#তুমি_থেকে_যাও_আমি_রেখে_দিব
#পর্ব_০৫
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
হঠাৎ করেই চিৎকার দেওয়া’তে।অধরা কোনো কথা না বলে কেবিন থেকে বেড়িয়ে আসলো।
–শালা পেয়েছে টা কি।অফিসের বস হয়েছে মাথা কিনে নিয়েছে।এখন নাকি আমার কপি বানাই দিতে হবে।আশরাফুল স্যার কতো ভালো ছিলেন।
–অধরার ওপরে স্যার এসে’ই ক্ষেপে গেছে।এখন যদি আরেকটু ক্ষেপিয়ে দেওয়া যায়।তাহলে স্যারের পিএ নিশ্চয় আমাকে করবে।আর একবার স্যারের পিএ হতে পারলে স্যারের বউ হওয়া দুই মিনিট এর বিষয় মিমি।সুযোগ টা কাজে লাগা মিমি।
মিমি গিয়ে অধরার কাছে দাঁড়ালো।ইস অধরা তুমি তো বৃষ্টিতে ভিজে গেছো।তুৃমি এখানে দাঁড়া’ও আমি কফি বানিয়ে দিচ্ছি।
–তুমি কি করে জানলে মিমি,স্যার আমাকে কফি বানাতে বলছে।
–স্যার যতো জোরে বলছে।শুধু আমি কেনো আশেপাশের সবাই শুনছে।অধরা কোনো কথা না বলে কফি বানাতে চলে গেলো।কফি বানিয়ে নিয়ে আসছিলো তখনি অধরার ভাই ফোন করে।অধরা ভাইয়ের ফোন ধরে বলল।
–ভাই আমি অফিসে আছি।তোকে বাসায় গিয়ে ফোন করবো।বলে-ই ফোন কেটে দিলো।
–ও মা গো তুমি এভাবে না বলে ভূতের মতো পেছনে এসে দাঁড়িয়ে আছো কেনো মিমি।তোমার কাজ নেই।
–আসলে তুমি কফির মগ টা টেবিল রাখছিলে যদি কিছু পরে তাই ধরে রাখছিলাম।
–ধন্যবাদ মিমি।বলে-ই অধরা চলে গেলো।আসতে পারি স্যার।
–আসুন।অধরা কফিটা আহানের হাতে দিলো।আহান এক চুমুক দিয়ে-ই কফির মগ’টা অধরার দিকে ছুঁড়ে মারলো।কিছুটা গরম কফি অধরার হাতে পড়লো।কপির মগ টা ফ্লোরে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো।
–এটা আপনি কি বানিয়ে নিয়ে আসছেন।এটা কফি হয়েছে নাকি,লবনের শরবত বানিয়ে নিয়ে আসছেন।
–মানে।
–আপনি যে,কফিটা বানিয়ে নিয়ে আসছেন।আপনার হাতে পড়েছে একটু ঠোঁট ছুঁইয়ে দেখুন।কেমন কফি বানিয়ে নিয়ে আসছেন।মন কোথায় থাকে আপনার।
অধরা সত্যি সত্যি দেখলো একদম লবনে ভরা।কিন্তু তার স্পষ্ট মনে আছে।সে,ভালো ভাবেই কফি বানিয়ে নিয়ে আসছে।লবণ আসলো কোথায় থেকে।
–জায়গা টা এখনি পরিষ্কার করে দিন।আর আমার মুখের সামনে থেকে সরে যান।অধরা কোনো কথা না বলে চুপচাপ জায়গা টা পরিষ্কার করে দিয়ে চলে গেলো।দু’দিন হলো শরীরটা ভালো যাচ্ছে না অধরার।বৃষ্টিতে ভেজার কারনে ঠান্ডা লাগছে।বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে অধরা।মাথাটা ভার হয়ে আছে।কোনোকিছু ভালো লাগছে না।তারপরে আহানের এমন ব্যবহার।আহান তো এমন ছিলো না।হঠাৎ এমন হয়ে গেলো কি করে।কি হয়েছিল তার অতীতে।যার ক্ষত তাকে এতটা কঠিন করে দিয়েছে।
–শোন শারমিন তোর জন্য যদি আমার ছেলে-মেয়ের কোনো ক্ষতি হয়।তাহলে তোকে আমি ছেড়ে দিব না।তোকে আমি খুন করে ফেলবো।বড় বোন হয়েছি দেখে আর কত ত্যাগ আমাকে করতে হবে বলতে পারিস।তোর জন্য নিজের ছেলে-মেয়েকে নিজের কাছে রাখতে পারি না।
