Love warning পর্ব ৯

#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction🔥
#Part_9
#ফারজানা

কিছুক্ষণ পর আবার আসে অর্ণব আর সাথে করে কিছু ওষুধ আর একটা কাগজ নিয়ে……

“উঠো আর ওষুধগুলো খেয়ে নাও”

“আমি খাবো না”

“আবারো বলছি রাগাবে না আমায় চুপচাপ খেয়ে নাও ওষুধ”

তিতি আর কথা বাড়ালো না চুপচাপ ওষুধ খেয়ে নিলো।

“এই পেপারে সই করো”

“কিসের পেপার আর কেনো?”

“এত প্রশ্ন করতে বলি নাই তোমাকে যা বলছি তাই করো”

“পারবো না আমি”

“তোমার মা বাবার কোনো ক্ষতি কি তুমি চাও তিতির পাখি?”

“ম মানে কি বলছো তুমি এইসব কি করবে তুমি ওদের?”

“এখন আপাতত কিছু করি নাই কিন্তু তুমি যদি সই না করো তাহলে কিছু করতে বাধ্য হবো”

“আমি তোমার সব কথা শুনবো বলো কি করতে হবে?”

“এখন আপাতত এই পেপারে সই করো ”

“হুম করছি”

তিতি ভয়ে অর্ণবের আনা পেপারে না দেখেই সই করে দিলো। অর্ণব বাঁকা হাসি দিয়ে তিতির কপালে চুমু খেয়ে চলে গেলো…….

🌸🌸🌸🌸

“এইটা কিসের পেপার?”

“এইটা হলো তোমাকে বিদেশ নিয়ে যাবার পেপার। বলতে পারো এক ধরনের লটারি। যার মাধ্যমে অনেক ঘুরা ঘুরি করা যায়”

“সই করে দেই তাহলে বরং স্বাধীনের কাছ থেকে কিছুদিন লুকিয়ে থাকা যাবে “(মনে মনে)

“কি ভাবছো মিস বকবক?”

“তেমন কিছু না। আচ্ছা দিন সই করে দেই”

“হুম”

শিশির পেপার না পড়েই সই করে দিলো। প্রবণ শিশিরের কোনো দ্বিধা নাই দেখে মুখ চেপে হাসতে থাকলো……

প্রবণ শিশিরের হাত থেকে পেপার নিয়ে অর্ণবের কাছে গেলো…..

“অর্ণব জীবনে বোকা মেয়ে দেখেছি বাট এই শিশিরের মতো দুইটা দেখি নাই”

হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে প্রবণ। তখন অর্ণব বললো….

“ভাবী তো ভালোই আছে মাঝে মাঝে একটু বাচ্চাদের মতো করে কিন্তু আমার পাখি তো একটা ঝাল মরিচ।”

মন খারাপ করে বললো অর্ণব।

“আরেহ মন খারাপ করিস না দেখবি ঠিক হয়ে যাবে। এখন যে আমরা ওদের না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলেছি ওরা জানলে কিন্তু খবর আছে আমাদের”

“এখন জানানোর দরকার নাই।”

“তো কি করবো এখন আমরা”

“এখন তুই শিশির কে তিতিরের রুমে পাঠিয়ে দে আর আমি তোর রুমে চলে যাই। আগামীকালের প্ল্যান করতে হবে তো”

“হুম বুঝতে পারছি বাট নতুন বউ রেখে থাকতে কেমন যেনো লাগছে”

“শালা পাঁচ মিনিট হলো বিয়ে করলি এখনি এমন লাগলে আরো তো দিন পরে আছে।”

“পাঁচ বছর আর পাঁচ মিনিট একই কথা ব্রো”

“তুইও দেখছি তোর বউয়ের মতো বকবক করতে শিখে যাচ্ছিস। তোকে তো এখন মিস্টার বকবক ডাকতে হবে”

“হাহাহা নাম টা কিন্তু জোস মিস বকবক ওহহ সরি মিসেস বকবকের বর মিস্টার বকবক হাহাহা”

দুই বন্ধু হাসতে হাসতে নিজেদের রুমে চলে গেলো…..

