আজও ভালোবাসি তোমায়❤ পর্ব -০৯

#আজও_ভালোবাসি_তোমায়❤
#Writer_মাহিয়া_মিতু
#Part_9
🍁
🍁
আর এই একবছরে ফারহান বা মিতুর ওদের পরিবারের সঙ্গে কোনদিন দেখা ও হয় নি। তবে মিতুর সাথে ওর মার প্রায় কথা হয় কিন্তু বাবার সাথে হয় না।
এই এক বছরে মিতুর বাবা অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে, প্রয়োজন ছাড়া কারো সাথে কোন কথা বলেন না, সব সময় চুপচাপ থাকেন। আর বাড়িতে যেটুকু সময় থাকেন মিতুর ছবির দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন।
মিতুর মা অনেক দিন উনাকে মিতুর সাথে কথা বলার জন্য বলেছেন, কিন্তু উনি বলেন না, উনার মনে হয় উনি যেভাবে আছেন নিজেকে শক্ত করে এভাবে থাকতে পারবেন, কিন্তু মিতুর সাথে কথা বললে উনি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারবেন না, কারণ উনার মেয়ে যে উনার প্রাণ।
কিন্তু উনি ও যে নিরুপায়, তার যে কিছু ই করার নেই এ ছাড়া তবে উনি মিতুর সাথে কথা না বললে ও ওর খোঁজ ঠিকই রাখেন, আর এটা ভেবে নিজেকে সান্তনা দেন যে, তার মেয়ে নিজের ভালোবাসা কে আপন করে পেয়ে তো সুখি আছে। এটাই বা কম কিসে, উনি ও যে এটাই চায় যে মিতু খুশি থাকুক।
মিতু ও ফারহানের সাথে সত্যি ই খুব ভালো আছে। ফারহান ওর কথা রেখেছে, ও মিতুকে আজ অবধি কোনো কষ্টের আচ ও পেতে দেয় নি, ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে ওর জীবন।
কিন্তু কথায় বলে না বেশি সুখ বেশি দিন থাকে না। ওদের ও ঠিক তাই হয়েছে।
ওদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী তে ফারহান খুব বড় না হলেও বেশ জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ও ওর সব বন্ধু সহ অফিসের স্টাফ দের ও ইনভাইট করে সাথে ও আরো একজন ইনভাইট করে যার সাথে ওদের কোম্পানির নতুন ডিল সাইন হয়েছে আর ফারহানের সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব ও তৈরি হয়েছে।
আর সেই বাক্তি হলো আর কে কোম্পানির মালিক রাজ খান। ফারহানেরই সমবয়সী, দেখতে ও সুন্দর, কিন্তু সভাব টা নোংরা টাইপ।
যাই হোক, সেইদিন অনুষ্ঠানে এসে মিতু কে দেখে ওর তো পাগল হয়ে যায় যায় অবস্থা। যদিও ফারহান কে ও এসব বুঝতে দেয় নি কিন্তু ও মনে মনে মিতু কে কিভাবে নিজের করা যায়, ওখান থেকে ফিরে আসার পর থেকে ও সেই ছক তৈরি করতে থাকে। ও সেদিন লুকিয়ে মিতুর কয়েকটা ছবি ও তুলে নেয়।
সেদিনের পর থেকে মিতু যেন ওর চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, সারাক্ষণ শুধু মিতুর কথায় ভাবে।
