#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ১৭
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি
হেঁটে ক্লাসে দিকে যাচ্ছে অথৈ।মাঝপথেই সে শান্তের গলা শুনে থেমে যায়।শান্ত তাকে ডেকেছে,অথৈ একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে পেছনে ফিরে তাকাই।অথৈ ফিরে তাকাতেই শান্ত একটা মিষ্টি হাসি দেয়।
” কেমন আছো?”
” (দেখা হলেই কি এই প্রশ্নটা করা জরুরি?– মনে মনে) জ্বি ভাইয়া ভালো।”
” (ধুর ভাইয়া বলে পুরো মুডটাই নষ্ট করে দিলো।) কাল ঠিক মতো বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলে তো?”
” জ্বি।আমার…..”
” আচ্ছা যাও তোমার ক্লাস শুরু হয়ে যাবে আবার।”
শান্ত জানে অথৈ এটা বলবে,তাই সেই আগে বলে দিলো।
অথৈও কিছু না বলে পেছন ফিরে চলে যেতে শুরু করে।শান্ত আশা নিয়ে অথৈয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়,এই আশায় যে অথৈ একবার হলেও পেছন ফিরে তাকাবে কিন্তু না অথৈ তাকাইনি।শান্ত আশাহত হয়ে নিজের ক্লাসের দিকে যেতে থাকে।তবে কিছুটা দূরে গিয়ে অথৈ ঠিকই পেছন ফিরে তাকাই।সে দেখে শান্ত চলে যাচ্ছে।শান্তের যাওয়া দিকে তাকিয়ে অথৈ একটা দীর্ঘশ্বাস নেই।
” আমি জানি আপনি জানতেন যে আমি ঠিক মতোই কাল বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলাম।কারণ আপনি যে আমার বাড়ি অবধি আমার পেছন পেছন এসেছিলেন।আপনি হয়তো মনে করেন আমি কিছুই জানিনা কিন্তু না আমি কিছুটা হলেও জানি।আমি ওতোটাও বোকা নয় মিস্টার শান্ত।”
__________________________________________
ক্যান্টিনে বসে গল্প করছে অথৈ,রিফা আর মেহেক।তখন ক্যান্টিনে প্রবেশ করে সৌন্দর্য,স্পর্শ আর তার বন্ধুরা।তারা মেহেকদের থেকে একটা টেবিল দূরে বসে।তাদের অনেক খুশি খুশি লাগছে।সৌন্দর্য ছাড়া বাকি সবাই টেবিলে বসে আর সৌন্দর্য চলে যায় ক্যান্টিনের ভিতরে।কিছুক্ষণ পর সৌন্দর্য অনেকগুলো আইসক্রিম নিয়ে আসে।সে তার বন্ধুদের দিয়ে তারপর আসে মেহেকদের টেবিলে।তাদের জন্য আনার আইসক্রিমগুলো সে টেবিলে রেখে দেয়।
” কিরে দাভাই আজ এতো খুশি খুশি লাগছে কেন তোমাকে?আর তুমি আজ নিজে থেকে আইসক্রিম খাওয়াচ্ছো?ব্যপার কি?” রিফা বলে।
” আরে আজ সৌন্দর্যের পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে আর ও সেকেন্ড হয়েছে।সেই খুশিতে আমাদের ট্রিট দিচ্ছে।” আদিব বলে।
” তাই তো বলি তুমি আইসক্রিম কেন খাওয়াচ্ছো।যাইহোক এই সুযোগে আইসক্রিম খেতে পারছি এটা কিন্তু খুব ভালো।”
অথৈ আর রিফা নিজের আইসক্রিমটা নিয়ে খেতে শুরু করে কিন্তু মেহেক নেয়না।তা দেখে সৌন্দর্য বলে—
” কি হলো মেহেক নিচ্ছোনা কেন?নাও।”
” না মিস্টার সৌন্দর্য আমি খাবোনা।এটা বরং আপনি অন্যকাউকে দিয়ে দিন।”
” কেন খাবে না?আরে লজ্জার কিছু নেই খাও।”
” হ্যাঁ মেহু লজ্জা পেয়েও না।আমরাই তো খাও তুমি।” বলে শান্ত।
” না আসলে ওরকম কিছুনা।আসলে আমার ঠান্ডায় সমস্যা আছি।আমি ঠান্ডাজাতীয় খাবার খেতে পারিনা।এধরণের খাবার খেতে আমার ঠান্ডা লেগে যায়,মাঝেমধ্যে জ্বরও হয়।তো আমি খেতে পারবোনা।”
” আরে মেহু খা না একদিন খেলে কিছু হবেনা।” রিফা বলে।
” এই না তোরা কেউ জোর করিসনা।ওর সমস্যা আছে তাই কেউ জোড় করবিনা।ও খেতে না চাইলে ঠিক আছে সমস্যা নেই।তুমি বসো আমি আসছি।”
