#i_m_mafia_lover
#part_43
#sabiha_kh
ইমার গান শেষ হলে সবাই জোরে জোরে হাত তালি দিতে লাগে। ইমা মুখ গুড়িয়ে চোখের পানি লুকিয়ে ফেলে ইশানের দিকে তাকাই দেখে ইশান উঠে চলে যাচ্ছে। ।।
ইমা – কিছু কি মনে পড়লো ওর!! আল্লাহ প্লিজ ok মনে করিয়ে দাও সব ।। (মনে মনে বললো)
”
”
”
”
ইমা স্টেজ থেকে নামতেই ইসমা ইমাকে জড়িয়ে ধরে।। এদিকে লিলি রেগে চলে যায় প্রোগ্রাম স্পর্ট থেকে।।
ইসমা – আমি বিশ্বাস করতে পাড়ছি না আমার আম্মু এত সুন্দর গান গাই!!! (আনন্দিত সুরে)
ইমা হেসে ইসমার কপালে চুমু দিয়ে বললো – thank you মামুনি। ।
ইসমা – আম্মু বাবা ও খুব অবাক হয়েছে তুমি দেখেছো???
ইমা – হম দেখেছি তো।। আচ্ছা ইসমা শুনো ,, তুমি এখন প্রোগ্রাম দেখো।। তোমার বাবা কোথায় গেল আমি একটু দেখে আসি।। (মুচকি হেসে)
ইসমা – ঠিক আছে আম্মু।।। (হেসে)
ইমা ইসমা কে রেখে প্রোগ্রাম স্পট থেকে বের হয়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগে কিন্তু কোথাও ঈশানকে দেখেনা।।
ইমা চিন্তিত সুরে বলে – কোথায় গেলো ইশান!!!
হিমা হাঁটতে হাঁটতে আরও দূরে যায় এবং খুঁজতে থাকে লেকের সামনে যায় কিন্তু সেখানেও পায় না ইমা চিন্তায় পড়ে যায় ঈশান কোথায় যেতে পারে ভাবতে থাকে।।।
ইমা – ইশান ক্যাম্পের বাইরে গেলো নাতো?? (চিন্তিত সুরে) যায় দেখে আসি ।।।
ইমা কোনো রকম হেঁটে ক্যাম্প স্পোর্ট থেকে বাইরে যাই।।। বাইরে লাইট নেই অন্ধকার তবে আপছা সব কিছুই দেখা যাচ্ছে।। ইমা এদিক ওদিক দেখে এবং ইশান কে খুঁজতে থাকে।। ইমার মনে ভয় কাজ করছে। কারণ জায়গাটা এত নিরিবিলি এবং থমথমে যে আপনা আপনি শরীর ভারী হয়ে আসছে । ইমা হাঁটতে হাঁটতে কিছুদূর যেতেই কান্নার গুন গুন শব্দ শুনতে পাই। ইমার ভয় আরো বেড়ে যায় ইমা মনে মনে ভাবে এমন করে কে কাদতে পারে?? ইমা ভয় পেলেও কান্নার শব্দ ধরে এগোতে থাকে। হঠাৎ দেখে কেও গাছের নিচে বসে আছে!! অন্ধকারের জন্যে তার পরিষ্কার আকৃতি বুঝতে পারলো না। ইমা বুঝতে পারছে না সে এগোবে কিনা । ইমার হাত পা ঠান্ডাই অসাড় হয়ে আসে । ইমা মনে মনে বলে – যাবো নাকি যাবো না !! কে হতে পাড়ে ওটা।। ইশান নাতো আবার।। ঈশানের নাম ধরে ডাক দিবো?? নাহ ডাক দিই দেখি কে!!।
ইমা কাপা সুরে বলল – ইশান !!!! (নাম ধরে ডাকতে কান্নার শব্দ থেমে যায়।। ) ইশান আপনি কি এইখানে আছেন!!??
বলতেই ইমা দেখে সে উঠে দাড়াই এবং ইমার দিকে আসতে লাগে।। ইমা ভয়ে মনে মনে বলে- আল্লাহ কি করলাম কে ওটা?? আল্লাহ বাঁচাও।।
ইমা সেই জায়গা থেকে না সরে চোখ বন্ধ করে মনে মনে সূরা পড়তে শুরু করে।। এমন সময় ইমা অনুভব করে তার কাধে কেও মাথা ঠেকিয়েছে।। ইমা অবাক হয়ে যাই এবং চোখ খুলে দেখে ইশান।।
ইশান কান্না সুরে বললো – আমি আর নিতে পারছি না।। খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।। আমি জানি না আমি কি ভুলে গিয়েছি ।তবে প্রতি মুহূর্ত মনে হচ্ছে আমি কিছু ভুলে গেছি।। তুমি তো ডাক্তার আমাকে ঠিক করে দাও প্লিজ ।।। আমি এই যন্ত্রণা নিতে পারছি না ।।। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি ।। প্লিজ সাহায্য করো দয়া করো ইমা।।
বলে ইশান বাচ্চাদের মত জোরে জোরে কাদতে লাগে এবং আসতে আসতে মাটিতে বসে পরে।। ইমার ঈশানের এমন যন্ত্রণা দায়োক কষ্ট দেখে সহ্য করতে পারে না। ইমা ঈশান কে জড়িয়ে ধরে।
ইমা – এভাবে কান্না করো না প্লিজ । তোমাকে কিছু মনে করতে হব না ইশান।। তুমি শান্ত হয় ।। (কান্না মাখা সুরে)
ইশান – আর পারছি না। আমি কি ভুলে গিয়েছি কি??? কেনো মনে পড়ছে না । (কান্না করে জোরে বললো)
ইমা – চুপ করো ইশান চুপ করো কিছু মনে করতে হবে না । প্লিজ শান্ত হও।। শান্ত হও ।
বলে ইমা ঈশান জড়িয়ে দরেই ঈশানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগে।।ইশান ইমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাদতে থাকে।।
কিছুক্ষন পর,,,,
ইশান একটু শান্ত হলে ইমা বলে – চলুন ক্যাম্পে ফিরে যাওয়া যাক।। আপনাকে আমাকে না দেখতে পেয়ে সবাই আবার খুঁজতে শুরু করবে অনেকটা সময় হয়ে গেছে।।
ইশান কোনো কথা বলে না উঠে দাড়াই এবং নিজের মনে আসতে আসতে হেঁটে চলে যেতে লাগে।। ইমা ঈশানের অবস্থা দেখে চোখের কোনায় পানি চলে আসে।।
ইমা ঈশানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে – আমি এ কি করেছি?? সব কিছু আমার জন্য হয়েছে।। আমি গানটা না গেলেই পারতাম।। আমি ইশান কে আবার যন্ত্রণা দিচ্ছি।।
ইমা চোখ মুছে ঈশানের পিছে পিছে যায়।।।
Time Spike
ইমা ঈশান ক্যাম্পে চলে আসে ঈশান ইমার সাথে কোন কথা বলে না সোজা নিজের তাবুতে চলে যায় ।। ইমাও আর ঈশান কে পিছু ডাকে না ইমাও নিজের তাবুতে চলে যায়।। ইশান গিয়ে নিজের জাগায় শুয়ে পড়ে। রেন তাবুতে এসে দেখে ঈশান শুয়ে আছে।। রেন ঈশান কে জিজ্ঞেস করে সে কোথায় ছিল?? কিন্তু ঈশান রেন এর কথার কোন জবাব দেয় না।। তাই রেন ও কোন কথা বলে না নিজের মতো চলে যায় ।।
এদিকে ইমা তার বিছানার উপর আঁটোসাঁটো হয়ে বসে কান্নাই ভেঙে পরে।।। ইমা ভাবে সে ঈশান কে মানসিক ভাবে কষ্ট দিচ্ছে যন্ত্রণা দিচ্ছে ।। এমনি মানসিক কষ্ট ২ বছর আগে ঈশান তার থেকে পেয়েছে এবং সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল।।। এইবারও যদি এগুলো যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে কিছু করে বসে!!
