারা কে রাগাচ্ছিস এমনিতেই ওর ফোনের ব্যান্ড বেজে গেছে।আচ্ছা শান্ত তুই তখন কি যেন বলছিলি কি আন্টি টাইপের মেয়ে🙄🙄 কি হয়েছে রে বল আমাদের ওতো জানা দরকার খালি রুদ্র কে বললেই হবে?? আমরা তো শুনি আর কি কি কান্ড ঘটিয়েছে একদিনের মধ্যে এই মেয়েটা😕😕
.
অভ্র: হ্যাঁ আমিও তো তাই জিজ্ঞেস করলাম।। আচ্ছা শান্ত মনে হচ্ছে তো সবকিছু জানিস বলতো মামা কি কি হয়েছে সকালে!!!
শান্ত একে একে সকালের সব কথা খুলে বলল। সব কথা শুনে তো সবাই তো অবাক🤯🤯
.
অভ্র: বাপরে বাপ মেয়েটা তো ডেঞ্জারাস। এক দিনেই এত ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে!!
.
এর মধ্যেই রোজ আর এন্ডি ওদের কাছে চলে এলো
.
শান্ত: আরে দেখ দুটো মেয়ে দিকে আসছে এই দুটো ওই মেয়েটার সাথে ছিল না🤨🤨
.
রোজ: ফোনটা মাটি থেকে তুলে এন্ডি দেখেছিস ফোনটার কিচ্ছু আস্ত নেই রে😫😫 এই মেয়েটা যে এত রাগ কোথা থেকে পায় আর নিজেও তো সরি বলবে না আমাদেরকে এখন বলতে হবে।
সরি ভাইয়া মনে তো হচ্ছে ফোনটা আপনার, একচুয়ালি ও রাগের মাথায় কি করে বসে তার কোন ঠিক থাকেনা আর এক্সট্রিমলি সরি আমরা ওর পক্ষ থেকে আপনার কাছ থেকে সরি চেয়ে নিচ্ছি প্লিজ কিছু মনে করবেন না 🙂🙂
.
এন্ডি: হ্যাঁ ভাইয়া প্লিজ কিছু মনে করবেন না ওর পক্ষ থেকে আমরা আবার আপনার কাছে সরি চেয়ে নিচ্ছি।।
.
অভ্র: আরে এটা সেই মেয়েটা না, সকালবেলা আমাকে জানি কি বলেছিল হুম মনে পড়েছে সাদা হনুমান 😒😒 এরা কি এরকমই নাকি, সবকটার মাথা খারাপ?? সকালবেলা আমাকে একজন অকারণে গালি দিলো এখন অকারণেই রুদ্রের ফোনটা ভেঙে দিয়ে আরেকজন চলে গেল (মনে মনে)
.
কুহু:আরে ইটস ওকে বাট এমন ও কেন করলে সেটাতো বুঝে উঠতে পারছি না। একজনের সাথে একজনের ধাক্কা লাগতে পারে তাই বলে কি এমনটা করবে?? ওকে নো প্রবলেম আমরা কিছু মনে করিনি তোমরা আসতে পারো, রুদ্র তুই এতো কিছু বল রুদ্র দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে
.
রুদ্র:মানেটা কি তুই কি বলছিস ইটস ওকে মানে কি???আমি তো এটা বুঝে উঠতে পারছি না তোমরা কেন সরি বলছ, দোষ করল একজন আর তোমরা সবাই সরি বলছে ওর সরি বলতে কি হইছে?? আর আগে এটা বলো আমার ফোনটা কেন ভাঙলো কেন !!কত ইম্পর্টেন্ট ইম্পোর্টেন্ট ডকুমেন্ট আছে আমার ফোনে তোমরা কি জানো সেটা এখন এই ড্যামেজ ফোন দিয়ে আমি কি করবো😠😠?? বলেই ফোনটা ছুড়ে ফেলে দিল
.
