#এক_চিলতে_রোদ- ২
#Writer_Nondini_Nila
(কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ)
৩৬.(১ম)
সকাল থেকে আমি শাড়ি পছন্দ করছি। আজ আমি। শাড়ি পরবো। কথায় কথায় ইহান বলেছিল আমাকে নাকি শাড়ি খুব ভালো লাগে ওর। তাই ইহানের পছন্দ মতো আজ শাড়ি পরতে চাই।
ইহান নিশ্চয়ই আজ আমাকে ফুল দিয়ে প্রপোজ করবে। সেই খুশিতে আমি বাকবাকুম করছি। আজ তো ভালোবাসা দিবস। সেই জন্য আমি এতো আয়োজন করছি। এখন ইহান আমাকে কল করেনি ঘুরতে যাওয়ার জন্য। রাতেই শেষ কথা হয়েছে। আম্মুকে আগেই ফ্রেন্ডের বাসায় যাব বলে রেখেছি। ইহান বললেই রেডি হয়ে বেরিয়ে পরবো। আজ আর আমি নিজে থেকে কল করবনা।
দিন গরিয়ে রাত হয়ে গেল ইহানের খবর নাই। বিকেলে আম্মু ও সুন্দর করে সাজুগুজু করে বসে ছিলো আব্বু আগেই এসে তাকে নিয়ে ঘুরতে গেছিলো আমাকে যেতে বলেছিল আমি যাই নি। তাদের কে একাকিত্ব সময় কাটাতে দিয়েছে। আগে যত বার গিয়েছে আমি যেতাম তখন এটা বুঝতাম না। এখন বুঝি। ইহান এইভাবে সারাটা দিন আমাকে ওয়েট করালো। আমি বিকেলে মন খারাপ করেই তুলিদের বাসায় এসে বসে আছি। আম্মু কে কল করে বলেছি আজ এখানে থাকবো। আম্মু রাগ করলেও শুনিনি। আমার খুব কষ্ট লাগছে ইহান এই ভাবেই এই দিনটা আমার সাথে কথা না বলে দেখা না করে থাকলো। উনি কি আদো আমাকে ভালোবাসে? না সব নাটক। এখন তো সব নাটক ই লাগছে। না হলে আজকে এমন বিহেভ করতে পারতো না। চোখ উপচে জল চলে আসছে। বাসায় থাকলে আম্মু দেখে নিত তাই এখানে থাকা তুলি অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছে।
‘ ও আমাকে একটু ভালোবাসে না রে!’
‘ একবার কল করে দেখ কোন বিপদ আপদ হয়েছে কিনা!’
‘ আমি পারবো না।’
‘ এমন ছেলেমানুষি করিস না। আগের বারের কাছ মনে নাই। ইহান ভাই ইনজুরি হয়েছিল। এবার ও হয়তো কোন বিপদ হয়েছে না ফলে কখনো কি ভাইয়া তোর সাথে এমন করেছে বল। তাই পরে আফসোস না করে এখনি ফোন দে।’
আমি নিশ্চুপ হয়ে গেলাম। সেদিনের কথা মনে পরে গেছে সত্যি কি তেমন কিছু হয়েছে। না হলে সত্যি তো ইহান কখনো এমন করে না। আমার ভয় হতে লাগলো। কি অবস্থা হয়েছিল ইহানের। আজ ও যদি তেমন না না।উনি সুস্থ থাকুক আমার আর কিছু চাইনা। অভিমানের তারনায় এসব আমি ভাবিনি। আমি তুলি জরিয়ে ধরলাম ও না থাকলে আজ ও রাগ করেই বসে থাকতাম এতো অবুঝ কেন আমি। ফোন হাতে নিয়ে ফোন করার জন্য নাম্বার ডায়াল করবো তখন হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলো ইহানের নাম্বার থেকেই কল আসছে।
আমি চমকে উঠলাম। ঢোক গিলে কল রিসিভ করলাম,
‘ হ্যালো।’
হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে ইহানের ব্যস্ত কন্ঠ পেলাম। আমি থমকে চুপ করে গেলাম,
‘ ঊষা কোথায় তুমি? তুমি কি বাসা একা আছো? একা ভয় করছে না আমি আসছি ওয়েট ভয় পেয়ু না।’
‘ আমি একা কেন থাকবো আম্মু আব্বু আছে তো। আর তাছাড়া আমি এখন বাসায় নাই। তুলিদের বাসায় আছি।’
‘ হোয়াট কখন গেছো?’
‘ বিকেলের দিকে।’
‘ওহ তাহলে থাকো আমি ওইখানেই আসছি। এড্রেস দাও।’
ঠিকানা জেনেই আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কেটে দিলো।
‘ এটা কি হলো?’
‘ আমি কি জানি। হয়তো এখন তোর আশা পূরণ করতে আসছে।’
‘ তাই বলে রাতে?’
