#তারে_আমি_চোখে_দেখিনি
#পর্বঃ২০
#Mst_Liza
মায়া টানতে টানতে মাহিরকে রুমে নিয়ে যায়।
মায়াঃ আসুন আমার সাথে আপনি!
মাহিরকে রুমে নিয়ে গিয়ে খুব শব্দ করে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয়। যা দেখে বাড়ির সবাই বিস্মিত। ভাবে মায়া এমন কেন করছে।
মাহিরঃ মায়া কি হয়েছে তোমার?
মায়াঃ আবার জিজ্ঞাসা করছেন? একদম রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে।
মাহির একদম চুপ।কিছুক্ষণ মাহির কথা না বলায় মায়া রেগে যায়।রেগে হাতের কনুই দিয়ে মাহিরের পেটে দেয় এক ঘাঁ।
মাহিরঃ আউচ,, লাগলো তো!
মায়াঃ লাগুক! স্নিগ্ধা সাঁকচুন্নি, প্রেত্নী, ওর সাহস কিভাবে হয় আমার বাড়িতে আসার?
কথাটা বলে মায়া এবার মাহিরের শার্টের কলারটা টেনে ধরে।তারপর মাহিরের চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ।
কিছুক্ষণ পর,,,
মায়াঃ অনুভব!
মাহিরঃ হুমমমম
মায়াঃ ওই স্নিগ্ধাকে আপনি ভুলে যান।বিশ্বাস করুন ওর থেকেও অনেকটা বেশি আপনাকে আমি ভালোবাসা দেবো।এতোটা ভালোবাসা দেবো যতোটা স্নিগ্ধা কেন পৃথিবীর কোনো মেয়েই আপনাকে দিতে পারবে না।
মাহিরঃ তাই?
মায়াঃ হুমমম।
মাহির এবার মুচকি হেসে মায়ার কোমড়টা জড়িয়ে ধরে মায়াকে খুব কাছে টেনে নেয়।
মাহিরঃ আচ্ছা একটা মানুষ এতোটা ভালোবাসা দিয়ে কি করবে?
মায়াঃ মানে?
মাহিরঃ ওই যে বললে না তোমার মতোন কেউ আমাকে এতোটা ভালোবাসতে পারবে না।
মায়াঃ হুমমম।পারবে না তো।আপনি আমার স্বামী।আর আপনার ইহকাল, পরকাল সবটা জুড়ে শুধু আমি থাকবো।তাই শুধু আমার অধিকার রয়েছে আপনার উপর।আর আমার জীবনের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত কেউ চাইলেও পারবে না আপনাকে আমার থেকে কেড়ে নিতে।
মাহিরঃ আর যদি আমি স্নিগ্ধার কাছে চলে যায়?
মায়াঃ নিস্ব হয়ে যাবো আমি।প্লিজ ওই রাক্ষসীটার কাছে জাবেন না অনুভব।
মাহিরঃ হাহাহা! যাবো না! মজা করছিলাম তোমার সাথে।
মায়াঃ তাই?
মাহিরঃ হুমমম।
মায়াঃ একটা কথা বলবেন?
মায়ারঃ কি?
মায়াঃ আপনার এই ঠোঁট, মুখ, নাক, কান, চোখ এগুলো কখনো স্পর্শ করে নি তো স্নিগ্ধা?
মায়ার কথা শুনে মাহির হাসতে থাকে।
মায়াঃ হাসছেন কেন? আমার ভালোবাসাটাকে কি মজা মনে হয়?
আপনি জানেন, আপনাকে আমি কতোটা ভালোবাসি? সেই যেদিন আপনাকে প্রথম শুনেছিলাম সেদিন থেকে ভালোবাসি।আর আজ যখন আপনার দেখা পেয়েছি তখন আপনাকে হারাতে দেবো ভেবেছেন?
কথাটা বলে মায়া মুখটা ঘুরিয়ে কিছু সময় চুপ হয়ে থাকে।মাহির মায়ার মুখটা তুলে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।আর দেখে মায়ার চোখের কোণে পানি। সাথে সাথে মায়ার কোমড়টা ছেড়ে দিয়ে দুইহাতের মুঠোয় গালটা আকড়ে ধরে।
মাহিরঃ এতো ভালোবাসো আমাকে তুমি?