ইমা – না না আমি কি ভাবছি। না ঈশানের আর কিছু হতে দিবো না।( বলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদতে থাকে ইমা)
কাদতে কাদতে একসময় ইমা ঘুমিয়ে পড়ে।।
পরের দিন সকালে ,,,
সবাই বাড়ি ফিরার জন্য প্রস্তুত ।।। ইমা রেডি হয়ে বের হলো । ইশান ও তৈরী হয়ে বের হলো।। ইশান দেখে ইমা দাড়িয়ে আছে। । ইশান ইমার দিকে এগিয়ে আসে । এবং বলে –
ইশান – good morning ইমা!!!
ইমা – good morning।
ইশান – গত কালকের জন্য sorry।। এবং thank you। sorry এই কারণে যে আমার জন্য আপনাকে কষ্ট করতে হয়েছে । আর thank you এই জন্য যে গত কাল আপনি না থাকলে হয়তো আমি জানি না আমি কি করতাম।।
বলতেই স্যার আসে।।
স্যার – ইশান!!!
ঈশান – hello স্যার।।
স্যার – hello।।। ঈশান আজ তুমি বাচ্চাদের গাইড করবে এবং ওদের সাথে গাড়িতে যাবে।।
ইশান ইমার দিকে তাকাই তারপর স্যারের দিকে তাকিয়ে বলে –
ইশান – আমার সাথে আমি কাওকে নিতে পারি??
স্যার – হম পরো। তবে বাচ্চাদের দিকে নজর রাখতে হবে।।
ইশান – ok স্যার ।।( খুশি হয়ে)
স্যার চলে গেলে ইশান ইমার দিকে ঘুরে বলে –
ইশান – ইমা আমি চাই আপনি আমার সাথে বাচ্চাদের গাড়িতে উঠুন । (আনন্দিত সুরে)
বলতেই সেদিক দিয়ে জেন স্যার যাচ্ছিল । ইমা জেন স্যারকে ডাক দেই ।।। জেন স্যার আসলে ইমা ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে –
ইমা – sorry ইশান আমি জেন স্যারকে আগে বলে রেখেছিলাম আমি যাওয়ার সময় উনার সাথে যাবো।।
ইশান ইমার কথা শুনে অবাক হয়ে যাই। আর জেন স্যার তো তাদের দুজনের বাংলা ভাষা বুঝেই না।। তাই সে বোকার মত তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে ।।।
এমন সময় সেখানে লিলি আসে এবং বলে –
লিলি – ইশান তুমি বাচ্চাদের দায়িত্ব পেয়েছে শুনলাম।। আমি চাচ্ছিলাম তোমার সাথে যাবো।।
ইশান ইমার দিকে তাকিয়ে গম্ভীর সুরে বললো – ঠিকাছে চলো।। (ইমা ঈশানের দিকে তাকাই)
ইশান ইমাকে আর একটা কথাও বলে না চলে যায় বাসের দিকে। লিলি ঈশানের পিছে পিছে যায়।।
ইমা ঈশানের যাওয়া দেখে এবং মনে মনে বলে – আমি তোমার আর কিছু হতে দিবো না।। তুমি যেমন আছো তেমনি থাকো ইশান।। আমার জন্য আর এক পরিমাণ ও তোমার ক্ষতি হবে না কথা দিলাম।।
সবাই সবার মত বাসে উঠে গেলো।। ইসমা ঈশান কে তাদের বাসে উঠতে দেখে খুব খুশি হয়। । ইসমা মনে করে হয়তো তার মাও এই বাসে উঠবে। কিন্তু না দেখে তাদের লিলি ম্যাডাম বাসে উঠেছে। ।।
ইসমা নিজের জায়গা থেকে উঠে ঈশানের কাছে আসে।। ইশান ইসমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে – কি হয়েছে তুমি জায়গা ছেড়ে উঠেছ কেনো??
ইসমা – বন্ধু আম্মু কে এই খানে নিয়ে আসতে!!
ইশান – বলছিলাম তোমার আম্মুই আসেনি ।
ইসমার মন খারাপ হয়ে যায়। ইসমা আর কোনো কথা না বলে নিজের জায়গায় গিয়ে বসে । লিলি ঈশানের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে ইসমা কি বলেছে । ইশান বলে – তেমন কিছু না!! দাড়িয়ে আছো কেনো বসো এখুনি বাস ছেড়ে দিবে।
লিলি ঈশানের পাশে বসে ।।। এদিকে ইমার পাশে জেন বসে ।।। জেন খেয়াল করে ইমার মন খারাপ।।।
জেন – মিস ইমা কিছু হয়েছে??
ইমা চমকে জেনের দিকে তাকিয়ে বলে – না তো ।। ।
জেন – আপনার গতকাল গানটা সত্যি মন ছুঁয়ে গিয়েছে।।। অনেক সুন্দর গান গেয়েছেন।। আচ্ছা আপনি গিটার বাজানো কার থেকে শিখেছেন??
ইমা – আমার মেয়ের বাবার কাছ থেকে। । ও অনেক ভালো গিটার বাজাতো।।( দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে)
জেন – খুব অবাক হচ্ছি আপনার কথা শুনে আপনার হাসবেন্ড এত ভালো ছিল তাহলে কেনো আপনাকে ছেড়ে চলে গেলো??
ইমা – কারণ আমি ওর মনে কষ্ট দিয়েছি।। ও আমার থেকে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছে।। আমি বুঝতে পারিনি ও আমার কোথায় এত বেশি আঘাত পাবে।। আমি ওকে খুব ভালোবাসি এবং ওকে খুব করে চাই।। (ইমা বলতে বলতে কান্না করে দিলো। ) সব ভুল আমার।।। সব কিছুর জন্য আমি দায়ী।।
বলে মুখ চেপে ধরে কাদতে লাগে।। জেন ইমার কান্না দেখে অবাক হলেও ইমাকে শান্তনা দেই।
Time Skip
লিলি ঈশানের সাথে কথা বলার জন্য বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে কিন্তু ইশানের লিলির কোথায় কোনো মনোযোগী নেই ।।। ইশান ইমার কোথা ভাবতেই ব্যাস্ত।। ইশান ভাবছে এভাবে ইমা মুখের উপর বলে দিল সে জেনের সাথে বসবে ।। ইশান মনে মনে বলে – গতকাল রাতের জন্য কি ইমা আমার উপর রাগ করলো।।
ভাবতেই লিলি ঈশানের হাতের উপর হাত রাখে ইশান চমকে নিজের হাত সরিয়ে লিলির দিকে তাকাই ।।
ইশান – কিছু বলবে??
