My First Crush পর্ব -২৯

#My_First_Crush
#পর্ব-২৯
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি

(রাইয়ান)
খুব ভোরেই সূর্যমামা জাগার আগেও ঘুম থেকে উঠে পড়লাম আমি। অবশ্যই এখান থেকে পালানোর জন্য না। অন্য কারণে। সবার আগে যেটা করলাম হৃদির রুমে গিয়ে তার অ্যালার্ম বন্ধ করে দিলাম। এরপর বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলাম। মুখে ইচ্ছেমতো পানির ঝাপটা দিয়ে পুরোপুরি সতেজ করলাম নিজেকে। আয়নার দিকে তাকিয়ে মুখে আত্মবিশ্বাসী হাসির রেখা টানলাম। কোমরে একটা গামছা বেঁধে পুরোপুরি নেমে পড়লাম নিজের মিশনে। প্রথমে চলে গেলাম রান্নাঘরে। রান্না নিয়ে আমার জ্ঞান সীমিত। তবুও একেবারেই যে নেই তাও নয়। আর তাছাড়া এক্সট্রা সাহায্য করার জন্য ইউটিউব মাস্টার তো আছেই। গতকালের মধ্যেই যা জেনেছি, এখানে গ্যাস থাকে রাত তিনটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত। এই সময়টুকুর মধ্যেই পুরো দিনের রান্না সবাইকে সম্পন্ন করতে হয়। যার ফলে খুব ভোরে উঠে রান্নাবান্না সব সেড়ে নিতে হয় হৃদিকে। এরপর আবার অফিস। জিড়িয়ে নেবার একটুও ফুরসত নেই। এগুলো দেখে সব থেকে বেশি খারাপ লাগলো আমারই। কারণ আমার জন্যই হৃদি আজ এই জীবন বেছে নিয়েছে। নিজের সবকিছু ফেলে চলে এসেছে এত দূরে। শুধুমাত্র আমার দেওয়া আঘাতের জন্যই। এতদিন হৃদি আমার পারফেক্ট ওয়াইফ হবার জন্য সকল কিছু করেছে। এখন পালা আমার। আমাকেও তো হৃদির জন্য একজন পারফেক্ট হাজবেন্ড হতে হবে। আমি পুরো উদ্যম নিয়ে লেগে পড়লাম কাজে।

এতদিন হৃদি আমার জন্য সবকিছু করেছে। আমার সম্পূর্ণ যত্ন করেছে। কখনো কোন কিছু নিয়ে অভিযোগ করার সুযোগ দেয়নি। কিন্তু আমি হৃদির জন্য কিছুই করিনি। তার যত্ন নেওয়া তো দূর, তার কাজে কখনো একটু হাতও লাগাইনি। ছোট থেকে দাদীমার প্যাম্পার নিয়ে বড় হয়েছি। আমার সবকিছু গুছিয়ে দিতো ডি’সোজাই। একটু খুত খুঁতে স্বভাব তো ছিলোই কিন্তু সেগুলো নিজ থেকে দেখতে হয়নি আমার। একারণেই হয়তো ঘরের কাজ নিয়ে অপটুই থেকে গেছি আমি। তেমনি রান্নাটাকেও যতটা সহজ ভাবে নিয়েছিলাম এখন করতে গিয়ে দেখি অতটাও সহজ না। রুটি বানানোর জন্য আটার ডো তৈরি করতে গিয়ে হলো বেহাল দশা। আটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে হাঁচি দিতে দিতে পাগল হয়ে গেলাম। বেশি পানি হয়ে যাওয়ায় আটা হয়ে গেলো কাঁদা কাঁদা। আঙ্গুলের সাথে লেগে লেগে…..ধুর! হচ্ছেই না। পেঁয়াজ কাটতে গিয়েও কেঁদেকেটে একাকার। সবজি হলো বেসাইজ। কোনমতে রুটি বানাতে গেলাম। যা গোলাকার আকৃতির ধারে কাছেও গেলো না। কড়াইয়ের মধ্যে তেল দিতেই মনে হলো ছ্যাৎ করে উঠলো। সবজি দিয়ে নাড়তে গিয়ে দেখি ধোঁয়া আর ঝাঁজে ঘর ভরে যাচ্ছে। কাশতে কাশতেই আমি শেষ। রুটি ভাজতে গিয়ে পুরে ছাই হলো। ভাগ্যিস হৃদির ঘুম অনেক গাঢ়। নয়তো তার কিচেনের এমন বেহাল দশা দেখে আমাকেই হয়তো ঘাড় ধরে বাড়ি থেকে বের করে দিতো। নাহ! এভাবে হবে না। সবকিছু আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে।
আমাকে যাচাই করার জন্য ক্লাসে একবার জটিল থেকে জটিলতম একটা ম্যাথ দেওয়া হয়েছিল আমাকে। এবং কয়েকবারের চেষ্টায় সেটা যখন আমি সলভ করতে পেরেছিলাম আমার প্রফেসর বিস্মিত দৃষ্টিতে নিজের চশমা ঠিক করে আশ্চর্য হয়ে বলেছিলেন, ‘দূর্দান্ত! এই ছেলে তো কখনো থেমে থাকার না।’ হ্যাঁ, সেই ছেলেই আমি। ছোট থেকে ছোট বিষয়েও যে কখনো হার স্বীকার করেনি। সেই আমিই আমার ভালোবাসার ক্ষেত্রে হেরে যাবো! তাও কি কখনো হতে পারে?