“তিতি পাখি ”

তিতি অর্ণব কে দেখে ভয়ে চুপসে গেলো অর্ণব তা বুঝতে পেরে বললো…..

“জান প্লিজ এইভাবে ভয় পেও না কষ্ট লাগে জান। আর সরি ওইসময় এত কিছু বলার জন্য আসলে তুমি যেইভাবে কথা বলছিলে তখন রাগের মাথায় এইসব করেছি ক্ষমা করে দাও জান। এই কথা দিচ্ছি চেষ্টা করবো রাগ কে কন্ট্রোল রাখার”

তিতি অর্ণবের কথা শুনে কান্না করছে। অর্ণব তাই তিতির মুখের সামনে থেকে চুল গুলো সরিয়ে দু চোখের পাতায় চুমু খেলো।

“এইভাবে কান্না করো না লক্ষীটি। খুব কষ্ট হয়। তোমাকে মেরেছি কিন্তু ব্যাথা পেয়েছি আমি। তোমাকে অনেক বুঝাই যে এমন কিছু বলো বা করবে না যার ফল খারাপ হয় তবু ও তুমি ওই কাজটাই করো”

“আব্বু আম্মু ওরা কোথায়?”

“ওরা ভালো আছে। ওদের কিছু হবে না। আমি ওদের খেয়াল রাখবো সাথে তোমার ও”

তিতি অর্ণবের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন।

“আর মারবে না তো?”

তিতি ভয়ে ভয়ে বলতে থাকে। অর্ণব মুচকি হাসি দিয়ে বললো…..

“আমি কি মারতে পারি আমার এই তিতির পাখি কে”

বলেই তিতি কে জড়িয়ে ধরলো । তিতি ও অর্ণবের দিকে তাকিয়ে রইলো । তিতি ভাবছে একটা মানুষ এত ভালো কিভাবে ভাসতে পারে। অর্ণব যেভাবে ভালোবাসে আবার সেইভাবে মারতেও পারে।

” তিতির পাখিইইইইই আমরা আজ একসাথে থাকবোওওওওওওও”

জোরে জোরে কথা বলতে বলতে শিশির দৌড়ে তিতির রুমের ভিতর ঢুকে পড়ে আর দেখে অর্ণব তিতির কে জড়িয়ে ধরে আছে। শিশির লজ্জা পায় ওদের এই অবস্থা দেখে। অর্ণব শিশির কে দেখে তিতি কে ছেড়ে দেয়……

“ভাবী আপনি যে কবে ঠিক হবেন। সব সময় আমাদের মাঝে কাবাব মে হাড্ডি না হলে আপনার চলে না তাই না?”

শিশির কি বলবে বুঝতে না পেরে বললো…..

“দোষ আমার না সব দোষ প্রবণ স্যারের ওনিই তো আমাকে এই রুমে পাঠিয়েছে”

“শালা নিজেতো বোকা বউ পাইছে তাই রোমাঞ্চ ও তাড়াতাড়ি হয়ে যায় কিন্তু আমার যে দেরি হয় শালা জানে না। আমার বউ যে কি ও জানে না” (মনে মনে প্রবণের গুষ্টি উদ্ধার করছে)”

“অর্ণব ভাইয়া আপনার বন্ধু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে তাড়াতাড়ি যান তানাহলে রাত শেষ হয়ে যাবে পরে আর সময় পাবেন না”

প্রবণ অর্ণবের রুমে ঢুকার সময় এমন একটা কথা শুনে আচমকাই দাড়িয়ে যায় আর অর্ণব তো বোকার মতো শিশিরের দিকে তাকিয়ে থাকে। ও বুঝতে পারছে না শিশির কি বললো…..