লিলির রাগ হলো এবং ঈশানের কাছ থেকে উঠে অন্য সিটে গিয়ে বসলো।
লিলি রাগে নিজের দুই হাত মোচড়াতে মোচড়াতে মনে মনে বলে –
লিলি – আমার টাচ তোমার ভালো লাগছে না কিন্তু মিস ইমা তোমাকে জড়িয়ে ধরেছে সেটা তোমার ভালো লেগেছে।।। তুমি কি ভেবেছো এত সহজে আমি মিস ইমাকে তোমার কাছে আসতে দিবো?? আমি তোমায় মিস ইমাকে ভালোবাসতে দিবো না। গতকাল রাতে আমি সবই দেখেছি ইশান ।। আমি মিস ইমার পিছু পিছু গিয়েছিলাম। তুমি মিস ইমাকে জড়িয়ে ধরেছো আমি দেখেছি ইশান।।। কিন্তু আর না। ।। আমি কি করি এবার তুমি এবং মিস ইমা দুজনাই দেখবে।।
Time Skip
তারা চলে আসে স্কুলে ।।। সবার বাবা মা, বাচ্চাদের নিতে স্কুলে উপস্থিত ছিল । বাস থামলে বাচ্চারা গাড়ি থেকে নেমে বাবা মার কাছে দৌড়ে যায়।।। ইসমা গাড়ি থেকে নামে দেখে তার মাও গাড়ি থেকে নামছে।
ইমা জেন কে বিদায় জানিয়ে ইসমার গাড়ির দিকে আসতেই দেখে ইসমা দাড়িয়ে আছে । ।।এমন সময় ইশান ইসমার হাত ধরে ইমার কাছে নিয়ে আসে। ।।
ইশান – ইমা,,,
ইমা – thank you ইশান আমাকে গেস্ট হিসেবে ক্যাম্পিঙে নিয়ে যাওয়ার জন্য ।। ইসমা চলো বাসায় যায়।। ( ইসমার দিকে তাকিয়ে)
ইসমা – যাবো তার আগে বলো তুমি বন্ধুর কথা কেনো শুনো নি । বন্ধু তোমাকে আমাদের গাড়িতে উঠতে বলেছিল তুমি কেনো রাজি হয়নি??
ইমা – এই বিষয়ে আমরা পড়ে কথা বলি এখন চলো বাসায় যায়।
ইসমা – না এখুনি বলো ।। এখুনি শুনতে চাই। (একটু জোরে)
ইমা ইসমার উপর রেগে যায়। এবং জোরে একটা ধনক দেই। ইসমা ভয়ে চমকে উঠে।। ইশান অবাক হয়ে যাই ইমার এমন ব্যাবহার দেখে। ।
ইশান – কি করছেন ইমা?? ও ছোট ওকে এই ভাবে বকা দিবেন না।
ইমা – ও দিনে দিনে বেশি বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে।। আমার মুখের উপর কথা বলে।। (রাগান্বিত সুরে)
ইসমা কান্না করতে করতে স্কুলের বাইরের দরজার দিকে দৌড় দিল।।
ইমা ঈশানের সাথে কোনো কথা বলে না । চলে যায় ইসমার পিছনে
ইশান ইমার এমন বদল দেখে অনেক অবাক হয়ে যায়।।
ইমা স্কুল থেকে বের হয় দেখে ইমা দাড়িয়ে থেকে কান্না করছে।। ইমা ট্যাক্সি ডাকে। ট্যাক্সি আসলে ইমা গাড়ির দরজা খুলে ইসমার দিকে তাকায়।। ইসমা কোনো কথা বলেনা আসতে করে গাড়িতে উঠে বসে।।। ইমা ও গাড়িতে উঠে বসে।। ইমা ইসমার দিকে তাকাই দেখে ইসমা গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে এবং একটু পর পর চোখের পানি মুছছে। ইমা ইসমার সাথে কোনো কথা বলে না ।
তারা চলে আসে বাড়িতে। ইসমা সোজা নিজের রুমে চলে যায় । ইমা ইসমার এমন অভিমান দেখে মনে মনে বলে –
ইমা – আমার ওকে বোকাটা ঠিক হয়নি । ও মনে কষ্ট পেয়েছে। এক কাজ করি ইসমার প্রিয় চাওমীন রান্না করি ও খুশি হয়ে যাবে ।
ইমা নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে কিচেন রুমে আসে এবং ইসমার জন্য চাউমিন রান্না করে।। ইমা মনে মনে ভাবে চাওমিন রান্নার গন্ধ এতক্ষণে ইসমার রুমে চলে গিয়েছে এই ইসমা আসলো বলে।।
রান্না শেষ কিন্তু ইসমার কোনো খবর নেই।।
ইমা – ইসমা আমার উপর এতো রাগ করেছে যে বাইরেও আসলো না।। (মন খারাপ করে )
ভাবতেই ইসমার রুম থেকে কিছু পড়ে যাওয়ার শব্দ ইমার কানে আসে।। ইমা কোনো কিছু না ভেবেই দৌড়ে ইসমার রুমে যাই দেখে ইসমা মেঝেতে পড়ে দাফাচ্ছে এবং বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছে।। ইসমার এমন অবস্থা দেখে ইমার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেই । ।। ইমা ইসমার নাম ধরে চিৎকার দিয়ে দৌড়ে ইসমার কাছে আসে এবং ইসমাকে কোলে তুলে নিয়ে নিজের রুমে এসে ইসমাকে বিছানায় শুইয়ে দেই এবং দ্রুত বেড টেবিলের ড্রয়ার খুলে ইনহেলার বের করে ইসমার মুখে পাম্প করে।।।। ইসমা আসতে আসতে সাভাবিক হয়।। ইসমা ইমার দিকে তাকাই। ইমা ইসেমা কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেই ।
ইমা – sorry মা আমি আর কখনও তোমাকে বকা দিবো না।। I’m so sorry।। আমি তোমাকে হারাতে চাই না ইসমা।। আমি তোমাকে হারাতে চাইনা । ।। (কান্না করে)
ইসমা তার মাকে কান্না করতে দেখে সেও কান্না করে দেই ।।
ইসমা – কান্না করো না আম্মু । আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না কোথাও না।। তুমি এই ভাবে কাদলে কিন্তু আমি আরো কষ্ট পাবো ।
ইমা কান্না থামিয়ে চোখ মুছে ফেলে হেসে বললো – ঠিক আছে কাঁদবো না।। জানো আমি কি রান্না করেছি ??
ইসমা হেসে বলল – আমার ফেভারিট চাওমিন।।
ইমা – হম চলো খাবে । (হেসে)
ইসমা – চলো।।
ইমা ইসমা কে চাওমিন খাইয়ে দিতে লাগে।।।
ইসমা – আম্মু আমরা কবে একসাথে থাকবো??
ইমা – তুমি আমি তো এক সাথেই আছি।
ইসমা – বাবা তো নেই। বাবা ৭ তলায় আর আমরা ৫ তলায়। কবে আমরা একসাথে থাকবো!!!
ইমা – থাকবো না। (ধীর সুরে)
ইসমা – কি??
ইমা হেসে বললো – কিছু না ।।। তুমি হা করো এত খন ধরে খেলে হবে!!
Time Skip
সন্ধ্যা ৭ টা ,,,
ইশান সব কাজ সেরে রাতের খাবার কিনে নিয়ে বাড়িতে আসে।। খাবার টেবিলের উপর খাবারের প্যাকেট রেখে ইশান নিজের রুমে যাই। ইশান বিছানায় বসে এবং হাত থেকে ঘড়ি খুলে বেড টেবিলের ড্রয়েরে ঘড়ি রাখতে গিয়ে চোখে পড়ে ইমার হেয়ার ব্যান্ড।। ঈশানের ঠোঁটে মুচকি হাসি চলে আসে । ইশান ইমার হেয়ার ব্যান্ড টা বের করে সেই দিনের কথা মনে করলো।। কিভাবে ইমা তার জ্বরে রাত জেগে তার সেবা করেছে।।। রান্না করে খাইয়েছে ।। ইশান ইমার হেয়ার ব্যান্ড নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে এবং অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে হেয়ার ব্যান্ড এর দিকে। হঠাৎ ঈশানে গতকাল রাতে কথা মনে হয়ে যায় ইমা তাকে জড়িয়ে ধরেছিল সে আমার কাঁধে মাথা রেখে ছিল। ইমা তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিল। ইশান ইমাকে পিঠে নিয়ে সিড়ি বেয়ে নেমেছিল। সাইকেলে ইমাকে নিয়ে ক্যাম্প পর্যন্ত এসেছিলো ।।। আপনাআপনিই ঈশানের হার্ডবিট জোরে জোরে ধুক ধুক করতে লাগে। ইশান ঠোঁট কামড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে ইমার হেয়ার ব্যান্ড বুকের বাম পাশে চেপে ধরে ।
ইশান – ইমা দিনে দিনে তুমি আমার নেশাই পরিণত হয়ে যাচ্ছ। বুঝতে পারছি আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি।। এখন তোমাকে বলার অপেক্ষা।। কিন্তু কি করে বলবো। (ইশান লাফ দিয়ে উঠে বসে বললো ) কি ভাবে আমার মনের কথা তোমাকে জানবো !!! উফফ ভাবতে হবে!!!