এন্ডি: ব্রো আমরা ওর পক্ষ থেকে আবারও আপনাকে সরি বলছি। আর ওর সরি বলার আমাদের সরি বলার মধ্যে কোন তফাৎ নেই। ও পড়ে গেছে তার কারণে ও কিন্তু রাগটা করেনি রাগটা করেছে কারণ ওর ফেভারিট আইসক্রিমটা পড়ে গেছে। আর ওরা রাগটা একটু বেশি তাই একটু ওরকম বলে ফেলেছে আমরা আবারও সরি বলছি প্লিজ আর কিছু মনে করবেন না মনে রাখবেন ও না প্লিজ এমনিতে তো ও প্রচন্ড ভালো বাট রেগে গেলে কি করে বসে তার মাথায় থাকে না😓😓
.
রোজ:হ্যাঁ ভাইয়া আর কিছু মনে করবেন না
.
কুহু: রুদ্র মেনে যা না ভাই, আর তুই এমন কেন করছিস তুই তো এমন না ??? আর দেখ মেয়ে দুটো ভয় পাচ্ছে ছেড়ে দে না রে
.
শান্ত: কী বলছিস কী তুই কুহু এতো সহজে ছেড়ে দিবো ???
.
রুদ্র: ওকে ছেড়ে দিচ্ছি । আর শান্ত থাক বাদ দে। আর তোমাদের বলছি এবারের মত ছেড়ে দিলাম এর পরে জানি এরকম কিছু না করতে দেখি আর তোমাদের ফ্রেন্ডকে বলবে নিজের রাগের উপর একটু কন্ট্রোল করতে এরকম কোন কাজ না করে বসে
.
রোজ: থ্যাংক ইউ ভাইয়া আমরা যাচ্ছি এখন
.
এইদিকে হৃদি আর কেয়া রিয়ার কাছে চুপচাপ বসে আছে ওরা তো জানে এখন রিয়ার সাথে কথা বলা মানে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনা তার থেকে বরং আশু আসুক তারপরে ওর সাথে কথা বলা যাবে। এরমধ্যে আশু আইসক্রিম নিয়ে চলে এসেছে
.
কেয়া: আরে ওই শালা তোর আসতে এতক্ষন লাগলো জানিস এতক্ষণ কি চাপের মধ্যে বসে আছি আমরা…! দে তাড়াতাড়ি ওরে আইসক্রিমটা দে ওটা খেয়ে শান্ত হোক
.
আশু: আরে চুপ কর তো বন্ধ কর তোর বকবকজানি সেটা খুঁজে পেতে আমার কত কষ্ট করতে হয়েছে রিয়ু দেখ তোর জন্য আমি তোর ফেভারিট আইসক্রিম নিয়ে এসেছি
.
আইসক্রিম দেখে রিয়া তো প্রচন্ড খুশি হয়ে গেছে আইসক্রিমটা আশুর হাত থেকে নিয়ে বাচ্চাদের মত খেতে শুরু করে দিলো
.
হৃদি:দেখেছিস তোরা ওকে দেখে কে বলবে কিছুক্ষন আগেও এত বড় একটা কান্ড করে এসেছে!! দেখ এত কিছু করে শান্তি মনে বাচ্চাদের মত আইসক্রিম খাচ্ছে😅😅 ওদিকে রোজরা যে কি করছে কে জানে?? মানাতে পেরেছে কিনা ভাইয়াদের☹️☹️
.
রোজ: হুম পেরেছি প্রচন্ড কষ্ট হয়েছে মানাতে ..!এদিকে কি অবস্থা ও মনের সুখে আইসক্রিম খাওয়া দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা’ তোকে (রিয়ার হাত থেকে আইসক্রিমটা নিয়ে) কোন লাভ হল না কারণ এতক্ষণে রিয়া পুরো আইস্ক্রীম ফিনিশ করা শেষ😒😒
.