–আপা তুই আমার সাথে এভাবে কথা বলছিস কেনো।আমি কি দোষ করেছি।দোষ দেওয়ার হলে তুই মিনার-কে দে।সবকিছু জন্য দায়ী ও।আজ যদি ও আমার ভালোবাসার মানুষকে কেঁড়ে না নিতো।তাহলে অধরা আর আকাশ তোর কাছে থাকতো।তুই আর দুলাভাই শুনতে পারতি বাবা-মা ডাক।
–থাপ্পড় দিয়ে তোর সব দাঁত খুলে দিব বেয়াদব মেয়ে।সাহস থাকে তাহলে আমার হাত পা খুলে দে।এভাবে আর কতদিন আটকে রাখবি।একদিন দেখবি সত্যি সবার সামনে চলে আসছে।মা মিনারা কে আবার আগের মতো ভালো বাসবে।তোর জন্য আমার ছোট বোন টা এতটা কষ্ট পাচ্ছে।
–তুই আমার বড় আপা তাই জন্য তোকে কিছু করছি না।তোর জায়গায় অন্য কেউ হলে এখানেই পুঁতে রেখে দিতাম।আর তুই মিনারার কথা বলছিস।ওকে তো আমি কোনোদিন সুখী থাকতে দিব না।আমার ভালোবাসা যেভাবে কেঁড়ে নিয়েছে।আমি’ও মনিরকে ওর জীবন থেকে কেঁড়ে নিব।অধরা নিশ্চয় তার পালিত বাপকে চিকিৎসা,অপ্সস সরি সে তো জানে না।মনির আর মিনারা তার পালিত বাবা-মা।অধরা তো জানে তার নিজের বাবা-মা।অধরা যখন তার বাবার অপারেশন করাবে।তখনি সবাই জানতে পারবে।অপারেশন করাতে গিয়ে অধরার বাবা মারা গেছে।হাহাহা।এতেই হবে আমার সুখ।
–দেখ শারমিন ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।নিজের বোন হয়ে কি করে এসব ভাবছিস।লজ্জা করে না তোর।
–বেশি কথা বলিস না।তোর মেয়ে কিন্তু শহরে আসছে।চৌধুরী কম্পানিতে জব করছে।প্রতিদিন রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসা করে।একটা গাড়ি যদি তোর মেয়ে কে মেরে দিয়ে চলে যায়।খুব একটা ক্ষতি হবে না।কি বলিস আপা।
–শারমিন তুই পাগল হয়ে গেছিস।নিজের ছোট বোনের স্বামীর জন্য এতটা নিচে নেমে গেছিস।ছিঃ তোকে নিজের বোন বলতে’ও আমার ঘৃণা হচ্ছে।
শারমিন তুলির বেগমের কথায় কান না দিয়ে কাকে জানি ফোন করলো।
–চৌধুরী কম্পানিতে নতুন পিএ পোস্ট জয়েন করছে।নাম সিদরাতুল ইসলাম অধরা।কালকে শেষ করে দিবি।
তুলি বেগম চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো।
–শারমিন তুই আমার অধরার কিছু করিস না।তুই যা বলবি আমি তাই করবো।আমি তোর পায়ে পড়ি শারমিন তুই আমার অধরার কিছু করিস না।
–এই বড় বোনের মতো কথা বলছিস।এতক্ষণ তাহলে পাখির মতো ছটফট করছিলি কেনো।নিজের ভালো চাস তো খাবার খেয়ে নে।আর দুলভাই কেও,খেতে বল।দুলাভাই তার শালির ওপরে খুব রাগ করেছে।কথা-ই বলে না আমার সাথে।আহারে দুলাভাই কি অবস্থা হয়েছে।এই সবাই দুলাভাইকে
আর আপাকে ভালো ভালো খাবার খাওয়াবি।না হলে আমি অধরার কাছে কি জবাব দিব বল তো।বলে-ই হাঁসতে হাঁসতে চলে গেলো শারমিন।
–তোমার বোন একটা পাগল।মনিরকে পাই নাই বলে মানসিক রুগী হয়ে গেছে।এর জন্য যদি আমার ছেলে মেয়ের কোনো ক্ষতি হয়।আমি তোমাকে কোনোদিন ক্ষমা করবো না তুৃলি।