এটা বলে সৌন্দর্য চলে যায় আর কিছুক্ষণ পর একটা প্যাকেট আর একটা কোলড্রিংক এর বোতল নিয়ে আসে।
” এই নাও এই বার্গার আর কোলড্রিংকটা নাও।এই দুটোই কিন্তু ঠান্ডা জাতীয় খাবার না সো এখন কিন্তু কোন মানা শুনবোনা।তোমাকে খেতেই হবে।”
মেহেকও আর না করেনা।বার্গার আর কোলড্রিংকটা সৌন্দর্য থেকে নিয়ে নেয়।এদিকে সৌন্দর্যের বিহেভিয়ার মহুয়ার কাছে মোটেও ভালো লাগছেনা।সৌন্দর্যের মেহেকের প্রতি এতো কেয়ার মহুয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা।রাগে হোক বা কষ্টে তার চোখে পানি জমে যায়।
__________________________________________
কিছুদিন পর,
টিউশন থেকে ফিরছে মেহেক।সে খুশিমনে হেঁটে হেঁটে আসছে কিন্তু হঠাৎ করেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়।
” এই বৃষ্টিটা এখনিই নামতে সময় পেলো।ধুর কেন যে ছাতাটা আনলাম না।”
মেহেক দৌড়ে একটা ছাউনির নিচে দাঁড়ায়।সে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বৃষ্টি কমে যাওয়ার দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে কিন্তু বৃষ্টি কমার বদলে উল্টো বেড়ে চলছে।
” ধুর এখন আমি কি করি?বৃষ্টি তো কমার নামই নিচ্ছেনা।এখন বাড়ি কি করে ফিরবো?রিক্সা নেবো?কিন্তু এখন তো মাসের শেষের দিক।হাতে তেমন টাকাও নেই।রিক্সা নিয়ে টাকা নষ্ট করবো?”
কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর মেহেক নিজের মনে মনেই বলে—
” ধুর নিয়েই নিয় রিক্সা।বাকি দিনগুলো কোনভাবে ম্যানেজ করে নেবো।”
মেহেক এদিক-ওদিক তাকিয়ে রিক্সা খুঁজছে কিন্তু একটা রিক্সার দেখাও সে পাচ্ছেনা।
” ও আল্লাহ একটা রিক্সার দেখা পাচ্ছিনা।আজ সব মুসিবত আজ একসাথে এসে পড়েছে।”
মেহেক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে কি করবে তখন একটা গাড়ি এসে মেহেক সামনে দাঁড়ায়।হুট করে গাড়ি এসে থামায় মেহেক ঘাবড়ে যায়।মেহেক আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নেয়।বৃষ্টির কারণে জায়গাটা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গিয়েছে এখন।মেহেকের ভয় ভয় লাগলেও সে সেটা বাইরে প্রকাশ করেনা।
” ভেতরে এসে বসো।”
গাড়ির ভেতর থেকে কারো কন্ঠস্বর শুনে মেহেক চমকে যায়।এরকম অদ্ভুত কথা শুনে মেহেকের ভয় আরো বেড়ে যায়।
” কি হলো ভেতরে এসে বসো।”
মেহেক ভেতরে বসেনা,সে নিজের জায়গায় শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।কিছুক্ষণ পর কেউ ছাতা হাতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে।কাউকে বেরিয়ে আসতে দেখে মেহেক ভয়ে পিছিয়ে যায়।লোকটা এসে মেহেকের সামনে দাঁড়ায়।
” কি হলো শুনতে পাওনি নাকি?তোমাকে না ভিতরে আসতে বললাম।”
” আমি কেন গাড়ির ভেতরে যাবো?”
” কেন যাবে মানে?তোমার কি বাড়ি ফেরার শখ নেই নাকি?”
” আমি….নিজেই…বাড়ি যেতে পারবো।আর আমি অপরিচিত কারো সাথে যেতে ইচ্ছুক নয়।”
” অপরিচিত?”
লোকটা নিজের মুখের সামনে থেকে ছাতা সরায়।এতোক্ষণ ছাতার কারণে মেহেক লোকটা মুখ দেখতে না পেলেও এবার ঠিকই দেখতে পাই।ছাতে হাতে লোকটা আর কেউ না বরং স্পর্শ।
” আমি তোমার অপরিচিত?”
” আপনি?”
