#Happily_Married🔥
#Part_8
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida
।
।
ইস!এতো জোরে কেউ চিৎকার দেয়।(আলিফ কানে ধরে)
আমি বেড থেকে গায়ে দেয়ার চাদর নিয়ে শরীরে পেঁচিয়ে বললাম
লজ্জা করে না।একটা মেয়ের রুমে বিনা অনুমতিতে ঢুকতে!
কোনো একটা মেয়ে না নিজের বউয়ের রুমে ঢুকেছি।আর এখন আরো কিছু করতে পারি।
বলেই আলিফ বিছানা থেকে নেমে কাছে আসতে লাগলো।
এই দূরে দূরে।একদম কাছে আসবেন না।(আমি পেছনে যেতে যেতে)
এখন কেনো ভয় পাচ্ছো চড়ুই পাখি।খুব না পালানোর শখ।(আলিফ এগুতে লাগলো)
আপনারও তো ধরার শখ।(আমি পেছুতে লাগলাম)
তোমার জন্য এখন আমি আলিফ রায়হান চৌধুরী থেকে বউ শিকারি চৌধুরী হয়ে গেছি।(আলিফ)
আমি উনার কথা শুনে ফিক করে হেসে দিলাম।
অবশ্য এই নামে আপনাকে ভালোই মানাবে।আলিফ লায়লা।(আমি মজা নিয়ে)
আলিফ আমার কাছে এসে দেয়ালে চেপে ধরলো,,,
এখন বলো কি বলতেছিলে?(আলিফ আমার কানে ফিসফিস করে)
দেখুন আপনি যদিও ভাবছেন এইটা আমার জন্য রোমান্টিক কিছু হবে বা আমি লজ্জায় কাপা কাপি করবো।আপনার দিক থেকে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নেবো তাহলে ভুল ভাবছেন।কারণ ওতো রোমান্টিক আবার আমি না।(আমি উনার হাতের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে)
এখন বলি কি বলতে ছিলাম?তবে তার আগে একটা কথা।আমাদের মধ্যে যা কথা হবে দূরে থেকে হবে।কাছাকাছি, ঘেঁষা ঘেঁসি স্বভাব আমার পছন্দ না।(আমি বেডে বসে)
আলিফ একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে মনে মনে বলতে লাগলো,,
বউ পালায় নামলাম!কিন্তু বউ এতো আনরোমান্টিক!আলিফ তোর কি হবে?একে নিয়ে কি করবো আমি!তবে যাই হোক না কেনো?ওর এই স্বভাব আমার কাছে অনেক কিউট লাগে।মনে হয় গিয়ে গাল টেনে দেই।কি গুলোমুলো গাল গুলো!
যেই ভাবা সেই কাজ আলিফের খেয়ালও নেই ও গিয়ে কখন হিয়ার গাল ধরে টানতে শুরু করলো।
আহ্!কি করছেন?গাল ধরে টানছেন কেনো?(আমি উনার হাত ধরে)
তোমার গাল গুলো অনেক কিউট!(আলিফ আবারও টানতে শুরু করলো)
হইছে তো থামুন।ব্যাথা লাগে।(আমি)
ও সরি।কি যেনো বলেছিলে?(আলিফ আমাকে ছেড়ে)
আপনি কিছুই শুনেন নি কি বলেছি?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
না।(আলিফ)
হায়রে।তাহলে শুনুন আমরা একে অপরের থেকে দূরে দূরে থাকবো।(আমি)
পসিবল না।আমি আমার কিউট বউ থাকে দূরে থাকতে পারবো না।(আলিফ বাচ্চাদের মত মুখ করে)
হ্যা?আমারে আজ পর্যন্ত, দর্জ্জাল,জংলী,পেত্নী,ভূত্নি, ডায়নী এইসব ছাড়া কেউ কিছু বলে নি আর আপনি বলছেন আমি কিউট!(আমি অবাক হয়ে)
হ্যা। ওওও আমার বউ কতো কিউট!
বলেই আলিফ আবার আমাকে ধরতে আসলো।
না।হইছে থাক।বুঝছি বুঝছি।আমি সরি আপনার বউ অনেক কিউট।(আমি হাত দিয়ে মানা করে)
আলিফ মিটমিট করে হাসছে আর ভাবছে,,
চড়ুই পাখি তুমি আমার থেকে যতো দূরে যাবে।আমি ততোই তোমাকে আমার কাছে টেনে আনবো।আমি বুঝে গেছি তোমাকে কি করে জব্দ করতে হয়।তোমার উপর জোর জবরদস্তি কখনই খাটবে না।তাই তোমাকে এই ভেবেই আমার কাছে রাখবো।
এখন হয়েছে এইসব ফাজলামি।এখন বলুন আপনি আমার এখানে আসার খবর পেলেন কোথা থেকে?(আমি সিরিয়াস হয়ে)
আকাশ দিয়েছে!(আলিফ সোফায় বসতে বসতে)
মজা নিচ্ছেন!আকাশ মরে যাবে তবুও কোনো দিন আমাকে ধোঁকা দিবে না।(আমি)
আলিফ মুচকি হেসে
তোমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ।ঠিকই বলেছো। ও বলেনি।
তাতো আমি জানি।এখন বলুন আপনি কি করে জানেন!(আমি)
পরেই আলিফ আমাকে সব খুলে বললো।কিভাবে উনি খুবই বুদ্ধিমানের মতো আমার সব প্ল্যানে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুল জ্বালিয়ে দিয়েছে।
আমি উনার কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় বসে আছি।
কি হলো শকড?(আলিফ আড় চোখে তাকিয়ে)
হুম(আমি অসহায়ের মতো মাথা নেড়ে)
আলিফ আমার অবস্থা দেখে নিজের হাসি আর আটকাতে পারলো না। মন খুলে হাসতে শুরু করলো,,
আমি উনার হাসির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।খুব সুন্দর করে হাসেন উনি।তবে আমি কোনোদিন কোনো ছেলেকে হাসতে দেখিনি।আসলে আমার কাছে কেউ ঘেঁষে নি।আমি ঘেঁষতে দেইনি।আমার জীবনে ছেলে মানুষ মানেই তিনজন আব্বু,আকাশ,পাবেল আঙ্কেল।তাদের ছাড়া আমি কারো প্রতি কোনোদিন নজর দেইনি।তারাও আমার প্রতি নজর দিতে চায়নি তানা আমিই তাদের দিতে দেইনি।কারণ আমি কারো সাথে সহজে মিশি না।
কিন্তু কেনো জানি?উনার সাথে আমার প্রথম দিন থেকেই মিশতে ভালো লাগে।উনার সাথে কথা বলতে ভালো লাগছে।ঝগড়া করতে ভালো লাগে।ইচ্ছে করে মন খুলে কথা বলি উনার সাথে।তাকিয়ে থাকি উনার এই হাসি মুখের দিকে।যদিও পরিচয় শুধু কয়েক মুহূর্তের।তবুও এইটা কেমন আকর্ষণ।তবে কি এইটাই স্বামী স্ত্রীর বন্ধন।কেউ এই সম্পর্কে বাধা পড়লে আপনাআপনিই কি এমন অনুভূতি চলে আসে?কি হচ্ছে এইসব?
