#জোয়ার_ভাটা
#পর্ব-১৩
#সুরাইয়া_সাত্তার_ঊর্মি
রাফি কিছু বলবে ওঁর আগেই পিছন থেকে ভেসে এলো একটি গলা,
” আমি!”
রাফি, মার্জান দু’জনেই পিছনে ফিরতেই চোখ বড় বড় হয়ে গেলো মার্জান। অবাক হওয়া কন্ঠে বলল,
” তুমি?”
রাফান মুচকি হেসে দাঁড়ালো মার্জানের সামনে,
” সারপ্রাইজ ”
মার্জান আরেক দফা অবাক হলো,
” আবারও? সত্যি বিশ্বাস হচ্ছে না।”
রাফান মার্জানের মাথায় টোকা মেরে বলল,
” এখন বিশ্বাস হলো তো মান?”
মার্জানের চোখের কোনে পানি ছলকে উঠলো,
” থ্যাংকস ইয়ার। ”
বলেই জড়িয়ে ধরলো রাফানকে। আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়া মার্জানকে রাফান নিজেও শক্ত করে বুকে সাথে চেপে ধরলো। মার্জানের ঠোঁটের হাসি ফোঁটাতেই তো এসেছিলো রাফান। আর এতে ওঁ সফল ও হলো।এদিকে ছোট মৃণালের কঁপালে চিন্তার ভাব,
” জান কি এই আঙ্কেলকে পছন্দ করে? তাহলে ওই আঙ্কেলকে কি রিজেক্ট করতে হবে আমার? কিন্তু এই আঙ্কেলের থেকে ওই আঙ্কেল সব থেকে বেশি, হ্যান্ডসাম, ড্যাশিং, কুল। আঙ্কেল সামারের পার্সোনালিটি ওয়াঁ। তবে জান যদি এই আঙ্কেলকে লাইক করে? তাহলেও আমি হ্যাপি। তবে অবশ্যই তাকে আমাকেও নিতে হবে।”
মৃণালের মাথায় হাত পড়তেই ওঁ চিন্তিত মুখে হাসির রেখা টেনে আনলো। মার্জান ছেলের গালে চুমু খেয়ে বলল,
” বাচ্চা, তোমার জন্য ডোনার পেয়ে গেছি। তুমি খুব জলদি সুস্থ হয়ে উঠবে, এবং আবার স্কুলে যেতে পারবে।”
মৃণাল মুচকি হেসে মাকে জড়িয়ে ধরলো। কিন্তু নিজের ছোট মাথায় একটা বড়সড় গভীর ভাবনায় ঢুবে রইলো। মার্জান ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে মনে মনে বলল,
” ভালো হয়েছে ডোনার পেয়ে গেছি । এখন আর আমার ছেলের জন্য কোনো বাবার প্রয়োজন নেই। গ্রীষ্মতো একদম না।”
গ্রীষ্মের কথা মনে আসতেই মার্জান মৃণালের গালে হাত রেখে বলে উঠলো,
” মৃণাল? আপনি কি আমার কথা কারো সাথে আলাপ করেছেন?”
মৃণাল অপরাধীর মত মাথা নাড়লো। এরপর মাথা নত করে বলল,
” আমি আঙ্কেল সামারের সাথে কথা বলেছিলাম জান।”
” আঙ্কেল সামার টা আবারকে?”
মৃণাল হেসে বলল,
” তুমি চিনো জান, ওই রেস্টুরেন্টের আঙ্কেলটা যে।”
মার্জান চক্ষু চারাক গাছ,
” মি: গ্রীষ্ম! উনার নাম তো গ্রীষ্ম!”
মৃণাল ফিক করে বলল,
” ইয়েস জান, তবে নামটা ওল্ড ফ্যাশন বলেই আমি উনাকে সামার ডাকি!”
মার্জানের কঁপালে হাত,
” কোথায় পেলে এই বদমেজাজি লোকটিকে?”