” হ্যাঁ আমি তো কাকে আসা করেছিলে?এবার যাবে নাকি এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে?দাঁড়িয়ে থাকলে থাকো।আমি যাই,আমার অনেক কাজ আছে।”
” এই না না আমি আসছি।”
মেহেক গাড়ির ভিতর গিয়ে বসে।স্পর্শও ছাতা বন্ধ করে গাড়িতে বসে।ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে নিজের চশমাটা মুছে নেয় মেহেক।
স্পর্শ নিজের মতো গাড়ি চালাচ্ছে।দুজনের মাঝে কোন কথা নেই।কিন্তু মেহেকের মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেক্ষণ ধরে।সে চিন্তায় আছে সে স্পর্শকে প্রশ্ন করবে কি না।অবশেষে সব চিন্তা বাদ দিয়ে মেহেক প্রশ্ন করেই ফেলে–
” আচ্ছা আপনি এখানে কি করছেন?”
” মানে?”
” মানে আপনি এই রাস্তায় কি করছেন?আর আপনি জানলেন কি করে যে আমি বৃষ্টির কারণে আটকে পড়েছি।”
” ভাবী ফোন করে বলেছিল যে তুমি ছাতা নাওনি,তাই বৃষ্টিতে আটকা পড়ে যাবে।আমিও এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম আর যাওয়ার সময় তোমাকে দেখলাম।সো উল্টাপাল্টা কিছু ভেবোনা।”
” উল্টাপাল্টা আবার কি ভাববো?”
” উল্টাপাল্টা মানে এটা ভেবোনা আমি তোমাকে পছন্দ করি বা আমি তোমার পিছু নিচ্ছি।”
” ও হ্যালো মিস্টার আমি এরকম কিছুই ভাবিনি।”
মেহেক আর কোন কথা বলেনা,স্পর্শও আর নিজ থেকে কিছু বলেনা।
গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ মাঝরাস্তা থেমে যায়।হঠাৎ গাড়ি থেমে যাওয়ায় মেহেক প্রশ্ন করে—
” কি হলো?গাড়ি থামালেন কেন?”
” আমি থামাইনি।”
” তাহলে কি ভুতে থামিয়েছে?” বিরক্ত নিয়ে প্রশ্ন করে মেহেক।
” গাধা গাড়ি নিজে নিজে থেমে গিয়েছে।তুমি বসো আমি দেখছি কি হয়েছে।”
স্পর্শ ছাতা নিয়ে বাইরে চলে যায়।কিছুসময় পর হতাশ মুখে ফিরে আসে।
” কি হয়েছে?গাড়ি ঠিক হয়েছে?”
” গাড়ি এখন আর চলবেনা।”
” চলবেনা মানে?” অবাক হয়ে প্রশ্ন করে মেহেক।
” চলবেনা মানে চলবেনা।”
” তাহলে এখন কি করবো?এই বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি কিভাবে পৌঁছাবো?”
” জানিনা।”
” উনি নাকি আমাকে বৃষ্টি থেকে সেভ করে বাড়িতে পৌঁছে দিতে এসেছে।এখন দেখো ওনার খাটাড়া গাড়ির জন্য দুজনেই ফেঁসে গেলাম।” বিরবির করে বলে মেহেক।
” কি বিরবির করছো?”
” কিছুনা।এবার বাড়ি কিভাবে ফিরবো?”
” চিন্তা করো কিভাবে ফিরে যাবো।”
অনেক্ষণ চিন্তা করার পর মেহেক আর সৌন্দর্য একসাথে বলে উঠে—-
” আইডিয়া।”
#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ১৮
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি
এখন রিক্সায় বসে আছে স্পর্শ আর মেহেক।দুজনের মাঝেই অনেকটা দুরত্ব।বাইরে এখনো বৃষ্টি পড়ছে,যাকে বলা চলে তুমুল বৃষ্টি।রিক্সার সামনে প্লাস্টিকের একটা পর্দা দেওয়া আছে যাতে ভেতরে বসে থাকা মানুষটা ভিজে না যায়।কিন্তু বৃষ্টি এই পর্দা উপেক্ষা করে সহজে ভেতরে প্রবেশ করছে।বৃষ্টির ফোঁটা এসে পড়ছে মেহেকের চশমায়।কিন্তু সে না পারছে চশমাটা খুলতে আর না পারছে পড়ে থাকতে।চশমা না খুললে তা ভিজে যাবে আর চশমা খুললে মেহেক কিছুই দেখতে পাবেনা।অনেক ভেবেচিন্তে মেহেক সিদ্ধান্ত নেয় না সে চশমা পড়েই থাকবে।হঠাৎ মেহেকের চোখ যায় স্পর্শের উওর।স্পর্শ বাইরে তাকিয়ে রাস্তাঘাট দেখছে।হঠাৎ মেহেকের মনে পড়ে যায় মুগ্ধের কথা।এরকমই একটা বৃষ্টির দিনে সে আর মুগ্ধ রিক্সা চড়ে ঘুড়তে বেরিয়েছিল।
ফ্ল্যাসবেক….