‘ এটাই তো ভালো। এখনো সময় শেষ হয়নি সমস্যা কি। ‘
‘ কিন্তু আমার কেন জানি তা মনে হলো না।কেমন জানি তারাহুরা করছিল। আর বলছিল তুমি বাসায় একা ভয় পাচ্ছ? এসব কি বাসায় থাকলে আমি একা কেন থাকবো আম্মু আব্বু আছে না।’
‘আসছেই তো আসলেই জেনে নিস। বাবা মা বাড়িতে নাই তুমি এজন্য ভাইয়ার সাথে দেখা করতে পারবি না হলে কি হতো। দেখা করতি কি করে।’
‘ জানি না আমি কিছু আমার মাথা ফাঁকা লাগছে।’
‘ চল তো শাড়িটা পরিয়ে দেয়।’
‘ এখন আবার শাড়ি পরার কি দরকার? আর আমি শা রেগে ছিলাম।’
‘ রাগ সব ভুলে যা তো। এতো রাগ করলে এখনো সুন্দর মুহূর্ত অনুভব করতে পারবি না। তাই এই মুহূর্তে ভুলে যা পরে ঝগড়া করিস এখন রেডি হয়ে ভাইয়া সারপ্রাইজ দে তো।’
আমার কি হলো কে জানে আমি তুলির কথায় মেনে নিলাম। এক রঙা লাল শাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। সেটাই কুচি করে পরিয়ে দিল তুলি। হাতে লাল রেশমি চুড়ি পরলাম, কপালে টিপ, কানে জোমকা, চুল খোলা।রাতেই শাড়ি পরে বসে রইলাম। আমার রেডি হওয়ার একটু পরই ইহান এসে হাজির হলো। আমি খুব লজ্জা পাচ্ছি ইহানের সামনে যেতে। লজ্জা পাওয়া স্বাভাবিক কারণ রিলেশন এ যাওয়ার পর এতো সেজেগুজে ফাস্ট যাচ্ছি তার সামনে। তুলি টেনে টুনে নিয়ে এলো আমাকে ইহানের সামনে ইহান সোফায় বসে ছিল। আমি আসতেই যেন ঝটকা খেলো। চমকে দাঁড়িয়ে পরলাম। সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে ফেললো
আমার লজ্জা নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।
‘ চলো।’
বলেই দরজার দিকে হাঁটা দিল। তুলি গলা উঁচিয়ে বলল, ‘ ভাইয়া আমি কি জেগে থাকবো? আপনারা কখন ফিরবেন? নাকি চাবি নিয়ে যাবেন।’
ইহান পেছনে ফিরে বলল, ‘ কোনটাই দরকার নাই। তুমি ঘুমিয়ে পরো নিশ্চিতে ও আর আসবে না ওকে আমি বাসায় নিয়ে যাব।’
‘ কিন্তু ও তো এখানে থাকবে বলেছিল। বাসায় কেন নিয়ে যাবেন?’ অবাক গলাতেই বলল তুলি।
‘ সেটা আমি বুঝে নিব। তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।’
ইহানের গম্ভীর গলার আওয়াজ শুনে আমিও তুলি আর কিছু বলতে পারলাম না। আমি নিঃশব্দে ইহানের পেছনে চলে এলাম সাথে ব্যাগটাও নিয়ে এলাম আর যেহেতু ফিরবো না। ইহান ব্যাগ নিয়ে আগে আগে যাচ্ছে আমি পেছনে পেছনে। বাইরে এসে আমাদের মাইক্রো দেখে থমকালাম এটা তো আব্বু আম্মু বেরাতে যাওয়ার সময় নিয়ে গেছিলো এটা উনার কাছে এল কি করে?
আমি প্রশ্নতোক চোখে ইহানের দিকে তাকালাম। ইহান বলল,
‘ তোমার বাবার গাড়ি আমি আনতে চাইনি জোর করে দিলো। বাইকের তেল শেষ সব সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করে তাই বাইক আনতে পারিনি।’
‘ আপনি বাসায় গেছিলেন?’
‘ নাহ।’
‘ তাহলে আব্বুকে কোথায় পেলেন?’
‘ হসপিটালে।’
‘ মানে? আব্বু হসপিটালে কি করছে? কি হয়েছে আব্বুর।’
‘ কিছু হয়নি ব্যস্ত হয় না।’
‘ কিছু না হলে হসপিটালে কেন গিয়েছে?’
