I’m Mafia lover পর্ব -০৫

#i_m_mafia_lover
#Part_5
#sabiha_kh

রাস্তার পাশে সমুদ্রুের পার বাধা মানুষ দের বসার জন্য।। সেখানে গাড়ি থামালো জনি।। ইসান গাড়ির দরজা খুলতেই ঠান্ডা বাতাস তার শরীরে এসে লাগে ।। আকাশ জনি গাড়ি থেকে বের হয়ে ইসানের সামনে দাড়ায়।।

ইসান – দাড়িয়ে না থেকে বসো।। আর এই নাও।। (বীয়ারের বোতল এগিয়ে দিয়ে)

আকাশ- স্যার আমরা আপনার সামনে,,,,,!!!

ইসান- আমার সামনে কি!! দেখো এক মাত্র তোমরা দুজনি আছো যাদের সাথে আমি মন খুলে কথা বলতে পারি।। তোমার শুধু আমার বডিগার্ড / ডানহাত বাম হাত না তোমরা আমার ভালো বন্ধুও। আমি মনে করি।।। (মুচকি হেসে)

জনি আকাশ ইসানের কথা শুনে অবাক হলো সাথে খুশিও হয়।।।

ইসান- দুই জন দুইটা নাও এবং ওখানে বসো।।( বীয়ারের বোতল এগিয়ে দিয়ে)

আকাশ জনি ইসানের হাত থেকে বীয়ারের বোতল নিয়ে বসলো ইসানের সামনে।।। ইসান পাশ থেকে আরেকটা বীয়ারের বোতল নিয়ে খুলে খেতে লাগে এবং সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগে।।

ইসান- বাতাসটা খুব ঠান্ডা৷ আকাশ, জনি,পিছনে তাকাও দেখো সমুদ্রে ঢেউ গুলো।।( জনি আকাশ পিছনে তাকালো।)

ইসান- আমার জীবন টা এই সমুদ্রের ঢেও এর মতো ছিলো।। কখনো শান্তো কখনো উত্তাল। তবে শান্তো কম ছিলো বললেই চলে।।। (হেসে)

৬ বছর আগে,,,,,,,

NS কলেজ নাম করা দামি কলেজ।। সেখানের প্রায় কিছু সংখ্যক স্টুডেন্ট দের ফ্যামেলি অবস্থাশালী বললেই চলে।।। তার মধ্যে ইসানের বাবা ছিলো একটু বেশিই ভালো পজিশানে।।। যারা একটু নিম্ন বা মধ্যবিত্ত তারা এডমিশন বা স্কলারশিপে সেই কলেজে পরতে পারতো। তাদের মধ্যে ইমা ছিল একজন।।। ইমার বাবা একজন সরকারি ব্যাংকের কর্মচারি।।।। ইমা ছিলো খুব ট্যালেন্টেড মেয়ে সে নিজের যোগ্যতায় কলেজে স্কলারশিপ পেয়ে ভর্তি হয়।।। ইসান পরতো অনার্সে আর ইমা নিউ ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে।।

ইসান ছিলো কলেজের স্টুডেন্টদের লিডার।। তাই তার ভাবি ছিল অন্যরকম সে কখনো কারো পরোয়া করতো না। যাকে ইচ্ছা তাকে ধরে মারতো।৷ উল্টা পাল্টা পানিশমেন্ট দিতো।। ইসানের ছিলো দুই বন্ধু রোহান, সামির। তারা সব সময় ইসানের পাশে পাশেই থাকতো।। ইসানের সাথে তারাও কলেজে দাদাগীরি দেখাতো সবার সাথে।।। ইসানকে প্রিন্সিপাল ডেকে অনেকবার বুঝিয়েছে। কিন্তু কনো কাজ হয়নি।। সব স্যার ম্যাডাম রাই ইসানের উপর ক্ষিপ্ত বললেই চলে।।। তারা প্রিন্সিপাল স্যারকে ইসানের নামে অভিযোগ করে এবং ইসানকে কলেজ থেকে বের করে দিতে বলে কিন্তু প্রিন্সিপাল এই কাজ করার সাহস পায় না কারণ ইসানের বাবার দাপোটি ছিলো অন্য রকম এবং প্রতি বছরে জহির চৌধুরী অনেক টাকা ডোনেশন দেয় কলেজে ফান্ডে।। তাই প্রিন্সিপাল ইসানের বিষয়টা আমলে নিতো না খুব একটা। চুপচাপ থাকতো।।।