” মেহেক এটা কোন ধরনের বাচ্চাপনা?আজ না ঘুরলে হয়না নাকি?”
” না আমি আজ তোমার সাথে রিক্সা করে ঘুরবো।”
” কিন্তু আজই কেন?দেখো বাইরে কতো বৃষ্টি।”
” সেই জন্যই তো আমি তোমার সাথে ঘুরতে যেতে চাইছি।”
” কিন্তু তুমি যে বলছিলে তোমার বৃষ্টি পছন্দ না।”
” আমি কবে বলেছিলাম?আমি বলেছিলাম আমার বৃষ্টি তেমন একটা ভালো লাগেনা তবে এটা বলিনি আমি বৃষ্টি পছন্দ করিনা।আজ আমার প্রচুর ইচ্ছে করছে তোমার সাথে এই বৃষ্টি ভেজা শহরটা ঘুরে দেখতে।”
” আচ্ছা ঠিক আছে।আমার মেহুরাণী যখন বলেছে তখন আমি আজ অবশ্যই তার সাথে ঘুরবো।তুমি বসো আমি রিক্সা নিয়ে আসছি।
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে রিক্সা খুঁজতে চলে যায় মেহেক।আজ কেন যেন মেহেকের মুগ্ধের সাথে ঘুরার ইচ্ছে হলো তাই সে তার ইচ্ছেকে আর দমিয়ে রাখেনি।আজ মেহেক একটা হালকা নীল রঙের শাড়ি পড়েছে আর মেহেকের জোর করায় মুগ্ধ নীল রঙের পাঞ্জাবি পড়েছে।কিছুক্ষন পর মুগ্ধ একটা রিক্সা নিয়ে আসে।মেহেক রিক্সায় উঠে পড়ে।পুরোটা রাস্তা মেহেক আর মুগ্ধ একে অপরের হাত ধরে ছিল।এখন এসব ভাবে দীর্ঘশ্বাস নেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনা মেহেক।
ফ্ল্যাসবেক এন্ড…..
” এভাবে কি দেখছো?দেখো আমি তোমার নায়ক নয় বুঝতে পেরেছো।তাই ভাইয়ের চোখে দেখো,ভাইয়ের চোখে।”
স্পর্শের কথায় মেহেক তার ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে।সে তাড়াতাড়ি স্পর্শের থেকে চোখ সরিয়ে নেয়।
” আমি আপনাকে ভাইয়ের চোখেই দেখি।আমার কোন ইচ্ছে নেই আপনাকে অন্যচোখে দেখার।”
স্পর্শ আর কিছু না বলে বাইরে তাকিয়ে থাকে।কিছুটা সময় পর তারা বাড়ির সামনে এসে পড়ে।মেহেক টাকা দিবে তার আগেই স্পর্শ টাকা দিয়ে ছাতাটা রেখে দৌড়ে ভেতরে চলে যায়।মেহেকও আর কিছুনা বলে ছাতাটা নিয়ে ভেতরে চলে আসে।মেহেক সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে উঠতে দেখে দরজা আগে থেকেই খোলা আছে আর তার বোন সৃষ্টি টাওয়াল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মেহেককে দেখে সৃষ্টি তাড়াহুড়ো করে তার কাছে আসে।
” এইনে মেহু তাড়াতাড়ি মাথাটা মুছেনে।নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।দে দে ব্যাগটা আমাকে দে।”
সৃষ্টি মেহেক থেকে ব্যাগটা নিয়ে নেয় আর যত্ন করে তার শরীরের পানিগুলো মুছে দেয়।বোনের এতো কেয়ার দেখে মেহেক কান্না করে দেয়।বাবা-মা মারা যাওয়ার পর বিয়ের আগে সৃষ্টি মেহেকের এভাবেই খেয়াল রাখতো।এতোদিন পর বোনের ছোট ছোট কেয়ারগুলো দেখে মেহেক ইমোশনাল হয়ে পড়ে।
” যা তাড়াতাড়ি ড্রেস চেঞ্জ করে নে।আমি তোর জন্য গরম দুধ নিয়ে আসছি।”
মেহেক মাথা নাড়িয়ে উপরে চলে আসে।ড্রেস চেঞ্জ করে এসে দেখে সৃষ্টি দুধের গ্লাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মেহেক আসলেই সৃষ্টি যত্ন করে নিজ হাতে মেহেককে দুধটা খাইয়ে দে।
অন্যদিকে,
ফোনে ভিডিও কলে কথা বলছে রিফা আর ইভান।
” দেখেছো বাইরে কি সুন্দর বৃষ্টি পড়ছে।” ইভান বলে।
” হুম দেখেছি।”
” শুধু হুম দেখেছি।এই ওয়েদারে তো আমার রোমান্টিক রোমান্টিক ফিল আসছে।কাশ….আমার কাছে এখন একটা বউ থাকতো।”
” তো বউ থাকলে কি করতে?”