–আমাকে তুমি মাফ করে দাও।শারমিনের কথায় মিনারা কে ভুল বুঝে যে,অপরাধ আমি করেছি।আল্লাহ তার শাস্তি আমাকে দিচ্ছেন।আজ সন্তানের মা হয়ে ছেলেমেয়ের মুখ থেকে মা ডাক শুনতে পারি না।সব আমার কৃতকর্মের ফল।তবে তুমি এতটুকু ভরসা রেখো আমার মিনারা খুব বুজমান মেয়ে।আমার ছেলে মেয়ে তার কাছে ভালোই থাকবে।ভয় হচ্ছে শারমিন কে নিয়ে।ও যদি মনিরকে মেয়ে দেয় তাহলে,আমার মিনারা কি নিয়ে বাঁচবে।মা তো মিনারাকে ত্যাজ্য কন্যা করে দিয়েছে।মনিরের কিছু হলে।আমার ছোট বোন টা মরে যাবে।
–তখন তো খুব মেজো বোনের হয়ে সুপারিশ করেছিলে,এখন দেখো সেই বোনই তোমাকে ছুরি মারলো।আমাদের কোথায় রেখেছে আমরা নিজেও জানি না।কতগুলো বছর হয়ে গেলো।বাহিরের আলো দেখি না।এভাবে আর কতদিন।এর থেকে মৃত্যু শ্রেয়।
–ধৈর্য হারা হয়ো না।তুমি যতই খারাপ অবস্থাতে থাকো না কেনো।কখনো নিজের মৃত্যু কামনা করো না।কারণ তুমি কবর দেখেছো।কিন্তু কবরের আজাব দেখো নাই।(হযরত মুহাম্মদ(সাঃ))
মিসেস তুলি বেগমের কথায় তার স্বামী দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।
পরের দিন সকাল বেলা অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিসে আসলো অধরা।আজ একটু আগে-ই এসেছে।কালকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে।অধার নানি নিষেধ করলে-ও অধরা শুনে নাই।নতুন চাকরি এখনি যদি কামাই করা শুরু করি।তাহলে চাকরি টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়বে।
–মিস অধরা আজ এত তাড়াতাড়ি চলে আসলেন যে।এখনো অফিসের সময় হয় নাই।বলল আদিল।
–আরে কালকে স্যার অধরাকে অনেক বকাবকি করছে।দেরি করে আসার জন্য,তাই আজ অধরা আগে চলে আসছে।বলল মিমি।
তখনি অধরার ছোট ভাইটা ফোন করে।ফোন রিসিভ করতেই মিষ্টি কণ্ঠে আকাশ বলে উঠলো।
–শুভ জন্মদিন আপাই।আল্লাহ যেনো আমার আপাইকে অনেক বছর বাঁচিয়ে রাখে।আমি বড় হয়ে ট্রেন চালাবো।আমার আপাই-কে সামনে বসিয়ে নিয়ে সারা দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াবো।আকাশের কথায় অধরা হেঁসে দিলো।তার তো খেয়াল-ই ছিলো না।আজ তার জন্মদিন।ছোট্ট আকাশটা ঠিকি মনে রেখেছে।
–এই হারামি তুই বড় হয়ে ট্রেন চালাবি।আমি তোকে পড়াশোনা করাচ্ছি ট্রেন চালানোর জন্য।আমি তোকে পুলিশ অফিসার বানাবো।তুই বড় হয়ে পুলিশ হবি।
–কিন্তু আপাই তুই ঘুরতে অনেক ভালোবাসিস।আমি দেখেছি।তুই টাকার অভাবে ঘুরতে যেতে পারিস নাই।তোর অনেক মন খারাপ হতো।তুই মন খারাপ করিস না আপাই।আমি বড় হয়ে একটা ট্রেন কিনবো।তারপরে আমার ট্রেনে করে তোকে সব জায়গায় ঘুরাবো।
আকাশের কথায় অধরার চোখের কোনে পানি চলে আসলো।ছোট্ট ভাইটা তার বোন ছোট ছোট দিক গুলো লক্ষ্য করেছে।বড় হয়ে নাকি আপাইয়ের স্বপ্ন করবে।