আমি গভীর চিন্তায় মগ্ন তখনই আলিফ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে তুরি বাজিয়ে জিজ্ঞেস করলো,,
কি হলো?কি ভাবছো?(আলিফ)
আপনি কেনো আমার পিছে পরে আছেন?আমার থেকে ভালো মানুষ পাবেন।যে আপনাকে ভালোবাসবে,আপনাকে খুশি রাখবে,আপনার থেকে পালাবে না।তবে আপনি কেনো আমাকেই চান?আমি তো প্রায় আপনার মান সম্মান ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছি।বারবার পালিয়েছি।ফালতু শর্ত দিয়েছি।কতো চেষ্টা করেছি বিয়ে ভাঙতে,,কতো মিথ্যা কথা বলেছি।কিন্তু আপনি কেনো এখনও আমাকে সহ্য করে যাচ্ছেন!(আমি)
তুমি ঠিকই বলেছো আমি তোমার থেকে ভালো পাবো।কিন্তু আমার যে তোমাকেই চাই।(আলিফ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে)
হুহ! এতো ফিল্মি কথা বলে আমার মন ভুলানো সম্ভব না।(আমি আমার মাথা থেকে উনার হাত সরিয়ে)
আলিফ আবার দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে
আনরোমান্টিক বউ নিয়ে আর কি করার?(বিড়বিড় করে)
কিছু বললেন?(আমি বাকা চোখে তাকিয়ে)
না।(আলিফ)
আচ্ছা।আপনি অন্যদিকে তাকান আমি কাপড় পড়বো।(আমি)
কাপড় পরার কি দরকার?আমরা তো হানিমুনে আসছি।(আলিফ)
আমি কিছুক্ষন অবুঝের মতো তাকিয়ে রইলাম উনার দিকে তারপর উনি কি বললো তা আমার মাথায় ঢুকলো,,
এই আলিফ লায়লা।উল্টা পাল্টা কিছু করলে ভালো হবে না কিন্তু।(আমি রেগে)
তাইনাকি।
বলেই আলিফ আমাকে বিছানার সাথে চেপে ধরলো।
এখন ভয় তো চোখে স্পষ্ট।(আলিফ বাকা হাসি দিয়ে)
ও বাবা।আপনি উল্টা পাল্টা কিছু করবেন এইটার ভয় কি আমি পাবো না?আমি ওতো তাও অনুভূতিহীন মানুষ না।(আমি ভ্রু কুঁচকে)
আলিফ হাসতে হাসতে আমার উপর দিকে উঠলো,,
আমি অন্যদিকে তাকিয়ে আছি।তুমি তৈরি হও।(আলিফ)
ওকে।
বলেই আমি ব্যাগ থেকে কাপড় বের করে পরে নিলাম।
হয়ে গেছে।(আমি)
।
।
দুই ঘণ্টা পর
আমি বিছানায় আর আলিফ সোফায় গালে হাত দিয়ে বসে আছি দুইজনই গভীর চিন্তায় আছি।আমি চিন্তায় আছি উনি এখন আমাকে নিয়ে কি করবে?কিন্তু উনি কি চিন্তায় আছে! তা আবার আমি জানি না।
আলিফ?(আমি)
হুহ!(আলিফ)
আপনি কি চিন্তা করছেন?(আমি)
তুমি কি চিন্তা করছো! তা চিন্তা করছি।(আলিফ)
আমি চিন্তা করছি এখন আপনি কি করবেন?(আমি)
কি করবো?হানিমুন করতে আসছি।হানিমুন করবো আমার চড়ুই পাখির সাথে।(আলিফ দুষ্টু হাসি দিয়ে)
অনেক হয়েছে।প্রথমত আমাকে এই চড়ুই পাখি,চড়ুই পাখি ডাকা বন্ধ করেন।কারণ আমি চড়ুই পাখি না।(আমি)
দ্বিতীয়ত?(আলিফ)
আগে প্রথমটার জবাব দেন।(আমি)
সব গুলোর একসাথে উত্তর দিবো।এখন বলো দ্বিতীয়টা কি?(আলিফ)
আচ্ছা। দ্বিতীয়ত আমরা হানিমুনে আসছি মানে?কি বলতে চাইছেন?(আমি রেগে)
ঠিক আছে।তোমার প্রথমটার উত্তর দেই।যেহেতু তুমি খালি ফুরুৎ ফুরুৎ পালাও সেহেতু তোমার চড়ুই পাখি নামটা খুব ভালো মানায়।আর দ্বিতীয় তো আমি তো জানি তোমাকে এতো সহজে ধরা যাবে না।আর তুমি যেই মানুষ নির্ঘাত বিয়ে ভাঙতে বিয়ের পরেও কিছু করবে।আর যেহেতু তুমি বিয়ের দিনই পালিয়ে আসছো।তাই আমিই সবাইকে বলেছি তুমি আর আমি হানিমুনে আসছি।বাড়ি না গিয়ে সোজা হানিমুনে চলে আসলাম।একবার হানিমুন সেরে বাড়ি ফিরবো।আর এতে কারো কোনো আপত্তি নেই।(আলিফ একদমে)
মানে?(আমি অবাক হয়ে)
মানে!তোমার পরিবার আর আমার পরিবার জানে আমরা হানিমুনে আসছি।শুধু পিয়াস,আলিশা,সেলিম আর আকাশই জানে তুমি পালিয়েছ আর আমি তোমাকে ধরতে আসছি।আর কেউ না।(আলিফ)
তাহলে আজ যে আমাদের বৌভাত হওয়ার কথা ছিল।(আমি)