” বউ থাকলে তার সাথে এই রোমান্টিক ওয়েদারে রোমান্টিক রোমান্টিক কথা বলতাম।”
” আর?”
” আর তার কোলে মাথা রেখে আমাদের ফিউচার প্লেনিং করতাম।”
” আর?”
” আর তার সাথে ওই রোমান্টিক ওয়েদারে রোমান্স করতাম।” লজ্জা পেয়ে বলে ইভান।
” তাহলে থাক তুই তোর বউ নিয়ে।আমার সাথে কথা বলছিস কেন?”
” আরে আরে বাবু রাগ করছো কেন?”
” রাগ করছো কেন মানে?তুই আমার সাথে প্রেম করে অন্যকারো সাথে রোমান্স করবি?অন্যকাউকে বউ বানাবি।যা তুই তোর বউরে খোঁজ আর তার সাথে রোমান্স কর।”
” আরে বাবু শোনো তো আমার কথা।”
” কি শুনবো হ্যাঁ কি শুনার বাকি রেখেছিস তুই?যা দূরে গিয়ে মর।”
” আরে বাবু আমার বউটাতো তুমিই।বিয়ের পর তো তুমিই আমার বউ হবে।তখন তো আমি তোমার সাথেই রোমান্স করবো।”
” কি!” অবাক হয় বলে রিফা।
” হ্যাঁ জান তুমিই তো আমার বউ হবে।আচ্ছা যাও বিয়ের পর আমি তোমার সাথে কোন রোমান্স করবো না,কোন রোমান্টিক কথা বলবেনা।বিয়ের পর আমরা একদম ভাইবোনের মতো থাকবো।”
” কি!এই কিসব বলছো তুমি?তোমাকে আমি কি বিয়ে ভাইবোন হয়ে থাকার জন্য করবো নাকি?”
” তাহলে তুমিই তো রাগ করলে।”
” আরে আমি তো ভেবেছিলাম তুমি অন্যকারো কথা বলছো।”
” তার মানে তুমি তোমার সাথে আমাকে রোমান্স করতে দিবে?রোমান্টিক রোমান্টিক কথা বলবে আমার সাথে।”
” ছিঃ কিসব বলছো তুমি?”
” আরে এতে ছিঃ কি আছে?বিয়ের পর এগুলোতে কোন ছিঃ নেই।আচ্ছা বলো তো আমাদের কয়টা বাচ্চা হবে?”
” কয়টা হবে?”
” আমাদের দুইটা বাচ্চা হবে।তাও টুইন।ছেলের নাম আমি তোমার সাথে মিল রেখে রাখবো আর মেয়ের নাম আমার সাথে।”
” আল্লাহ এখনো বিয়ে হয়নি আর এই বান্দা তো বাচ্চা পর্যন্ত চলে গিয়েছে।”
” আরে আমি তো এটাও ঠিক করে রেখেছি যে আমাদের বাচ্চারা কোন স্কুলে পড়বে।”
” ও আল্লাহ তুমি এতো ফার্স্ট।”
” আমি তো আরো অনেক কিছু ভেবে রেখেছি।শুনবে?”
” না বাবা থাক।দরকার নেই।”
” আচ্ছা তুমি শাড়ি পড়তে জানো?”
” হ্যাঁ জানি তো।আমি খুব সুন্দর করে শাড়ি পড়তে পারি।”
” ও আচ্ছা।” মন খারাপ করে বলে ইভান।
” কিন্তু তুমি মুড অফ করে ফেললে কেন?”
” কেন তুমি শাড়ি পড়তে শিখলে বলো তো?”
” কারণ শাড়ি পড়তে আমার অনেক ভালো লাগে তাই।”
” ধুর তুমি খুব আনরোমেন্টিক।কই ভাবলাম আমার বউটা শাড়ি পড়তে জানবেনা।বিয়ের পর আমি থাকে যত্ন করে শাড়ি পড়িয়ে দেবো।কিন্তু তুমি তো আমার স্বপ্নটাকে স্বপ্নই রেখে দিলে।”
” ওলে বাবারে….আমার জানটা তার বউকে শাড়ি পড়াতে চাই।আচ্ছা সমস্যা নেই শাড়ি পড়তে জানলে কি হয়েছে?তাও তুমিই পড়িয়ে দেবো।”
” সত্যি?আ…..কাশ তুমি এখন আমার কাছে থাকতে।জানো আমার না এখনই বিয়ে করতে ইচ্ছে করছে।”
” ওমা তাই?”
