এক রক্তি ভালোবাসা শেষ পর্ব

#এক_রক্তি_ভালোবাসা
#End_part
#writer_রুবাইতা_রিমি

-I love you my heatqueen sempori💙Well you marry me! (হাটু গেড়ে বসে বলল অদ্রিয়ান)
সিয়া মুখে হাত দিয়ে অবিশ্বাসি ভাবে অদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।হর্ঠাৎ সিয়ার চোখ যায় অদ্রিয়ানের পিছনে।হ্যাঁ পিছনে সিয়া আর অদ্রিয়ানের পরিবারের সবাই দাড়িয়ে আছে।সিয়ার চোখ যায় তার বাবাইয়ের দিকে তার বাবা তার দিকে কমল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।হর্ঠাৎ তিনি মাথা নাড়িয়ে মুচকি হেসে উঠেন সিয়ার তার উত্তর পেয়ে যায় চোখের জল মুছে অদ্রিয়ানের দিকে হাত বাড়িতে ফুলের তোড়া নেয়।অদ্রিয়ান দাড়িয়ে দু হাত প্রসারিত করে বলল।

-কাম(মুচকি হেসে)
মুহুর্তেই সিয়া অদ্রিয়ানকে জরিয়ে ধরে।চারদিকে সবাই হাত তালি দেওয়া শুরু করে।সিয়ার মনে এক অজানা ভালোবাসার ফুল ফুটলো।জীবেন এই প্রথম বার নিজের জন্মদিন এত চমকভাবে সেলিভ্রেট করলো সিয়া।ভাবতেই সিয়ার ভালো লাগছে।
_______________________
এক সপ্তাহ্ পর,,

-কিরে ভাইয়া বউয়ের সাথে এত ফোনের কিসের কথা আজ তো সোজা বাসর ঘরেও কথা বলতে পারতি তাহলে এত ফোনে প্রেমাআলাপ না করলেও চল।(মুচকি হেসে বলল নীলা)
অদ্রিয়ান নীলার মাথায় গাট্টি মেরে বলে উঠলো।

-এক্সপেরিয়ান্স নিচ্ছি কারন আমার সপ্ন ছিলো বিয়ের আগে বউয়ের সাথে জমিয়ে প্রেম করবো তারপর বিয়ে।তাই জমিয়ে প্রেমাআলাপ করে নিচ্ছি কারন বিয়ে তো একবারই হবে তাহলে ফায়দা উঠিয়ে নেই সুযোগ তো আর হাতছারা করা যায় না!(টেডি স্মাইল দিয়ে)
নীলা অবাক তার ভাইয়ার মনে এইরকমও কোন ইচ্ছা ছিলো আগে জানাছিলো না তার।নীলা অবাক হয়ে বলল।

-ভাইয়া তুমিই কি সেই গম্ভীর বাদরমুখো অদ্রিয়ান নাকি তার কপিরাইট হ্যাঁ।তোমার মনেও এইরকম কিছু ছিলো তা তো আগে জানা ছিলো না।তোমার কিসমত ভালো ভাবী বিয়েতে রাজি হয়েছে নয়তো আমার অভিশাপটা লাগতো তুমি সিঙেলই মরতা?(ভেংচি কেটে আড়চোখে)

অদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে নীলার দিকে তাকালো তারপর নীলার কান টেনে বলল।

-তবে রে কি বললি!দিবো এক টেনে চড় আর শুনে রাখ শকুনের দোয়ায় কখনো গরু মরে না(ভ্রু কুচকে)
নীলা কান থেকে হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলে উঠল।
-তবে মানলে তো তুমি গরু এক কম খাও নয়তো বাসর রাতেই তোমার আর সিয়া ভাবীর ডিবোর্স হয়ে যাব।(কান থেকে হাত ছাড়াতে ছাড়াতে)
অদ্রিয়ান নীলার কান ছাড়লো না বরং আরও চেপে ধরলো এদিকে নীলা ব্যাথায় বলে উঠলো।
– আহহ্ ভাবী ঠিক বলে তুমি একটা রাগীদৈত্য এখন ছাড়ো নয়তো ভাবীকে বলে দিবো যেন তোমাকে না বিয়ে করতে।

-ইসস তোর কথায় নাকি যা ভাগ আমি আমার শ্যামপরীর সাথে কথা বলি।(বলেই অদ্রিয়ান নীলাকে ছেড়ে দিলো আর ফোন নিয়ে বাহিরে চলে গেলো)

