#i_m_mafia_lover
#part_4
#sabiha_kh
গল্প দিতে লেট হলো তবে বড় করে দিয়েছি।😊
ইমা আর কনো কথা না বলে হসপিটালের ভিতরে যেতে লাগে এবং মনে মনে বলে- তুমি যতোই ভালো হও। তবুও তুমি আমার কাছে একজন খুনি।।। আর আমি এটা কনো দিনো ভুলবো না ইসান।।।
”
”
”
”
ইমা তার চেম্বারের দরজা খুলতেই দেখে তার চেম্বারে পাঁচ জন তার ডাক্তার কলিক বসে আছে।
ইমা অবাক হয়ে বললো- কিরে তোমরা সবাই এখানে কেন???
মাহিম সন্দেহও চোখে বললো – সিরিয়াসলি মিঃ ইসান তোমার বন্ধু?? ( মাহিম সিনিয়ার ডাক্তার)
রুহি – তুৃমি এই কথা আমাদের কে বলনি তুমি খুব চালাক!! ( রুহি জুনিয়ার ডাক্তার)
আরিফ টেবিলের উপর রাখা পেপার পয়েট ঘুরাতে ঘুরাতে বললো – ডাক্তার ইমা আমাদের মনে হচ্ছে ডালমে কুচ কালা হ্যা!!!( সিনিয়ার ডাক্তার)
রশনি- ডাক্তার ইমা আমরা কিন্তু মিঃ ইসানকে দেখে সবাই ক্রাস খেয়ে ব্যাকা হয়ে গিয়েছি।। ( রশনি সিনিয়ার ডাক্তার)
মেরি গালে হাত দিয়ে ভাবনার সুরে বললো- আমি একটু বেশি ব্যাকা হয়ে গিয়েছি।।। কখন সোজা হতে পারবো জানিনা (মুখ ভার করে)
( মাহিম, আরিফ, রশনি, মেরি, রুহি এদের সবার সাথে ইমার বন্ধু পূর্ণ খুব ভালো সম্পর্ক)
ইমা হেসে বললো-
ইমা- ডয়েরে ইনজেকশন আছে দিয়ে দিবো নাকি সবাইকে একটা করে।। তাহলে ব্যাকা থেকে খুব তারাতারি সোজা হয়ে যাবে ।।
সবাই ইমার কথা শুনে হাসতে লাগলো।। হাসির শব্দ দরাজার ওই পারে যাচ্ছিলো।। মাইশা হাসির শব্দ শুনে দরজা খুললো ।।। (মাইশা একজন সিনিয়ার সার্জন সে ইমাকে খুব হিংসা করে। সুযোগ পেলেই ইমাকে নিচা দেখায়।। মাইশা RK হসপিটালের চেয়ারম্যানের বোনের মেয়ে।।। সে সব সময় নিজেকে উপরে রাখতে চায়। তাই সে সবার সাথেই কম বেশি খারাপ আচরণ করে।।। এই জন্যই মাইশা কে কেও বেশি একটা পছন্দও করে না।।। )
মাইশা- সবাই এখানে কেন?? কাজ নেই কারো।। ও বুঝেছি মিঃ ইসান তার বন্ধু তাই সবাই এখানে ভীর করেছেন?? মিস ইমাকে নিয়ে এতো আদিখ্যাতা না করে সবাই নিজের নিজের কাজে যান।।। ( মাইশার কথা শুনে সবার মুড অফ হয়ে গেলো সবাই এক এক করে রুম থেকে বের হয়ে যেতে লাগলো।।।)
মাইশা ইমার কাছে এসে বললো- তুমি কি,,, সেটা ভুলে যেও না।। মিঃ ইসান তোমার ফ্রেন্ডই হতে পারে বয়ফ্রেন্ড তো না । আর তোমার মতো মেয়ে উনার গার্লফ্রেন্ড হওয়ার যোগ্যও না।। হম্ (মুখ ভেংচিয়ে)
বলে চলে গেলো।।। রুহি বাইরে দাড়িয়ে সব কথা শুনলো।। ইমা তার স্টেথিস্কপ্ নিয়ে চেম্বার থেকে বের হতে লাগলে রুহি ইমার চেম্বারে ঢুকে।।
ইমা- কিরে তুমি যাও নি???