” হুম।এই বৃষ্টির দিনে একটা বউ না থাকলে কি হয়?অন্য সময়ে বউয়ের প্রয়োজন হোক আর না হোক এই বৃষ্টির দিনে একটা বউয়ের খুব দরকার।”
” জানো ইভান আমার কি মনে হচ্ছে?”
” কি?”
” তুমি না নিশ্চয় আজ মাথায় বারি খেয়েছো।মনে করে দেখো তো আমি ঠিক বলছি কিনা।”
” হ্যাঁ ওই আসলে ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার সময় খেয়েছি।” কপালে হাত দিয়ে মালিশ করতে করতে বলে ইভান। ” কিন্তু তুমি কি করে জানলে?”
” এইতো দেখেছো আমি ঠিকই আন্দাজ করেছিলাম।তাই তো বলি তুমি আজ এতো আজগুবি কথা বলছো কেন?বারি খেয়ে তোমার মাথা পগলায় গিয়েছে।”
” তুমি আমাকে ইনডিরেকলি পাগল বলছো?” ভ্রু-কুচকে প্রশ্ন করে ইভান।
” আরে না না ইনডিরকলি কেন বলবো?আমি তো সরাসরিই বলছি বারি খেয়ে তোমার মাথার সেটিং নড়ে গিয়েছে।”
” যাও তোমার সাথে কোন কথা নেই।তুমি আমার এই বৃষ্টির দিনের কষ্টটা বুঝবেনা।বাই আর আজ আমাকে ফোন দেবেনা।”
” ঠিক আছে দেবোনা।আমিও দেখি তুমি কতদিন আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারো।”
রিফার কথা শুনে ইভান কট করে ফোনটা কেটে দেয়।আর ইভানের বাচ্চাদের মতো রাগ দেখে রিফা হাসতে থাকে।
#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ১৯
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি
আজ ভার্সিটিতে তাড়াতাড়ি এসেছে অথৈ।সে একা একা ক্যাম্পাসটা ঘুরে দেখছে।ঘুরতে ঘুরতে অথৈ একটা নির্জন জায়গায় চলে আসে।জায়গাটা নির্জন যে তা না তবে ভালো স্টুডেন্টরা এদিকটায় কম আসে।
” এইযে ব্ল্যাকপিংক এদিকে এসো।”
অথৈ নিজের দিকে তাকাই।দেখে সেই আজ ব্ল্যাক আর পিংকের কমবিশেনে একটা ড্রেস পড়েছে।অথৈ কিছুনা ভেবেই তাদের সামনে এসে দাঁড়ায়।
” কি হয়েছে?”
” আমরা তোমার সিনিয়ার সো রেসপেক্ট দিয়ে কথা বলো।” একটা মেয়ে বলে।
” আমাকে কেন ডেকেছো?”
” বাহ্ মেয়ের ঝাঁঝ আছে বলতে হবে।” একটা ছেলে বলে।
” ওসব ঝাঁঝটাঝ না আমাদের সামনে চলবেনা।” আরেকটা ছেলে বলে।
” আমি কোন মরিচ বা কোলড্রিংকের বোতল না যে আমার মধ্যে ঝাঁঝ থাকবে।আর থাকলেও তোমাদের তাকে কি?কি জন্য ডেকেছো সেটা বলো নয়তো ফুটো।”
” আই লাইক ইউর এটিটিউট।” প্রথম ছেলেটা বলে।
অথৈ বিরক্তদৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকাই।
” তো ব্ল্যাকপিংক তুমি এখন একটা কাজ করবে।” প্রথম ছেলেটা বলে।
” কি কাজ তাড়াতাড়ি বলো।তোমাদের মতো এতো ঢং করার সময় আমার নেই।”
” যেই ছেলেটা প্রথম এই গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকবে তাকে গিয়ে একটা কিস করে আসবে।”
” আর যদি না করি তো?” ভাবলেশহীন ভাবে বলে অথৈ।
” না করলে তোমার পানিশমেন্ট আছে।” মেয়েটা বলে।
” করবোনা।দাও পানিশমেন্ট।”
” এই মেয়ে তোমার আমাদের ভয় লাগছেনা?” প্রথম ছেলেটা বলে।
” ভয় কেন লাগবো?অবশ্য ছোট বাচ্চা হলে ঠিকই ভয় পেতো।তোমাদের আচরণের যা অবস্থা।আর শোন আমি নিউ স্টুডেন্ট না।আমি সেকেন্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট আর তোমরা থার্ড ইয়ারে।মানে এক ইয়ার সিনিয়র জুনিয়ার।সো আমি তোমাদের কোনকালেই ভয় পাবোনা।আর তোমরা আমার থেকে আরো বড় হলেও আমি ভয় পেতাম না।”
অথৈ চলে যেতে নেয়।তবে কিছুদূর গিয়ে আবার পেছন ফিরে তাকাই।
” আর হ্যাঁ রেগিংটা না ভালো করে করতে শিখো।তোমাদের এই ফুদুসা রেগিং দেখে কেউ ভয় পাবেনা।এবার একটু নতুন স্টাইলে রেগিং করতে শিখো।আর যদি না জানো তাহলে আমার কাছে এসো আমি টিপস দিবো আসল রেগিং কিভাবে করতে হয়।বাই বাই।”