রিয়া: ওই তোর প্রবলেম টা কি তাড়াতাড়ি এদিকে দে ও শেষ হয়ে গেছে😁😁 এখন নিয়ে কি করবে তার পুরোটাই ফিনিশ করে ফেলেছি আরে আগে বলবি তো তোর জন্য একটু রেখে দিতাম তাহলে 😐😐আচ্ছা দাঁড়া আশু কে বলছি বলছি আশু ওর জন্য একটা আইসক্রিম নিয়ে আসতে পারলি না তুই দেখ না বেচারি আমার খাওয়াটা নিয়ে কেমন করে তাকিয়ে আছে🙄🙄
.
এন্ডি: হারামি আইসক্রিম এর কথা বলছে তাই না এদিকে আমাদের সবার অবস্থা বেহাল হয়ে গেছে আর ওদিকে আশুকে আইসক্রিম আনতে বলছে আচ্ছা তোর কি মনে আছে তুই একটু আগে কি ঘটনা ঘটে ফেলেছিস??
.
কেয়া: আচ্ছা ওদিকে সব তো ম্যানেজ হয়ে গেছে, এখন আমরা সবাই বাসায় যায় ঠিক আছে?? এসব কথা আর না তোলায় ভালো হবে ওকে হৃদি সব বুঝিয়ে দেবে আমরা বরং এখন সবাই যাই। আজ তো আর ক্লাস করা হবে না
.
আশু: একদম ঠিক বলেছিস আচ্ছা সবাই চলো যাই। হৃদি তোরা তো একসাথেই থাকবি তাই না
.
হৃদি: হুম রিয়ু আমি আর রোজ একসাথে হোস্টেলে থাকবো।
বলেই সবাই মিলে চলে গেল
.
এইদিকে রুদ্র আর ওর ফ্রেন্ডসরা মিলে কিছুক্ষণ গল্প করে ওরাও যে যার মতো করে বাড়ি চলে গেল
.
হোস্টেলে আসার পথে হৃদি আর রোজ মিলে রিয়াকে সব কথা বলল।
.
রোজ: চল আজ হোস্টেলে আমি যদি সুম্পিকে এসব কথা না বলেছি তাহলে দেখবি একমাত্র সুম্পি তোকে ঠিক করতে পারবে!!
.
রিয়া:প্লিজ প্লিজ প্লিজ দিদুকে এসব কিছু বলিস না।দেখ
তুই যদি দিদুকে এসব বলিস তাহলে আজ এত এত ঝারি খেতে হবে আমায়😥😥 আমি প্রমিস করছি নিজের রাগকে কন্ট্রোল করব আমি তবুও বলিস না🥺🥺
.
হৃদি:ইস প্রমিস করছে দেখো তুই কতবার আমাদের কাছে এই একটা কথাই বলেছিস বলতো প্রতিবার মাফ করে দিছি বাট এবার একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছিস তুই 😑😑
.
হোস্টেলে এসেই রোজ সুমিকে সব কথা বলে দিল
.
সুমি: বুনুন( রিয়া) তুই কি রে জানিস আজ কতো বড় একটা ব্লেন্ডার হয়ে যেতে পারত?? তুই জানিস ওটা কে রুদ্র আরিয়ান বস কলেজের ভিপি উনার কত পাওয়ার ভাগ্যিস কুহুদি ছিলো তাই তুই বেঁচে গেলি। উনার সাথে আজ অব্দি কেউ উঁচু গলায় কথা বলার সাহস পর্যন্ত করেনি কেউ আর তুই কিনা ওনার ফোন ভেঙে দিলি পারলে একটা সরি বলে দিস ওকে আর তোমরা নিজেদের কাজে লেগে পর সব গুছিয়ে নে আমি আসছি । আর বুনুন তুই টিউশনের কথা বলেছিলি না আমি ঠিক করে রেখেছি🙂🙂। কাল থেকে শুরু করে দিস আজকে সবাই রেস্ট নে ওকে
.