–হয়েছে আমার পাকনা ভাইটা।আগে ভালো করে পড়াশোনা করবে।তারপরে আপাইকে নিয়ে ঘুরবে।আমি এখন অফিসে আসছি।পরে কথা বলবো।বলেই ফোন রেখে দিলো।
–কি ব্যাপার অধরা আজ তোমার জন্মদিন ট্রিট দেওয়ার ভয়ে আমাদের বলো নাই।বলল আদিল।
–আরে এমন কিছু না।আমার মনে ছিলো না।দেখেন আমার ছোট ভাই তার ঠিকি মনে আছে।
–খুব ভালো লাগছে তাই না অধরা।বলল মিমি।
–হ্যাঁ লাগবেই তো।আমার ছোট ভাইটা তার আপাই এর জন্য কতটা ভাবে।
–সেই খুশিতে ট্রুথ,ডেয়ার খেলা হয়ে যাক।বলল মিমি।
–আমি’ও তাই বলছি।অফিস শুরু হতে এখনো দেরি আছে।
–আমার এসব ভালো লাগে না।আমি এসব খেলবো না।কিন্তু তোমরা এত আগে অফিসে কেনো।
–আমাদের কিছু কাজ বাকি ছিলো,তাই আগে এসে করলাম।না হলে আহান স্যার রক্ষা রাখবে না।
–আদিল আগে তুৃমি বলো ট্রুথ নাকি ডেয়ার।বলল মিমি।
–ট্রুথ।
–জীবনে কয়টা প্রেম করেছো।কাউকে কি ভালোবাসো মন থেকে।
–কখনো প্রেম করি নাই।কিন্তু একজন কে মন থেকে খুব ভালোবাসি।অধরার দিকে তাকিয়ে বলল।
–কে সে।
–এমনটা কিন্তু কথা ছিলো না।প্রশ্ন কিন্তু একটা করার কথা মিমি।
–আচ্ছা বেশ এবার তোমারা আমাকে ধরো।আমি অধরাকে ধরবো।
–ট্রুথ নাকি ডেয়ার।বলল আদিল।
–ট্রুথ।
–তুমি কি কাউকে ভালোবাসো।বলল আদিল।
–হ্যাঁ ভালোবাসি।ভিষণ ভালোবাসি।কিন্তু তাকে বলার সাহস হচ্ছে না।যদি আমাকে রিজেক্ট করে দেয়।বলল মিমি।
–তুমি আমাকে বলতে পারো আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি।
–এটা কিন্তু আমাদের গেমের মধ্যে পরে না আদিল।এবার অধরার পালা।অধরাকে ডেয়ার নিতে হবে।কোনো কথা চলবে না।বলে পাশে তাকাতেই দেখলো অধরা মাটিতে বসে পড়ছে।ভিষণ খারাপ লাগছে তার।
–কোনো সমস্যা মিস অধরা।বলল আদিল।
–না কোনো সমস্যা না এমনি বসেছি।বলতে বলতে উঠে দাঁড়াল।তখনি আহান যাচ্ছিলো।ওদের তিনজনকে গল্প করতে দেখে দাঁড়িয়ে পড়লো।
–এখানে কি হচ্ছে।এটা কি গল্প করার জায়গা।গল্প যদি করতে হয়।অফিস থেকে বের হয়ে গিয়ে করেন।কাজ করতে এসে কাজ না করে গল্প করছেন।এত সাহস হয় কি করে আপনাদের।
–আসলে স্যার অধরার আজ জন্মদিন।তাই বলেছিলো অফিস শুরু হতে দেরি আছে।তাই ট্রুথ,ডেয়ার খেলি।তাই একটু তিনজন মিলে মজা করছিলাম।
রাগী দৃষ্টিতে অধরার দিকে তাকালো আহান।খুব শখ না ট্রুথ ডেয়ার খেলার।বার্থডে গার্ল বলে কথা।তা অধরা কি নিয়েছে।
–ডেয়ার।বলল মিমি।অধরা ফ্যালফ্যাল করে মিমির দিকে তাকিয়ে আছে।মিথ্যা কথা বলছে কেনো মিমি।
–আপনি যান।ডিম,দুধ,ময়দা নিয়ে আসুন।অফিসে এসে ট্রুথ ডেয়ার খেলার শখ একটু মিটিয়ে দেই।মিমিকে উদ্দেশ্য করে বলল।মিমি কোনো কথা না বলে দৌড়ে চলে গেলো।
–স্যার মিমি মিথ্যা কথা বলছে।মিস অধরা এমন কিছু বলে নাই।বলল আদিল।
–আমি আপনার থেকে কোনো কৈফিয়ত শুনতে চেয়েছি আদিল সাহেব।