‘ কারো কিছু হয়নি সবাই সুস্থ আছে। বিলিভ না হলে গিয়ে দেখো।’
আমি শান্ত হলাম কিন্তু ভেতরে ভেতরে দুশ্চিন্তায় ভোগছি। ইহান আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ এতো সেজেগুজে এসেছো কি আমাকে পাগল করতে? আমি তো কন্ট্রোল লেস হয়ে যাচ্ছি। কিছু করে টরে বসলে তখন কিন্তু দোষ দিতে পারবে না।’
বলেই একটা বেশি ফুলের মালা গাড়ি থেকে বের করে আমার মাথায় পরিয়ে দিল। তারপর আমরা গাড়িতে উঠে বসলাম। ইহান ড্রাইভ করছে আর একটু পর পর আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমি চিন্তিত মুখে বসে আছি।কার কি হয়েছে যে হসপিটালে গেল আব্বু আম্মু ঠিক আছে তো। এদিকে ইহান স্বাভাবিক ভাবে কথা বলে আমার চিন্তা দূর করছে। আমি তাই চুপ করেই আছি। গাড়ি এসে থামলো দাদু বাসায়। ইহান তাদের বাসায় আমাকে কেন নিয়ে এলো আমার বোধগম্য হচ্ছে না। হতবুদ্ধি হয়ে তাকিয়ে আছে নেমে।
‘ এখানে আসলেন কেন? সবাই কি ভাববে রাতে আমি সেজে গুজে আপনার সাথে আপনাদের বাসায় আসছি ছিহ। চাচি খুব রাগ করবে। আমাকে আমাদের বাসায় দিয়ে আসুন।’
‘ ভেতরে চলো।’
‘ পাগল হয়ে গেলেন নাকি।’
‘ তোমার প্রেমে আমি পাগল। ‘
বলেই আমার হাত ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে এলো। আমি কাচুমাচু মুখে ভেতরে এলাম।
ভেতরে আমার জন্য এমন চমক অপেক্ষা করছিলো যা আমি কল্পনাও করিনি। আমার জীবন টা এক নিমিষেই যেন পাল্টে গেল#এক_চিলতে_রোদ- ২
#Writer_Nondini_Nila
(কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ)
৩৬.(২য়)
আব্বু আম্মুকে সোফায় বসে থাকতে দেখে আমি হতবিহ্বল হয়ে গেলাম। আব্বুর হাত ধরে দাদু কেঁদেই চলেছে কি যেন বলে। তারপর হঠাৎ আব্বুর হাত মাথায় নিয়ে গেল। আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি। আম্মু আমাকে দেখে কাছে যেতে বলল। আমি ইহানকে ক্রস করে চলে গেলাম।
সব কিছু আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। আমি অবুঝের মতো তাকিয়ে আছি। চাচি কে দেখলাম বিরক্তিকর মুখ করে তাকিয়ে আছে। আমি ঢোক গিলে আম্মুর কাছে এগিয়ে গেলাম। তা দেখে চাচি চেঁচিয়ে উঠে বলল।আমি এখানে কেন? আমি চমকে চলে গেলাম। ইহান চাচির কাছে গিয়ে কি যেন বলল তা শুনে চাচি অগ্নি দৃষ্টি মেলে দেখছে আমাকে। আমি ঢোক গিলছি অনবরত। আম্মুর পাশে বসতেই দাদির কথা স্পষ্ট শুনতে পেলাম।
‘ তুই আমারে রাইখা আর যাইতে পারবি না। এই বাসায় তোর ও অধিকার আছে। আমি তোর বউরে মাইনা নিমু তাও তুই আমারে একলা কইরা চইলা যাইস না। আমি এই শেষ বয়সে আইসা আর কানবার চাইনা তোর লাইগা। তোর লাইগা আমার পরাণ কান্দে মায়েরে এমন কইরা কান্দাস কেমনে তোরা। এই মার কথা মনে হলে না তোর? এইডা তোর মাইয়া তাই না। নতুন মা পাইয়া আমারে ভুইলা গেছত।’
বলেই দাদু আমার হাত টেনে জাপ্টে ধরলো।
‘ বুবুরে তোরে প্রথম দেখাই ই আমার আপন লাগছিল। তুই তো আমার জায়েদের মাইয়া আমার রক্ত। তাই তো এতো আপন আসান লাগছিল। আমারে ছাইড়া তোরা যাইস না।’
আব্বু উঠে গেছেন।
‘ আম্মা ছাড়েন আমাদের যেতে হবে এবার।’
দাদু আমাকে ছেড়ে বলল,
‘ তুই আমার কথা শুনবি না। তাও চইলা যাবি!’
