#অবৈধ_সম্পর্ক
#লেখাঃ_নুসরাত_জাহান(ফারিয়া_আলম_মিম)
#সিজনঃ_২
#পর্বঃ_৭
পরেরদিন,,,,,
সকাল ১১ টা…….
ড্রইং রুমে সোফার উপরে বসে টিভি দেখছে রিপা। মনের ভিতরে ভয় ও কাজ করছে। না জানি ইমরান বাসায় এসে কী করে। মনটা বড্ড খারাপ লাগছে। আসলেই কী ইমরান বাচ্চাকে নষ্ট করবে???
সত্যি কী ওর মনের কথা নাকি মজা করছে?? নিজের সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখানোর আগেই তাকে হত্যা করতে চাচ্ছে??
আগে ইমরান আসুক তারপরে তাকে বুঝিয়ে বললেই সব কিছু মনে নিবে এটা আমার বিশ্বাস।
.
কলিং বেল বেজে উঠলো বাসার। সোফা থেকে উঠে গিয়ে দরজার গেট খুলে দিলো।
গেটের বাহিরে ইমরান ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
ইমরানের মুখের দিকে তাকালো রিপা। মুখটা একদম মলিন হয়ে আছে। সমস্ত গা দিয়ে টপটপ করে ঘাম পড়ছে। চোখদুটো লাল হয়ে আছে।
-“ইমরান তোমার মুখের অবস্থা এমন কেনো??? কী হয়েছে??? সারারাত কী ঘুমাওনি???
ইমরান কোন উত্তর দিচ্ছেনা। চুপচাপ ঘরে চলে গেলো।
রিপা ও পিছুপিছু গেলো।
ইমরান রুমে ঢুকে জানালার গ্রিল ধরে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। কোন কথা বলছেনা। চোখদুটো রাগে লাল হয়ে আছে।
রিপা ঢোক গিলছে তবুও সাহস করে বললো,,, ইমরান কী হয়েছে তোমার??? কথা বলছো না কেনো?
-“নিশ্চুপ ইমরান।
-“কী হলো উত্তর দিচ্ছো না কেনো?
মুখটা মেঘলার দিকে ঘুরিয়ে রাগি লুকে মেঘলার দুই বাহু ধরে ঝাকাতে ঝাকাতে বললো,,,কী কথা বলবো তোমার সাথে??? আমার কথার কোন মূল্য আছে তোমার কাছে?? বলেছিলাম না আমি এখন কোন বাচ্চা নিবো না। তবুও কীভাবে করলে তুমি??
আমি বুঝতে পারছি সব দোষ তোমার। তুমি নিজের স্বার্থের জন্য এসব করলে।
-“আমার কী স্বার্থ ইমরান??
-“জানিনা। তবে এখন তো আমার মনে হচ্ছে তুমি আমার শত্রু। না হলে পিল খেলেনা কেনো??? স্বামী যা বলবে,,,যা করবে সেটা তোমার মানতে হবে। যদি বলে এখন তোমার শুতে হবে তাহলে মুখ ফুটে বলতে পারবেনা যে,,,,এখন না পরে। কোন ভাবেই স্বামীকে কষ্ট দেওয়া যাবেনা।
-“ইমরান ভালোবাসা কী শুধু শরীরের চাহিদা?? মন বলে ও তো একটা জিনিস আছে।
-“এসব মন দিয়ে কী হবে?? আগে স্বামীর চাহিদা মিটাতে হবে। তোমাদের মেয়েদের তো ঐ একটাই আছে এছাড়া আর কী করার ক্ষমতা আছে। তাই যখন চাইবো তখন তোমরা দিতে বাধ্য।
আর এখন কান খু্লে শুনে রাখো আমি এই বাচ্চাটা কিছুতেই রাখবোনা। আমি এখন পর্যন্ত বিয়ের পরে ঠিকঠাক ভাবে ইনজয়ই করতে পারলাম না আর তুমি বাচ্চা কনসেপ্ট করে ফেললে। তুমি আজকেই ডক্টরের কাছে যাবে বাচ্চাটা এর্বোশন করাতে।
-“রিপা হাত জোর করে অনুরোধ করে বললো,,,ইমরান যেভাবেই হোক বাচ্চাটা কনসেপ্ট হয়েছে এখন এই বাচ্চাটাকে দুনিয়ার আলো দেখানোর দ্বায়িত্ব আমাদের।
ইমরান আমাদের কারো অধিকার নেই একটা নিষ্পাপ প্রাণকে মেরে ফেলার। এতে আল্লাহর আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠবে। আর তুমি যে ইনজয়ের কথা বলছো তোমার কী শুধু শরীরের প্রয়োজন? তাহলে বলো তার ব্যবস্থা ও আমি করে দিবো।
রাগান্বিত হয়ে রিপার দিকে তাকায় ইমরান।
তোমার সন্তান চাই নাকি স্বামী????