বৌভাত পনেরো দিন পরে।আমার মনে হচ্ছিলো এমন কিছু একটা হতে পারে তাইই আমি পনেরো দিন পর বৌভাত রাখছি।যাতে এমন কিছু হয়ে গেলেও আমি সামাল দিতে পারি। অবশ্য তোমার বাবাকে আমিই বলেছি তোমাকে বৌভাতের কথা না জানাতে।(আলিফ)
কিন্তু কেনো এমন করেছেন?(আমি নিচের দিকে তাকিয়ে)
কারণ তোমার জন্য।(আলিফ)
আমার জন্য।(আমি অবাক হয়ে)
হুম।আমি চাইনা আমার বউয়ের দিকে কেউ আঙ্গুল তুলে কথা বলুক।তুমি আবার পালালে লোকে তোমাকে খারাপ বলবে।আমাকে কিছু বলবে না।আর আমি চাইনা এমন কিছু হোক।আর তোমার বাবাও কষ্ট পাবে।আমার বাবারও সম্মানহানি হবে।বিয়ের দিন তার ছেলের বউ পালালে।(আলিফ)
আমার কথা এতো ভাবেন কেনো আপনি?আমি তো খারাপই।ভালো আমি কোনোদিন ছিলাম না কোনো দিন হবও না।(আমি)
তুমি ভালো ছিলে কিনা জানি না কিন্তু ভালো হবে না এইটা বলো না।কারণ ভবিষ্যতের কথা তুমি জানো না।কারণ তুমি আমার রানী(আলিফ আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)
আমি উনার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি।আমি যেইসব সমস্যা সৃষ্টি করে রেখে এসেছি।উনি সেই সব সমস্যার সমাধান তৈরি করে এসেছে।কেউ জানেও না আমি পালিয়েছি।উনি আমার সম্মান,আমার বাবার,উনার বাবার,সবার সম্মান উনি রক্ষা করেছে।আর আমি শুধু সব সময় সমস্যা তৈরি করি,, না হয় কোনো সমস্যা থেকে পালাই।উনি একদম আমার উল্টো।(আমি মনে মনে)
কি হলো আবার কি ভাবছো?(আলিফ)
ভাবছি আপনার মাথায় এতো বুদ্ধি আসে কোথা থেকে।(আমি ভ্রু কুঁচকে)
জ্ঞানী লোকেরা বলে গেছে
একজন পুরুষের সফলতার পেছনে সব সময় এখন নারীর অবদান রয়েছে।(আলিফ ভাব নিয়ে)
পাম মারছেন।(আমি ভ্রু কুঁচকে)
না না।বিজনেস ম্যানের মাথায় এমন বুদ্ধি থাকেই।(আলিফ)
এইবার বের হলো আসলো কথা।(আমি)
আলিফ আবার আমার কথা শুনে হাসতে শুরু করলো।
আচ্ছা।বলো তো তুমি বিয়ে থেকে পালাও কেনো?(আলিফ)
কে বলছে আমি বিয়ে থেকে পালাই?আমি সম্পর্ক থেকে পালাই।সম্পর্কের বোজা বইতে আমার ভালো লাগে না।(আমি)
তাইনাকি?তাহলে একটা পরীক্ষা করা যাক।আগামী ছয় মাস তুমি আমার আর আমার পরিবারের সাথে থাকবে।যদি ছয় মাস পর তোমার মনে হয় আমাদের সম্পর্ক তোমার কাছে বোজা তাহলে তুমি চলে যেও।কিন্তু শর্ত একটাই তুমি পালাবে না,সমস্যা গুলো থেকেও না।(আলিফ)
ওকে।তবে আমারও একটা শর্ত আছে।আমাদের মধ্যে কোনো শারীরিক সম্পর্ক হবে না।(আমি)
আমি রাজি।(আলিফ)
পরেই আমি আর আলিফ আমাদের নতুন পরীক্ষার জন্য হাত মেলালাম।
চড়ুই পাখি।আমার ক্ষুধা লেগেছে।কাল রাত থেকে কিছু খাইনি।(আলিফ কিউট ফেস করে)
আমার উনার উপর মায়া হচ্ছে।উনি আমাকে খোজার জন্য এতো বেস্ত ছিলেন যে খাবার খাওয়ার সময়ও পায়নি।কিন্তু এদিকে আমি সারাদিন মুখে কিছু না কিছু দিয়েই রেখেছি।(আমি মনে মনে)
আচ্ছা।চলুন কিছু খেয়ে নেয়া যাক।(আমি)
আচ্ছা চলো।
পরেই আমি আর আলিফ বেরিয়ে গেলাম
।
।
যেতে যেতে
আপনাকে তো জিজ্ঞেস করা হলো না।আপনি আমার রুমে ঢুকলেন কি করে?আমি জানি আমার রুমের দরজা আমি বন্ধ করে রেখেছিলাম।(আমি হাঁটতে হাঁটতে)
হোটেল স্টাফ খুলে দিয়েছে।(আলিফ হাঁটতে হাঁটতে)
কেনো?আমি এখনই গিয়ে কমপ্লেইন করবো।(আমি রেগে চলে যেতে লাগলাম)
করে লাভ নেই।হোটেলটা পিয়াসদের।(আলিফ আমাকে ধরে)
তাই নাকি?তাহলে বুকিং এর সময় যেই টাকাগুলো নিছে ওইগুলো ফেরত দিতে বলি?(আমি)
কি কিপ্টা?আমার বউ হয়ে এতো কিপ্টামি করলে চলে।(আলিফ)
কই কিপ্টামি করলাম।পিয়াস ভাইয়ার হোটেলই তো।আমরা ফ্রীতেই থাকতে পারি।আচ্ছা খাবারও কি ফ্রীতে দিবে।(আমি)
দেখো।আর কোনো কিপ্টামি কথাবার্তা প্লিজ বলো না।তোমার কথা শুনে আমার ক্ষুধা চলে যাচ্ছে।(আলিফ অসহায়ের মতো))
আচ্ছা।এখন না পরে বলব।পিয়াস ভাইকে ফোন করে কিন্তু বলবেন আমাদের যেনো ডিসকাউন্ট দেয়।(আমি)
