I’m Mafia lover পর্ব -৪৯ ও শেষ পর্ব

#i_m_mafia_lover
#Last_part_49
#sabiha_kh

পরেরদিন সকালে ইমার আগে ঘুম ভেঙে যায়।।। চোখ খুলেই দেখে ইশান এক হাত মাথার নিচে দিয়ে বাচ্চাদের মত করে ঘুমিয়ে আছে ।। সূর্যের আলো পর্দার ফাঁক দিয়ে ঈশানের চোখে মুখে লাগছে ঈশানের মুখ কেমন সাইন করছে। ইমা অবাক হয়ে ঈশানের দিকে তাকিয়ে দেখতে থাকে ।।। এমন সময় ঈশানের ফোনে এলার্ম বেজে উঠে ইমা তারাতারি চোখ বন্ধ করে। ইশান চমকে চোখ খুলে দেখে ইমা ঘুমাচ্ছে। ইশান তারাতারি ফোনের এলার্ম বন্ধ করে ইমার দিকে তাকাই দেখে ইমার ঘুম ভেঙে গেল নাকি । ইমা ঘুমাচ্ছে কিন্তু জানালার পর্দার আড়াল দিয়ে সূর্যের আলো আসছে দেখে ইশান বিছানা থেকে নেমে জানালার দিকে এগিয়ে যায়। এদিকে ইমা চোখ একটু ফাঁক করে দেখে ইশান জানালার পর্দা ঠিক করে দিচ্ছে। যেনো সূর্যের আলো না আসে।। ইশান ঘুরতেই ইমা আবার চোখ বন্ধ করে।। ইশান ইমার কাছে এসে বসে এবং অল্পক দৃষ্টিতে ইমার দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ।। ।।।

ইশান আলতো করে ইমার কপালে চুমু দিয়ে মুচকি হেসে চলে গেলো ওয়াস রুমে।। এদিকে ইমা চোখ খুলে লাজুক একটা হাসি দিয়ে কম্বল দিয়ে মুখ ঢেকে নিল।।।

কিছুক্ষণ পর,,,,,

ইশান গোসল করে বের হয়ে দেখে জানালার সব পর্দা সরানো বিছানা গোছানো।। রুমের দরজার দিকে তাকাই দেখে দরজাও খোলা।।

ইশান গায়ে কাপড় দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে সিড়ি দিয়ে নামবে এমন সময় ইসমার রুম থেকে ইমার কণ্ঠ শুনতে পাই । ইশান ইসমার রুমের দিকে যাই দেখে ইমা ইসমা কে ঘুম থেকে জাগিয়ে ওর সাথে খেলা করছে।। ইশান মুচকি হেসে রুমের ভিতরে গিয়ে বললো –

ইশান – মা , মেয়ে কি আমাকে ভুলে গেলো ।

ইমা ইসমা পিছনে ঘুরে তাকাই দেখে ইশান ।।

ইসমা ইশান কে দেখে বিছানা থেকে উঠে ইশান কে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে – good morning বাবা। (হেসে)

ইশান – good morning। আমার মেয়ের ঘুম ভালো হয়েছে?? (আদর করে বললো )

ইসমা – জী।। (হেসে)

ইশান – তোমার রুম পছন্দ হয়েছে মা??

ইসমা – খুব পছন্দ হয়েছে বাবা।। (হেসে)

ইমা – আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।। (বলে ইমা চলে যায়)

ইশান বসে ইসমার সাথে গল্প করে ।।।

ইশান – ইসমা এখন মুখ চোখ ধুয়ে নাও বাকি গল্প পরে করবো কেমন!!