‘ আমারে ক্ষমা কইরেন আমমা।এটা সম্ভব না। আমি থাকতে পারবো না। ভাইয়া দেখলে খুব রাগ করবো আমি চলে যাচ্ছি ভালো থাকবেন। আপনি চাইলে আমার কাছে গিয়ে থাকতে পারেন।’
দাদু তখন চিৎকার করে বলে উঠলো, ‘ জায়েদ তুমি জামিন রে বুঝামো। তুই থাক ও রাগ করবো না। সব আমি দেখমু।’
‘ আমি থাকতে পারবো না।’
‘ তুই যদি আমার কথা না শুনে এই বাড়ির বাইরে পা রাখিস তাহলে আমার মরা মুখ দেখবি জায়েদ।’
আব্বু থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল। এমন কথা দাদু বলবেন যেন বিশ্বাস করতে পারছ না আব্বু।
‘আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন অন্তত এই বাড়িতে থাক এইটা আমার বাড়ি! আমার সন্তান থাকবে এইটা তোর ভাইয়ের বাড়ি না যে ও তাকে তাড়িয়ে দেবে! জামিনের এই বাড়িতে যত টুকু অধিকার আছে তোর আছে। আমি মরে যাওয়ার পর যদি তোর এইসব কিছু দরকার না পারে তুই চলে যাস কিন্তু আমি যতদিন বেঁচে আছি তুই আমার কাছেই থাকবি। আমি আমার সব সন্তান বৌমা নাতি নাতনি নতুন নিয়ে একসাথে থাকতে চাই। শেষ সময়ে এই আশা টুকু তুই আমার পুরন করবি না খোকা।’
আব্বু যেন দাদুর এই কথাটুকুতেই কাত হয়ে গেল। ইমোশনাল হয়ে পড়লো দাদুর কান্না দেখে।
আমি আর আম্মু নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছি। ইহান এগিয়ে এসেও আব্বুকে অনুরোধ করতে লাগলো। আব্বু অবশেষে হার মানলো। আজকে থাকতে রাজি হলো। কালকে কি হবে কে জানে। এদিকে আমি চাচা জানকে চারপাশে খুঁজছি উনি কোথায়?
আমাকে ইমা আপুর রুমে থাকতে দিবে তাই কাজের মহিলা আমাকে সেখানেই নিয়ে গেল। ইহান আমার সাথে এল। অদ্ভুত ভাবে আজ চাচি কথা বলেনি আমার সাথে। তিনি গম্ভীর মুখে চলে গেছে। ইমা আপু নাই দেখে কেমন জানি খালি খালি লাগছে বাসাটা। আব্বুর রুমটা দেখলাম। যেটা তালা বদ্ধ অবস্থায় পরে আছে। ওই রুম পরিস্কার না করে কেউ থাকতে পারবে না।যেটা এই রাতে করা সম্ভব না। তাই ইহান নিজের রুম ছেড়ে দিলো আব্বু আম্মুর জন্য। আমি তখন জানতে পারলাম চাচাজান এর খবর। তিনি সকালে স্টক করেছিল। তাই নিয়ে দৌড়ের উপর ছিল ইহান। হঠাৎ সটক কেন করছেন জানতে চাইলে আম্মু আমাকে বলল!
বিজনেস এ নাকি দ্বিতীয় বার ও লস খেয়েছ। আর তার জন্য পাওনাদাররা টাকার জন্য অপমানজনক কথা বলেছে।এমনিতেই কোম্পানি তে এত বড় লোকসান হওয়ায় তার মন মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে ছিল। তার উপর পাওনাদারদের এমন অপমানজনক কথা তিনি সহ্য করতে পারেননি। সব মিলিয়ে তিনি সকালে স্টক করেন। তারপর থেকেই পরিবারের সবাই তাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ইহান বাবার এখন অবস্থা দেখে হসপিটালে দৌড়ের উপর থাকেন।
এখন অবশ্য সুস্থ আছেন তাকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে বলেছেন। আব্বু আম্মু নাকি বেড়াতে যাচ্ছিলেন তখনই ইহানকে হসপিটালের বাইয়ের দাঁড়িয়ে চিন্তিত মুখে থাকতে দেখে গাড়ি থামিয়ে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই জানতে পারে সবকিছু আর তারা দুজন বেড়াতে যায় না গিয়ে হসপিটালেই আছে এখানেই সবার সাথে তাদের দেখা হয়। বিয়ে বাড়িতে শুধু চাচাজান চাচাজান সাথে দেখা হয়েছিল। আজকে দাদু ও হসপিটালে আসেন বড় ছেলের এমন অবস্থা দেখে তিনি বাসায় বসে থাকতে পারে না এখন একটু সুস্থ তাই দাদু হসপিটালে এসে পড়েছেন। সেখানে আব্বু-আম্মুর সাথে দেখা হয় আর দাদু তার পর থেকে সব বলে ছেলেকে আটকানোর চেষ্টা করতে থাকে। জোর করে বাসায় পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। তারপর ব্ল্যাকমেইল করে এখন বাবাকে এ বাসায় থাকতে রাজি করে ফেলেছে। আব্বু অনিচ্ছাসত্ত্বেও এখন দাদুর কথায় এখানে থাকতে হবে।
এত কিছুর মাঝে আমি যে শাড়ি পড়ে আছি সেটাই ভুলে গেছিলাম। মনে পড়তেই চমকে উঠলাম সবাই না জানি কী ভাবছেন। কিন্তু কেউ তেমন আমার শাড়ি নিয়ে কথা তুলল না আম্মুও না তিনি নিজের কথা বলে চলে গেল। আমি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে দাঁড়িয়ে আছি। এত সব ঝামেলা মধ্যে কেউ হয়তো এটাকে লক্ষ্যই করেননি। এই লক্ষ্য না করাটা আমাকে স্বস্তি দিল।
দরজা আটকে দিলাম শাড়ি পাল্টে অন্য ড্রেস পরার জন্য। আমার অবশ্য ভালোই হলো তুলি দের বাসায় যে ড্রেসটা নিয়ে গেছিলাম ওইটা এখন পড়তে পারব। শাড়ির আঁচলে পিন খুলতে যাব তখনই মোবাইলে রিংটোন বেজে উঠল,
‘ ভুল করেও শাড়ি খুলবে না। যেভাবে আছে ওইভাবেই বসে থাকো।’
ইহানের নাম্বার থেকে মেসেজ দেখে আমি থতমত খেয়ে গেলাম। উনি কি আমাকে দেখতে পাচ্ছে নাকি উনি জানলে কিভাবে আমি শাড়ি পাল্টাচ্ছি।
আমি ঘুরতে ঘুরতেই ইমা আপুর বেলকুনিতে চলে এলাম। তখনই ইহান কে দেখতে পেলাম পাশের বেলকনি থেকে এ দিকে তাকিয়ে আছে ফোন হাতে। উনার কথা শুনে উনাকে দেখলাম।
‘এই যে আমি এখানে!’