আদিল চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।একটু পরে মিমি সবকিছু নিয়ে আসলে।আহান পর পর চার টি ডিম ভেঙে অধরার মাথা দিলো।তারপরে ময়দা গুলো সব অধরার মাথায় ঢেলে দিলো।দুধ গুলো’ও মাথায় ঢেলে দিলো।
–মিস মিমি দেখুন তো।ওনাকে বার্থডে গার্ল লাগছে না।বলল আহান।
–একদম স্যার।আমরা স্কুলে আগে কতো করছি ফ্রেন্ডদের সাথে।
–অধরা আপনি আজ বাসায় চলে যান।আর মিস মিমি জায়গা টা পরিষ্কার করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্তা করুন।বলে-ই আহান চলে গেলো।অধরা সেখানে দাঁড়িয়ে না থেকে ধীরে পায়ে হাঁটা শুরু করলো।রাস্তায় আসতেই সবাই হাসাহাসি শুরু করে দিয়ে অধরাকে দেখে।অধরা একটা গাড়ি ডেকে বাসায় গেলো।বাসায় আসতেই অধরা সেন্সলেস হয়ে গেলো।অধরার নাকি চিন্তাত হয়ে দৌড়ে অধরার কাছে গেলো।অধরার এই অবস্থা দেখে বেশ রেগে গেলেন তিনি।বারবার করে সকালে নিষেধ করে ছিলো জ্বর গায়ে নিয়ে অফিসে যাস না।গেলো এখন আবার কি অবস্থা করে ফিরে আসলো।সারারাত জেগে অধরার নানি অধরার সেবা করলো।পরেরদিন সকাল বেলা হালকা জ্বর কমছে অধরার।সকাল থেকে অধরার নাকি অধরাকে রুমে বন্ধ করে রেখেছে।তার একটাই কথা অফিসে যাওয়া যাবে না।অসুস্থ শরীর নিয়ে।
–নানি বোঝার চেষ্টা করো।আমার বাবা-মাকে তুমি দেখবে না।আমারই দেখতে হবে তুমি আমাকে যেতে দাও।এই কথা বলতেই অধরার নানি দরজা খুলে দিলো।অধরা রেডি হয়ে কোনো কথা না বলে চুপচাপ বেড়িয়ে গেলো।শরীর সায় দিচ্ছে না।অধরা জোর করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে তার শরীরকে।অফিসে এসে চুপচাপ তার কেবিনে গিয়ে বসে।নিজর কাজ করতে শুরু করলো।কারো দিকে তাকাইনি।
একটু পরে আহানের রুমে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল নিয়ে গেলো।যেগুলোতে আহানের সাইন লাগবে।
–আসতে পারি স্যার।আস্তে করে বলল।আহান অনুমতি দিলে অধরা মাথা নিচু করে আহানের কেবিনে প্রবেশ করে।স্যার এখানে আপনার সাইন লাগবে।ফাইল গুলো দেখে একটু সাইন করে দেন।এখনো অধরা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।আহানের ভেতরে ভেতরে ভিষণ অনুশোচনা হচ্ছে।কালকে মেয়েটার সাথে বেশি বেশি হয়ে গেছে।এতটা করা ঠিক হয় নাই।একবার কি মাফ চাইবো।অধরার দিকে তাকিয়ে দেখলো অধরার চোখ এখনো মাটির দিকে।কলম আর ফাইল গুলো আহানের দিকে ধরে আছে।আহান হাত বাড়িয়ে ধরতে যাবে।অধরার হাতের সাথে হাত স্পর্শ পেতেই আঁতকে উঠল আহান।ফাইল টেবিলে রেখে অধরার হাত ধরে বলল।
–তোমার শরীরে তো অনেক জ্বর।এই অবস্থায় অফিসে এসেছো কেনো।
–এসব দেখা আপনার কাজ নই স্যার।এভাবে অফিসের মেয়ে কলিগদের হাত ধরবেন না স্যার।সবাই চরিত্র হীন মনে করবে আপনাকে।
–অধরা।
–হাতটা ছাড়ুন।সাইনটা করে দিন।আমার কাজ আছে।আচ্ছা আমি চলে যাচ্ছি।আপনি সাইন করে রাখবেন।আমি পরে এসে নিয়ে যাব।বলেই অধরা চলে গেলো।
চলবে…..