-“আমার দুটোই চাই।
-“যেকোন ১ টা বেছে নিতে হবে। আমার কথা তোনাকে শুনতেই হবে।
-“যদি না শুনি?? কী করবে??
-“মুখে মুখে একদম তর্ক করবেনা। সন্ধ্যায় ডক্টরের কাছে যাবো। যদি পজেটিভ হয় তাহলে সবকিছুর ব্যবস্থা করে আসবো।
ইমরান রাগ করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
রিপা সোফার উপরে ধাপ করে বসে পরলো।
.
সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিট………
ইমরান ঘরে এসে বললো,,,রিপা তুমি রেডী হওনি এখন ও???
-ইমরান যাওয়াটা কী খুব জরুরী??
-“হ্যাঁ। ১০ মিনিট টাইম দিলাম তাড়াতাড়ি রেডী হও।
কোন অজুহাত শুনছিনা।
রিপা ইমরানের মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে ঢুকলো। ইচ্ছা না থাকা স্বর্তে ও রেডী হয়ে রুম থেকে বের হয়ে এলো রিপা।
রিপাকে দেখেই মুখের কোণে ফিক করে হাসলো ইমরান।
রিপা তুমি নিচে আসো আমি গাড়ি বের করছি।
ইমরান গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করে গেটের বাহিরে রাখলো। ইমরান গাড়িতে বসে বসে রিপার জন্য ওয়েট করছিলো। রিপাকে দেখে গাড়ির দরজা খুলে দিলো। রিপা মাথা নিচু করে গাড়িতে উঠে বসলো।
রিপা উঠলেই ইমরান গাড়ি স্টার্ট দিলো।
গাড়ি চালাতে চালতে ইমরান রিপার দিকে তাকিয়ে বললো,,,তুমি কোন চিন্তা করোনা ডক্টর আমার পরিচিত আছে তোমার কোন ভয় নেই। খুব সাবধাণে এর্বোশন করে দিবে কোন তিল পরিমাণে ব্যাথা পাবেনা।
মূহুর্তেই মুখটা মলিন হয়ে গেলো।
ইমরানের প্রতি খুব ঘৃণা লাগছে। স্বামী হয়ে কীভাবে এমন কথা বলতে পারলো???
কিছুক্ষণ পরে ইমরানের গাড়ি হসপিটালের সামনে গিয়ে থামলো।
ইমরান গাড়ি থেকে নেমে রিপাকে বের করার জন্য দরজাটা খুলে দিলো।
রিপা গাড়ি দিয়ে নামলে রিপার হাত ধরে হসপিটালের ভিতরে নিয়ে গেলো ইমরান। দুজনে ডক্টরের রুমের পাশের ওয়েটিংরুমে অপেক্ষা করছে।
মিনিট পাঁচেক পরে একজন নার্স এসে বললো,,,এবার আপনাদের সিরিয়াল। যান গিয়ে স্যারের সাথে কথা বলেন।
.
ডক্টর রিপাকে দেখে কয়েকটা টেষ্ট দিয়ে বলেছে ভিতরের রুমে গিয়ে ওয়েট করেন আমি আসতেছি।
.
রিপা চেয়ারের উপরে বসে আছে। ডক্টর এসে রিপাকে সিটে শুয়ে দিলো। তারপর টেস্ট করে রিপোর্ট হাতে নিয়ে বসে আছে ডক্টর।
ইমরান এসে ডক্টরের সামনের চেয়ারে বসলো। খানিকবাদে বললো,,,কী রেজাল্ট ডক্টর???
-‘আপনি যেটা ধারণা করেছিলেন তেমন কোন বিষয় না। পেশেন্ট নরমালই আছে প্রেগন্যান্ট না।
-“আমি যে বাসায় বসে টেষ্ট করেছিলাম তাতে তো পজেটিভ রেজাল্ট আসছিলো।
-“আমার মনে হয় আপনার পদ্ধতি সঠিক ছিলোনা। জাই হোক আপনার শরীরের কন্ডিশন বেশি ভালোনা তাই নিজের খেয়াল রাখবেন।
.