অন্যদিকে লিলি নিজের রুমে বসে গতকাল ইশান ইমাকে জড়িয়ে ধরেছে সেটা চোখের সামনে ভাসতে থাকে।। লিলি রেগে টেবিল লেম্প ছুঁড়ে ফেলে ভেঙে দেয়।। ।
লিলি কান্না করে চিল্লায় বলে- ঈশান আমার আমি ওকে ভালোবাসি।।
বলতেই লিলির বাবা লিলির রুমে ঢুকে।। দেখে লিলি চিল্লাই চিল্লাই কাদঁছে।। লিলির বাবা দ্রুত গিয়ে লিলিকে জড়িয়ে ধরে এবং লিলি কে শান্ত হতে বলে।।
– লিলি শান্ত হও।। কি হয়েছে আমাকে বলো।।।।
লিলি – বাবা আমি কখনো তোমার কাছে কিছু আবদার করিনি কারণ আমি চাওয়ার আগেই তুমি আমাকে সব দিয়েছো।। এবার আমার একটা আবদার আছে।।( কান্না সুরে)
– হম কি আবদার বলো।।
লিলি – আমি একজন কে ভালোবাসি ওকে আমার জীবনে চাই।।
– এটা তো ভালো কথা কিন্তু কে সেই ছেলে??
লিলি – আমার কলিগ।। আমরা দুজনাই মিউজিক ক্লাস করায়।।
– উফফ লিলি তুমি কেমন মানুষ পছন্দ করো বলতো?? তোমার বাবা এত বড় বিজনেসম্যান তোমার কোথায় একজন হাইলেভেলের ছেলে পছন্দ করা দরকার সেখানে তুমি একজন সামান্য স্কুল টিচার কে পছন্দ করো তারপর আবার সে তোমার কলিগ। তোমাকে বলেছিলাম স্কুলের চাকরি করার দরকার নেই তুমি আমার সাথে আমার বিজনেস এর হাত লাগাও তা না করে তুমি স্কুলের টিচার এর সাথে প্রেম করছো সত্যিই অবাক হলাম।।।
লিলি রেগে বলল – উফফ প্লিজ বাবা আমার জীবন আমাকে লিড করতে দাও আমি ওকে চাই ব্যাস।।
– ok আমি দেখতে চাই তাকে।।
লিলি- দাড়াও দেখাচ্ছি।
লিলি ঈশানের ছবি বের করে তার বাবার দিকে ধরে।। লিলি বাবার ঈশানের ছবি দেখে চোখ কপালে উঠে যায়।। উনি অবাক চোখে তাকিয়ে ধীর সুরে বলে – ইশান চৌধুরী??
লিলি – ওর নাম ইশান। আমি ওকে ভালবাসি।।
লিলি বাবা চমকিত হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললো – এই ছেলে তোমার স্কুলে চাকরি করে তুমি সত্যি বলছো।।।
লিলি – বাবা আমি সত্যি বলছি।।। আমাকে ওকে ভালবাসি আর আমি ওকে আমার জীবনে চাই।।।
লিলির বাবা আর একটা কথাও বললো না আসতে করে লিলির রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো।। এদিকে লিলি তার বাবাকে এই ভাবে চলে যেতে দেখে একটু অবাক হলো ।।
লিলি – বাবার আবার কি হলো !!! কিছুই বললো না।।উফফ ভালো লাগে না ।( রেগে)
ওদিকে লিলির বাবা নিজের রুমে এসে থম ধরে বসে বিছানায় এবং ৪ বছর আগের কথা মনে করে ।
অতীত,,,
ইশান মিটিং টেবিলে বসে পেপার ওয়েট ঘুরাতে ঘুরাতে বলে-
ইশান – DW কম্পানি কারো সাথে সেক্রিফাইস করে না তাই আমাদের সাথে কাজ করতে হলে সৎভাবে কাজ করবেন আর অসৎ পথ অবলম্বন করলে চেয়ারম্যান জহির চৌধুরী কথা বলতে পারছিনা কিন্তু আমি কি করতে পারি সেটা আপনাদের কল্পনার বাহিরে তাই সাবধান।।।
বলে ইশান মিটিং টেবিল থেকে উঠে যায় সবাই ভয়ে পানি পান করতে লাগে।।
বর্তমান,,,,
– বিশ্বাস করতে পারছি না। ২ বছর আগে শুনেছিলাম জহির চৌধুরী মারা গেছে। আর ইশান চৌধুরী অসুস্থ বিছানায় পড়ে আছে।। তাই ইশান চৌধুরীর ডান হাত মিস্টার আকাশ কম্পানির সব কাজ সামলাচ্ছে।।
কিন্তু লিলির ফোন যে ছবি দেখলাম সেটা তো ইশান চৌধুরীর!! ঈশান চৌধুরী কম্পানি সামলানো বাদ দিয়ে টিচার রয়েছে!? উফফ কিছুই বুঝতে পারছি না ।। নাহ্ আগে খোঁজ লাগাতে হবে ব্যাপার টা কি বুঝতে হবে ।। তারপর লিলির সাথে কথা বলতে হবে । উফফ আমার গলা শুকিয়ে আসছে। ।
বলে লিলি বাবা পানি নিয়ে পানি পান করে।
#i_m_mafia_lover
#part_44
#sabiha_kh
রাত ১ টা,,,
জনবহুল কলাহল শহরটা একদম শান্ত হয়ে গেছে।। হিমশীতল বাতাস এবং চাঁদের আলো পুরা শহরটাকে অন্যরকম ভাবে উপস্থাপন করেছে ।। কর্ম জীবনী মানুষগুলো ঘুমিয়ে পড়েছে অনকে আগেই।। কিন্তু ঘুম নেই ইমার চোখে।ঈশানের চিন্তা ইমাকে শুধু ভাবিয়ে তুলছে।।। ইমা বুঝেই উটতে পারছে না সে কি করবে । ইমা তার রুমের বেলকুনিতে গিয়ে ইজি চেয়ারে বসে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে এবং ঈশানের গতকাল রাতে মানসিক যন্ত্রণার কথা মনে করে কিভাবে ইশান ইমার কাছে মিনতি করছিলো এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।।
ইমা দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে বেলকুনি থেকে উঠে নিজের রুমে গিয়ে বেড টেবিলের উপর থাকা ল্যাম্প টা অন করে।। তারপর তার আলমারি খুলে কাপড়ের তোল থেকে একটা ডাইরি বের করে ।। ইমা ডাইরি নিয়ে বিছানায় এসে বসে।। এবং ডায়েরির দিকে তাকিয়ে থাকে অপলক দৃষ্টিতে।।
ইমার মনে পরে যায় সেই অতীতের কথা,,,,,
অতীত,,,,
সকাল বেলা ইমা ভার্সিটি যাওয়ার জন্য বের হলে ইশান গাড়ি নিয়ে এসে ইমার সামনে ব্রেক করে। ইমা ভয় পেয়ে যাই । ইশান গাড়ির জানালার কাচ নামিয়ে কিউট একটা হাসি দিয়ে বলে –
ইশান – hi সুইটহার্ট ।।।
ইমা বুকে হাত দিয়ে একটু রাগান্বিত সুরে বলে – ভয় পাইয়ে দিয়েছো।।।
ইশান – ok গাড়িতে উঠো ভয় ঠিক করে দিবো।
ইমা – হম আসছে বির পুরুষ । এখন গাড়িতে উঠতে পারবো না। ভার্সিটি যেতে হবে।।আজ পরীক্ষা আছে।
ইশান – আজকে কিসের ভার্সিটি ??কিসের পরীক্ষা?? তুমি জানো না আজকে কি ?? (উত্তেজিত সুরে)
ইমা – কি আজকে?? কোনো উৎসবের দিন ?? কিন্তু স্যার জী বললো আজ পরীক্ষা নিবে।।
ইশান – আরে রাখো তো পরীক্ষা এখন চলো আমার সাথে ।
ইমা – না আজ পরীক্ষা আছে।। যেতে পারবো না।
ইশান – কয়টায় পরীক্ষা ??