‘আপনি ওইখান থেকে একটা মেয়ের পোশাক চেঞ্জ করা দিয়েছিলেন লজ্জা করে না!’রেগে কটমট করে বললাম।
‘আমি যথেষ্ট চরিত্রবান একজন ছেলে ওকে! আমার নজরে তো খারাপ না আমি তোমাকে না দেখেই এমন মেসেজ করেছি। কারণ তুমি যাতে চেন্জ না করো তুমি এখন চেঞ্জ করছিলে কিনা সেটা আমি জানতাম না।’
‘আপনার কথা আমি বিশ্বাস করিনা! ওকে বিশ্বাস না করলে আমার রুমে ব্যালকনিতে এসে দেখো রুমে কিছু দেখা যায় কিনা! জানালা খোলা থাকলে অবশ্য সবই দেখা যাবে কিন্তু জানালায় পর্দা টানা আছে সেটা ভালো করে দেখ।’
‘ আচ্ছা তাহলে মানলাম। শাড়ি চেঞ্জ করতে মানা কেন করলে আমি কি সারা রাত এমন সার্কাস সেজে বসে থাকব নাকি?’
‘সার্কাসে না তো আমার বউ সেজে বসে থাকো!’
‘আপনি আমাকে এখানে নিয়ে আসবেন আগে বললেই হতো আমি আর কষ্ট করে প্রেমিকের নজর কাড়তে শাড়ি পরে আসতে হতো না। অযথা এমন সাজলাম।’
‘কেন কি হয়েছে?’
‘কিছু হয়নি এইখানে এতসব ঘটেছে তার মধ্যে। আমি কি না শাড়ি চুড়ি পরে আপনাকে মুগ্ধ করতে চেষ্টা করলাম তার তো কিছুই হলো না আপনিতো আর আমার দিকে নজর দিলে না। অবশ্য দেওয়ার মত অবস্থাতেও নাই। উল্টো সবার কাছে কেস খেয়ে যেতাম। এইখানের অবস্থা খারাপ না থাকলে তো সবাই আমাকে এই শাড়ি পরা নিয়ে হাজারটা প্রশ্ন করত। তখন আমি আম্মুকে কি বলে জবাব দিতাম।’
‘ যা হয়নি তা না ভাবাই ভালো। আর তোমাকে এই লুকে দেখে আমি আর চেঞ্জ করার কথা বলতে পারিনি।
‘কেন?’
‘ দেখার লোভ সামলাতে পারিনি। একটু মন ভরে দেখে নেয় তারপর চেঞ্জ করো।’
‘ তো দেখেন এখন। ‘
‘ এখন না একটু পর ছাদে এসো। বাই
ইহান চলে গেল। আমি বোকার মতো তাকিয়ে রইলাম।
আমি বেলকনিতে বসে রইলাম। আম্মু একবার আমাকে দেখে গেছে। তারপর থেকেই ইহানের রুমে থেকে আব্বু আম্মুর গলার আওয়াজ পাওয়া গেল আমি বুঝে গেলাম ঘুমানোর জন্য সবাই চলে এসেছে। খাওয়ার জন্য আমাকে ডেকেছিল আমি খেয়ে এসেছি বলেছি।
তাই আর কি আমাকে জোর করেনি। আম্মু আমাকে পোশাক চেঞ্জ করে ঘুমিয়ে পড়তে বলে চলে গেছেন।
বাসা নিশ্চুপ নিরবে হয়ে যেতেই ইহানের মেসেজ এলো ছাদে যাওয়ার জন্য। আমি গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম। ছাদের আমার জন্য আবার কি চমক অপেক্ষা করছে কে জানে!!’