রুহি একটু রাগান্বিত সুরে বললো- কেন যে তুমি ওর কথার জবাব দাও না আমি বুঝিনা।। ও একজন সার্জন বলে কি মাথা কি নিয়েছে।। দেখ আমি তোমার নিচের পদে আছি কিন্তু তোমার সাথে আমার বন্ধুর সম্পর্ক। কি ভাবে হলো বলতো!! কারণ তুমি একজন ভালো মানুষ। তুমি আমাকে ছোট করে দেখো না কখনো।। তোমার এই ব্যবহার আমাদের কে তোমার কাছে টেনে নিয়ে আসে।। আর ও একজন সার্জন হয়েও আমরা তাকে পছন্দ করিনা। সন্মান করা তো দুরের কথা ওকে দেখলেই আমাদের মাথা গরম হয়ে যাই।।
ইমা রুহির কাঁধে হাত রেখে বললো- শান্ত হও।। শুনো আমি পারতাম ওর কথার জবাব দিতে দিয়নি কারণ দরকার মনে করিনি।। আসলে কথার জবাব দিলেই সে বড় হবে এমন কনো কথা নেই বুঝলে।। (মুচকি হেসে)
এদিকে ইসান হোটেলে ফিরে নিজের রুমে গিয়ে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পরে এবং আপনা আপনি হাসতে লাগে।
ইসান- আমি জানতাম ইমাকে আমি খুজে পাবো ।। ইমা!!! (চোখ বন্ধ করে গভীর শ্বাস ছেড়ে) আজো তুমি তেমনি সুন্দর আছো ।।। ( বলে পাশে থাকা বালিশ নিয়ে বুকের সাথে জোরিয়ে ধরলো এবং মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো)
এমন সময় ইসানের ফোন বেজে উঠে ইসান চোখ খুলে উঠে ফোন হাতে নিয়ে দেখে তার বাবা কল করেছে।। ইসান ফোন রিসিভ করে কানে ধরে আনন্দিত সুরে বললো-
ইসান- বাবা কেমন আছো???
জহির – কি ব্যাপার আমার ছেলে এতো হাসি খুশি!!!
ইসান- হমম বাবা আজ আমি খুব খুশি।।( হেসে)
জহির- এতো খুশির কারণ জানতে পারি???
ইসান- উমমম,, বলতে পারো হারিয়ে যাওয়া সোনার কয়েন খুজে পেয়েছি।।।
জহির- পাগল ছেলে।। যাই হকো তুমি যেই কারণেই খুশি হও কেন আমার অনেক ভালো লাগছে তোমাকে খুশি দেখে ৬ বছর পর তোমার এমন আনন্দিত কন্ঠ শুনলাম।। সত্যি আমি খুব খুশি। তো বলো কেমন হলো কনফারেন্স?? দেখলাম তোমাকে টিভিতে। সুন্দর দেখাচ্ছিলে আজকে।।
ইসান- thank you বাবা।। কনফারেন্স খুব ভালো হয়েছে।। বাবা ওদের হসপিটাল আসলেই খুব ভালো।। খুব ভালো সেবা দেয় ওরা। এই জন্যই এতো নাম ডাক হসপিটালের।।
জহির- হমমম আমাদেরও হবে।। তো হসপিটালের কাজের কি অবস্থা???
ইসান- লোকটা সব কাগজ পত্র জমা দিয়েছে।। হসপিটালের কাজ আবার শুরু হয়েছে।।
জহির- খুব ভালো।। তো তুমি কবে আসছো ইসান???