ইমা – ১২ টায় পরীক্ষা ।।
ইশান – ১২ টা বাজার আগেই তোমাকে কলেজে দিয়ে আসবো ।সত্যি বলছি এখন চলো ।।
ইমা গাড়িতে উঠে বসে।। এবং বলে – আমাকে কোথায় নিয়ে যাবে??
ইশান কিউট হাসি দিয়ে বলে – গেলেই দেখতে পাবে ।।।( ইশান গাড়ি টান দিয়ে চলে যায়)
কিছুক্ষণ পর,,,,,
ইমা একটু বিরক্ত হয়ে বললো – উফফ কি সোমানে ঘুরাচ্ছ!! কোথায় নিয়ে যাচ্ছো বলোতো !!এদিকে আমার ক্লাস গুলো,,,,
বলতেই ইমা দেখে ইশান তার পছন্দের ফ্লাওয়ার গার্ডেন পার্কের ভিতরে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে।।
ইমা অবাক হয়ে ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলে – তুমি এই পার্কের টিকেট পেলে কোথায়। এই পার্কের একটা টিকিটের দাম ৭০০০ টাকা।। আর পার্কের টিকেট পাওয়া ও কঠিন বেশির ভাগ টিকেট আগে থেকেই বুকিং দেওয়া থাকে ।।।
ইশান – ইমা এটা আমার কাছে খুব ছোট বিষয়।
ইমা – মানে??
ইশান – মানে আমি তোমার bf না তাই এটা আমার কাছে সাধারণ বিষয় । (কিউট হাসি দিয়ে)
ইমা – তাই না !!
ইশান – হম তাই।( হেসে )
ইমা – তুমি জানো এখানে আসার আমার অনেক দিন কার ইচ্ছা।। এই জন্য আমি টাকাও জোমাচ্ছিলাম।।
ইশান হেসে বললো – হম জানি ।
ইমা এক্সাইটেড হয়ে গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে ফুলের বাগান দেখছে।। হঠাৎ ইমা খেয়াল করে হলুদ গোলাপ ফুলের বাগানের মধ্যে দিয়ে লাল গোলাপ ফুলের চারা।। যা বাগানের আর সব ফুল গুলোর থেকে একটু উচু। ইমা একটু অবাক হয়। গাড়ি যখন আর একটু কাছে আসে ইমা দেখে লাল গোলাপ ফুলের চারা গুলো দিয়ে লিখা
“HAPPY VALENTINE’S DAY IMA”
” I LOVE YOU SO MUCH”
ইমা একদম অবাক হয়ে যায়।।। যেনো ধন্দা ধরে গেছে তার চোখে।। ইশান ইমাকে এমন অবাক চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুচকি মুচকি হাসে ।। ইমার খুশিতে চোখে পানি চলে আসে ।। ইশান গাড়ি থামালে ইমা ছলছল চোখে ঈশানের দিকে তাকাই।।
ইশান ইমার চোখে পানি দেখে ইমাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নেই।। ইমা ঈশান কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না সুরে বলে – তুমি সত্যি ভালো না।। এগুলো কেনো করেছ?
ইশান হেসে ইমার মাথায় চুমু দিয়ে বলে – তুমি একটা পাগল । তুমি জানো না তুমি আমার জন্য কতটা স্পেশাল!!!
ইমা ইশানকে ছাড়লো ।। এবং মুখ ভার করে বললো – তাই তুমি এগুলো করবে??
ইশান ইমার গালে আলতো করে হাত দিয়ে ধীর সুরে বলে – এটা খুব সামান্য ইমা।। আজ ভালোবাসা দিবস।। তোমার জন্য কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তারপর এই বুদ্ধিটা মাথায় আসে।। তার উপর এই জায়গাটাও তোমার পছন্দের তাই,,,,,
বলতেই ইমা ঈশান কে জড়িয়ে ধরে।।।।
ইমা – Thank you so much,,, এতো সুন্দর একটা সারপ্রাইজের জন্য।।। আমি সত্যি অনেক খুশি হয়েছি ।। I love you।।।
ইশান – I love you too,,, ( গভীর শ্বাস ছেড়ে বললো)
হঠাৎ ইমার মাথায় আসে এই জায়গা ইমার পছন্দ এই কথা ইশান জানলো কি করে!!! এই কথা তো সে ইশান কে বলেনি। ইমা ইশান কে ছেরে দিয়ে সন্দেহর চোখে ইশান এর দিকে তাকিয়ে বললো –
ইমা – তুমি জানলে কি করে আমার এই জায়গা পছন্দ??
ইশান মুচকি হেসে বললো – হম বলবো ।। এখন আসো আমার সাথে।।
দুজন গাড়ি থেকে বের হয় । ইশান ইমার হাত ধরে ফুলের বাগানের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যায়।। ইমার কাছে যেনো রূপকথার রাজা রানী ফুলের বাগানে হাঁটার মতো মনে হয়।।।। ইমা সামনে দেখে খুব সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো এক বসার জায়গা ।। ইশান ইমাকে সেই জাগায় নিয়ে আসে।।।
ইমা – খুব সুন্দর জায়গা টা।। (আনন্দিত সুরে)
ইশান – সত্যি তোমার ভালো লেগেছে??
ইমা – হম ।।
ইশান – ওকে তুমি এখানে দাড়াও আমি আসছি।।
ইমা – কোথায় যাবে??
ইশান – গাড়ি থেকে একটা জিনিস নিয়ে আসতে ভুলে গেছি।।। আমি যাবো আর আসবো ।
ইমা – ওকে ।।
ইশান দৌড়ে চলে গেলো । এদিকে ইমা দাড়িয়ে চারপাশের ফুলের ঘ্রাণ এবং সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দেখতে লাগে। কিছুক্ষণ পর ঈশান আসে এবং ইমাকে পিছন থেকে ডাক দেই।।। ইমা পিছনে ঘুরতেই দেখে ইশানের হাতে গিফটের বক্স।। আর একটা গোলাপ ফুল।।
ইশান – হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে ।। ( ইমা হেসে ঈশানের হাত থেকে ফুল এবং গিফটের বক্স নেই ।)
ইমা – এটা কি জানতে পারি??