#এক_চিলতে_রোদ- ২
#Writer_Nondini_Nila
(কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ)
৩৬.(৩য়)
আমরা সব প্রেমিকের মতো হাতের হেরে ফুল দিয়ে ভালোবাসে না হলেও ইহান আমাকে একটা ফুলের দোলনা গিফট করলো যেন। ছাদে এক
টা ফুলের দোলনা ছিল। যেটাই ইহান আমাকে দুল খাইয়েছে। অনেকটা সময় আমরা গল্প করেছি। পরদিন আমি চাচাজানকে দেখতে তার রুমে গেলাম
তিনি আমার সাথে ভালো করে কথা বলছিলেন তখনি চাচী এসে সব খুলে বললেন যে আমি তার ভাইয়ের মেয়ে তারপর থেকে তার মুখটা গম্ভীর দেখলাম। কিন্তু অদ্ভুত তিনি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেননি সুন্দর করে কথা বলেছেন কিন্তু আগের হাসিখুশি মুখটা গম্ভীরতায় ছেয়ে গিয়েছিল।
‘ আম্মা প্লিজ এখন আর আপনি ঝামেলা করবেন না আমি এখানে এসে আপনাকে দেখে যাব। দরকার হলে একদিন দুই দিন থাকবো। কিন্তু এইখানে আমার পার্মানেন্ট থাকা পসিবল না। ঊষা নতুন কলেজে ভর্তি হয়েছে ওইখানে যাতায়াত কষ্টকর সেজন্য আমি কলেজের কাছে বাসা নিয়েছি। সেখানে আমাদের থাকতে হবে। আমি দুইদিন পর আপনাকে আমাদের ওইখানে নিয়ে যাব। আরেকটা কথা ভাইয়া তো আমার সাথে কথা বলে না। কিন্তু আমি তার সমস্যাটা সমাধান করার চেষ্টা করব তিনি যেন আমাকে বাধা না দেন। তিনি আমাকে সহ্য করতে না পারলেও আমি তাকে এখনো ভালবাসি তার প্রতি আমার কোন রাগ নাই। তাকে একটু বলবেন তার এই ছোট ভাই কে যেন তিনি ক্ষমা করে আপন করে নেয়।’
আব্বু দাদুকে কথাগুলো বলে চাচির কাছে গেলেন। পাওনাদারদের নাম্বার নিলেন। কত টাকা সেইসব চাচী বললেন। আব্বু সাহায্য করবেন শোনার পর থেকেই চাচি যেন আব্বুর সাথে সখ্যতা গড়ে উঠল সাথে সাথে চাচি এগিয়ে এসে আমাকে আম্মুকে থাকার জন্য অনুরোধ করতে লাগল সুন্দর করে কথা বলছেন। কালকের ওই রাগী মুখটা যেন যে হারিয়ে গেল। মুখের হাসি যেন তার রূপ চেঞ্জ হয়ে গেল। আমি অবাক চোখে তাকালাম আছি। তবু আমার ভালো লাগছে চাচীর ব্যবহারে। আব্বু যেহেতু আবার আসবে আর তাকে ও নিয়ে যাবে তাই দাদু শান্ত হলো তিনি আমার কথা শুনে আর মানা করতে পারলেন না যেতে দিল।
আমরা বাসায় ফিরে এলাম। দুদিন পর যথারীতি দাদুকে নিয়ে আসা হলো ইহানই নিয়ে আসলো।
আব্বু যেতে চাইছিল কিন্তু আব্বুকে হঠাৎ করে বিজনেসের জন্য খুলনা যেতে হলো। তাই ইহান নিয়ে আসলো। এখন অব্দি ইহান আমাদের বাসায় এসে থাকেন না ।এইবার আসলেই ইহানকে যে করেই হোক আমাদের বাসায় রাখবো এমনটাই ভাবছি আমি কিন্তু কিভাবে!!
কলেজ থেকে আজ আমি উজ্জল মুখে বাড়ি ফিরলাম। কারণ আজকে ইহান আর দাদু আসবে। লিফটে উঠতে যাব তখনই দেখতে পেলাম লিফটের ভিতরে শুভ্র আর তার সাথে একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা দাঁড়িয়ে। মনে হচ্ছে এটা ওনার মা। আমি জড়োসড়ো হয়ে এক পাশে দাঁড়ালাম। আগে আমি আরেকদিন দেখেছিলাম মহিলাটা কে তাই ভদ্রতা স্বরুপ সালাম দিয়ে কেমন আছেন কি করলাম। উনি বললেন,
‘ এইতো ভালো। তোমার কি খবর?’