কলেজের মেয়েরা ইসান এবং তার দুই বন্ধু কে দেখে ক্রাস খেত।। ইসান, সামির, রোহান তিন জন তিন গাড়ি নিয়ে যখন কলেজে ঢুকে মেয়েরা যেন তাদের দেখার জন্য হুমরি খেয়ে পরে।।। এদের মধ্যে ইমাই ছিলো অন্য রকমের।।।
একদিন ইসান তার দুই বন্ধুকে নিয়ে কলেজের ক্যান্টিনে ঢুকতে গেলে একটা ছেলের পা সিল্প করে ইসানের সামনে পরে যাই ছেলেটার হাতে ছিলো নুডলস এর বাটি সেটা ইসানের জুতার উপর পরে যাই৷।।। ছেলেটা মাথা তুলে ইসানের দিকে তাকায়৷ দেখে ইসান রাগান্বিত চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে।। ছেলেটি ভয়ে তারাতারি উঠে দাড়িয়ে ইসানের কাছে ক্ষমা চায়তে লাগে৷৷
ইসান ছেলেটার কলার ধরে রাগান্বিত সুরে বললো-

ইসান- আমার জুতার দাম তোর বাড়িতে ১ মাসের খাবারের দামের সমান।।।

ছেলেটির নাম ছিলো মেরান।
মেরান ভীত সুরে বললো – সরি স্যার আমাকে ক্ষমা করবেন।। আমি ইচ্ছা করে করিনি।।

ইসান- তুই ইচ্ছাকৃত কর বা অনিচ্ছাকৃত সেটা আমার দেখা বিষয় না। এখন তুই আমার জুতা পরিষ্কার করে দিবি। তোর মুখ দিয়ে।। আমার জুতার উপর পড়া নুডলস মুখ দিয়ে খাবি।। হাত লাগানো যাবে না।। ওকে।।

বলে ইসান ঘাড় ধরে মেরান কে বসালো।। ক্যান্টিনের সবাই তাকিয়ে আছে মেরানের দিকে। মেরান কান্না করতে লাগে।। কি করবে বুঝতে পারে না।।

ইসান- আমার দেরি করা একদম পছন্দ না।। দ্রুত কর।। (রেগে জোরে বললো)

মেরান কান্না করতে করতে কেবল মুখ লাগিয়ে নুডলস খেতে যাবে এমন সময় ইমা এসে মেরানের কাধে হাত রাখে।। মেরান কান্না ভরা চোখে ইমার দিকে তাকায়।। ইসানও ইমার দিকে তাকায় ইমা মাথা তুলে ইসানের দিকে রাগান্বিত চোখে তাকায়।।।

ইসান- কে তুমি?? ওর বদলে কি তুমি খাবে??? (হেসে)

ইমা মেরানের দিকে তাকিয়ে বললো- তুমি সরো আমি দেখছি।।

মেরান- কে তুমি?? আর কি দেখবে দেখো তুমি সরো আমি পারবো।। (কান্না করে)

ইমা- আমি যেটা বললাম সেটা করো সরে যাও।।

ইসান- এই মেয়ে সরে যাও এখান থেকে।। (একটু জোরে)

বলতেই ইমা নুডলস গুলো তুলে ইসানের মুখে ফিক্কা মারলো।। এবং ইসানকে ধাক্কা দিলো।।

ইসান তো পুরাই অবাক।। কি হলো বুঝেই উঠতে পারলো না।। ক্যান্টিনের সবাই ইমার কাজ দেখে হা হয়ে গেলো।। কারণ ইসানের সাথে এমনটা করার সাহস কারোর নেই।

ইসান রেগে বললো- তোমার এতো সাহস তুমি যানো আমি কে???