এবার বলি নীলা কে।নীলা হলো অদ্রিয়ানের চাচাতো বোন।নীলা অদ্রিয়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মনে মনে বলে উঠলো।

-ভাইয়া আজ যদি আমি সিয়ার জায়গায় থাকতাম তাহলে কতই না ভালো হতো।বলো আমি তো তোমাকে সেই ছোট কাল থেকে ভালোবেসে এসেছি কিন্তু তুমি আমায় বোন ছাড়া কিছুই ভাবো নি যখন সময় ছিলো তোমাকে আমি বলতে পারিনি আমার ভালোবাসার কথা এখন তুমি অন্যকারো হয়ে যাচ্ছো বলো এখন কি করে বলি।আমি নিজে নিজেই তোমাকে হাড়িয়ে ফেলেছি ভালো থেকো ভাইয়া।এই বিয়েটার পরই আমি লন্ডন চলে যাবো।(মনে মনে এটা বলতে না বলতেই নীলার চোখে থেকে এক ফোঁটা জলের বর্ষন হলো)
মনে মনে এটা বলেই নীলা চোখের জল মুছে চলে গেলো নিজের রুমে।
এদিকে,,
খান বাড়িতে বিয়ের তোড়জোর শুরু হয়ে গেছে হ্যাঁ সিয়া আর অদ্রিয়ানের বিয়ে ঠিক হয়েছে আজ এক সপ্তাহ্।সেদিনের পর অদ্রিয়ানের দাদু আর সিয়ার বাবা ওদের দুজনের বিয়ে ঠিক করেছেন।আর আজ ওদের দুজনের বিয়ে।

এদিকে।
-শ্যামপরী কি করছো!(ছাদে দাড়িয়ে বলল অদ্রিয়ান)
ওপাশ থেকে সিয়া মজা করে বলে উঠলো

-এইতো পাশের বাড়ির নতুন ছেলেটার সাথে টাংকি মারছি!
অদ্রিয়ান রেগে গেলো রাগী গলায় বলে উঠলো।
-হোয়াট কি বললে তোমাকে তো ইই সামনে পেলে এখনো একটা চড় মারতাম।(রাগী গলায়)
সিয়া ওপাশ থেকে মিটমিট করে হাসতে হাসতে বলে উঠলো।

-আরে না আমি তো আপনার সাথেই কথা বলছি আর যদি আজকেও আমায় চড় মারেন তাহলে এখনি বাবাইকে গিয়ে বলো আমি একটা রাগীদৈত্য অদ্রিয়ান খানকে বিয়ে করবো না তখন কি করবেন!(মিটমিট করে হাসতে হাসতে)
সিয়ার কথা শুনে অদ্রিয়ান কিছুক্ষন চুপ থাকলো পরক্ষনেই বলে উঠলো।

-তুলে নিয়ে যাবো তোমায়।
সিয়া ভাব নিয়ে বলে উঠলো।
-বাড়ির দরজা লাগিয়ে রাখবো।

অদ্রিয়ানে হো হো করে হেসে দি্য়ে বলে উঠলো।
-দরজা ভেংগে তোমায় তুলে নিয়ে যাবো।
সিয়া খানিকটা হেসে বলে উঠলো।

-যদি আল্লাহ্ আমায় নিয়ে যায় তাহলে কি করবেন!(খানিকটা হেসে বলল সিয়া)
অদ্রিয়ানের কোন উত্তর নেই ফোন কেটে দিলো সে।সিয়া বুঝে গেলে অদ্রিয়ান রেগে গিয়েছে।মুচকি হেসে আনমনে বলে উঠলো।

-আমাকে কেউ আপনার থেকে আলাদা করতে পারবর না রাগীদৈত্য বর।যদি আল্লাহ্ চায় আর যদি তিনি না চান তাহলে পৃথিবীর কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।(আনমনে বলেই হেসে দিলো সিয়া)
পাশেই সিয়ার বোন,বান্ধবিরা বসে ছিলো সিয়ার কথাবার্তা শুনে জোরে জোরে হেসে দিলো সিয়ার হুস ফিরলো।চারদিকে ওদের দিকে তাকিয়ে লজ্জায় ওখান থেকে চলে গেলো সে।
________________________________
বিয়ের সময়।
ভালোই ভালোই অদ্রিয়ান আর সিয়ার বিয়েটা হয়ে গেলো।বিদায়ের সময় সিয়া তার মা বাবা সবাইকে ধরে অনেক কান্নাকাটি করলো শত হোক তার বাড়িটার প্রতি তার আলাদাই একটা মায়া জন্মেছে ১৭ বছর ধরে।অবশেষে বিদায়টাও হয়ে গেলো।