ইসান থতমত খেয়ে বললো – আ,,,, আসবো বাবা আসবো ওকে বাই ফোন আসছে আমার।।। (বলে তারাতারি ফোন কেটে দিলো।।।)
ইসান জোরে একটা শ্বাস ছেড়ে হেসে বললো-
ইসান- আমি এতো তারাতারি এখান থেকে যাবো না বাবা।।
সন্ধ্যা ৭ টা,,,,,
ইমা রুগী দেখে এসে তার চেম্বারে বসতেই রুহি আসলো।।।
রুহি তারাতারি চেয়ারে বসে বললো- ইমা বলো না মিঃ ইসানের সাথে তোমার বন্ধুত্ব কি ভাবে হলো।।। আমার খুব জানতে ইচ্ছা করছে!! (এক্সাইটেড সুরে)
ইমা রুহির কথা শুনে একটু থতমত খেয়ে যাই।৷
ইমা- আ,,, আসলে,,,
বলতেই ইমার ফোনে কল আসে।।
রুহি – এমন টাইমে ফোন আসার কি খুব দরকার ছিলো।।(মুখ ভার করে)
ইমা হেসে বললো – রোকসানা কল করেছে।। ওয়েট৷
বলে ইমা ফোন রিসিভ করো কানে ধরলো।।
ইমা- হ্যা রোকসানা বলো।।
– আমি রোকসানা না আমি ইসমা।। (ছোট ছোট করে বললো ইসমা।)
ইমা – আমার কলিজাটা আন্টির ফোন থেকে কল করেছো!!! (হেসে)
রুহি- ইসমা!!! (ইমা মাথা ঝুকিয়ে হমম বললো)
ইসমা- হমম আন্টিকে বলেছি আমি আম্মুর সাথে কথা বলবো। আন্টি তোমাকে ফোন দিয়ে দিয়েছে।।
ইমা- ওরে বাবা,, আমার সোনা মা টা তো বলো মামুনি কি হয়েছে??
ইসমা- আম্মু তোমাকে বলেছিলাম না আমার বেলুন উরে যেতে লেগেছিলো একটা সুন্দর করে মানুষ বেলুনটা ধরে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলো!!!
ইমা- হমম বলেছিলে তো!!
ইসমা- ওই মানুষটাকে আজ টিভিতে দেখেছি।।
ইমা- টিভিতে দেখেছো??? (একটু বিস্মিত হয়ে)
বলতেই এমন সময় নার্স এসে দরজা খুলে বললো- ম্যাডাম ইমারজেন্সি।। তারাতারি আসুন।।
রুহি- আমি যাচ্ছি তুমি আসো।। (বলে রুহি উঠে তারাতারি চলে গেলো)
ইমা- ইসমা মামুনি এখন আমার যেতে হবে মা।।
ইসমা- ঠিকাছে।। আম্মু আজ বাসায় তারাতারি আসবে তো???
ইমা- হ্যা সোনা আজকে তারা তারি বাসায় আসবো।। আজ তোমাকে অপেক্ষা করাবো না ।। এখন রাখি??
– ওকে আম্মু।। টাটা বাই বাই।।
ইমা- বাই।।। (বলে ফোন কেটে দিয়ে ইমা তারাতারি স্টেথিস্কপ্ নিয়ে বের হয়ে গেলো।।)
”
”
”
হমম আপনারা ঠিকি ধরেছেন এটা সেই ইসমা যার সাথে ইসানের রেস্টুরেন্টের সামনে দেখা হয়েছিলো।। ইসমা ইমার রাজকন্যা।। ইমা হসপিটালে চলে আসলে ইসমার দেখা শুনা রোকসানা করে।।। চলুন গল্পে ফিরা যাক।।
”
”
”
এদিকে ইসান বারান্দায় মৃদু বাতাসে দাড়িয়ে ট্যাবে আজকের কনফারেন্সের হসপিটালের যেগুলো ছবি সোশাল মিডিয়াতে দেওয়া হয়েছে সেগুলো দেখছে।। হঠাৎ তার আর ইমার ছবি সামনে আসে।। ইসান ছবিটা তারাতারি সেফ করে এবং ছবিটা ক্রোপ করে নিজেকে কেটে দিয়ে শুধু ইমাকে রাখে।।। ইসান এক চিলতে হাসি নিয়ে ইমার ছবিতে আলতো ভাবে স্পর্শ করে বললো-
ইসান- ৬ টা বছর তোমাকে অনেক মিস করেছি।। আজ যখন তোমাকে আমার সামনে দেখলাম ইচ্ছা করছিলো তোমাকে ঝাপটে ধরে জোরে জেরে কান্না করে বলি আমি তোমাকে কতটা মিস করেছি।। তোমাকে সত্যিই ডাক্তার কোর্টে খুব ভালোদেখাচ্ছে ইমা।।
বলতেই দরজায় কেও নক করলো।
ইসান রুমে এসে ট্যাব রেখে বললো- কামিন।।
আকাশ দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো।।।
ইসান- কি হয়েছে???