ইমা- তুমি কে সেটা আমার জানার দরকার নাই।। তুমি যে মানু্ষের মধ্যে পরো না এটা ভালোই বুঝতে পারছি।।। অসভ্য ছেলে।।। ( রেগে জোরে বললো)

বলে ইমা মেরান কে সাথে নিয়ে ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে গেলো।।। ইসানের রাগে শরীর ফেটে যাচ্ছিলো।।

ইসান- ছাড়বো না ওই মেয়েকে।। (দাঁত খিঁচিয়ে বললো)

দুই দিন পর ইমা সাইকেল চালিয়ে কলেজে ঢুকলো।। এক পাশে সাইকেল রেখে স্যারের সাথে কথা বলতে গেলে ইসান এবং তার দুই বন্ধু ইমার সাইকেলের উপর দিয়ে ইচ্ছা করে গাড়ি চালিয়ে নিয়েনযাই। ইমা শব্দ পেয়ে পিছন ঘুরে তাকাতেই দেখে ইসান তার সাইকেলের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং তার দিকে তাকিয়ে হাত নারিয়ে হাই দিচ্ছে।।। ইমার কান্না চলে আসে। সে দৌড়ে তার সাইকেলের কাছে আসে দেখে সাইকেল ভেঙে গেছে।।। ইমা প্রচন্ড রেগে গেলো।। পাশে ছিলো আধখানা ইট।। ইমা ইট তুলে নিয়ে দৌড়ে ইসানের গাড়ির দিকে গেলো ইসান গাড়ি থেকে বের হতে না হতেই ইমা ইসানের গাড়ি লক্ষ করে। ইটটা ছুড়লো সাথে সাথে গাড়ির কাচ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো।। ইসান গাড়ি থেকে বের হয়ে দেখে ইমা রেগে তার দিকে তাকিয়ে আছে।।। ইসান রেগে ইমার কাছে এসে ইমার স্কুল শার্টের কলার টেনে ধরে বললো- তোর সাহস তো কম না।।
বলতেই ইমা টেনে একটা থাপ্পড় মারলো ইসানের গালে।। ইসান গাল ধরে ইমার দিকে তাকালো।।

ইমা- আমি একটা মেয়ে।। জমিদার বংশের ছোটলোক ছেলে।। মেয়েদের সাথে কেমন ব্যাবহার করতে হয় তাই জানিস না।। তুই কি ভেবেছিস আমি অন্য মেয়েদের মতো অন্যায় করবি চুপচাপ থাকবো।। তোর উপর ক্রাস খাবো!! না আমি তেমন না তোর এই সুন্দর চেহারা লাল বানিয়ে ছেড়ে দিবো।। খরবদার আমার সাথে লাগতে আসবি না।। (রেগে বললো)

ইমার কথা শুনে ইসানের বন্ধু রোহান, সামির এগিয়ে আসতে লাগলে ইসান বাঁধা দেয়।।।

ইমা- এই ইটের টুকরাটা ছিলো আমার সাইকেল ভাঙার জন্য।।। মাথায় রাখিস।।(বলে ইমা চলে গেলো)

বর্তমান,,,,,,,,

আকাশ- বাবারে ম্যাডাম তো সেই রাগীছিলো।।( অবাক হয়ে)

জনি- রাগীবললে ভুল হবে এটাকে প্রতিবাদী বলে।।

ইসান হেসে বললো – ওর এই রাগ, প্রতিবাদীর টাই আমাকে বদলে দিয়েছে।।

আকাশ- তারপর কি হলো স্যার!

ইসান- আমি রোহান সামির ঠিক করলাম ইমাকে এমন শিক্ষা দিবো যেন ও আর লজ্জায় কলজে না আসতে পারে।।।,,,,,,,,,,,

অতীত,,,,,,,

ইসান ক্যান্টিনে গিয়ে সবাইকে বললো- ইমা নামের ওই মেয়েটা ক্যান্টিনে এসে বসলেই ওকে ঘিড়ে ধরে সবাই মিলে ওর মুখে ডিম ছুড়ে মারবে তারপর আটা তার উপর টেমেটো সস৷।। এবং কয়েকজন মিলে সেটা ভিডিও করবে সুন্দর করে ওকে।।

সবাই রাজি হলেও কয়েকজন একটু দ্বিমত করে।। ইসান রেগে গেলে তারাও রাজি হয়ে যায়।। ইসান, সামির রোহান তিনজন ক্যান্টিনের শেষের টেবিলে বসে থাকে।।।ইসান দেখলো ইমা মোবাইল টিপতে টিপতে ক্যান্টিনের ভিতর ঢুকছে।।।