ইসমা – ঠিকাছে বাবা।। (হেসে)

ইসমা উঠে ওয়াসরুমে চলে যায়।। ইশান উঠে নিজের রুমে আসে দেখে ইমা আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল আচড়াচ্ছে করছে। ইশান পা টিপে টিপে ইমার পিছনে এসে দাঁড়ালে ইমা আয়নায় ইশান কে দেখে। ইশান মুচকি হেসে ইমার হাত থেকে চিরুনি নিয়ে ইমার চুল ঝেড়ে দিতে লাগে।। ইমা আয়নায় অপলক দৃষ্টিতে ঈশানের দিকে তাকিয়ে থাকে।

ইশান – হম হয়ে গেছে। (মুচকি হেসে ইমার দিকে তাকিয়ে)

ইমা – thank you।।

ইশান ইমার কাধে থুতনি রেখে আয়নার দিকে তাকিয়ে বললো – আমাকে thank you বলতে হবে?? এটা তো আমার কাজ আমি আমার বউ এর খেয়াল রাখবো ।। তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।।। (ইমা লাজুক হাসি দিল)

এমন সময় দরজায় কেও নক করে।

ইশান ইমাকে ছেড়ে বললো – এসো।।

কাজের লোক – স্যার লিলি ম্যাডাম এসেছে।

ইশান – হম যাও।।।( কাজের লোক চলে গেলো। )

ইমা – এই সময় লিলি ,,,,!! (একটু বিস্মিত সুরে)

ইশান – চলো দেখি কি বলে।।

ইশান ইমাকে নিয়ে নিচে গেলো দেখে লিলি হল রুমে বসে আছে ।। লিলি ইশান ইমাকে দেখে উঠে দাঁড়ায়।

লিলি – good morning ।।

ইমা, ইশান – good morning বসো লিলি।

লিলি – না সময় কম । ১০ টাই আমার ফ্লাইট।

ইমা – কি বলো এত তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছ।। (একটু অবাক হয়ে)

লিলি – হম আমার কাজ পড়ে গেছে। গত কাল গেলেই ভালো হতো কিন্তু তোমাদের বিয়ে আমি কি ভাবে যায় বলো। তাই আজই যেতে হবে ।। তোমাদের দুজন কে একসাথে সত্যি অনেক ভালো লাগছে।। (হেসে)

এমন সময় ইসমা সিড়ি বেয়ে নেমে আস।।। লিলি ইসমা কে দেখে বললো – good morning।।

ইসমা – good morning ম্যাডাম।।

লিলি – তুমি এখন অনেক খুশি রাইট!!!

ইসমা – জী বাবা মা দুজন কে পেয়েছি আমার আর কিছু চাইনা।। (হেসে)

ইশান হেসে ইসমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিল।

লিলি – তোমরা সবাই অনেক সুখী হও।।। এবার আমার যেতে হবে ।

ইশান – কে যাবে তোমার সাথে !!

বলতেই আকাশ এসে বললো – আমি নিয়ে যাচ্ছি স্যার। গুড মর্নিং স্যার , ম্যাডাম।

ইমা – good morning।

ইশান – ওকে। লিলি আমেরিকা গেলে দেখা হবে। আর অবশ্যয় আমাদের এইখানে বেড়াতে আসবে।

লিলি – আসবো অবশ্যয়।। তো আসি।।

ইশান, ইমা – ok ভালো থেকো।।।

লিলি বিদায় নিয়ে চলে গেলো ।

Time Skip

ইশান ইমা হল রুমে বসে তাদের বিয়ের ছবি দেখছে। এবং ঠিক করছে কোন ছবিটা বড় করবে তাদের রুমের দেওয়ালে টাঙ্গাবে।। এমন সময় জনি রোকসানা তাদের বাচ্চাকে নিয়ে ঈশানের কাছে আসে।।

জনি – স্যার আসবো ।

ইশান ইমা তাকাই দেখে জনি রোকসানা ।

ইশান – এসো এসো বসো জনি ,রোকসানা ।

জনি রোকসানা বসলো।।

জনি- স্যার সারা রাত ঘুম হয়নি আপনি কি বলবেন এইটা ভেবে।।

ইশান জনির কোথায় হেসে উঠলো।। ইশান উঠে জনির পাশে এসে বসে।।

এমন সময় আকাশ ও আসে।।

ইশান – আকাশ এসেছো।।

আকাশ – জী স্যার।

ইশান – এদিকে এসো আমার আমার পাশে বসো।।।

আকাশ একটু বিস্মিত হয়ে ঈশানের পাশে বসলো ।

ইশান নিজের পায়ের উপর দুই হাত রেখে আকাশ জনির দিকে তাকালো এবং ইশারা করলো তার হাত ধরতে ।।