আকাশ চিন্তিত হয়ে – স্যার,,,,,
ইসান- কি হয়েছে তোমাকে চিন্তিত কেন দেখাচ্ছে??
আকাশ- স্যার মিঃ বারিক সুইসাইড করেছে।। এবং ম্যানেজার মিনহাজকে কারা যেন খুব খারাপ ভাবে পিটিয়েছে।।।
ইসান হতবাক হয়ে উত্তেজিত সুরে বললো- কি??? কি বলছো এগুলো???মিঃ মিনহাজ বেচে আছে তো???
আকাশ- জি বেচে আছে। উনাকে RK হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে।।
ইসান- কে,,!!!,, কে এই কাজটা করতে পারে??
আকাশ,- স্যার আমার কনো আইডিয়া নেই।।
ইসান- আকাশ গাড়ি রেডি করো এখুনি হসপিটালে যাবো।।
আকাশ চলে গেলো ইসান তৈরি হয়ে নিচে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো৷৷
ইসান- আকাশ আমার কেন যেন মনে হচ্ছে মিঃ বারিক সুইসাইড করেনি। উনাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
আকাশ- আপনি এতো কনফিডেন্ট হয়ে বলছেন কি ভাবে স্যার??
জনি- স্যার আমার কেন যেন মনে হচ্ছে মিঃ মিনহাজ এবং মিঃ বারিক এরদের এই অবস্থার পিছনে একজনি আছে।।
ইসান- হমম আমিও সেটাই ভাবছি।। এক দিনে দুই জন মানুষের এমন হয় কি ভাবে। ভেবে দেখো এরা দুজনাই DW হসপিটালের সাথে জরিতো।।। কেও আছে যে চাচ্ছে না হসপিটাল টা হোক।।।
আকাশ- কে এমনটা চায়তে পারে!!!
ইসান – যেই চাক না কেন।। এই কথা গুলো বাবার কানে যেন না যাই।। ব্যাপার টা আমিই সামলাবো।। ।। এবং এর মাথা টাকে খুজে বের করবো।।।
আকাশ- কিন্তু স্যার বড় স্যার এটা জানতে পারবেই।। কারণ এতোখনে বিষয়টা টেলিকাষ্ট হয়ে গেছে।।।।
ইসান- উফফ এটা তো আমার মাথায় ছিলো না।।।
ইসান হসপিটালে পা রাখা মাত্রই মিডিয়ারা ইসানকে ঘিরে ধরলো এবং প্রশ্ন করতে লাগলো৷ আকাশ, জনি সব মিডিয়া দের সরিয়ে দিতে লাগলো৷ সিও মিঃ আবরার হোসেন হসপিটাল থেকে বের হয়ে এসে ইসানকে ভিতরে নিয়ে আসলো।।
আবরার- স্যার আপনি চিন্তা করবেনা আমাদের ডাক্তারদের উপর একটু ভরসা রাখুন।। । মিঃ মিনহাজ কে বাচিয়ে নিবে।
ইসান- হমম৷ এটাই আশা করছি।।
ইসান ভিতরে অপারেশন থেইটারের সামনে আসতেই দেখে একজন মহিলা তার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসে কান্না করছে।।।
জনি- স্যার ইনি হচ্ছে ন মিঃ মিনহাজ এর স্ত্রী।।।
ইসান গিয়ে মহিলাটির সামনে দারিয়ে বললো- চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে।।। মিঃ মিনহাজ এর কিচ্ছু হবে না।।
মিহালাটি ইসানের দিকে তাকায় এবং হাও মাও করে কান্না করে ইসানের পায়ে পরে যাই।।
– আমার স্বামীকে বাচিয়ে নিন। উনার কিছু হয়ে গেলে আমার ছেলে অনাথ হয়ে যাবে।।।