ইসান বাকা হাসি দিয়ে বলে- এবার খেলা জমবে।।

ইমা মোবাইল ব্যাগের ভিতর রেখে ক্যান্টিনে বসতেই মেয়েরা ছেলেরা ইমাকে ঘিরে ধরলো।। ইমা একটু অবাক হলো।

ইমা- কি ব্যাপার!!! (অবাক হয়ে)

বলতেই সবাই মিলে ইমাকে ডিম ছুড়ে মারতে লাগে।। ইমা তারাতারি উঠে দাড়ালে ডিমের উপর পা স্লিপ করে মাটিতে পরে যাই।।। ইসান ইমার অবস্থা দেখে হাসতে লাগে। তারপর সবাই ইমার উপর আটা ঢেলে দেয়।
ইমা কান্না,করতে করতে বললো- তোমরা কি করছো কেন এমন করছো আমার সাথে???

কেও কনো কথা বলছে না সবাই হাসছে আর ইমার সাথে এগুলো করছে।। ইমা উঠতে গেলে আবার পরে যাই।। সবাই ইমাকে দেখে জোরে হাসতে লাগে।।

ইসান এবং তার দুই বন্ধু উঠে ইমার সামনে এসে দাড়ায়। ইমা কান্না ভড়া চোখে ইসানের দিকে মাথা তুলে তাকায়।।

ইসান- আহারে দেখো এরা মেয়েটার অবস্থা কি করেছে।। (বলে ইসান ইমার দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে বললো- উঠে পারো।।)

ইমা ইসানের হাতের দিকে তাকায়।। সবাই অবাক হলো ইসান ইমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেওয়া দেখে।। রোহান সামির মুচকি মুচকি হাসছিলো।।

ইসান হাত সরিয়ে নিয়ে বললো- কি ভেবেছো এটা সত্যি!!!( বলে হেসে উঠলো।) আমি জহির চৌধুরীর ছেলে। আমার গালে চর মেরেছো না!! আমি কি করতে পারি দেখেছো।। এসো একটা সেলফি নিই।।
বলে সবাই ইমার ছবি তুলতে লাগলো।। ইমা খুব কষ্ট পাচ্ছিলো।।। তবুও সে হার মানার মেয়ে না ইমা উঠে দারালো।।

ইসান- এখন কি করবে ভাবছো?? আমাকে আবার মারবে।।

বলতেই ইমা টেনে এক থাপ্পড় মারলো ইসানের গালে আটা ডিম টমেটো সস লেগে গেলো ইসানের গালে।। ইসান বড় বড় চোখ করে রেগে ইমার দিকে তাকালো।।।

ইমা- তুই একটা অসভ্য ছোটলোক।। সবাইকে দিয়ে আমাকে অসন্মান করালি।। তুই যে মানুষের মধ্যে পরিস না এটাই তার প্রমান।। (রেগে জোরে বললো)

বলে ইমা কান্না করতে লাগলো এবং দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো।।।

বর্তমান,,,,,

ইসান- সেই মুহূর্তটা আমি কি বলবো আমার কি করা উচিত বুঝতে পারছিলাম না।। আমার খুব রাগ উঠে গেলো।।। রোহান সামির আমাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো৷ আমি খুব অপমান বোধ করছিলাম।। আমি কখনো হার মানতে শিখিনি তাই আমি আরেকটা বুদ্ধি বের করলাম ইমাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য।। ইমা ছিলো সাইন্সের স্টুডেন্ট৷।। আমি জানতে পেরেছিলাম ইমা সাইন্সের ল্যাবে রাখা কংকাল দেখে খুব ভয় পেতো।। আমি ঠিক করলাম ওই কংকাল দিয়ে ভয় দেখিয়ে ওকে সোজা করবো।

জনি- কি করলেন???

অতীত,,,,,,,,,,,,,,,

ইসান- রোহান মেয়েটাকে কারো মাধ্যম দিয়ে এই চিরকুট টা পাঠায় দে।।

রোহান- তারপর কি করবো??