আচ্ছা আচ্ছা।আমি তোমাকে ফোন ধরিয়ে দেবো তুমি বলবে ঠিক আছে!(আলিফ)
গুড আইডিয়া।(আমি)
।
।
রুমে
রাতের খাবার শেষ করেই হিয়া রুমে এসে বিছানায় শুয়ে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।
অন্যদিকে আলিফ বেলকনিতে দাড়িয়ে আকাশ দেখছে,,
তখনই পিয়াস ফোন দিলো।
হ্যালো।(আলিফ)
Hello বাদ দে।আগে বল কেমন হচ্ছে তোদের হানিমুন।(পিয়াস টিটকারি মেরে)
পরেই আলিফ সব কিছু পিয়াসকে বললো,,,
যাক।এখন ও পালাবে না এইটা ভেবেই আমি নিশ্চিন্ত। ছয় মাসে ওর মন জয় করা যাবেই।(পিয়াস)
হুম।আমি কোনো ভাবতে পারিনি।যে বিয়েটাকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি সেই বিয়েকে বাঁচাতেই এতো কিছু করতে হচ্ছে।কোনোদিন ভাবতে পারিনি হিয়ার মত কোনো একটা মেয়ের ভালোবাসার মায়ার পরে নিজের মন হারাবো।(আলিফ মুচকি হেসে)
হুম।বিয়ের চ্যালেঞ্জ এ তো জিতে গেলি।এখন বিয়ে বাঁচানোর চ্যালেঞ্জে জিতে গেলেই।তোরা happily married,,(পিয়াস)
হুম।কোনোদিন ভাবি নি বিয়েটা আমার জন্য এতো সুখের হবে।(আলিফ)
হুম। অবশ্য যা হয়েছে।তারপর বিয়েতে তুই মত দিবি কিনা এইটা নিয়েই আমার চিন্তা ছিলো।কিন্তু এখন বিয়ে তো হয়েও গেলো আর তুইও ওকে ভালোবেসে ফেলেছিস।দেখলি বিয়ের সম্পর্কের কতো শক্তি।তুই তো বিয়েতে বিশ্বাসই করতি না।(পিয়াস)
তোর মনে হয় যা হয়েছে তার পরেও বিয়েতে বিশ্বাস থাকার কথা আমার।(আলিফ)
যা হয়েছে হয়েছে।এখন ওইসব বাদ দে। হিয়ামনিকে এখন কিছু বলিস না।(পিয়াস)
পাগল নাকি।আগে ঠিক হয়ে নিক পরিস্থিতি।(আলিফ)
হুম।পড়ে জানলেও বুঝতে পারবে আমার বিশ্বাস। ও অনেক বুদ্ধিমতী।(পিয়াস)
বুদ্ধিমতী?কালকে ফোন দিয়ে তোকে বলবে ডিসকাউন্ট দিতে। ও যে হোটেলে থাকবে তার।আমাকে এইটাও বলছে বুক করার সময় যেই টাকা দিয়েছে তাও ফেরত চায়।(আলিফ)
হ্যা হ্যা(এক গাল হেসে)বলিস ওরই এই হোটেল।(পিয়াস হাসতে হাসতে)
এইটা বলিস না।পড়ে দেখবি ও হোটেল বিক্রি করে দিয়েছে।(আলিফ)
আচ্ছা আচ্ছা।যা এখন রেস্ট নে।
বলেই পিয়াস ফোনটা কেটে দিলো।
।
।
আলিফ রুমে গিয়ে দেখলো
হিয়া হাত পা ছড়িয়ে মুখ হা করে ঘুমাচ্ছে।
হায়রে মানুষকে নাকি নিষ্পাপ লাগে ঘুমে।একে নিষ্পাপ ঠিকই লাগছে কিন্তু ভয়কর নিষ্পাপ।
বলেই
আলিফ একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে হিয়ার পাশে ঘুমিয়ে পড়লো।
।
।
মাঝ রাতে
হিয়ার লাথি খেতে খেতে আলিফের ঘুম ভেংগে গেল।
এই মেয়ে দিনের বেলা তো হাত পা ছুটা ছুটি করেই রাতেও এর শান্তি নেই।
দাড়া দেখাচ্ছি তোকে মজা।
বলেই আলিফ উঠে কিছু একটা করে পড়লো,
আহা!এখন একটা শান্তির ঘুম দেবো।
বলেই আলিফ শুয়ে পড়ল।
।
।
সকালে
আমি ঘুম ঘুম চোখে পা নাড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছি না।
ধরফরিয়ে উঠে দেখি আমার দুপা বিছানার সাথে আমারই ওড়না দিয়ে বাঁধা।পাশেই নাক ডেকে শান্তি মতো ঘুমাচ্ছে আলিফ।
আমার বুঝতে বেগ পেতে হয়নি আমার পা কে বেধেছে।
।
।
চলবে,,,
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।এমনি একদিন পর পর গল্প দেই। তারপর আজ এতো লেট।
আসলে কালকে রাত থেকে আমার এমবি সিমটাতে কি যেনো সমস্যা হয়েছিল।কানেক্ট হয় কিন্তু,, না আমি ফেইসবুকে আসতে পারি না আমি ইউটিউব বা অন্যকোনো ওয়েবসাইট ঢুকতে পারি।অবশেষে একটু আগেই ঠিক হলো।তাই লেট হয়ে গেছে। আই অ্যাম রিয়েলি সরি 😑😑 প্লিজ রাগ করবেন না।