ইসান মহিলাটিকে ধরে উঠিয়ে বসালো চেয়ারে এবং বললো- উনার কিচ্ছু হবে না৷ বিশ্বাস রাখুন।।।
এমন সময় পুলিশ চলে আসলো।। আকাশ জনি পুলিশের সাথে কথা বলে নিলো।।।
১৫ মিনিট পর অপারেশন থেইটারের মাথার উপর লাল লাইটটা বন্ধ হলো। সবাই একটু টেনশন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।। অপারেশন থেইটার থেকে ইমা, মাহিম, রুহি একসাথে কথা বলতে বলতে বের হচ্ছে এমন সময় রুহি দেখে ইসান দাড়িয়ে।। রুহি ইমাকে আসতে ঠেলা দিলো ইমা সামনে তাকাতেই দেখে ইসান দারিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে।।।। মিনহাজ এর স্ত্রী গিয়ে ইমার হাত ধরতেই ইমা ইসানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নেই৷
ইমা মিনহাজ এর স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে তার হাতের উপর হাত রেখে বললো- চিন্তা করবেন না আপনার হাসবেন্ড এখন ঠিকাছে। ভয়ের আর কিছু নেই।। (মুচকি হেসে)
আবরার- আমি জানতাম।। স্যার আমি বলেছিলাম না।। আমাদের ডাক্তার রা সত্যি খুব ভালো।। ( ইসানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে)
ইসান- হমম ঠিক বলেছেন।। thank you ইমা।।( ইমার দিকে তাকিয়ে)
ইমা ইসানের দিকে তাকিয়ে বললো- এটা আমার কর্তব্য।।। স্যার পেশেন্ট কে ঘন্টা খানিক পর ক্যাবিনে দেওয়া হবে।। আমি এখন বাসায় যাবো।। ডাক্তার মাহিম থাকবেন এখানে। (মিঃ আবরার এর দিকে তাকিয়ে বললো)
আবরার- ওকে ঠিকাছে আপনি যান ডাক্তার ইমা।।।
(ইমা সেখান থেকে চলে গেলো)
ইসান- ইমা তার বাসায় যাবে?? (মনে মনে ভাবতেই আবরার বললো-)
আবরার – স্যার আর চিন্তার কনো কারণ নাই আপনি ও এখন বাসায় চলে যান।।। মিঃ মিনহাজ এর এখানে গুড কেয়ার নেওয়া হবে।।
ইসান- ওকে মিঃ আবরার।। আমিও তাহলে এখন আসি।। (আবরারের সাথে হাত মিলিয়ে বললো)
আবরার- ওকে স্যার।।।
ইসান হসপিটাল থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসলে ও তার চোখ ইমাকে খুজছিলো।। জনি গারি স্টার্ট দিলে ইসান দেখে ইমা রুহি একসাথে বের হচ্ছে হসপিটাল থেকে।।
ইসান একটু উত্তেজিত হয়ে জনিকে বললো- জনি জনি গাড়ি থামাও।।
জনি গাড়ি থামিয়ে ইসানের দিকে ঘুরে বললো- কি হয়েছে স্যার।।।
ইসান- আকাশ ওই দেখো দুইজন ডাক্তার আসছে যাও ওদের গিয়ে ডেকে নিয়ে আসো।।
আকাশ- ওকে স্যার।।
আকাশ গাড়ি থেকে বের হয়ে ইমা রুহির সামনে এসে দাড়ালো।। রুহি ইমা চমকে আকাশের দিকে তাকালো।।
আকাশ- ম্যাডাম আপনাদের দুইজনকে আমার স্যার ডেকেছে।।
ইমা রুহি গাড়ির দিকে তাকালো।।
ইসান অস্থির হয়ে মনে মনে বললো- কি বলছে আকাশ!! ওরা এমন করে এদিকে দেখছে কেন???