ইসান- ও যখন সাইন্স ল্যাবে ঢুকবে তখন দরজা বন্ধ করে দিবি আর সামির তুই লাইট বন্ধ করে দিবি তারপর আমার যা করার আমি করবো।।

সামির, রোহান – ওকে।।।

যেই কথা সেই কাজ। ইমা সাইন্স ল্যাবে ঢুকতেই রোহান ধাম করে দরজা বন্ধ করে দিলো সামির লাইট বন্ধ করে দিলো।। ইমা ভয় পেয়ে গেলো।।

ইসান কংকালের সামনে লাল লাইট অন করতেই ইমা কংকাল দেখে ভয়ে ঘাবড়ে গেলো এবং দরজা ধাক্কাতে লাগলো। হঠাৎ হাতে পানি পানি কিছু অনুভব করলো ইমা।। নাকের কাছে হাত নিয়ে আসতেই রক্তের গন্ধ পেলো।। ইমা পিছনে ঘুরে তাকালো দেখে কংকালের হাতে ধাড়ালো ছুড়ি।। ছুড়ি দিয়ে রক্ত গোড়িয়ে পরছে।।। ইমা দেখে ভয়ে জোরে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে পরে গেলো মেঝেতে।। সামির লাইট অন করলে ইসান সামির ইমাকে জ্ঞান হারাতে দেখে জোরে জোরে হাসতে লাগলো।। রোহান ইসান সামির হাসির শব্দ শুনে ভিতরে আসে দেখে ইমা পরে আছে।।

ইসান- প্লেন সাকসেসফুল।।। (হেসে)এখন কেমন লাগে।। আমাকে থাপ্পড় মেরে ছিলিস না।।

এমন সময় সাইন্স ল্যাবে মেরান আসে।। দেখে ইমা মেঝেতে পরে আছে আর ইসান রোহান সামির দাড়িয়ে আছে।। মেরান দৌড়ে এসে ইমাকে ধরে৷। এবং ইসান, সামির, রোহানের দিকে তাকিয়ে বলে- কি করেছেন আপনারা ওকে???

ইসান- শিক্ষা দিয়েছি। ( বলে তারা চলে গেলো।।।)

ঘন্টা খানিক পর,,,,,

সামির চিন্তিত সুরে বললো- ইসান ছেলেটা নিশ্চয় এতো খনে মেয়েটাকে বলে দিয়েছে।। আচ্ছা মেয়েটা যদি প্রিন্সিপাল স্যার কে বলে দেয় তুই নাহয় বেচে যাবি কিন্তু আমার আর রোহানের কি হবে!! আমাকে রোহানকে যদি কলেজ থেকে বের করে দেয় তখন।।।

ইসান একটু চিন্তায় পরে গেলো।। প্রিন্সিপাল ইমাকে প্রশ্ন করলে ইমা বলে সে এমনিই জ্ঞান হারিয়ে ছিলো।। এই খবর টা একজন ছেলে এসে ইসানকে বলে যায়।।

ইসান খুব অবাক হয়।। এবং মনে মনে বলে- সে চায়লে সত্যি কথা বলতে পারতো কিন্তু কেন বললো না?

বর্তমান,,,,,,,,,,,,

ইসান- বিষয়টা আমার মনের মধ্যে ঘুরতে লাগলো এই কাজটা কেন করলো ইমা?? তারপর থেকে আমি ইমাকে আর কিছুই বলিনা শুধু ওকে দেখি আর ভাবি কেন ও আমাকে আমার দুইবন্ধুদেরকে বাচালো।।

আকাশ- তারপর কি জাবতে পেরেছেন কেন উনি এমনটা করলো??

ইসান- হমম জানতে পরেছি। তাও কলেজ ক্যাম্পিং এ গিয়ে। তবে ইমার কাছ থেকে না মেরান নামের ওই ছেলের কাছ থেকে।।। সেই ক্যাম্পিং ইমা আসছিলো না। জানতে পারি তার বাবা ক্যাম্পিং পছন্দ করে না তাই আসেনি।।।

জনি- তার মানে উনারা বাবা খুব কঠিন মানুষ।।

ইসান- হমম আমি তো দেখেছি খুব কঠিন তার মন।। আমি তার মন গলাতে পারিনি।। যাই হোক সেদিকে পরে আসি।। তারপর,,,,,,,,,