জনি আকাশ একটু ভয়ে ভয়ে ঈশানের হাত ধরে ।। ইশান আকাশ জনির হাত শক্ত করে ধরে বললো –

ইশান – কে কোন হাত ধরেছো বলো ??

আকাশ – আমি ডান হাত ধরেছি।

জনি – আমি বাম হাত ।

ইশান – হম তোমরা তো এটাই ছিলে না। আমার ডান হাত বাম হাত ।।

জনি ,আকাশ দুজন দুজনার দিকে তাকিয়ে ঈশানের দিকে তাকালো এবং একসাথে বললো – জী।।

ইশান – জনি ,আকাশ আমি চাই তোমরা দুজন আমার জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত আমার পাশে এমনি ডান হাত বাম হাত হয়ে আমার ভাই হয়ে থাকো ।। আমরা তিন জন খারাপ কাজ কিন্তু একসাথে করেছি।। এবার ভালো কাজ করতে চাই। তাই ভালো কাজেও আমি তোমাদের পাশে চাই । ।। তোমরা বসো আমি আসছি।।

বলে ইশান উঠে উপরে নিজের রুমে যায়।।

জনি আকাশ দুজনাই হতবাক ঈশানের কোথায়।।

জনি – ম্যাডাম স্যার এগুলো কি বলছে।। ভালো কাজ মানে!!

ইমা – আমি কিছুই জানি এই বিষয়ে।।

বলতেই ইশান চলে আসে।। সবাই দেখে ঈশানের হতে কিছু পেপার ।

ইশান জনি আকাশের সামনে দাড়িয়ে দুজনের দিকে দুই পেপার ধরে বললো-

ইশান – এইটা ধরো।।

আকাশ জনি পেপার নিয়ে অবাক হয়ে বললো – এটা কি স্যার??

ইশান – এইটা ফ্ল্যাটের পেপার এই নাও চাবি।। এইটা আমার পক্ষ থেকে গিফট।।

জনি আকাশ খুশিতে কি করবে বুঝতে পারছে না। দুজনই উঠে ইশান কে জড়িয়ে ধরে।।।

জনি মোটামুটি কেঁদেই ফেলে।।

জনি – স্যার আমরা সত্যি অনেক ভাগ্যবান যে আপনার মত এমন একজন কে পেয়েছি।।

আকাশ – সত্যি আপনি সব সময় আমাদের সব সুখ দুঃখে ছিলেন।।

ইশান – আমি কতো টুকু ছিলাম জানি না কিন্তু তোমার ছিলে আমার পাশে ছায়ার মত।।

ইশান জনি আকাশ কে ছেড়ে তাদের কাধে হাত রেখে বলল – আমার কেও নেই এটা আমি আর কখনও ভাববো না। কারণ এখন আমার সব আছে। আমার বউ বাচ্চা আছে আমার ভাইয়েরা আছে আমার বিশাল বড় কোম্পানি আছে টাকা পয়সা সব আছে।। আমি চাই তোমরা দুজনাই আমার কোম্পানিতে আমার সাথে কাজ করো।।

জনি – স্যার আমি তো পারবো না। এগুলোর তো কিছুই বুঝি না ।

ইশান – আকাশ ও তো বুঝত না। আমার দুই বছর অসুস্থতার মধ্যে ও সব শিখেছে এবং সামলেছে ও।।। ঠিক তুমি ও কাজ করতে করতে শিখে যাবে।। তো রোকসানা আজ কেই তোমরা নতুন বাড়িতে উঠে পরো কেমন।।