আরেকটা কথা যারা আমার সব গুলো গল্পএর লিংক চাইছেন তাদের বলছি একটু অপেক্ষা করুন।আমি আজকেই সব গল্পের লিংক শেয়ার করতাম কিন্তু সিমে সমস্যার কারণে না আমি গল্পের লিংক গুলো কালেক্ট করতে পারছি না শেয়ার করতে পারছি।তাই বলছি একটু ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন কাল বা পরশু পেয়ে যাবেন।
#Happily_Married💥
#Part_9
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida
।
।
আলিফ?(আমি রেগে দাত চেপে)
আলিফ চুপ করে ঘুমাচ্ছে।
আলিফ!(আমি কিছুটা চিৎকার করে)
এখনও ঘুম।
আমি এতো রেগে আছি এতো রেগে উনাকে ঘুম থেকে উঠানোর চেষ্টা করছি আর উনি ঘুমাচ্ছেন।এইবার আমি ধাক্কা দিয়ে,,
আলিফ।
উনি তখনও ঘুমে।
কি লোকরে বাবা!আমাকেও ঘুমের মধ্যে পেছনে ফেলে দিবে।(আমি বিড়বিড় করে)
ওই আলিফ।(আমি জোরে চিৎকার আর ধাক্কা দিয়ে)
উমমম।(আলিফ মোচড়া মুচরি করতে করতে)
উঠবে নাকি এখন খাট থেকে ফেলে দেবো?(আমি রেগে)
আলিফ কিছু না বলেই আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি সব সময় চাইতাম।কোনো দিন একদিন বউকে জড়িয়ে ধরে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠবো।(আলিফ রোমান্টিক মুডে)
এমনি সারারাত আমার পা বেঁধে রাখার কারণে আমার পা ব্যাথা করছে আরো উনার এই রোমান্টিক কথাবার্তা শুনে আরো মাথা ব্যাথা করতে লাগলো। তবে আমিও কম যাই না,,
আমিও উনার বুকে মাথা রেখে রোমান্টিক ভাবে বলতে লাগলাম,,
তাই।আমারও অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল।বরের বুকে মাথা রেখে তার বুকে চিমটি কাটবো।
বলেই জোরেই চিমটি দিলাম।
আমার চিমটি খেয়ে আলিফ আমাকে ছেড়ে দিয়ে ধড়ফড়িয়ে উঠে গেলো,,
এই মেয়ে তোমার মধ্যে কি একটুও রোমান্টিকতা নেই।যতসব।এতো জোরে কেউ চিমটি দেয়।কালকেই নখ কাটবে। রাক্ষুসে মতো বড়ো নখ রেখেছে।আমার এতো রোমান্টিক সকালের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।(আলিফ)
হয়েছে আপনার?এখন বলুন আমার পা কেনো বাধা?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
কালকে সারারাত ফুটবল খেলছো মনে নেই!খালি পার্থক্য এইটুকু ফুটবলের বদলে আমাকে লাথি মেরেছো।তাই উপায় না পেয়ে তোমার পা বেধে রেখেছি।(আলিফ)
ভুলেও না।আমি মোটেও এমন করিনি।আর আমি আপনাকে কেনো লাথি মারবো?আশ্চর্য আপনি মিথ্যা বলছেন।(আমি)
হোয়াট আমি মিথ্যা বলছি।নেক্সট টাইম যখন মারবে না তখন ভিডিও করে রাখবো।আরেকটা কথা এইবার তো শুধু পা বেধেছি পরেরবার তোমাকে বেধে রাখবো।(আলিফ)
কি আপনি আমাকে বেধে রাখবেন?একে তো রাতে আমার পা বেঁধে রেখেছেন তারপর আবার আমাকে রাক্ষুসী বলেছেন এখন আবার ঝগড়া করছেন।আপনি পেয়েছেন টা কি?হা?আপনার কি মনে হয় আমি ঝগড়া করতে পারি না?(আমি একদম নিয়ে)
কি বলছো? আমার মনে হয় না আমি জানি তুমি ঝগড়া করতে এক্সপার্ট!এখনও আমার সাথে ঝগড়া করছো।এতে আমার সন্দেহ নেই।(আলিফ)
আপনার জানার জন্য বলছি আপনি আমাকে ঝগড়া করতে বাধ্য করছেন।(আমি)
ও তাই।(আলিফ)
এইরকম ফালতু টপিক নিয়ে আমি আর আলিফ বিছানায় বসে বসে এক ঘণ্টার মতো ঝগড়া করে এখন আমরা দুইজনেই হাপিয়ে উঠলাম।পরেই আলিফ হাপাতে হাপাতে বললো
আজকে এতটুকু ঝগড়াই থাক বাকি ঝগড়া পরে।
ঠিক আছে।আমারও গলা শুকিয়ে গেছে।চিৎকার করতে করতে এখন পানি খেয়ে ফ্রেশ হতে যাবো।
বলেই আমি টেবিল থেকে পানি নিতে নিতে আলিফ দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো।
আলিফ এইটা ঠিক না।আমি আগে যাবো বলছিলাম।বিরক্তকর।(আমি রেগে)
তোমাদের মেয়েদের ফ্রেশ হতে দেরি হয়।তাই তুমি পরেই থাকো।(আলিফ ওয়াশরুম থেকে)
আলিফ লায়লা।(আমি রেগে দাত চেপে চেপে)
।
।
আমি আমার পায়ের বাঁধন খুলে বিছানায় বসে বসে ব্যাগ থেকে কাপড় বের করছি তখনই আলিফ ওয়াশরুম থেকে বললো,,
