#Love_warning❤️
#your_love_is_my_drug_addiction🔥
#Part_13
#ফারজানা
🌿🌿🌿
তিতি কান্নায় ভেংগে পরে। অর্ণব প্রবণ কে ফোন দিয়ে ঘটনা টা বলে। আর এই দিকে তিতি আর অর্ণব খুঁজতে বের হয় শিশিরকে…….
তিতি আর অর্ণব প্রায় অনেক জায়গায় খুঁজা শেষ করে। তবুও শিশিরের কোনো সন্ধান মিলে না।
“তিতির পাখি”
“হুম বলো?”
“শিশিরের কি এমন কোনো জায়গা আছে যে সেখানে সে যেতে পারে”
তিতি অর্ণবের কথা শুনে দাড়িয়ে যায়…..
“কি হলো বলো আছে কি এমন কোনো জায়গা?”
“শিশির কি তনয়ের কাছে চলে গেছে?”
“তনয়! কে এই তনয়?”
“শিশির তনয়কে পছন্দ করে। এমনও তো হতে পারে রাগের বশে তনয়ের কাছে চলে গেছে”
“তনয়ের অ্যাড্রেস বা নাম্বার আছে তোমার কাছে?”
“নাহ নেই”
“তাহলে সিউর কিভাবে হবো ”
অর্ণব আর তিতি কিভাবে তনয়ের সাথে যোগাযোগ করবে তা নিয়ে ভাবছে…….
।।
।।
।।
।।
“কোথায় গেলে তুমি মেঘ পরী। আর কোনোদিন তোমায় বকা দিবো না সব সময় এই মনে আগলে রাখবো শুধু ফিরে আসো”
প্রবণ গাড়ি চালাচ্ছে আর এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে লাগলো। হটাৎ কেউ ওর গাড়ির সামনে এসে পড়ে যায়। প্রবণ খুব তাড়াতাড়ি গাড়ির স্পিড কমিয়ে ব্রেক করে গাড়ি।
প্রবণ গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির সামনে গিয়ে দেখে একটি মেয়ে পরে আছে। মেয়েটির মুখ দেখা যাচ্ছে না। প্রবণ মেয়েটিকে ওর দিক ঘুরিয়ে চমকে উঠে কেননা মেয়েটি আর কেউ না শিশির ছিলো। প্রবণ এক মুহুর্ত দেরি না করে শিশির কে কোলে তুলে গাড়িতে উঠিয়ে হসপিটালে নিয়ে যায়………
ড্রাইভ করার পাশাপাশি অর্ণব কে জানিয়ে দেয় যে ও শিশির কে পেয়েছে…….
তিতি শিশিরের বাসায় ফোন দিয়ে বলে শিশির কে পাওয়া গিয়েছে আর আজ শিশির ওদের বাসায় থাকবে……অ্যাকসিডেন্ট কথা গোপন রেখেছে।
প্রবণ শিশিরকে যে হসপিটালে নিয়ে যায় তার ঠিকানা অর্ণবকে বলে। অর্ণব তিতি কে নিয়ে রওনা দেয় হসপিটালের উদ্দেশ্য…….
হসপিটালে…….
“ডক্টর, শিশির শিশির কেমন আছে?
“চিন্তা করবেন না মিস্টার প্রবণ রোগী ভালো আছে। ওনি মাথায় একটু আঘাত পেয়েছেন। ইনশাআল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে”
“থ্যাংকস ডক্টর। আমি কি এখন ওর সাথে দেখা করতে পারি?”
“হুম যেতে পারেন”
প্রবণ শিশিরকে দেখার জন্য কেবিনে যায় গিয়ে দেখে শিশির চোখ বন্ধ করে আছে। প্রবণ জানে শিশির ঘুমায় নি কজ শিশিরের পা নড়াচড়া করছে।
“এখন কেমন আছো?”
প্রবণের কণ্ঠ শুনে শিশির চোখ মেলে তাকিয়ে প্রবণ কে দেখতে পায়। কথা না বলে অন্যদিকে মুখ ফিরে তাকিয়ে থাকে
“কি হলো বলছো না কেনো কথা?”