ইমা- আমরা যাবো না।। (একটু গম্ভীর সুরে)
রুহি ইমার হাত টেনে বললো- আমরা যাবো।( কপাল কুচকে)
ইমা রুহির দিকে তাকালো। রুহি ইমার দিকে হাসি মুখ করে বললো- আমরা যাবো ইমা।।
ইমা- তুমি যাও আমি যাবো না (বলে হাটা দিলো)
ইসান- আরে ও তো চলে যাচ্ছে।।( উত্তেজিত সুরে)
জনি ইসানের কথা শুনে পিছনে ঘুরে তাকালো।। দেখলো ইসান ইমার যাওয়া দেখছে।। জনি গাড়ি থেকে বের হতে লাগলো।। ইসান শব্দ পেয়ে জনির দিকে তাকালো
ইসান- আরে তুমি কথায় যাচ্চো?? (কপাল কুচকে)
জনি- আমি এখুনি আসছি স্যার।। (বলে দৌড় দিয়ে ইমার সামনে দারালো। ইমা চমকে উঠলো।।)
জনি- ম্যাডাম প্লিজ আমাদের স্যার আপনাদের দুইজনকে ডেকেছেন। প্লিজ আসুন।।
রুহি- ইমা চলো না শুনে আসি। কি বলে।। (অসহায় মুখ করে)
ইমা জোরে শ্বাস ছেরে বললো- ওকে চলো।।
রুহি খুশি হয়ে ইমার হাত ধরে ইসানের গাড়ির দিকে আসতে লাগলো।।
ইসান আনন্দিত সুরে এক্সাইটেড হয়ে বললো- আসছে আসছে ইমা আসছে উফফ।।
ইসান গলা খাস দিয়ে ঠিক ঠিকা করলো।। গাড়ির আয়নার দিকে তাকিয়ে চুল ঠিক আছে কিনা দেখলো এবং কোর্ট হাত দিয়ে ঠিক ঠাক করলো হাতের ঘড়ি ঠিক আছে কি না দেখলো।। এবং সুন্দর করে বসলো।। ইসানের খুব হাসি আসছিলো ইসান মুখ চেপে ধরে হেসে নিলো।। এবং এক্সাইটেড সুরে বললো- উফফ কি হলো আমার৷ না না এতো হাসা যাবে না।। ইসান কনট্রোল কনট্রোল৷ নিজেকে শান্তো রাখো। শান্তো,,,,,,,,,
বলতেই আকাশ গাড়ির জানালাই নক করলো।। ইসান জোরে একটা শ্বাস নিয়ে ছাড়লো এবং আসতে করে গাড়ির জানালার কাচ নামালো।।
রুহি- হ্যালো স্যার।। (হেসে)
ইসান- হ্যালো।। হ্যালো ইমা!! (ইমার দিকে তাকিয়ে)
ইমা- হ্যালো।।( গম্ভীর সুরে)
ইসান- দুজন কি বাসায় যাচ্ছো।।
রুহি- জি স্যার আমরা বাসায় যাচ্ছি।। (হেসে)
ইসান- তোমরা চায়লে আমি তোমাদের বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসতে পারি। আসলে রাতো তো হয়ে গেছে তাই বললাম।।
রুহি বড় বড় চোখ করে অবাক হয়ে বললো- আপনি আমাদের বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসবেন??
বলতেই ইমা বললো- আমরা ট্যাক্সি তে যাবো। চলো রুহি।। (বলে রুহির হাত ধরে যেতে লাগলে ইসান বললো-)
ইসান- ইমা!! ( ইমা থেমে গেলো।।) এখন প্রায় ১০ টা বাজে এখন ট্যাক্সি নাও পেতে পারো।। তাই বলছি।। আমি নামিয়ে দিয় সমস্যা কথায়!!!
রুহি- ইমা চলো না।। প্লিজ প্লিজ।। (হাত জোর করে অসহায় চেহারা বানিয়ে বললো) ইমা রুহির দিকে তাকিয়ে বললো- ঠিকাছে তোমরা জন্যই যাচ্ছি।।
ইসান ইমার কথা শুনে খুব খুশি হলো।। আকাশ গাড়ির দরজা খুলে দিলে ইসান আশা করে ইমা তার পাশে বসবে। কিন্তু ইমা সেটা না করে রুহিকে ইসানের পাশে
বসালো। আর রুহির পাশে ইমা বসলো।। ইসানের হাসি মুখটা মন খারাপে পরিনত হলো।। জনি আকাশ গাড়ি তে উঠে বসলো। এবং গাড়ি স্টার্ট দিলো।।। রুহি তো খুব এক্সাইটেড ইসানের পাশে বসে।। সবাই চুপ কেও কনো কথা বলছে না।। রুহি ইমার কানের কাছে এসে বললো-
রুহি- কিছু বলো।।
ইমা- কি বলবো।।।
রুহি- তোমার বন্ধু উনি। কিছু তো বলো!!!
ইমা- না আমার কিছু বলার নেই৷।।
ইসান দেখলো রুহি ইমা ফিস ফিস করে কথা বলছে।।
ইসান- কি হয়েছে। কি বলছো তোমরা???