হিয়া।আমি কাপড় নিতে ভুলে গেছি। একটু ব্যাগ থেকে কাপড়টা দাও তো।
হিহি(😈) ইটস বদলা টাইম।(আমি শয়তানি হাসি দিয়ে)
কি হলো দাও?(আলিফ)
আমি পারবো না নিজে এসে নিয়ে যান।(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
হোয়াট দা হেল।আমি এখন পুরো ভিজে আছি।(আলিফ দাত চেপে)
সো হোয়াট।আমি পারবো না।(আমি)
হিয়া ফাজলামি বন্ধ করে কাপড় গুলো দাও।(আলিফ)
দিতে পারে তবে এক শর্তে!(আমি)
আমি এখানে ভিজে দাড়িয়ে আছি আর তোমার এখনই শর্ত দেয়া লাগবে?(আলিফ)
রাগ দেখিয়ে লাভ নেই।আপনিই আমাকে এইসব করতে বাধ্য করেছেন।তাই এখন যা বলছি করুন না হলে বসে থাকুন।আমার কি?(আমি)
আচ্ছা বলো।কি শর্ত?(আলিফ)
প্রথমত সরি বলুন। দ্বিতীয়ত প্রমিজ করুন আমার পা বেঁধে রাখবেন না। তৃতীয়ত বলুন হিয়া তুমি রাক্ষুসী না তুমি খুবই কিউট।(আমি)
ওয়াক থু।তোমার কথা শুনে আমার বমি আসতেছে।(আলিফ)
হ্যা হ্যা very funny। যাই বলুন এইসব না বললে কিন্তু আমি দেবো না আপনার কাপড়।(আমি)
আচ্ছা আচ্ছা বলছি।আমি তোমাকে সরিও বলছি,পা বেঁধে রাখবো না প্রমিজ করছি,আর তুমি বিশ্ব সুন্দরী।হইছে?(আলিফ)
কি ভালো বরটা আমার!নজর যেনো না লাগে তার।
বলেই আমি কাপড় গুলো নিয়ে ওয়াশরুমে টোকা দিতেই আলিফ আমাকে টান মেরে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলো।
আমি গিয়ে দেখি আলিফ সম্পূর্ন শুকনো কাপড় পরে দাড়িয়ে আছে।
আপনি না ভিজে কাপড়ে দাড়িয়ে ছিলেন?(আমি অবাক হয়ে)
তোমাকে কাছে আনার ছোটো একটু প্রয়াস আমার চড়ুই পাখি।
বলেই আলিফ আমার নাকে ঘষা দিল।
আপনি এতক্ষন মজা করছিলেন আমার সাথে!(আমি ছুটার চেষ্টা করে)
হুম।আর সব সময় ছুটার চেষ্টা করো কেনো?(আলিফ আমাকে আরো কাছে টেনে চেপে ধরলো)
আর আপনি সব সময় কাছে আসার চেষ্টা করেন কেনো?(আমি)
কারণ তোমাকে ভালোবাসি বলে।(আলিফ আমার কানের কাছে ফিসফিস করে)
আমি উনার কথা শুনে স্ট্যাচু হয়ে গেলাম।
কি হলো?কিছু বলো।(আলিফ আমার দিকে তাকিয়ে)
কি বলবো?জীবনের প্রথম দেখলাম কেউ ওয়াশরুমে এসে প্রপোজ করছে।এর থেকে ভালো জায়গা ছিল না আপনার?(😒আমি)
হ্যা হ্যা(হেসে)তুমি সত্যি অনেক ইন্টারেস্টিং হিয়া।(আলিফ হাসতে হাসতে)
হইছে ছাড়ুন।
বলেই ছুটার চেষ্টা করলাম।
আমার ছুটাছুটিতে ওয়াশরুমের শাওয়ারটা অন হয়ে গেলো।আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা আমি আর আলিফ দুইজনই ভিজে গেলাম।
দেখলেন ভিজে গেলাম আপনার জন্য।(আমি)
আমার জন্য না।তোমার ছুটোছুটি করার জন্য।(আলিফ আমার হাত ধরে আমাকে ঘুরিয়ে)
কি করছেন?এখন কি এই শাওয়ারের নিচে আমরা নাচবো নাকি?(আমি ঘুরতে ঘুরতে)
এইসব হলে মন্দ না।
বলেই আলিফ আমাকে নিয়ে শাওয়ারের পানিতেই নাচতে শুরু করলো।
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।আমার জীবনটা সত্যিই এখন অদ্ভুত হয়ে গেছে।ওয়াশরুমের প্রপোজ,শাওয়ারের পানিতে রেন ড্যান্স।এই লোকটার সাথে থাকতে থাকতে আমিও উনার মত হয়ে যাবো। তবে কেনো যেনো উনার সাথে থাকলে আমার মুখের হাসি কখনও গায়েব হয় না। ঝগড়াতেই আমার মুখে হাসি থাকে।
।
।
পরেই আলিফ আর আমি তৈরি হলাম বের হবো বলে। আমাদের দুজনের ঝগড়া,নাচ,আরো অনেক তামসা করতে করতে দুপুর হয়ে গেছে।রাতে তেমন কিছু খাওয়া হয়নি আমার তারপর সকাল গেলো ঝগড়া করতে করতে।
আমার পেটে ইদুর নাচানাচি করছে।(আমি পেটে হাত দিয়ে)
জীবনের প্রথম দেখলাম চুরুই পাখির পেটে ইদুর নাচানাচি করে।(আলিফ আড় চোখে তাকিয়ে)
হ্যা হ্যা!আমিও জীবনের প্রথম আলিফ লায়লাকে টিভিতে বের হয়ে আমার সাথে হাঁটতে দেখছি।(আমিও মজা নিয়ে)