অতীত,,,,,

মেরান- আমি ইমাকে সব বলার পরেও ইমা আপনাদের কথা ইচ্ছা করেই প্রিন্সিপালকে বলেনি।। কারণ ও ঝামেলা চায়নি। আপনরা সেদিন ওকে ক্যান্টিনে ওই ভাবে অপমান করার পর ও খুব কান্না করেছিলো।। এক রমক ও ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলো।। প্রায় অনেক দিনি ও কলেজে এসেছিলো না।। একদিন রাস্তায় আমার ওর সাথে দেখা হয়। আমি ওকে জিজ্ঞেস করি ও বলে যে ও আর ওই কেলেজে পড়বে না।। আমি ইমাকে অনেক বুঝায়।। কারণ ইমা খুব ভালো স্টুডেন্ট।। ইমা আমার কথা মানলো এবং কলেজে আসার জন্য রাজি হলো।। তার কিছুদিন পরেই তো আপনি ওকে আবার,,,,,

বলতেই ইসান বললো-

ইসান- হমম আমাকে থাপ্পড় মারবে আমি ছেড়ে দিবো।। (একটু রাগান্বিত সুরে)

মেরান- আমি একটা,কথা বলি!!! আপনারা তো আমার বড় আমি বললে হয়তো সেটা খারাপ দেখাবে আপনাদের কাছে কিন্তু তাও বলবো।। ইমা একটা মেয়ে আপনি ওর সাথে যেটা করেছেন তার জাগায় আপনি একবার নিজেকে বসিয়ে দেখেন তাহলে বুঝবেন কতোটা খারাপ লাগেছে তার।।। ইমা সেদিন আপনাদের নাম নেই নি ।। চায়লে নিতে পারতো ঝামেলাটা বাড়াতে পারতো কিন্তু ও সেটা করেনি। কারণ ওর ইচ্ছা ও পড়া শুনা করো ডাক্তার হবে৷ আপনাদের সাথে ঝামেলা করে না।।।।

ইসান আর একটা কথাও বললো না মেরানের কাছ থেকে চলে গেলো।।।

বর্তমান,,,,

ইসান- সেই দিন আমি বিষয় গুলো নিয়ে ভাবলাম এবং বুঝলাম আমি ইমার সাথে ভুল করেছি।।

জনি- আপনি আপনার ভুল শিকার করে কি ম্যাডামের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন!!!

ইসান- না ক্ষমা চায়নি কারণ আমি কখনো কারো কাছে ছোট হতে রাজি না।। আজো আমার এই অভ্যাস রয়েই গেছে। আমি সেই দিনের পর থেকে ইমার পিছনে আর লাগিনি।। ইমা আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যেত।। আমিও তেমনি করতাম।। এর মধ্যে রোহান তার বাবার সাথে বিদেশে চলে যাই এবং ওখানকার কলেজে ভর্তি হয়।। তখন সামির আর আমি।।। আমরাই সব কিছু।। আমি খুব উসরিংখল জীবন যাপন করেছি।। বাবাও আমাকে কখনো কনো কাজে বাধা দেয়নি। তাই আমিও কনো কিছুর পরোয়া করিনি।। এখন পরোয়া করি! এটাও শিখেছি ইমার কাছ থেকে।।।( মুচকি হেসে)

বলতেই ইসানের ফোনে ফোন আসে।। ইসান ফোন হাতে নিয়ে দেখে তার বাবা।।

আকাশ- কে স্যার???

ইসান- বাবা কল করেছে।।( বলে ফোন রিসিভ করে কানে ধরলো)

জহির- এগুলো কি শুনছি আমি??? ইসান তুমি আমাকে একবার ফোন দিলে না।। (রেগে)

ইসান- বাবা তুমি চিন্তা করো না আমি সব সামলিয়ে নিবো। মিঃ মিনহাজের কিছু হয়নি।।

জহির- আমি মিনহাজ এর চিন্তা করছি না আমি চিন্তা করছি আমার হসপিটালের??? (জোরে)

ইসান- বাবা আমি নিজে হসপিটালের কাজের দায়িত্ব নিলাম আমি এখানে থেকেই নিজ দায়িত্বে কাজ করাবো।।।

জহির- তোমাকে বলেছিলাম হসপিটাল তৈরি হতে যারা বাঁধা দিচ্ছে তাদের মাথা কে ধরে শেষকরে ফেলো কিন্তু তুমি কি করছো!!!

ইসান- বাবা শান্ত হও। আমি সব কিছুর যখন দায়িত্ব নিজের কাধে নিয়েছি তখন বের করেই ছাড়বো।।।

জহির ফোন কেটে দিলো।।।

আকাশ- কি হয়েছে স্যার??