মৃণাল মুখে গম্ভীরতা ফুটে উঠলো। মার্জানের মনে হলে মৃণালের মুখের আদল এই মুহুর্তে গ্রীষ্মের মতো লাগছে। মৃণাল কন্ঠ খাদে নামিয়ে বলল,
” আঙ্কেল সামার মোটেও বদমেজাজি নয়, উনি অনেক ভালো জান।”
মার্জান মৃণালকে এরূপ দেখে হাঁটু ঘেরে বসলো ওঁর সামনে,
” বাচ্চা, আপনি তো জানেন আপনার জানের এখন কত বিপদ কাঁটিয়ে উঠতে হচ্ছে, আপনি আমাকে প্রমিস করেন, আর এসব করবেন না!”
মৃণাল মার্জানকে জড়িয়ে ধরলো। পরমুহূর্তেই কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,
” জান, আমি তোমাকে সুখি দেখতে চাই।”
মার্জান ওঁর ছেলে শক্ত করে বুকে আগলে নিয়ে বলল,
” আমার খুশির কারণ এক মাত্র তুমি মৃণাল, আমার কেউ চাই না।”
মৃণাল প্রত্যুত্তর কিছু বলল না। আবার ওঁর মাকে প্রমিস ও করলো না। মনে মনে বলল,
” মমি একদিন আমি তোমার জন্য পৃথিবীর বেষ্ট হাসবেন্ড খুঁজে বের করবো।”
——-
ঘন ঘন বাঁজ পড়ছে। রাতের আঁধারে এক চিলতে আলোকিত করে হারিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ এর চমক। শীপ্রা সমুদ্রের পাড় ধরে হেঁটে যাচ্ছে। এলোমেলো চুল আর কাপড় বলে দিচ্ছে ওঁর উপর বয়ে যাওয়া ঝড়ের কথা। গালের মাঝে পাঁচ আঙ্গুলের দাগ আর ঘাড়, গলায়, কাঁধে দাগ গুলো চিৎকার করে বলে দিচ্ছে কোনো হিংস্র পশু কিছুক্ষণ আগেই ওকে যেন খুবলে খুবলে খেয়েছে। নিজের আব্রুতে আবারো লেগে গেছে কাঁদা মাটি। শীপ্রা বারুর মাঝেই ধপ করে ছেড়ে দিলো নিজের শরীর টুকু। যেন নেই একফোঁটা শক্তি, নেই বেঁচে থাকার ইচ্ছে, নেই লাভের সামনে মুখ দেখানোর সাহস। শীপ্রা চিৎকার করে কেঁদে উঠলো। ওঁর চিৎকার হারিয়ে যেতে লাগলো সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে সাথে। ঠিক তখনি নেমে এলো আকাশ থেকে বৃষ্টির পতন। যেন ওঁর ভিতরের হাহাকার মিটাতেই এই উথালোনা।শীপ্রা চোখ বুঝে নিলো টিভির স্ক্রীনের মতো ভেসে উঠলো ঘন্টাখানেক আগের ঘটনা,
শীপ্রা তায়নের রুমের সামনে এসে দাঁড়ালো। থর থর করে কাঁপছে ওঁর হাড় গোড়ায়। শীপ্রা শুঁকনো ঢুক গিললো। ওঁর প্যান্টের পকেটে ছোট একটি ছুঁরি নিয়ে এসেছে ওঁ। সেটিতে শক্ত করে চেপে ধরে নক করলো ওঁ। আজ যদি তায়ান শাহ্ ওকে কিছু করতে আসে, শীপ্রা মেরে দিবে একেঁবারে। ভিতর থেকে তায়ান শাহ্র কন্ঠ ভেসে আসতেই শীপ্রা ভীত পায়ে ঢুকলো। তায়ানশাহ্ বাথরূফ পড়ে অন্য হাতে সিগারেট নিয়ে সোফার উপর পায়ে পা তুলে বসে আছে। শীপ্রাকে উপেক্ষা করেই টানছে নিকোটিন। শীপ্রা সাহস নিয়ে গলা ছাড়লো,
” কি… কি চাই আপনার? কেন এসেছেন আবার? আমাদের… আমাদের কনট্রাক তো শেষ। আপনি নিজেই তো যেতে দিয়েছিলেন আমাকে, তাহলে, তাহলে কেন আবার ফিরে এসেছেন? কেন আমার আর লাভের জীবনের মাঝে বাঁধা হচ্ছেন? কেন ছেড়ে দিচ্ছেন না আমাকে একা?”