অথৈ হেলেদুলে সেখান থেকে চলে যায়।সবাই অবাক হয়ে অথৈয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।তাদের সাথে আগেও অনেকে এভাবে কথা বলেছে কিন্তু কেউ কখনো বলেনি ‘রেগিং এর টিপস লাগছে আমার কাছে এসো।’ অথৈ এর অদ্ভুত কথায় সবাই অবাকের চূড়ান্ত পর্যায় চলে গিয়েছে।তবে প্রথম ছেলেটা এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে অথৈয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিল।তবে এতোক্ষণ পর্যন্ত এই ঘটনাটা যে শুধু মাত্র চারজন ব্যক্তি দেখছিল তা কিন্তু না এখানে একজন পঞ্চম ব্যক্তিও ছিল আর সেটা আর কেউ নয় বরং শান্ত।অথৈয়ের সবকথা শান্ত শুনেছে আর অথৈয়ের এসব কথা শুনে শান্ত অবাক প্লাস অনেকটা হ্যাপি এটা জেনে যে অথৈ নিজেই নিজেকে প্রটেক্ট করতে পারে।তবে শান্ত ওই প্রথম ছেলেটার হাবভাবও খেয়াল করেছে।ছেলেটার নাম রুদ্র।প্লে-বয় টাইপের ছেলে।কাপড়ের মতো সে মেয়ে চেঞ্জ করে।এই বিষয় নিয়ে শান্তের কিছুটা চিন্তা হচ্ছে তবে আজকের ঘটনায় শান্ত বুঝে গিয়ে অথৈয়ের কোন সমস্যা হলে সে নিজেই সলভ করতে পারবে।আর তা না হলে সে আছে তো।
_________________________________________
ক্লাসে টিচার পড়াছে।সবাই মন দিয়ে স্যারের কথা শুনছে কিন্তু মেহেকের পড়ায় কোন মন নেই।তার মন অন্যকোথাও।আজ আবারো মেহেকের মুগ্ধের কথা মনে পড়েছে।সে এখন মুগ্ধের কথায় ভাবছে।
” এই মেয়ে দাঁড়াও।”
স্যার মেহেককে ডাকছে কিন্তু সে তো তার চিন্তা মগ্ন।
” মেহু,স্যার ডাকছে।” রিফা আস্তে আস্তে মেহেককে বলে।কিন্তু মেহেক এখনো নিজের চিন্তায় মগ্ন।
” মেহু স্যার ডাকছে।” অথৈ মেহেককে ধাক্কা দেয়।ধাক্কা খেয়ে মেহেক নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে।ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসলে মেহেক তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ায়।
” মন কোথায় তোমার?” স্যার রেগে বলে।
স্যারের রাগি গলা শুনে মেহেকের জান যায় যায় অবস্থা।
” পড়া পারবে?”
মেহেক মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে।স্যার পড়া জিজ্ঞেস করলে ভয়ের চোটে মেহেক সব গুলিয়ে ফেলে আর কিছুই ঠিক মতো বলতে পারেনা।স্যার রেগে মেহেককে দাঁড়িয়ে থাকতে বলে।
মেহেক চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।হঠাৎ তার চোখ যায় জানালার বাইরে।সৌন্দর্য তার দিকে ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে আছে।সৌন্দর্যকে দেখে মেহেক জিভে কামড় দেয়।
” হায় আল্লাহ মিস্টার সৌন্দর্য আমাকে শাস্তি পেতে দেখে নিয়েছে।ছিঃ,ছিঃ,ছিঃ এবার না জানি উনি আমার ব্যপারে কি ভাববে।”
মেহেক আস্তে আস্তে জানালার দিকে তাকাই তবে এবার সে আর সৌন্দর্যকে দেখতে পাইনা।এটা দেখে মেহেক স্বস্তির নিশ্বাস নেই।
ক্যাম্পাসে একটা গাছের নিচে বসে আছে মেহেক,অথৈ আর রিফা।মেহেক আবারো মুগ্ধের খেয়ালে ডুবে গিয়েছে।অথৈ আর রিফা নিজের মতে কথা বলছে।হঠাৎ তাদের খেয়াল হয় মেহেক আবারো ভাবনায় ডুবে গিয়েছে।
” মেহু,মেহু এই মেহু।” ধাক্কা দিয়ে বলে রিফা।
” হ্যাঁ বল।”
” কি হ্যাঁ বল?সবসময় কোথায় হারিয়ে যাস?ক্লাসেও তুই অন্যমন্সক ছিলিস আর এখানো অন্যমন্সক আছিস।কি হয়েছে বলতো।” অথৈ বলে।
” না কিছু হয়নি।”
” সত্যি তো?” সন্দেহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে অথৈ।
” আরে বাবা হ্যাঁ।এই রিফু তোর ফোন বাজছে।দেখ কে ফোন করেছে।”
রিফা ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে ইভান ফোন দিয়েছে।ইভানের ফোন দেখে বাঁকা হাসে রিফা।
” কে আপনি?আর আমার নম্বর কোথা থেকে পেলেন?”