শিশির চুপ করে রইলো কথা বললো না……
“এই মেঘ পরী রাগ করেছো সরি বলছিত আর বলবো না”
প্রবণ কানে ধরে বললো। শিশিরের খুব হাসি পাচ্ছে তাও হাসছে না।
“এই দেখো মেঘ পরী আমি উঠবস করছি তাও ক্ষমা করে দাও”
শিশির এইবার ফিক করে হেসে দিলো।
“আগে শুনতাম স্টুডেন্টরা কানে ধরে উঠবস করে আজ ফাস্ট দেখলাম প্রফেসর উঠবস করছে হাহাহা”
প্রবণ শিশিরের হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
“স্যার আপনার সাথে একটা পিক তুলতে চাই কানে ধরার অবস্থায় হাহাহা”
“মাশাআল্লাহ কি কিউট হাঁসি। বার বার ওই হাসিতে প্রেমে পড়ে যাচ্ছি। এত প্রেমে পড়লে পরে আবার ডায়বেটিস হয়ে যাবে আমার।”
“হোক ডায়বেটিস। আমাকে বোকা দেওয়ার সময় তো আর মনে থাকে না হুহহ”
প্রবণ ও শিশির কথা বলছে। অর্ণব আর তিতি এসে পৌঁছালো হসপিটালে। অর্ণব আগে থেকেই প্রবণের কাছ সব কিছু জেনে নিয়ে ছিলো। তাই তাদের কেবিন খুঁজতে দেরি হলো না। অর্ণব ও তিতি কেবিনে প্রবেশ করলো…..
“ওই তুই কোথায় গিয়েছিলি। আর তোর এত রাগ কেনো? জানিস কত চিন্তায় ছিলাম। তুই কি আমায় মেরে ফেলবি বলে এই রকম পাগলামি শুরু করছিস?”
তিতি শিশিরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে আর কথাগুলো বলছে……
“আরেহ মেরি মা একসাথে এত প্রশ্ন করলে উত্তর কিভাবে দিবো”
“আগে বল কোথায় গিয়েছিলি?”
“আগে বল বকবি না তো?”
“না বকবো না বল?”
“আসলে স্যার ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার পর খুব রাগ হয়েছিল আর তুই তো জানিস আমার রাগ উঠলে আইসক্রিম খেতে হয়। তাই গিয়ে একটা চকবার আইসক্রিম আর একটা কোন আইসক্রিম কিনলাম।খেতে খেতে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি তখন একটা কিউট গুলোমুলো একটা বাচ্চা দেখতে পাই। বাচ্চাটা খুব কান্না করছে। বাচ্চাটাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি কান্না করছে কেনো? তখন বাচ্চাটা বলছে ও নাকি হাতি দেখতে দেখতে এইখানে চলে এসেছে এখন বাসা চিনে না। পরে বাচ্চাটিকে আমার একটি আইসক্রিম দিয়ে হাটতে শুরু করি। বাচ্চাটা শুধু এলাকার নাম জানতো তাই মানুষদের জিজ্ঞাসা করে চলে যাই বাচ্চাটার বাসায়। পরে বাচ্চাটার আম্মু আব্বু বাচ্চাকে দেখে খুব খুশি। আর ওরাও আসতে দিলো না। ওইখানে বাচ্চাটার সাথে খেলাধুলা করে সময় কখন যে চলে গেছে বুঝতেই পারি নাই। জানিস বাচ্চাটার আম্মু খুব ভালো। খুব মিশুক।”
“হুম বুঝলাম। কিন্তু ফোন অফ ছিলো কেনো?”
“ফোনে চার্জ ছিল না। বাচ্চাটার সাথে খেলতে খেলতে চার্জ ও দেই নাই। পরে যখন সন্ধ্যা হলো বুঝতে পারলাম অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন আর কি চলে আসছি। রাত করে হেটে হেটে তখন এই স্যারের গাড়িতে অ্যাকসিডেন্ট করি”
তিতি শিশিরের কথা শুনে শিশিরের মাথায় হালকা চড় মেরে বললো…..
“কবে যে বড় হবি আর কবে যে বুদ্ধি হবে কে জানে? বাচ্চাদের সাথে থাকলে তো আর বুঝতে পারেন না আপনি যে আপনি এখন আর বাচ্চা না”
“প্রবণ শিশির কিন্তু বিয়ের আগেই তোকে একটা কথা বুঝিয়ে দিয়েছে?”
অর্ণব প্রবণকে বললো……
“কি কথা?”
“ওই যে বিয়ের পরেই ওর বাচ্চা চাই সেইটা আর কি”
চোখ টিপ দিয়ে বললো অর্ণব। প্রবণ বললো…..
“ওইটা ব্যাপার না আমার মেঘ পরী যদি বলে প্রতি বছরে বছরে তার বাচ্চা চাই আমি রাজি আছি যাই হোক আমার মেঘ পরীর ইচ্ছাটা তো আমার পূরণ করতে হবে”
প্রবণ ও হেসে হেসে বললো। তখন তিতি বললো…..