পুড়ে যাওয়া খাবারগুলো একত্রিত করে ডাস্টবিনে ফেলে দিলাম আমি। ইউটিউবে খাবারের নিয়মাবলিগুলো দেখে নিলাম বারবার। অফিসের কাজে আমার ইনটেলিজেন্স এবার ঘরের কাজের জন্য খাটালাম। মাথায় ঘামছা বেঁধে নেমে পড়লাম আবারো কাজে। আগের বার করা ভুলগুলো নোট করলাম। এবং সেগুলো এভোয়েড করার চেষ্টা করলাম। এবার আটার ডো টা অনেকটাই ঠিকঠাক হলো। সানগ্লাস পরে পেঁয়াজ কাটায় চোখে রস আগের তুলনায় কম গেলো। কড়াইয়ে তেল দেওয়ার আগে ভালো করে পানি মুছে নিলাম। রুটি বানানোর সময় গোল না হলেও একটা গোলাকার বাটি দিয়ে রুটি কেটে গোল বানিয়ে নিলাম। এবার খাবারগুলো অনেকটাই ঠিক হলো। অন্তত খাবার যোগ্য। সবশেষে রান্নাঘর পুরো পরিষ্কার করে নেমে পড়লাম বাড়ি পরিষ্কারের কাজে। পদে পদে হোঁচট খেলাম। কিন্তু থামলাম না। একসময় পুরো বাড়ি ঝকঝকে করে ফেললাম। বাজার থেকে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসও কিনে আনলাম। সবকিছু গুছিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে একটু ঘুরে নিজেই নিজের আনন্দ প্রকাশ করলাম আমি।
___________________________________________________