‘ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আন্টি।’
শুভ্র উনার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে কি যেন বললো আমি আড়চোখে তা দেখতে পেলাম। উনি কথাটা শোনার পর আমার কাছে এগিয়ে এসে আমার মুখে হাত দিয়ে চুমু খেলো হাতে। আমি থতমত খেয়ে গেলাম উনার কান্ডে।
‘ মাশাআল্লাহ।’
আমি ব্রু কুচকে তাকিয়ে আছি। শুভ্রের মা আর কিছু বলল না আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে রইলো চারতলায় আসতে আমি দ্রুতপায়ে বেরিয়ে পড়লাম। পেছনে একবার ফিরে দেখেছিলাম দুজনে আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। ওনার আমার চোখের আড়াল হতেই আমি একশ কুড়ি বকা দিলাম। এই শুভ্র নিজের মায়ের কানে কি কানপড়া দিল যে এমন ব্যবহার করলো। রুমে এসে গোসল করে খাবার খেয়ে নিলাম। তারপর ভাবতে লাগলাম ইহানকে আজ থাকতে হবে আমাদের বাসায়। কিন্তু কিভাবে!! অনেকক্ষণ ধরে পরিকল্পনা করতে লাগলাম। তারপর অপেক্ষা করতে লাগলাম ইহানদের। তারা এসে পৌঁছেছে তিনটায়।
আমি খুশিতে জরিয়ে ধরলাম দাদুকে। আব্বু কাল আসবে। দাদুকে তার জন্য ঠিক করে রাখা রুমে দেওয়া হলো।
আম্মু তার সাথেই আছে তার রুমে। আমি ইহান কাছে আছি।
ইহান হঠাৎ বলল, ‘ আমার কি মনে হয় জানো? চাচিমা আমাদের বিষয়ে কিছু জানে। আচ্ছা তুমি কি কিছু তাকে বলেছ।’
আমি লাফিয়ে উঠে বললাম, ‘ কি বলছেন? মাথা খারাপ নাকি! আমি কেন এসব বলতে যাব।’
ইহান আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘চাচিকে আমার সন্দেহ হচ্ছে। উনি বোধহয় আমাদের বিষয়ে কিছু জেনে গেছেন। চাচি মার বিহেব আর আমার সন্দেহ লাগছে। তুমি আর আমার আশেপাশে আসবে না এই বাসায় আসলে। না হলে কিন্তু আমি আর আসব না এখানে।’
বলেই দাদুর জন্য ঠিক করে রাখা রুমে চলে গেল। আমি সেখানেই থ মেরে দাঁড়িয়ে রইলাম।
দাদুকে বিশ্রাম নিতে বলে সবাই বেরিয়ে এসেছে। আম্মু ইহান হালকা কিছু খাবার দিল। ইহান খেতে না চাইলে জোর করে। ইহান খেয়েই চলে যেতে উদ্ধত হোন। তখন আম্মু ইহানকে থাকতে অনুরোধ করতে লাগে।ইহান পরে বলছে এসে থাকবে। আম্মু তখন বললো,
‘ সেই কবে থেকেই তো বলছো। আজ থাকো তোমার চাচু ও বাসায় নাই। কোন বিপদ আপদ হলে তুমি অন্তত থাকো। নাকি তোমার বাবা এখানে থাকলে সমস্যা করবে।’
ইহান যেন এবার লজ্জা পেল বেশ।
‘ চাচি আপনি ভুল ভাবছেন তেমন না। আর সেদিন ও না থাকলাম। আব্বু তেমন কিছু বলেনি। এইযে দাদু কে নিয়ে আসার জন্য জিজ্ঞেস করলাম তিনি বলেছেন, ‘ মা তার ও তাই সে তার মাকে নিজের কাছে নিতেই পারে।’
‘ ছেলে তো তার তাই বোধহয় ছেলে থাকতে পারবে না তাই না।’
‘ আচ্ছা আমি থাকবো।’
আম্মু চলে গেল। ইহান আবার সোফায় বসে পরল। আমি এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে ইহানের পাশে বসে পরলাম।
‘ আমার কাজটা আম্মুর করে দিল।আহ কি শান্তি!’ রিলাক্স মুডে বললাম আমি।
আমার কথা শুনে ইহান ভ্রু কুটি করে তাকালো। আর বললো,
‘ মানে? কিসের কাজ!’
‘ আমি সকাল থেকে আপনাকে থাকতে রাজি কারাতে ছক কষছিলাম। কিন্তু এখন আমার কিছু করতেই হলো না তার আগেই আম্মু সব করে দিল।’
‘ এতে এতো খুশি হয়ে লাভ নাই। আমার থেকে দশ হাত ফাঁকে থাকবে। এখানে আমরা কোন গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড না।’
‘ আপনি বললেই হলো নাকি।’
‘ হ্যা!’
‘ আমি আপনার কথা শুনবো না।’
‘ ওই যে চাচি আসছে যাও তুমি। এভাবে দেখলে কিন্তু আমি সত্যি আর আসবো না।’
‘ আপনি তো ভিশন খারাপ দেখছি। এইভাবে আমাকে তারাচ্ছেন!’