“ভাইয়া তখন কিন্তু আমার এই পিচ্ছি বোন আপনাকে সময় দিতে পারবে না। কেননা ওর বাচ্চা হলে আর কিছু লাগে না। তখন কেউ ওকে বিরক্ত করলে ওর রাগ হয় পরে মারতে ও পারে”
দুষ্টুমি করে বললো তিতি। শিশির তো রাগ,লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে…….
চারজন কিছুক্ষন আড্ডা দিলো। রাতে তারা হসপিটালে থাকবে বলে চিন্তা করলো।
🌺🌺🌺
” কি রে ভাইয়া আজ তোর মন খারাপ কেনো?”
সামু শুভ্র কে বললো….
“আর বলিস না। আমার মায়াবিনীর যেনো কি হয়েছে আমার সাথে কথা বলছে না। এখন আবার অনলাইন ও হচ্ছে না”
“ওর ফোন নম্বর নেই? ”
“উহু। সব সময় তো মেসেঞ্জার এ কথা বলি।”
“ঢং নাম্বার চাইলি না কেনো?”
“একবার চেয়েছিলাম ও না করে দিয়েছিলো পরে আর সাহস করে চাই নি”
“হয়তো গিয়ে দেখবি তোর মায়াবিনীর অন্য কোথায় বিয়ে হয়ে গেছে তুই আবার দেবদাস হয়ে যাস না হাহাহা”
“ওর বিয়ে হয়ে গেলেও তুলে আনবো। আমার ভালোবাসা এতটা সস্তা না যে অন্য কোথায় ওর বিয়ে হলো আর আমি ও চুপচাপ অন্য প্রেমিকদের মতো সরে আসবো। আমি আবার এত দয়ালু না নিজের ভালোবাসা অন্যের হাতে তুলে দিবো”
“তুই এখন কি ভিলেন হবি নাকি”
“ভিলেন হবো কেনো? ভিলেন তো হবে সে যে আমার মায়াবিনী কে আমার কাছ থেকে নিয়ে যাবে”
“বুঝছি ভাইয়া যা তোর মায়াবিনী তোর থাকবে। আমি তো বুঝি ভালোবাসা কি? ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকা কতটা যে কষ্টের তা যারা ভালোবাসে তারা বলতে পারবে”
“আচ্ছা যদি গিয়ে দেখিস অর্ণব অন্য কাউকে ভালোবাসে তখন কি করবি?”
“খুন করবো ওই মেয়ে কে। অর্ণব শুধু আমার। অর্ণব আমার ছাড়া অন্য কারো হতে পারবে না। একবার মনে আছে যখন আমি ক্লাস ইন্টার এ পড়তাম আর তুই অর্ণব প্রবণ অনার্স ফর্থ ইয়ারে তখন আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম। ওই ঘুরতে যাওয়া ছিলো আমাদের চারজনের একসাথে লাস্ট ঘুরা। তখন একটি মেয়ে অর্ণবের উপরে পরে গিয়েছিলো?”
“মনে থাকবে না। তখন তুই ওই মেয়ে কে চড় মারতে মারতে গাল লাল করে দিয়েছিলি। বেচারি তোর মার খেয়ে কি কান্নাই না করেছিলো। আমি অর্ণব আর প্রবণ তো ছাড়াতেই পারছিলাম না। কতো ছোটো ছিলি তাও শক্তি ছিলো। খুব কষ্ট করে তোকে ওই জায়গা থেকে নিয়ে এসেছিলাম তা আমরাই বলতে পারি”
“হাহাহা। তখন অর্ণবের প্রতি ভালোবাসা বুঝি নাই তাও কষ্ট লেগেছিলো। আজ সাত বছর পর দেখা হবে ভাবতেই কি ভালো লাগছে”
“হইছে এখন আর ভাবতে হবে না। এখন গিয়ে রেডি হয়ে পর। সময় হয়ে যাচ্ছে। তোরা মেয়েরা তো আবার সাজতে অনেক সময় লাগে পরে দেখা যাবে তোর সাজতে সাজতে বিমান আমাদের রেখেই চলে গেছে”
“হুহহ বলছে আমি যাই”
সামু চলে গেলো শুভ্র একটা সিগারেট ধরিয়ে তার মায়াবিনীর কথা ভাবতে লাগলো।
চলবে…….
বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।