ডক্টরের কাছ থেকে বেরিয়ে হাসতে লাগলো ইমরান। ওয়াও আমি আজকে ভীষণ খুশি। আমি এটাই চেয়েছিলাম। মাত্র বিয়ে করলাম আনন্দ ফূর্তি করার আগেই যদি এমনটা হতো তাহলে আমি তো মরেই যেতাম।
.
ইমরানের কথাশুনে রিপার পুরো শরীরটা রাগে গজগজ করছে। মনে চাচ্ছে ওর দাঁত গুলো খুলে ফুটবল ফেলতে। রিপা দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁটটা চেপে ধরে রাখে। তবুও রিপা কথাগুলো শুনে হজম করে নিলো।
.
রাতে বাসায় ফিরে ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসলো রিপা। ইমরান বিছানার উপরে পায়ের উপরে পা তুৃলে শুয়ে শুয়ে গান শুনছে।
.
ইমরান খাবেনা??
-“হুম।।তুমি টেবিলে খাবার বারো আমি আসছি।
.
রিপা গিয়ে টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে। খাবার প্লেটে বাড়তেই ইমরান এসে চেয়ার টেনে বসলো।
প্লেটটা বাড়িয়ে দিলো রিপা। প্লেট নিয়ে খেতে শুরু করলো সে। খাওয়ার শেষ করে নিজের রুমে ঢুকে লাইফ অফ করে দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।
.
খাওয়া শেষ করে রিপা ও রুমে ঢুকে ইমরানের পাশে শুয়ে পড়লো। রিপা উল্টো পাশ করে শুয়ে আছে। শরীরটা ভালো লাগছেনা। আজই তার পিরিয়ড শেষ হলো।
একটুপরে ইমরান রিপার পিঠে হাত দিলো। মুখটা ইমরানের দিকে ঘুরিয়ে বললো,,,,আজ না ইমরান।।আমার শরীর ভালো লাগছেনা।
-“আমি এতদিন পর এলাম আর তুমি এখন আমাকে সরিয়ে দিচ্ছো??
-‘ইমরান বললাম তো আমার শরীরটা বেশী ভালোনা।।আজকেই পিরিয়ড ভালো হলো।
-‘তাতে কী হয়েছে??? এটা তো আর নতুন কিছুনা। প্রতি মাসেই হচ্ছে। এটা হলে তো শরীরের ফিলিংস আরো বেশী হওয়ার কথা। কিন্তু তোমার তো দেখছি উল্টো কম। তার মানে কী তোমার ফিলিংস কম??
-‘কী যে বলোনা তুমি?? আজকে আমার মন নেই বলে আমার ফিলিংস কম?? এটা কেমন কথা হলো ইমরান?? তোমাদের পুরুষরা শুধু মেয়েদের শরীরের প্রতি আকৃষ্ট কেন??? শরীর পেলেই খুশি আর না পেলেই সেক্স কম???
-“ইমরান কোন কথা না বলেই অন্য পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো।
সকালে রিপাকে কিছু না বলেই অফিসে চলে গেলো।
রাত ১০ টা……
রিপা চা বানাচ্ছে। তখনই দরজায় বেল পড়লো।
দরজাটা খোলার জন্য সামনের রুমে ঢুকলো সে। তারপর দরজার লুকিং গ্লাস দিয়ে ইমরানকে দেখে দরজাটা খুলে দিলো।
.
ইমরান বাসায় ঢুকেই নিজের রুমে চলে গেলে। রিপা ও রান্না ঘরে ঢুকে চা বানিয়ে ইমরানের কাছে গেলো।
মগটা বাড়াতেই ইমরান রিপার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।
রিপা বুঝতে পারলো ইমরান কী বলতে চাচ্ছে।
তবুও কোন কথা বলছেনা সে।
ডিনার শেষ করে রিপা শুয়ে পড়লো। ইমরান এসেই রিপাকে জড়িয়ে ধরে পিঠের উপরে চুলগুলো সরিয়ে চুমো দিলো।
-“ইমরান আজকে ও থাক না। ভালো লাগছেনা।
ইমরান কোন কথা শুনছেনা। রিপাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁট দিয়ে রিপার ঠোঁট চেপে ধরলো।
রিপা ইমরানকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য সমানে চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা। দিশাবিশা না পেয়ে ইমরানের হাতে কামড় বসিয়ে দিলো।
“-আউচচচচচচচচ করে চিৎকার করে উঠলো ইমরান। হাতটা জাগাতেই দেখলো কয়েকটা দাঁতের দাগ বসে পড়েছে হাতের উপরে।
ইমরান রিপাকে শক্ত করে চেপে ধরে বললো,,তোর কী সমস্যা। রাক্ষস হইছিস নাকি??? আমার মাংস খাবি?? তোকে ধরতে দিস না কেন?? এতদিন পরে আসলাম তোর কাছেই তো আসতে দিসনা। নতুন মক্কেল যোগার করে নিছিস নাকি?? আমি তো তোকে ভালোবাসি তুই কেন আমাকে ইগনোর করছিস??