মায়াঃ হুমমম
ঠোঁট দিয়ে মাহির মায়ার চোখের পানি মুছিয়ে দেয়। তারপর মায়ার কপালে ঠোঁটের আলতো স্পর্শ ছুঁইয়ে দিয়ে বলে,
মাহিরঃ এই বোকা মেয়ে কাঁদছো কেন? আমিতো তোমারই। তুমি বোঝো না? তোমার এসব কথায় আমি তোমাকে আরও বেশি ভালোবেসে ফেলি।আর তোমাকেই আমার জীবনে প্রয়োজন।ভয় পেও না মায়া!এই হাত দুটো যখন ধরেছি কক্ষনো ছাড়বো না, হারিয়েও যাবো না, ভরসা রাখও আমার উপর!
মায়াঃ ভালোবাসেন আমাকে?
মাহিরঃ হুমমম।ভালোবাসি! ভালোবাসি! খুব ভালোবাসি! কেন বিশ্বাস হচ্ছে না তোমার?
মায়া মাহিরের মুখে ভালোবাসার কথা শুনে খুশিতে হেসে দিয়ে ঝাপটে ধরে মাহিরের বুকে একটা কিস করে। যা দেখে মাহিরও মুচকি হেসে মায়াকে জড়িয়ে ধরে।
মাহিরঃএভাবে থাকবে সবসময়। জানো তোমার গালের এই টোল পরা হাসিটা..
মায়াঃ কি?
মাহিরঃ আমার বড্ড ভালো লাগে দেখতে।
কথাটা শুনে মায়া লজ্জায় মাহিরের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে দূরে সরে আসে।বিছানার উপরে গিয়ে মুখটা দুই হাত দিয়ে ঢেকে বসে থাকে লজ্জায়।কিছুক্ষণ পর মাহিরের কোনো সারা শব্দ না পেয়ে মুখটা থেকে হাত সরিয়ে চোখ তুলে দেখে মাহির পাশের বালিশে শুয়ে ফোন চার্জে লাগিয়ে টিপছে।যা দেখে মায়া আবার রেগে যায়।
মায়াঃ ফোন টিপুন! আমি চলে যায় রুসার রুমে!
মাহিরঃ রুসার রুমে কেন যাবে?
মায়াঃ তো কি করবো? শুধু শুধু রুমটা সাজিয়েছেন।কি দরকার ছিলো এতো পরিশ্রম করার?
মাহির এবার ফোনটা রেখে মায়াকে টেনে নিজের বাহুডোর আবদ্ধ করে নেয়।
মাহিরঃ কি বলতে চাচ্ছো?
মায়াঃ জানি না
মাহিরের বুকে একটা কিল বসিয়ে দিয়ে বলে মায়া।
মাহির মায়াকে ঘুরিয়ে নিয়ে মায়ার বুকের উপরে আসে।তারপর মায়ার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে নেয়।মাহিরের প্রতিটা স্পর্শ মায়াকে পাগল করে তোলে।বিলীন হতে থাকে দুজন মানুষের অনুভুতির আত্নসমর্পণ।যা আলতো স্পর্শে পূর্ণতা এনে দেয় মুহূর্তকে।
।
।
।
।
ওদিকে স্নিগ্ধা মায়ার দেয়া অপমানটা সহ্য করতে না পেরে রাগে বাড়িতে গিয়ে এটা ওটা সব জিনিসপত্র উঠিয়ে ছুড়ে ছুড়ে মারতে থাকে।তারপর কাচের জিনিসগুলো ভেঙে চুরে হাঁপায়।রাগে গজগজ করতে করতে আয়নার সামনে দাড়িয়ে সয়তানি হাসি দিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
স্নিগ্ধাঃ তোমাকে আমি ছাড়বো না মায়া।এর চেয়ে দ্বিগুণ অপমান তোমাকে আমি ফিরিয়ে দেবো।
স্নিগ্ধা অনেক ভাবে কিভাবে এই অপমানের প্রতিশোধ তুলা যায়! মাহিরকে ভালোবেসে তীব্র চাওয়াটা আগে কখনো স্নিগ্ধার মধ্যে আসে নি।কিন্তু আজ মায়ার এই অপমানে স্নিগ্ধা মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে যে কোনো মূল্যে মাহিরকে নিজের করেই ছাড়বে।
চলবে,,,