রুহি হেসে বললো- না তেমন কিছু না স্যার।।
ইসান- ও,, আচ্ছা।। তো মিস রুহি আপনার সম্পর্কে বলুন।।
রুহি- আমার সম্পর্কে কি বলবো। আমি ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম না বাবা মা জোর করে ডাক্তারি পড়িয়েছে।। তাই টেনেটুনে হসপিটালের জুনিয়ার ডাক্তার হতে পেরেছি।। এখন বিয়ের কথা ভাবছি।। আপনার মতো একজন ছেলে,,,,( ইসান ইমা দুজনাই রুহির দিকে তাকালো রুহি দুজনার দিকে তাকিয়ে বললো) আরে বলছিলাম যে স্যারের মতো একজন ভালো মানুষকে জীবনে চায় এই আরকি।।
ইমা ইসানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো- আহারে ভালো মানুষ হম্।।।
রুহি- স্যার আপনার সম্পর্কে বলুন।।
ইসান- আমি এই তো বিজনেস এ আছি বাবার সাথে।।
রুহি- কনো গার্লফ্রেন্ড আছে?? কিছু মনে করবেন না সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম।
ইসান হেসে বললো- না ঠিকাছে।। না গার্লফ্রেন্ড নেই।। ছিলো একটা (ইমার দিকে তাকিয়ে ইমা ইসানের দিকে তাকালো) সে চলে যাওয়ার পর আর কখনো কাওকে ভালোই লাগে নি।।
রুহি- ও,,,,, সে মেয়েটা নিশ্চয় অনেক সুন্দর ছিলো তাই না!!!
ইসান- হমম অনেক সুন্দর আমার কাছে ও একটা এঞ্জেল ছিলো। যার ছোঁয়াই সব কিছু বদলে গিয়েছিলো আমার জীবনের।।
রুহি- এতো ভালোবাসতেন তাকে!!
ইসান- হমম।
রুহি- সে এখন কথায় আছে জানেন সেটা দেখা হয়েছে আর কখনো!!
ইমা রুহি হাত ধরে রাগান্বিত সুরে বললো- কি হচ্ছে এতো কথা বলছো কেন?? চুপ থাকো।।
ইসানের চোখে কোনায়,পানি চলে আসে ইসান গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আসতে করে চোখ টা মুছে নেই।।
ইমা গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে বললো- তুমি সত্যিই যদি বদলাতে তাহলে হয়তো আমাদের কখনো আলাদা হতে হতো না।।।তুমি বদলাও নি কিন্তু আৃার জীবনটা উলট পালট করে দিয়েছো ( মনে মনে বললো)
কিছুখন পর,,,
রুহি- এখানেই থামান ওই যে আমার বাড়ি।।।
জনি গাড়ি থামালো। রুহি বের হলো ইমাও বের হলো।
রুহি- তুমি বের হচ্ছো কেন??( ইমার দিকে তাকিয়ে)
ইমা- আমি আমার বাড়ি পর্যন্ত ট্যাক্সি নিয়ে যেতে পারবো।।
রুহি- ইমা এখান থেকে ট্যাক্সি পাওয়া যাই না তুমি যানো।। যাও গাড়িতে বসো। স্যার তোমাকে নামিয়ে দিবে।। যাও উঠো।।
রুহি একটু জোর করেই ইমাকে গাড়িতে তুলে দিলো।।। এবং গাড়ির দরজা বন্ধ করে দিলো।।
রুহি ইমার দিকে তাকিয়ে বললো- কাল দেখা হবে।। ওকে স্যার thank you ভালো থাকবেন।। ( ইসানের দিকে তাকিয়ে)
ইসান- ওকে।। (মুচকি হেসে)
জনি গাড়ি টান দিয়ে যেতে লাগলো।। ইমা ইসান আর তার মাঝখানে ব্যাগ রাখলো। ইসান ইমাকে ব্যাগ রাখতে দেখে মনে মনে বললো-
ইসান- আজো জানিনা এতো বড় দুরত্ব কেন হলো আমাদের মাঝে।।। (মনে মনে)
ইসান না ইমা কেও কনো কথা বলছে না।।। দুজনাই চুপ চাপ।।
কিছুখন পর,,,
ইসান- তো তোমার লাইফ কেমন কাটছে???( ইমার দিকে তাকিয়ে)
ইমা চমকে ইসানের দিকে তাকিয়ে বললো – ভালোই কাটছে।।
ইসান- ও আচ্ছা।।। তো জীবনে কেও,,,,
বলতেই ইমা বললো- সামনে দারান।। আমার বাড়ি চলে এসেছি।।
ইসান গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো দেখলো বিশাল বড় ১০ তালা বিল্ডিং।
ইমা গাড়ি থেকে নেমে বললো- thank you।।।
ইসান- হমম।।। বাই।।
ইমা চলে গেলো। ইসান ইমার চলে যাওয়া দেখছিলো।।। ইমা ভিতরে ঢুকে গেলে ইসান জনিকে যেতে বললো।
জনি গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে চলে গেলো।।।
এদিকে ইমা লিফ্টে করে ৮ নাম্বার তলায় আসলো এবং তার বাড়ির দরজায় নক করলো। রোকসানা দরজা খুলে দিলে ইমা বললো-
ইমা- ইসমা কি ঘুমিয়ে গিয়োছে??