ইশান – না পরো না।। গিফট নিজে খুলে দেখো।। চলো বসি আমরা।।। (ইমা ইশান গিয়ে বসলো )
ইমা মুচকি হেসে গিফটের রেপিং পেপার খুলতেই দেখে একটা বক্স ।।
ইশান – বক্সটা খুলো ।
ইমা – বক্সে কি রেখেছো বলো।।। দেখো আমাকে ভয় দেখাও না কিন্তু।।
ইশান – আরে ভয় দেখাবো কেন তোমার না পরীক্ষা!! তাড়াতাড়ি করো আবার পরে আমার দোষ দিতে পারবে না তোমার জন্য পরীক্ষা দিতে পারলাম না।। সময় কিন্তু কম।।
ইমা – ok ok খুলছি।।
ইমা বক্স খুলতেই দেখে একটা ডায়রি।। ডায়েরির উপরের মলাটটা সাদা ছোট ছোট পাথর দিয়ে কারু কাজ করা।। ইমা অবাক হয়ে যাই ডাইরি দেখে।। । কারণ ডাইরি টা বেশ দামী।।
ইশান ইমাকে এমন অবাক হয়ে ডায়েরি দেখতে দেখে বললো – তোমার পছন্দ হয়েছে???
ইমা অবাক হয়ে ঈশানের দিকে তাকিয়ে বললো – এই ডায়েরির তো অনেক দামী।।
ইশান মুচকি হেসে বলল- তোমার এমন একটা ডায়েরির খুব শখ ছিলনা !!!আবার এই ফ্লাওয়ার গার্ডেন পার্কে আশার খুব ইচ্ছা ছিল তাই তো।।।
ইমা বিস্মিতা চোখে ঈশানের দিকে তাকিয়ে বলল- হম দুইটাই ঠিক বলেছো কিন্তু তুমি এগুলো জানলে কি করে বলতো???
ইশান – তোমার ডায়েরি থেকে।।
ইমা – আমার ডায়েরি তুমি পেলে কোথাই???
ইশান – ১৫ দিন আগে তুমি ভুল করে আমার গাড়িতে তোমার ডাইরি রেখে চলে গিয়েছিলে সেদিন আমি তোমার ডাইরি পড়েছিলাম।।।
ইমা চমকিত হয়ে – কি তুমি আমার ডাইরি পড়েছ??
ইশান – আরে রাগ করো না।। বেশি পড়িনি অল্প পড়েছি।। ভাগ্যিস পড়েছিলাম না হলে তোমার শখ ,তোমার ইচ্ছার কথা জানতে পারতাম না ।।। তুমি তো মুখ ফুটে কিছু বলো না।। যায় হোক তুমি খুশি হয়েছো!!??
ইমা ঈশানের কাধে মাথা রেখে মুচকি হেসে বললো
ইমা – হম অনেক অনেক বেশি খুশি হয়েছি । ইমা ডায়েরির উপরে হাত বুলিয়ে বলল -এই ডায়েরি তে আমি আমাদের কথা লিখবো ইশান ।। আমাদের সুন্দর মুহূর্ত আমাদের ভালোবাসা আমাদের অভিমানের রাগের সব কিছু লিখবো ।। শেষ বয়সে যদি কোনো ঘটনা ভুলেও যায় তাহলে এই ডায়েরি দেখে মনে করবো । দুজন মিলে এই ডায়েরি পড়বো এবং হাসবো ।।।
ইশান – হম ঠিক বলেছ । আমাদের ভালো স্মৃতি গুলো জড়ো হবে এই ডায়েরিতে।।।
ইমা ব্যাগ থেকে কলম বের করে ঈশানের দিকে ধরলো ।।
ইশান – কলম কি হবে??
ইমা – এখন তোমার মনে যা আসে লিখো তারপর আমি লিখব।।।
ইশান ইমার হাত থেকে কলম ডায়েরি নিয়ে লিখতে লাগে। লিখা শেষ হলে ইমাকে দেই ইমা লিখে।।।
ইমা – তুমি আমার লিখা পরো আমি তোমার টা পড়বো।।।
ইশান মুচকি হেসে বলল – ওকে দাও।।
ইশান – জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত আসে যা সপ্নের থেকে কোনো অংশে কম মনে হয় না ।। ইচ্ছা করে তখন সময়টা কে আটকে রাখি।।। যেন এই সপ্ন ফুরিয়ে না যায় ।। আর এই সপ্নের মতো জীবন টা ,,,ইশান আমাকে গিফট করেছে।। i love you so m much ।।।
ঈশান ইমার দিকে তাকিয়ে বললো – ই লাভ ইউ টু সুইটহার্ট।।।
ইমা – এবার আমার পালা দাও।।।( ইশান ইমার হাতে ডায়েরি দেই। ইমা ঈশানের লিখা পড়তে শুরু করে। ) আমি আজ সত্যি নিজেকে অনেক লাকি মনে করি যে ইমার মতো মেয়ে আমার জীবনে এসেছে।।আজ ইমার কারণে আমি প্রতিটা মুহূর্ত জীবনটাকে নতুন করে দেখতে পাই ।।। ইমা আমি তোমাকে আমার জীবনে প্রতিটা ঘন্টায়,প্রতিটা মিনিটে প্রতিটা সেকেন্ডে আমার পাশে চাই।। আজ তোমাকে ছাড়া সত্যি কিছু ভাবতে পারিনা। হয়তো আর পারবো না।।। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তোমার সাথ আমার চাই।। I love you,, I love you so much,,, ❤️
বর্তমান,,,,,
ইমা ঈশানের লিখায় চুমু দিয়ে ডাইরি বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদতে লাগে।।। এবং বলে –
ইমা – আমি সত্যি তোমার সাথে অন্যায় করেছি ইশান । ।
ইমা চোখ মুছে বেড টেবিলের ড্রয়ার থেকে কলম নিয়ে ডাইরি লিখতে শুরু করে।।। ইমার চোখে পানি থামছেই না। কষ্ট যেনো ইমাকে আষ্টেপিষ্টে ধরেছে।।।।
Time Skip
পরের দিন সকালে ,,,,
ইশান ইমা, ইসমার জন্য সকাল সকাল উঠে নাস্তা বানিয়ে নিয়ে ৫ তলায় এসে ইমার ফ্ল্যাটের দরজায় কলিংবেল বাজাই। ইমা সারা রাত ঘুমায়নি তাই গভীর ঘুমে থাকায় ইমার কানে কলিংবেলের শব্দ পেছাচ্ছে না।। এদিকে ইসমার কলিংবেলের শব্দে ঘুম ভেঙে যাই। ইসমা চোখ ডলতে ডলতে নিজের রুম থেকে বের হয়ে ইমার রুমের দিকে যায় দরজা একটু ফাঁকা করতেই দেখে ইমা ঘুমিয়ে আছে।। ইসমা দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে মেন দরজার কাছে এসে জিজ্ঞেস করে – কে??
ইশান – আমি তোমার বন্ধু ।।
ইসমা ঈশানের কণ্ঠ শুনেই খুশি হয়ে যায় এবং দরজা খুলে দেই ।
ইশান – good morning বন্ধু।। (হেসে)
ইসমা – good morning ।।
ঈশান – তোমাদের জন্য নাস্তা বানিয়ে নিয়ে এসেছি।। তোমার আম্মু কই??
ইসমা – আম্মু ঘুমাচ্ছে ।
ইশান – এখনও ঘুমাচ্ছে!!! শরীর ঠিকাছে তো!!
ইসমা – বলতে পারছি না ।। কাল রাত পর্যন্ত তো ঠিক দেখেছি।।
ইশান – ok !! তুমি এক কাজ করো তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে নাও । আমি খাবার টেবিলে দেই। নাহয় খাবার গুলো ঠান্ডা হয়ে যাবে।
ইসমা – আম্মু কে ডাক দিবো??
ইশান – দরকার নেই ঘুমাতে দাও।। তুমি যাও।।
ইসমা চলে গেলো ফ্রেশ হতে।। ইশান টেবিলে খাবার পরিবেশন করে ইমার রুমের সামনে গিয়ে দাড়ায়। এবং রুমে ঢুকবে কিনা ভাবতে লাগে।।।।
এমন সময় ইসমা আসে। দেখে ইশান তার মায়ের রুমের সামনে দাড়িয়ে আছে।
ইসমা – বন্ধু দাড়িয়ে আছ কেনো??