রোকসানা – জী স্যার আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।।

ইশান – আরে না ধন্যবাদ দিতে হবে না ।। শুনো জনি , আকাশ কাল সকালে দুজনাই আমার সাথে অফিসে যাবে। কাল থেকে মনে করো নতুন জীবন শুরু।।।

আকাশ, জনি আনন্দিত সুরে বলল – ইয়েস স্যার।।।

Time Skip

বিকাল বেলা ,,,,

বাড়ির গার্ডেনে ইমা ঈশানের শরীরের সাথে ঠেস দিয়ে বসে গল্প করছে।।

ইমা ঈশানের হাত নিয়ে খেলতে খেলতে বলে –

ইমা – তুমি খুব ভালো একটা কাজ করলে আকাশ , জনির জন্য । আসলেই ওদের এমনি কিছুর দরকার ছিল ।। এখন আকাশের বিয়ে হলেই হয় ।।

ইশান – হম ঠিকই বলেছ। আকাশ কে জিজ্ঞেস করতে হবে ওর কোনো পছন্দ আছে কিনা।

ইমা – হম ।।

ইশান – ইমা তোমার আর ওই হসপিটালে চাকরি করার দরকার নেই।।

ইমা উঠে বসে ঈশানের দিকে তাকিয়ে কপাল কুচকে বললো – এটা কি বললে আমার প্রফেশন আমি ছেড়ে দিবো??

ইশান – আরে পাগলি আমি সেই কথা একবারও বলেছি!!! তুমি তোমার প্রফেশনে থাকো তবে নিজের হসপিটালে।। অন্যের হসপিটালে কাজ করার দরকার নাই । তুমি বলেছিলে না কখনো যদি সুযোগ আসে তুমি সবচেয়ে কম খরচে সবার চিকিৎসা করবে!!

ইমা – হম বলেছিলাম তো। কিন্তু তেমন সুযোগ কই পেলাম বলো ।। (মুখ ভার করে)

ইশান – আমি থাকতে তোমার সুযোগের আর কি দরকার। আমি তোমাকে হসপিটাল বানিয়ে দিবো । তুমি কম খরচে বা বিনা মূল্যে চিকিৎসা করতে পারবে সমস্যা নেই । (হেসে)

ইমা ইশান কে জড়িয়ে ধরে আনন্দিত সুরে বলল – thank you জান।।।

ইশান – I love you সোনা।। (বলে ইমার কপালে চুমু দেই)

এভাবে সুখের সময় কাটতে লাগলো সবার জীবনে।।। জনি আকাশ ইশানের সাথে কোম্পানিতে কাজ করতে শুরু করে।। কাজের ভিতর ইশান আকাশের কাছে শুনে তার কোনো পছন্দ আছে কি না।আকাশ ঈশানের কথার প্রতি উত্তরে জানিয়ে দেই তার যদি কখনো কাওকে পছন্দ হয় তাহলে সবার আগে সে তাকেই জানাবে।। ইশান ইমাকে বিনা মূল্যে চিকিৎসার জন্য হসপিটাল খুলে দেই। সব কিছু খুব সুন্দর ভাবে চলতে লাগে।। ১ বছরের মাথায় ইশান ইমার ঘর আলো করে একছেলে সন্তান আসে।। শুরু হয় তাদের জীবনের আরেকটা সুন্দর অধ্যায়।।।

,,,,,,,,,,,,,,,,,সমাপ্ত,,,,,,,,,,,,,,,,,

এতদিন ধরে এই গল্পের পাশে থাকার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।।🥰 জানি অনেকেই একটু রাগ করেছেন গল্প দেরি করে দিয়েছি জন্য ।। তবুও আপনারা পাশে ছিলেন। সত্যি এইজন্য অনেক ধন্যবাদ।।। গল্প কেমন লাগলো অবশ্যয় সবাই ,সবাই, সবাই কমেন্ট করে জানাবেন।।। অনেক ভালোবাসা রইল আপনাদের জন্য।। 🥰🥰🥰

2 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here