-“ছিঃ ইমরান। তোমার মুখের ভাষা এতটা খারাপ?? ভাবতে ও অবাক লাগছে।
-“আমি এত ভালো না। কখন ও বলেছি আমি ভালো। আমি শুধু তোকে চাই।
-“আমি বুঝতে পারছি তুমি শরীর ছাড়া কিছু বোঝনা। এত যদি দরকার হয় তাহলে পতিতালয়ে গেলেই তো পারো।
রিপার গালে ঠাসসসসসসস,,,ঠাসসসসস,,,,করে দুই গালে দুটো থাপ্পর মেরে চুলের মুঠি ধরে ঝাকাতে লাগলো। তারপরে ধাক্কা মেরে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
.
রিপা কাঁদতে লাগলো। প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি যেনো শুকিয়ে গেলো।
হঠ্যাৎ ধপ করে দরজা খোলার শব্দে ভয়ে কেঁপে উঠে রিপা।
লম্পট ইমরান আবার ও রুমে এসেছে।
.
এসেই রিপার দিকে ঢ্যাবঢ্যাব করে তাকিয়ে আছে।
ইমরান খাটের দিকে আসতেই রিপা ভয় পেয়ে যায়। পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে ইমরান রিপার হাতটা খপপপ করে ধরে ফেলে।
রিপা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে। ইমরানের মুখের দিকে তাকাতে ও ঘৃণা করছে তার।
তারপরে ইমরান রাগান্বিত হয়ে রিপার দিকে তাকায়,,,,,
তারপরে একটানে রিপার শাড়ীটা খুলে ফেলে।
তারপরে ধাক্কা দিয়ে রিপা খাটের উপরে ফেলে দিয়ে,,,,,,,নিজের কামড় খুলতে খুলতে রিপার দিকে এগিয়ে যায়।
রিপা হাজারো কাকুতি মিনতি করলো। ইমরান প্লিজ আমার শরীরটা ভালোনা। তুমি আমার স্বামী হয়ে আমাকে জোর করছো???
রিপার কোন অনুরোধ সে রাখেনি। জোর করে পশুর মতো রিপাকে ভোগ করেছে।
রিপা জোরে জোরে কাঁদছে। কিন্তু ইমরানের কানে রিপার আর্তনাদ পৌঁছাচ্ছেনা। ইমরান তার চাহিদা মিটিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
ইমরানের চাহিদা মিটিয়ে শুয়ে পড়ার পরে নিজের গায়ে শাড়ীটা পেঁচিয়ে নিলো।
রিপার শরীরে এক ফোঁটা ও শক্তি নেই উঠে দাঁড়ানোর।
নিজের বিয়ে করা বউয়ের সাথে পশুর মতো ব্যবহার করলো ইমরান।।
রিপার জীবনটা নরকে পরিণত হয়ে গেছে।
ইমরান সব সময়ই জোর করে রিপাকে ভোগ করে।
রিপার একটু ও সুখে নেই। কী করে সুখে থাকবে?? একটা পশুর সাথে একত্রে থাকলে কী সুখের দেখা পাওয়া যায়??? যে শুধু নিজের সুখটা খুঁজে আর শুধু শরীর।
সারারাত ফ্লোরে বসে ছিলো রিপা। বারেবারে ফ্যানের সিলিংয়ের দিকে তাকাচ্ছে। মনে চাচ্ছে ওড়নাটা ফ্যানের সাথে বেঁধে গলায় দিয়ে ঝুলে পড়তে। তাহলে অন্তত কষ্ট কম হতো।
বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখে মানুষ রুপী জানোয়ারটা ক্লান্ত হয়ে মনের শান্তিতে ঘুমুচ্ছে।
রিপা তখনই প্রতিজ্ঞা করে যদি কখন ও সময় সুযোগ হয় তাহলে এর শোধ সে তুলবে।
চলবে………………..