ইশান চমকে ইসমার দিকে তাকাই ।
ঈশান থমতমত খেয়ে বলে- না মানে!!!
ইসমা – আচ্ছা ভিতরে যাও ।।আম্মু কে বলো তুমি আমাদের জন্য নাস্তা নিয়ে এসেছো।। দেখো আম্মু কেমন খুশি হয়ে যায়।। (হেসে)
ইশান লাজুক হাসি দিয়ে বললো – ok তুমি খেতে বসো আমি তোমার আম্মুকে ডাক দিয়ে আসছি ।
ইসমা চলে গেলো । ইশান আসতে করে দরজা খুলে দেখে ইমা ঘুমিয়ে আছে । ইশান অবাক হয়ে ইমাকে দেখতে থাকে কি সুন্দর দেখাচ্ছে ইমাকে ঘুমন্ত অবস্থায়।। ইশান এক পা দুপা করে ইমার কাছে আসে এবং হাঁটু ভেঙে ইমার সামনে বসে।। ইশান বিছানার উপর হাত রেখে ইমার সামনে একটু মাথা টা ঝুঁকিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ।
ইশান – জানি না কবে মনের মধ্যে এতখানি জায়গা দিয়ে ফেললাম । বুঝতে পারছি না নিজের মনের কথা বলবো কি করে তোমাকে।।।
ভাবতেই ঈশানের চোখ পড়ে ইমার মাথার পাশে রাখা ডাইরির উপর।। ইশান বিস্মিত চোখে ডাইরির দিকে তাকাই।।
ইশান – এটা তো ডাইরি মনে হচ্ছে।
ইশান ডাইরি তুলে হাতে নিল।। ডাইরি খুলতে যাবে এমন সময় ইমা নড়ে উঠে ইশান তারাতারি ডাইরি লুকিয়ে ফেলে।। ইমা অন্যদিক ঘুরে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।। ইশান ডাইরির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে মনে মনে বলে –
ইশান – নিশ্চয় এই ডাইরি তে ইমা নিজের কথা লিখেছে । এক কাজ করি ডাইরিটা নিয়ে যায়। ইমার সম্পর্কে আরেকটু জানতে পারবো ।।
ইশান ডাইরি নিয়ে উঠে চলে গেলো । ইশান দেখে ইসমা বসে নাস্তা করছে।। ইশান ডাইরিটা ইসমার আড়াল করে বললো –
ইশান – ইসমা!!!( ইসমা পিছনে ঘুরে তাকাই।।) তোমার আম্মু গভীর ঘুমে আছে।। তাই জাগালাম না।। তুমি খেয়ে নাও।
ইসমা – তুমি খাবে না??
ইশান – না ।। আমি খেয়ে এসেছি।। এখন আমি যায়। আমার কাজ আছে । (মুচকি হেসে)
ইসমা – ওকে বন্ধু।। (ঈশান ইসমাকে বিদায় দিয়ে চলে গেলো ।)
ইশান নিজের ফ্ল্যাটে এসে তারাতারি নিজের রুমে গেলো। এবং খুব একসাইটেড হয়ে ডাইরি নিয়ে বসলো।।
ইশান ডাইরির দিকে তাকিয়ে বলল – ডাইরিটা বেশ সুন্দর।। ইমা ডাইরিতে কি লিখতে পারে!! (চিন্তিত সুরে) আচ্ছা কারো পার্সোনাল জিনিস ধরা/ পড়া খুব খারাপ একটা জিনিস।।। কিন্তু আমিতো ডাইরি নিয়ে চলে এসেছি ।।এখন কি করবো ডাইরি পড়বো?!! কিন্তু না পরেও তো উপায় নেই। ইমার সম্পর্কে জানতে হলে ডায়েরি পড়া আবশ্যক।।। (হেসে ) আর দেরি না করি ডাইরিটা পরেই ফেলি।
ইশান ডায়রিটা খুলতে যাবে এমন সময় দরজায় কলিং বেল বেজে ওঠে।।। ঈশান একদম চমকে ওঠে ।। ঈশান ভাবে এই বোধহয় ইমা চলে এসেছে ডাইরি খুঁজতে।।
ইশান উত্তেজিত হয়ে বললো -এখন কি করি!! ইমা যদি এসে দেখে ডায়েরি আমার কাছে তাহলে তো কেস খেয়ে যাব ।।। চুরির দায় পড়বে আমার কাঁধে আর ইমা বা আমাকে কি মনে করবে।। আমার মনের কথা বলার আগেই সব শেষ হয়ে যাবে।।। আল্লাহ কি কাজটা করলাম ।। এক কাজ করি ডাইরিটা তাড়াতাড়ি লুকিয়ে ফেলি..।।
ইশান কোথায় রাখবে ভাবতে ভাবতে খাটের নিচে তাকাই এবং সেখানে রাখার চিন্তা করে। ইশান তারাতারি ডাইরিটা খাটের নিচে ঢুকিয়ে দেই।।। এবং চিল্লাই বলে – আসছি।।
ইশান গিয়ে দরজা খুলে দেখে রেন । ইশান রেন কে দেখে সস্থির একটা শ্বাস ছাড়ে।।
রেন – কিরে এতখন লাগালি দরজা খুলতে।। কি করছিলি তুই।। আজকের কথা তুই ভুলে গেলি নাকি।
ইশান – কিসের কথা !!??(বিস্মিত হয়ে)
রেন – আজ আমার গার্লফ্রেন্ড এর জন্মদিন ওর জন্য প্ল্যান করব তুই বলেছিলি সাহায্য করবি ।। ভুলে গেলি কি করে বলতো??
ইশান – সত্যি মাথায় ছিল না ।
রেন – থাকবে কি করে মাথায় এখন আরেক জন বাস করছে । তুই কি ভেবেছিস আমি বুঝি না !!!
ইশান – ধুর কিযে বলিস।। Ok তুই বোস আমি রেডি হয়ে আসছি।।
ইশান নিজের রুমে গিয়ে আলমারি খুলে নিজের পোশাক বের করতে করতে বলল- ভাগ্যিস রেন ছিল সত্যি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।।।
ইশান রেডি হয়ে রেন এরসাথে চলে গেলো বাইরে।। এদিকে ইমার ঘুম ভাঙলে সে উঠে নিজের মতো ফ্রেশ হতে চলে যায় ওয়াসরুমে।। ইমা ভুলেই গিয়েছে ডাইরির কথা ।
১ দিন পর,,,,,
ইশান তার মিউজিক রুমে বসে পিয়ানো বাজিয়ে এবং চর্চা করছে।। এবং ইমাকে তার মনের কথা বলবে কি করে ভাবছে। ইশান ভুলেই গেছে ডাইরির কথা ।।।
এদিক ইমা সিদ্ধান্ত নেই সে ইসমা কে নিয়ে দেশে ফিরে যাবে।। এই কথা আকাশ কে বলার জন্য ফোন করবে এমন সময় ইমার মনে হলো । আকাশ কে বলা তার ঠিক হবে না।।
ইমা – না আকাশকে জানানো যাবে না।। তার থেকে ভালো হবে চলে যাওয়ার আগে ওকে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়াটা। এটাই ভালো হবে। ।।।
এদিকে ইশান পিয়ানো বাজানো বন্ধ করে জানালার কাছে এসে দাড়িয়ে বললো – আচ্ছা সরাসরি ইমাকে মনের কথা বলে কেমন হয়,!!!