কথা গুলো এক দমে বলেই ফুপিয়ে উঠলো শীপ্রা। নিকোটিনের ধোঁয়ায় মত্ত তায়ানশাহ্ সিগারেটের দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে, গলাটা আজ অন্যরকম ওঁ,
” বলে ছিলাম না.. কখনো আমার সামনে এসো না, তাহলে আর যেতে দিবো না!”
শীপ্রার শরীরের লোমকূপ দাঁড়িয়ে পড়লো ভয়ে। থমথমে গম্ভীর কন্ঠটা কানে বাজছে ওঁর বার বার। তায়ানশাহ্ এবার শীপ্রার দিকে ফিরলো। হাতে নিকোটিন মাটিতে ফেলে পা দিয়ে পিসে দিলো। কিছুক্ষণ আগের সিগারেট যা গর্ব করছিলো তায়ানের ঠোঁট জোড়ায়, অবলীলায় পিষে ফেলল পা মারিয়ে, অথচ মুখে ওঁর প্রতিবারের মতোই উদাসীনতা, নিষ্ঠুরতা। শীপ্রা ভয় পেয়ে গেলো তায়ানকে উঠে দেখে কয়েক কদম পিছিয়ে যেতেি দু’টো শক্ত হাত ওঁকে বেঁধে ফেললো ওঁর দু’ দিকে। শীপ্রা পিছনে ফিরতেই তায়ানশাহ্ মুখোমুখি হয়ে গেলো। তায়নের শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে মিসে থাকা নিকোটিনের গন্ধ পড়তে লাগলো শীপ্রার মুখে। শীপ্রা মুখ ফিরিয়ে নিলো। যেনো কোনো বিষধর সাপ। তায়ানশাহ্ হাসলো,
” আমার সামনে আশা উচিত হয়নি তোমার শীপ্রা। এবার আর কোনো ক্ষমতাই আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না তোমাকে।”
শিউরে উঠলো শীপ্রা। চোখের বাঁধ ভেঙ্গেছে সেই কখন। নিঃশব্দে কেঁদে চলছে মেয়েটি,
” আমাকে যেতে দিন প্লিজ, আমি..আমি লাভকে নিয়ে সুখে থাকতে চাই। ”
হেঁচকি তুলে বলল শীপ্রা। তায়নের মুখের হাসি মিলিয়ে গেলো। শীপ্রার অগোছালো চুলের গাছিতে আলতো ভাবে হাত বুলিয়ে মাথর পিছনে নিয়ে চুলের মুঠি শক্ত করে চেপে ধরে আরো কাছে টেনে নিলো তায়ান। ঠান্ডা অথচ রূহ কাঁপানো কন্ঠে বলে উঠলো,
” তোমার কি মনে হয় শীপ্রা? তোমার মতো থার্ড ক্লাস, প্রস্টিটিউট একটি মেয়েকে লাভের হাতে তুলে দিবো? এত সহজ? নাহ্… কখনো না।”
তায়ানশাহ্ এর বলা প্রতিটি কথা শীপ্রার শরীরের তীরে মতো বিধলো। চোখ বুঝে নিজেকে ছাড়াবার বৃথা চেষ্টা করতে করতে বললো,
” লাভ আপনার মতো এতোটা নিকৃষ্ট নয়। আপনি একটা নর্দমার কিট।”
তায়ান হাসলো। শীপ্রাকে আরো কাছে টেনে নিয়ে বলে উঠলো,
” শীপ্রা জান, একবার কি ভেবেছো? লাভ তোর সত্যটা জানার পর, তোমার সাথে থাকবে কি না?”