(হৃদি)
ঘুম খানিক হালকা হয়ে এলো আমার। আস্তে আস্তে চোখ খুলতেই দেখলাম আমার মুখের সামনেই হাসি হাসি মুখ করে মেঝেতে বসে বিছানার উপর হাত রেখে তাকিয়ে আছে রাইয়ান। আমি চমকে উঠে মাথা খাঁড়া করলাম। ভ্রু কুঁচকে নিজেকে ধাতস্থ করে বলে উঠলাম,
‘তুমি!’
রাইয়ান বলে উঠলো, ‘এই! নিজের হাজবেন্ডকে দেখে কেউ এভাবে চমকে উঠে, যেন কোন ভূত দেখে ফেলেছে!’
আমি আমার তৈলাক্ত মুখে হাত টাত বুলিয়ে একটু নিজেকে ঠিক করে নিতে লাগলাম। মাঝে বললাম,
‘তুমি এখানে এসেছো কেন?’
রাইয়ান বলল, ‘কেন না? তুমি তোমার বেডে শুতে দিবে না বলেছো রুমে ঢুকতে পারবো না এমন তো কিছু বলোনি!’
‘একটা মেয়ে ঘুমিয়ে আছে আর সেখানে তুমি হুট করে ঢুকে পড়বে।’
‘একটা মেয়ের ক্ষেত্রে আসলেই এমনটা করা উচিত না। কিন্তু সেই মেয়েটা যদি নিজের বউ হয় তাহলে নির্দ্বিধায় করা যায়। রোমান্টিক হবারও তো একটা ব্যাপার আছে তাই না।’
রাইয়ানকে বিড়বিড় করে কিছু বলতে গিয়েই আমার চোখ পড়লো পাশের টেবিল ঘড়ির উপর। দেখলাম সাড়ে দশটা বেজে গেছে। যেখানে আমি প্রতিদিন পাঁচটা, সাড়ে পাঁচটা নাগাদই উঠে পড়ি। আমি তাড়াতাড়ি ঘড়ি উল্টেপাল্টে দেখতে লাগলাম। অধৈর্য হয়ে বললাম,
‘এতো বেলা হয়ে গেলো কিভাবে? এলার্ম কি বাজেনি!’
রাইয়ান আমার কথায় কোন কর্ণপাত করলো বলে মনে হলো না। উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল,
‘ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চ কি একসাথেই করবে নাকি!
তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসো।’
রাইয়ান চলে গেলে আমিও বাথরুমে গেলাম। শুক্রবার হওয়ায় বেঁচে গেলাম। নয়তো এতো দেরি করে উঠলে আমার আর অফিসে যাওয়া প্রয়োজন হতো না। সারাবছরের জন্যই ছুটি হয়ে যেতো। দাঁত ব্রাশ করে, ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই চমকে উঠলাম। এটা কি আমার বাড়ি! এত সুন্দর করে সাজানো। কাজের চাপে ক্লান্ত হয়ে যেটা কিছুদিন ধরে একদমই করতে পারেনি আমি। দেয়ালের কোণায় কোণায় অল্প স্বল্প যে মাকড়সার জালগুলো ছিল সেগুলোও ভেঙে ফেলা হয়েছে। পুরো বাড়ি একদম ঝকঝকে পরিষ্কার। মেঝেতে পা রেখেই বোঝা যাচ্ছে একটু আগেই মোছা হয়েছে। জিনিসপত্র সুন্দর করে গোছানো। সব জানালায় আমার প্রিয় আকাশি রঙের পর্দা টানানো। বাতাসে একধরনের কমলালেবুর হালকা সুগন্ধ। এক নিমিষেই মনটা ফুরফুরে হয়ে গেলো। তখনই খেয়ালে আসলো এগুলো করেছে কে? দেখলাম রান্নাঘর থেকে রাইয়ান বেরিয়ে আসছে। তার হাতে একটা হটপট। রাইয়ান হটপট থেকে গরম গরম রুটি বের করে টেবিলে রাখলো। আমি হতবাক হয়ে আস্তে আস্তে টেবিলের দিকে এগিয়ে আসলাম। টেবিলে সকালের নাস্তা সাজানো। পাশাপাশি দুপুরের খাবারও রান্না করা। আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রাইয়ান বলে উঠলো, ‘খেতে বসো। দাঁড়িয়ে আছো কেন?’

আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হলো এগুলো রাইয়ান করেছে। আমি মনে মনে আবারো আওড়ালাম, রাইয়ান করেছে! কিভাবে সম্ভব! রাইয়ান আমার প্লেটে রুটি, ভাজি আর ডিম পোচ তুলে দিতে লাগলো। মন গলে যাবার মতো মুহুর্ত হলেও আমি নিজেকে গলতে দিলাম না। রাইয়ান জিজ্ঞেস করলো,
‘আরেকটু কি ভাজি নিবে হৃদি?’
আমি সেই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বললাম,
‘এসব কি তুমি রান্না করেছো?’
রাইয়ান স্মিত হেসে মাথা নাড়ালো। আমি বললাম,
‘ঠিকই আছে। এখন ফ্রিতে যেহেতু তুমি এই বাসায় থাকছো তখন কিছু কাজ তো করাই উচিত।’
রাইয়ান মৃদু হেসে আবারো মাথা নাড়ালো। আমি আড়চোখে রাইয়ানকে দেখলাম। আমি এমন খোঁচা দিয়ে কথা বললাম তবুও রাইয়ানের মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়াই নেই। একদম শান্ত হয়ে আছে। আমি যেই রাইয়ানকে চিনি সেই অনুসারে তো তার এই কথার উপরে গটগট করে এখান থেকে চলে যাবার কথা। সেই মুহুর্তেই আমার চোখ পড়লো খাবার টেবিলের মাঝখানে থাকা ফুলদানিটার উপর। যেখানে আমার প্রিয় টিউলিপ ফুল রাখা। একদম সতেজ। আমি অবাক হয়ে সেই ফুলের দিকে তাকালাম। রাইয়ান আমাকে বলল,
‘আজকে দুপুরের জন্য তোমার সবথেকে প্রিয় চিংড়ি মাছ ভুনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ফ্রিজে দেখলাম চিংড়ি মাছ নেই। তাই করতে পারলাম না। সেটা না হয় আরেকদিন করে খাওয়াবো। কেমন?’
আমি কোন উত্তর দিলাম না। চায়ের কেতলি থেকে চা ঢালতে গিয়েই দেখলাম রং চা। আমি কিছু বলার আগেই রাইয়ান বলে উঠলো,
‘গতরাতে খাবার সময় দেখলাম তোমার গলায় খানিক খুকখুক করছে। একারণেই দাদীমার থেকে শুনে দুধ চায়ের পরিবর্তে মশলা দিয়ে রং চা বানিয়েছি। বেশি করে আদাও দিয়েছি। তোমার গলায় ভালো লাগবে।’
আমি চা খাবার আগে নাকের কাছে নিয়ে একটু শুঁকতে গেলে রাইয়ান বলল,
‘চিন্তা করো না। লবঙ্গ দেইনি। চা বানানোর সময় আমার মাথায় ছিল যে তুমি লবঙ্গের গন্ধ সবচাইতে অপছন্দ করো। ।’