‘ হুম।’
‘ আপনি আমাকে একটু ও ভালোবাসেন না!’ গোমরা মুখে বললাম।
‘ এসব বলে লাভ নাই আমি গলছি না।’
আমি রাগ করে চলে গেলাম দাদুর রুমে। সেদিন আর আমি ইহানের সামনে এলাম না। আম্মুর সামনে ও না। বিকেদে লুকিয়ে ছাদে চলে এলাম। উদ্দেশ্যে ইহানের চোখের আড়ালে থাকা। আমাকে কথা শুনানো তাই না। এবার মজা বুঝ। আমি ছাদে এসে শুভ্র কে দেখে আবার তখন কার কথা মনে পরলো আমি তেরে তার দিকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
‘ আপনার আম্মু তখন ওমন করলো কেন? আপনি নিজের মাকে কি বলেছেন সত্যি করে বলেন।’
শুভ্র হেসে উঠে বলল, ‘ এতো রেগে আছো কেন?’
‘ আপনি বলেন কি বলেছেন আন্টিকে!’
‘ আম্মুকে বলেছিলাম। আম্মু এই যে সামনের এই মিষ্টি মেয়েটিকে তোমার বউমা করতে চাই তুমি কি রাজি!!’
আমি বিষ্ময় এ হতবাক হয়ে গেলাম উনার কথা শুনে। বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছি। আমার কেমন রিয়াক্ট করা উচিত ভুলে গেছি যেন। শুভ্র নিজে থেকে আবার বলল,
‘ আম্মু তখন কি বলেছে জানো!’
আমি বোকার মত জিগ্যেস করলাম, ‘ কি?’
‘ আম্মু বলেছে, বউমা হিসেবে আমি এই মেয়ে ছাড়া আর কাউকেই চাই না। একেই আমার বউমা করে দে শুভ্র।’
আমি এবার রাগে ফেটে পরলাম। এতোক্ষণের সব মাথায় পৌঁছাতেই রাগে আমার শরীর জ্বলে উঠলো। কটমট করে তাকিয়ে আছি। আর শুভ্র হাসছে। মন চাইছে শয়তান টার নাক ফাটিয়ে দিতে। আমি যদি সত্যি এবার এটাকে মেরে নাক ফাটিয়ে দিতাম যদি বক্সিং শিখা থাকতো।
আমি এই শুভ্র কে ঝারি মারতে যাব তখন দেখতে পেলাম ইহানের রাগী দৃষ্টি। দুজনকে একা একা পাশে ছাদে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইহান রাগে ফায়ার হয়ে গেছে।
অন্যদিন হলে আমি এখন ইহানের কাছে ছুটে যেতাম। কিন্তু ইহান আজকে আমার সাথে খারাপ বিহেভ করেছে। আম্মুর জন্য কিনা আমাকে তার আশেপাশে আসতে মানা করল সেই রাগে আমি ইচ্ছে করে শুভ্র এর সাথে হেসে কথা বলতে লাগ্লাম। আর ইহান তা দেখে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে গটগট করে চলে গেল। আমি ইহান চলে যেতেই দৌড়ে নিচে নেমে এলাম।
আমার সেই একটু মজার জন্য যে পরে আমার জন্য এমন ভোগান্তি ছিল সেটা আমি তখনও বুঝতে পারিনি। আমি আমার ভাব নিয়ে আমি এখানে থেকে দূরে দূরে ছিলাম ইরান অবর্শন একবার আমার সাথে কন্টাক্ট করার চেষ্টা করলো যখন দেখল আমি দরজা আটকে বসে আছি আর কোন উপায় নাই তখন নিজেও হাল ছেড়ে দিল আমি রাতে খাবার রুমে খেলাম রুমে এসে খেলাম।
ইহান আর আমার সাথে সেদিন যোগাযোগই করতে পারল না। পরদিন ইহান চলে গেল। আব্বু এলো দুপুরে পর।
দুইদিন পর
আমি কলেজে থেকে বাসায় ফিরবো তাই গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন হঠাৎ ইহানকে বাইক নিয়ে সামনে এসে দাঁড়াতে দেখে চমকে উঠলাম। কিন্তু সাথে খুশি ও হলাম। কারণ সেইদিন থেকে ইহান আমার কল রিসিভ করছিল না। এখন দেখে খুশি হলাম। ইহান গম্ভীর গলার বলল,
‘ বাইকে উঠো।’
আমি মাথা দুলিয়ে উঠে পরলাম। সেইদিন ইহান এক অদ্ভুত কাজ করল। আমি নতুন এক ইহান কে দেখলাম। এতো রাগ কারো থাকতে পারে জানা ছিল না। এর পর থেকে ভালোবাসার থেকে যেন ভয় দানা বাঁধতে থাকলো আমার মনে।
#চলবে.
#চলবে……।
#চলবে…….