এই তুমি আমাকে আলিফ লায়লা বলা বন্ধ করবে?(আলিফ)
আর আপনি আমাকে চড়ুই পাখি ডাকা বন্ধ করবেন?(আমি)
ডাকি কারণ তোমার স্বভাব।(আলিফ)
আমিও ডাকি কারণ আপনার স্বভাব।(আমি)
তুমি কি আবার ঝগড়া শুরু করতে চাও?(আলিফ)
না।খুব ক্ষুধা লাগছে।ঝগড়া করার শক্তি নেই।(আমি)
ভেরি গুড।এখন চলো।(আলিফ)
হুম।চলুন।
বলেই আলিফের হাত ধরে উনাকে নিয়ে চললাম।
আলিফও মুচকি হেসে হিয়ার পিছু পিছু চললো।
।
।
সেদিন সারাদিন আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলাম। রেস্তরাঁয় গিয়ে খাবার খেলাম। সূর্য্য অস্ত দেখলাম।স্বপ্নের মত কাটলো আমার দিনটা।আলিফের সাথে নিজেকে খুবই নিরাপদ মনে হয়।উনার সাথে থাকতে ভালোই লাগে।লোকটা খুব ভালো।একদম আমার উল্টো।তবুও কেনো জানি উনার দিকে বেশি আকর্ষিত হচ্ছি। এই জন্য বিজ্ঞানীরা বলে বিপরীত মেরু পরস্পরকে আকর্ষিত করে।তবে এখনই আমি কোনো সিদ্ধান্তে যেতে চাই না।এতো তাড়াতাড়ি উপসংহারে গিয়ে নিজের জীবনে কোনো ভুল করতে চাই না।তাই শুধু দেখবো,,এই ছয় মাস আমি দেখবো তারপর কোনো সিদ্ধান্তে যাবো।এইটাই ভালো হবে আমার আর আলিফের জন্য। তবে এই ছয় মাসে আমি আলিফের মনে কোনো আশা জাগাতে চাই না।তাই নিজেকে সামলে রাখতে হবে আমার।
।
।
এই পনেরো দিন যে কোন দিক দিয়ে এসে কোন দিয়ে চলে গেলো খেয়ালই করিনি।আজ রাতে আমাদের যাওয়ার পালা ঘনিয়ে এলো।এখন কি আর করার?আমি মনমরা হয়ে গাড়ির সিটে বসে আছি।আর আলিফ ড্রাইভ করছে।হটাৎ নিরবতা ভেঙ্গে আলিফ বললো,
এতো মন খারাপ করে লাভ নেই!নেক্সট টাইম আবার আসবো!
আমি আর ওই হোটেলে যাবো না।ওই লোক আমার বুকইং এর সময়ের টাকা গুলো ফেরত দেয়নি কেনো?(আমি মনমরা হয়ে)
তুমি এতক্ষন এই জন্য মনমরা হয়ে বসে ছিলে?(আলিফ মাথায় হাত দিয়ে)
তাহলে আর কিসের জন্য বসে থাকবো?(আমি)
হায় আল্লাহ।শুনো টাকা ফেরত না দিক তোমার কথা মত ডিসকাউন্ট তো দিছে।ওইটা নিয়ে খুশি থাকো।এতো কিপ্টামি ভালো না।(আলিফ)
আপনি কি বুঝবেন আমার কষ্ট?(আমি রাগ করে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে)
আচ্ছা রাগ করো না।পিয়াসকে বলো ও তোমাকে বুকিং এর টাকা দিয়ে দিবে।খুশি তো?(আলিফ)
আমি অতোটাও কিপটে নই।আমার লাগবে না টাকা।(আমি)
তাহলে মুখ ফুলিয়ে রেখো না।(আলিফ)
ওকে।(আমি হাসি দিয়ে)
।
।
কিছুক্ষনপর
আলিফ?(আমি)
হুম?(আলিফ)
থ্যাঙ্ক ইউ।(আমি)
ওয়েলকাম।(আলিফ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে)
।
।
বাসায় যেতে যেতে আমাদের ভোর হয়ে গেলো।
সেখানে যেতেই আমার শাশুড়ি মা আমাকে বরণ করে ঘরে তুলল।আমিও হাসি মুখে আমার ছয় মাসের জন্য বাড়িতে পা রাখলাম।
জানো মা।আমি বলছিলাম যে তোরা কয়দিন পরে হানিমুনে যা।কিন্তু আমার ছেলে তো মানলই না।তোমার সাথে সময় কাটানোর সময় আমি পেলামই না।(আলেয়া বেগম হিয়াকে সোফায় বসাতে বসাতে)
মা বুঝো না আমার ভাইয়ের তর সইছিল না।(আলিশা)
চুপ।বেয়াদব আম্মু আব্বুর সামনে কি করে কথা বলতে হয় ভুলে গেছিস। সরম লজ্জা নেই।(আলিফ আলিশার মাথায় হালকা থাপ্পড় মেরে)
হুম।আলিশা ভাইয়া ভাবীর সম্পর্কে এইসব বলতে হয় না।(রামিম সাহেব)
সরি ভাইয়া ভাবী।(আলিশা)
আমি শুধু তাদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবছি তারা কতো সুন্দর একে অপরের ভাবনা চিন্তা বুঝে।তাদের মনের কতো মিল।তারা সবাই একে অপরের সাথে কতো সুন্দর করে মিশতে পারে।এদিকে আমি?আমার যেনো ভয় হচ্ছে।এদের সাথে আমি কি ছয় মাস থাকতে পারবো?মিশতে পারবো তাদের সাথে?কোনো সমস্যা হবে না তো আমার?আমাকে আর কষ্ট পেতে হবে না তো?