ইসান- বাবা রেগে গেছে।।। অবশ্য ভুলটা আমারি।। মিঃ বারিককে আগে না ধরে আগে আসল মাথাটাকে ধরতে হতো।। যাইহোক মিঃ মিনহাজের এর থেকে শুনতে হবে।। উনাকে কারা মেরেছে উনি কারো চেহারা দেখেছে কি না।।।

বলতেই ঝুম ঝুম বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। আকাশ জনি তারাতারি গাড়ি তে উঠে বসলো।।।

ইসান- হটেলে ফিরে চলো।।।

জনি- ওকে স্যার।।। (বলে গাড়ি স্টার্ট দিলো)

ইসান গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ভাবলো-

অতীত,,,,,,,,,,,,,

সন্ধ্যা বেলা বাইরে খুব বৃষ্টি।। ইসান গাড়িতে বসে আছে।। এমন সময় ইসানের ফোনে কল আসে।। ইসান ফোন রিসিভ করে কানে ধরে।।

ইসান – হ্যালো!!!

সামির- কখন আসবি!!!

ইসান- বৃষ্টিতে আটকে গেছি।। আমি গাড়িতেই আছি।। আসছি।

সামির- ওকে তারাতারি আয়।।। আমি বারে অপেক্ষা করছি।।

ইসান- ওকে।।

ইসান ফোন রেখে দিলো হঠাৎ দেখে ইমা আসছে কাঁধে কলেজ ব্যাগ ছাতা ধরে রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছে।।। ইসান তাকিয়ে রয়লো ইমার দিকে।। এমন সময়,দেখে দুইজন ছেলে ইমার পথ আটকালো।।। এবং ইমাকে যেতে দিচ্ছিলো না।।।

ইসান- ব্যাপার টা ভালো ঠেকছে না।। (মনে মনে বললো)

ইসান বৃষ্টির মধ্যেই গাড়ি থেকে বের হলো এবং ইমার পাশে গিয়ে দাড়ালো।। ইমা চমকে উঠে ইসানের দিকে তাকালো।। ছেলে দুইটা ইসান কে দেখে তারাতারি সেখান থেকে চলে গেলো।।।

ইসান- হাই।।। (ইমার দিকে তাকিয়ে)

ইমা- তুমি এখানে???( কপাল কুচকে)

ইসান একটু থতমত খেয়ে বললো- আ,,, এই,,,,, আসছিলাম সামনের দোকানে।। কিন্তু তুমি এই সন্ধ্যা বেলা কথায় যাচ্ছো???

ইমা- বাসায় যাচ্ছি।।।

ইসান- এই বৃষ্টির মধ্যে হেঁটে কতো দুর যাবে। চলো আমি পৌঁছে দিয়ে আসি।।।

ইমা- দরকার নেই আমি হেঁটেই যেতে পারবো।। thank you।।

বলে ইমা হাটা দিলো।।।

ইসান – আরে দাড়াও।। তোমার সাথে আমার একটু কথা ছিলো!!!(ইমা পিচনে ঘুরে তাকালো ইসান গিয়ে ইমার ছাতার তলে এসে দাড়ালো।।

ইমা- আমার হাতে এখন সময় নেই। আর আমি জানি তুমি কি বলবে??

ইসান- কি যানো কি বলবো??

ইমা- সব কিছুর জন্য সরি বলবে।।

ইসান- না আমি কাওকে সরি বলি না।। ( একটু গম্ভীর সুরে)

ইমা ইসানের কথা শুনে একটু রেগে গেলো।।

ইমা- যেদিন ভিতর থেকে এই দাম্ভিকতা যাবে সেদিন আমার সাথে কথা বলতে এসো।।সে দিন আমি তোমার কথা শুনবো।। (একটু রাগান্বিত সুরে)

বলে ইমা চলে গেলো।।।

বর্তমান,,,,,,,,,,

জনি- স্যার চলে এসেছি।।।

ইসান- হমম।।। আকাশ গাড়ির দরজা খুলে দিলে ইসান বের হয়।।

ইসান- গুড নাইট আকাশ, জনি।।

জনি, আকাশ- গুড নাইট স্যার।।।

,,,,,,,,,,,,,,continue,,,,,,,,,,,,,,

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।।।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here