real love পর্ব ৩৯

Real_Love♥
Oniya_Chowdhury
Part: 39
.
.
রাত নয়টার দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেলো!ইয়াশের দিকে তাকাতেই দেখলাম ও গভীরভাবে ঘুমিয়ে আছে!আমি কোমড় থেকে ইয়াশের হাতটা সরিয়ে উঠে বসলাম!সাথে সাথেই আমার চোখ সামনের সোফায় পড়লো!উনি বসে বসে ফোন স্ক্রল করছেন!আমি চুলগুলো হাতখোঁপা করতে করতে বললাম,
– কখন এসেছেন?
উনি আমার দিকে তাকানোর সাথে সাথেই বলে উঠলেন,
– স্টেচু!
আমি হা হয়ে উনার দিকে তাকালাম!উনি সাথে সাথেই একটা পিক তুলে নিলেন!তারপর বললেন,
– হুম ডান!একঘন্টা হলো এসেছি!এতক্ষণ জামাইআদর করলো সবাই মিলে!সাতদিনের খাবার একদিনে খেয়ে শেষ করলাম!
কথাটা বলেই উনি আমার দিকে ফোনের স্ক্রিনটা ধরে বললেন,
– দেখো তো কেমন লাগছে আমার জানটাকে?
আমি ফোনের দিকে তাকাতেই দেখলাম কিছুক্ষণ আগের তোলা পিকটা!আমি ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– এটা কোনো পিক হলো?
– হুম!আমার কাছে এগুলোই পিক!সুন্দর লাগছিলো যখন খোঁপা করছিলে!ওয়েট….
কিছুক্ষণ পর উনি আমার আর ইয়াশের ঘুমন্ত কয়েকটা পিক দেখিয়ে বললেন,
– দেখো তো এগুলো কেমন হয়েছে?
পিকগুলো একটু আগের তোলা!আমি পিকগুলোর দিকে তাকিয়ে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললাম,
– বাহ্!অনেক সুন্দর লাগছে তো আমাদের দু’জনকে!
– হুম!বুঝতে হবে তো পিকটা কে তুলেছে!
– হয়েছে…ঢং!রিপন ভাইয়া এখন কেমন আছেন?
উনি সোফার সাথে হেলান দিয়ে বললেন,
– বেশি ভালো না!কাধের দিকের একটা হাড় ভেঙ্গেছে!হিরোদের মতো করে ট্রেনের গতিতে বাইক চালাচ্ছিলো!উল্টোপাশ থেকে গাড়ি এসে দিলো ধাক্কা,ব্যস!
– ভাইয়ার বাবা-মা জানেন?
– হুম!এতো বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে না জানিয়ে থাকতে পারবে নাকি!
.
আমি আর কথা না বাড়িয়ে রুম থেকে বেরুতেই উনি দরজা ধরে পথ আটকে বললেন,
– কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
– আম্মুর কাছে যাবো!
– পরে….এখন না!
আমি উনার কথার গুরুত্ব না দিয়ে উনাকে ক্রস করে আসতে নিলেই উনি হাত টান দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– তোমাকে বলেছিলাম না এইসব কামিজ না পরতে!শাড়ি আনো নি?
– উহুম!আপনি খুব শক্ত করে ধরেন!ব্যাথা লাগে….ছাড়ুন!
– একটু ব্যাথা লাগলে কিছু হয় না!
– আমার হয়….ছাড়ুনন!
– কি হয়…বেবি?
উনার কথাটা শুনে উনার হাতে মারতে মারতে বললাম,
– অসভ্য কোথাকার!
– আমি এমন-ই!আমি ইউএসএ যাওয়ার আগে যেই শাড়িগুলো দিয়েছিলাম যাও তো ওগুলো নিয়ে আসো!
– কেনো?
– প্রশ্ন না করে যেটা বলেছি সেটা করো!
বলেই উনি ছেড়ে দিলেন!
আমি ঠাঁই দাড়িয়ে থেকে বললাম,
– আমি শাড়ি পরবো না!
– তোমাকে শাড়ি পরতে বলেছে কে?
– তাহলে আনতে বলছেন কেনো?
– আমি দেখবো…হয়েছে?যাও এখন নিয়ে আসো!
আমি আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ আমাদের বাসায় চলে এলাম!
.
আব্বু-আম্মুর সাথে কিছুক্ষণ ভালোমন্দ কথা বলে আমি আমার রুমে চলে এলাম।নাফিসা কার সাথে যেনো ফোনে কথা বলছিলো।আমি আলমারি থেকে উনার দেওয়া চারটা শাড়ি বের করে রুম থেকে বেরিয়ে দাদুর ফ্লাটে চলে এলাম।
.
ড্রইংরুম থেকে ডাইনিং-এর সাইডটা পুরোটুকু দেখা যায়!ড্রইংরুমে পা রাখতেই ডাইনিং-এ চোখ পরলো!দেখলাম উনি দাড়িয়ে দাড়িয়ে গ্লাসে পানি ঢেলে পানি খাচ্ছেন!আমি উনার কাছে যেয়ে ডাইনিং টেবিলের উপর শাড়িগুলো রেখে ইয়াশের কাছে চলে এলাম!
.
কিছুক্ষণ পর নাফিসা রুমে ঢুকলো!নাফিসাকে দেখে আমি প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
– এখানে কেনো?
– ভাইয়া যে ফোন করে আসতে বললো!
– কেনো?
– ইয়াশের কাছে থাকার জন্য!
– মানে?আজ ওর কাছে আমি থাকবো!