” কে আপনি মানে?বাবু আমি ইভান,তুমি আমাকে ভুলে গেলে।”
” কে আপনি?আপনাকে তো আমি চিনিইনা ভুলবো কেমন করে?”
” বাবু এরকম করোনা।আমার কান্না পাচ্ছে।” ঢং করে বলে ইভান।
” ওলে আমার বাবুরে।কেন?সেদিন না কে জেনো বলেছিল আমাকে আর ফোন দিবেনা।”
” আরে সেটা তো কথার কথার বলেছিলাম।কিন্তু তুমি তো সত্যিই আমার সাথে কথা বলোনি।কাল কতো বার ফোন করেছিলাম।”
” ধরবেনা বললে কেন?যাও তুমি তোমার রোমান্টিক মুড নিয়ে থাকো।আমার সাথে কথা বলা লাগবেনা।”
” আরে বাবু রাগ করোনা।আচ্ছা তুমি এখন কোথাই?”
” ভার্সিটি।তুমিও মনে হয় কলেজে?”
” হুম।ব্রেক ছিলো তাই ভাবলাম তোমাকে একটা কল দিয়।”
” এই আমাকে দে অনেক্ষণ কথা বলেছিস।” এটা বলেই অথৈ এর হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে নেয় অথৈ।
” বাবু কেমন আছো তুমি?” ঢং করে বলে অথৈ।
” আরে আমার কলিজাটা কতদিন পর তোমাকে দেখলাম।জানো কত মিস করেছি আমি তোমাকে।”
” হু….সব মিথ্যা কথা।তুমি আমাকে একটুও মিস করোনি।মিস করলে কি আর আমার সাথে কথা না বলে থাকতে নাকি?” রাগ করার অভিনয় করে বলে অথৈ।
” আরে কলিজা বোঝোনা,ওই রিফু আছেনা ওর জন্যই তো আমার তোমার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকতে হয়।”
” হু….ওতোটা একটা পেত্নী।ও হচ্ছে বিরিয়ানির মধ্যে এলাচি।বোঝোনা ও আমাদের ভালোবাসা দেখে জ্বলে।”
” ঠিক বলেছো কলিজা।”
” আমি কিন্তু এখানে আছি।”
” তো কি হয়েছে?তোরে ভয় পাই নাকি আমি।” ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে অথৈ।
” ইভান সোনা তোমার না এখন ক্লাস আছে?”
” হুম আছে তো।”
” তো যা ক্লাসে যা।লুইচ্চা বেটা।”
অথৈর এর থেকে ফোনটা নিয়ে কট করে কেটে দেয় রিফা।অথৈয়ের দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকে মুখ ভেঙিয়ে ব্যাগ নিয়ে ক্লাসে উদ্দেশ্য যেতে থাকে রিফা।রিফাকে রাগাতে পেরে তো অথৈ অনেক খুশি।
” তুই আবার মেয়েটাকে রাগিয়ে দিলি।” ব্যাগ গোছাতে গোছাতে মেহেক বলে।
” কি করবো বল,ওরে রাগাতে ভালোই লাগে।”
__________________________________________
ভার্সিটি থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে মেহেক।তবে আজ নিচে নেমে কেন যেন মেহেকের ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।মেহেক এদিক-ওদিক খুঁজে রান্নাঘরের দিকে যেতে থাকে।
” আপুনি,আপুনি,এই আপুনি।”
কিন্তু সৃষ্টির কোন সাড়াশব্দ মেহেক পাচ্ছেনা।মেহেক আগ্রহ নিয়ে রান্নাঘরে যায় কিন্তু যে যা দেখে তা সে কখনোই আশাকরি।
” আপুনি….” চিৎকার বলে উঠে মেহেক।
চলবে…….
(