আমি কিঞ্চিৎ বিস্মিত দৃষ্টিতে রাইয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। বুঝতে চেষ্টা করলাম এটা কি সত্যিই রাইয়ান? নাকি রাইয়ানের মতো দেখতে অন্য কেউ?
রাইয়ান আমার দিকে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিতে দিতে বলল, ‘আমি জানি আমি দেখতে খুব হ্যান্ডসাম। তাই বলে খাওয়া বাদ দিয়ে যদি এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকো তাহলে তো খাবারগুলো ঠান্ডা হয়ে যাবে তাই না?’
আমার মুখভঙ্গি পাল্টে গেলো। তাড়াতাড়ি চোখের পলক ফেলে অন্য দিকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলাম আমি।

বেলা বাড়তে শুরু করলে আমি মিঁয়োকে নিয়ে সোফায় বসে বসে টিভি দেখতে লাগলাম। টিভিতে একটা অ্যাকশন মুভি হচ্ছিল। রাইয়ানও এসে বসলো সোফায়। এমন সময় একটা রোমান্টিক গান শুরু হলো। আমি স্বাভাবিকভাবেই দেখতে লাগলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম রাইয়ান আমার দিকে একটু চেপে বসেছে। আমার ভ্রু কুঁচকে গেলো। আড়চোখে তাকালাম তার দিকে। মিঁয়োকে নিয়ে একটু নড়েচড়ে আমিও সরে বসলাম। নির্লিপ্ত হয়ে দেখতে লাগলাম টিভি। খানিকবাদে আবারো দেখি রাইয়ান আরো চেপে বসেছে। আমিও সরে বসলাম। একটুপর আবারো। আমি এমনিতেও সোফার কর্ণারের দিকেই বসেছিলাম। সরতে সরতে এবার আর কোন জায়গাই বাঁচলো না। গুটিশুটি হয়ে পড়লাম আমি। একটুপর দেখি রাইয়ান তার হাতটা আমার কাঁধের উপর উঠিয়ে দিচ্ছে। এবার একদম চেঁচিয়ে উঠি আমি। রাইয়ানের দিকে পুরোপুরি তাকিয়ে বলি, ‘কি করছো?’
রাইয়ান নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলল, ‘পানি নিচ্ছি।’
এই বলে আমার পেছন দিয়ে হাত বাড়িয়ে সোফার পাশের ছোট টেবিল থেকে পানির বোতলটা হাতে নিয়ে নেয় সে। আমি বলে উঠি,
‘একদম চালাকি করবে না আমার সাথে। আমি মনে হয় কিছু বুঝি না! আমি খুব ভালোভাবেই জানি তুমি মিথ্যে বলছো।’
‘মিথ্যা বলার কি আছে! পানি নেওয়া ছাড়া আর কি করবো? কেন? তুমি কি ভেবেছো?’
আমি হকচকিয়ে বললাম, ‘আমি আবার কি ভাববো? তাহলে পানি নিবে আমাকে বললেই তো হতো। আর দূরে বসতে পারো না? কত জায়গা ওদিকে! এমনিতেই এতো গরম।’

রাইয়ান আমার কথায় কোন কান না দিয়ে বোতলে চুমুক দিয়ে পানি খেতে লাগলো। আবার আমার দিকেও বোতল দিয়ে ইশারা করলো আমি খাবো কিনা। উত্তরে আমি কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দাঁত কিড়মিড় করতে লাগলাম। আর সে আয়েশি ভঙ্গিতে দেখতে লাগলো যেন কত সাধের অ্যাকশন মুভি।

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here