ইশান জানালার কাছের সামনে দাড়িয়ে নিজের প্রতিচ্ছবি দিকে তাকিয়ে বললো –
ইশান – ইমা i love you। ,,,….. ধুর!!!!( রাগ হয়ে)
ইশান মাথা চুলকিয়ে বিরক্ত সুরে বললো – আমি গাইয়া নাকি সরাসরি I love you বলবো!! একটু স্পেশাল করে বলতে হবে । কিন্তু কি ভাবে বলা যায় বুঝতে পাড়ছি না।।।কিছুই মাথায় আসছে না ।।। এমন কিছু করতে হবে যেনো একবারের বলাতেই ইমা ইমপ্রেস হয়ে যায় । ।
বলতেই ঈশানের ফোন বেজে উঠে ।। ইশান পকেট থেকে ফোন বের করতেই দেখে লিলি কল করেছে।। ইশান ফোন রিসিভ করে কানে ধরে।।।
ইশান – হম লিলি বলো।।
লিলি – ইশান কাল আমার জন্মদিন ।। বাবা আমার জন্য বিশাল বড় পার্টি রেখেছে। তোমাকে কিন্তু আসতে হবে ।। আর মিস ইমার নাম্বার আমার কাছে নেই তো। তাই প্লিজ তুমি বলে দিও।। তুমি মিস ইমাকে সাথে নিয়ে আসবে কিন্তু।।।
ইশান লিলির কোথায় খুশি হয়ে যায়।।
ইশান – ওকে ওকে নিয়ে আসবো তুমি ভেবো না।। এখন রাখি । (বলে ফোন কেটে দিয়ে চিল্লাই বললো ইয়াহু ) আহহহ এমনি একটা সুযোগ খুঁজছি লাম।।। ইমা কে কাল মনের কথা বলার খুব ভালো একটা সুযোগ পেলাম। লিলির বার্থডে পার্টি শেষ করে ইমাকে নিয়ে ম্যানহাটন যাবো।।
[ম্যানহাটন : আমেরিকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানের লিস্টের মধ্যে রয়েছে ম্যানহাটন (Manhattan)। ম্যানহাটন আমেরিকার বৃহত্তম শহর নিউইয়র্ক সিটির ৫ টি বরো বা কাউন্টির মধ্যে ক্ষুদ্রতম। ম্যানহাটনই মূলত নিউইয়র্ক শহরের প্রান]( কালেক্টেড),,😊
ইশান – ম্যানহাটন গিয়ে ইমাকে প্রপোজ করবো।।। উফফফ এখুনি কেমন খুশি খুশি লাগছে মনে।।।। ( এক্সাইটেড সুরে গালে হাত দিয়ে হেসে বললো)
এদিকে ইমা দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য কল করে ফ্লাইট এর টিকিট বুকিং দিল পরশুদিন সকালের ।।।।
ইমা ফোন রেখে দিয়ে বলল- ইসমা কে বলবো না যে একবারে যাচ্ছি বলবো বেড়াতে যাচ্ছি একবারে যাচ্ছি শুনলে হয়তো যেতে চাইবে না।।
ইমা উঠে ডাইনিং রুমের এসে ইসমাকে ডাক দেই।। ইসমা এসে বলে-
ইসমা – কি হয়েছে আম্মু ??
ইমা – আমার কাছে এসো । (ইসমা ইমার কাছে আসে। ইমা ইসমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল) পরশুদিন আমরা দেশে যাবো।।
ইসমা বিস্মিত চোখে ইমার দিকে তাকিয়ে বলে – কেনো আম্মু?? বাবা তো এখনও ঠিক হয়নি।
ইমা – সেটা নিয়ে ভাবতে হবে না।
ইসমা – কেনো আম্মু?? আমরা কি আবার আসবো না এখানে??
ইমা – আসবো।। দেশে কাজ শেষ হলেই আবার ফিরে আসবো।।
ইসমা – তাহলে ঠিক আছে।। (হেসে)
ইসমা ইমাকে জড়িয়ে ধরে বললো – বাবাকে বেশি দিন না দেখতে পেলে আবার আমার মন খারাপ লাগবে ।।আমরা তারাতারি ফিরে আসবো ঠিকাছে আম্মু।।
ইসমার কথা শুনে ইমার বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠলেও ইমা মেয়েকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বললো – ঠিকাছে।।।
ইজমা খুশি মনে হয়ে চলে গেলো খেলতে।।
ইমা নিজের রুমে এসে বিছানায় বসে দুই হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে মনে মনে বললো – আমি বলতে পারবো না ইসমাকে।। আমি পারবো না।।।
Time Skip,,
ইমার মনটা কেমন আনচান করছে কিছুই ভালো লাগছে না মনের মধ্যে অশান্তি এক যন্ত্রণা কাজ করছে তাই একটু খোলা বাতাসে ইসমাকে নিয়ে হাঁটতে বের হলো ইমা।।। এদিকে ইশান ইমাকে লিলির কথা বলতে ইমার বাসায় গেলে দেখে দরজায় তালা দেওয়া।। ইশান পকেট থেকে ফোন বের ইমাকে কল করে।। ইমা ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে ইশান কল করেছে । ইমা ফোন রিসিভ করে কানে ধরল।।।
ইমা – হ্যালো
ইশান – ইমা আপনি কোথায়??
ইমা -মেয়েকে নিয়ে একটু হাঁটতে বের হয়েছি।।
ইশান – ও আচ্ছা তো এখন আপনি কোথায় আছেন??
ইমা – আমাদের বিল্ডিং এর বাম সাইডে কিছু দূর আসতেই যে পার্ক আছে সেখানে আছি।।
ইশান – ও আচ্ছা আমি আসছি ।( বলে ইশান ফোন কেটে দিলো)
১০ মিনিট পর,,,,
ইসমা পার্কে খেলছে ।। ইমা বসে ইসমার খেলা দেখছে।। এমন সময় ইশান আসে ।। ইশান ইমাকে দেখতে পাই এবং আসতে করে ইমার পাশে এসে বসে।। ইমা চমকে ঈশানের দিকে তাকাই ।
ইশান – hi
ইমা – hi
ইশান – ইসমার খেলা দেখছেন???!( ইসমার দিকে তাকিয়ে)
ইমা – হম।।
ইসমা ইশান কে দেখতে পেয়ে খেলত খেলত হাত তুলে টা টা দিলো।। ইশান হেসে ইসমা কে টা টা দেই।।
ইশান – আপনাকে একটা কথা বলার ছিল ।।
ইমা ঈশানের দিকে তাকাই বলে – হম বলুন ।।
ইশান – লিলির কাল জন্মদিন। লিলি আপনাকে আমাকে ইনভাইট করেছে।। আমাকে বলেছে আপনাকে যেনো সাথে নিয়ে যায়।।। আপনি যাবেন আমার সাথে??
ইমা – মনে মনে বললো পরশুদিন সকালে ফিরেই যাবো দেশে ।। আর একটু সময় নাহয় ঈশানের সাথে কাটালাম।। (মুচকি হেসে)
ইশান ইমার ঠোঁটের কোনায় হাসি দেখে বললো – কি হলো হাসছেন যে??
ইমা হেসে বলল – না এমনি।। ঠিক আছে যাবো।।।।। (এমন সময় ইসমা ইমাকে ডাক দেই। ) আমি একটু আসছি দেখে আসছি। (ঈশানের দিকে তাকিয়ে বললো)
ইশান মাথা ঝুঁকিয়ে মুচকি হেসে বললো – ওকে।।
ইশান ইমার যাওয়া দেখে এবং মনে মনে বললো – কাল আমার জন্য খুব স্পেশাল একটা দিন হতে যাচ্ছে।। কাল ইমাকে প্রপোজ করবো।। উফফ আল্লাহ তুমি ইমাকে রাজি করিয়ে দিয়েও।। ( ইমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে )
,,,,,,, Continue,,,,,,,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।।।।
,,,,,,,,Continue,,,,,,,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।।