সেদিন ও ওর অফিসে নিজের কেবিনে বসে মিতুর ছবি বের করে দেখছিলো আর ওর কথা ভাবছিলো, ঠিক সেই সময় ওর কেবিনে একটা মেয়ে আসে আর সেই মেয়েটি আর কেউ নয়, সে হলো টিনা, ( হুম টিনার সাথে রাজের খুব ভালো সম্পর্ক, যেহেতু দুজনই একই মানসিকতার মানুষ, আর কোন এক ক্ষেত্র বিশেষে রাজের সাথে টিনার খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়, আর তারপর থেকেই ওরা খুব ইজিলি একে অপরের সাথে মেলামেশা করে।)
আর আজ টিনা রাজের অফিসে এসে ওর কেবিনে যেয় দেখে রাজ একধ্যানে ফোনের দিকে তাকিয়ে কি যেন দেখছে, টিনা যে ওর কেবিনে ঢুকেছে সেদিকে ওর কোনে খেয়াল ই নেই।
তাই টিনা ও রাজ কে না ডেকে কৌতুহল বসতো ও কি এতো দেখছে দেখার জন্য রাজের পিছনে যেয়ে ওর হাত থেকে ফোন টা কেড়ে নেয়, এবার রাজের হুস হয়৷ ও টিনার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে
——- আরে টিনা তুমি কখন এলে
——- এসেছি অনেক সময় কিন্তু তোমার তো অন্য দিকে কোনো খেয়ালই নেই ফোনের মধ্যে ঢুকে গেছো, তাই তোমার ফোন টা কেড়ে নিলাম। তা মশাই এবার আমি ও একটু দেখি যে তুমি ফোনে এতো কি দেখাতে বিভোর ছিলে দেখি।
বলে টিনা ফোনের স্কিনে তাকিয়ে মিতুর ছবি দেখে বড় শড়ো একটা শক খায়।
——- আরে মিতু!!! তুমি মিতুর ছবি দেখছিলে, এর ছবি তুমি কোথায় পেলে রাজ।
——- মানে, তুমি ও মিতুকে চেনো।
——-ওকে চিনবো না আবার, ওর জন্য ই আমি আমার ভালোবাসা কে হারিয়ে ছি😡
——- ওয়াট, তারমানে মিতুর স্বামী, মানে এই ফারহান ই তোমার সেই ফারহান।
——হ্যা😈( আসলে টিনা যে ফারহান কে ভালোবাসতো এটা রাজ জানে)
টিনার কথা শুনে রাজের মাথায় একটা বড়সড় প্ল্যান আসলো।
——- আরেবাজ! তাহলে তো ভালোই হলো টিনা, আমরা তো এবার দারুণ একটা কাজ করতে পারি যাতে তুমি তোমার ভালোবাসা পেতে পারো আর আমি ও আমার ভালোবাসা নিজের করে পাবো।
——– মানে।
——– মানে টা হলো তুমি যেমন ফারহান কে ভালোবাসো, তুমি চাও যে ও যেন তোমার হয়, তেমনি আমিও মিতুকে ভালোবাসি, ওকে নিজের করে পেতে চায়।সো তার জন্য আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে যাতে করে আমাদের দুজনেরই লাভ।
——- মানে, কি বলছো আমি বুঝতে পারছি না 🙄
——- পারবে পারবে,সব বুঝতে পারবে। তুমি শুধু আমি যা বলবো তাই করবে।
——- কি করতে চায়ছো তুমি বলোতো।
——– ফারহান মিতুকে অনেক ভালোবাসে তাই না, ওর মন থেকে মিতুর জন্য এই যে ভালোবাসা টা এটা ঘৃণায় পরিণত করতে হবে।ফারহানের চোখে মিতুকে খারাপ বানাতে হবে, ব্যাস এক বার আগুন টা লাগাতে পারলে না ওরা দুজন আলাদা হয়ে যাবে আর আমাদের উদ্দেশ্য ও সফল হবে। তার জন্য আমি যা বলবো তুমি শুধু তাই করবে।
—— তুমি শুধু কি করতে হবে তাই বলো, ফারহান কে পাওয়ার জন্য আমি সব করতে রাজি আছি।
——- ওকে তাহলে শোনো………..
——— ওকে বেবি, ডোন্ট ওয়ারি কাজ হয়ে যাবে।
এবার দেখি ওদের এই ভালোবাসা কতোদিন থাকে।
.
.
.
🌿
চলবে…….


(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here