ইন বাসর ঘর।
রাগ নিয়ে বসে আছে অদ্রিয়ান তার থেকে কিছু দূরেই বিরক্ত হয়ে বসে আছে সিয়া।
-আরে বললাম তো সরি আর সেইসময় আমি মজা করছিলাম কেউ চাইলেই আমাদের আলাদা করতে পারবে না যদি আল্লাহ চান তাহলেই।আচ্ছা সরি আর বলবোনা প্লিজ সরি।
মুহুর্তেই রাগ ভেংগে গেলো অদ্রিয়ানের মায়াবী চোখে সিয়ার দিকে তাকালো।তারপর উঠে গিয়ে সিয়াকে জরিয়ে ধরলো আর বলে উঠলো।

-আরেকবার যদি এসব বলো না তাহলে সত্যিই সত্যিই তোমায় সেদিনের মতো চড় মারবো।(সিয়াকে জরিয়ে)
সিয়া তারাতারি করে বলে উঠলো।

-এই না সেদিন যেভাবে চড় দিয়েছিলেন উফফ আমার গাল ব্যাথা হয়ে গিয়েছিলো আর না প্লিজ।(অনুনয়ের স্বরে)
মুহুর্তেই অদ্রিয়ান হেসে দিলো।আর আলতো করে সিয়ার কপালে একটা চুমু দিলো।আর বলে উঠলো।

-দাদু বলেছে তোমার পড়ালেখাটা কন্টিনিউ করতে আর এখন তোমার পড়ালেখার বয়স সংসার করার বয়স না।তুমি কাল থেকে স্কুলে যাবে ওকে আর আমিও চাই তুমি তোমার লাইফে নিজের কিছু কর নিজে কিছু হও আমি নিজেও চাই।আর আমি কাল থেকে স্টাডি সাথে অফিস জয়েন করবো।(মুচকি হেসে)
সিয়া এক চোখে অদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।লোকটা তার কতটা কেয়ারিং করে সব কিছুতেই কত খেয়াল রাখে সিয়া মুগ্ধ করে অদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়েই আছে।
হর্ঠাৎ অদ্রিয়ান সিয়ার চোখের সামনে চুটকি বাজিয়ে বলে উঠলো।

-ও হ্যালো মহারানী কোন দুনিয়ায় ডুবে আছেন।শুনুন মহরানী যদি অন্য দুনিয়ার যাওয়ার কথা ভাবেন তাহলে আপনি ভুল কারন আপনি যদি চলে যান তাহলে আমাদের হুকুম কে দিবেন।চলুন এখন ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ুন।(বলেই অদ্রিয়ান সিয়াকে ছেড়ে সোফাু ধুম করে বসে উঠলো)
কথা মতো সিয়া বিয়ের সাজ পাল্টে সিম্পল একটা থ্রিপিস পড়ে বের হয়ে আসলো।এসে রুমে অদ্রিয়ানকে না দেখে সিয়া ভাবলো হয়তো বেলকনিতে আছে।সিয়া বেলকনিতে গিয়ে দেখলো সত্যিই অদ্রিয়ান দাড়িয়ে আছে।
সিয়া ওখানে গিয়ে আস্তে করে বল উঠলো

-আপনি ফ্রেশ হবেন না যান গিয়ে ফ্রেশ হয়র নিন তারপর আমরা আল্লাহ্কে ধন্যবাদ জানাতে নামজ পড়বো।
কথামতো অদ্রিয়ান ফ্রেশ হয়ে আসলো আর সিয়ার সাথে নামজ পড়লো।
একটুপর।

-ভালোবাসি,ভালোবাসি আমার শ্যামপরীকে কখনোই তোমাকে নিজের থেকে আলাদা করতে পারবো না।(মনে মনে বলল সিয়াকে জরিয়ে ধরে শুয়ে)
অদ্রিয়ান কিছুক্ষন পর ঘুমিয়ে গেল সাথে সিয়াও অদ্রিয়ানকে জরিয়ে অতল সাগরের ঘুমে তলিয়ে গেলো।ওদের জীবনের প্রতিটা সময় খুশিতে কাটুক।

সমাপ্ত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here