রকসানা- জি ম্যাডাম। আপনার জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পরেছে।।
ইমা- আজো লেট হয়ে গেছে কি করবো।।
রোকসানা- খাবার টেবিলে রেডি করবো ম্যাডাম।।
ইমা- না তুমি গিয়ে শোও আমি করে নিবো।। বলে ইমা ইসমার রুমে গেলো দেখলো ইমা ঘুমিয়ে আছে কি সুন্দর লাগছে তাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে।। ইমা মুচকি হেসে ইসমার কপালে চুমু দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।। এবং বললো-
ইমা- সরি মা আজো দেরি হয়ে গেলো।।
এদিকে ইসান হোটেলে ফিরলো। ইসান লিফ্টের উঠতে গেলে আকাশ বললো-
আকাশ- স্যার!!
ইসান পিচনে ঘুরে তাকালো- হমম বলো!!
আকাশ- ডাক্তার ইমা কি সত্যি আপনার ফ্রেন্ড!!
ইসান হেসে আকাশের কাধে থপথপিয়ে বললো- না ও আমার ফ্রেন্ড না।।।
আকাশ- তাহলে,,,,,,,!!!!
জনি- আমি বলবো??
আকাশ – তুই জানিস।।( অবাক হয়ে)
জনি- গেস করতে পারি।।
ইসান- এতো কষ্ট করে গেস করতে হবে না।। ডাক্তার ইমার সাথে আমার কি সম্পর্ক??? এটা জানতে হলে অনেকটা সময় নিয়ে এসে আমার কাছে বসে থাকতে হবে।
আকাশ- আমি জানতে চায় স্যার। আজ আমি আপনার চোখে এক অন্য রকম মায়া দেখেছি।।। ডাক্তার ইমার জন্য।
ইসান- চলো গাড়ি তে উঠো।।। কথাও গিয়ে বসে কাহিনিটা বলি।।
জনি, আকাশ- ওকে স্যার চলুন।।। বলে আবার তারা গাড়িতে উঠে চলে গেলো।।
এদিকে ইমা খাওয়া দাওয়া শেষ করে ল্যাপটপ নিয়ে বসলো।। ল্যাপটে ওপেন করতেই মেইল আসতে লাগলো।। ইমা মেইলে ক্লিক করতেই দেখলো তার আর ইসানের আজকে হসপিটালে তুলা ছবি।। তার সব কলিক রা ছবিটা তাকে সেন্ট করেছে।।
ইমা রেগে গিয়ে ল্যাপটপ বন্ধ করে দিলো এবং উঠে ওয়াস রুমে পানির ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে জোরে জোরে মুখে পানি ঝাপটা দিতে লাগলো।।। তারপর আয়নার দিকে তাকিয়ে বললো-
ইমা- কেন কেন ফিরে এসেছো ইসান কেন এসেছো? কেন?? (জোরে রেগে বললো)
ইমা জোরে জোরে কান্না করতে করতে মেঝেতে বসে পরলো এবং বললো- তোমার জন্য আমার জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেছে।। আমার জীবনের সব চেয়ে মুল্যবান মানুষগুলো তুমি আমার জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছো ইসান।। কেড়ে নিয়েছো (বলে হুহু করে কান্না করতে লাগলো)
,,,,,,,,,,,,,,,,continue,,,,,,,,,,,,,,,