তিতি অর্ণব আর প্রবণের এই মুখ থেকে মুখ চেপে হাসতে থাকে। তখন প্রবণ বললো……

“এই যে মেঘ পরী কি বলছো তুমি কিছুই তো বুঝতে পারছি না”

“শালা ভাবী আমাদের গেঁ ভাবছে নাকি অন্য কিছু বুঝাতে চাচ্ছে”

তিতি এইবার জোরে জোরে হাসতে লাগলো আর বললো….

“শিশির বুঝিয়েছে প্রবণ ভাইয়া তোমার(অর্ণব) জন্য মানে তোমরা একসাথে ঘুমাবে তাই অপেক্ষা করছে আর রাত শেষ হয়ে যাবে মানে শিশিরের এখন খুব ঘুম পাচ্ছে ও দেরিতে ঘুমালে দেরিতে উঠবে তাই তুমি চলে গেলে ও ঘুমাতে পারবে আর তোমরা কিনা কি ভাবছো আচ্ছা তোমরা সত্যিই ওই”

“আমরা গেঁ কিনা পরীক্ষা করতে চাও তাহলে চলো শুরু করি”

অর্ণব বললো আর সাথে তিতির হাসি মুখটা অফ হয়ে গেলো….

“না না আমি কোনো পরীক্ষা করতে চাই না তোমরা যাও আমাদের ঘুম পাচ্ছে”

“ওই প্রণব শালা তোর রোমাঞ্চ করা শেষ তাই বউকে পাঠিয়ে দিলি আমাদের রোমাঞ্চ নষ্ট করতে”

“কই আর রোমাঞ্চ হলো, গিয়ে দেখি মহারাণী ঘুমাচ্ছে তাই ওনার ঘুমন্ত মুখ দেখতে লাগলাম ঠিক তখনি ওনার ঘুম ভাঙ্গে। আমি জাস্ট বলেছি আজ তুমি তিতি ভাবির সাথে ঘুমাবে কথাটা শুনে ওনি এক দৌড়ে চলে আসছে”

শিশির তখন ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে বললো…..

“আপনারা যাবেন নাকি আমি তিতি কে নিয়ে চলে যাবো আপনারা যে কিভাবে এত বকবক করতে পারেন আল্লাহ জানে”

অর্ণব আর কথা বাড়ালো না। দেখলো তিতি ও ঘুমে দোল খাচ্ছে তাই ও প্রবণ কে নিয়ে চলে গেলো…..

অর্ণব আর প্রবণ চলে যাবার পর শিশির দৌড়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো……

“তিতি মুরগি কেমন দিলাম ঘুমের অ্যাক্টিং?”

“পুরাই ঝাক্কাস দোস্ত”

“তোকে না বলেছিলাম তনয়ের কথা মনে আছে তোর?”

“হুম কেনো কি হয়েছে এখন?”

“জানিস ও আজ আমায় প্রপোজ করেছে আর তুই তো জানিস আমি আগে থেকেই ওর প্রতি ক্রাশ খাইছি তাই হ্যাঁ বলে দিয়েছি”

“প্রবণ তো তোকে”

“আরেহ বাদ দে প্রবণ শ্রবণ এর কথা আমি ঠিক সময় বুঝে উড়ে যাবো তোকে নিয়ে”

“নাহ রে আমি যাবো না”

“হোয়াট তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?”

“সত্যি বলতে আমি অর্ণব কে আগে থেকেই ভালোবাসি। শুধু ও সাইকো দেখে দূরে চলে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি পারবো না ওকে ছাড়া বাঁচতে”

“আমি কোনোদিন তোর কথার উপরে যাইনি তাই আজও যাবো না। তুই যা ভালো মনে করিস তাই করিস । ”

“হুম”

🌿🌿🌿

অর্ণব আর প্রবণ প্ল্যান করছে কিভাবে শিশির আর তিতিরের মুখ থেকে ভালোবাসি শব্দটা শুনবে ঠিক তখনি অর্ণবের ফোনে একটা ম্যাসেজ আসলো অর্ণব ম্যাসেজ চেক করে প্রবণের দিকে বড় বড় চোখ করে বললো……

“দোস্ত আই অ্যাম ফিনিস”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here