রিয়া: ওকে দিদু থ্যাঙ্ক ইউ😇😇 ।রোজ তুই ওদের সাথে কথা বলেছিস ওরা বাসা ঠিকঠাকমতো পৌঁছে গেছে কিনা কথা বলে নিস আমি শাওয়ার নিয়ে আসছি
(চলুন রিয়া শাওয়ার নিয়ে আসুক আর আমরা এই ফাকে ওর বিষয়ে সবকিছু জেনে নেই… রিয়া বিশ্বাস অনিন্দা বাবা-মার মেজো মেয়ে ওর আরও দুটো বোন আছে। মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির দুরন্ত মেয়ে। মধ্যবিত্ত হলে কি হবে ওর বাবা ওদের কোন চাহিদায় আজ পর্যন্ত অপূর্ণ রাখেনি । রিয়া যতদূর পারে ওর বাবাকে সাহায্য করে ওর বড় বোন অনামিকা বিশ্বাস বৃষ্টি আরো ছোট বোন দিয়া বিশ্বাস প্রিয়া। রিয়া ওর দিদিকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে আর ফ্যামিলির সবাই ওকে প্রচন্ড বেশি ভালোবাসে বলতে গেলে সবার চোখের মনি ও।ছোটবেলা থেকে রাগ,জেদ,ইগো,অ্যাটিটিউড এগুলোর ওর একটু বেশি কোথা থেকে পেয়েছে তার কোন ঠিক নেই।কিন্তু সব সময় যে এগুলো থাকবে তা না রাগের সময় সে প্রচন্ড রাগী কিন্তু এমনি সময় ওর মত নরম ভাল বলতে পারেন অনেক কেয়ারিং কেউ নেই।ও কিন্তু কারো প্রতি বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতে পারে না ঠিকই তবে রাগ করলে কিছু বলার নেই। যখন সে রাগ করে তখন কাছের মানুষ ছাড়া তাকে কেউ শান্ত করতে পারে না। আর যখন সব ঠিকঠাক থাকে তখন সবার সঙ্গে সে খুব ভালো, অনেক ভালোভাবে মিশে সবাইকে ভালো রাখতে চায়। প্রচন্ড মিশুক একটা মেয়ে সবার সঙ্গে খুব সহজে মিশে যেতে পারে এজন্যই স্কুল-কলেজ সবার খুব প্রিয় ছিল রিয়া। তার সম্পর্কেও সবাই জানত এ জন্য যখন সে লেগে থাকত তার কাছে খুব বেশি কেউ ঘেঁষছে না তার বেস্ট ফ্রেন্ড ছাড়া কিন্তু ওর বড় বোন প্রচন্ড শান্তশিষ্ট আর ছোট টাও। ছোট থেকে রিয়ার যা চাই তা ওকে দিতেই হবে আর ওর বাবাও কোনদিনও আর কোনও চাওয়া অপূর্ণ রাখেনি। ওর কাছে সবার আগে ওর ফ্যামিলি দেন ওর ফ্রেন্ডসরা। আর তখন যে দিদু দিদু করছিল ও হলো সুমি চৌধুরী ওর আর একটা দিদি বলতে পারেন ।সুমিকে রিয়া নিজের দিদি বলেই মানে আর সুমিও রিয়াকে নিজের বোনের মত ভালবাসে বোনের মতো বললে ভুল হবে তুই ওকে নিজের বোনই মনে করে আর সুমির বাবা মার কাছে রিয়া তাদের ছোট মেয়ে রিয়াও তাদের নিজের বাবা মার মতই ভালোবাসে)
.
বাড়িতে এসে রুদ্র কারো সাথে কোন কথা না বলে সোজা নিজের রুমে চলে। গেল এই কাহিনীতে বাড়ির সবাই বেশ অবাকই হয়ে গেছে!! কারণ রুদ্র কখনো এমন টা করেনা এসেই আগে মার সঙ্গে কিছুক্ষণ খুনসুটি করবে তারপর সে তার রুমে যাবে।
.
রুমে এসে রুদ্র নিজের মনে মনে ভাবছে……..
.
চলবে..?