শীপ্রা নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা ছেড়ে দিয়ে তায়ানশাহ্ এর দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো। তায়ানশাহ্ শীপ্রাকে টেনে নিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলো নরম তুলতুলে বিছানার উপর। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই শীপ্রার খুব কাছে চলে এলো ওঁ। বলল,
” তুমি তোমার অবস্থান ভুলে গেছো তাই না ডিয়ার? নো প্রবলেম , আমি আজ তোমাকে আবারো তোমার জায়গা দেখিয়ে দিচ্ছি।”
বলেই শীপ্রার হাত দু’টো বেঁধে ফেললো । শীপ্রার পড়নের এক একটি কাপড় ছিঁড়ে টুকরো করে ফেললো মাটিতে। শীপ্রা চিৎকার করলো, চেঁচালো। যার ফলে তায়ানশাহ্ এর আঙ্গুলে ছাপ পড়লো ওঁর গালে, কিন্তু রক্ষে পেলো না। আরো একবার নিজের সব হারাতে হলো ওঁর।
আবারো কোথাও বাজ পড়লো। বৃষ্টির বেগ-ও বাড়লো। বৃষ্টির মাঝে আবছায়া আলোয় কাউ এসে দাঁড়ালো ওঁর কাছে।শীপ্রার মাথায় ছাতা ধরে বিচলিত ভাবে বললো লাভ,
” আর ইউ ওকে শীপ্রা? কোথায় চলে গেছিলে তুমি? আমি কতটা ভয় পেয়েছি যানো?কি হয়েছে তোমার? কাঁদছো কেন শীপ্রা.. শীপ্রা কথা বলো!”
শীপ্রা কিছুই বলকে পাড়লো না যেন। অপলক তাকিয়ে রইলো লাভের বাচ্চা বাচ্চা মুখ পানে। কানে এখনো ঘন্টার মকো বাজছে তায়নশাহ্ বলা প্রতিটি কথা,
” লাভ আমার বড় ভাইয়ের ছেলে, ওঁ আমার থেকে সাত বছরের ছোট। ওঁ আমার নিজের ছেলের মতো। আমি অবশ্যই নিজের ছেলের জন্য ডিফেক্ট মাল চুজ করবো না? যদি তোমার পরিবারের ভালো চাও? ভুলে যাও ওকে!”
” শীপ্রা, শীপ্রা, শীপ্রা!”
ঝাকালো এবার লাভ শীপ্রাকে। শীপ্রা ছল ছল চোখে লাভের গাল পরমযত্নে স্পর্শ করলো। বলল,
” ব্রেকআপ লাভ। কারণ জিগ্যেস করো না প্লিজ আমি বলতে পারবো না। ক্ষমা করে দিও। আসি।”
বলেই ঝুম বৃষ্টি মাথায় করে বৃষ্টির মাঝে হারিয়ে গেলো শীপ্রা। এদিকে হাজার টঁকরো হওয়া মনকে গুঁছিয়ে নেয়ার চেষ্টা লাভের ঝড় বৃষ্টির রাতেই ভাসিয়ে নিয়ে গেলো সব স্বপ্ন লাভের।
———-
সকালের সোনালী রোদ গায়ে লাগিয়ে গ্রীষ্মের বাড়ি এসে আবার হাজির মার্জান। সদর দরজায় পা দিয়েই এদিক ওদিক তাকালো ওঁ। কাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে না পেয়ে স্বস্তির শ্বাস ছাড়লো ওঁ। তবুও আরো একবার এদিক সেদিক উঁকি দিয়ে পর্যবেক্ষন করতে লাগলো।
” আমাকে খুঁজছো?”
গ্রীষ্মের গরম শ্বাস কানের উপর পড়তেই জমে গেলো মার্জান। নিজের বেগ শক্ত করে চেপে ধরে সোজা হয়ে বলে উঠলো,
” একদম না।”
বলেই বড় বড় পা ফেলে চলে গেলো রান্না ঘরের দিকে। গ্রীষ্ম-ও পিছু নিলো মার্জানের। এবং রান্না ঘরের তাকের উপর হেলে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো মার্জানকে। মার্জান সবজি ধুয়ে কাঁটতে রেডি করছিলো। গ্রীষ্ম ডুবে ছিলো মার্জানের মায়াবী মুখে। মৃণাল ওঁকে কাল রাতে মার্জানের একটি ছবি পাঠিয়ে ছিলো। কিন্তু গ্রীষ্ম ভেবেছে ওই ছবিটি মার্জান ওঁকে পাঠিয়েছে। সদ্য ফুল ফোঁটার মতো লাগছিলো ছবিটির মাঝে মার্জানকে। কিন্তু পরমুহূর্তেই নিজেকে ব্লক লিষ্টে দেখে গ্রীষ্মের রাগ উঠে গেছিলো। মনে পড়তেই গ্রীষ্ম এবার প্রশ্ন করলো,
” তুমি আমাকে ব্লক কেন করেছো জান?”