আমার এইসব ভাবনার বেঘাৎ ঘটে আলেয়া বেগমের কথা শুনে।
কি ভাবছো মা?আচ্ছা বলো তুমি আজ সকালে কি খাবে?কি রান্না করবো তোমার জন্য?(আলেয়া বেগম)
কিছু লাগবে না আন্টি।(আমি)
তুমি আমাকে আন্টি বলছো কেনো?তুমি আমাকে মা বলে ডাকবে।(আলেয়া বেগম)
আমি উনার দিকে নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি কি বলবো আমার জানা নেই।এখন পর্যন্ত আমি কাউকে মা বলে ডাকি।এমন কি নিজের মাকেও না।এই প্রথম কেউ বললো তাকে মা বলে ডাকতে।কিন্তু এই মা শব্দটা এতো ভারী যে আমার মুখ দিয়ে বের হতেই চাচ্ছে না।আমি এই শব্দটি উচ্চারণ করতে পারছি না কিছুতেই।আমার এই নির্বাক দৃষ্টি আর কেউ না বুঝতে পারলেও আলিফ ঠিকই বুঝতে পেরেছে।তাই তো ও বলে উঠলো,,
আম্মু, আমরা তো তোমাকে আম্মু বলে ডাকিই হিয়া না হয় তোমাকে অন্য কিছু বলে ডাকুক।(আলিফ আলেয়া বেগম এর কাধে হাত রেখে)
অন্য কিছু?(আলেয়া বেগম অবাক হয়ে)
মামনি কেমন হবে ভাই?(আলিশা)
খুব সুন্দর হবে।আম্মু হিয়া যদি তোমাকে মামনি বলে ডাকে তাহলে কি তোমার কোনো আপত্তি রয়েছে?(আলিফ)
না।আমার কোনো আপত্তি নেই।বরং আমি খুশিই হবো(আলেয়া বেগম হিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো)
ধন্যবাদ মামনি।(আমি)
তাহলে আমাকে বাবাই বলে ডাকবে।(রামিম সাহেব)
তাহলে তো আর কথাই নাই।ডাকাডাকির সমস্যা মিটে গেলো।(আলিফ)
না মিটে নি।আমাকে কি বলে ডাকবে তাহলে?(আলিশা)
তোকে পেত্নী বলে ডাকবে।(আলিফ)
এইটা ঠিক না ভাই!(আলিশা)
আচ্ছা তাহলে আমি তোমাকে ছোটো আপু বলে ডাকবো।তুমি আমার ছোটো তো তাই!(আমি)
ঠিক আছে। হুহ!তুই বড্ড খারাপ ভাই। ভাবী অনেক ভালো।(আলিশা)
লাই দিয়ে মাথায় তুলো না।(আলিফ)
দেখ ভাই,,,
আলিশা আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই বাবাই ওকে থামিয়ে বললো,,
অনেক হয়েছে ভোর পাঁচটা বাজে এখন তোমাদের এই তর্ক না করলেও চলবে।ওদের এখন রেস্ট নিতে দাও।(রামিম সাহেব)
ওকে স্যার।(আলেয়া বেগম আর আলিশা)
আমি উনাদের দেখতে হাসতে শুরু করলাম।
।
।
আমাদের রুমে,,
থ্যাঙ্ক ইউ আলিফ।(আমি)
আলিফ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,
ফ্রেশ হয়ে ঘুমাও।
।
।
সকাল দশটায়
আলিফ ঘুম থেকে উঠে দেখলো হিয়া নেই।
এই মেয়ে ঘুম থেকে এতো আগে উঠে গেলো।
বলেই আলিফ বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে দেখে হিয়া,আলেয়া বেগম আর আলিশা মিলে সকালের নাস্তা বানাচ্ছে।
কি অপরূপ দৃশ্য তাই না আলিফ?
পেছন থেকে রামিম সাহেব বললো।
হুম বাবা।শুধু,,,
আলিফ কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো।
থাক বাবা।আর ওইসব মনে করিস না।চল খাবি।
বলেই রামিম সাহেব আর আলিফ হাসি মুখে খাবার টেবিলের দিকে গেলো।
।
।
চলবে,,,
Once again I am really sorry 😐