– হবে না!ভাইয়ার আদেশ আজ রাতে ইয়াশের কাছে আমি থাকবো!
– বাসা থেকে বের হ্!আমি ওকে তোর কাছে রাখার জন্য এনেছি?
নাফিসা রেগে গিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে কিছুক্ষণ পর উনাকে নিয়ে রুমে ঢুকলো!আমি ততক্ষণে শুয়ে পরেছিলাম!উনি আমার কাছে এসে জোর করে আমাকে উঠিয়ে নাফিসাকে ইয়াশের পাশে শুঁতে বললো!
আমি রেগে গিয়ে উনাকে বললাম,
– ইয়াশ উঠে আমাকে পাশে না পেলে কেলেঙ্কারী বাঁধিয়ে দিবে!আমি আজ ওর কাছেই শুঁবো!
উনি আমাকে টেনে রুম থেকে বের করে
নাফিসাকে দরজা ভেতর থেকে লক করতে বললেন!আমাকে টানতে টানতে অন্যরুমে নিয়ে এসে বললেন,
– ইয়াশ একবার ঘুমিয়ে গেলে অতি সহজে জাগে না!আর ঘুমের ঘোরে ইয়াশ টেরও পায়না কে ওর পাশে শুঁয়ে আছে!বেডের উপর যেই শাড়িটা রেখেছি ওটা পরে নাও!ততক্ষণে অনিমের সাথে একটু দেখা করে আসি!
বলেই উনি বাহির থেকে রুম লক করে দিয়ে চলে গেলেন!
.
আমি রাগে দাত কটমট করে বেডের উপর যেই শাড়িটা রাখা ছিলো সেটাসহ সোফার উপর রাখা বাকি তিনটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে যেয়ে সবগুলো পানির মধ্যে ভিঁজিয়ে রেখে রুমে চলে আসলাম!লাইট অফ করে দিয়ে চুপচাপ লেপের নিচে শুঁয়ে পরলাম!জোর করে চোখ বন্ধ করে আছি!একটু আগে ঘুম থেকে উঠেছি আর ঘুম আসবে না আমার!বিরক্ত লাগছে খুব….
বালিশটা মাথার নিচ থেকে নিয়ে মাথার উপর চেঁপে ধরলাম!
.
অনেক্ষণ পর রুমের ভেতর থেকে দরজা লক করার শব্দে বুঝলাম উনি এসেছেন! আমি হাত-পা সহ পুরো শরীর শক্ত করে রাখলাম!আমি একটুও নড়বো না!
.
বেড সামান্য কেঁপে উঠলো বুঝলাম উনি মাত্র বেডে বসলেন!আমি বালিশের নিচ থেকে উঁকি দিলাম দেখার জন্য উনি কি করছেন!
শার্টটা খুলে সোফার উপর ঢিল মেরে রেখে দিলেন!উঠে দাড়ালেন!উনার দাড়ানো দেখে আমি দ্রুত চোখ বন্ধ করে আগের ন্যায় বালিশের নিচে লুকিয়ে পরলাম!
.
উনি লাইটটা অন করে বললেন,
– হিয়া….
আমি কোনো রেসপন্স করলাম না!
– হিয়া আমার কাপড়-চোপড় আনো নি?
উনার কথাটা শোনামাত্রই অপ্রস্তুতভাবে মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো “ওহ্ শীট!”
উনি আবার বলে উঠলেন,
– হিয়া….লাগেজটা কই?
.
উফ্!আর চুপ থাকতে পারলাম না।আমি বালিশের নিচ থেকেই জবাব দিলাম,
– আমাদের বাসায়।
– বালিশের নিচে মাথা কেনো তোমার?
– …..
– থাক…বলতে হবে না!যাও,দ্রুত লাগেজটা নিয়ে আসো!
– পারবো না!
– পারবে না মানে?এখন কি আমি এই আন্ডারওয়ার পরে ঘুড়ে বেরাবো?
উনার কথাটা শোনামাত্রই চোখ বন্ধ রেখেই লাফ দিয়ে উঠে বললাম,
– ছিঃ!নির্লজ্জ্ব কোথাকার!আপনাকে প্যান্ট খুলতে বলেছে কে?
– নির্লজ্জ্বের বউ….আমি এখনো প্যান্ট খুলি নি!কথার কথা বললাম আরকি!
.
উনার কথাটা শুনে আমি মিটমিট করে চোখ খুলে উনার দিকে তাকালাম!উনি সত্যি সত্যিই প্যান্ট পরে আছেন!আমি আবার আগের ন্যায় মাথায় বালিশ চেঁপে শুয়ে পরলাম!
.
অনেক্ষণ উনার কোনো সাড়াশব্দ পেলাম না!হঠাৎ ওয়াশরুম থেকে চিৎকার শুনতে পেলাম!
– শাড়িগুলো এভাবে ভিঁজিয়ে রেখেছে কে?
উনার চিৎকার শুনে আমি আস্তে করে লেপটা টেনে লেপের ভেতর গুটিশুটি মেরে শুঁয়ে পরলাম!
উনি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে রুমে ঢুকে লাইটটা অফ করে দিলেন!কিছুক্ষণ পর বেড নড়তে লাগলো আর লেপে সামান্য টান পরলো!উনি যে লেপের ভেতর ঢুকছেন সেটা ঠিক টের পাচ্ছি! হঠাৎ উনার ভেঁজা হাত আমার কোমড় স্পর্শ করতেই আমি কেঁপে উঠলাম!
.
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here