এতক্ষণ গ্রীষ্মকে উপেক্ষা করা মার্জান বিষ্ময়ে বিমুঢ়। ওঁকে এড করলোই কবে আর ব্লক করলেই কবে? মার্জানকে কিছু বলতে না দেখেই গ্রীষ্ম মার্জানের কাছে চলে এলো। মার্জানের হুঁশ ফিরতেই চকিতে বলল,
” আমি আপনকে ব্লক কেন করবো? আর আপনি এড হলেন কবে যে ব্লক করবো?”
গ্রীষ্ম মার্জানের আরো কাছে চলে আসলো,
” মিথ্যা কেন বলছো? ”
মার্জান ভয়ে পিছিয়ে যেতে যেতে বলল,
” আমি মিথ্যা কেন বলবো?”
” তা আমি কিভাবে বলবো? এখনি এই মুহুর্তে ব্রক খুলো!”
মার্জান হতভম্ব হয়ে গেলো,
” আর ইউ ম্যাড!”
গ্রীষ্ম বাঁকা হাসলো। মার্জান এবার ফ্রীজের সাথে এঁকে গেলো।
” ব্লক খুলবে নাকি, পানিশমেন্ট দিবো তোমায়?”
” কি যা তা বলছেন, দূরে যানতো।”
বলেই ধাক্কাতে লাগলো মার্জান।নিজের পকেট থেকে গ্রীষ্ম ফেন বের করে মার্জানের মুখের সামনে ধরে বলল,
” কাল তুমি আমাকে এই ছবি পাঠাও নি!”
মার্জান ভুত দেখার মতো তাকিয়ে রইলো ফোনের ওয়ালপেপারে। বুঝতে বাকি নেই এই কাজটি মৃণালের। মার্জান বিড়বিড় করে উঠলো এবার,
“মৃণাল কেন বার বার তোমার মাকে এই বাঘের মুখে ফালাও বাচ্চা? কবে যেন কাঁচা মাংসের মতো আমাকে ঘিলে ফেলবে, এবং ঢেকুর পর্যন্ত তুলবে না, তখন বুঝবে। ”
মার্জার ক্যাবলাকান্ত এর মত হাসার চেষ্টা করে বোঝাতে চাইলো,
” দে-খু-ন এসব আমি!”
মার্জান সাফাই গাইবার আগেই ওঁর গলার উপর ছুঁরি ধরলো গ্রীষ্ম। মার্জান বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইলো ওঁ। ভয়ে ঠ্যাং দু’টো কাঁপছে। গ্রীষ্ম এবার হাত পেতে বলল,
” ফোন। ”
মার্জান কোনো ভনিতা ছাড়াই ফোন বাড়িয়ে দিলো। আতঙ্কে দিশেহারা। এই তার ছিঁড়া লোকটি চাকুর ভয় দেখাবে ব্লক খোলার জন্য? বাবা যায়? মার্জান চোরা চোখে তাকাতেই গ্রীষ্ম ব্লক ছুটিয়ে ফেললো। ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা ফুঁটিয়ে মার্জানের ঠোঁটে চুমু খেলো অকস্মাৎ ঘটনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় মার্জান। গ্রীষ্ম রান্না ঘর থেকে বের হতে গিয়ে থেমে গেলো, মার্জানের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,
” তোমার ঠোঁট গুলো ঝাল, টক, মিষ্টির টেষ্ট? কি খাও তুমি? তবে যাই খাওয় খুব টেষ্টি,।”
চলবে,